শাহ আজিজ এর সকল পোস্ট

গুপ্তাঙ্গ

মহামান্য আদালত
আমার গোপন অঙ্গ বলে কিছু নেই
সকলি প্রকাশ্য এবং প্রকাশ্য দিবালোকে
যখন হাগি, মুতি- বেড়া, ঘাস, বাঁশ
গাড়ু, জল সবাই দেখে পষ্ট করে
তো – গোপনাঙ্গ আর রইল কই?

আজ জেলার আমায় কাপড় পরিয়ে দিল
বলল – মাস্টারমশাই,
এভাবে নাঙ্গা হয়ে যেতে নেই আদালতে।
বিশ্বাস করুন এই বৃদ্ধ বয়েসে নিস্তেজ অঙ্গ
আর সফেদ কাশফুল কেশমালা
মনে হয় একটা বাড়তি কিছু বয়ে চলছি !

উকিলবাবুর স্ত্রী আমায় চেয়েছিলেন ঠিক
কিন্তু নিরুপায় মাস্টার টুইশনি ছেড়ে
বেচে গেলাম বলে যা ভেবেছিলেম
তা মোটেও সত্যি ছিলনা, সত্যি ছিল
স্ত্রীলোকটি আমায় ডিলডো পরিয়ে
স্বেচ্ছাশ্রম করে আনন্দ লুটেছে
যেমনটি দীপালি করেছিল কৈশোরে
বলেছিল ‘কি কালো কেশ তোর স্বর্ণাঙ্গে’
আমি দুহাতে মুখ ঢেকেছিলাম লাজে।
কবিতা ভাল লাগে বলে ভক্তকূল হয় উচাটন
আমায় বরং আমৃত্যু হাজতে রেখে দিন।

জেন্ডার পর্ব

আমার দীর্ঘ ঘুম ভেঙ্গে মনে হল
আরামেই ছিলাম বেশ
আশেপাশে নারী ও পুরুষ কণ্ঠ
উপরে চোখ ধাঁধানো বিকট আলো
আমি অপারেশন থিয়েটারের টেবিলে !
সার্জন মুখ বাড়িয়ে বলল ‘সাকসেসফুল’।

চমকিত উৎফুল্ল মন চা খেতে চাইছে বড্ড ।
পুরুষ মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে নিয়ত
গুছিয়ে রাখে ২০ , ৫০ হাজার বা দুইলাখ
ঘোচাতে জঙ্গির নাম পুলিশের খাতা থেকে
নারী হলে বিপদ একদম নয় কম
শিক্ষক ,আত্মীয় , ফেসবুকের বন্ধু এবং পুলিশ
করবে ধর্ষণ ক্যামেরা লাগিয়ে ইচ্ছেমাফিক ।
বড্ড বিপর্যস্ত জীবন ছিল আমার
ব্যাচেলর পুরুষ হওয়ার অপরাধে
এতো টাকা কোথায় পাব বেকার আমি
তাই অপারেশন টেবিলে শুয়ে বিপদ কাটিয়ে
কোমর দুলিয়ে ওষ্ঠে রঞ্জনী চোখে কাজল গাল ভরা পান
হয়ে যাই তৃতীয় লিঙ্গের জীব ঠাস ঠাস করে দুহাতে তালি
হেঁড়ে গলায় গাই হিন্দি বাংলা গান

কি ভীষণ নিরাপদ জীবন জানে শুধু পান্থজন ।।

শিরোনামহীন ঘৃণা

ঘৃণ্য ঘৃণিত অপরিমিত হৃত

গন্ধে ছন্দে তপোবন পুলকিত

অবনত আমি ঘৃণার আকরে

ভালবাসা কি থাকে এই বৃক্ষ কোটরে !

