নূর ইমাম শেখ বাবু এর সকল পোস্ট

নূর ইমাম শেখ বাবু সম্পর্কে

রোজ কবিতা রচি কবিতার মাঝে বাঁচি, কিন্তু আমি বসত করি মৃত্যুর কাছাকাছি!

প্রথম বৃষ্টি ফোঁটা

বেশ কিছুদিন পেরিয়ে গেছে পৃথক হবার পর,
সব কিছুতে পরিপূর্ণ শূন্য তবু ঘর!
রাত্রি দিনের বিভেদ যেমন আলো আঁধার কালো,
তেমনি তুমি বীণা আমার জীবন অগোছালো!

আজ এ মধুর পূর্ণিমাতে জ্যোৎস্না ভরা রাতে,
একলা নাকি কাটাও সময় প্রিয় কারো সাথে?
হাসলে গালে টোল পড়ে কি তোমার আগের মতন?
আমার কথা মনে পড়ে একলা থাকো যখন?

মনে পড়ে যেদিন প্রথম হয়েছিল দেখা?
কপাল জুড়ে পড়েছিল বিরক্তিকর রেখা।
বৃষ্টি ভেজা পাতলা কাপড় জড়িয়ে ছিলে গায়,
অবাক চোখে তাকিয়ে ছিলে মেহেদি রাঙা পায়।

আজকে যদি থাকতে পাশে গল্প হত কত,
কল্পনা নয় বাস্তবতায় তৃষ্ণা মিটে যেত।
হয়তো তাতে শুকিয়ে যেত বুকে হওয়া ক্ষত,
আর এ হৃদয় ভুলে যেত দুঃখ ব্যথা যত।

সেই সেখানে দাঁড়িয়ে আমার আজো মনে হয়,
বৃষ্টি ভিজে তুমি আছো আমার অপেক্ষায়।
মরিয়া হয়ে ঘর ছেড়ে আজ বাহির পানে ছোটা,
মেঘ জমেছে পড়ল বুঝি প্রথম বৃষ্টি ফোঁটা।

তাকে চাই তাকে চাই


অন্তর জুড়ে শুধু ভাবনার, কোলাহল-কোলাহল,
সত্ত্বা জুড়ে হাসি মুখে আছে, অবিচল-অবিচল।
দিনরাত ধরে ভেবে ভেবে চোখে, ঘুম নাই-ঘুম নাই,
বিনিদ্র এই আত্মা জুড়াতে, তাকে চাই-তাকে চাই।

প্রেমের নদীতে পাল তুলে আমি, ভেসে যাই-ভেসে যাই,
আর ভালোবাসা ফুল হয়ে ঝরে, আঙিনায়-আঙিনায়।
কষ্ট পেলেও করবোনা, আজ প্রতিবাদ-প্রতিবাদ,
থাকনা হৃদয় আত্মা জুড়ে অবসাদ-অবসাদ।

যতটা দূরে যেতে চাও প্রিয়, চলে যাও-চলে যাও,
আছে প্রয়োজন যা কিছু সব, নিয়ে নাও-নিয়ে নাও।
হৃদয় অন্তর জুড়ে চলছে, প্রহসন-প্রহসন,
তোমায় নয় প্রেম হারানোর ভয়, সারাক্ষণ-সারাক্ষণ।

যেখানে থাকো যেভাবে থাকো, দেখা দাও-দেখা দাও,
এই বুক জুড়ে কত হাহাকার, শুনে যাও-শুনে যাও।
চলার পথে যদি তুমি হও, সহচর-সহচর,
অশেষ সুখে পূর্ণতা পাবে, অন্তর-অন্তর।

বিরহ কষ্ট সবকিছু ভুলে, থাকা যায়-থাকা যায়,
প্রাণে যারে চায় সে যদি হায়, সাথী হয়-সাথী হয়।
তাঁরা তো সারাটা জীবন করেছে, পরিহাস-পরিহাস,
নোংরামি যাদের অন্তরে করে, বসবাস-বসবাস।

