বাংলাদেশের অন্যতম বড় ব্যবসায়ী গোষ্ঠী যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মালিক নুরুল ইসলাম বাবুল মারা গেছেন। দৈনিক যুগান্তর, যমুনা টেলিভিশন এবং যমুনা ফিউচার পার্ক এই গ্রুপের প্রতিষ্ঠান। বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও তিন মেয়ে রেখে গেছেন।
গত ১৪ জুন ২০২০ নুরুল ইসলামের করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। ওইদিনই তাকে এভার কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। করোনা ভাইরাসে তার কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেখানে ১০ সদস্য বিশিষ্ট মেডিকেল বোর্ড গঠন করে তার চিকিৎসা চলছিল। তিনি ৩৮টি শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক ছিলেন বলে জানা গেছে।
দেশবরেণ্য শিল্পপতি, যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামের মৃত্যুতে সর্বত্র শোকের ছায়া নেমে এসেছে। দেশের কবি-সাহিত্যিক বুদ্ধিজীবী ও নারী নেতৃবৃন্দ শোক প্রকাশ করেছেন। বিবৃতিতে তারা বলেন, যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান সব সময় দেশের মানুষের কথা ভাবতেন। দেশের শিল্প উন্নয়নে তার বিশাল ভূমিকা রয়েছে, বিশেষ করে তার মেধা, দক্ষতা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ও মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে আধুনিক চিন্তার সাহসী উদ্যোক্তা ছিলেন। শত পরিশ্রম করে গড়ে তোলেন অসংখ্য শিল্পপ্রতিষ্ঠান। সেখানে হাজার হাজার লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। তিনি দেশের অর্থনীতির একজন নক্ষত্র ছিলেন। তার মৃত্যুতে দেশ একজন স্বপ্নদ্রষ্টা শিল্পোদ্যোক্তাকে হারিয়েছে
তাকে নিয়ে ফরাবী হাফিজ, সংবাদ পাঠক, চ্যানেল ২৪ –
এর একটি লেখা বেশ ভাবিয়ে তুলছে আমাকে। কিছুটা সংক্ষেপে নিচে উদ্ধৃত করলাম। ফেসবুকের এক স্ট্যাটাস থেকে পাওয়া লিখাটি। (লেখাটি আমার নয়)
……….
বাঁচার অনেক আকুতি ছিল যমুনা গ্রুপের
চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বাবুলের!!
শেষ সময়ে উনি স্টিভ জবসের মতো যেই ডাক্তারকে দেখতেন তাকেই বলতেন,”আমার সব সম্পদ দিয়ে দিবো। শুধুমাত্র আমার কষ্টটা একটু কমিয়ে দাও! আমি যে আর সহ্য করতে পারছি না।”
তিনি যখন এ্যাপোলোর আইসিইউতে, হস-পিটাল ম্যানেজমেন্ট এর কার্যক্রম দেখে মনে হয়েছে পুরো হসপিটালেই একজন রোগী।
হবারই কথা! আফসোস করছিলাম আর কথা বলছিলাম এক ডাক্তারের সাথে। কোটি কোটি টাকা খরচ করে এয়ার এম্বুল্যান্সে চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ১০/১২ জন ডাক্তার আনা হলো। কিছুতে কিছুই হলো না।
কি কঠিন মৃত্যু!
মৃত্যুর সময়ে একজন কাছের মানুষের হাতের স্পর্শও পান নি! কারো সাথে বিদায় শব্দটি বলতে পারেন নি! পরিবার প্রিয়জন কেউই পাশে ছিলো না, থাকার সুযোগও নেই। ভিষণ নিঃস্তব্দ সেই রুমটায় আমি গতকাল গিয়েছিলাম। ভুতুড়ে পরিবেশ, আধো আলো। চারপাশে সবাই অর্ধমৃত মানুষ! আহারে… সম্পুর্ণ সুস্থ লোকটি হঠাৎ এক অজানা ভাইরাস করোনার আঘাতে ২৫ দিনের মধ্যে নাই হয়ে গেলো।
ভেবে দেখেছো কি, কার জন্য কিসের জন্য এতো প্রতিযোগিতা ও পরিশ্রম?