প্যালিওলিথিক থেকে ঘৃণা ও ভালোবাসা

গান্ধারা লগ্নে উকি দিয়ে গেল আশা

মধ্যলগ্নে ঘৃণার হানাহানি

দেবদেবীর তরে বলিদানে ভ্যুলোক ঋণী

নত হও দেবগন , সীমিত কর নিধন প্রাণী

এইসকল মানব বৃক্ষ বন্যপ্রাণীকূল

ঘৃণায় ভাসায় গোপনে , ভালোবাসার ছলে দানে ফুল

তবুও বঞ্চিত আমি ক্ষুব্দতা প্রকাশি একান্তে

ভালোবাসা ও ঘৃণার যৌথ মল্লারে প্রলম্বিত দিনান্তে ।।

অধিকার

মায়ের উষ্ণ দুধে মুখ ডুবিয়ে
আকণ্ঠ করে পান
করেছিলাম প্রতিষ্ঠা
শিশুর অধিকার।
যুবকের অধিকার যুবতীর
সুরম্য শরীরে
বৃদ্ধদের অধিকার
ঘোরেফেরে ঈশ্বরেরে লয়ে।
মা করেন দান দুগ্ধধারা
সন্তানেরে উদরপূর্তি তক
তিনি লভেছিলেন স্বাধীনতা
আর
পৃথিবীর সর্বোচ্চ অধিকার
সঙ্গে গর্বিত নারীর স্পর্ধা।
যুবতী মেলে ধরে পুষ্পরাজি
লোটে যুবকের তাবৎ ঘাম
ক্ষুরধার জিহবার অগ্রে চেটেপুটে
দ্বিধাহীন আদিম ও অদম্য
কি আশ্চর্য্য অধিকার !
বৃদ্ধার শীতল শরীরে
জেগে থাকে ঘাপটি মেরে
তুষের ছাই ঢাকা আগুন
সমাজ তারে ঠেলেঠুলে
দেয় পাঠিয়ে উপাসনালয়ে।
কি অবিচার কূখ্যাত অনাচার
সবারে দিয়ে স্বাধীনতার স্বাদ
খুলে দাও শৃংখল পরাধীনতার
জেগে ওঠো অখ্যাত অচেনা
ওইযে হেটে যাওয়া কুয়াশার আবরনে,তোমরা কারা?
হটাও সুশীল ,সুবিধাভোগী ইতরের দল
সর্ব অধিকার আর স্বাধীন আচারে ভরুক এ অঞ্চল।

০২/০১/২০০৮

শ্রেনীহীন কথকতা

শ্রেনীহীন সংগ্রামের কথা বলে বলে তারা সব
তারা সব গেছে চলে সূর্যাস্তের ওপারে
দিয়েছে পৃথিবীকে তচনছ করে উদার মনে
মার্কস এঙ্গেলস্ লেনিন ক্রশ্চেভ মাও
কিম চে চারু ফিদেল করে গেছে প্রতারনা
অপরিসীম নিরন্ন বুভুক্ষু মানুষের সাথে
ভ্রান্ত মতবাদ হয়েছে রফতানী সাথে মারনাস্ত্র
শুধুই মানুষ হত্যার তরে শুধুই রক্ত
বহানোর তরে করে দিয়ে বাচার আশা ক্ষীন
ফিউডাল থেকে মুক্তির আশা দিয়ে সংগ্রামে
সশস্ত্র নিধন বর্জন তর্জন শুন্য অর্জনে
নব্য ফিউডাল আরো ভয়ঙ্কর রেহাই নেই এর হাতে
চারিদিকে সেনা প্রহরা পালাবে কোন পথে

