মৃত্যু অনিবার্য সত্য। তাকে অস্বীকার করার উপায় নেই। সে মৃত্যু স্বাভাবিক হোক এটুকু অন্তত মানুষের মানবিক অধিকার। আমরা এখন পদে পদে অধিকার হারাচ্ছি, হারাচ্ছি স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা।
চকবাজারের ঘটনার মাত্র সাঁইত্রিশ দিনের মাথায় বনানীর ভয়বহ প্রাণঘাতি আগুন। এদেশ যেন এক অগ্নিকুণ্ডে পরিণত হয়েছে। কিন্তু কেনো? কারা এর জন্য দায়ী? কে নেবে এসব মৃত্যুর দায়? যারা দগ্ধ হয়ে প্রাণ হারালো তাদের অপরাধটা কি ? এসব প্রশ্ন এখন গোটা জাতির।
বেঁচে থাকার জন্য মানুষ প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে, জীবন নিয়ে ভাবে, সমাজকে উপলব্ধি করে, আর জীবন সায়াহ্নে এসে অপেক্ষা করে স্বাভাবিক মৃত্যুকে বরণ করার জন্য। কিন্তু সায়াহ্নের আগেই তাকে প্রাণ দিতে হয় পদে পদে ফাঁদ পাতা অপঘাতে।
এদেশের মাটিতে প্রতিমুহূর্তে পাখির মতো অকালে ঝরছে প্রাণ। অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে জীবন। অথচ তার কোন সুরাহা হচ্ছে না। দুর্ঘটনার পরের কিছুদিন ফেইসবুকে স্ট্যাটাস, কাগজে কিছু প্রচার-প্রচারণা, মিডিয়ায় টকশো, সংবাদমাধ্যমে মৃত্যুর আপডেট, অতঃপর আবার সেই নীরবতা।
কতৃপক্ষের গাফিলতি কতটা নির্মম তা আজ আর বলার অপেক্ষা রাখেনা।
দুর্ঘটনার কারণ চিহ্নিত করা গেলেও তার প্রতিকার ফাইলচাপা পড়ে থাকে। তদন্ত কমিশন গঠন হলেও তদন্তরিপোর্ট হয় না, আর হলেও বা তা থাকে সাধারণের জানার বাইরে।
আমাদের দেশে পরিবহন দুর্ঘটনায়, বিল্ডিং ধ্বসে পড়ে এবং আগুন লেগে মৃতের সংখ্যা স্মরণকালের সকল রেকর্ড অতিক্রম করে চলেছে। সন্দেহাতীতভাবে এটা মানবতার মহাবিপর্যয় ।
মৃত্যু অবধারিত বলেই মানুষ শতবেদনায়ও তা মেনে নেয়। কিন্তু আকস্মিক বা অস্বাভাবিক মৃত্যু, যে মৃত্যুর জন্য মানুষের প্রস্তুতি নেই, যা মর্মান্তিক, হৃদয়বিদারক অথচ সতর্ক হলে অনেকাংশেই এড়ানো সম্ভব, তা কি করে মেনে নিতে পারে মানুষ ?
স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা পেতে কি তাহলে পথে নামতে হবে ? অন্য সব অধিকার আদায়ের সংগ্রামের মতোই কি এটাও আন্দোলন করে আদায় করতে হবে? তাহলে জনগনের অর্থ ব্যয়ে নগর রক্ষার দায়িত্বে কতৃপক্ষকে কি অশ্বডিম্ব পাড়ার জন্য নিয়োজিত করা হয়েছে?
