নূর ইমাম শেখ বাবু এর সকল পোস্ট

নূর ইমাম শেখ বাবু সম্পর্কে

রোজ কবিতা রচি কবিতার মাঝে বাঁচি, কিন্তু আমি বসত করি মৃত্যুর কাছাকাছি!

হৃদয়ের রহস্য

করতে গিয়ে রহস্য ভেদ, তৈরি অগণিত বিভেদ,
প্রনয়কালের শান্তি ফেলে, বিষাদময় করুণ বিচ্ছেদ!
সবই ভুলে অবলিলায়, অনিচ্ছাকৃত অবহেলায়,
সহজ হয়ে কাছে এলে, দিয়ে গেলে কঠিন সময়!

নিজের জীবন নিজের হাতে, ধ্বংস অবহেলার সাথে,
দিনের আলোর অভাব বুঝি, হানা দিলে আঁধার রাতে!
চরম সত্য উচ্চারণে, অনেক গেছে নির্বাসনে,
সততায় সজ্জিত হয়ে, নির্ভীকেরা প্রহর গোনে।

সেই সুদিনের বানী শোনা, আশায় হাজার স্বপ্ন বোনা,
দীর্ঘশ্বাসে ক্লান্তি ঢেকে, অপেক্ষমান আরাধনা।
জড়িয়ে রেখে বাহুডোরে, একলা জাগা প্রতি ভোরে,
আজো তাকে হয়নি চেনা, আপন যে জন ঘুমের ঘোরে!

স্বপ্ন আশা ঢেকে দিলো, উড়ে এসে পথের ধুলো,
নাভিশ্বাসের প্রলয় ঝড়ে, জীবন প্রদীপ নিভে গেলো!
সারাটি রাত স্বপ্ন দেখায়, দিনে চোখের জলে ভাসায়,
আকাঙ্ক্ষাকে সঙ্গী করে, ব্যথী হৃদয় থাকে আশায়!

অন্তর জুড়ে যে ঢেউ ওঠে, স্বপ্ন তাতে পড়ে লুটে,
দূর হতে পাই সুখের ছোঁয়া, কাছে এলে ব্যথাই জোটে!
চাঁদটা হাঁটে আমার সাথে, ধ্রুবতারাও সেই গতিতে,
মন ছুটে যায় অজানাতে, সে রহস্য খুঁজে পেতে।

তৃপ্তি খুঁজি তোমার মাঝে

তৃপ্তি খুঁজি তোমার মাঝে, তুমি তখন রাঙা লাজে,
কল্পনাতে বধুর সাজে, আর মিলনের সূর ও বাজে।
তুমি সদ্য ফোটা কলি, আর যদি হই আমি অলি,
মাদকতায় পড়ে ঢলি, দিতাম জীবন জলাঞ্জলি।

আজকে যেন তোমায় দেখে, চিরসবুজ পাতার ফাঁকে,
ডালের উপর দুই পা রেখে, মধুর সূরে কোকিল ডাকে।
ফুলকলিরা লজ্জা ভুলে, আনন্দে দেয় পাপড়ি মেলে,
সূর্য তখন অস্তে চলে, জ্যোৎস্নার আলো পড়লে ঝিলে।

মহানন্দে শালুক হাসে, মাঠের বুকে সবুজ ঘাসে,
দোলা দেয় মাতাল হাওয়াতে, সে দোলায় বসন্ত আসে।
সেই বসন্ত তোমায় আমায়, কামনাতে ব্যপক মাতায়,
শরীরে শিহরণ জাগায়, অন্তরে শান্তির প্রলয়।

এমনি দিলে সুখের দোলা, যাই হয়ে যাই আত্মভোলা,
এইভাবে একত্রে চলা, মিটবে প্রাণের সকল জ্বালা।
চাঁদের আলো অফুরান হয়, নিত্য হলে রবির উদয়,
তেমনি দোলা দিলে আমায়, সুখে ভরে দেবো তোমায়।

আজকে তোমার কিসের ভীতি? এই সখ্যতা এ সম্প্রীতি,
হবে প্রীতির অগ্রগতি, দূর হবে সব অসঙ্গতি।
যখনই এই দু চোখ বুজি, শুধুই তোমার অভাব বুঝি,
সর্বদা তোমারে পুজি, তোমার মাঝেই তৃপ্তি খুঁজি।

