চিরকুট : ১২। তারিখ:-২৪ বৈশাখ ১৪২৬ বাংলা।
প্রিয় চিঠিওয়ালী,
পত্রারম্ভে জানাই জ্যৈষ্ঠের ভর দুপুরে রুক্ষ প্রকৃতি নগরে ঘ্রাণ বিলানো পাকা কাঁঠালের হলুদ রঙ রোয়া শুভেচ্ছা।
কোলাহল ও ব্যস্তময় ঢাকা শহরের কর্ম ব্যস্ততাকে গা-ডাকা দিয়ে নির্জন কোন সমুদ্রতটে বসে তোমায় লিখছি। মাত্র দু দিন তোমায় নিয়ে একটা বাক্য লেখা হয়নি তাতেই মনে হচ্ছে এক যুগ ধরে তোমায় লিখা হয় না।
কেমন আছো নগরে কল্লোলিনী?
আমি ভালো আছি তবে নিখাদ একাকীত্বে চাপা পড়ে যাচ্ছে ভালবাসার কবিতাগুলো। এখনো কি একলা একা নিজের সাথে গল্প করো আবেশে? একাকী থাকতে থাকতে একা থাকার বদঅভ্যাসে আমিও অভ্যস্ত হতে শিখে গেছি। যদি মুখ ফসকে কেউ বলে দিত হঠাৎ আমি তোমাকে ভালবাসি, তবে সে ভালবাসা আমি ভালবাসা হিসেবে দেখিনে।
তোমায় অক্ষি পাতের অজুহাতে মনের ভুলে পথের মোড়ে মুখ ফিরিয়ে দাড়িয়ে থাকি, কেন বলতে পারো? তোমার অভিমান ভরা নয়নে আজ কদিন নয়নকূল হয়নি আমার। দেখিনি তোমার বিমুগ্ধ চাহুনী। ভালবাসা কখনো একদিন কারো প্রতি জমেনা। অপেক্ষার উপেক্ষিত নীরব আর্তচিৎকারের সাক্ষী আকাশ- বাতাশ, চন্দ্র-সূর্য,আলো-আঁধার, জোনাক-ঝিঁঝিঁ।
আমার চারিপাশ আঁধার ঘেরা পৃথিবী,তোমার পাশে আলোর মশাল। নীরব চিত্তে তোমায় ভালবেসে যাওয়া মানুষটা দেখতে আনস্মার্ট হলেও সাদা মনের। স্মার্ট মানে কি আমি বোধহয় জানিনা। অপরাজিত গল্পের ছন্নমতি ভাব কবিতার আড়ষ্টতা কাটেনি তোমার অভিযোগে। আমার অপূর্ণতার ষোলকলা পূর্ণ করে দিয়েই তুমি বিদায় নিলে।একাকীত্বে আমায় কি আজও তোমায় একটিবার মনে পড়েনি? তীক্ষ্ণগন্ধ অভিযোগের ঝুম বৃষ্টি ঝরে মনের স্তব্ধ উঠোনে, বিচ্ছিরি তারাদের সাথে জেগেছি বহুরাত একাকী,আমিও তোমার গল্প লিখি, দর্পহারী সে গল্পের পাঠক কেবলি আমি। গৌরীশৃঙ্গের মত তোমার মনের দুয়োরে আমার ভালবাসা পৌঁছেনি, পৌঁছেছে আমার দোষগুলো। মানুষ ত্রুটি বা ভুলের উর্ধ্বে নয়, তোমারও ভুল আছে। সংজ্ঞাহীন ভালবাসার ঝড়ে আমি আর আমার জাহাজ ধ্বংস হয়েছি বারবার।
আবার ফিরে আসি তোমার মনের মেঘ হয়ে। ক্লান্ত নিভু নিভু চোখে আজও রঙিন তোমায় হাসি ম্লান হয়নি। অকস্মাৎ হারিয়ে যাবো তোমায় না জানিয়ে কোন এক শেষ রাতে বা সন্ধ্যায়। অসময়ী অভিমানী মেঘ জমে মনে আর বৃষ্টি হয়ে নামে চোখে, সে বৃষ্টিতে আমার মনের তট ভিজে যায় আবেগ সাইক্লোনে। আমি গুম হয়ে যাবো গভীর ঘুমে কোন একদিন, কাউকে না জানিয়ে যে আমি চলে যাবো। আমার বক্ষপটে দুঃখ পুঁতে দিয়ে তুমি কোথায় নিখোঁজ সুখের খোঁজে? গভীর রাতে আমার মনের গহীন ঘরে বাজে শূন্যতার একতারা, সে একতারার শব্দশ্রোতা নির্বাক ছায়ার মত।
