রোখশানা’স লাইফ স্টাইল … প্রথম পর্ব

আমার প্রবাস জীবনে আমি প্রথম চার বছর অষ্ট্রেলিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে কাজ করতাম। পরবর্তী ৫ বছর নিউজিল্যান্ডে স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ। এছাড়াও নানা দেশজাতির মানুষের সংস্পর্শে আসতে হয়েছে সেখানে কাজের সুবাদে।

১০ বছর অসি এবং কিউয়িদের সাথে ব্যক্তিগত, পারিবারিক এবং সহকর্মী হিসাবে আমাকে কখনোই তারা বিদেশি হিসাবে ট্রিট করেনি। বরং খুব ভালো বন্ধুত্বপূর্ণ ও প্রায় পারিবারিক একটা সম্পর্কে জড়িয়ে ছিলাম আমি, কয়েকটি অসি এবং কিউয়ি পরিবারের সাথে।

এর ফলে তাদের দৈনন্দিন জীবনে তারা নানা কাজে যেসব সহজ পদ্ধতি অবলম্বন করে, সেগুলোতে আমিও অভ্যস্ত হয়ে গেছি বেশ কিছুটা।

এই যেমন ধরুনঃ
ওভেন বা ফ্রিজ নিরাপদ ও সহজলভ্য কোন মিশ্রণ দিয়ে পরিষ্কার করতে হয়।
ফ্রিজ সহজে দুর্গন্ধমুক্ত রাখা।
গ্লাস ক্লিনার ছাড়াই কাঁচের আয়না/ডোর পরিষ্কার।
ত্বক বলিরেখা মুক্ত রাখা মাত্র ১ টি মশলার সাহায্যে।
ধূমপান ও নাগরিক জীবনে দেহে জমানো টক্সিন ফুটবাথের মাধ্যমে দূর করা।
কিছুতেই ঘুম আসছে না এমন রাতেও কয়েক মিনিটের মধ্যে ঘুমিয়ে পড়া।
মেয়েদের প্রি মেনসট্রুয়্যাল সিনড্রোম মানে পিরিয়ড হওয়ার আগের অস্বস্তিভাব কিভাবে দূরে রাখতে হয়।

শরীর ও মনের ব্যালান্স এবং স্টাবিলিটি ১ মিনিট ব্যায়ামে বজায় রাখা।

…. এরকম নানা পার্টিকুলার বিষয়ে আমি তাদের ফলো করা কিছু বিষয় অনুসরণ করি এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে কাজ হয়। লাইফস্টাইলের এসব সহজ উপায়গুলো পাঠকদের জানার জন্য আমি পোস্ট দিতে পারি। আসলে আমরা প্রত্যেকে ভালো থাকলেই তো দেশ ভালো থাকবে এবং আমাদের সবুজ দেশটিকে আমরা সবাই অনেক ভালোবাসি।

ভালো থাকার প্রত্যাশায়… আজকের প্রথম পোস্ট।

গতকাল রাতে আমার বাসায় সবজি বাজার এসেছে ১ কেজি ধুন্দল, হাফ কিলো ঢেঁড়শ, আর হাফ কিলো কচুর মুখি। এগুলো থেকে বের হওয়া কিছু ধুলাবালিসহ Chemical residues বা রাসায়নিক বর্জ্যের পরিমাণ আমার দেয়া ছবিতে দেখুন। জেনে কিংবা না জেনে এর অল্প পরিমাণও যদি আমরা খাদ্য আকারে আমাদের শরীরে প্রবেশ করাই, তার ফলাফল হবে মারাত্মক।

আজকাল ডাক্তার চাচা ভাত-মাছ-মাংস-ডিম-দুধ পরিমাণ মতোন খেয়ে সবজি খেতে বলেন বেশী বেশি। চাষি ভাই অধিক ফলনের আশায় সার-কীটনাশক প্রয়োগ করেন বেশি বেশি। আড়তদার দাদা বা সবজি মামা প্রিজারভেটিভের সাথে তাল মিলিয়ে দাম হাঁকান বেশি বেশি। আর আমরা তা খেয়ে অসুস্থও হচ্ছি একটু বেশি বেশিই।

