৩৫।
কথা বলতে বলতে ফিরোজের ছোট বোন সুইটি ভাইয়ের বন্ধু এসেছে তাই দেখা করতে এসেছে। এসেই সরাসরি বললো ভাবী, ভাই ভাবীকে নিয়ে আমার বাসায় চলো। রাশেদ সাহেবের কোন আপত্তি নেই। সুইটির গাড়িতেই চলে গেলো সবাই। রাশেদ সাহেব মনিরাকে খোঁচা দিয়ে কানে কানে বললো নিজের পয়সা খরচ করে বেড়ানোর চেয়ে চলো ঘুরেই আসি। সুইটি তার বাড়িতে এনে অনেকক্ষণ গল্প গুজব করে বিশাল আয়োজনের চা নাস্তা খাইয়ে আবার এনে দিয়ে গেলো। ওর বাড়িটাও সুন্দর।
পরদিন ফিরোজ কি একটা কাজে বাইরে গেলো। যাবার আগে বলে গেলো
-আমার ফিরতে বিকেল হবে, আমি এসেই গ্লস্টার যাব এই ফাঁকে তোমরা ঘুরে আসতে পার। পাশের টিউব স্টেশন দেখেছ। এই নাও লন্ডনের ম্যাপ। টিউবের ম্যাপ স্টেশনেই পাবে, ওখান থেকে একটা ম্যাপ নিয়ে নিও তাতে কোথায় কোন লাইন চেঞ্জ করতে হবে বুঝতে পারবে আর জোন এক দুইয়ের ডে টিকেট নিবে তাতে ভাড়া কম লাগবে, সারাদিন ভরে এক দুই নম্বর জোনে ঘুরতে পারবে।
ফিরোজ বের হয়ে যাবার পর কায়সার বেয়াইর কথা মনে হলো। সে যেখানে আসবে বলে ফোন নম্বর দিয়েছে সেখানে ফোন করলো। ফোন ধরল বাড়ির কর্ত্রী। রাশেদ সাহেব জানতে চাইল
-কায়সার সাহেব এসেছে কি না।
-ওপাশ থেকে জবাব এলো, উনি আজ সকালে এসেছেন।
কায়সার সাহেবকে খুঁজছে জেনে নিতান্ত কৌতূহল বসে ভদ্র মহিলা জানতে চাইল।
-ভাই আপনার বাড়ি কোথায়?
-মানিকগঞ্জ।
-তাই নাকি? আমাদের বাড়িও মানিকগঞ্জ।
এ কথা সে কথায় জানা গেলো মনিরা যে স্কুলে পড়েছে এই ভদ্র মহিলাও সেই স্কুলের ছাত্রী।
-ভাই তাহলে আমাদের এখানে আসবেন না?
বলেই তার বাড়ির ঠিকানা সহ কোন লাইনের টিউবে কি ভাবে যেতে হবে কোথায় নামতে হবে সব হর হর করে বলে দিল।
-আচ্ছা ঠিক আছে দেখি যদি পারি তাহলে আসব তবে আমাদের বিকেলের আগেই ফিরতে হবে, আমরা আবার গ্লস্টার যাবো।
-আপনারা আসুন আমি কায়সার ভাইকে বলে রাখছি।
-বলবেন আমরা বিকেলে গ্লস্টার যাবো উনি চিনে সে জায়গা, গত বৎসর বেয়াইনকে নিয়ে এসেছিলেন তখন গিয়েছিলেন।
-আচ্ছা বলবো, আপনারা এখনই চলে আসেন।
ফোন রেখে রাশেদ সাহেব মনিরাকে বললো চলো কোথাও থেকে ঘুরে আসি। মনিরাকে চমকে দেয়ার জন্য আসল কথা চেপে গেলেন।
-না ভাবীকে ছাড়া আমি কোথাও যাব না, যেতে চাইলে তুমি একা যাও।
-আরে আমি তো থাকছি, তুমি চলে যাবে বলে একটু দেখে যাও, না হলে দেশে গিয়ে মেয়েদের বলবে কি?
ভাবী বললো-
-যান না ভাবী, ভাই কি আর আপনাকে হারিয়ে রেখে আসবে? বাব্বাহ যে টান! এই মানুষ কি আপনাকে বদলিয়ে বিলাতি মেম নিয়ে ফিরতে পারবে? তাহলে ভয় কিসে? যান ঘুরে আসেন। শুনেছি ভাই তো সারা জীবন প্রায় বিদেশেই কাটিয়েছে সে কি আর হারিয়ে যাবে? আপনি নিশ্চিন্তে যান। বিকেলে তো আমি যাচ্ছি, আমাকেই ড্রাইভ করতে হবে সারা পথ, আমার সাথে বের হলে ও ড্রাইভ করতে চায় না। আপনারা যান ঘুরে আসেন আমি রান্না বান্না দেখি। তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নেন, বাইরে কিন্তু বেশ ঠাণ্ডা।
বাইরে কিন্তু বেশ ঠাণ্ডা।
* শুক্র ও শনিবার শব্দনীড়ও বেশ ঠান্ডা মনে হয়….
শ্রদ্ধের কবির লেখাটা পড়েছিলাম। কিন্তু মন্তব্য দিতে পারিনি। মনটা শুধু শ্রদ্ধেয় মুরুব্বী দাদা'র কাছেই পড়ে আছে। তিনি বোধহয় এখনো সুস্থ হয়নি।
তাই প্রাণের শব্দনীড়ও ঠাণ্ডা হয়ে হয়ে আছে। কামনা করি শ্রদ্ধেয় মুরুব্বী দাদা অতি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে আসুক!