ফয়জুল মহী এর সকল পোস্ট

ফয়জুল মহী সম্পর্কে

হে পরমেশ্বর,এই নশ্বর নিখিল সৃষ্টিতে রেখো না ওই মানুষ যার ভিতর নরত্বের অভিনিবেশ নাই ।

বাংলাদেশ তুমি প্রবাসী লাশদের মাতৃভূমি না

নিজেকে অসহায় ভাবছেন? একবার ভেবে দেখুন প্রবাসী বাংলাদেশীরা কেমন আছে এই করোনার মধ্যে। কত প্রবাসী মারা গেছেন জানেন তো? একটু ভাবুন তো পরিবারের সবাই বাংলাদেশে আর মাত্র একজনই জীবিকার সন্ধানে দেশের বাইরে ছিল। আজ সেই নেই অথবা সেই করোনায় আক্রান্ত! অসহায় কে? আপনি, নাকি নিঃসঙ্গ সেই প্রবাসী। মধ্যপ্রাচ্যে জেলে আছে ২৯ হাজার প্রবাসী যারা সবাই বৈধভাবে এসে অবৈধ হয়েছে। আর আসতে সুদ ও ধার কর্জ করেই বিদেশে আসতে হয়। একজন লোক আসার সময় সরকার কোন অর্থনৈতিক সাহায্যই করে না। সব কিছু নিজেকে করতে হয়। প্রতারক দালালের কথা শতকরা ৯৮টাই মিথ্যা। বিদেশ এসেই সে চরম বাস্তবতা ও কঠিন প্রতিকূলতার মুখে পড়ে। আছে মালিকদের বর্বর আচরণ। অনেকে এসেই কাজ পায় না, বৈধ ওয়ার্ক পারমিট পায় না। হয়ে পড়ে দিশাহারা, হয়ে পড়ে অবৈধ। তবে মনে একটাই চিন্তা থাকে কিছু টাকা রোজগার করতে পারলেই সুদটা পরিশোধ হবে। ঘর ভিটা রক্ষা করতে পারলে দেশে গিয়ে না খেয়েও পরিবার নিয়ে থাকতে পারবো। কিছু টাকা পাঠালে এনজিও আব্বাকে কোমরে রশি লাগবে না। আর তখন কাজ করতে গিয়ে ধরা পড়ছে। আমও গেল ছালাও গেল। সরকার কি আছে সংযোগ এতে। না নাই।

যারা অনেক বছর কাজ করেছে তারাও আজ দিশাহারা। যৌথ পরিবারে বোন বিয়ে, ভাইদের লাইন, ঘরবাড়ি দালান করা আস্তে আস্তে মা বাবা বুড়া হয় তাদের ঔষধ খরচ। এইদিকে নিজেই বুড়া, দুই পা খাড়ায় আর মাঝের …… । তখন বিয়ে, কোন রকম বাচ্চার বাবা হলেও বউ আইফোন পেয়ে ফিরিত করে টাউনে ঘুরে ঘুরে। এর মাঝে ওয়ার্ক পারমিট কোম্পানি করে না কারণ কোম্পানি দেওলিয়া, সরকারি ফিস বাড়িয়েছে বলেও অনেক কোম্পানি পারমিট করে না। হয়ে পড়ে লোক অবৈধ। তবে একসময় এই লোকই কোটি টাকা দেশে পাঠিয়েছে। এই টাকা পরিবার খরচ করলেও বিদেশ হতে দেশেই গিয়েছে টাকাটা।

কিছু লোক চাকরী করে, ব্যবসা করে, ২০/২৫ বছর প্রবাস করে আজ ক্লান্ত, দেশে কোটি কোটি টাকা পাঠিয়েছে। ভাগ্য সহায় ছিলো। এখন এই মহামারিতে বিদেশে মরে লাভ কি। বাঁচলে পরিবার নিয়ে বাঁচবো মরলে একসাথে মরবো। তাই ভয়ে নিজ দেশে গিয়েছে এটা তার অপরাধ নয়। আগে বলেছি বিদেশ আসতে সরকার কিছুই সাহায্য করে না। সব লোকের দেশে মরার অধিকার অবশ্যই আছে। নতুন লোক যারা বিদেশ এসেই অবৈধ হয়ে গেল তারা চলে গিয়ে ভালো করেছে। তারা এমনি জিন্দা লাশ। হাজার হাজার শ্রমিক ছাটাই হবে ভবিষ্যতে। যারা কোটি কোটি টাকা দেশে পাঠিয়েছে এতে পরিবার, দেশের সরকার উপকৃত হয়েছে। আমি দেশের নাগরিক আমি দেশে আসবোই, সরকার কিভাবে আমাকে সুরক্ষিত করবে সেটা সরকার ভাববে। আমি দেশের ক্ষতি করি নাই অতএব সরকার আমার ক্ষতি করতে পারেন না।

ইউরোপে মানুষ মধ্যপ্রাচ্যের মত যাইতে পারে না। অনেক টাকার বিনিময় সাগর, পাহাড়, বন- জঙ্গল পার হয়ে তারপর যায়। আপনরা জানেন কত বাঙ্গালী সাগর মহাসাগরে ভেসে গিয়েছে। কত লোক তুর্কী বরফে আর আফ্রিকার জঙ্গলে সলিল সমাধি হয়েছে। এত কষ্ট করে গিয়ে কেউ ফেরত আসতে চাইবে না। আর আমাদের দেশ হতে উন্নত দেশে জীবনমান অনেক অনেক উন্নত। এমন আরাম ছেড়ে দেশে গিয়েছে শুধু পরিবার নিয়ে মরতে। বৈধ কাগজ না থাকলে চিকিৎসা পেতে অনেক কষ্টকর। অনেকের ডায়াবেটিস সহ আরো জটিল রোগও আছে। টাকা সব নয় জীবনে টাকা অনেক কামাই করেছি এবার দেশে গিয়ে মা কিংবা মেয়ের কোলোই মরি। তাই মহামারীর প্রথমে প্রবাসীদের হুমড়ি খেয়ে মাতৃভূমিতে যাওয়া। আর দেশ তুমি দিলা বেশ।