অকস্মাৎ বিপদ

মেঘ না চাইতে বৃষ্টি এলো বিনা মেঘে বজ্রপাত,
নাবালকের শ্বশুর বাড়ী জখম ছাড়াই রক্তপাত।
বিয়ের আগে বাসর ঘরে এঁড়ে গরুর দুধ,
তিরিশ টাকা ধার নিলে হয় নয়শো টাকা সুদ।

খুব হয়েছে মায়ের সামনে মামা বাড়ির গল্প,
মাসির দরদ অনেক বেশী মায়ের খুবই অল্প।
আঙুল ফুলে কলাগাছে পাকা তেঁতুল ঝুলছে,
সূর্যের আলো বিক্রি করে চাঁদে দালান তুলছে।

সুগন্ধি আর ভালোবাসা গোপন রাখা যায়না,
আপনজনার ভীড়ের মাঝে একাকীত্বের বায়না।
দুই দিনের বৈরাগীর কাছে অন্ন হল ভাত,
হিংস্র বাঘের ভয় যেখানে সেখানেই শেষ রাত।

কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে করল সর্বনাশ,
পরের ধনের পোদ্দারিতে চলছে বারোমাস।
ঘোড়ার ডিমে বাচ্চা দিল দারুণ হট্টগোল,
সন্যাসি দা মাংস খায়না চেখে দেখে ঝোল।

ঢাক পিটিয়ে অক্কা যাওয়ার বিকৃত স্বভাব,
বিলেত ঘুরে মক্কা যেয়ে এই হয়েছে লাভ।
এক মাঘে শীত যাচ্ছে চলে পাথর তলায় হাত,
চোখে আঙুল দিয়ে দেখাই বিপদ অকস্মাৎ।

মায়াময় সানিয়া

শ্রেষ্ঠ জ্যোতিষ্ক সর্বদা জ্বলমান,
দর্শনে ব্যথা দূর তৃষ্ণার অবসান।
স্বর্গাপ্সরী তাঁর নেই পার্থক্য,
নিষ্পাপ দৃষ্টি মেধা পরিপক্ব।

তাকে নিয়ে প্রকৃতির প্রলোভন সংঘাত,
মৃদু সংস্পর্শে বিপত্তির উৎখাত।
মমতায় মহিমায় শেষ সংঘর্ষ,
উদাত্ত আহ্বানে সাধন উৎকর্ষ।

অসাধ্য সাধনে স্বীয় প্রতিপাদ্য,
ভঙ্গিমায় বলনে সুধা সাচ্ছন্দ্য।
লক্ষ্য অর্জনে প্রতিজ্ঞ প্রত্যয়,
অনন্ত মায়াময় দুর্বার দুর্জয়।

প্রতিটি নিঃশ্বাসে পুষ্পের সম্ভার,
অন্যায় অপরাধ দর্শনে পরিহার।
যন্ত্রণা নেই তাঁর খুশী চিরসম্বল,
উজ্জ্বল হাসিমুখ আনন্দে বিহ্বল।

অনটনে ধরাধাম হলে সংকীর্ণ,
তখনও অকুণ্ঠ প্রাণ বিস্তীর্ণ।
হয়েছে পদার্পণ মহাকাশ ভেদিয়া,
পার্থিব কল্যাণে বশীভূত সানিয়া।

তারুণ্যের মোহ


বয়স আমার যতই বাড়ুক কমে নারে মোহ,
চির তরুণ মনটা আমার অসাড় নিথর দেহ!
কৃষ্ণচূড়ার লাল রঙে প্রাণ রাঙাই বারো মাস,
তারুণ্য হারানো দেহে প্রবীণ দীর্ঘশ্বাস!

যৌবনের সে স্মৃতিগুলো নেয় কেড়ে নেয় ঘুম,
বয়স ভীষণ বেড়ে গেছে ভুলি বেমালুম!
দূরন্ত সে ছুটে চলার দিনগুলো আর নেই,
শেষ সময়ে এসে তাইতো চড়া মূল্য দেই!

