হাসনাহেনা রানু এর সকল পোস্ট

কালো বরফ

কালো বরফ

একটা মন যদি আঁকো
পাশাপাশি দু’টি মানুষ রেখো
দু’ টি দেহের
এক আত্মা, এক প্রাণ
এক মন….
সে মানুষের একজন হবে তুমি
অন্যজন আমি
ভাবনার আকাশ ছুঁয়ে একটি
সাগর রেখো…
সে সাগর পাড়ে দাঁড়িয়ে তোমার চোখে
দেখবো সাগর কখনো বিঁধূর কখনো উচ্ছ্বল,
কখনো বিক্ষুব্ধ মাতাল —
তুমি চাইলে আকাশটাকে পেড়ে নেব সাগর জলে
নীল আঁচল ছড়িয়ে,
জলের ডানা মেলে ঢেউয়েরা হারাবে
দূর দিগন্তে….
আর তুমি হারাবে ঢেউয়ের উচ্ছ্বাসে
কবিতার আদ্যপান্তে —-
জলের ভাঁজে ভাঁজে ইচ্ছে আগুন ছড়াবে —
আমি গভীর সমুদ্রে ডুব দিয়ে
মেপে নেব কবিতার ভালোবাসা —
এই তো প্রেম..
এই তো জীবন,
এই আমি কখনো কি ভেবেছি জলের গভীরে
ডুব দিয়ে শ্বাস নিতে পারব?
অথচ নিচ্ছি স্রোতস্বিনী জলের ভাঁজে আঁচড় কেটে
এখনো বেঁচে আছি,
মন বৃত্ত ছুঁয়ে ঘুম ঘোরে
একটি স্বপ্ন যদি আঁকো..
স্বপ্ন পারাপারে একটি সাঁ– খো রেখো —
স্বপ্ন সাঁ- খো পার হবে খুব
সাবধানে —
পাছে তোমার ঘুম ভেঙ্গে
স্বপ্ন না ভাঙ্গে,
এক বিন্দু শিশির যদি আঁকো
দূর্বাঘাসে..
ভোরের খোঁপায় অভিমান তুলে রেখে
শিশির কুড়াব দু’ হাত
ভরে —
বলো…. সেকি ভালো হবে?
আমি জানিনে…. জানিনে….
পা রেখেছি চোরাবালির ফাঁদে,
সাঁতার জানিনে এই আমি
নেমেছি সমুদ্রে —
যদি একটু ভালোবাসা রাখো
বিশ্বাসে
তবে হাতটা বাড়িয়ে দিও…
আর না হলে
ডুবেই যাব —-
অথৈ জলের গভীরে…!!

02.03.2019

কেউ কথা রেখেছিল

কেউ কথা রেখেছিল

মিষ্টি একটা গন্ধ ভাসে ঘরে
কেউ এসেছিল এ কথা মন বলে..
ফুলদানিতে এক গুচ্ছ নীল গোলাপ রেখে গেছে —-
তবে কি আমার প্রিয় নীল গোলাপের কথা
কেউ জেনে গেছে ?

মিষ্টি একটা স্বপ্ন দেখেছি গতকাল রাতে
কেউ এসেছিল স্বপ্নে ..
অধর কাঁপা ঠোঁটে শিশির শব্দের শিহরণ ছিল,
ঘাস ফড়িং অরণ্যের মৃদু স্পর্শে ঘুম ভেঙ্গেছে —
এখনো দু’চোখের পাতায় স্বপ্নের রেশ লেগে আছে।

মিষ্টি একটা শ্রাবণ বিকেল রেখেছি তুলে
ডুবন্ত সূর্যের রক্তিম আভাটুকু কেড়ে নিয়ে —
মায়াবী বিকেলটা খেলছিল আনমনে প্রকৃতির বুকে …
এমন নিঃশব্দ বিকেলে চুপিচুপি পায়ে কেউ এসেছিল কাছে।

মিষ্টি একটা জ‍্যোৎসনা রাত রেখেছি তুলে
শেষ বিকেলের অচেনা ঠোঁট থেকে ডূবিয়ে দিয়ে বেলা ,
নক্ষত্র নীল রাত্রি নীড় সাজিয়েছি —-
গুচ্ছ গুচ্ছ গোলাপ দিয়ে তার জন্য …!

চারপাশে দিগন্ত ছুঁয়ে সবুজ ছিল
ভাললাগা অনুরণন ছিল…
সবুজ পাতায়,
দূর্বাঘাসে —
নৈঃশব্দ্যের আড়ালে টুপটাপ শিশির পতনের উচ্ছ্বাস ছিল —

তবে কি কেউ কথা রেখেছিল ?
যে কথা আজও আমার জানা হয়নি !!