৬৮জন বাঙ্গালী সৌদিতে মারা গিয়েছে। ৩০২১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। এখন আর অভিবাসী নাগরিকদের পরিচয়ও প্রকাশ করছে না। বিভিন্ন আইনি জটিলতার কারণে দাফনও হয়নি বহু লাশের। বাবা মা হারিয়েছে সন্তান, ভাইবোন হারিয়েছে প্রিয় ভাই, ছেলেমেয়ে হারিয়েছে বাবা, আর বউটা হয়েছে বিধবা। যার লাশ কিংবা কবর স্বপ্নেও আসবে না। আপনি কষ্ট করে অন্যান্য দেশের প্রবাসী বাংলাদেশী লাশের হিসাবটা নিবেন। আর তাদের গালি দিবেন কারণ একজন ইটালী প্রবাসী দেশকে গালি দিয়েছে কারণ প্রবাসীরা ফকিরের বাচ্চা। আর জীবিত যারা আছে দেশে গেলে বিমান বন্দরে আনসার দিয়ে পাছায় দুইটা বেত মেরে বলবেন এই দেশ তোমার না।

মেয়ে ও মায়া মাদক ও রাষ্ট্র (প্রথম পর্ব)

আমার মা বাবার ছাড়াছাড়ি হয়ে গিয়েছে। আমি আমার আম্মুর সাথে ঢাকায় থাকি আর আব্বু থাকেন কানাডায়। আব্বু সেখানে গিয়ে অন্য মহিলার সাথে জড়িয়ে যায়। কারন সে নাকি ভীষণ একা। তাছাড়া ওই মহিলা সেখানের নাগরিকত্ব পেতে সহযোগিতা করবে। তবে যাওয়ার আগের দিন চোখের জলে বুক ভাসিয়ে বলে ছিল যেত দ্রুত সম্ভব দেশে এসে আমাদের নিয়ে যাবে। অবশ্যই আব্বু দেশে এসে ছিল তবে আমাদের নিতে নয়। এসে ছিল আম্মুকে তালাক দিতে। আমার আম্মু একটা স্কুলে শিক্ষকতা করেন। উনি খুবই আত্মসম্মানবোধ মানুষ। আব্বু যাওয়ার পর আস্তে আস্তে আচরণ পরিবর্তন হতে দেখে আম্মু বুঝতে পারে যে আব্বু দূরে সরে যাচ্ছে। তাই দেশে এসে বিনা বাঁধায় আব্বু তালাক নিতে পারে। এবং এটি কেউ জানলোও না। যা কিছু আত্মীয় স্বজন জেনেছে নানুর বাড়ির লোক হতে।

একদিন নানু আর মামা আমাদের বাবায় এসে খুব রাগারাগি করলো। মাহির এই সিদ্ধান্ত কেন তুই আমাদের জানালি না। আমরা জানলে মাহিন কিছুতেই দেশ হতে পালাতে পারতো না। পারতো না তোকে তালাক দিতে, কত বড় সাহস একটা মেয়ে আছে, সংসার আছে। আর সে কিনা কোন এক বাজে মহিলার পাল্লায় পড়ে তোকে তালাক দেয়। কত বড় অমানুষ, আমরা জানলে এমন ব্যবস্থা করতাম যেন দেশ হতে বের হতে না পারে। আর তোর শাশুড়ী বা কি বলে উনার এত গুণী ছেলের বিষয়। এই তুমি এবার চুপ করো ভাইয়া। আর মা মাহিনের কথা বলে কোন হচ্ছে তোমাদের। যেখানে সে নিজেকে অন্য একজনের সাথে জড়িয়ে ফেলেছে। সেখানে কেন আমি জোর করে থাকবো। আমি কি ওর করুণার পাত্র।

আরে একটা মানুষ আমার সাথে থাকতে চাইতেছে না সেখানে জোর করে একজনের সাথে থাকা কত অপমান ও লজ্জা সেটা আমি বুঝি। আর আমিতো অপদার্থ নয় যে একা চলতে পারবো না। থাক তোর আত্মসম্মান নিয়ে। মা তুমি অযথা রাগ করছো। এতে নানু আরো করে। আর বলে এত বেশী বুঝ বলে তোমার জীবনটা আজ এত এলোমেলো। তোমাকে এই অবস্থায় রেখে মরলেও শান্তি পাবো না। আম্মু খুব রাগী বলে নানুর বাড়ির সবাই আম্মুকে খুব সমীহ করে চলে।

আব্বুর এই আচরণে দাদি খুব কষ্ট ফেল। দাদি এক রকম চুপ হয়ে গেল। এবং আব্বু আম্মুর তালাকের পর দাদি আমাদের গ্রামের বাড়ি চলে যায়। যাওয়ার আগে আম্মুকে জড়িয়ে ধরে সেকি কান্না। বলে মা জলি বিভিন্ন জনের সাথে আমাদের বিভিন্ন সম্পর্ক হয়। পাশের বাসার লোকজনকে আমার মামা চাচা খালা ডাকি কেন। কারণ তাদের সাথে আমরা একটা সামাজিক সম্পর্ক তৈরি করি। আর এইসব রক্তের সম্পর্ক হয় না তারপরও আমরা তাদের জন্য মায়া অনুভব করি। তাদের দুঃখে দুঃখ পাই, সুখে আমরা হাসি। মারে তোমার সাথে আমার ছেলে যে অন্যায় করেছে তার কোন প্রতিকার আমার কাছে নাই। ছেলে মেয়ে বড় হলে তাদের নিজের জগত হয় তখন তারা তাদের মত চলে। সেখানে মা বাবার আর কিছু করার থাকেনা। শুনো মা, তুমি মাহিনের বউ হিসাবে আমি তোমারও মা হয়ে ছিলাম। আজ তোমার আর মাহিনের তালাক না হয়ে যদি মাহিন মরে যেত তাহলে আমি তোমার মা‘ই থাকতাম। আর আজ মাহিন বেঁচে থেকেও আমি তোমার কেউ না (চোখ মুছে আঁচল দিয়ে)।

