আগমনীর প্রারম্ভ মূহুর্তে
সেই কালো ছেলেটা দেখছিল।
এই সময়টায় এবং
শুধুমাত্র এই সময়টায় সে সময় পায়
তার রূপকথার পৃথিবীটা কেমন
আস্তে আস্তে মাথা তুলছে।
কালো অ্যাসফল্টের রাস্তার অর্দ্ধেক জুড়ে
ও পাশের একফালি ফাঁকা জায়গায়
কয়েকদিনের সমূহ ব্যস্ততা,
কত রকমারী জিনিসপত্র জোড়াতালি
কত মানুষের আনাগোনায়
কখনো রাজপ্রাসাদ, কখনো প্রেমের দূর্গ।
ছেলেটা এত শত বোঝেনাকো,
বোঝার কিম্বা ওগুলো ছোঁয়ার কোনো
মৌলিক অধিকারও নেই তার;
তাতে কিচ্ছুই যায় ও আসেনা
বিস্মিত দুই সরল চোখের,
আসলে সে এত জানেই না!
একবার সে একটা আস্ত সিনেমা দেখেছিল।
কারা যেন সারা বিকেলের সূর্যডোবা আলোয়
মাঠজুড়ে টাঙিয়েছিল অত্যাশ্চর্য এক কাপড়,
আর ঝুপ করে অন্ধকার লাফিয়ে পড়তেই
সে এক মায়াবী জগৎ তার মনে সেঁধিয়ে গেল।
মাঝেমাঝে ঘুমের অবকাশে সেও
হয়ে যায় সিনেমার সেই মায়াবী পুরুষ…
তারপরেই, খিদের অসভ্য খোঁচায় সব উধাও।
কিন্তু এখানে, চোখের সামনে
যে রোশনাই জুড়ে চারদিনের অলীক পৃথিবী
ওরা কিছু খেতে দেয়না কেন?
ওরা কিছু খুদ তুলে দিলে মা টাও
ফুটপাথে মরতো না ওষুধের অভাবে।
ছেলেটা তখন তাকিয়েছিল একদৃষ্টিতে,
সেই কালো হাড়জিরজিরে ছেলেটা।
গায়ে কোনো জামা ছাড়াই দাঁড়িয়েছিল
সূর্যাস্তের পরম আদরী আলোয়,
শতচ্ছিন্ন প্যান্ট অবহেলায় নেমে যাচ্ছিল নিচে,
কিন্তু আশ্চর্য, ছেলেটা উলঙ্গ হচ্ছিল না।
ছেলেটা দেখছিল আগমনীর তুমুল ব্যস্ততায়
সেই সুগন্ধী সুবেশ কর্ত্তাদের পরনেই
কোনো কাপড় নেই, চোখে কোনো পাতা নেই,
ওদের স্বচ্ছ অলিভ ত্বক কোথায় উধাও।
ছেলেটা ক্রমশই আকাশ ছাড়িয়ে উঠছিল।
সেই কালো শতচ্ছিন্ন ছেলেটা,
তার সমস্ত খিদের আগুন হাতের তালুতে নিয়ে
একদৃষ্টে তাকিয়েছিল
সেই সুন্দর মায়াবী জগতের দিকে, যেখানে
মা কোনোদিনই আসবে না।
*****
শুভ সন্ধ্যা। প্রিয় কবি সৌমিত্রের লিখা পড়ে যেন দিনের শেষ হলো। কবিতাটি নিঃসন্দেহে চমৎকার হয়েছে। কবিতা উপস্থাপনে কবির যে আদর্শিক মেধা এবং জীবন বোধের পরিচয় রয়েছে তা স্পষ্ট হয়ে উঠে এসেছে। গুড জব ম্যান।
বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রিয় ভাই। ভালো থেকো।
খুব সুন্দর লিখেছেন সৌমিত্রদা।
ধন্যবাদ শংকর দা।
সেই সুন্দর মায়াবী জগতের দিকে, যেখানে
মা কোনোদিনই আসবে না।
* আপনার প্রকাশ ক্ষমতা সত্যি অসাধারণ…


স্বাগতম কবি হুসাইন ভাই। শুভ সকাল।
অসাধারণ!
শুভকামনা করি প্রিয় কবি!
ধন্যবাদ কালাম ভাই।
চমৎকার দাদা। উজ্জীবিত হলাম যথারীতি। দারুণ প্রকাশ। ছবিতে খুব সম্ভবত আপনি নিজেই। কাল রাতে ঘুম চোখে দেখলাম, আপনার লেখার ঠিক ওপরেই বিজ্ঞাপন, "মোটা হউন। চিকন স্বাস্থ্য মোটা করিয়া থাকি ।" ভ্রম হয়েছিল বোধহয় এ্যাডের মডেল !
হাহাহা। তাই নাকি !! ছবিতে আমি। ধন্যবাদ অর্ক ভাই। শুভেচ্ছা।
দারুণ মনোমুগ্ধকর একটি জীবনালেখ্য পড়লাম যেনো। ছেলেটার ক্রমেই আকাশ ছাড়িয়ে ওঠার গল্পে পাঠক তন্ময় না হয়ে পারে কি ?
সেটা ভবিতব্যই কেবল জানবেন বোন।