রাত্রি জেগে অশ্রু ঝরাই শুধুই অতীত ভাবি,
এমনি ভাবে পূব আকাশে ওঠে তরুণ রবি।
চনমনে সে আলোয় আমি বৃদ্ধ হয়েই রই,
নরত্ব বীরত্বপূর্ণ সে দিনগুলো কই?

অপার মোহ হৃদয় জুড়ে করে বসবাস,
তারুণ্য হারানো মানে বিশাল সর্বনাশ!
বয়স এমন ফুরিয়ে গেলে হয়না তাঁর উত্থান,
দুর্বলতার মাঝে প্রাণের তারুণ্য সন্ধান!

বীরত্বের অবসান হয়ে দুর্বলতার আধিক্য,
বাধ্য হয়ে বরণ করা অভিশপ্ত বার্ধক্য!
শক্তি সাহস স্নেহ সবই হলেও বিপন্ন,
জীবনসন্ধ্যার ঘোরে খুঁজি ব্যকুল তারুণ্য!!

ভোগবিলাসী

সুখ তোমাকে দেই আর না দেই দেবো ঠিকই জ্বালা,
ভালোবাসি আর না বাসি করবো অবহেলা।
যৌবন লাবণ্য তোমার আছে যতদিন,
ধরে রাখো পাশে আমায় পাবে ততদিন।

ভালোবাসার নামটা ভুলেও মুখে আনবে না,
ভোগের জন্য জন্মেছি গো ত্যাগের জন্য না।
সুখের চেয়ে দুঃখ অনেক বেশী ভালোবাসায়,
হাসায় কমই বেশীরভাগই চোখের জলে ভাসায়।

একের প্রতি অন্যের থাকে অনেক দায়িত্ব,
ভালবাসতে লাগে সাহস অগাধ বীরত্ব।
হৃদয় দিয়ে মনের ভাষা বুঝে নিতে হয়,
প্রেমের ফাঁদে ফাঁসা সহজ মুক্তি সহজ নয়।

ভোগবিলাসী জীবন যাপন বরং অনেক সহজ,
যখন যাকে তখন তাকে নিত্য নতুন রোজ।
মুক্ত স্বাধীন দিন রাত্রি কোথায় বিধি নিষেধ,
ভোগের কাছে সবাই সমান নেইরে তফাৎ বিভেদ।

রুপের জীবন ভোগের জীবন যৌবনের এই জীবন,
আগ্রহ আর ভক্তি থাকলে হতে পারো আপন।
অনুভব আর অনুরাগের কোন মূল্য নাই,
ভোগের তরে শরীর পেলে স্বাগতম জানাই।

নগন্য মিথ্যা

মিথ্যার মাঝে যারা করে সুখ সন্ধান,
আজীবন সাথী তাঁর কষ্টের ক্রন্দন।
খুটিনাটি মিথ্যায় সাময়িক লাভ হয়,
কখনোবা ক্ষণিকের বাহবাও পাওয়া যায়।

কথা আর কাজ হলে মিছে সমতুল্য,
কোন মানুষের কাছে পাবেনা সে মূল্য।
অগণিত মিথ্যায় চাপা দেয়া সত্য,
সম্মুখে এনে দেয় প্রকৃত উপাত্ত।

সত্য যখনই দেয় তাঁর হুঙ্কার,
থাকেনা অস্তিত্ব বানোয়াট মিথ্যার।
হতে পারে সংকটে মিথ্যায় দেয় ঠাঁই,
শান্তনা আছে তাতে মূলত শান্তি নাই।

ছোট ছোট মিথ্যার তুচ্ছ প্রহসন,
বৃহৎ কষ্টে ভরা বেদনার গুঞ্জন।
কথা কাজে নিত্য সততা সঙ্গী যার,
ধ্বংসযজ্ঞ হতে হয় তারা উদ্ধার।

ন্যায় নীতি নিষ্ঠা চরিত্রের অলংকার,
সত্যই শ্রেষ্ঠ সততা দুর্নিবার।
প্রশংসা পেতে নিলে মিথ্যার আশ্রয়,
ইজ্জত সম্মান পদদলিত হয়।