রাষ্ট্র তোমারই সন্তান আমরা

প্রজ্বলিত ক্রোধ, বজ্রপাতের দ্যুতিময় মিছিল
পথ দীর্ঘ হলেও যেতে হবে।
নোনা ঘাম, রক্তে আগুন তবুও
চাই স্বজন হত্যার প্রকাশ্য বিচার।

করোনার এই তালা বন্ধ জীবনে, চেয়ে ছিলাম এক মুঠো চাউল।
হাতে একটা পোটলা দিয়ে, মুখের দাঁত অর্ধেক বাহির করে কাঁধে হাত রেখে দিলে তুমি সেলফি উপহার। তারপর আর কি পোটলা তুমি কেড়ে নিলে। আজ তুমি আমার পাড়ার ভাই কিংবা চাচা নয়, আজ তুমি চেয়ারম্যান, আজ তুমি মেম্বার, আজ তুমি বাংলাদেশ। আর আমি কীট মাকড়া।

তালা বন্ধ দেশে ঠেলতে পারিনি দুই মাস ঠেলাগাড়িটা বয়স আমার অনুকূল নয়, তবুও ঠেলি গাড়ি বাচ্চাটার আহারের জন্য। কি আর করবো মধ্য বয়সে এসে বিধাতা দেখালো বাচ্চার মুখ। এই করোনা তাকেও কেড়ে নিলো আমার থেকে।

বাচ্চা কাঁধে করে কত হাসপাতালে কতজনের কাছে গিয়েছি কেউ শুনেনি আমার কথা। শেষ পর্যন্ত ছেলেটা আমার কাঁধে চীর দিনের ঘুম দিলো, জেনে রেখো রাষ্ট্র আমার ছেলের করোনা হয়ে ছিল। আর আমি বলি তুমিতো নিজেই করোনায় আক্রান্ত।

মানবতা যেন হারিয়ে যাচ্ছে, মহামারী শেষে আরো বেড়ে যাবে

সন্তান বাবার মৃত লাশ হাসপাতালে রেখে চলে যাওয়া আমাদের দেশেরই ঘটনা। তাও আবার পেনশানের টাকা উঠাতে যেন কোন সমস্যা না হয় তার জন্য বাবার আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে যায়। মাকে রাতের আধারে গভীর জঙ্গলে রেখে চলে যায় নিজ সন্তান। প্রতিবন্ধী একজন লোককে বাসায় একা ফেলে চলে যায় স্ত্রী ও সন্তান।
আর এই সন্তানকে মা পেটে নিয়ে এক একটা হিমালয় পাড়ি দেয় নয় মাসে। সন্তানের প্রস্রাবে ভিজা বিছানায় রাতের পর রাত যাপন করে শীত কিংবা ভরা বর্ষায়ও। আল্লাহ পর মাথা নত করতে হলে মায়েরই তা প্রাপ্য।

বাবা এই সন্তানের সুখের জন্য পৃথিবীর এক প্রান্ত হতে অন্য প্রান্তে ছুটে চলছে। কত বাবা যে বরফের পাহাড় এবং ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে আল্লাহ এবং সন্তানের নাম মনে করেছে তার হিসাব কোন দিনই হবে না। কত বাবা যে মধ্যপ্রাচ্যে বর্বর আরবের লাথি আর থাপ্পড়ে সন্তানের মুখ কল্পনা করে নীরবে চোখের জলে বুক ভিজিয়েছে তার হিসাব কখনো হবে না। করোনায় আক্রান্ত সন্তানকে বাবাই কাঁধে নিয়ে ছুটেছে। আরে একদিন আপনি নিজেই মা হবেন, বাবা হবেন। আর তখন ফিরে পাবেন কর্ম ফল। আল্লাহর কাছে শোকর আমরা মা বাবা নিয়ে সুখেই আছি। নেই মা তোমার বিধাতা। সন্তান যদি এমন আচরণ করে তাহলে অন্য লোক কেমন আচরণ করবে। এইতো ভাবতেই পারি না। কারণ করোনা পরিবর্তিত বিশ্ব হবে নিজে খাই নিজে বাঁচি।

আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং আইন ও ফিন্যান্সের চেয়ারম্যান এমিলিয়াস অ্যাভগোলিয়াস বলেছেন, ‘বৈশ্বিক মন্দার মাঝে বিশ্বে দ্রুত চাকরি হারাচ্ছে কোটি কোটি মানুষ। বিলিয়ন ডলার ব্যবসা ও শিল্প সংরক্ষণে ব্যয় করা সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত কোটি’ কোটি লোক চাকরি হারাতে পারে।’
আমিও আশংকা করছিঃ
বাংলাদেশেও এর প্রভাব হয়তো কোন অংশেই কম পড়বে না। প্রবাসী যারা করোনার হাত থেকে বাঁচার জন্যই হোক আর নাড়ীর টানেই হোক দেশে এসে গিয়েছে তারাও বাংলাদেশের বোঝা হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি লক্ষ কোটি লোক চাকরি হারিয়ে বেকার জীবন যাপন করবে। এমনিতে কয়েক মিলিয়ন শিক্ষিত বেকার আছে। ওদিকে রোহিঙ্গা তো আছেই। আমরা দুর্যোগের যেত সামনে যেতে চলেছি, তা অতি ভয়ানক। তবুও আমরা সেই একমাত্র মালিকের কাছেই সবকিছু থেকে আশ্রয় চাচ্ছি। হে আল্লাহ্‌ তুমি আমাদের করোনার হাত থেকে বাঁচিয়ে দাও এবং করোনা পরবর্তী দুর্ভিক্ষ থেকেও রক্ষা করো।

এখন কি করা যেতে পারেঃ (উদাহরণ )
আমি একটি লন্ড্রিতে কাজ করতাম, লন্ড্রি বন্ধ হয়ে যাওয়ায়, চাকরী নেই। এখন কি করবো?

