গ্রামবাংলার সংস্কৃতি ও লোকগান দ্বিতীয় পর্ব-কবিগান

গ্রামবাংলার সংস্কৃতি ও লোকগান
দ্বিতীয় পর্ব-কবিগান

তথ্যসংগ্রহ, সম্পাদনা ও কবিগান রচনা- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

কোনো জনগোষ্ঠীর জীবনঘনিষ্ঠ সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যবাহী উৎসবকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে লোক সংস্কৃতি এবং পালন করা হয় লোক উৎসব। বাংলার লোক সমাজের ইতিহাস অতি প্রাচীন, বৈচিত্র্যময় এবং ব্যাপক। এই ব্যাপকতার মধ্যে রয়েছে বাংলার লোককাহিনী, লোকগীতি, লোকনৃত্য, লোকক্রীড়া, লোকচিকিৎসা, লোকজ গণমাধ্যম, লোকগান, লোক ভঙ্গিমা, লোকসংস্কার- এসবই লোকসংস্কৃতির নানা অঙ্গ। দীর্ঘকাল থেকে গড়ে ওঠা লোক সম্প্রদায়ের সামাজিক আচার-আচরণ ও বিশ্বাস, যাপিত জীবন, আনন্দ-উৎসব বাংলার মানুষের প্রকৃত পরিচয় বহন করে। স্থুলভাবে কেউ কেউ হয়তো বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে নগর সংস্কৃতি, গ্রাম বাংলার সংস্কৃতি ও আদিবাসীদের সংস্কৃতি এমনই তিন ভাগে ভাগ করে থাকেন। প্রকৃত অর্থে বৈশিষ্ট্য-বৈচিত্র্যে পৃথক হলেও এবং এই তিন সংস্কৃতি একসূত্রে গাঁথা না হলেও একে অন্যের পরিপূরক। তবে গ্রাম প্রধান বাংলাদেশে গ্রামের বিশাল জনগোষ্ঠী শত শত বৎসর ধরে তাদের নিজস্ব ধ্যানধারণা ও জীবনযাপন প্রণালীকে ভিত্তি করে নানামুখী যে সংস্কৃতি গড়ে তুলেছে তাই আমাদের লোক সংস্কৃতি। প্রাকৃতিক পরিবেশে লালিত-পালিত বিশ্বের নানা স্থানের জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রা, সমাজ-ব্যবস্থা, আচার-আচরণ বিশ্বাস-সংস্কার মিলিয়ে তাদের যে ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতি গড়ে ওঠে তার মধ্যে এক বিস্ময়কর সামঞ্জস্য পাওয়া যায়। তাইতো বাংলাদেশের পাহাড়ি এলাকার, ভারতের অরুণাচলের এবং সুদূর দক্ষিণ আফ্রিকার আদিবাসীদের ভাষা ভিন্ন হলেও গানের সুরে ও নৃত্যে ছন্দের মধ্যে দেখা যায় এক অপূর্ব মিল। স্কটল্যান্ডের গির্জার প্রার্থনা সঙ্গীতের সাথে অনেক ভাষারই নিবেদনমূলক গানের মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

তাই দেশ ভেদে বৈশিষ্ট্যময় লোকসংস্কৃতির একটি সর্বকালীন ও বিশ্বজনীন আবেদন রয়েছে। পেশা লোক সমাজের চিন্তা-চেতনা এবং বস্তুগত নানা দিকের বিকাশ ঘটায়। আর গ্রামাঞ্চলের পেশা যেন এক একটি শিল্পকর্ম। চাষিদের মাঠে বোনা সারিবদ্ধ ধানক্ষেতে বাতাসে দোল খাওয়া রোদ-ছায়ার খেলা, কুমারের হাতের স্পর্শে তৈরি মাটির ভান্ড এবং তাতে বিচিত্র রংয়ের ছোঁয়া, তাঁতির বোনা নিত্যদিনের ব্যবহারের বস্ত্রে রঙিন সূতার কাজ, গৃহবধূদের হাতের ছোঁয়ায় অপূর্ব সৃষ্টি নকশি কাঁথা, মাঠের কারুকার্যময় ছুতারের কাজ সবই যেন এক একটি অনবদ্য শিল্পকর্ম। এক সময় বাংলার গ্রামগুলি ছিলো অনেকটাই স্বয়ংসম্পূর্ণ। জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য ও অন্যান্য উপাদান তারা নিজেরা তৈরি করতো। তদুপরি তাদের চাহিদা ছিলো কম এবং তারা অল্পেই সন্তুষ্ট থাকতো। আবার রাঙ্গামাটির পথ, পুকুর, আম, কাঠালের বাগান, তরুর সারি, একচালা, দোচালা, চারচালা বাড়ি সব মিলিয়ে শিল্পীর আঁকা ছবি বাংলার এক একটি গ্রাম। এমনই পরিবেশে সকল সম্প্রদায় একত্রিত হয়ে গড়ে তোলে বাংলার লোকসংস্কৃতি। লোকসংস্কৃতির অন্যতম প্রধান অঙ্গ লোকসঙ্গীত বাংলার লোক উৎসবের প্রাণ।