আয়নার বায়না


আয়না বড্ড বায়না ধরে
দেখবে নিজেকে,
স্বপ্ন নিয়ে বসে থাকে
দারুণ পুলকে।

সামনে আসে কাঁদে হাসে
দ্যাখে অপলক,
আশায় অশ্রুজলে ভেজে
আয়নার দুই চোখ।

তাঁর ভেতরে লোক নিজেকে
দিব্যি দেখে যায়,
খুব সাধারণ ত্রুটি তাতে
দৃষ্টিগোচর হয়।

ভেতর তাঁদের লোভ লালসায়
কতই অসংযত,
আয়না নিজে দেখে সেসব
সর্বদা বিব্রত।

অবশেষে আয়না যখন
চোখ রাখে আয়নায়,
ভেতর বাইরের সকল ভ্রান্তি
স্বচ্ছ দেখতে পায়।

ফাটকি নামাজ


মসজিদে যাই মাঝে মধ্যে
নিজের ইচ্ছায় নয়,
শুক্রবারে শুয়ে থাকলে
আম্মু বকা দেয়।

ঘুম ভেঙে যায় ইমাম সাবের
খুৎবা হলে শেষ,
অল্প স্বল্প জুম্মার নামাজ
দুটি রাকাত বেশ।

সাতাশ রোজা সবাই যাচ্ছে
আমিও তাই যাই,
ওরে বাবা এক ওয়াক্ততেই
কোমর ব্যাথা ভাই।

ওই বেহেশতের চাবি নামাজ
পাওয়া সোজা নয়,
ধীরে সুস্থ্যে পাঁচটি অয়াক্ত
দৈনিক পড়তে হয়।

যদি কেহ আমার মত
হওগো ফাঁকিবাজ,
তাঁর উপরে আল্লাহ্‌ তায়ালা
সব সময় নারাজ।

অগ্নিদগ্ধ চিৎকার


আকাশ বাতাস জুড়ে শুধু চিৎকার,
নিঠুর আগুনে সব পুড়ে ছারখার।
অগ্নিদগ্ধ হওয়া লাশ চেনা দায়,
কষ্টে আগুনেরই চোখ ভিজে যায়!

যে ঘটালো ভয়াবহ এই কান্ড,
নিজ কাজে অবিচল সে পাষণ্ড।
ছেলে হারা মা কেঁদে অশ্রু ফুরায়,
অনিয়ম বেড়ে চলে প্রতিকার নয়।

বিধাতার নামে ওরা করেছে শপথ,
ফুলে ফলে ভরবে নিজের জগত।
সারা দুনিয়া যাক পুড়ে মরে যাক,
ওদের ভুবন শুধু নিরাপদ থাক।

দুর্ঘটনার পর কানে যায় জল,
চলে একই অন্যায় একই ফলাফল।
পুড়ে কালো কয়লা শিশু নিষ্পাপ,
জেনে শুনে অপরাধী পেয়ে গেল মাফ।

মায়ের মুখে হাসি ফুটবে না আর,
পরিবেশ ফিরে পাবে নিজ অধিকার।
যে আগুনে চারিদিক জুড়ে হাহাকার,
সে আগুনে জ্বলে তুমি দিলে চিৎকার।

অসামঞ্জস্যতা


বস্ত্র পরিহিত থেকেও যেন উলঙ্গ,
উম্মাদ ওড়ার আশায় ডানা কাঁটা বিহঙ্গ।
সাজ-সজ্জা নয় এ যেন শরীর প্রদর্শন,
নিরাপদ আশ্রয়ে থেকে গজব নিমন্ত্রণ।

কর্ম গুণে ফল দিয়ে যায় এ জগৎ সংসার,
রাতারাতি দলিল বদলে ভঙ্গ অঙ্গীকার।
ভদ্রতা তো অর্থ বিত্তে হয়না বিনিময়,
ভবিষ্যতের কষ্টের কারণ আজকের অপচয়।

প্রীতি স্নেহ ভালোবাসা সবই বানিজ্যিক?
উন্নত শীর করলে নত রক্ষী যে দাম্ভিক।
পরিপূর্ণ হবে নাকি জগতৎ ধোয়াশায়,
কিংবা আপন অঙ্গ ঢাকা ঘন কুয়াশায়?