আমরা আর কোন মৃত্যু চাইনা, অপঘাতে মৃত্যু নিষিদ্ধ হোক, আমরা স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা চাই। এটুকু অধিকার তো আমরা চাইতেই পারি।
এফ আর টাওয়ারে অগ্নিদগ্ধ আহত ও নিহতদের জন্য গভীর সমবেদনা।
আমাদের দেশের মফশ্বল বলি আর সিটি কর্পোরেশন বলি; যে কোন দূর্ঘটনা ঘটবার জন্য উত্তম স্থান। বড় বড় স্থাপনা যেন ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি। লাভা উদগীরণের অপেক্ষা। প্রত্যেকটি অবকাঠামো আমাদের অনুমোদন হীন। কেননা যারা অনুমোদন দেয় তারাও যে অনুমোদনপ্রাপ্ত দক্ষ কেউ নন।
কথা হচ্ছে আমাদের হাতে প্রতিশেধক আছে কতটুকু !! কতটুকু বা দূর্যোগ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত আমরা। এককথায় উত্তর হবে জিরো।
শোক আর সমবেদনা ছাড়া আমাদের হাতে কিছু শব্দ ছাড়া ভিন্ন ভাণ্ডার নেই।
বিল্ডিংকোড না মেনে বিল্ডিং তৈরি করার জন্য মালিক যেমন দায়ী তেমনি দায়ী অনুমোদনের দায়িত্বে যারা আছেন । কোন একটা দুর্ঘটনার পরই আবিষ্কৃত হয় যে ভবনটি যথাযথ ভাবে বানানো হয়নি। কতৃপক্ষ আগে কোথায় থাকেন?
ধন্যবাদ আপনাকে ।
আমাদেরকে ব্যাক্তিগতভাবে, সামাজিকভাবে ও রাষ্ট্রিয়ভাবে আরো সচেতন হতে হবে।
এসব দূর্ঘটনা যাতে না ঘটে বা ঘটলেও ক্ষয়ক্ষতির পরিমান কম হয় সেদিকে নজর দিতে হবে।
আমরা সচেতন হবো না ,আমরা আজব এক জাতি ।আমরা অপঘাতে মরবো ,তবুও কোন প্রতিকার পাবো না ।ধন্যবাদ আপনাকে ।
আমরা এখন পদে পদে অধিকার হারাচ্ছি, হারাচ্ছি স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা।
আমরা স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা চাই ।
শুভেচ্ছা আপনাকে
বাংলাদেশের ঢাকায় সম্প্রতি ঘটে যাওয়া অগ্নিকাণ্ড দূর্ঘটনার সংবাদ আমাদের আনন্দবাজারেও এসেছে। মর্মাহত হয়েছি। কতৃপক্ষের গাফিলতি কতটা নির্মম তা আজ আর বলার অপেক্ষা রাখেনা এমনটা আমিও মনে করি।
আমাদের দেশে আইন আছে ,কিন্তু আইনের প্রয়োগ নেই দিদিভাই। পরপর দুটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দেশবাসী স্তব্ধ। আগুনপোড়া মানুষগুলো ভবনের উপর থেকে টুপটুপ করে পড়ে মরছে ।এসব দৃশ্য চোখে দেখার মতো নয়।
ধন্যবাদ তোমাকে।
মৃত্যু অনিবার্য সত্য। তাকে অস্বীকার করার উপায় নেই। সে মৃত্যু স্বাভাবিক হোক এটুকু অন্তত মানুষের মানবিক অধিকার। অধিকার যখন খর্ব হয় সেটা মেনে নেয়া অসম্ভব।
আমরা অধিকার হারানো এক হতভাগ্য জাতি।
ধন্যবাদ দাদা ।
সমবেদনার ভাষা নেই আপা।
সন্দেহাতীতভাবে এটা মানবতার মহাবিপর্যয় ।
কি সান্ত্বনা দেবো ওইসব হতভাগ্য পরিবারকে আপা। আমরা তড়পাতে জানি, আর কিছু করতে পারি না। শুভেচ্ছা অসীম।
সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে লিখেছেন ,,,
আমরা পদে পদে অধিকার হারাচ্ছি,,, ,
বিষয়টি সচেতন সকলকে ভাবাচ্ছে ।
ধন্যবাদ আপনাকে।
এ অধিকার ন্যাহ্য অধিকার।
আমরা অপঘাতে মরতে চাই না।
শুভকামনা নিরন্তর।