প্রাচীনকাল থেকে শ্রুতি ও স্মৃতি থেকে অনেক সঙ্গীত হাটে-মাঠে-গ্রামে-গঞ্জে গাওয়া হচ্ছে। অঞ্চল ভেদে এসব লোকসঙ্গীতের রয়েছে নানা প্রকারভেদ। ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালি, জারি, সারি, গম্ভীরা, মুর্শিদি, মারফতি, কীর্তন, ঘাটু, ঝুমুর ইত্যাদি নানা অঞ্চলের নানা ধারার সঙ্গীতের সংমিশ্রণে বাংলার লোকসঙ্গীত যথেষ্ট সমৃদ্ধ। লোকসঙ্গীত এক অনবদ্য রূপ গ্রহণ করে, যখন গীত, বাদ্য ও নৃত্যের সমন্বয় ঘটে এই সঙ্গীতের সাথে। তবে লোকসঙ্গীত, লোকবাদ্য ও লোকনৃত্যের পৃথক পৃথক বৈশিষ্ট্য ও ঐতিহ্য আছে। এই তিনে মিলে বাউল গান এক অপূর্ব লোকসঙ্গীত সৃষ্টি করে। বাংলার লোক সংস্কৃতির আর একটি অঙ্গ লোকসাহিত্য। শত বৎসর ধরে সমৃদ্ধ হয়ে ওঠা এসব লোকসাহিত্য সংগ্রহ, সংকলন, সম্পাদনা এবং প্রচারের কাজ খুবই জরুরি। কাজগুলি যে হচ্ছে না তা নয় তবে তা আরও ব্যাপকভাবে হওয়া দরকার। বাংলার রূপকথা লোকসংস্কৃতির এক বিরাট সম্পদ।

স্বপ্ন, কল্পনা, আবেগ দিয়ে সৃষ্ট এসব রূপকথায় আছে রাজা-রাণী-রাজপুত্র কখনো বা রাক্ষস-খোক্কস অথবা ভূত-প্রেতের গল্প। কল্পনার রাক্ষস-খোক্কস ও ভূত-প্রেত অশুভ শক্তি-অত্যাচারের প্রতীক। তবে বীর রাজপুত্রের কাছে এদের পরাজয় অবধারিত। দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন করতে রাজপুত্র ছুটে চলে পঙ্খিরাজ ঘোড়ায় চড়ে। আবার সব খুইয়ে পথিক যখন গাছের নিচে বিশ্রামরত তখন গাছের ডালে বসা ব্যঙ্গমা-ব্যঙ্গমী পাখির অজানা খবর অসহায় পথিকের কাছে পৌঁছে দিয়ে তাকে সঠিক পথ খুঁজে নিতে সহায়কের ভূমিকা পালন করে। লোক উৎসবের আর একটা বড় বিষয় হল প্রদর্শনী ও মেলার আয়োজন।