ব্যক্ত করা কষ্টের অতি তুচ্ছ বিষয় নয়,
জীবন্তরা নিদ্রা গেলে লাশের মিছিল হয়।
গুনের কদর নগন্য আজ লাবন্য প্রধান,
চুরি করে প্রকাশ্যে তাঁর অফুরান সম্মান।

কাঙ্ক্ষিত সাফল্য নিয়ে ধর্না দ্বারে দ্বারে,
অজ্ঞরা উলঙ্গ হলেই সফল হতে পারে।
আঙুল চোষা গৃহস্থালি দক্ষতা যোগ্যতা,
নগ্ন শরীর রক্ষা করবে সামঞ্জস্যতা?

কলমা নসিব করো

করুণা করো ওগো আল্লাহ্‌ মাবুদ দয়াময়,
আমার মরণকালে যেন কলমা নসিব হয়!
মালাকুল মউত আসার আগে করো খাঁটি মুমিন,
কবর বাসের দিনগুলো মোর না হয় যেন কঠিন!

সিজদারত অবস্থাতে আমার মৃত্যু দিও,
এই অধম বান্দাকে তোমার জান্নাতেতে নিও!
পবিত্র রমজানের কোন প্রিয় শুক্রবার,
রাজী খুশী হয়ে রূহ নিয়ে নিও আমার!

তাঁর আগে সব গুনাহ গাথা করো প্রভু মাফ,
তওবা করছি এই জীবনে করবো না আর পাপ!
তোমার আরশ ছায়াতলে দিও আমায় ঠাই,
দুনিয়ার সুখ চাইনা আখিরাতের শান্তি চাই!

চাই হতে চাই সাহাবিদের মতো চরিত্রবান,
তোমার প্রতি সিজদা করি তুমি প্রভু মহান!
এই আসমান এই জমিনে সব তোমারই সৃষ্টি,
আমার উপর নাজিল করো রহমতের বৃষ্টি!

শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে রক্ষা পেতে চাই,
মহান স্রষ্টা তুমি ছাড়া কোন ইলাহ নাই!
তোমার জিকির করি যেন সন্ধ্যা ও সকালে,
কলমা নসিব করো প্রভু আমার মরণ কালে!

প্রভেদ


কোথাও অতি বৃষ্টি ঝরে বানে ভাসে ধরা,
আবার কোথাও খরতাপে প্রাণী পাগল পারা।
তুষার ঝড়ে কোথাও কোথাও জীবন বিপন্ন,
কোথাও দাবানলে জ্বলে সবুজ অরণ্য।

কেঁদে কেঁদে অশ্রু ফুরায় কোথাও হাসির ঢল,
কোথাও অন্ন পথের ধুলায় কোথাও অমিল জল।
খরস্রোতে কূল ভেঙে যায় কোথাও জাগে চর,
গাছতলাতে জীবন যাপন কারো বিশাল ঘর।

বিনিদ্র কেউ ওষুধ খেয়েও কারো এমনিই পায়,
খাবার জন্যই বাঁচে কেহ বাঁচার জন্য খায়।
লড়াই করে কোনমতে প্রাণটা ধরে রাখে,
কেহ মরার পরেও হাজার বছর বেঁচে থাকে।

ভুবন লোকে লোকারন্য মনের মানুষ নাই,
কেহ খুশী অল্প পেয়ে কারো অঢেল চাই।
নানান রঙের মানুষ তবু সবার রক্ত লাল,
অর্থ বিত্ত প্রিয় কারো ইবাদত সম্বল।

খালি হাতে আসা আবার যাওয়াও খালি হাতে,
তবু দু-হাত ভরে পেতে জাগা রোজ প্রভাতে।
ডিগ্রী নিয়েও জানেনা কেউ শিক্ষা কারে কয়,
আবার কেহ মূর্খ হলেও বিদ্বান পরিচয়।

আর কতটা?