সকল ক্ষমতার মালিক একমাত্র আল্লাহ।
তিনি জন্ম মৃত্যুর মালিক
তিনি যাকে খুশি মৃত্যু দেন, এবং মৃত কে দেন জীবন।
মৃত্যুর সময়ে একজন কাছের মানুষের হাতের স্পর্শও পান নি! কারো সাথে বিদায় শব্দটি বলতে পারেন নি! পরিবার প্রিয়জন কেউই পাশে ছিলো না, থাকার সুযোগও নেই।৷
এ বিদায় বড় কাদায়। বড় শিক্ষা দিয়ে যায়। তবু জানি ভেবে দেখার সময় আমাদের হবে না।
”আমার সব সম্পদ দিয়ে দিবো। শুধুমাত্র আমার কষ্টটা একটু কমিয়ে দাও! আমি যে আর সহ্য করতে পারছি না।”
বিধাতা লিখন খণ্ডানো সম্ভব নয়। আল্লাহ তাআলা এভাবেই নেবেন স্থির রেখেছিলেন।
মৃত্যুর সময়ে একজন কাছের মানুষের হাতের স্পর্শও পান নি! কারো সাথে বিদায় শব্দটি বলতে পারেন নি! পরিবার প্রিয়জন কেউই পাশে ছিলো না, থাকার সুযোগও নেই।৷৷
এ বিদায় বড় কাদায়। বড় শিক্ষা দিয়ে যায়। তবু জানি ভেবে দেখার সময় আমাদের হবে না।
আপনার সুস্থতা কামনা করি সবসময়।
সাড়ে তিন হাত মাটির ঘরে যেতে হবে সবাইকে।
কবি কায়কোবাদ
—
যে ভুলে তোমারে ভুলে-
হীরা ফেলে কাঁচ তুলে,
ভিখারী সেজেছি আমি
আমার সে ভুল প্রভু
তুমি ভেঙে দাও।
সংসারের মায়া মোহে
তোমারে ভুলিয়া।
যে ডেকেছে তারি পাশে –
গেছি ছুটে উর্ধ্বশ্বাসে।
কে আপন কে বা পর
দেখিনি চাহিয়া।
সেই মারাত্বক ভুলে –
তোমারে গিয়েছি ভুলে।
আমার সে ভুল প্রভু
তুমি ভেঙে দাও।
————————আমি মৃত্যুর মিছিলে——————
এই মৃত্যুর মিছিলে আমিও আছি,
আছে আমার বন্ধুবান্ধব আত্মীয়স্বজন।
আমার পূর্বপুরুষেরাও ছিল মৃত্যুর মিছিলে,
ছিল জ্ঞানীগুণী, ফকির, সাধু, অলিগণ।
মৃত্যুর মিছিলে ছিল সন্যাসী, দরবেশ,
ছিল রাজা, বাদশা, মন্ত্রী, মিনিস্টার;
জীবের জীবন মৃত্যুতেই হবে শেষ!
এটাই নিয়ম, কেউ করেনি অস্বীকার!
মৃত্যুর মিছিলে ধ্বনিত হয় বাঁচতে চাই!
এই মিছিলে শ্লোগান দেয়না মরতে চাই!
বিধাতা বলে নিয়ম খণ্ডনের বিধান নাই!
জীবের মৃত্যুই নিশ্চিত, এরচেয়ে সত্য নাই।
নিতাই বাবু
০৭/০৭/২০২০খ্রী:
ফেসবুক থেকে কপি করা মন্তব্য আপনার লেখায় রেখে গেলাম।
জয় হোক আপনার। জয় হোক মানবতার।
ধন্যবাদ
আসলেই করোনা বড় নিঠুর
বিধাতার চেয়েও নিঠুর——————
অনেক বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই
এটা কেমন কথা! বিধাতা নিষ্ঠুর? কিভাবে?