বিভাগের আর্কাইভঃ বিবিধ

পথের ঠিকানায়

boishnob

মাঠ পেরোলেই গাঁ
যেখানে এক বৈষ্ঠমী হঠাৎ
এসে আগলে দাঁড়িয়েছিলো
পথ, বলেছিলো বৈষ্ণব হবি ?

যাবি নাকি আমার সাথে পথের ঠিকানায় ?
কি ছিলো তার চোখে
আমার মুখে কথা সরেনি।

আমার বুকের ভেতর কষ্ট হয়
ভীষণ কষ্ট। আমার দম বন্ধ
হয়ে আসতে চায়।
শরীর ছুঁয়ে যায় সুবাতাস।
বাতাসে মাদক গন্ধ থাকে
কষ্ট এবং সুবাতাস আমাকে জানায়
তার বার্তা …

আবার একদিন দেখা হয়েছিলো
তার সাথে এক ভরা হাটে
অশ্বত্থ তলায় পা ছাড়িয়ে
বসেছিলো একতারাটা পাশে রেখে।

আমায় দেখে ত্রস্তে উঠে
জড়িয়ে ধরেছিলো হাত; বলছিলো
তোর উত্তর পাইনি এখনো
চোখে আকুতি নিয়ে জানতে
চেয়েছিলো কিছু।

কি চায় বৈষ্ঠমী ? পথের ঠিকানায়
ওকি গড়তে চায় আবাস
নাকি সমাধি প্রেমের ?

boii

আমি তোমাকে ভালোবাসি

প্রাচীন গ্রীক পুরাণে প্রেমের দেবতা কিউপিডকে ( রোমান পুরাণের কামদেবতা। প্রেমের দেবী ভেনাসের পুত্র। গ্রীক পুরাণে তাঁর নাম এরস। ) অন্ধ হিসেবে দেখানো হয়েছে। কারণ প্রেম অন্ধ। অন্ধ বলেই কিউপিডের কাছে ধনী দরিদ্র কখনো কোন সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়নি। তার ইচ্ছে মতো সে তার প্রেমের তীর মেরে চলেছে নানা মানুষকে। তাই প্রেম কোন ধর্ম বর্ণ বয়স জাত কিছুই মানে না। প্রেম যেমন অতি পুরোনো তেমন অতি নুতনও।

02

আমি তোমাকে ভালোবাসি
এই কথাটির কয়েকটি ভাষার অনুবাদ আমার সংগ্রহ থেকে সকল বন্ধু পাঠককে আমার ভালোবাসা হিসাবে শেয়ার করলাম। দেশ ভেদে আঞ্চলিকতা থাকতে পারে শব্দের উচ্চারণে। কিন্তু অনুভবের প্রকাশ অভিন্ন।

বাংলাঃ আমি তোমাকে ভালোবাসি।
ইংরেজীঃ আই লাভ ইউ।
ইতালীয়ানঃ তি আমো
স্প্যানিশঃ য়ু লে আমো।
জার্মানঃ ইখ লিবে সিয়ে।
ফরাশিঃ জ্যঁ তেম।
পর্তুগীজঃ ইউ তে আমু।
রাশিয়ানঃ ইয়া লুবল্যু তেবিয়া।
ইউক্রেনিয়ানঃ ইয়া কখায়ু তেবে।
মোজাম্বিকঃ সাফু ফুনা।
চাইনিজঃ ও আই নি।
মঙ্গোলিয়ানঃ চমৎখায়েরতে।
জাপানীঃ ওয়াতাশি আনাতা ও আই সিত্তে ইমাছ।
কোরিয়ানঃ নানুন দাংগসিনউল সালাংগ হারনিদা।
ফিলিপিনোঃ মাহাল কিতা।
আরবীঃ আনা ব্যাহেব্বাক।
মালেঃ আকু চিন্তা কামু।
বার্মিজঃ নি নামা চিত্তে।
সিংহলীজঃ মামা ওবাটা আছরেই।
মালিঃ বি ফে।
হিন্দিঃ ম্যায় তুমসে পেয়ার করতা হুঁ।
তামিলঃ নান উন্নাই কাজালিক ক্যারে এন।
তেলেগুঃ না নে নেননু প্রেমেঞ্চু চুননানো।
থাইল্যান্ডঃ ผมรักคุณ (Phom Rak Khun – Male Speaker)
ฉันรักคุณ (Chan Rak Khun – Female Speaker) ( থাইল্যান্ড তথ্যঃ বন্ধু সাইদুর রহমান চৌধুরী )
সুইডিসঃ Jag älskar dig ইয়ো এলস্কার ডিগ। ( তথ্যসূত্রঃ ছোট ভাই মৃদুল )