কৃত্রিম অসঙ্গতি


করেছে যে বড্ড ক্ষতি, সে আবেগের অধিপতি,
কর্মকাণ্ড আত্মঘাতী, বিপন্ন তাই অগ্রগতি।
অবিচ্ছেদ্য অন্ধকারে, ঘূর্ণায়মান চক্রাকারে,
হারায় যুগে যুগান্তরে, বাধ্য হয়ে সহ্য করে।

অগ্রগতির রক্তক্ষরণ, সত্ত্বায় সত্যের আন্দোলন,
করতে এ লজ্জা সংবরণ, অশ্রুজলে অবগাহন।
উত্তেজনায় বরফ গলে, উত্তেজিত ভূমণ্ডলে,
নিরাপত্তার আস্তাবলে, অত্যাচারের আগুন জ্বলে।

অনাচারের নিষ্পেষণে, অসঙ্গত আস্ফালনে,
চরম সত্য উদঘাটনে, অন্তরাত্মা প্রহর গোনে।
ব্যর্থতা নয় অযোগ্যতা, প্রশ্নবিদ্ধ সার্থকতা,
ঘৃণায় গড়া সে সখ্যতা, নির্লজ্জ যেআদিখ্যেতা।

বিপর্যস্ত তাও অক্ষত, হিংস্র বিবেক অসংযত,
প্রলোভনে নিষ্পেষিত, প্রার্থনাতেও অসম্মত ।
ব্যর্থতাতে উত্তেজনা, পরিশ্রমে সম্ভাবনা,
বারংবারের সম্পাদনা, সংবেদনশীল সমবেদনা।

মানবসৃষ্ট ধ্বংসযজ্ঞ, ধরিত্রীময় উপভোগ্য,
সুপ্রসন্ন হলেও ভাগ্য, প্রতিভাবান আজ অযোগ্য।
শিরোধার্য সমুন্নত, ক্লান্তচিত্ত অসম্মত,
বিঘ্নতাতে পরাভূত, অবাধ্যতায় অসঙ্গত।

তুমিময় আনন্দ


তোমাতে আছে কি আনন্দ, পৃথিবীর সাথে করি দন্ধ,
মহাশান্তির ওই ছন্দ, আহা কি মধুর কি অনিন্দ্য!
চির সুন্দর মহা বিশ্ব, আনন্দ পেতে লোকে নিঃস্ব,
তোমাতেই সপে সর্বস্ব, তোমার জন্য ট্রয় ধ্বংস!

তাজমহল গড়েছে শাহজাহান, মমতাজ তাতে চির অম্লান,
শুধু তোমাতে সুখ সন্ধান, ধরাময় প্রশান্তির গুঞ্জন!
তুমি দিলে সামান্য আশ্বাস, অন্তরে গড়ে ওঠে বিশ্বাস,
মাথা পেতে নিয়ে সর্বনাশ, যুদ্ধ করে শেষ নিঃশ্বাস!

তোমার জন্য ধরা ঘূর্ণায়মান,শুধু স্বস্তির অন্বেষণ,
তোমায় করলে আলিঙ্গন, আনন্দে সপি এই প্রিয় প্রাণ!
তোমাতে সুখ অত্যন্ত, শত উপভোগে নই ক্লান্ত,
রণক্ষেত্র হয় শান্ত, ধন্য ধরণীর প্রান্ত!

উদ্যম তুমি তুমি শক্তি, যন্ত্রণা ভরা প্রাণে মুক্তি,
মানবাত্মার অভিব্যক্তি, প্রলয়ঙ্করী বিভক্তি!
পৃথিবী যদি হয় ধ্বংস, সব প্রাণ হয় নির্বংশ,
সকলে হলেও নৃশংস, আনন্দ কমেনা এক অংশ।

তোমাতেই সমস্ত উচ্ছ্বাস, অন্তর জুড়ে শত উল্লাস,
তুমিহীন বৃহৎ সর্বনাশ, অসহ্য নির্মম পরিহাস!
আমরণ রবে এই বন্ধন, বিচ্ছেদে বেদনার গুঞ্জন,
তুমি সত্ত্বা জুড়ে সারাক্ষণ, তুমি দ্বারা আনন্দ প্রণয়ন!