উত্তরঃ আপনি লন্ড্রিতে কাজ করতেন, তার মানে আপনি আয়রন এবং ওয়াশিং এর কাজ জানেন। এখন আপনার চাকরী দরকার, পরিবার চালাতে টাকা দরকার। হাতে টাকা নাই। কি করবেন? আয় রোজগারের জন্যে কিছু একটা তো করতেই হবে। ঘরের কোন একটি অপ্রয়োজনীয় জিনিস (টেলিভিশন) বিক্রী করে দিন। হ্যাঁ, ধার না নিয়ে বিক্রী করে দিন। ধার আরও ভয়ানক। না খেয়ে থাকলেও ধার করবেন না। টিভি বেচে দিয়ে একটা ওয়াশিং মেশিন কিস্তিতে নিয়ে আসুন। আপনার মহল্লার লোকজনকেে এসএমএস করে দিন। আপনি তাদের বাসা থেকে কাপড় নিয়ে গিয়ে ওয়াশ করে ফেরত দিবেন। ফেসবুকে e-dhopa নামের পেজ করে নিন। এলাকায় প্রমোশন চালান। ডাক্তার এবং পুলিশের ইউনিফর্ম ফ্রী ধুয়ে দিন। ইমোশনাল গেম খেলুন, মার্কেটিং কিভাবে করা যায়, ভাবুন। ২-৩ মাস যাওয়ার পর, দেখবেন, কাজ বাড়বে। তখন, ভেবে দেখবেন, চাকরীতে ফিরবেন, নাকি ব্যবসা করবেন।

মনে রাখবেন, টাফ টাইম, অনেক সমস্যা, চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, নতুন বিজনেস আইডিয়া সামনে নিয়ে আসে। এই টাফ টাইমে মুভি দেখে, গেম খেলে সময় নষ্ট না করে, নিজেকে নিয়ে ভাবুন। বিকল্প কী করা যেতে পারে। আপনি কি কি কাজ জানেন? কি কি স্কিল আছে? কোনটা করলে এখন পয়সা পাবেন? ভাবুন, ঠান্ডা মাথায়। আপনার সমস্যার চমৎকার সমাধান বের হবে, আপনি নিজেই সেটা বের করতে পারবেন। হতে পারে, তা আমার দেয়া সমাধানের চেয়েও অনেক গুণ ভালো।

যদি কোন সমাধান মাথায় না আসে তাহলে কৃষিজাত পণ্য উৎপাদন করতে পারেন। জমিতে শাকসবজি করা যেতে পারে। মনে রাখবেন এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদী রাখা যাবে না। এখনি পুকুরে মাছ চাষ করা শুরু করেন। মহিলারা হাঁস মুরগি পালন করা বাড়াতে হবে। তাহলে নিজের প্রয়োজনীয় ডিম এবং মাংসের যোগান হবে। বেশী হলে বিক্রি করা যাবে। বুঝা দরকার সময় খুব খারাপ আসছে সামনে। হে আল্লাহ আমাদের সঠিক ও সুন্দর পথ দেখিয়ে দিন।
সরকারের প্রতি আবেদনঃ

———————————————————————
অনেক আগে পড়ে ছিলাম সমাজতন্ত্রের দেশ ভেনেজুয়েলা কথা । তারাক একদম গ্রামে যেখানে কৃষি উৎপাদন বেশী ঠিক সেখানে সরকারীভাবে ূকোল্ড স্টোর গঠে তুলেছে। কৃষি মৌসুমে একেবারে কৃষকের জমি হতে সরকার উৎপাদিত পণ্য ন্যায্য দামে খরিদ করে স্টোরে জমা রাখে অফ মৌসুমের জন্য। এবং একই সময় শহরেগুলোতেও ন্যায্য দামে সরবারাহ করে । এতে যেমন কৃষক সঠিক দাম পায়। শহরের মানুষও নতুন শাক সবজি পায় কম দামে । আবার পর্যাপ্ত মজুদ থাকায় অফ মৌসুমেও ঠিকভাবে সরবারাহ দিতে পারে সরকার যার কারণে দাম থাকে হাতের নাগালে। এতে কৃষক খুশী জনসাধারণও খুশী। আমাদের দেশে কৃষক হতে কম দামে জমি হতে পণ্য কিনে একদল প্রতারক । তারা মজুদ করে আবার সুবিধামত তারাই চড়া দামে শহরে বিক্রি করে। লোকশান কৃষকের আর পণ্যের দাম বেশী বলে গালি সরকারের। মুনাফা মধ্যস্থতা ভুগীর । আমাদের দেশ কৃষিপ্রধান দেশ বলে ভেবে দেখবেন মাননীয় সরকার ।

রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি অতি সাধারণ ও ছোট আবেদন

রাজনীতি অবশ্যই জনগণের কল্যাণের জন্যঃ
তাই আপনি জনগণের শুভচিন্তক। এই জন্য আপনার চিন্তা- চেতনা জনগণকে নিয়ে। সজ্জন রাজনৈতিক নেতা মানে অন্যের ব্যথায় ব্যথিত হয়ে সমবেদনা জানাতে ছুটে আসা। জনগণের অপরিসীম কল্যাণই সৎ রাজনৈতিক নেতার মানসপটে থাকে। আর এর জন্য ক্ষমতাবান চেয়ারের তেমন একটা প্রয়োজন পড়ে না। প্রয়োজন পড়ে জন সমর্থন। প্রয়োজন পড়ে জন – ভালোবাসা। এর বিপরীতও আছে, ক্ষমতাবান চেয়ার সম্রাট বানায়। কোটি কোটি টাকা বানায়। জোর-জবর করে জন ভালোবাসাও বানায়। কিন্তু সেই ভালোবাসার নেতা একদিন আস্তাকুঁড়ে নিপতিত হয়, এবং হবেই। মহান আল্লাহ সাক্ষী। গণ স্বাস্থ্য ৭১ সালে মানুষের সেবা করেছে, আজ আবার ২০২০ সালে দেশের মহা বিপদে সেবার জন্য হৃদয় দিয়ে কাজ করছে। এটা আমজনতার নিগুঢ় ভালোবাসারই জয়। আর উনাদের অকৃত্রিম সেবায় বাঁচবে আমার কিংবা আপনার প্রিয়জন। তখনি হাসবে বাংলাদেশ। ক্ষমতা মানুষকে লাগামহীন করে, ক্ষমতা মানুষকে বেপরোয়া করে, ক্ষমতা মানুষকে হাসির পাত্র করে। সর্বোপরি করে লোভী। আর সেটা বর্তমান শাসক দলের নেতারাই (সবাই না) প্রমাণ।