ভালোবাসার লেখাগুলোতে যে মূল কথাটি বেড়িয়ে আসে তা হলো, আমরা সবাই মানুষ। ভালো মন্দ মিলিয়ে আমাদের জীবন এবং আমাদের পারস্পরিক ভালোবাসা বিশ্বাস, সহনশীলতা, সহমর্মিতা এবং নির্ভরতাই পারে একটি সুন্দর সম্পর্ক গড়ে তুলতে। একই ভাবে আমাদেরও দেশের রাজনীতিতেও যদি পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও বিশ্বাস থাকে তবে একটি সুন্দর সমাজ আমরা অবশ্যই পাবো। আমরা কি এটা আশা করতে পারি না যে, নতুন প্রজন্মের প্রেমিক প্রেমিকাদের মতো রাজনীতিবিদরাও দেশের জন্য এই সামান্য ত্যাগটুকু স্বীকার করবেন !!

আমার সবটুকু ভালোবাসা রইলো রইলো শব্দনীড় এর আমার সকল পাঠক লেখক বন্ধুদের জন্য। যাদের ভালোবাসাকে সম্বল করে আমার এই পথচলা। সবাইকে আমার অভিনন্দন। এবার ভালোবাসা দিনে…
প্রেমমন্ত্র হোক-
আমরা যেন ভালোবাসতে পারি
ভালো মন্দ মিলায়ে সকলি।
এ পৃথিবী আমাদের।
আমরা সকলে …
সকলের।

03

শুভ জন্মদিনঃ জিয়া রায়হান

e25c1d282c42f86666277effd26c74b2

এই সব রাত আসে রাত্রির মত
এই সব রাত্রির বুকে নীল ক্ষত
ক্ষত নয়, মহাকাশে বেদনার জল
একটি জীবন তার উপমা অতল।

সে আমাদের প্রিয় ব্লগার zia2 জিয়া রায়হান।
zia
ছায়াপথের অশরীরী বৃষ্টি
গুচ্ছ ফোটায় সাদা গোলাপ
ইতিহাসের পরিবর্তে কৃষ্টি
মেলে ধরে নীল ময়ূরীর কলাপ।

আজ জিয়া রায়হান এর জন্মদিন।
c823c7ce64f6df35d20a69762035f12b
zia4
zia6
zia8
zia9zia9zia9zia9zia9zia9zia9zia9zia9
101010101010101010101010101010

x:ভূমিকম্প

এই মাত্র বগুড়া সহ সমগ্র উত্তরবঙ্গ সহ ঢাকা, সিলেট, চট্রগ্রাম, মুন্সীগঞ্জে ভূমিকম্পন অনুভূতি হলো।
সন্ধ্যা ৭টা ৫৫ মিনিটে স্মরণকালের ইতিহাসে এত জোড়ালো উচুঁমাত্রার ভূকম্পণ সাধারনত উত্তরাঞ্চলে হয়নি বলে আমার বিশ্বাস।
ভুমিকম্পের স্থায়ীত্ব কাল ছিল প্রায় ১০ থেকে ১৫ সেকেন্ড।

প্রচন্ড ক্ষয়-ক্ষতির আশন্কা থাকলেও এখনো কোন সংবাদ পাওয়া যায়নি।
মহান আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।
সকলের কাছে দোয়াপ্রার্থী।
আমিন।

