অনেক দিন পর আবার আমি আর আমার মন মুখোমুখি। গ্রীষ্মের প্রচন্ড গরমে মনের সাথে আমার নিশিযাপন। হঠাৎ আয়না আমার চোখে চোখ রেখে প্রশ্ন করলো এই প্রচন্ড দাবদাহে তোর দুচোখ কেন শ্রাবণের দুঃখ নদী? কি করে বলি তাকে, মন দুচোখ ভরা সাগর নিয়েও জীবন নদীতে আমার সাঁতার শেখা হল না। দু নৌকোয় পা রেখে চলতে শিখিনি আজও, জানিনা রে মন কখন আমার সলিল সমাধি হবে। গঙ্গা? নাকি যমুনা? যদিও এতোবার মরেছি তাই এখন আর মৃত্যুকে ভয় পাইনা। তবে জলে আমার বড্ড ভয় করে রে মন। বুঝেছি রে আমার এই শ্রাবণ নদীতেই সুখ। হৃদয়ে বিরাট মেঘের পাহাড়, শিরায় শিরায় লবণ জলের স্রোত। জানিস মন একবার শেষ বোঝাপড়া করবো নিজের সাথে। অনু, অনু জুড়ে যে আকাশ তৈরী! সেই আকাশে আমার বিচরণ বড্ডো বেমানান মনে হয়। সুখ আর বিষণ্নতাকে ভাগাভাগি করে, সুখকে অনুর ঝুলিতে দিয়ে যাবো। ফিরিয়ে দেবো অনুর আকাশ। আর বিষণ্নতা না হয় আমারই থাক। আমরা কেউ কাউকে ছাড়া থাকতেই পারিনা যে। কিছুটা তোর স্বপ্ন, আমার করে পাওয়া পুরোটা তোকে আমার বুকের সবথেকে সুন্দর জায়গায় লুকিয়ে নিয়ে চলে যাবো। ওপারে, পৃথিবীর ওপারে। আচ্ছা মন কবিরা কি মানুষের মনের কথা বুঝতে পারে? তাহলে কি করে কবি লিখলেন “অতোটুকু চায়নি বালিকা” সত্যিই চাইনি রে। খুব কম চাওয়া ছিলো আমার। একটা ভালোবাসাময় মন আর দুটো আশ্রয়ের হাত প্রশ্রয়ের সাথে। জীবন নদীতে যখন দেখা মিলল, তখন অনুর পরমাণু, আকাশ জুড়ে দীপ।
এখনো আমি নদী জমিয়ে রাখি বুকে। মেঘেদের কানে কানে বলি নদীকে ডেকো বৃষ্টি। চুপি চুপি আনমনে নদী খুঁজি। কি জানি বিসর্জনের সময় এসেছে বোধহয়। এ জন্মে ছিলো আমার অকাল বোধন। জানিস মন আজকাল পাঁজরের খাঁচার একটা একটা করে আগল ভেঙে ফেলছি রোজ। নিজের যন্ত্রণাগুলোকে ভাসিয়ে দিচ্ছি নোনা জলে। মেঘের সামনে নতজানু হয়ে ভিখারির মতো বলি নদী দে আর একটা নদী। হয়তোবা ভিখারিই আমি। তোর কাছেই নতজানু হতে চাই বারবার। আমার অহংকার, আমার অভিমান তোর ভালবাসার থেকে বেশী নয়। জানি মন একমাত্র তুইই আমাকে দুহাত দিয়ে আগলে রেখেছিস। আর কেউ নেই কোথাও নেই আমাকে আগলে রাখার তোর মতো করে। বড় বেশি নিঃসঙ্কোচে নিঃসঙ্গ রে আজ মন। কাঁচা সুতোর বন্ধন ছিঁড়েই গেছে কবে। আর যতটুকু করুণার বন্ধন ছিলো তাও টুপটাপ করে ঝরে পড়েছে আঙুলের ফাঁক থেকে। হাতের মুঠি আলগাই রেখেছি। বালির মতো ঝরে গেছে সব সম্পর্কগুলো। মন তুইও কি একদিন চলে যাবি এক পা এক পা করে? নতুন করে স্বপ্ন সাগরে ডুবিয়ে তারপর প্রখর মরুভূমির উত্তাপের মধ্যে আমাকে ছেড়ে দিয়ে?
