শারদ অর্ঘ- ১৪২৬ কবিতা সংকলন -পঞ্চম পর্ব- আগমনী কাব্য-৫

শারদ অর্ঘ- ১৪২৬ কবিতা সংকলন
কবি-লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
পঞ্চম পর্ব- আগমনী কাব্য-৫

ভাদ্র-আশ্বিন এ দু’মাস শরৎ ঋতু। বর্ষার পরের ঋতু শরৎ। তাই শরতের আগমনে বাংলার প্রকৃতি থাকে নির্মল স্নিগ্ধ। শরতের আকাশের মতো আকাশ আর কোন ঋতুতে দেখা যায় না।

গাছপালার পত্রপল্লবে গুচ্ছ গুচ্ছ অন্ধকার ফিকে হয়ে আসতেই পাখপাখালির দল মহাকলরবে ডানা মেলে উড়ে যায় নীল আকাশে।আকাশের উজ্জ্বল নীলিমার প্রান্ত ছুঁয়ে মালার মত উড়ে যায় পাখির ঝাঁক।শিমুল তুলোর মতো ভেসে চলে সাদা মেঘের খেয়া।

চারদিকে সজীব গাছপালার ওপর বয়ে যায় শেফালিফুলের মদির গন্ধভরা ফূরফুরে মিষ্টি হাওয়া।শিউলি তলায় হালকা শিশিরে ভেজা দূর্বাঘাসের ওপর চাদরের মত বিছিয়ে থাকে সাদা আর জাফরন রং মেশানো রাশি রাশি শিউলিফুল। শরতের ভোরের এই সুরভিত বাতাস মনে জাগায় আনন্দের বন্যা।তাই খুব ভোরে কিশোর–কিশোরীরা ছুটে যায় শিউলি তলায় ।

সূর্য ওঠে সোনার বরন রূপ নিয়ে।নির্মল আলোয় ভরে যায় চারদিক।আমন ধানের সবুজ চারার ওপর ঢেউ খেলে যায় উদাসী হাওয়া।আদিগন্ত সবুজের সমারোহ।ফসলের মাঠের একপাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীর রুপালি ধারায় সূর্যের আলো ঝলমল করে।নদীর তীরে কাশবনের সাদা কাশফুল কখনো হাতছানি দিয়ে ডাকে। কাশফুল নদী তীরে বনের প্রান্তে অপরূপ শোভা ছড়ায়। গাছে গাছে শিউলির মন-ভোলানো সুবাসে প্রকৃতি হয়ে উঠে মায়াময়।

শরৎকালের রাতে জ্যোৎস্নার রূপ অপরূপ। মেঘ মুক্ত আকাশে যেন জ্যোৎস্নার ফুল ঝরে। চাঁদের আলোর শুভ্রতায় যেন আকাশ থেকে কল্পকথার পরীরা ডানা মেলে নেমে আসে পৃথিবীতে। সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম। সাথে থাকুন, শারদীয়ার আন্তরিক প্রীতি আর শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন। জয়গুরু!

শারদ অর্ঘ- ১৪২৬ কবিতা সংকলন
কবি-লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
পঞ্চম পর্ব- আগমনী কাব্য-৫

শরতের সোনাঝরা রোদ পড়ে ঝরে,
দুধারে কাশের ফুল অজয়ের চরে।
ছোটতরী আছে বাঁধা নদী খেয়াঘাটে,
কচি কচি ধানগাছ দেখি মাঠে মাঠে।

সারি সারি রাঙাপথে যাত্রীসব আসে,
শরতের সাদা মেঘ গগনেতে ভাসে।
রাশি রাশি ফুটে আছে শিউলি টগর,
গুঞ্জরিয়া আসে তথা যতেক ভ্রমর।

তালদিঘি কালো জলে থাকে রুইমাছ,
পাড়ে তার সারি সারি আছে তালগাছ।
সরোবরে বিকশিত সহস্র কমল,
মধু আহরণ তরে আসে অলিদল।