চাই কঠিন ইস্পাত ঐক্যঃ
আর সেই ঐক্য হবে ভালোবাসায় এবং ভালোবাসায়। সেই ঐক্য দরকার নেতায় আর নেতায়। সেই ঐক্য দরকার নেতায় এবং আমজনতার। আমরা লড়াই করে চিনিয়ে এনেছি মায়ের ভাষা, লড়াই করে চিনিয়ে এনেছি স্বাধীন সার্বভৌম মায়ের জায়গা। আর এইসবই ছিল দূর আকাশে মেঘে ঢাকা। ছোট বড়, ধনী গরীব, জাত অজাত সবাই মিলে বুকের লাল একদম স্বচ্ছ লাল রক্ত উজাড় করে সোনালী সকাল চিনিয়ে এনেছি। রক্তের দামে কেনা বলে লাল আভা বিচ্ছুরণ করে আমাদের জাতীয় পতাকায়। এখন আবার সেই ৭১ এর মত ঐক্য চাই সম্মানিত রাজনৈতিক দল। জানি এখন ২০২০ সাল। অনেকের অনেক বেদনা, অনেক যন্ত্রণা, অনেক কষ্ট বুকে। তবুও ঐক্য চাই। কারণ আমরা যে বাঁচতে চাই।

৭১ সালে ছিল সুশৃঙ্খলা রাজাকার বাহিনী। আজও আছে আড়তদার, মুনাফাখোর, গুজব ও ধর্মীয় লেবাসধারী কিছু নব্য রাজাকার। এদের বিরুদ্ধে একটা ঐক্যবদ্ধ লড়াই চাই। আর সেটা এখনি উপযুক্ত সময়। আমার বিশ্বাস এতে আমরাই জিতবো। এতে আপনাদের মানবতারই জয় হবে। আর তখন হাসবে পুরা বাংলাদেশ। আপনারা হবেন জাতীয় বীর। শত শত জাফরউল্ল্যাহ স্যার চাই এইদেশে।

ছাত্র এবং যুব সংগঠনকে কাজে লাগানো যায়ঃ
৬৮ হাজার গ্রামে নিয়ে এই দেশ। গ্রামের মানুষ অসচেতন, এদের সচেতন করাই প্রথম কাজ তাই প্রতিটি গ্রামে একটা করে (শিক্ষিত, সাহসী, সচেতন ও মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন কর্মী নিয়ে) টিম করা যেতে পারে। আর এই টিমের প্রধান হবে নিজ সংগঠনের নেতা। এই টিমকে তদারকি করবে ইউনিয়ন কমিটি। তেমনি উপজেলায়, জেলায় কিংবা যে কোন শহরের প্রতিটি পাড়ায় মহল্লায় এইভাবে টিম করা যেতে পারে। (তবে তা হতে হবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও করোনার জন্য দায়িত্বপাপ্ত হাসপাতালের ডাক্তারদের সাথে সমন্বয় করে। )

টিমের কাজঃ
(১) গ্রামের লোকজনকে সচেতন করা।
(২) বিনা মূল্যে মাক্স এবং স্যানিটারিজ সরবরাহ করা।
(৩) প্রবাসী থাকলে কিংবা নতুন আসলে তাদের তথ্য যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানানো।
(৪) কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে দ্রুত যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানানো এবং হাসপাতাল হতে যেন পালাতে না পারে তা নজর রাখা।
(৫) আড়তদার ও মুনাফাখোরদের গোপনভাবে তথ্য সংগ্রহ করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করা।
(৬) যে কোন ধরনের গণজমায়েতের বিরুদ্ধে মতবাদ গঠন করা।
(৭) এই সময় ধর্মীয় লেবাসধারীরা যেন মানুষকে বিভ্রান্ত করতে না পারে সেই দিকে নজর রাখা এবং করলেও প্রতিরোধ গড়ে তোলা।

তবে এইসব করতে টাকার যোগান দিতে হলে তাও ব্যবস্থা হয়ে যাবে। শুধু চাই সরকারের সুনজর। চাই এই মুহূর্তে মতভেদ ভুলে সবাইকে কাজ করার সুযোগ দেওয়া। ভালোবাসা ওহ প্রিয় বাংলাদেশ। আল্লাহ করুণা করো আমাদের।

কোয়ারেন্টাইন ( জনবিচ্ছিন্ন ) থেকে লোকজন পালিয়ে যাচ্ছে কিন্তু কেন পালিয়ে যাচ্ছে

এখন যদি ইটালী থেকে আসার পর আপনাকে হজ্ব ক্যাম্পে ১৪দিন রাখা হয়, আপনিও পালিয়ে যাবেন। ইটালি না, আপনি কক্সবাজার গিয়েছেন, ফিরে আসার পর জানলেন, আপনাকে ১৪ দিন আটকা থাকা লাগবে। সেটা ফ্লোরে তোশক বিছিয়ে। বিপদের সময় এখন তাই আবদ্ধ থাকতেই হবে। কোন সন্দেহ নেই। তবে, এটা কি একটু ভালোভাবে হতে পারে না?

