টিপু সুলতান এর সকল পোস্ট

টিপু সুলতান সম্পর্কে

টিপু সুলতান লেখক নামঃ আদি সানম ১২ অক্টোবর ১৯৮৬ কেশবপুর, যশোর। বাংলাদেশ। জীবন বৃত্তান্ত; লিকলিকে স্বচ্ছ ক্যানভাস নদীর শরীরে উপচে পড়া প্রেমালিকার ঢেউ, স্রোতস্বিনী কল্লোলঃ প্রথম বার্তা,সবুজ আফ্রোদি উদ্দ্যানে গানের বাঁশিতে সংগীত শোনায়- লেবুগাছ ঘ্রাণ-আলাজ শরবত আমার পূর্ণানন্দ, নক্ষত্র-পৃথিবীপৃষ্ঠ হৃদয়বীণা রোদে পোড়া সখিনার রক্ত,শাদা দুধের মা; কালোত্তীর্ণ সন্তান আমি তাঁর শেষ অনন্দটুকুর ছায়ানট- মানুষ হয়ে ওঠা প্রবাদ ও সংলাপ। ★ প্রথম কাব্যগ্রন্থঃ গৃহ কারাগার।২০১৭ ইং। নৃ প্রকাশন,ঢাকা। প্রচ্ছদঃ কাব্য কারিম। ★ যৌথ কাব্যগ্রন্থ থেকে জাতীয় ম্যাগাজিন,লিটল ম্যাগ, পোর্টাল, জাতীয় পত্রিকাসহ বিভিন্ন ব্লগে টুকিটাক লেখালেখি। প্রিয় বাক্যঃ আমি ভালো আছি, তুমি...

আগুনের স্কেচে ফুলের গন্ধ

এই সব ঘিরে, এই শব ঘিরে নগরে স্মরণ মুখের
ভালোবাসা চর্চায় গান শেখা উচিত
অস্তগামী বিকেলের প্রমাদ, শরীর আর ছায়া
কাঁপানো গানের মতো; একবার উত্তীর্ণ হতে
কেননা, ফুল আর স্তন নিয়ে লিখবার প্রয়োজনে
শিং মাছের মতো একটা যতিচিহ্ন ফিরে এলে
প্রতিটি জায়গা থেকে হারিয়ে, কুড়িয়ে কেবল
যা পাওয়া যায় সেটা হয়তো উঁইখোটা আর্তনাদ;

আশ্চর্য এক নিয়ম ভেঙে নাচের ঘাগরায়
যে সকাল এসে প্রতিদিনের পাখি উড়িয়ে নেয়
তার কেরামতি লাজুক গেরস্থালি পাথরের মূর্তি
কী জানে, রোজ পুরনো এইদিনে বাজার ছিল
ভীষণ কামাতুরা! একটি ময়ূর পেখম মেলছে
অমন করে, শরীরের ভেতর ট্রয় এনে ঠিক দারুণ
আগুনের স্কেচে ফুলের গন্ধ, লিখুন-স্নান সারছে

১৪ ফেব্রুয়ারি ২৩ | ঢাকা

সময় এভাবে যায়

সময় এভাবে যায়। তুমি শেখোনি, কেমন হবে
সমগ্র প্রাণের আনন্দ, স্থলে-সবিস্তর ব্যলকনি
থেকে প্রায় টালিঘর এগোনো-শিরীষের বন-
অন্ধকার শুঁকিয়ে চোখের ওজন নেমে যাচ্ছিল
এন্তার নগরে বিশেষ সুপণ্ডিত ছায়া, পুস্তক অব্ধি;
কেউ বাঘ হচ্ছে! কেউ হরিণ অথবা জঙ্গল-
কী ভান, লোকালয়ে ঈর্ষার বেড়াল
দূরের খুইয়ে ফেলা চাঁদ যেন, সমুদ্র ধূলিঘরে-
মাছগুলোর পিঙ্গল কাঁটা আর মাংসে গাঁথা…
ভেসে ভেসে উধাও হচ্ছে টেরিয়ে দেখার মতো;

তেত্রিশবার পৃষ্ঠা ওল্টাতেই সহজ শিরোনাম
কী এক আনন্দ, মর্ত্য কাহিনি-
স্নায়ুর ভেইন কাঁপাচ্ছে কেউ, সখিদের চুলে
মেহেদি রং আর ক্ষত সেরে ওঠানো
অষ্টাদশী শরীরে ডেটলের গন্ধ, আধা বিভ্রমে
শোনা যায়-নলকূপ হতে সমুদ্র, গোসলের শব্দ!

