পরিবহন কথা

82730
প্রতীকি ছবি

মিনিট দশেক অপেক্ষা করে বাস পেলাম। বাসে উঠতে না উঠতেই দুজন দীর্ঘদেহী মানবের বাঁধায় থমকে গেলাম; পথ আটকে দাঁড়িয়েছিলেন। দরজায় দাঁড়িয়ে থাকলাম কিছুক্ষণ। পরের স্টপে আরও কয়েকজন বাসে উঠছে দেখে ভিতরে যাওয়ার চেষ্টা করলাম। কিন্তু না, সেই দীর্ঘদেহী ব্যক্তিদ্বয়ের কারণে পারলাম না। পিছন ফিরে দেখলাম পঞ্চাশোর্ধ্ব এক মহিলা ভিড়ে নিষ্পেষিত হচ্ছে প্রায়। এদিকে নিজেরও বেহাল দশা!

সুযোগ পেতেই ওই মানবদ্বয়ের মাঝ-বরাবর নির্ঝঞ্ঝাটভাবে ঢুকে পড়লাম। পাতলা গোছের মানুষ বিধায় খুব একটা অসুবিধা হয়নি। দুজনের মাঝে জোর করে ঢুকে শক্ত চাপ সৃষ্টি করলাম। এতে উভয়ের ভুঁড়ি দু’দিকের দুটো সিটে লেগে যাওয়ায় প্রচন্ড ব্যথা অনুভব করতে লাগলেন। মূহুর্তেই মুখের লাবণ্যতা হারিয়ে ফেললেন দুজনেই। ব্যথার চটে বেশ কাবু হয়েছেন বটে!

এই ভুঁড়িকষ্ট থেকে বাঁচতে চেষ্টার কমতি রাখলেন না। কিন্তু আমি তো নাছোড়বান্দা, সেখান থেকে সরার নাম-ই নেই। পরক্ষণে তাদের ভুঁড়ির দুর্দশার কথা চিন্তা করে বেরিয়ে এলাম। দেখলাম, দুজনে ভুঁড়িতে হাত বোলাচ্ছে। হাসি পেল কিন্তু হাসলাম না। নয়তো প্রতিবেশী যাত্রীরা ভাববে কারো সর্বনাশ, কারো পৌষ মাস।

অতঃপর একজন সে স্টপেই নেমে গেল; অন্যজন ল্যাম্পপোস্টের মতো দাঁড়িয়ে রইল। যতক্ষণ বাসে ছিলাম তার দিকেই খেয়াল ছিল- বেচারা কোন কথা বলেনি। অনেকেই তাকে অতিক্রম করে নামা-উঠার সময় নানান কথা বললেও তিনি উত্তর করেননি। চালকের সহযোগী বারবার ধমক দিচ্ছেন কিন্তু সেই দীর্ঘদেহী ভদ্রলোক নির্বাক জানালা ভেদ করে উঁচু উঁচু দালানের দিকে তাকিয়ে রইলেন।

সৈয়দ মুহাম্মদ আজম সম্পর্কে

“যে জীবন ফড়িঙের, দোয়েলের– মানুষের সাথে তার হয় না'কো দেখা।" পড়া, লেখা আর ঘুরা- এই নিয়েই আমি চ্যাংড়া থেকে হতে চাই বুড়া। কবিতার প্রতি মোহ নাকি হৃদয়ের টান -জানিনা। অলক্ষে থেকেও হৃদয়ের মর্মকথা পৌঁছাতে চাই দিগন্তের বাঁকে বাঁকে। একঝাঁক স্বপ্ন বুকে- নিত্যি ছুটি দিকে দিকে...

1 thought on “পরিবহন কথা

  1. প্রথমতঃ শব্দনীড়ে আপনাকে স্বাগতম মি. সৈয়দ মুহাম্মদ আজম। :yes:
    রথম পোস্ট হিসেবে হালকা রস-বোধের লিখনীতে মুগ্ধ করালেন। ধন্যবাদ জানবেন। :)

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।