এছাড়াও আছে খেলাধুলা, গভীর রাত পর্যন্ত যাত্রা-পালা, কবি গানের লড়াই, লাঠি খেলা, নৌকা বাইচ। এসব খেলায়-অভিনয়ে যেমন বিপুল সংখ্যক লোক অংশগ্রহণ করেন তেমনি সকল শ্রেণির মানুষ চিত্তবিনোদনের উপাদান খুঁজে পায় এসব লোক উৎসব থেকে। লোক সংস্কৃতির ও লোক উৎসবের অতি অল্প কিছু পরিচয় তুলে ধরাও খুব কঠিন কাজ। এ বিষয়ে সামান্য কিছু জানতে হলেও যথেষ্ট অধ্যবসায় ও অধ্যয়ন প্রয়োজন। প্রয়োজন লোক সমাজে মিশে গিয়ে নিজেদের ঐতিহ্যকে উপভোগ করা। বৃহত্তর জীবনের অংশীদার হওয়া। সেই প্রয়াস আজ বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী নিয়েছে।

গ্রামবাংলার সংস্কৃতি ও লোকগান
দ্বিতীয় পর্ব-কবিগান

গীতি কবিতা-২

প্রথম কবিয়ল-

শুনেন সবে শ্রোতাজন বলিয়া জানাই।
এখানেতে একটি প্রশ্ন আমি করে যাই।
যখন হয়েছিল কুরু পাণ্ডবের রণ।
সমরে পড়িল বীর অর্জন নন্দন।
সপ্তরথী মিলি একা বালকে বধিল।
জয়দ্রথ বধে পার্থ প্রতিজ্ঞা করিল।
এবারেতে সবার কাছে প্রকাশ করি ভাই।
কত দিন ধরে রণ হল বল না আমায়।
(সুর করে বলতে থাকে ঘন ঘন ঢোলের বাদ্যি বাজে।)

অবশেষে প্রথম কবিয়াল আসরে বসে পড়ে। ইত্যবসরে দ্বিতীয় কবিয়াল উঠে পড়ে।
শ্রোতাদের বন্দনা করে গেয়ে ওঠে।

দ্বিতীয় কবিয়াল-

তোমার কথা বলবো কিবা আর?
শুনে মাথা ঘুরে যাবে সবাকার…………..।
(ঘন ঘন ঢোলের বাদ্য)
বাজনা স্তব্ধ।

দ্বিতীয় কবিয়াল-

শুন শুন সর্বজন আমার বচন,
আমারে প্রশ্নটি যে করিল এখন।
সবার কাছে সেটা আমি প্রকাশ করে যাব।
সবার কাছে আমি তখন হাততালি পাব।
এই কথাটি সবার কাছে বলতে আমি চাই।
আঠারো দিনের যুদ্ধ কার বা জানা নাই।
এই তো তোমার কথার জবাব কথায় মিটে গেল।
শ্রোতাগণ সকলেই হরি হরি বল। বোল হরিবোল।

ঘন ঘন ঢোলের বাজনা সহ কাঁসর বাদ্যি বেজে ওঠে।

দ্বিতীয় কবিয়াল-

এবারেতে একটি প্রশ্ন তোমায় করে যাই,
বল বল ত্রিভুবনে জয়ী কেবা ভাই।
সেই অসুরের নামটি তোমায় বলতে হবে।
ভাল মন্দের যত হিসাব শ্রোতাজন করবে।

দ্বিতীয় কবিয়াল বসে পড়ে। পুনরায় ঢোল বেজে ওঠে।
ধীরে ধীরে মালকোঁচা মারা ধুতি ঠিক করতে করতে
প্রথম কবিয়াল উঠে পড়ে।

প্রথম কবিয়াল

(সুরে গাইতে থাকে)

আছিল ত্রিপুরাসুর নামেতে অসুর,
মহাবল ধরে সেই জয়ী তিনপুর।
চন্দ্র সূর্য দেবগণ কেহ তারে নারে,
স্বর্গ ভ্রষ্ট করিল সকল দেবতারে।
ভয়ে ভীত দেবগণ তখন মন্ত্রণা করিল,
কি প্রকারে এই দৈত্য নাশ হবে বল?
শচীনাথ দেব সাক্ষাত্ বলেন বচন,
একবানে তিনপুরে ভেদিবে যে জন।
তাহার হস্তেতে হবে অসুর সংহার,
নতুবা ইহারে মারে সাধ্য আছে কার?
এখানেতে তোমার প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাবে।
সবার মাঝে বলছি আমি অন্যথা না হবে।
…………………….