ব্লগে কমেন্টস এবং কিছু প্রাসঙ্গীক ভাবনা

how-to-build-community-blog

কোন ব্লগারের মনেই একটি জিজ্ঞাসা হয়তো ঘোরাফেরা করতে পারে, ব্লগের পোস্টগুলোতে কমেন্টস‌ কম কেন। কিন্তু কথাটা আদৌ সত্য নয়, কেউ যদি প্রশ্ন করেন, কেন সত্য নয়। উত্তর হলো- কমেন্টস কম কিনা সেটা জানার জন্য খুব বেশী দূরে যাবার প্রয়োজন নেই। এই ব্লগের প্রথম পাতাতেই রয়েছে উত্তর। যেমন ধরি গতকাল। নতুন পোস্ট: ৪৫টি। নতুন মন্তব্য: ১৪০৭টি। তাহলে গড় ৩২টি। এবার আপনিই বলুন কম কিনা !!
যা একটি নতুন ব্লগের জন্য শুধু অনেক নয়। বলা যেতে পারে আশাতীত। এর কৃতিত্ব কেবল সম্মানিত ব্লগারদের।

ব্লগটি নতুন হলেও যে কেউ নির্দ্ধিধায় আমার সাথে একমত হবেন শব্দনীড় আজ পর্যন্ত যে পর্যায়ে এসেছে, যে কোন ব্লগ কর্তৃপক্ষ অনেক আগেই এরকম একটি ব্লগকে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন পর্যন্ত করে ফেলতে পারতেন। কিন্তু শব্দনীড় সেটা করেনি। শব্দনীড় এগিয়ে যেতে চায়- সাধারন ব্লগারের সকল জানা চাহিদার সাথে অজানা বিষয়গুলোনকে সংযুক্ত করে পূর্ণাঙ্গ একটি প্লাটফর্ম তৈরী হওয়া পর্যন্ত। যার জন্য অহোদিন অহোরাত্রি সাইটের হালনাগাদকরণ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে ব্লগ উন্নয়নের ভাবনাকে মাথায় রেখে। চলছে নিরলস কাজ।

ব্লগে এখনো কারিগরি ত্রুটি আছে তা স্বীকার করতেই হবে। আশা করা যায়, কর্তৃপক্ষ সেটা কাটিয়েও উঠবেন।

এ নিয়ে অনেকেই পোস্ট দিয়েছেন এবং এ নিয়ে আলোচনা করেছেন। প্রশ্নটির উত্তর খুব সহজ। শব্দনীড় একটি নতুন ব্লগ। এখানে রয়েছে সুক্ষ হিসাবের মাপকাঠি। যা বাংলাদেশের অন্য কোন ব্লগে নেই; এটা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলা যায়। নান্দনিক ব্লগিং চর্চাকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে বেশ কিছু সুবিধা এবং অপশন রয়েছে, যা এখন পর্যন্ত অধিকাংশ ব্লগার রপ্ত করে উঠতে পারেন নাই।

এ ব্লগের অধিকাংশ লেখকই এখনো নতুন। ব্লগিং ব্যাপারটির সঙ্গে তারা সবে পরিচিত হতে শুরু করেছেন। নানা কারিগরী দিকগুলো আয়ত্ত না করার অলসতা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি। তবে নিজেকে জানান দেয়ার এবং নিজের লেখা প্রকাশ করার দিকে তাঁদের একটা ঝোঁক থাকবে এটাই স্বাভাবিক। ধীরে ধীরে নিশ্চয়ই তাঁরা অন্যদের লেখার দিকে মনোযোগ দিতে পারবেন। অন্যদের লেখা পড়ে সে বিষয়ে তাঁদের অভিমত জানাবেন এটা ব্লগ কর্তৃপক্ষ আশা করতেই পারে। সেজন্য কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে।
ব্লগিংয়ের সামাজিকতা, যোগাযোগ ব্যবস্থা, জানা-বোঝার ব্যাপারগুলো আয়ত্তে আসতে কিছু সময় লাগবে।

শব্দনীড় ব্লগের বাইরে যারা ব্লগিং করেন, তাঁরাও অভ্যাসবশতঃ আশা করেন তাঁদের লেখা পড়ে অন্যেরা কমেন্টস্/মন্তব্য করবেন। পারস্পারিক কথোপকথনের মধ্য দিয়ে একটি সুন্দর ও অর্থপূর্ণ আলোচনা গড়ে উঠবে। তাঁদের এ আকাঙ্খাও যুক্তিসঙ্গত।
একটি গোষ্ঠীবদ্ধ ব্লগিং-প্লাটফর্ম হিসেবে ব্লগ অবাধ আলোচনার ক্ষেত্র হয়ে উঠুক এটি আমরা চাই। কিন্তু রাতারাতি সেটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। পারস্পারিক বোঝাপড়া, চেনাজানার মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে সেটি গড়ে উঠবে এটিই সকলের আশা।

