বাবা! তুমি কাঁদছ কেনো? : মামুনের কবিতা

গুনগুন সুরে মন ক্ষণে ক্ষণে অণুক্ষণ
বিষণ্ণ করে তুলে হয়ে ওঠে আনমনা যেনো-
বাবা! তুমি কাঁদছ কেনো?
.

এখন খুব ভয়ংকর সময়
মুক্ত স্বদেশে এ কোন দুঃসময়?
বীভৎস দগদগে রাজনৈতিক প্রতিহিংসায়
ছিন্নভিন্ন বাবাদের ছবি হয়ে যাওয়া এ কেমন সময়?
.

মন চলে যায় সুদূর
দুঃসহ ২৬ মে রাত্রির রক্ত রাঙ্গা ডায়রির পাতায়
স্মৃতির বুকে খোদাই হয়ে এদিন
বাবা আমার পাখীর পালক হয়ে ঝরে
যন্ত্রণার দুঃসহ উত্তাপে মাতায়!

.

আগুন…বারুদ… আর্তনাদ…রক্ত…বিচ্ছেদ
মায়ের উৎকণ্ঠিত কণ্ঠস্বরে হাহাকার
অশ্রু … ক্ষোভ … ঘৃণা আর আক্রোশে ফেটে পড়া হায়েনাদের উল্লাসে মাতা
মেঘাচ্ছন্ন সেই বিষাক্ত রাত ছিলো কম্পমান!
ভয়াল নৈঃশব্দকে বুকে নিয়ে মুহুর্তগুলোও শব্দহীন
আমার উদ্বেগক্লান্ত বাবার আর বাড়ি ফেরা হয়নি সেদিন! :(

.

আমার অনুভবে এখন রাত মানেই ঝলসানো মৃত্যু
আগামী অনিশ্চিত ভোরের অপেক্ষায় বিনিদ্র রাত্রি ক্ষেপন
রোদ্রোজ্জ্বল বিকেলগুলো নিশ্চুপ মাঝরাত! এভাবেই কি চলবে জীবন?
সকল কালো মেঘ সরে যাক
সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরা বাবাদের উদ্বেগ মিলিয়ে যাক
বুলেটে ছিন্ন আর কোনো বাবাকে রাস্তায় পড়ে থাকতে হয়না যেনো
বাংলাদেশ! আমার বাবা কাঁদছে কেনো?

#বাবা_তুমি_কাঁদছ_কেনো?

মামুন সম্পর্কে

একজন মানুষ, আজীবন একাকি। লেখালেখির শুরু সেই ছেলেবেলায়। ক্যাডেট কলেজের বন্দী জীবনের একচিলতে 'রিফ্রেশমেন্ট' হিসেবে এই সাহিত্যচর্চাকে কাছে টেনেছিলাম। এরপর দীর্ঘ বিরতি... নিজের চল্লিশ বছরে এসে আবারো লেখালখি ফেসবুকে। পরে ব্লগে প্রবেশ। তারপর সময়ের কাছে নিজেকে ছেড়ে দেয়া। অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৬ তে 'অপেক্ষা' নামের প্রথম গল্পগ্রন্থ দিয়ে লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ। বইমেলা ২০১৭ তে তিনটি গ্রন্থ- 'ছায়াসঙ্গী'- দ্বিতীয় গল্পগ্রন্থ, 'ঘুঙ্গরু আর মেঙ্গরু'- উপন্যাস এবং 'শেষ তৈলচিত্র'- কাব্যগ্রন্থ নিয়ে সাহিত্যের প্রধান তিনটি প্ল্যাটফর্মে নিজের নাম রেখেছি। কাজ চলছে ১০০০ অণুগল্প নিয়ে 'অণুগল্প সংকলন' নামের গ্রন্থটির। পেশাগত জীবনে বিচিত্র অভিজ্ঞতা লাভ করেছি। একজন অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, প্রভাষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। পোষাক শিল্পের কর্মকর্তা হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছি। লেখালেখির পাশাপাশি সাংবাদিকতা করছি। লেখার ক্ষমতা আমি আমার ঈশ্বরের কাছ থেকে চেয়ে নিয়েছি। তাই মৃত্যুর আগ পর্যন্ত লিখেই যেতে হবে আমাকে।