পুনরায় ঢাক ঢোল কাঁসর সহ বাঁশি বেজে ওঠে। দুইজন কবিয়াল উঠে দাঁড়িয়ে শ্রোতাজনের উদ্দেশ্যে জোড় হাতে বিনতি করে। আমাদের দোষ ত্রুটি নিজগুণে মার্জনা করবেন। আগামী কাল এই আসরে বাউল গান হবে
সকলকে আসার অনুরোধ রইল।

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী সম্পর্কে

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী –নামেই কবির পরিচয়। কবির বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার পাথরচুড় গ্রামে। প্রকৃতির সাথে পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। বর্তমানে কবি বাংলা কবিতার আসর, বাংলার কবিতা ও কবিতা ক্লাবের সাথে যুক্ত। অবসর সময়ে কবি কবিতা লেখেন ও স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন। কাব্যচর্চার সাথে সাথে তিনি সাহিত্যচর্চাও করেন। গল্প ও রম্য রচনা আর ছোট গল্প লিখেন। বহু একাঙ্ক নাটকও তিনি লিখেছেন। অন্ধকারের অন্তরালে, সমাজের শত্রু ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বহু যাত্রাপালা -সোনা ডাকাত, শ্মশানে জ্বলছে স্বামীর চিতা উল্লেখযোগ্য। কবির অভিনয় প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে বিচারক মণ্ডলী তাঁকে বহু সম্মানে ভূষিত করেছেন। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী একাধারে কবি ও অপর দিকে লেখক। তার লেখা “আমার গাঁ আমার মাটি”, আমার প্রিয় শহর জামুরিয়া, আমার প্রিয় শহর কুলটি, আমার প্রিয় শহর আসানসোল, আমার প্রিয় শহর রাণীগঞ্জ বহু পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী প্রকৃতপক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বী হয়েও তিনি অন্য ধর্মকেও শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করেন। তিনি বিশ্বাস করেন সব মানুষই ঈশ্বরের সন্তান। তাই ধর্মে আলাদা হলেও আমরা সবাই ভাই ভাই।

14 thoughts on “গ্রামবাংলার সংস্কৃতি ও লোকগান দ্বিতীয় পর্ব-কবিগান

  1. আজকাল কবি গানকে আর পাওয়াই যায়। আমাদের শহুরে জীবনে অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে। আপনার পোস্টের কল্যাণে অনেকটাই জানা গেলো। ধন্যবাদ কবি। :)

    1. একসময় অল ইণ্ডিয়া রেডিও স্টেশন থেকে সন্ধ্যা সাতটায় কবিগান
      পরিবেশন করা হতো। অধুনা বিস্মৃতির অতল তলে তলিয়ে গেছে।

      শারদীয়ার আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন প্রিয়কবি ।
      মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম। সাথেই থাকুন সর্বদা।
      জয়গুরু!

    1. ধন্যবাদ প্রিয় কবি। সাথেই থাকবেন।
      এটা প্রত্যাশা রাখি।
      জয়গুরু!

  2. একসময় পাড়া মহল্লায় যাত্রাপালা হতো। তা হতো রাতে।সেই আসরেই দিনের বেলায় হতো বয়াতি গান। গাইতেন আবুল সরকার, রহমান বয়াতি, কানা সামছু সহ আরও অনেক গুনীজন শিল্পীরা। সেই গান, সেই লোক সংস্কৃতি, লোকসংগীত এখন আর চোখেই পড়ে না। নেই বললেই চলে। কালের বিবর্তনে সমাজ এবং রাষ্ট্র থেকে সবই হারি গেছে । কিন্তু ইতিহাস রয়ে গেছে৷ যেই ইতিহাস আপনার সুলেখিত লেখনীতে প্রকাশ । সেসব ইতিহাসের সাক্ষী আমিও একজন। আপনাকে শুভেচ্ছা। জায় গুরু।                         