অবৈধ সম্পদ


হাজারো নগন্য অতীব জঘন্য,
অবৈধ সম্পদে শ্রেষ্ঠ বরেণ্য।
তেমনি লাবণ্য নিষ্পাপ অনন্য,
বিকৃত চরিত্রে ঘৃণ্য সামান্য।

ক্ষুদ্র যন্ত্রণায় অথর্ব প্রস্তর,
বুক ভরা কষ্টে জ্বলমান অঙ্গার।
নক্ষত্র অগণিত শ্রেষ্ঠ সূর্য,
কল্যাণে আসেনা নয় সে প্রাচুর্য।

তৃষ্ণা মিটাতে চীৎকার ক্রন্দন,
অতি বৃষ্টিতে আসে মহাপ্লাবন।
বরফের স্তুপ প্রচন্ড ঠান্ডায়,
তখন অন্যত্র দাবানল জ্বলে যায়।

ফুটফাতে বাড়ন্ত শিশু হয় সম্রাট,
প্রাসাদে জন্মেও অনন্ত সংকট।
কেউ মহাচিন্তায় খুঁজে ফেরে স্বস্তি,
উঁচুতলায় অশ্রু সুখে হাসে বস্তি।

প্রতারণা দেয়নি কখনো প্রশান্তি,
সফলতা বয়ে আনে সততার ক্লান্তি।
দীক্ষায় শিষ্য হয়ে ওঠে ওস্তাদ,
কল্যাণে আসেনা অবৈধ সম্পদ।

উত্তাল যৌবন


উত্তাল যৌবন যেন ভরা নদী,
দুই কুল ভেসে যায় ঢেউ লাগে যদি।
পূর্ণিমা চাঁদ হয়ে জ্যোৎস্না ছড়ায়,
কখনোবা বিজলীর আলো ঝলকায়।

বাসনা জাগানো রাতে কামনার সূরে,
মধু মোহে ছুটে আসে থাকে যত দূরে।
নির্ঘুম চোখে চোখ রাত শেষ হয়,
ঘামে ভিজে দুটি দেহ প্রশান্তি পায়।

দুর্বার দুরন্ত যৌবনে যদি,
বাধা আর বিপত্তি আসে এক নদী।
হৃদয়ের সাঁকো দিয়ে পার হয়ে যায়,
উভয়ের প্রতি তারা থাকে তন্ময়।

আমাবস্যার রাতে কে দেখাবে পথ?
যৌবনে দীপ্ত সজ্জিত রথ।
সোহাগের আলো জ্বেলে চোখাচোখি হয়,
উত্তাল যৌবন জুড়ে বিস্ময়।

যৌবন শ্রেষ্ঠ এই ধরাধামে,
মঙ্গল ডেকে আনে তাঁর সংগ্রামে।
উদ্দীপনায় ভরা যৌবনময়,
করো উপভোগ আর করো সঞ্চয়।

অভিশপ্ত বেকারত্ব


এই বেকারত্ব নাকি অভিশপ্ত,
বিনিদ্র সত্য বাসনারা সুপ্ত!
মিথ্য উপাত্ত আর বেকারত্ব,
সাম্প্রতিক উপায়ে জুড়ে দেয় শর্ত।

উত্থিত যুক্তি ক্রোধের অভিব্যক্তি,
পদদলিত হয়ে আয়োজিত মুক্তি।
রুখে পরাশক্তি বিবেকের বিলুপ্তি,
একত্রে থেকেও আত্মার বিভক্তি।

প্রাণ সংকীর্ণ দেহ জরাজীর্ণ,
সজ্জিত স্বপ্ন চূর্ণ বিচূর্ণ!
বাড়ন্ত প্রাচুর্য ঐশ্বরিক ঐশ্বর্য,
অহংকারী মনোভাব বিঘ্নিত ধৈর্য।

তবু শিরোধার্য শৌর্য বীর্য,
স্মৃতি জুড়ে অম্লান তার কারুকার্য।
একতাবদ্ধ নয় অসাধ্য,
কলুষিত মতবাদ আজ অবাধ্য।

ধৈর্যের স্বল্পতা গতিশীল ব্যস্ততা,
নিষ্ক্রিয় করে দেয় প্রকৃত যোগ্যতা।
কাটিয়ে আড়ষ্ঠতা গড়ে তুলে সখ্যতা,
নিষ্ফল তবু আজ দীক্ষিত দক্ষতা।