আমরা চাই একটি সুন্দর এ সৌহার্দ্যপূর্ণ ব্লগিং প্লাটফর্ম।
সবাই নীতিমালা পড়ে ব্লগিং শুরু করছেন- এমনটা বলা যায়না বা যাবেনা। কিন্তু নীতিমালা লঙ্ঘন করে কেউ কাউকে আক্রমণ করলে/ আঘাত করলে আগাম নোটিশ সহ ব্লগ পরিচালক/কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

ফলে, আমরা আশা করবো সবাই সংশয় দূর করে ব্লগিংয়ের কোলাহলে মেতে উঠুন। ব্লগটিকে জমজমাট করে তুলুন।
কিছু জানতে হলে ব্লগ পরিচালক বরাবর মেইল করুন।

নিজের সবচেয়ে ভাল লেখাটি শব্দনীড় এ দিন। সহ-ব্লগারদের ভাল লেখা পড়ুন। কিছু বলার থাকলে মন্তব্য করুন।
আপনার মন্তব্য তাঁকেও হয়তো টেনে আনবে আপনার ব্লগে। তিনি আপনার লেখা পড়বেন, এবং হয়তো মূল্যবান একটি মন্তব্যও করবেন। পরস্পরকে চিনুন। সমমনাদের খুঁজে বের করুন। সবার অংশগ্রহণে ব্লগ মুখরিত হয়ে উঠুক।

সবাইকে শুভেচ্ছা।
শুভ ব্লগিং।

sfff

আসুন এই সুযোগে নবীন-প্রবীন- নবাগত সবাই কয়েকটা প্রযোজনীয় বিষয় জেনে নেই। যা আমাদের ব্লগিং অভিজ্ঞতাকে সমৃদ্ধ করতে পারে। ক্লিক করুন…
# শব্দনীড় সাহায্য।
# পোস্টে ছবি সংযোজনের সহজ ও বিকল্প উপায়-১
# ব্লগের কিছু আকর্ষণীয় ফিচার।
# এই ব্লগে প্রোফাইল ছবি সেট করার পদ্ধতি।

শিরোনাম ছিলো= সেক্সি কাশেম !!

রংপুরের মহিমাগঞ্জে ‘কাশেম’ নামটি নিয়ে বিভ্রান্তির মধ্যে পড়েছে মানুষ। এই এলাকায় ৪০জন কাশেম বাস করায় কোন লোক কাশেম নামে কাউকে খুঁজতে এলে তাকে বিভ্রান্তির মধ্যে পড়তে হয়। লোকজন জিজ্ঞাসা করে, কোন কাশেম? কারণ নিজ নিজ কর্মের কারণে মহিমাগঞ্জবাসী ওই ৪০ কাশেমের আগে একটি করে পদবী জুড়ে দিয়েছে। যেমন শেখ কাশেম, পাটোয়ারী কাশেম, আবুল কাশেম, চশমা কাশেম, বোলতা কাশেম, বোতল কাশেম, ভেজাল কাশেম, পিওর কাশেম, বিডিআর কাশেম, পুলিশ কাশেম, মালয়শিয়া কাশেম, ড্রাইভার কাশেম, খাঁ কাশেম, খান কাশেম, তোতলা কাশেম, গোল্ডলিফ কাশেম, ষ্টার কাশেম, চিকা কাশেম, নাককাটা কাশেম, গালকাটা কাশেম, লম্বা কাশেম, খাটো কাশেম, আলু কাশেম, মরিচ কাশেম, মোল্লা কাশেম, চৌধুরী কাশেম, ফর্শা কাশেম, আলসে কাশেম, জুতা কাশেম, জিন্স কাশেম, পানওয়ালা কাশেম, মুক্তিযোদ্ধা কাশেম, লেবার কাশেম, ব্যাপারী কাশেম, মুনশী কাশেম, রিক্সাওয়ালা কাশেম, পকেটমার কাশেম, চোরা কাশেম, ধুণকর কাশেম ও সেক্সি কাশেম। উল্লেখ্য কাশেম প্রামাণিক নামে একজন ১১টি বিয়ে করায় এলাকাবাসী তার নাম দিয়েছে সেক্সি কাশেম।