ক্ষুধায় মরো তাও ভালো তবুও থাকো শ্রেনীহীন বিশ্বাসে
ফিদেল মাও থেকেছে কি নিরন্ন জিজ্ঞাসা দেখো করে
এরাসব ভূস্বামীর সন্তান স্বার্থ রক্ষায় নেমেছে সংগ্রামে
ক্ষমতাই সব চাবিকাঠি সাথে বন্দুক থাকলে পরে
সকল অধিকার ছিনিয়ে নিয়ে রাস্ট্র বসে থাকে গদির ওপরে
সময় এসে ধাক্কা দিয়ে ফেলে তারে ভূতলের ধুলাতে
বলে তোকে পেতে হবে শাস্তি জাগতিক নিয়মের কারণে
নড়েচড়ে বসে সব ত্রস্তে চালায় চাকা তবুও হয়না রক্ষা
ভেঙ্গে গেল ইউনিয়ন পাতলো হাত চিরশত্রুর কাছে
বাহিরে জ্বালিয়ে আলো ভেতরটা অন্ধকারে রেখে
সংস্কারে হলো বটে উপকার তবুও অপকার রইল সেটে

সব থেকে বেশী শ্রেনীর উদ্ভব হয়েছে গনচীনে
নব্যধারায় বসে নেই চেক রুস্কি সার্বিয়া বা কোরিয়া
তৈরী হয় সেথা মারনাস্ত্র শুধুই মানুষ হত্যার তরে
যুগিয়ে চলেছে জাতিগত বিভেদ এশিয়া আফ্রিকাতে
রমরমা অস্ত্র বানিজ্যের অর্থে পোষাক হয়েছে চকচকে
কপিরাইটস ভেঙ্গে অন্যের গবেষনা থেকে
মেরে দিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি মেশিন বানায় থরেথরে
একসময় এরা শেখাত সততা এখন পতিতাশৈলী

ওয়ারমেশিন নেই থেমে চলে হাজার বছর ধরে
সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির সূচক ওঠে তোমার রক্তধারাতে
মার্কিন শোষকেরা নেশা দিয়ে ডুবিয়ে রেখেছে জাতিকে
সমাজতান্ত্রিক ধব্জাধারীরাও একই পথে চিয়ার্স করে সন্ধ্যাবেলাতে

ঈশ্বর বিশ্বাসে যাবে যদি লাঠিপেটা হবে জুৎসই
আসনে যিনি থাকেন তাকে ছাড়া বিশ্বাস অন্য কিছুতে নেই
মাফিয়া চালায় আন্তঃ অর্থনীতি কম্যুনিস্টিক পদ্ধতিতে
নারীমাংস সর্বশ্রেষ্ঠ সেথা মাদকতো সহচর সদাই
বালক অপহরন হয়ে যায় সাংহাইয়ের ইটভাটাতে
বিনেপয়সায় তিনবেলা খাওয়ায় শ্রম দেয় অর্থনীতিতে
হাহাকার করে ঘোরে মাতাপিতা বিশাল অঞ্চল জুড়ে
যদি পায় সন্ধান এত সহজে নয় নেয়া পুলিশী চোখের আড়ালে

গরীব দেশের গরীব শিশুরা হাতে হাতে যায় ভারতে
আহা! কিডনী খুলে অঙ্গ নিয়ে লাশ যায় ভূগর্ভে
জবরদস্তি দাসপ্রথা ছিলো এবং আছে ঘনঅধ্যুষিত রাষ্ট্রে
কি বনজঙ্গল ,ইটভাটায়,মৎস্যপল্লী এবং পতিতাবৃত্তিতে

আমেরিকা,আরব,পাক-ভারত,চীন,রাশিয়া চলেছে সমান তালেতে
মুসলিম আর তামিল শিশুকে শেখায় কিভাবে ফাটায় বোমা
বোমার আঘাতে গেলে উড়ে যাবে চলে স্বর্গে সোজা
অবুঝ শিশু বিশ্বাস করে তাই ওড়ায় মূহুর্তে নিজেকে

কোন ধারাতেই নেই শুদ্ধতা সাম্যতা শ্রেনীহীনতা অথবা মানবতা
আমি তুমি হয় ঠকি অথবা ঠকিয়ে চলি বিস্তীর্ণ সমাজের অন্তঃরালে ।।

২০০৮