এরা তো আর চুরি করে পালিয়ে আসে নাই। কেউ কেউ ভীতি থেকে এসেছেন। বাকিরা স্বাভাবিক যাওয়া আসা করেন, ফ্লাইট রেগুলার চলাচল করে। এই মানুষ গুলোকে এভাবে না রেখে তাদের জন্যে একটা বাড়ি ভাড়া করে, সঠিক দামে খাট কিনে ও একটা আলমারি দিয়ে তাদের কি রাখা যেতো না? যে দেশে লাখ টাকায় পর্দা কিনা হয়, লাখ টাকায় বালিশ কিনা হয়, কোটি টাকায় কলাগাছের লেনদেন হয়। সেখানে এই একটা কাজে দুর্নীতি না করে কিছু খাট কিনে, একটু ভালো পরিবেশ দিয়ে রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের রাখা হলে কি খুব খারাপ হতো? ওয়াইফাই দিয়ে পরিবারের সাথেও কথা বলার জন্য সুযোগ দেয়া যায়। দিলে কি এমন ক্ষতি হবে। বা পরিবার থেকে পাঠানো খাবার চেক করে তাদের কাছে কি দেয়া যায় না? ১০ লাখ রোহিঙ্গাদের ঘর বাড়ি হয়, আর আমাদের সম্মানিত রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের কপালে জোটে ক্যাম্প। কত টাকা লাগতো এতে? একটা বালিশ আর একটা কলাগাছের টাকা দিয়ে তো এরকম ১৫০ জনকে ৩ মাস খাওয়ানো যায়। ভয় লাগে, কবে না জানি দেশের শাসকদের কপালে এরকম সেবা জোটে।

(করোনা আক্রান্ত যেসব দেশে কেরালার নাগরিক রয়েছে তারা দেশে ফিরতে চাইলে তাদের সাদরে গ্রহণ করার ঘোষণা দিয়েছে রাজ্য সরকার। কেরালার কোন নাগরিক করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরও ফিরে আসতে চাইলে তাদেরকে সসম্মানে গ্রহণ করা হবে এবং যথোপযুক্তভাবে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হচ্ছে। কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিদের তাদের পছন্দ মতো খাবার সরবরাহ, ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য ওয়াইফাই’র ব্যবস্থা ও রোগ থেকে সেরে উঠতে কাউন্সেলিং করছে কেরালা।
যারা বাড়িতে কোয়ারেন্টাইনে আছে তাদের মানসিক স্বাস্থ্য পর্যালোচনা করে চিকিৎসা করছে কেরালা সরকার। এ জন্য চালু করা হয়েছে বেশ কয়েকটি হটলাইন নাম্বার, যাতে ফোন দিয়ে বিভিন্ন স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য জানতে পাচ্ছেন তারা।

আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রতি মুহূর্তে খোঁজ খবর নিচ্ছে ওই রাজ্যের সরকারি কর্মকর্তারা। স্বাস্থ্যকর্মীরা সরাসরি আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করে চিকিৎসার পাশাপাশি মনোবল বাড়াতে কাউন্সেলিং করছেন। (বাংলাদেশ প্রতিদিন)

আমরা কি কেরালা হতে গরিব নাকি মেধাহীন। শাসকদল যে বলে আমাদের দেশ সিঙ্গাপুর হয়ে গিয়েছে। তাহলে এইসব মিথ্যা আর ধোঁকাই। যাহা আমজনতাকে বোকা বানানো ছাড়া আর কিছুই না।
কানাডা প্রবাসী মেয়েটা ডাক্তার নার্সদের অবহেলায় মরেই গেল। এইসব কসাইদের আবার কিছু বলা যাবে না রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তির কারণে তাদের আছে দানবীয় ক্ষমতা, করবে ধর্মঘট। বিপদে পড়বে সাধারণ জনগণ। তাইতো দুঃখে বলি (ক্ষমা চাই) করোনা তুমি বাংলাদেশের সব ধরনের জালিমদের ক্ষমা করোনা । এই ভাইরাসজনিত রোগে যদি আমরা উন্নত রাষ্ট্রকেও পিছনে ফেলি, তখন কিছুই করার থাকবে না। অ‌পেক্ষা কেবল সম‌য়ের। কারণ অামা‌দের সামা‌জিক এবং রাষ্ট্রীয় প্র‌তি‌রোধ ব্যবস্থা যে কত দুর্বল তা বলার বা‌হি‌রে।

কষ্ট কেবল অাপন কেউ মারা গে‌লে তার কা‌ছেও যে‌তে পার‌বো না‘ বা নি‌জে মারা গে‌লে কেউ কা‌ছে অাস‌বে না। তাই বলবো রাজনৈতিক কাঁদা ছুড়াছুড়ি না করে কাজের কথায় মনোযোগ দিন। আমরা সাধারণ জনগণও সচেতন হই। নিজে বাঁচি, পরিবাব, সমাজ এবং রাষ্টকে বাঁচাই।

উন্নয়ন

উন্নয়ন তুমি নেই তাই আজ,
তপ্ত দুপুর- কারো মুখে লাবণ্য নেই,
রাত্রি নিথর- নেই জ্যোৎস্নার বিচ্ছুরণ।
তুমি নেই,
চারপাশে তুমুল শৈত্য প্রবাহ,
আমার ফুটফুটে কবিতার গায়ে জামা নেই,
পৃথিবীতে নীল আকাশের-কোন সম্ভাবনা নেই,
আছে কেবল
উড়ে যাওয়া, পুড়ে যাওয়া, ভেসে যাওয়া!
আছে শুধু ইটের ভাটায় কয়লা, সারি সারি লাশ।