কল্পনার গান

অবতীর্ণ হও প্রেম, চারপাশে বসন্ত
নাবিকেরা আসে ধূপের জোনাক
বনজাত ফুল-সবুজে কামনাবিধুর
শীতল শিয়রে বসো, দূর কাকাতুয়া
হাওয়া খায় জাহাজ, ওই হাট সমুদ্র

কেউ মুখ খোঁজে, রাখালের মতো
ঘাসের কার্পেটে কল্পনার গান-
ঝুলে আছে চাঁদ, যত রাত্রি নোলক
হায়! দূর নগরের পলাতক মেয়ে,
সটান জলে মাছরাঙার ডুবুরি দল।

কর্পোরেট

কার দেহ তুমি, মুখ ফসকে বলা
জাদুকাটা দুপুর-বসন্ত কোকিল
সাঁকোর ওপারে অন্য গ্রাম, নদী-
সবুজ আঙুরে অনার্য পাহাড়
ফণাহীন জল দূর মেঘে পথচলা

ফুল থেকে বনভাত সুহৃদ আধুলি
আমাকে চিনতে পারো, কর্পোরেট
দ্বীপমান নক্ষত্র, পাতার ইসকুল
আঁধারের পোকা জ্যোৎস্না কারিগরি
নূপুরের কল্লোল তোর পায়ে ঘুরি।

একটা সবুজ বনিবনা

এই সন্ধ্যাপথে, একটা সবুজ বিকেল নিয়ে
বুকের বাহাসে বেঁধে রাখি আর অন্তর রঙ
যেমনি হোক সকল দূরত্বকে জানা হবে
কেন ঝরে গিয়েছিল সব সুন্দর, লজ্জামান-
কাঁচের গ্লাস থেকে জলটুকুর বনিবনা এবং

একটু পর পরই ভাত ফুটতে থাকার মতো
গাঢ় হয় সেসব ভাপ, এমন প্রস্থান মুহূর্ত
কেবল পালটে দেয় কামনা রূপ, কাকাতুয়া;
ফলে তোমার মধ্যে ঢুকে পড়ছে
অন্ধ বিশ্বাস-আয়ুর্বেদি জীবন, দীর্ঘ হাইফেন-

কিন্তু এসবের কিছুটাই আটকানো যায় না
দূর হাটে, একা। হাঁটছি-সামনেই। একটু পর পর…
তুমি যে রয়েছ বেঁচে, মৃতপ্রায় নদীর মতো!

এই স্বাদ অমলিন

ড্রেসিংটেবিলের আয়না কোনো কিছু মনে রাখে না
না হাসি, না বিষাদের মুখ, যতবার সামনে দাঁড়িয়ে
মৃত্যুকে রেখে আসি, ততবার স্মৃতির সিথান হতে
কচ্ছপের বালিজীবন, সমুদ্র পেতে পেতে
কপালের পেশিতে জ্বরের তাপমাত্রা ওঠানামা করে
সমস্ত শরীর বেয়ে খেলে-ঘোড়াক্ষুর লাথির মতো
অ্যাম্বুলেন্স ভর্তি সবুজ হাওয়া,
নেমে আসে চেনা বিকেল-গহিন জঙ্গলের
পাতাঝরা আলো, মন চায়-আলোটুকু,
কোনো কাচের বোতলে মুখবন্ধি করে রাখি,
হয় না। দু অক্ষরের গান শোনালেও
দ্রুত সন্ধ্যা হয়ে ফেরে চড়ুইয়ের মতো-রাত;
দরজার চৌকাঠের পাল্লায় চোখ রাখি,
কোনো টোকা পড়লে, সাহায্য চেয়ে নেব।
দু ভ্রু’র দূরত্ব যতটুকু ঠিক তেমন,
এমন আগ্রহ গড়াতে গড়াতে বহুবার জ্বরের সঙ্গে
ব্রাত্য হয়ে উঠেছে,
আর তুমি লুট হয়েছ জেনে, দ্বিতীয়বার জন্মাতে চাই

কেন জ্বর হয়-হেলেঞ্চা?
এখন তো বিধৌত চৈতি দুপুর, ট্রাকভর্তি তাপ-
অথচ টানা শীত লাগে, ভিড় করে টেবিলের আঙুর,
শাদা ট্যাবলেটগুলোর ভেতরে একটা ঘুম প্রয়োজন
বুকের হিলিয়ামে জমিয়ে থাকা নিঃশ্বাসের সঙ্গে
জ্যোৎস্না ফুরোচ্ছে, সময় ফুরোচ্ছে, বোধহয় তুমিও।
কেবল জেগে রয়েছি, ক্ষুধার দিকে, ফাঁকা পথে-
অধিক যুবকেরা বারবিকিউয়ে ব্যস্ত, ধোঁয়া ওড়াচ্ছে
খাই-খাই কামড়ের শব্দ, ওরা থেমে থেমে হাসছে…