9 thoughts on “বাবা! তুমি কাঁদছ কেনো? : মামুনের কবিতা

  1. ঘটনা বলবো না, সমাজে এমন কিছু দূর্ঘটনা হঠাৎ ঘটে যায়, যেখানে পুরো নাগরিক সমাজকে হতভম্ভ হতে হয়, নির্বাক করে দেয়; কিছু বলার ভাষা আর সেখানে অবশিষ্ট থাকে না। সম্প্রতি কালের এমন ঘটনা আমাদের মানবতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। আমাদের মানবতাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে। জাতি হিসেবে আমরা লজ্জিত বোধ করি। :(

    1. আমার কিছু বলার নেই ভাইয়া। আমি পুরা অডিও ক্লিপসটি কয়েকবার শুনেছি। নিজেকে এই দেশের একজন মানুষ হিসেবে পরিচয় দিতে লজ্জাবোধ করছি। একটা দূর্ঘটনা কিংবা একে যা-ই আখ্যা দেই না কেন, ঐ পরিবারের ঐ সময়ের ভীতি, উৎকণ্ঠা সব সকল কষ্টকে সারা জাতি মিলে এক হয়েও ফিরিয়ে দিতে পারবে কি? আমার দুই মেয়ের কথা ভাবলে আর নিজেকে মৃত ব্যক্তির জায়গায় দাঁড় করিয়ে দেখে নিজেকে একটুও নিরাপদ ভাবতে পারছি না আমি।

       

      অসহ্য যন্ত্রণায় ক্ষয়ে যাচ্ছি আমি…

    2. দুরুদুরু বক্ষে আমি শুনেছি এই অডিও ক্লিপ। শব্দের ভাষা আমি হারিয়ে ফেলেছি। আমি আমাদের সন্তানদের শোনাতে পারিনি। কোথায় আমাদের বাস ? :(

      1. আমার জ্ঞানী বাবুটা ভুলে শুনে ফেলেছে। ওর শিশুমনে অনেক যাতনা এবং প্রশ্নের জন্ম নিলেও সে আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করতে পারেনি।

        আমরা সম্পূর্ণ একনায়কতান্ত্রিক একটা জঘন্য পরিবেশে বাস করছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই ঘটনায় দায়ীদের কি শাস্তির ব্যবস্থা করেন দেখেই আওয়ামী রাজনীতির সাথে আমার সম্পর্ক ফাইনাল করবো আমি।

        ধন্যবাদ।

  2. প্রচ্ছদে ব্যবহৃত মায়াভরা এই কন্যা সন্তানের ক্রন্দন ছবি অনেক যাতনার কথা বলে। বাংলাদেশের এই ঘটনা আমি ওয়াকিবহাল হয়েছি। উত্তর পাবো কিনা জানি না, তদুপরি প্রশ্ন করি কোথায় আমাদের মানবতা? :(

    1. দিদি,আমাদের দেশের অনেকলি অনলাইন পোর্টালে এই মেয়েটির বাবাকে মেরে ফেলার সময়ে র‍্যাবের লোকদের ভুলে মেয়েটির মায়ের কল মেয়েটির বাবার মোবাইলে এলে রিসিভ হয়ে যায়। তখন তাকে মেরে ফেলা হচ্ছিলো ঠান্ডা মাথায় এবং মারার পরে যে নাটক সাজানো হচ্ছিলো এই দুই অবস্থার  প্রতিটি কথা মা এবং মেয়েরা মায়ের মোবাইলে শুনেছে। ওটা রেকর্ড হয়েছে। আমরা সারা জাতি এই ঘৃণ্য কর্মকান্ডের অডিও ক্লিপসের দ্বারা শুনেছি।

      আমি নিজেও বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের একজন কট্টর সমর্থক হয়েও সহ্য করতে পারছি না আমাদের আইনশৃংখলা বাহিনীর এই ঘৃণ্য কর্মকান্ড।

      আপনার প্রশ্নের উত্তরে বলবো- আজ মানবতা এখানে নেই।

  3. হু কে করে কার বিচার ঈশ্বর জানে ক্ষমতা তার

    হয় কি আর দৃশ্যবিরল একার————–

    1. সেটাই দেখার অপেক্ষায় আছি লিটন ভাই…

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।