সবজি, ফলমূলে থাকা রাসায়নিক দূর করতে সামান্য খরচ করতেই হবে আপনাকে সচেতন হলে। থাইল্যান্ডে প্রস্তুত “কার্বন গ্রীন” নামের ১০ স্যাশের ১ টি প্যাকেট আজকাল বাংলাদেশে পাওয়া যায়। দাম ১১০ টাকা। ১ স্যাশে ১০ লিটার পানির জন্য। সুতরাং ১ টি স্যাশেই আপনি বেশ কয়েকবার ব্যবহার করতে পারবেন। ১ প্যাকেট যাবে বেশ কয়েকমাস। প্যাকেটের গায়ে লেখা পরিমাণের চেয়ে অনেক কম পরিমাণ ব্যবহার করে ফল পাবেন আপনি নিম্নের পদ্ধতিতে…

পদ্ধতি :
মোটামুটি ৩/৪ কেজি সবজি ফলমূলের জন্য ৫/৬ চিমটি বা আরেকটু বেশী কার্বন গ্রীন পাউডার, হাফ চায়ের কাপ ভিনিগার, হাফ চায়ের কাপ লবণ মাঝারি বালতিতে ৪/৫ লিটার নরমাল পানির সাথে মিশিয়ে সবজি ঢুবিয়ে রাখুন ঘন্টাখানেক। এরপর পিঠা ভাজার ছিদ্রযুক্ত চামচ দিয়ে সবজিগুলো চালনির মতোন পাত্রে তুলে ফ্যানের বাতাসে শুকিয়ে, তারপর ফ্রীজে সংরক্ষণ করুন।

পেঁয়াজ, রসুন, ধনেপাতা ইত্যাদি অধিক পচনশীল জিনিস ছাড়া মোটামুটি কাঁচামরিচসহ অন্যান্য সব সবজিই এভাবে রাসায়নিক মুক্ত করে তারপর খাবেন। কার্বন গ্রীন পাউডার না পেলে শুধু লবন আর ভিনেগার মেশানো পানিই ব্যবহার করুন এ কাজে। বেশ খানিকটা কাজ তাতেও হবে।

মনে রাখবেন, অসুস্থ হলে ডাক্তার বদ্যি পথ্যের পেছনে কাঁড়ি কাঁড়ি খরচ ছাড়াও ১২ টা বাজা শরীর নিয়ে ভোগান্তির শেষ থাকবে না।

আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।

11 thoughts on “রোখশানা’স লাইফ স্টাইল … প্রথম পর্ব

  1. প্রথমত আপনাকে শব্দনীড় এ স্বাগত জানাই রোখশানা রফিক। ধন্যবাদ।

    আলোচ্য যাপিত জীবনের খুঁটিনাটি টিপস পাঠকদের অনেক কাজে আসবে মনে করি। শতসিদ্ধ যে জীবনচারণে আমরা অভ্যস্ত হয়ে গেছি সেখান থেকে যদিও বেরুতে সময় লাগবে, তারপরও অনেক ফ্যামলিকে দেখেছি ঘর সংসার ঠিকই শুদ্ধ ভাবে গুছিয়ে রাখতে পছন্দ করেন।

    পোস্টে পাঠক কম হলেও আপনার টিপস ধারাবাহিক নিয়মিত থাকবে প্রত্যাশা রাখি। :)

  2. অভিনন্দন আপা। আপনার প্রতিটি পোস্ট পড়ার ইচ্ছে রাখছি। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_rose.gif

  3. কপিটি সংগ্রহে রাখলাম বোন রোখশানা রফিক। শব্দনীড়ে স্বাগত জানাই। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_heart.gif

  4. বাজারের শাক শব্জী নিজের মতো করে পরিচ্ছন্ন করে নেয়া দরকার। স্বাগতম দিদি ভাই। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_rose.gif

  5. উপস্থাপনায় অভিভূত হলাম আপা। শব্দনীড় হোক আপনার ব্লগ। :)

  6. ধন্যবাদ, মুরুব্বী দাদাভাই। শব্দনীড়ে লিখতে পেরে আমি সম্মানিত বোধ করছি। লেখার সাথেই থাকুন।

  7. ধন্যবাদ সকলকে, যারা লেখাটি পাঠ করেছেন এবং মূল্যবান মতামত প্রদান করে আমাকে সম্মানিত করেছেন। লেখার সাথেই থাকুন।                 

  8. জানা হলো অনেককিছু। আপনার সাজেশন মাথায় রাখলাম শ্রদ্ধেয় দিদি।       

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।