নরক গুলজার

সন্ধ্যা উড়ে যাওয়ার পরে একটা
বিকেল পড়ে আছে
সুন্দরময়ী নরক গুলজারে প্যাঁচানো
দূরের কোনো তর্ক-আনন্দ আর
তানপুরায় লিরিক বিষাদের জন্ম;

স্রেফ আলাদা হতে গিয়ে সুস্বাদু ঘাই
ফিরে আসে দ্বিগুণ বিসর্গ হাসি নিয়ে
খ্যাতির মর্ত্য-চৈতির কবুতরি চাঁদ
সুতরাং এই মুহূর্তে প্রতীক্ষা ঝরে পড়ছে
সদ্য নীল অবসরে নিজের আয়ু
লিখতে লিখতে সুতোর ববিনে
সেসব নির্জন চোখের দৃষ্টি যেন
বাহাদুরি করাত, ঋদ্ধ-আছ কি তুমি?
শূন্যতল থেকে বলে উঠি, একটু নড়োচড়ো!

ঈষৎ ভ্রম

উপোস বইসা আছি। তিনজনে-
এক প্রকার অগোছালো ভ্রমে
ছেঁড়া রাত্রি-খিদা আর মাঝবয়স
অসুখের মতো ধারণ করে যাচ্ছে

তিনজন একসঙ্গে হেসে উঠলাম
স্লাইস পাউরুটির নুনকৃত গন্ধ
তিনকাপ চা মনে পইড়্যা আছে
সাংঘাতিক খিদা, খাইয়্যা দিলাম
বিন্দুর মতো; সকলে চুপচাপ-

এই ঈষৎ বেদনার পাশাপাশি
একজন ভাত রাঁধুনি দরকার!

নির্জনতার গল্প

না পাওয়াই যেন প্রেম, প্রতীক্ষার ফলন-
এতটা মুখোমুখি হই
হয়তো পরাক্রম আলোর ভাঁজে
নির্জনতা নিয়ে বসে যায়
পা দুটোর সাঁকো, কমলার মতো মনস্তাপ

অরোচিত ভায়োলিনের সমুদ্র সুর
কেবল সেখানে, পৃথিবীর নির্জন প্রবাহ
ফাল্গুন আর গোপন খাতায়
বিকেলের দ্বিগুণ গল্প, গল্পসূত্রে-রয়ে গেছে
দুজন,মাখনভর্তি রোদ-
কী এমন সকাল, কোথাও আমার কিছু নেই

স্বরচিত বাতাস, মোরগ ঝুঁটির নৃত্য আর…

আদিমের গন্ধ

গত হয়ে যায় সুরের এন্টিসেপ্টিকের মতন
লালাস্রাব গড়িয়ে যত মগ্নপ্রায়ে সংগীতঃ
রোদ্দুর-বিকেল ও শেষ সন্ধ্যা; গহীন প্রেতলোক-
জাহাজের টর্চলাইটে পোড়াতে থাকে অন্ধকার;
খুনসুটি সমুদ্রের গাঙচিল ওড়ে ওপারের সকালে
পাঞ্জেরীর চোখে নাড়া দেয় দূরের দিগদারি দিগন্ত

সূর্যের রশ্মিরাগ কচি পাতার মুখ টিপে চুমু খায়
বেফাঁস শ্লোকসমষ্টির বিস্তৃত স্তন জোড়া পৃথিবী মাঠ
মসজিদে আযান, মন্দিরে হুলোরধ্বনি, গির্জায়
যিশুর বাইবেল, লাল রক্তের শরীরপোষণ
অস্থায়ী যুগ যাযাবর চিকন বন্ধন-নক্ষত্রগোল
এভাবে রক্ত আবরণে ছুটে যায় আদিমের গন্ধ।

একদিন

পাখিদের মতো ডানা নেই বলে তাই

লজ্জার চিকন মসলিন কুয়াশা ছিঁড়ে
সকল সৌন্দর্যের কঙ্কাল ছুঁয়ে
একটি বেগুনি নির্জনতা খসে উড়ছে
দূরাগত উল্লাসের ট্রেন হুইসেলের মতো;