স্নায়বিক স্পন্দন

ক্লান্ত দেহে ঘেমে সুখের পরিশ্রমে,
বাধ্য হয়ে থেমে বিভোর গভীর ঘুমে।
আকড়ে বাহুডোরে বিস্ময়ের আদরে
নিস্পাপ অন্তরে রাখা যত্ন করে।

এ মায়ার সংসার স্বপ্ন জীবনভর,
শান্তি নিরন্তর থাকলে সহচর।
অনন্ত বন্ধন আত্মার স্পন্দন,
নয়গো প্রহসন প্রকৃত প্রিয়জন।

যে রক্তক্ষরণ করতে সংবরন,
জীবন বিসর্জন লজ্জা সারাক্ষণ।
যখন সর্বনাশ নিষ্ঠুর পরিহাস,
ঘৃণিত নির্যাশ বিধ্বংসী উল্লাস।

শান্তি জলাঞ্জলি আনন্দের অঞ্জলি,
নিষ্ফল করতালি শান্তির পদাবলী।
বিঘ্নতার আঘাতে প্রতিটা রাত্রিতে,
আকড়ে এ বাহুতে স্পন্দন স্নায়ুতে।

এই মোহ প্রত্যয় ওই দেহে তন্ময়,
দূরত্বে সংশয় নৈতিক অবক্ষয়।
সুপ্ত স্পন্দন স্পন্দিত সারাক্ষণ,
অন্তরে বন্ধন শরীরে গর্জন।

জৈবিক বাসনা

জৈবিক চাহিদার প্রয়োজনে
অতিরিক্ত সুখ অন্বেষণে,
বিকল্প ভ্রমরের গুঞ্জনে
জ্বলে অগ্নি পুস্পবনে।

সজ্জিত শান্তির উৎখাত
অবৈধ কামনার উৎপাত,
আগ্রাসী মাদকতায় উন্মাদ
পদতলে অফুরান সম্পদ।

সুখ সুখ হুঙ্কার অন্তরে
সর্বস্ব হারা সংসারে,
অপবিত্রতা প্রাণে ভর করে
সঞ্চিত সব অন্যের তরে।

ধূলিসাৎ হলে মান সম্মান
সাময়িক বাসনার স্পন্দন,
নিত্য নতুনের আহ্বান
অবিরাম সম্ভ্রম লুন্ঠন।

সর্বদা প্রাণ বিস্তীর্ণ
শরীরটা হল জরাজীর্ণ,
কাংখিত লক্ষ্যই স্বর্ণ
কামনা মানেনা জাতি বর্ণ।

চাইনা এ আলো

আলোকে দেখেছি আমি নিভৃতে কাঁদতে,
নিজেকে চেয়েছে সে আঁধারেতে ঢাকতে!
আলো জলা রাত্রিতে শুনি কত চীৎকার,
আঁধারে লুকিয়ে তাই প্রচেষ্টা বাঁচবার!

আঁধারে বসত করি আলো ভালোবাসিনা,
আলোতে অঙ্গ জ্বলে আর আলো জেলোনা!
ওই আলোয় ধর্ষণ যায় মান সম্মান,
খুনে লাল রাজপথ সরলের বলিদান!

আলো জ্বেলে লুটপাট মাদকের বন্যা,
দেহ বেঁচে জীবিকা যোগায় সুকন্যা!
ডাক্তার বেঁচে রোগীর অঙ্গ প্রত্যঙ্গ,
ওই আলোতে এ ভুবন হয়েছে উলঙ্গ!

এ আলোতে পরকীয়া রেখে শিশু সন্তান,
অন্যের হাত ধরে বেহায়া মা গায় গান!
অবাধে মানুষ মেরে কেউ খুঁজে ফেরে সুখ,
এই আলোয় ফেটে যায় ছেলে হারা মার বুক!

কত শত প্রতারনা আলো জেলে হয় আজ,
মনে হয় আলো দেখে আঁধারেও পায় লাজ।
যে আলোয় অপরাধ চাইনা সে আলো,
তাঁর চেয়ে ক্ষতিহীন আঁধার আরো ভালো।