অমিত কুমার বিশ্বাস-এর “ঙ বৃত্তান্ত ” উপন্যাসের পাঠ-প্রতিক্রিয়া
#শংকর_দেবনাথ
১৪২৫ শারদ সংখ্যা কবিতা আশ্রম পত্রিকায় কাব্যকথাকার অমিত কুমার বিশ্বাস একটি উপন্যাস লিখেছেন। নাম- “ঙ বৃত্তান্ত “।
আমি একজন অতিসাধারণ পাঠক। তাই দু’দুবার পড়তে হলো উপন্যাসটির হৃদয়কে স্পর্শ করার জন্য। তবুও ছুঁতে পারিনি তার অতলান্ত অনুভূতি। তবে পড়ার শুরুতেই আমাকে নামকরণটা ভাবিত করেছে। ব্যতিক্রমী নাম। ঙ বৃত্তান্ত।
ঙ হলো বাংলা বর্ণমালার এমন একটি বর্ণ যা মাত্রাহীন এবং যার উচ্চারণ স্থান হলো নাসিকা মাত্রাহীনতা আসলে মাথার উপরের ছাদহীনতা বা উদ্বাস্তুতা। ঙ নাসিক্যবর্ণ। নাক হলো প্রাণবায়ু নির্গমন বহির্গমন পথ। অর্থাৎ বেঁচে থাকার প্রমাণ। আবার মাত্রাহীনতা বলতে ছন্দ-তালহীনতাও বোঝাতে পারে।
আমার মনে হয় লেখক মাত্রা-লয়হীন বেঁচে থাকা জীবনের বৃত্তান্ত বা কাহিনিচিত্র আঁকতে চেয়েছেন। তাই ৪৮ টি শিরোনামযুক্ত পর্বে সাজানো উপন্যাসটির ভেতরের কাহিনিও মাত্রাহীন। আর কাহিনির শরীরগঠনে যেসব চরিত্র উঠে এসেছে, তারাও ওই মাত্রা-লয়হীন ঙ-এর মত নাসিক্য-ব্যাঞ্জণে প্রকটিত।
বস্তুত “চরে বসে রাধে ঙ/ চোখে তার লাগে ধোঁয়া”- সহজপাঠের এই জীবনসংকট ‘ঙ বৃত্তান্ত’র বিমূর্তসুর। চিরকাল বাস্তুহীন ঙ-রা জীবননদীর চরে যন্ত্রণার আগুনে বাঁচার রসদ জ্বালায় আর বিরুদ্ধ বাতাসে ধোঁয়ারা এসে চোখের জল ঝরায়।
এ উপন্যাস গতানুগতিক উপন্যাসের মত সামঞ্জস্যপুর্ণ কাহিনির বাঁধুনিতে বাঁধা থাকেনি। বাঁধনছেঁড়া জীবনের আকুলতা বারবার গ্রন্থিত হতে হতে গ্রন্থিমোচিত হয়েছে। আর সেই কাহিনির হৃদয়ে বারবার জেগে উঠেছে কবিতার ভালবাসা।
শব্দকে দ্বগ্ধ করতে করতে লেখক শুদ্ধতায় পৌঁছে যান আর নির্মিত হয় এক মগ্নগদ্য। যা পাঠককে একদিকে যেমন টেনে নিয়ে যেতে চায় কবিতার ঘরে, অন্যদিকে রূপক-বিশেষণাশ্রয়ি গদ্যচলন এক ভাব-মায়ালোকের সন্ধান দিতে চায়।
গতানুগতিক উপন্যাস-ভাবনার বিপ্রতীপে উদ্বাস্তু জীবন-কাহিনির সুত্র যেমন ছিন্নতায় সমাকীর্ণ, কাব্যকথাকার অমিত কুমার বিশ্বাসের ‘ঙ বৃত্তান্ত’র কাহিনিসূত্রও তেমনি ছেঁড়াছেঁড়া জীবনের খণ্ডখণ্ড আবেগ-আশা আর স্বপ্নভঙ্গের যাপনচিত্র হয়ে উঠেছে- যা পড়তে পড়তে পাঠক কেবলই দেখতে পাবেন গদ্যের মধ্যে বিমূর্ত কবিতামুর্তি, যে কেবলই হাতছানি দিয়ে টেনে নিয়ে যেতে চায় এক অনাস্বাদিত রসের ভাবসাগরে। আর মনে হবে -” তৃতীয় নয়ন আগুন ঝরাচ্ছে খুব…”
পাঠ প্রতিক্রিয়ায় ঙ বৃত্তান্ত নিয়ে ভালো একটি রিভিউ হয়েছে মি. শংকর দেবনাথ।
শুভবিজয়ার প্রীতি ও শুভেচ্ছা। সর্বে ভবন্তু সুখিনঃ সন্তুঃ।
"ঙ বৃত্তান্ত" পড়লাম শংকর দা।
শুভবিজয়ার প্রীতি ও শুভেচ্ছা। পৃথিবীর সকল জীবের মঙ্গল হোক।
"চিরকাল বাস্তুহীন ঙ-রা জীবননদীর চরে যন্ত্রণার আগুনে বাঁচার রসদ জ্বালায় আর বিরুদ্ধ বাতাসে ধোঁয়ারা এসে চোখের জল ঝরায়।"
সঠিক উপলব্ধি।
অনেক অনেক ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।
শুভবিজয়ার প্রীতি ও শুভেচ্ছা। সবাই সুখি হোক।
পড়ার সুযোগ থাকলে পড়ে দেখতাম দাদা। সময় এমন টনটনে চলছে যে পড়াটা আর হয়ে ওঠেনা।
ভাল লিখেছেন।
শুভবিজয়ার প্রীতি ও শুভেচ্ছা। পৃথিবীর সবাই সুখে থাকুক।
আমার মনে হয় লেখক মাত্রা-লয়হীন বেঁচে থাকা জীবনের বৃত্তান্ত বা কাহিনিচিত্র আঁকতে চেয়েছেন। তাই ৪৮ টি শিরোনামযুক্ত পর্বে সাজানো উপন্যাসটির ভেতরের কাহিনিও মাত্রাহীন। চমৎকার বিশ্লেষণ। রিভিউ ভালো লেগেছে
শুভবিজয়ার প্রীতি ও শুভেচ্ছা। সকলে ভাল থাকুক।
দারুণ রিভিউ !
শুভবিজয়ার প্রীতি ও শুভেচ্ছা। সবার জন্য শুভকামনা।