মিছেমিছি দোষ দিও আমায় জোনাকিরা, আমি তোমাদের সুখের সাথী হতে পারিনি। ইচ্ছে করে কবিতার খাতাগুলো ছিঁড়ে ফেলি, ছিঁড়ে ফেলি চিরকুট, কেবল তুমি আছো বলেই পারিনে। আমায় একটু দেখ তোমার আড়চোখে যত্ন করে, এ পাগল তোমারে ভালোইবাসে। আমায় আবার তুমি চিনবে নতুন করে, কিন্তু হয়তো ততদিনে তুমি অনেক দেরি করেই ফেলবে।
সমুদ্রতটে অস্তমিত সূর্যকে সাক্ষী রেখে তোমায় বললাম ওহে প্রিয় ভালবাসি তোমায়। আজ আর নয়। প্রতিক্ষা ক্রমাগত বাড়ছেই, মন খারাপের দিনগুলো আমায় মুক্তি দিবে কবে? চিঠিওয়ালার চিঠিতে শব্দরা ঘুমে ঢুলে ঢুলে পড়ছে, তাই আর লেখা হলোনা। নতুন কোন জায়গায় নতুন করে আবার লিখার অপেক্ষায় প্রিয় মনোভবী। ভাবনার ওপারে ভালো থেকে ওহে মনোভবী সুশ্রী। আমায় নিয়ে ভাবনা ভেবে কোন লাভ নেই।
ইতি
তোমার অপ্রিয় মানব।
শুভেচ্ছা রইল প্রিয় ভাইয়া
ধন্যবাদ প্রিয় বোন।
'সমুদ্রতটে অস্তমিত সূর্যকে সাক্ষী রেখে তোমায় বললাম … ওহে প্রিয় ভালবাসি তোমায়। ভাবনার ওপারে ভালো থেকে ওহে মনোভবী সুশ্রী। আমায় নিয়ে ভাবনা ভেবে কোন লাভ নেই।' গুড জব।
ধন্যবাদ ও ভালবাসা প্রিয়,কাজের প্রশংসা করেছেন বুঝে আনন্দিত হলাম। সবসময় পাশে চাই আপনাকে। আপনার মন্তব্য সাহস যোগায় সামনে লিখতে।
চিঠিওয়ালী জন্য শুভেচ্ছা রাখলাম কথা শিল্পী শাহাদাত হোসাইন ভাই।
ধন্যবাদ সুমন ভাই,চিঠিওয়ালীর সন্ধান পাওয়া মাত্রই তাকে অবগত করবো আপনার শুভেচ্ছা।
খুবই আন্তরিকতায় ভরা চিঠি বা চিরকূট।
ধন্যবাদ প্রিয়,মন্তব্য ও পাঠে কৃতজ্ঞ ।
এই চিঠি'র স্পর্শ যিনি পাবেন, তিনি নিশ্চয় ভাগ্যশালী হতেন বা হবেন।
ধন্যবাদ প্রিয় শাকিলা তুবা,ব্লগে আপনার উপস্হিতি পেয়ে খুশী হলাম। আশায় ঘর বেধে বাসি আমি তাহাকে। তাহার সন্ধান পাবো কবে আহারে।
কেমন আছো নগরে কল্লোলিনী?
আমি ভালো আছি তবে নিখাদ একাকীত্বে চাপায়।
ভালোবাসায় ভালো থাকুন শাহাদাত ভাই।
ধন্যবাদ প্রিয় সৌমিত্র,ভালবাসা জানিবেন। আপনার দোয়া ইশ্বর কবুল করুক। আমিন। আপনি কেমন আছেন?
ঈশ্বর আপনাকে দীর্ঘজীবি করুন প্রিয় কবি দা।
আমিন,আল্লাহ আপনার দোয়া কবুল করুক,আমিন। সাথে সাথে আপনাকেও দীর্ঘজীবি করুক ইশ্বর।
এক সময় বেশ চিঠি লিখতাম; ডাক পিয়নের অপেক্ষায় থাকতাম। মাঝে মধ্যে ডাকপিয়নকে সবচে কাংখিত মানুষ মনে হত। খুব আবেদনে ভরা থাকতো সেইসব চিঠির কথা। আপনার অসাধারণ লিখাটা পড়ে সেইসব দিনে কয়েক মিনিটের জন্য ফিরে গিয়েছিলাম।
ধন্যবাদ মিড ডে ডেজারট,জেনে খুশী হলাম আপনিও চিঠি লিখেন,তথ্য প্রযুক্তির যুগে বিলুপ্ত ডাকপিয়ন, কেউ এখন আর চিরকুট লিখেনা।
শুভ কামনা সতত
ধন্যবাদ প্রিয় শান্ত চৌধুরী।
অসাধারন!
এটা সত্যিই অবাককর একটা মানুষ এতো সুন্দর করে লিখতে জানে আর আমি? ভাবতেই ঈর্ষা হয়।
ধন্যবাদ প্রিয় মাহমুদুর রহমান ভাই,হিংসে তো আমার হয় আপনার প্রতি,আপনি কোন দিক থেকে কম যান?? সব দিকেই তো আপনার লিখার জয়জয়কার। যুক্তি তুলে ধরতে আপনি অনেক মারকুটে।