এ আগুন হৃদয়ে রক্তক্ষরণ বাড়িয়ে তুলছে আজকাল । আসুন সবাই সচেতন হই।ধন্যবাদ পোষ্টের জন্য।
সচেতনতার বিকল্প কিছুই নেই।
ধন্যবাদ আপনাকে ।
চকবাজার এবং গত হওয়া কয়েকদিন আগে বনানীর অগ্নিকাণ্ড এদেশের সর্বস্তরের জনগণের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়ে দেখা দিয়েছে। এভাবে ঘটে যাওয়া অগ্নিকাণ্ড আমরা আর দেখতে চাই না। আমারা আগুন থেকে নিরাপদ থাকতে চাই।
জনসচেতনতা ও মানবাধিকার পোস্টের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
এদেশে বেঁচে থাকাটাই একটা অলৌকিক বিষয় ।পদে পদে মৃত্যু ওঁৎ পেতে আছে ।
সুন্দর অনুভূতি নিয়ে পোস্টের পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।
খুবি ভাল লেখেছেন আপু
স্বাভাবিক মৃত্যু যে সবার যে কাম্য
কিন্তু
বিধাতায় শ্রেনীবিন্যাস করেছে যে
ধরে নিতে হবে এভাবেই মৃত্যু ছিল আমার———
ভাল থাকুন———–
নিজেদের অপকর্মের দায় বিধাতার উপর চাপিয়ে দিলেই দায়িত্ব এড়ানো যায় না ভাই । এসব আমাদেরই খাম খেয়ালীপনা, আমাদেরই অসচেতনতা । একটু সতর্ক হলেই এ ধরণের দুর্ঘটনাগুলো নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
ধন্যবাদ আপনাকে।
এক সময় আমি কামপালায় (উগান্ডার রাজধানী) থাকতাম। সেখান থেকে রিভার নাইলের (উগান্ডান পার্ট) ওপর দিয়ে বেশ কয়েকবার বুগুরি গিয়েছি; কেনিয়ার সাথে বর্ডার এলাকায় কিছু জরুরি বিষয়ের জন্য। একটা পর্যায়ের পর রাস্তার দুপাশে সারি সারি নানান প্রাণীর পড়ানো মাংস দেখতাম। বহুদূর পর্যন্ত। এই পোড়ানো প্রাণীর মাংসের জন্য সেই রাস্তাটা বিখ্যাত। কাছাকাছি সময়ে কোথাও (সম্ভবত কেনিয়ায়) অনেক মানুষকে একটা ঘরের মধ্যে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল। সবাই খেলেও হাইওয়ের সেই পোড়া মাংস আমি খাইনি। মানুষ পুড়িয়ে মারার বিষয়টা আমার চোখে ভাসতো।
তাজ্রিন থেকে নিমতলি, তারপর চক বাজার। এখন বনানী। এই মৃত্যুগুলির কারণ খুঁজে বের করলে হয়তো জানা যাবে–ওসব নিছক দুর্ঘটনা নয়!
কাম্পালা থেকে বুগুরির হাইওয়েতে সারিসারি দোকানের পোড়া মাংসগুলির এক টুকরাও হয়ত জীবিত প্রাণিকে পুড়িয়ে করা হয়না। কিন্তু তাজ্রিন, নিমতলি, চক বাজার, বনানী সব জায়গাতেই জীবিত পুড়েছে! এসবের পেছনের অনিয়মগুলি জড়ো করলে হয়ত জানা যাবে, জীবিত পোড়ানোর জন্য যে মানসিক বৈকল্য দরকার তা আমাদের অব্যবস্থাগুলি ক্রমাগত যোগান দিচ্ছে!
কিছু অনাচার লোকচক্ষুর আড়ালে থেকেই যায় ,অর্থাৎ গোপন রাখা হয় । এখানে স্বার্থান্বেষী কুচক্রীরা সক্রিয়। সাধারণ মানুষ নিজেদের প্রাণ দিয়ে সেসব পিচাশদের স্বার্থ হাসিল করিয়ে দেয়। এরচেয়ে ভয়ানক কোন সত্য নেই আমাদের জীবনে । বারবার আমরা মরছি, আমদের মৃত্যুগুলি কেবল সংবাদমাধ্যমর তাজা খোরাক হয়। এর বেশি কিছু নয় । কিছুদিন পরেই ক্ষতগুলোর ঘা না শুকালেও আমরা সয়ে যাই ।
চমৎকার অনুভূতি ব্যক্ত করার জন্য ধন্যবাদ ।