আজ অনেকক্ষণ একা একা দাঁড়িয়ে ছিলাম বারান্দায়। মনের ভেতর উথাল পাথাল। জানি তুইতো আছিস। সেই চেনার মুহূর্ত থেকে দাদুর মতো আমায় আগলে। মাঝে মাঝে তুই চলে যাস কেন আমায় ছেড়ে মন? জানিস তখন তোকে কত খুঁজি। চাঁদ রঙের প্রতিটা রাতে, মনের প্রতিটা আলপথে, উঠোনের আনাচে, গলির কানাচে, দুচোখের ছলছলে আর্শীতে, মেঘেদের শার্শীতে অপলক চেয়ে থেকেছি যদি একবার তোর দেখা পাই! যে সব শব্দরা তোকে খুঁজে আনতে গেছিলো তারাও আজ আকাশের মাঝে হারিয়ে গেছে। আজ বড় বেশি বেয়াব্রু আমি। হাঁটু দুটো বুকের কাছে এনে মাথাটা রেখে পরম আদরে জড়িয়ে নিয়েছি নিজেকে। ফোঁটা ফোঁটা লবনাক্ত সময়ে অস্ফুটে স্বীকারোক্তি, কেউ হতেই পারেনা তোর মতো রে মন। আমাকে তোর মতো কেউ বোঝে না। জানে না কেউ। কঠিন বর্মে নিজেকে ঢেকেছি আমি। কোন আঘাতেই আর হৃদয়ের রক্ত চুঁইয়ে পড়তে দেবো না। তোর থেকে নিজের আলাদা করার মানে পাঁজর থেকে হৃৎপিণ্ড উপড়ে ফেলা। আর ঠিক তখনই আমার মৃত্যু।
চাঁদ রঙের প্রতিটা রাতে, মনের প্রতিটা আলপথে, উঠোনের আনাচে, গলির কানাচে,
দুচোখের ছলছলে আর্শীতে, মেঘেদের শার্শীতে
অপলক চেয়ে থেকেছি যদি একবার তোর দেখা পাই!
চিঠির তুলনা চিঠিই স্বয়ং। বিকল্প আমার জানা নেই। দারুণ হয়েছে রিয়া রিয়া।
শুভেচ্ছা অফুরান
অসাধারণ। দারুন। দারুন। এবং দারুন।
শুভেচ্ছা নেবেন
আমার দিদির লেখা চিঠিও বলে কথা! সত্যি দারুণ! সত্যি তুলনা হয় না। শুভেচ্ছা জানবেন শ্রদ্ধেয় কবি রিয়া দিদি।
শুভেচ্ছা কবি নিতাই দা।
দুচোখের ছলছলে আর্শীতে, মেঘেদের শার্শীতে অপলক চেয়ে থেকেছি যদি একবার তোর দেখা পাই! জীবন কেন সহজ হয় না বুঝিনা।
সেটাই দিদি ভাই। জীবন কেন অনেক সহজ হয় না।
আপনার পত্র বা চিঠির কথা গুলো যেন আমাদের জীবনের কথা বলে।
অনুপ্রাণিত হলাম আপনার কথায় কবি সুমন দা।
প্রাণকাড়া একটি লিখা পড়লাম রিয়া দি।
একরাশ শুভকামনা কবি দিদি ভাই।
* আপনার লেখার শৈল্পিক মান সবসময়ই শিল্পরসোত্তীর্ণ….
মুগ্ধতা রেখে গেলাম সুপ্রিয়…।
শুভেচ্ছা প্রিয় কবি দা।
সুন্দর কথামালা



আপনাকেও ধন্যবাদ প্রিয় কবি দা।
চিঠির পর্বগুলি মিস করেছি। অপার মুগ্ধতা নিয়ে পড়লাম দিদি!
বেশী মিস হয়নি প্রিয় মিড দা। কিছু মিস হয়েছে। আমি রিপিট করার ইচ্ছে রাখি।