    1. কবিগান সাধারণত দুটি দলের দ্বারা গীত হয়। প্রত্যেকটি দলের নেতৃত্বে থাকেন একজন "কবিয়াল" বা "সরকার"। তাঁর সহকারী গায়কদের বলা হয় "দোহার"। এঁরা সাধারণত নেতার কথাগুলিই পুনরাবৃত্তি করেন। কবিগান শুরু হয় "বন্দনা" বা "গুরুদেবের গীত"-এর মাধ্যমে। "বন্দনা" অংশটি জনতা ও শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে নিবেদিত হয়। এটি কবিয়াল যেমন উপযুক্ত করেন, তেমনভাবে গান। এরপর রাধাকৃষ্ণ বিষয়ক গান গাওয়া হয়। এটিকে কেউ কেউ "আগমনী" বলেন। এরপর চারটি বিষয়ভিত্তিক গান গাওয়া হয়ঃ "সখী সংবাদ", "বিরহ", "লহর" ও "খেউড়"। এরপর প্রতিযোগিতামূলক অংশটি শুরু হয়। কবিগানের আসরে এই অংশটিকে "কবির লড়াই"-ও বলা হয়। এই অংশে একজন গীতিকার-সুরকার মুখে মুখে গান বেঁধে অপর গীতিকার-সুরকারকে আক্রমণ করেন এবং তিনিও গানের মাধ্যমে সেই আক্রমণের প্রত্যুত্তর দেন

      শারদীয়ার আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন প্রিয়কবি ।
      মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম। সাথেই থাকুন সর্বদা।
      জয়গুরু!

    1. শারদীয়ার আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন প্রিয়কবি ।
      মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম। সাথেই থাকুন সর্বদা।
      জয়গুরু!

  3. গ্রাম প্রধান বাংলাদেশে গ্রামের বিশাল জনগোষ্ঠী শত শত বৎসর ধরে তাদের নিজস্ব ধ্যানধারণা ও জীবনযাপন প্রণালীকে ভিত্তি করে নানামুখী যে সংস্কৃতি গড়ে তুলেছে তাই আমাদের লোক সংস্কৃতি। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Yes.gif.gif

    1. কবিগান শুরু হয় "বন্দনা" বা "গুরুদেবের গীত"-এর মাধ্যমে। "বন্দনা" অংশটি জনতা ও শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে নিবেদিত হয়। এটি কবিয়াল যেমন উপযুক্ত করেন, তেমনভাবে গান। এরপর রাধাকৃষ্ণ বিষয়ক গান গাওয়া হয়। এটিকে কেউ কেউ "আগমনী" বলেন। এরপর চারটি বিষয়ভিত্তিক গান গাওয়া হয়ঃ "সখী সংবাদ", "বিরহ", "লহর" ও "খেউড়"। এরপর প্রতিযোগিতামূলক অংশটি শুরু হয়। কবিগানের আসরে এই অংশটিকে "কবির লড়াই"-ও বলা হয়। এই অংশে একজন গীতিকার-সুরকার মুখে মুখে গান বেঁধে অপর গীতিকার-সুরকারকে আক্রমণ করেন এবং তিনিও গানের মাধ্যমে সেই আক্রমণের প্রত্যুত্তর দেন

      কবিওয়ালাগণ মুখে মুখে কবিতা বলেছেন ঠিকই; কিন্তু কখনোই এগুলো লিখে রাখেননি। লক্ষ্যণীয় যে, ঐসময় কোন ছাপাখানা  ছিল না। তাছাড়াও তাদের সমর্থক কিংবা পৃষ্ঠপোষকগণও কখনো কবিগান সংগ্রহ করার কথা ভাবেননি বা চিন্তা করেননি। তৎকালীন সমাজ জীবনে উৎসব-আনন্দের প্রয়োজনে কবিগানের আসর বসতো। এবং এ আসর বসার মাঝেই ছিল কবিগানের সার্থকতা ও সফলতা।

      ১৮৫৪ সালে সর্বপ্রথম কবি ঈশ্বর গুপ্ত  কবিগান সংগ্রহ করা আরম্ভ করেন। এগুলো পরবর্তীতে তিনি সংবাদ প্রভাকর পত্রিকার পাতায় প্রকাশ করতে শুরু করেন। উল্লেখ্য, প্রাচীন সংবাদ প্রভাকর পত্রিকাটি ছিল কবি ঈশ্বর গুপ্তেরই সংবাদপত্র। এভাবেই পত্রিকাটির মাধ্যমে কবিগানের বিস্তৃতি ঘটতে শুরু করে।

      শারদীয়ার আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন প্রিয়কবি ।
      মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম। সাথেই থাকুন সর্বদা।
      জয়গুরু!