নদীর বুকে কতটা প্রেম জাগলে ঝর্না ঝরে যায়?
কত প্রেমের তৃষ্ণা হলে সাগর তারে বুকে নেয়?
কত তাপে পুড়ে সোনা তাঁর পরে হয় অলংকার?
বাঁধন শক্তপোক্ত হবে কেমনে করলে অঙ্গীকার?

কত শাস্তি পাবার পরে বন্দী হৃদয় মুক্তি পায়?
ভবের প্রতি কত মোহে রোজ ও রবির হয় উদয়?
রাতকে কত ভালোবেসে জ্যোৎস্না বিলায় পূর্ণিমা?
কেমন করে বাসলে ভালো হবে মধু চন্দ্রিমা?

হৃদয় জুড়ে বসত হবে কখন পড়লে চোখে চোখ?
আর কত অপেক্ষা করলে হওয়া যাবে সম্পূরক?
কতটা মেঘ জমলে তবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যায়?
কত বৃষ্টি নামলে তবে দু-কূল ছেপে বন্যা হয়?

কত কাঁটার আঘাত সয়ে আসে পরিপক্কতা?
স্নিগ্ধ মধুর পরশ পেতে লাগে কত যোগ্যতা?
কত গভীর ভালোবেসে তবে জীবন দেওয়া যায়?
কত রাতের আলীঙ্গনে অন্তর পরিপূর্ণ হয়?

সঙ্গী পাবার জন্য কত একা থাকতে হবে?
কত স্বপ্ন দেখার পরে বাস্তবে রূপ নেবে?
কত অশ্রু ঝরলে তবে স্বপ্ন আশা পূর্ণ হয়?
কত অবহেলার পরেও পর মানুষটা আপন রয়?

সিজদায় লুটে পড়ি

চলার পথে কত গুনাহ করে ফেলি হায়,
জীবনটা যে ক্ষণস্থায়ী হৃদয় ভুলে যায়!
ইহকালের লোভ আর মোহ অন্ধ করে দেয়,
আসলে এই জীবনটা তো আসল জীবন নয়!

সাময়িক এই জীবন হলো পরীক্ষাগার যেমন,
পরকালের প্রস্তুতি নেই করে মনের মতন।
সামনে যতই পড়ে থাকুক দামী মানিক রতন,
অর্থ বিত্ত তুচ্ছ ভাবী পথের ধুলো যেমন।

আমার হৃদয় কাড়ে না ওই অট্টালিকার সুখ,
রঙ বেরঙের সুধা পানেও তৃষিত রয় বুক।
আল্লাহ্‌ তায়ালার প্রশংসাতে হই যে পঞ্চমুখ,
তাতেই মাবুদ দূর করে দেন অন্তরের সব দুখ।

কোরআন তেলাওয়াতে আমার বক্ষ শীতল হয়,
সকল কর্ম যাই ভুলে যাই আযান যখন দেয়।
মসজিদে প্রবেশ করিলেই অন্তরটা জুড়ায়,
নামাজ শেষেও মসজিদেতে থাকার ইচ্ছা রয়।

জীবন আর জীবিকার মোহে বাইরে এসে পড়ি,
ইচ্ছাতে আর অনিচ্ছাতে পাপের পাহাড় গড়ি।
মুয়াজ্জিনের মধুর হাকে আবার কর্ম ছাড়ি,
পরকালে নাজাত পেতে সিজদায় লুটে পড়ি।

এক ফোঁটা অশ্রু


এক ফোঁটা জল দাও এ চোখে তুলেছি দুটি হাত,
কবুল করো মূর্খ অধম বান্দার মোনাজাত।
নির্বোধ আমি করে ফেলেছি পাহাড় সমান পাপ,
মহীয়ান তুমি শ্রেষ্ঠ প্রভু করে দাও মোরে মাফ।

আমার সীমার প্রাণে জাগাও পরকালের ভয়,
জানি আমার অশেষ গুনাহ ক্ষমার যোগ্য নয়।
খেয়ানত করেছি কতো অফুরান সে ঋণ,
সেই হিসাব চেওনা প্রভু রোজ হাসরের দিন।