মিরিণ্ডা রঙের যাবতীয় পরিণাম মুছে
একদিন, ছুঁয়ে যাব
তোমার জেগে ঘুম পড়া অন্তঃসত্ত্বা রূপ
দরজার বাথানে ছিটকিনির সমাধিস্থান
এমন উপলক্ষ মাখিয়ে যাবে, নাতিদীর্ঘ-
জলপাই রঙ হতে পোশাক পালটানো
নাড়িছেঁড়া শাদা বকের উড়ন্ত ইশারা-
কমলাকাতর শিশুদের অখণ্ড শান্তিমুখ
এইসব জরাক্লান্ত নিয়ে আগামীকাল ফের…

বোবা

একদিন, সমুদ্রের গল্প বলতে গিয়ে
আকাশের দিকে হেঁটে যেতে থাকি
পাখির প্রবাহ, শেষ আশ্রয়ে
একটি নদীর মতো গড়াতে গড়াতে
চোখের ভেতরে মেঘ-শহরে পৌঁছাই

আর চোখের পিসিতে খেলছিল
উৎসবের এক শ গোলাপ
সবুজ হ্যাণ্ডশেকে সাক্ষাত পায়
ঘড়ির তিনটে কাঁটা-
আমি ঝিনুক উদরে পোতাশ্রয় খুঁজি
কেননা, সমুদ্র একটা সিসিফাস ঢেউ
এখানে জলের সালংকারা বোবা।

৭ ফেব্রুয়ারি ২৩ | ঢাকা

জানতাম

খুব কাছে। বিমুগ্ধ বিস্ময়ে আমরা দুইজন
একের পরে এক গাঁথতে থাকি শরীর
আর সার্কাসের সভ্যতায় ফেটে পড়ে
বয়সী পৃথিবীর নার্সিসাস শহর, জানতাম।

তারপর মিথের অভিধান থেকে হাঁটি
সারিবদ্ধ গাছবাঁকলে সংসার, বাচ্চা এঁকে
ঘুমহীন গোপন কথা, বিষমে বেঁচে ফেরানো
মসলার কৌটা আর অযত্নের পাশে-সুখ
এগুলো আমাদের অন্যরকম ফ্লেভার দেয়
আর বিদীর্ণ গল্পের শেষ হতে কানে তুলি
গ্রীবা বাঁকানো বোকা মানুষের অভিযোগ
পরিত্রাণ নে গোলাপ, খুন হবি’রে যুবক!

আমাদের নকল পথ

ধূসর শহরে নেমে আসে নারকেলপাতা হয়ে,
সবুজে দীর্ঘতর।

একটি গিরগিটী বিবর্ণ দেয়ালের কার্নিশ ঝুলে
পৌষের শীত ভেঙে পরিযায়ী রোদ
হলুদ চোখে চায়ের কাপের মত ঝোপঝাড়-
একটু গভীরে শুঁকনো অন্ধকার পৃথিবীর ঠোঁটে তুলে
সকল দেয়ালের বাড়ি নির্জনতার ছায়াসঙ্গী নামায়;

শিশির দল উড়ে আসে মাকড়সার জালে
গোলাপি-সাদা ভ্রমণ শিল্প ভরদুপুরের বারান্দায়
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে গত বসন্ত ডাকে-ছুঁয়ে যায় চারপাশ,
নির্জন আঙুলের ঢেউ, বালির ভেতরে চোরাবালি
জ্যোৎস্নার বাতাসে যতদূর ক্ষিপ্র নিঃশ্বাসের গন্ধঢেউ
অথচ আমাদের রক্ত রক্ত রঙ চুমু খায় নকল পথ।

বীজ থেকে দৈর্ঘ্য পৃথিবী

ফুরফুরে মেজাজ-কখনো বিভোর স্বপ্নে চাঁদ উলটায়-
ঝটপট সিদ্ধান্তে তরুণ ছন্দ বায়ু সিনেমার নৃত্যশালা,
কখনো ছদ্মনামে শরীরের রঙ পালটায়
মন খারাপের ব্যত্যয় ভেঙে-গোলপাতার ঘর
ছেঁড়াখোঁড়া দেওয়াল ভরা বঙোপের হিমালয়-সুন্দরবন,
বোতাম ভাঙা ময়লা জামার আলপিনে
পালতোলা নদীর ডুবছবি, দু দিকে শহর আর গ্রামের পথ;
মধুভ্রম স্বপ্ন দরজা আঁকে-সকল ঋতু
বর্ষাগম চৈত্রের মখমলি মাটির বীজ থেকে দৈর্ঘ্য পৃথিবী।