বাবা ও চারপাশ

ফেসবুকে চল্লিশ বয়সী নারীর ছবি দেখে ড্রাইভার বলে, আপু চমৎকার। আপনজন কিংবা প্রিয়জন আজ চাপা পড়ে কালো বিবর্ণ স্মৃতিতে। ড্রাইভার হাতের কারুকাজ চালায় বাথরুমে। তাই মাঝে মাঝে খবরের কাগজে পড়ি আমার মেয়েটাকে জাপটে ধরতে পড়ে গেল চাকার নিচে। অথবা প্রচণ্ড ব্যথা নিয়ে হাসপাতালের বেডে।

আমি বাবা! দু’ফোটা অশ্রু জল বিলিয়ে দিই মেয়েটার ব্যথিত ললাটে। আমিতো বাবারে। হাসপাতাল ও থানা, আমার দু’পায়ের ধুলায় আদর ভালোবাসা ও মানবতা মিলিয়ে যায়। পুলিশ জানতে চায় কোথায় হাত দিয়েছে, কতজন উপরে উঠেছে। আর ডাক্তার বার বার কাটে বুক পকেটটাকে।

তবুও চলি, আমি যে তোর বাবারে। উকিল একটা কাগজ হাতে দিয়ে বলে লড়তে হবে কোমর শক্ত করে। প্রথম দিনে সুশিক্ষিত জজের সামনে প্রতিপক্ষের প্রশ্ন, কাপড় খোলা নিয়ে। শত শত মানুষ হাঃ হাঃ করে উঠে।

আমি লজ্জায় ঝাঁপ দিয়ে দিই রাষ্ট্র শাসনকারী কোন ভদ্র লোকের গাড়ির নিচে।

শিরোনামহীন হৃদয়

কি জানি এত শীত কোথায় হতে আসে।
আসে হয়তো নামহীন কোন রাজার রাজ্য হতে।
আমার কথায় নাজ বাকা করে চোখ মারে আমাকে, আমি তাকে মিঠা একটা হাসি উপহার দিতে চেষ্টা করি।

এই শীতে আমার প্রিয় স্পেনের কমলা রংয়ের কম্বলটাই স্বর্গীয় মনে হয়। পাশে শুয়ে থাকা মেয়েটা স্বর্গের আরেক অনু উপাধান। মেয়েটার কপালে চুমু দেওয়ার জন্য উদ্যত হতে নাজ তার অংশীদার হতে চাইলো। বুকের মাঝে মেয়েটাকে জড়িয়ে শক্ত হাতে ধরতে এমনি স্বর্গের ছোট ছোট পরী আব্বু আব্বু ডাক দিতে থাকে। কম্বলের ভিতর সিকি সিকি সুখ হিমালয়ের সুউচ্চ হতে স্বর্গে যাওয়ার রাস্তাও দেখাতে থাকে। গ্রামে হিন্দু পাড়ায় কিত্তন কারণে সারা রাত প্রচন্ড আওয়াজে মাইকে রাম সীতার পুথি পড়ায় ঘুম হয়নি। ধর্ম বিশ্বাসের কাছে, নাকি টাকার কাছে কত সহজে ঠান্ডার মত সব কিছু হার মানে বুঝা দায়। খোলা জায়গায় কুয়াশার চাদরে ডাকা রাতে রামের নাম অবলীলায় মুখে আসার কথা না তারপরও আসছে দুটো টাকার জন্য যা দিয়ে পরিবারের অন্ন জোগাড় হবে। কখনো কখনো মাইকে মধু ‌হ‌ই হ‌ই বিষ খাওয়াইলি বাজে, আবার কখনো কখনো স্বমস্বরে নারীর কণ্ঠে উলুধ্বনিও বেজে উঠে। ভাবতে থাকি আমি কে, কোথায় যাব একদিনতো মরতে হবেই। শীতের রাতে বিছানাটা স্বর্গ হতে কম নয়।

দূর কোন গ্রাম হতে মোয়াজ্জিনের কণ্ঠ ভেসে আসে আল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবর। এই ভাবে চারদিক হতে কোরানের বানী শুনতে থাকি, শুনতে থাকি নানা ইসলামী গজল। এখন রাম সীতার পুঁথি পড়ার আওয়াজ বন্ধ। আমি আবার ভাবনায় পড়ি এই লোকগুলি নিয়ে যারা মসজিদে গিয়ে শীতের শেষ রাতে অজানা এক সুর সৃষ্টি করে। কুসুম কুসুম স্বর্গ ত্যাগ করে ঘুম হতে নামাজ উত্তম বলে। ভিয়ানা নাকি সুরের তীর্থস্থান আমার মনে হয় আমাদের দেশ‌ও তাই।

কম্বলটা টেনে মুখ ঢাকি, দেয়াল ঘড়ির ঠন ঠন শব্দে আমার বিরক্তি লাগে। ছয়টি শব্দে সকাল ছয়টা বাজে জানান দিল ঘড়িটা। জলদি উঠে বাথরুমে ঢুকে জলকুমারীর ভালবাসা পেতে চেষ্টা করি। শীত আমাকে মাঝ পথেই বাধাগ্রস্ত করে তারপরও নামাজ পড়েই গ্রামের সরু রাস্তায় হাটতে পা ফেলি। আকাশহীন কুয়াশার কাফনের মাঝে আকাশী গাছ নিরবে দাড়িয়ে আছে। দূর্বাঘাস আমার পায়ে জল ঢেলে অভিবাদন জানায়। দ্রুত পা চালাতে হয় কারণ ডায়াবেটিসের জন্য সবচেয়ে কল্যাণকর হল হাটা-চলা। নিয়ম ও শৃঙ্খলা করে চললে এই রোগ আপনাকে পরাজিত করতে কষ্ট হবেই।

পীচ ঢালা রাস্তায় উঠতে মা কুকুরটা দুইটা বাচ্চা নিয়ে আমার পাশ দিয়ে ভৌদোড়ে চলে যায়। তিনটি শালিক হলুদ ঠোঁটে রাস্তায় ঠোকর মারে। সারি সারি নানা জাতের গাছ মাথা তুলে আকাশের খোঁজে, আমিও খুঁজি আকাশটা সাদা কাঁপন ছিদ্র করে লাল আভার সূর্যের আশায়।