আগমনী সুর ভাসে বাতাসের গায়ে,
দিবসের অবসানে সন্ধ্যা নামে গাঁয়ে।

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী সম্পর্কে

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী –নামেই কবির পরিচয়। কবির বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার পাথরচুড় গ্রামে। প্রকৃতির সাথে পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। বর্তমানে কবি বাংলা কবিতার আসর, বাংলার কবিতা ও কবিতা ক্লাবের সাথে যুক্ত। অবসর সময়ে কবি কবিতা লেখেন ও স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন। কাব্যচর্চার সাথে সাথে তিনি সাহিত্যচর্চাও করেন। গল্প ও রম্য রচনা আর ছোট গল্প লিখেন। বহু একাঙ্ক নাটকও তিনি লিখেছেন। অন্ধকারের অন্তরালে, সমাজের শত্রু ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বহু যাত্রাপালা -সোনা ডাকাত, শ্মশানে জ্বলছে স্বামীর চিতা উল্লেখযোগ্য। কবির অভিনয় প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে বিচারক মণ্ডলী তাঁকে বহু সম্মানে ভূষিত করেছেন। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী একাধারে কবি ও অপর দিকে লেখক। তার লেখা “আমার গাঁ আমার মাটি”, আমার প্রিয় শহর জামুরিয়া, আমার প্রিয় শহর কুলটি, আমার প্রিয় শহর আসানসোল, আমার প্রিয় শহর রাণীগঞ্জ বহু পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী প্রকৃতপক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বী হয়েও তিনি অন্য ধর্মকেও শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করেন। তিনি বিশ্বাস করেন সব মানুষই ঈশ্বরের সন্তান। তাই ধর্মে আলাদা হলেও আমরা সবাই ভাই ভাই।

11 thoughts on “শারদ অর্ঘ- ১৪২৬ কবিতা সংকলন -পঞ্চম পর্ব- আগমনী কাব্য-৫

  1. শরতের সোনাঝরা রোদ পড়ে ঝরে,
    দুধারে কাশের ফুল অজয়ের চরে।
    ছোটতরী আছে বাঁধা নদী খেয়াঘাটে,
    কচি কচি ধানগাছ দেখি মাঠে মাঠে। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_heart.gif

    1. সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম। সাথে থাকুন প্রিয় কবিবর।
      আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাই।
      জয়গুরু!

    1.  সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম। সাথে থাকুন প্রিয় কবিবোন।
      আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাই।
      জয়গুরু!

    1. ধন্যবাদ প্রিয়কবি। সাথে থাকুন।
      শারদীয়া শুভেচ্ছা রইল।
      জয়গুরু!

  2. কাশফুল নদী তীরে বনের প্রান্তে অপরূপ শোভা ছড়ায়। গাছে গাছে শিউলির মন-ভোলানো সুবাসে প্রকৃতি হয়ে উঠে মায়াময়। শরতের ছবি।

    বাহ্ কবি দা। দারুণ একটি ছবি উপহার দিয়েছেন প্রিয় কবি দা। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_rose.gif

    1. ধন্যবাদ প্রিয়কবি। সাথে থাকুন।
      শারদীয়া শুভেচ্ছা রইল।
      জয়গুরু!

  3. সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম। সাথে থাকুন, শারদীয়ার আন্তরিক প্রীতি আর শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন। জয়গুরু!

    পোস্টের আগমনী কাব্য-৫ শুরুর পূর্বে চলে এসেছে লাইনটি। সম্ভবত মিসপ্রিন্ট। :)

    1. আপনার সুন্দর হৃদয়গ্রাহী মন্তব্যে আমার
      বরাবরই পুলক জাগে মনে ও  প্রাণে।
      নতুন লেখার অনুপ্রেরণা দিলেন।
      জয়গুরু!

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।