ভাদুগান ও ভাদু উত্সব- 2020 (অষ্টম পর্ব)
ভাদুর কাহিনী, আলোচনা ও গীত সংকলন
তথ্যসংগ্রহ ও কলমে-লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
ভাদু উৎসব ভাদ্র মাসের উৎসব। ভাদ্রমাসের সংক্রান্তির দিনে ভাদু পুজো হয়ে থাকে। ব্রতের ক্ষেত্রে ভাদ্র মাসের প্রারম্ভেই শুরু হয় মেয়েলি ব্রত। পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় এবং লাগোয়া, বিহার, ঝাড়খণ্ডের দু-একটা জেলায় প্রধানত ভাদু উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
আদিবাসী, সাঁওতালদের মধ্যে করম গান ও উৎসবে পালন করার রীতি রয়েছে বর্ষাকালে। তা-ও বিশেষ ভাবে ভাদ্র মাসে। বর্ষা উৎসবের এই করম গানের হিন্দু সংস্করণ হিসেবে ভাদু গানকে ধরেছেন আশুতোষ ভট্টাচার্য। তিনি ভাদু গানকে আর্যেতর সমাজ উদ্ভূত ধরে, হিন্দু ধর্মের পৌত্তলিকতার প্রভাবজাত বলেছেন।
পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বীরভূম, পশ্চিম মেদিনীপুরের কিছু অংশ, আসানসোল মহকুমা, ঝাড়খন্ডের রাঁচি, হাজারিবাগে পালিত হচ্ছে এই উৎসব। কথিত আছে, পঞ্চকোট রাজপরিবারের রাজকন্যা ভদ্রাবতীর বিয়ের দিন বিয়েবাড়িতে ডাকাত পড়ে। সেখানেই খুন হন বরযাত্রী সহ ভদ্রাবতীর স্বামী। আর সেই শোকেই আত্মহত্যা করেন ভদ্রাবতী।
এই ঘটনা স্মরণ করেই ভাদু পুজো।
যাছ যাছ যাছ ভাদু
ক্ষনেক দাঁড়াও আঙিনাতে।
সম্বৎসরের মনের কথা বলব্য তুমার সাক্ষাতে।।”
এই ভাদু পরবের ও মূল সম্পদ এই ভাদু গানগুলো।এই ঝুমুর গানগুলো বেশিরভাগই প্রচলিত।একসময় একমাসব্যাপী ভাদু গানের আসর বসত কাশীপুর রাজবাড়িতে।এই গানগুলোর মধ্যে বাড়ির মেয়েদের সাংসারিক,সামাজিক,গার্হস্থ্য জীবনের না সুখ-দুঃখ,হাসি-কান্না,আশা-নিরাশার কথা খুব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়।
এই গানগুলোকেও বিভিন্ন পর্যায়ে ভাগ করা যায় –
১.আগমনী
২.ভাদু বন্দনা
তাই এই গানগুলো লোকসাহিত্যের অন্যতম সম্পদ। তাই এককথায় বলাই যায় মানভূমের এই পরব এক সার্বজনীন মিলনক্ষেত্র।
www.youtube.com/watch?v=FL5GaUk_zXI
ভাদুগান ও ভাদু উৎসব এবং ভাদুর কাহিনী ভালো লাগলো। জানা হলো অনেককিছু।
ধারাবাহিকটি নিয়মিতভাবে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী।