ভাদুগান ও ভাদু উত্সব- ২০২০ (তৃতীয় পর্ব) ভাদুর কাহিনী, আলোচনা ও গীত সংকলন

ভাদুগান ও ভাদু উত্সব- ২০২০ (তৃতীয় পর্ব)
ভাদুর কাহিনী, আলোচনা ও গীত সংকলন

তথ্যসংগ্রহ ও কলমে-লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

সমগ্র মানভূম এলাকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক উৎসব হল ভাদুপরব। এই পরবের উৎস সম্পর্কে নানা লোকগাথা প্রচলিত আছে। তবে বিশেষজ্ঞদের কাছে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য মত এর উৎস পুরুলিয়া জেলার কাশীপুরের পঞ্চকোট রাজবাড়ী। এই রাজবাড়ীর থেকেই এই ভাদু পরবের সূচনা। ধীরে ধীরে এই পরব ছড়িয়ে পড়ে সমগ্র পুরুলিয়া জেলায়। আবার পাশাপাশি অবস্থানের জন্য এই পরব ছড়িয়ে পড়ে পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, বীরভূম, বর্ধমান জেলায়।

কিন্তু ভাদু পুজো কেন হয়? ভাদুর পরিচয়ই বা কি? এ নিয়ে নানা মুনির নানা মত থাকলেও সবচেয়ে জনপ্রিয় মতবাদটি হল-কাশীপুরের পঞ্চকোটরাজ নীলমণি সিং দেও-র এক কন্যা ছিলেন,যার নাম ভদ্রাবতী। খুব অল্প বয়সেই এই কন্যার মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় শোকে মুহ্যমান রাজা প্রজাদের আদেশ দেন তাদের প্রিয় রাজকুমারী কে নিয়ে গান রচনার। প্রজারাও সেই আদেশ মেনে রাজকুমারীর স্মৃতির উদ্দেশ্যে গান গাইতে থাকেন ও উৎসবের আয়োজন করেন।

কাশীপুরের রাজার বিটি বাগদীঘরে কি কর।
হাতের জালি কাঁধে লয়ে সুখ সায়রে মাছ ধর।।

কাশীপুরের মহারাজা সে করে ভাদুপুজা
সন্ধ্যা হলেই ঝারইল বাজে থালে জিলিপি খাজা।

এই উৎসব কারা পালন করে সেই নিয়েও প্রচুর মতভেদ। তবে এটা বলা যায় যে এই উৎসব এই উৎসব সমগ্র মানভূম এলাকায় এক সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। ভাদু পুজোয় ভাদুকে ভোগ নিবেদন। ভাদুর মূল প্রসাদই হল প্রমাণ সাইজের জিলিপি এবং মিষ্টি খাজা।

আমার ভাদু মান কইরেছে, মানে গেল সারা রাইত।
খুল ভাদু মানের কপাট, পায়ে ধরে প্রাণনাথ।।

www.youtube.com/watch?v=KLuYvOpsDjg

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী সম্পর্কে

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী –নামেই কবির পরিচয়। কবির বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার পাথরচুড় গ্রামে। প্রকৃতির সাথে পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। বর্তমানে কবি বাংলা কবিতার আসর, বাংলার কবিতা ও কবিতা ক্লাবের সাথে যুক্ত। অবসর সময়ে কবি কবিতা লেখেন ও স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন। কাব্যচর্চার সাথে সাথে তিনি সাহিত্যচর্চাও করেন। গল্প ও রম্য রচনা আর ছোট গল্প লিখেন। বহু একাঙ্ক নাটকও তিনি লিখেছেন। অন্ধকারের অন্তরালে, সমাজের শত্রু ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বহু যাত্রাপালা -সোনা ডাকাত, শ্মশানে জ্বলছে স্বামীর চিতা উল্লেখযোগ্য। কবির অভিনয় প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে বিচারক মণ্ডলী তাঁকে বহু সম্মানে ভূষিত করেছেন। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী একাধারে কবি ও অপর দিকে লেখক। তার লেখা “আমার গাঁ আমার মাটি”, আমার প্রিয় শহর জামুরিয়া, আমার প্রিয় শহর কুলটি, আমার প্রিয় শহর আসানসোল, আমার প্রিয় শহর রাণীগঞ্জ বহু পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী প্রকৃতপক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বী হয়েও তিনি অন্য ধর্মকেও শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করেন। তিনি বিশ্বাস করেন সব মানুষই ঈশ্বরের সন্তান। তাই ধর্মে আলাদা হলেও আমরা সবাই ভাই ভাই।

6 thoughts on “ভাদুগান ও ভাদু উত্সব- ২০২০ (তৃতীয় পর্ব) ভাদুর কাহিনী, আলোচনা ও গীত সংকলন

    1. সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম। ভাদুগান ও ভাদু উত্সব- 2020 (চতুর্থ পর্ব)
      ভাদুর কাহিনী, আলোচনা ও গীত সংকলন 
      প্রকাশিত হয়েছে। পাঠ করার অনুরোধ রইল।
      শারদ — শুভেচ্ছা জানাই। জয়গুরু।

    1. ভাদুগান ও ভাদু উত্সব- 2020 (চতুর্থ পর্ব)
      ভাদুর কাহিনী, আলোচনা ও গীত সংকলন 
      প্রকাশিত হয়েছে। পাঠ করার অনুরোধ রইল।
      শারদ – শুভেচ্ছা জানাই। জয়গুরু।
       

       

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।