( লিখার উদ্দেশ্য বিশেষ এলাকা কিংবা কাউকে হেয় করার জন্য নয় )

তাজমহল

taj

২৭শে সেপ্টেম্বর ২০০৯-এ বিশ্ব পর্যটন দিবসে, ইনডিয়ার আগ্রায়, মধ্যযুগের সপ্তম আশ্চর্যের অন্যতম ও বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকাভুক্ত তাজমহলের ৩৫৫ বছর পুর্তি উৎসব শুরু হয়েছিল। এই উৎসব চলেছে ছয়মাস। তাজমহল এর নাম শোনেননি এ ধরণের মানুষ হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবেনা। আর এ তাজমহল দেখেননি এ রকম হয়তো একজনও নেই। কেউ সশরীরে না গেলেও ভিউকার্ড, পোষ্টার, চলচ্চিত্র, পোষ্ট কার্ড, ফার্ষ্ট ডে কভার, স্যুভেনির শিট, ডাকটিকেট, ফোনকার্ড ও বই-এ তাজমহলের ছবি অবশ্যই দেখেছেন। বিশ্ববাসীর কাছে তাজমহল একটি দর্শনীয় স্থান এবং এই তাজমহলের মাধ্যমে ইনডিয়া বিশ্বব্যাপী পরিচিতি লাভ করেছে। তাজমহলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে পর্যটকরা অনেক ধরণের উক্তি করেছেন। তার মধ্যে সবচেয়ে আবেদন সৃষ্টিকারী উক্তি করেন বৃটিশ পর্যটক এওয়ার্ড লিয়ার। ১৮৭৪ সালে তিনি বলেছিলেন, আজ থেকে বিশ্ববাসীকে দুটি শ্রেনীতে বিভক্ত করা হোক। একটা শ্রেনী যারা তাজমহল দেখেছে এবং আরেকটি শ্রেনী যারা দেখেনি।
এই উক্তিটি ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে রয়েছে।

তাজমহল দেখাটা আগে যতো সহজ ছিল, এখন ততোটা নেই। কেননা তাজমহল দেখার জন্য বিদেশীদের জন্য ইনডিয়া একটা চড়া প্রবেশ মূল্য (৯০০ রুপি) ধার্য করেছে যা সাধারণ পর্যটকদের কাছে গ্রহনযোগ্য বিবেচিত হয়নি। এ কথা ঠিক যে, তাজমহলের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রবেশ মূল্য নির্ধারণ যথাযথ হয়েছে। কিন্তু মূল্যমান নিম্ন মধ্যবিত্তদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখাটা উচিৎ ছিল।

তাজমহল দিল্লি থেকে ২১০ কিলোমিটার দূরে আগ্রায় যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত। দিল্লি থেকে ট্রেনে আগ্রায় যেতে দেড় ঘন্টা সময় লাগে। তাজমহলের বয়স নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। কোনো ইতিহাসবিদ বলেন, ১৬৩১ সালে শুরু হয়ে ১৬৫৩ সালে শেষ হয়েছে। আবার কেউ বলছেন, ১৬৩২ সালে নির্মান কাজ শুরু করে ১৬৫৪ সালে সম্পন্ন হয়। এর অধিকাংশের মতে, তাজমহলের নির্মাণ কাজ ১৬৩১ সালে শুরু হয় এবং ১৬৫৩ সালে নির্মাণ সম্পন্ন হয়। কিন্তু কোনো বিতর্ক নেই যে, অমর প্রেমের নিদর্শন হলো তাজমহল।

