ভালোবেসে সখি নিভৃতে যতনে, আমার নামটি…। গান বাজছে। বারবার বাজছে। ক্রমাগত বাজছে। গানটি শুনতেও বেশ ভালো লাগছে। শুধুমাত্র এই একটি গান শুনলেই বারবার প্রেমে পড়তে ইচ্ছে করে। ইচ্ছে করে প্রিয়তমার হাতে দুহাত রেখে মুখপানে চেয়ে থাকি অজস্র বছর। অজস্র বছরের সময়গুলো যেন তখন থেকেই ফ্রেমে বন্দী হয়ে স্তব্ধ নামক খাঁচায় বসবাস করে। আর আমরা দুজনে…।
প্রেম ক্রিকেটের মাঠে হিমু সদ্য ফোঁটা ফুলের টবে ফুলের পাপড়ি। যার শিরা-উপশিরায় প্রেমের অনুভূতিরা আত্মগোপনে খেলা করে। আর মিটমিট করে হেসে হাসির জালে ফেঁসে ফেঁসে চাঁদমুখের ছবি হয়ে আয়নায় ভাসে। এজন্য হয়তো রবিঠাকুরের এই গানটি রোজরোজই বাজে।
হিমুকে বললাম – লেখা শেষ হলো?
হিমু – হুমম, শেষ হলো।
– তাহলে আমাকে দে। পড়বো। দেখি আজ কেমন রসের যৌবন ভরা গল্প লিখেছিস?
হিমু – ঐ, প্রতিদিনই যেরকম লিখি। সেরকমই।
– ঠিক আছে। সমস্যা নেই। তোর সর্বপ্রথম পাঠকতো আমি নিজেই।
হিমু একটু ইতস্তত বোধ করছিলো। আমি জোড়াজুড়ি করাতে অবশ্য ডায়েরিটি শেষমেশ দিতেই হলো। অবশ্য হিমু জানতো আমাকে ডায়েরিটা না দিয়ে রেহাই নেই। কেননা…।
অনিচ্ছা থাকা সত্বেও প্রিয়জনের কথা রাখতে বাধ্য হতেই হলো। এরকম নিয়মনীতি অনুসরণ ঘাড়ে ভর করলে অসহ্য অহর্নিশেও ভাঙা-গড়া রূপ-প্রতিরূপের সম্মুখীন হতে হয়। তখন বুকের ভেতরে ভালোবাসা নামক শব্দটিও কিছু সময়ের জন্যও ক্ষোভের সৃষ্টি করে।
বাস থেকে নেমে সিনেমাহলের সামনে দাঁড়াতেই লজ্জায় বুক ফেটে রক্তক্ষরণ হওয়ার উপক্রম। বারবার মনে হচ্ছিল ভিনদেশী বোমায় আহত দেহের হাড্ডি-গুড্ডির তলে লুকিয়ে থাকা হৃৎপিণ্ডটুকুও আজ বেশরম, চক্ষুলজ্জায় কাবু। আর দু-চোখ মাথানিচু করা স্বভাবের জ্বালায় জর্জরিত হয়ে অন্ধ ঘরে বন্ধ হওয়া বিদ্যুৎ বাতি। যেন কোনকিছুই স্বচক্ষে দেখিনি।
টিকেটটিও আমাকে কাটতে হলো। এই ধস্তাধস্তি জাবরদস্তির জীবনে অর্থসংকটের অসংকোচেও নিজেকে মানিয়েও নিতে হলো। নইলে যে ব্যক্তি সম্মানের বাকিটুকুও বিলীন হতে শুরু করে। আর হাসাহাসির পাত্র হতে কারোই শৈথিল্য প্রদর্শনের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতে ইচ্ছে করে।
উমা! সিনেমাহলের বক্সের সিট কিংবা ডিসি সিটের সবগুলোই প্রেমিক প্রেমিকাদের দখলে থাকে। বিশেষ করে একদম পিছনের সিটে বসে থাকা প্রেমিক-প্রেমিকারা বুঝি কাতুকুতুর চেয়েও কাছাকাছি থাকে। আর তাদের ফিসফিস করে কথাবলা আর অঙ্গভঙ্গির দৃশ্যগুলো দৃষ্টিতে এসে ভিড় করে শরীরের অবস্থা কোষ্ঠকাঠিন্যের দুরারোগ্য ব্যাধির মতো পিছুপিছু ঘুরঘুর করে। রুপা অবশ্য কাঁদে মাথা রেখেছিলো।
রুপাকে বাসে তুলে দিয়ে বাসায় আসতে অন্য বাসের সিটে বসতেই কিছু প্রশ্ন এসে মনের পাড়ে জমাট বেঁধে লাফালাফি করতে শুরু করলো। প্রশ্ন… – হিমুরা কি সিনেমা দেখে?
শেষমেশ তবে সিনেমাহলের সিটের চিপায় হিমু পৌঁছালো। কথাটা শুনে হিমু বললো – সত্যি বলছি, আমি রুপাকে বারবার অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু কে শোনে কার কথা? আসলে পৃথিবীর সকল প্রেমিকারাই জেদি।
আচ্ছা, তুই নিজেই ভেবে দ্যাখ সবাই যদি জানে হিমু সিনেমাহলে….। তাহলে কি ভাববে?
9 thoughts on “হিমু এবার সিনেমাহলে”
মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।
ইন্টারেস্টিং এপিসোড পড়লাম। অভিনন্দন মি. নৃ মাসুদ রানা। শুভ সকাল।
হিমু হিমু ছায়া আপনার অণুগল্পে। বেশ।
হিমু এবার সিনেমাহলে।
অণুগল্পে শুভেচ্ছা ভাই।
ইন্টারেস্টিং আপনার সিরিজ লেখা গুলোন।
চমৎকার লিখেছেন অণুগল্পকার নৃ ভাই।
অনেক অনেক শুভেচ্ছা নেবেন দাদা।
হিমুর জয় হোক।

* শুভ কামনা লেখকের জন্য…
জোড়াজুড়ি না বলে জোরাজুরি বলতে হয়