আমার দিলে খোদা তুমি মারিওনা মোহর,
এই দু চোখে জল এনে দাও তুমি নৈশ প্রহর।
অধম আমি নফসের উপর করেছি অত্যাচার,
তওবা করছি খাছ দিলে পাপ করবো না গো আর।

তুমি আল্লাহ্‌ দয়ার সাগর পাথর হৃদয় আমার,
নরম কোমল শীতল করো নেবার আগে কবর।
সকল গুনাহ মাফ করে দাও বানাও খাঁটি মুমিন,
এই চোখে জল দাও এনে দাও আল্লাহুম্মা আমীন।

ক্ষমা করার ক্ষমতা তো একমাত্র তোমার,
তোমার মাবুদ অজানা নয় ভুলের স্বভাব আমার।
কুরআনের আয়াতে করো আমার অন্তর শীতল,
মোনাজাতের সময় আমার চোখ ভরে দাও জল।

বসন্ত বরণ

শীতের শিশির না শুকাতেই এলো বসন্ত,
সৃষ্টি সকল পেলো খুঁজে সুখের সীমান্ত।
দখিন হাওয়া লাগতে গায়ে জাগলো শিহরণ,
ব্যপক উদ্দীপনায় ধরার বসন্ত বরণ।

ভ্রমর দেখে বেজায় লাজুক সদ্য ফোঁটা কলি,
আকাশ মেঘে প্রাণের কথা হচ্ছে বলাবলি।
পাগলা হাওয়ায় যখন প্রিয়ার আঁচল ওড়ে হায়,
দারুণ মোহে প্রিয় তখন স্বপ্নে ভেসে যায়।

জাদু মাখা ফাগুণ এলে মন বসেনা ঘরে,
সকাল সন্ধ্যা ডাকে কোকিল হৃদয় ব্যকুল করে।
প্রকৃতি এক নব বধূর সাঁজে সেজে রয়,
এমনি দিনে সঙ্গী ছাড়া কেমনে একা রয়?

হায়রে ফাগুণ জ্বাললি আগুণ বাড়িয়ে দিলি জ্বালা,
কি হয়ে যায় ভেতর জুড়ে যায়না মুখে বলা।
আলীঙ্গনের মাতাল মোহের অন্তর জুড়ে বাস,
তৃষ্ণা বেড়ে দ্বিগুণ হলো করলি সর্বনাশ।

মান অভিমান লজ্জা ভুলে এই ফাগুণের বেলা,
বাঁধ ভাঙা এক মোহের টানে প্রাণের মিলন মেলা।
হায় বসন্ত ফুলের ঘ্রাণে মাতালি এই ভুবন,
কামনার আগুনে জ্বলে করছি তোরে বরণ।

ফাল্গুনী হাওয়া

ফুলে ফুলে সেজেছে বাংলার প্রান্ত,
কোকিলেরা বলছে এসেছে বসন্ত।
হলুদ গাদায় ভরা ধরা অফুরন্ত,
হলুদ শাড়ীতে যুবা রূপসী অনন্ত।

আকাশ বাতাস জুড়ে ফাগুণের উৎসব,
সুখের পরশ পেতে পীয়াসার কলরব।
দখিনা বাতাসে হলো সেই সুখ অনুভব,
এসেছে এসেছে আজ ফাগুণ মহানুভব।

পাখ পাখালির আজ উৎসব আয়োজন,
আনন্দে সজ্জিত মিটাতে প্রয়োজন।
উর্বশী ফুল জুড়ে ভ্রমরের গুঞ্জন,
আজ জোড়া লেগে যাবে সব ছেড়া বন্ধন।

সবে আজ দিয়ে দিবে হয়েছে যা সঞ্চয়,
ফাগুণের শুরুতে বুক ভরা প্রত্যয়।
হোক না এই দিনে হোক কিছু অপচয়,
ক্ষতি নেই সব সপে যদি সুখ পাওয়া যায়।

মরি আহা সুখে মরি ফাল্গুনে আহারে,
ভুবন কানন জুড়ে পুষ্পের বাহারে।
এই দিনে যদি কাছে পেয়ে যাও তাহারে,
বসন্তে মুড়ে দিও ফাল্গুনী হাওয়ারে।

কখনো কখনো


কখনো কখনো সুখের চেয়ে বিরহ মধুর লাগে,
আনন্দ দেয় অনেক বেশী ভোগের চেয়ে ত্যাগে।
কষ্টে নয়গো আনন্দেও কাঁদেন অনেক লোকে,
বহু কাংখিত মহানন্দে অশ্রু আসে চোখে।

কখনো কখনো মানুষ পশুর চেয়েও অধম হয়,
হিংস্র জানোয়ারের মতো রক্ত চুষে নেয়।
এই মানুষই উজাড় করে মানুষ ভালোবাসে,
একের জন্য অন্যে জীবন সপে দিয়েও হাসে।

কখনো কখনো মৃদু হাওয়া ভয়ংকর রুপ নেয়,
বৃক্ষ ফসল বসত বাড়ি মাটিতে লুটিয়ে দেয়।
এই হাওয়াতেই কানন জুড়ে ফুলকলিরা দোলে,
পরান জুড়ায় মধুর ঘ্রানে যন্ত্রণা যায় ভুলে।

কখনো কখনো বৃষ্টি ধারা মহামারী রুপ নেয়,
নদীর দুটি কুল ছাপিয়ে প্রলয় বানে ভাসায়।
এই বৃষ্টির ফোটায় আবার ধরার তৃষ্ণা মেটে,
ভুবন জুড়ে সবুজে ছেয়ে ফুলে ফলে ভরে ওঠে।

কখনো কখনো ভালোবেসে লোকে নিঃস্ব হয়ে যায়,
সবকিছু সপে আজীবন কাঁদে বিরহ বেদনায় ।
এই ভালোবাসা যুগ যুগ ধরে টিকিয়ে রেখেছে ধরা,
কেউ পেয়ে আর কেউ না পেয়ে হয়েছে পাগল পারা।

অকৃত্রিম ভালোবাসা

যার কারনে হলে কবি, নাওয়া খাওয়া ছাড়লে সবি,
হয়েছে কি তাঁর আকাশে, কভু উদয় তোমার রবি?
যাকে নিয়ে জীবন যুদ্ধ, দেহ আত্মা অবরুদ্ধ,
কবে হবে তোমার ছোঁয়ায়, তাঁর প্রাণটা সমৃদ্ধ?

আতকে ওঠে বুকের মাঝে, পরান জুড়ে যার বিরাজে,
খুব উতলা হলো হৃদয়, মন বসেনা কোন কাজে।
সইছ এমন নিঠুর জ্বালা, আর সকলের অবহেলা,
তোমার আকাশ জুড়ে কভু, ভেসেছে তাঁর মেঘের ভেলা?

তাকে ছাড়া তুমি যদি, জীবন যে এক ব্যথার নদী,
বৈঠা বিহীন তরী হয়ে, ভাসো সেথায় নিরবধি।
চিন্তা জুড়ে আর চেতনায়, মোহিনী মাতাল কামনায়,
ইচ্ছে খুশীর ধারক বাহক, তোমায় হাসায় আবার কাঁদায়।

নিঃশ্বাসে বিশ্বাসে ধরে, পরম যত্নে লালন করে,
প্রাণের চেয়ে আপন ভেবে রেখেছো অন্তরের ঘরে।
জমিয়ে রাখা সকল আশা, যার কারনে ভালোবাসা,
সে কি কভু চায় বুঝিতে, কাছে এসে মনের ভাষা?

যদি তোমার চোখের জলে, দুখের নদী বয়ে চলে,
মুখ ফিরিয়ে অভিমানে, সে যদি না কথা বলে।
তবু তারে ভালোবাসো, মিষ্টি করে মুচকি হাসো,
এমনি ভাবে স্বপ্ন জুড়ে প্রতি রাতে কাছে আসো।