    1. কবিওয়ালাগণ মুখে মুখে কবিতা বলেছেন ঠিকই; কিন্তু কখনোই এগুলো লিখে রাখেননি। লক্ষ্যণীয় যে, ঐসময় কোন ছাপাখানা  ছিল না। তাছাড়াও তাদের সমর্থক কিংবা পৃষ্ঠপোষকগণও কখনো কবিগান সংগ্রহ করার কথা ভাবেননি বা চিন্তা করেননি। তৎকালীন সমাজ জীবনে উৎসব-আনন্দের প্রয়োজনে কবিগানের আসর বসতো। এবং এ আসর বসার মাঝেই ছিল কবিগানের সার্থকতা ও সফলতা।

      ১৮৫৪ সালে সর্বপ্রথম কবি ঈশ্বর গুপ্ত  কবিগান সংগ্রহ করা আরম্ভ করেন। এগুলো পরবর্তীতে তিনি সংবাদ প্রভাকর পত্রিকার পাতায় প্রকাশ করতে শুরু করেন। উল্লেখ্য, প্রাচীন সংবাদ প্রভাকর পত্রিকাটি ছিল কবি ঈশ্বর গুপ্তেরই সংবাদপত্র। এভাবেই পত্রিকাটির মাধ্যমে কবিগানের বিস্তৃতি ঘটতে শুরু করে।

      শারদীয়ার আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন প্রিয়কবি  বোন।
      মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম। সাথেই থাকুন সর্বদা।
      জয়গুরু!

  4. লোক উৎসব। বাংলার লোক সমাজের ইতিহাস অতি প্রাচীন, বৈচিত্র্যময় এবং ব্যাপক। আমি গ্রামের মানুষ। যখন যেখানে পেতাম ছুটে যেতাম। তন্ময় হয়ে শুনতাম। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_heart.gif

    1. কবিগানের আসরে এই অংশটিকে "কবির লড়াই"-ও বলা হয়। এই অংশে একজন গীতিকার-সুরকার মুখে মুখে গান বেঁধে অপর গীতিকার-সুরকারকে আক্রমণ করেন এবং তিনিও গানের মাধ্যমে সেই আক্রমণের প্রত্যুত্তর দেন।

      কবিগান শুনতে শুনতে রাত ভোর হয়ে আসে। নতুন সকালে সূর্য ওঠে। বাংলার লোকসংস্কৃতি যাত্রাপালার মতোই কবিগানে বিষয়বস্তু আলোচনা সাপেক্ষে বিবৃত করা হয় একাধিক কবিয়াল গণের মাধ্যমে। কোথাও কোথাও বা অযথা ঝামেলার মুখোমুখি হতে হয় জনতাকে। সব শান্ত করে আবার গান পরিবেশন করা হয়ে থাকে।

      ১৮৫৪ সালে সর্বপ্রথম কবি ঈশ্বর গুপ্ত  কবিগান সংগ্রহ করা আরম্ভ করেন। এগুলো পরবর্তীতে তিনি সংবাদ প্রভাকর পত্রিকার পাতায় প্রকাশ করতে শুরু করেন। উল্লেখ্য, প্রাচীন সংবাদ প্রভাকর পত্রিকাটি ছিল কবি ঈশ্বর গুপ্তেরই সংবাদপত্র। এভাবেই পত্রিকাটির মাধ্যমে কবিগানের বিস্তৃতি ঘটতে শুরু করে।

      শারদীয়ার আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন প্রিয়কবি ।
      মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম। সাথেই থাকুন সর্বদা।
      জয়গুরু!

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।