এই গ্রাম‌কে এখন শহরতলীই বলা যায়, শহরের সব সুবিধা‌ই আছে এই গ্রামে। আমি চলতে চলতে বড় রাস্তা পার হয়ে যাই। তখন আকাশে‌ও লাল আভার বিচ্ছুরণ নজরে আসে কিন্তু জনমানবহীন যেন সব। এক হিন্দু বাড়ির ঠাকুর ঘরের সামনে থমকে যাই। দাঁড়িয়ে চেনার চেষ্টা করি ঠাকুর ঘর এবং পূজামণ্ডপ। আমার বাবার বাল্য বন্ধু, আমার প্রিয় শিক্ষক গোপাল চন্দ্র ভৌমিকের কথা মনে পড়ে। কয়েকটা তুলসী গাছ ঠাকুর ঘরের সামনে, একটা পাতা ধরতে তার উপর থাকা জল গড়িয়ে নিচের পাতায় পড়ে তারপর সব জল নিচে মাটিতে পড়ে মিশে যায়। একটা অজানা ভালো লাগায় দেহ শিহরিত হয়ে উঠে। মনে হল ঈশ্বরের করুণায় এক ফোটা শিশির দিলাম স্বর্গবাসী গোপাল স্যারের মুখে। লজ্জা পাই তার পরিবারের সাথে কোন সম্পর্ক না রাখায়। মানুষ যত টাকার মালিক হোক, যত বড় ক্ষমতাশালী কিংবা সম্পদশালী হোক, যত বড় রাজনৈতিক নেতা হোক, যত বড় সমাজপতি হোক আসলে প্রত্যেক মানুষ‌ই সন্তান কোন না লোকের কিংবা শিক্ষকের। আপনি বাবা হ‌লে‌ও কোন না কোন লোকের প্রিয় সন্তান তাই আপনার বিবেক দায়বদ্ধ রাখতেই হবে সমাজের প্রতি।

ভাবনা

নিজের সাথে নিজে: আয়নায় আমি! আপনি কারও ব্যক্তিগত ঘড়ি নন যে সারাক্ষণ চলতেই থাকবেন, কিংবা নন কারও সেট করে দেয়া সফটওয়্যার এর প্রোগ্রাম! আপনি ইট, পাথর বা কোন নির্জীব বস্তু নন। আপনার সবচেয়ে বড় পরিচয় আপনি একজন মানুষ! এমন এক মানুষ, যার অভিধানে সফলতা এবং বিফলতা দুইটোরই জায়গা আছে । যে চলতে পছন্দ করে, যে চলায় গতি আছে, সত্যিকারের প্রাণ আছে। যে প্রাণ ভালোবাসার কথা বলে, স্বাধীনতার কথা বলে। যে প্রাণ সম্মান এর কথা বলে, প্রেরণা ও সাহস যুগিয়ে চলে, উৎসাহিত করে এবং সত্যিকারের বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখায়..! নিজেকে নিজে ফেস করেছেন কখনও? দয়া করে নিজের সাথে নিজে একটু কথা বলুন, তখনই “আমার আমিকে” খুঁজে পাবেন..! আর কখন নিজেকে মোকাবেলা করতে ভয় পাবেন না। কারণ জানেনই তো, সবাইকে ফাঁকি দিতে পারলেও আমরা নিজেকে নিজে কখনও ফাঁকি দিতে পারি না, পারবোও না।

আমার আপনার চেয়ে আপন যে জন সে যে আমার ভেতরই বাস করে!অন্ধকারে,বিপদে ,দুঃখে,দূর্দিনে সেই যে আমার হাত ধরে বলে এই তো আমি তোর পাশেই, ভয় কি?এবং অসীম তার শক্তি!একবার যদি সেই আমিত্বের সাথে কারো দেখা মেলে স্বার্থক জীবন তার!রবীন্দ্রনাথ থেকে লালন সবাই সেই ভেতরে থাকা নিজেকেই খুঁজে বের করার কথা বলেছেন নানাভাবে।নিজের সাথে নিজের সখ্যতাটাই মুখ্য এখানে। আনন্দ নিয়ে জীবনকে পরিচালিত করাটাই মুখ্য।দূঃখ,প্রতারণা,সবকিছুর মাঝেই নিজে নিজের হাতটা ধরে সামনে এগিয়ে চলাটাই জীবন।মঙ্গল হোক, কল্যাণ হোক সবার।

From # Facebook

কল্পনাময়

আমি আজ বিপন্ন জাতির এক নমুনাস্বরুপ,
এইটি আমার কেবলমাত্র ভাবনার খোরাক নয়।
কয়েক বছর আগে তার সাথে আমার পরিচয়,
আমি তার সাজ সাজ চেহারায় আকুল হতে হতে প্রেয়সী ভাবলাম।
কখনো তার বাম হাতের লম্বা নখ দিয়ে আমার নাকে চিহ্ন বসিয়ে দিত,
উপভোগ করার বদলে দেখতাম রোহিঙ্গা নারীর নয় মাসিক শরীর।
নোংরা কাদা জলে মায়াবী মুখ, নামহীন গাছের নিচে নতুন মানবের কান্না।
মানবতা, নারী দুই জিনিস দুই সত্তায় মিল করে রাজনীতির খোঁজ,
অবসাদ মনে যোগফল মিলে মিথ্যা আর প্রতারণা।
হয়তো এটাই প্রেম, এই আধুনিক গণতন্ত্র ।
জানা হল না তার জাত বংশ কিংবা শিয়া সুন্নি নাকি হিন্দু বৌদ্ধ,
তবে এতটুকু ঠিকই জানি তার দুই চোখ আমার বুক পকেটে নিশানা।
তার গর্ভে যদি একটি শুধু একটি সিরিয়ার শিশুর জন্ম হতো
তাহলে আমি শিয়া সুন্নির মাঝামাঝি কোন জাত তৈরি করে নিতাম।