ফার্সিতে তাজমহল অর্থ প্রাসাদের মুকুট হলেও তাজমহল প্রকৃতপক্ষে একটি স্মৃতি সৌধ। সম্রাট জাহাঙ্গীরের পুত্র খুররম ১৬১২ সালে ফার্সি-রাজকন্যা আরজুমান্দ বানু বেগমকে বিয়ে করেন। সম্রাট জাহাঙ্গীর বিয়ের দিনই আরজুমান্দ-এর নতুন নাম দেন মমতাজ মহল। ১৬২৭ সালের ২৯শে অক্টোবর সম্রাট জাহাঙ্গীর মারা যান এবং খুররমকে সম্রাট ঘোষনা করা হয়। খুররম ১৬২৮ সালের ৪ঠা ফেব্র“য়ারী এক জাঁকজমক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পঞ্চম মোঘল সম্রাট হিসেবে সিংহাসনে আরোহণ করেন এবং তার নতুন নাম রাখা হয় শাহ্জাহান। শাহ্জাহান ও মমতাজ মহল-এর মধ্যে ভালোবাসা এতো গভীর ছিল যে, রাজকার্য থেকে শুরু করে সামরিক অভিযান পর্যন্ত মমতাজ ছিলেন তার স্বামীর অবিচ্ছেদ্য সঙ্গী। তাদের সংসার জীবন ছিল আঠারো বছরের এবং এর মধ্যে তাদের ১৪টি সন্তান লাভ করে। সর্বশেষ সন্তান জন্মলাভের সময় ১৬৩০ সালে বোরহানপুরে সম্রাট শাহ্জাহান-এর সঙ্গে এক সামরিক অভিযানে অবস্থান কালে মমতাজ মহল মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর আগে শাহ্জাহানের কাছ থেকে মমতাজ চারটি প্রতিশ্রুতি আদায় করেছিলেন।

প্রথমতঃ সম্রাট শাহ্জাহান তাদের ভালোবাসার পবিত্রতা ও সৌন্দর্যকে চিরস্মরণীয় করে রাখার জন্য একটা সৌধ নির্মাণ করবেন।
দ্বিতীয়তঃ তিনি আবার বিয়ে করবেন।
তৃতীয়তঃ তিনি ছেলেমেয়েদের প্রতি কখনো রুষ্ঠ হবেননা।
চতুর্থতঃ প্রতি মৃত্যুবার্ষিকীতে সম্রাট তার সমাধিতে আসবেন।
সম্রাট শাহ্জাহান চারটির মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছিলেন। মমতাজের মৃত্যুর পর তাকে তপতী নদীর তীরে বোরহানপুরের জয়নাবাদ বাগানে সমাহিত করা হয়। মৃত্যুর ছয় মাস পর মমতাজ মহল-এর মৃতদেহ আগ্রায় নিয়ে আসেন শাহ্জাহান। ১৬৩১ সালে সৌধ নির্মাণের জন্য ডিজাইন আহ্বান করেন এবং ওই বছরই শাহ্জাহান তাজমহল নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০ হাজার লোকের ২২ বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমে ১৬৫৩ সালের ২৭শে সেপ্টেম্বর আগ্রায় যমুনা নদীর তীরে তাজমহল প্রতিষ্ঠিত হয়। তাজমহল নির্মাণে, বর্তমান হিসাবে ৪০লাখ পাউন্ড ব্যয় হয়েছিল।

তাজমহল বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নরূপে পর্যটকদের কাছে ধরা দেয়। যেমন ভোরবেলায় গোলাপী, দুপুর-বিকেলে দুধ সাদা, জোৎস্নার আলোয় সোনালী এবং চাঁদের আলোয় মুক্তোর মত জ্বল জ্বল করে। এছাড়া বিভিন্ন ঋতুতে বিভিন্ন রং ধারণ করে। কথিত আছে, পৃথিবীতে যাতে দ্বিতীয় কোন তাজমহল গড়ে না ওঠে সে জন্য সম্রাট শাহ্জাহান কারিগরদের হাতের আঙ্গুল কেটে দিয়েছিলেন এবং অন্ধ করে দিয়েছিলেন।

তাজমহল-এর নকশাকারীর নাম নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। তবে যে নামগুলো বেশী উচ্চারিত হয় সেগুলো হলো- ইরানের নামজাদা স্থপতি ওস্তাদ ঈশা, ওস্তাদ আহমদ লাহোরি, ওস্তাদ হামিদ এবং ইটালির জেরোলিমো ভোরানিও। সম্রাট শাহ্জাহান ১৬৬৬ সালের ২২শে জানুয়ারী মৃত্যুবরণ করেন এবং তাকে তাজমহলের মাঝখানে একটি ঘরে মমতাজ এর পাশেই সমাহিত করা হয়।