“আমি আর প্লক্ষতরুণী” কবিতার আরেকটা অংশ

“আমি আর প্লক্ষতরুণী” কবিতার আরেকটা অংশ

প্লক্ষতরুর পাশে ঝরনা, পাহাড়শ্রেণী তরুণ শিবালিক
যাত্রাকুশল পাঠ করোনি; কালো বেড়াল দেখছি, এক শালিক।
তবুও স্রোত দু’ধারি অসি, নদীগতর কামিন মেয়েছেলে
কুরুপাঞ্চাল, দুর্গসমান এমন তাজা তীর্থ কোথায় পেলে?
জনক ব্রহ্ম আমার তটে যজ্ঞে বসেছিলেন পূর্ণকাম
ভরতবংশ গঠন হল, নাও পৃথিবী তোমারই মোকাম
রাজসন্তান শিখতে আসে গুরুর কাছে ব্রহ্মচারণ যোগ
শ্রুতি আগুন ঝলসে দেবে কিশোরকন্ঠ, ভয়ে বুঁজছি চোখ!
ওমনি শুনি সূর্যসমান অগ্নিভ তার সুরের সংঘারাম
নতুন যে এক দেবতাজন্ম, নতুন শ্লোকে তক্ষুনি বুঝলাম
যদি এখন ইঁট না পাতি, প্রেম-চিঠিতে প্রপোজ করি জোশ-এ
ছোঁ মারবেই প্রবল কোনও দেবী, তুমি দেখিও ব’সে ব’সে
সকালবেলা আমার হিরো আমার জলে শুদ্ধ হতে এলে
তিনচোখো মাছ ঠুকরে দিলাম নরম কোনও কঠিনবজ্র পেলে
শিউরে উঠে হাঁ-মুখ খোলে সবুজলতা দেহ-ব্যালকনির
তিনটে ঘন্টা কাটল সোনা নদীবিছানায়! দুধ-মধু-পনির
খেয়ে এবার পড়ায় লাগো, সূক্তগুলো বাজাও তো একদিনে!
কিন্তু প্রবীণ অশথসম ঋষি, তাদের বুঝতে বাকি নেই
ভারতীস্নান নিষেধ হল। বন্ধ হল শুক্লরক্তপাত?
তিন সহস্র বছর ধরে অশ্বী, অজা, উন্নতা, কুজাত
আমার প্রপাত জেগে উঠলে তোমার শুধু সঙ্গম ধেয়ান
শাস্ত্রপাঠে অনধিকার, জঙ্গলে যা, সমিধ কেটে আন
জেন্দ আবেস্তা গুটিয়ে গেল, দরজা খোলে মিশরসভ্যতা
তুমি কিচ্ছু জানলে না গো, রাখলেও না কথার পিঠে কথা
কেন না পিঠ রক্তভাসি যিশুর মতো নিজের বওয়া ক্রুশে
রাতের বাসা খোলে আকাশ, তখন থেকেই অসুখ ফুসফুসের
গা ঘেঁষে যায় বাঘের রোমশ, পেটের ওপর বিড়ে পাকান সাপ
সারারাত্রি শত্রু তাড়াই, কুণ্ডলিনী এবার জেগে যাক!
মরণকুণ্ড জিকির দিল, আমি তখন আচমকা তন্দ্রায়
ঝুপুস শব্দে আমার পুরুষ, যা হবে হোক, আমার বুকে আয়
কিন্তু এ-যে মরা বাঁশির হাড় ক’খানা, আদুরে বর কই!
মর্তে মানুষ, স্বর্গপতি — বিহানকালে সবার শাপ কুড়োই
“শুষ্ক হবি, লুপ্তধারা, দেবতা নোস, সামান্য কামিনী
মাথা ও পা স্রোতোসিদ্ধ, বাকি শরীর পাতালগামিনী”
মুণ্ড-চরণ প্রবাহ দেবে, বাকি শরীর পাতালগামিনী…

2 thoughts on ““আমি আর প্লক্ষতরুণী” কবিতার আরেকটা অংশ

  1. আপনার লিখার তেজ বড়ই মারাত্মক। শুভেচ্ছা অহর্নিশি প্রিয় কবি চন্দন দা। শুভ সকাল। :)

  2. কঠিন লেখা। তবে কয়েকবার পড়লে ঠিকই বোঝা যায়। নমষ্কার কবি।

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।