08.08.18

কবিতা এখন

কবিতা এখন

অনামী অাষাঢ়ে অাজ তিনদিন ধরে ঝর ঝর বৃষ্টি ঝরছে-
অামার প্রিয়-খুলনা শহর এখন
চোখ ধাঁধাঁনো এক হাঁটু জলের নদী হয়ে অাছে,
কবিতা শহরের বুকে জলের নদী হয়ে বইছে …
কবিতা এখন সন্ধ্যাকাশের আবির রঙের চিত্রকল্পে মন রাঙিয়েছে ভীষণ :
রংধনু মেঘের সবুজ শাড়ির অাঁচল ছুঁয়ে –
একটি দু’টি জোনাকি অালো ছড়িয়েছে –
শিউলি ফোঁটা গল্পের মত কবিতা রং ছড়িয়েছে
অচেনা পৃথিবীতে ;
কবিতা এখন সিম গাছের মাচায়-
কবিতা সজনে গাছ ভরা থোকা থোকা
সাদা ফুল-
কবিতা এখন শীতে পুঁইয়ের মাচার
রাঙা ফল ………..!

কবিতা পাহাড়ি জুম চাষ-
কবিতা ২১ শের বই মেলার শেষ বিকেল-
কবিতা হেমন্তের উঠোন জুড়ে ফুটে থাকা
থোকা থোকা সবুজ, হলুদ, নীল ঘাস ফুল-
কবিতা জ্যোৎসনার নীল শহর –
কবিতা শুকতারার দেশ –
কবিতা বৃক্ষলতায় বেড়ে ওঠা অরণ্য –
কবিতা একখণ্ড শ্রাবণকাশের তৃষ্ণার মেঘ।

কবিতা নক্ষত্র ফুলে ফুলে সাজানো নীল পৃথিবী-
কবিতা দেবদারু পাতায় লেগে থাকা একমুঠো হলুদ রৌদ্দুর-
কবিতা অালো-ছায়ার নীড়ে ডুবে থাকা
অরণ্যের অানাচ-কানাচ:
কবিতা একটি সুন্দর মন
একটি সাজানো স্বপ্ন-
কবিতা একটি সুন্দর মুখ-
কবিতা মেহেদী রাঙানো হাত ,
কবিতা অামলকির বন-
কবিতা গায়ের রাঙা বধূর গলার নেকলেস –
কবিতা পোড় খাওয়া হৃদয়ের শ্রাবণ মেঘে ভিজে যাওয়া চোখের পাতা-
কবিতা অরণ্যে বেড়ে ওঠা একগুচ্ছ স্বপ্ন কুসুম ——–

কবিতা ভালবাসার অাকুতি-
কবিতা কারও স্পর্শ –
কবিতা সবুজ বিশ্বাসের শেকড় –
কবিতা বিমুগ্ধ প্রেমিকের দু’টুকরো ঠোঁট-
কবিতা শিল্পবোধ,
কবিতা ভাললাগা এক চিলতে চাহনি-
কবিতা দূর দেশের ঢেউয়ের সমুদ্র :

কবিতা প্রকৃতির বুকে এক ফাঁলি সবুজ দৃশ্যাবলী –
কবিতা প্রিয়তমার চোখের কান্না-
কবিতা সমুদ্রের বুকে ডুবে যাওয়া বেলা –
কবিতা দূর পাহাড়ে জলমেঘে বৃষ্টির ধারা-
কবিতা সীমাহীন অাকাশে রংধনু পাড়ে
নীল নক্সা-
কবিতা এখন রোমান্টিক কবিতার মত…….

26.02.2019

নিজস্বতায় স্বপ্নাহত

নিজস্বতায় স্বপ্নাহত

আয়না,
প্রতিদিন সবাই তোমাকেই দেখে,
তুমি কাউকে দেখো না
নাম তোমার আয়না,
প্রয়োজন তোমার না-
এ সত্য কথা :
অথচ,কেউ স্বীকার করে না ——

আকাশ,
কি অপরূপ সাজে সাজো তুমি নীলাকাশ,
নীল দেহে ছড়াও নীলের পশলা ,
দূর থেকে সবাই তোমাকে দেখে
জোনাকি আলো নিঝুম নক্ষত্র রাতে –
সবাই তোমাকে কাছে পেতে চায়,
তুমি কাউকে কাছে ডাকো না ;

শাড়ি,
তুমি অন্যের সৌন্দর্যে নিজেকে ঢেলে সাজাও –
তোমার একান্ত রং সীমাহীন নিশীথের নীল,
তোমার স্বচ্ছতা অন্যকে সাজায়,
মেলে ধরে,
কিম্বা, ঢেলে দাও নিজেকে অন্যের তরে
এটাই তোমার পূর্ণতা –
অন্যকে সাজিয়ে কি করে তুমি সুখী হও,
বুঝি না -!

দরজা,
তুমি কেবল অন্যকে প্রবেশ করাও
নিজের ভেতর,
নিজেই থাকো সভ্যতার আড়ালে উন্মুক্ত,
যদিও আলো- আঁধারের আড়ালেই থাকে
অপর সম্ভবনা –
তুমি কার ও ভেতরে প্রবেশ করো না !

টিপ,
তোমাকে সবাই পরে,
আয়নায় দাঁড়িয়ে দেখে বিমুগ্ধ নয়নে,
তুমি কেমন মেঘলা আকাশের কপালে
সবটুকু নীল টিপ হয়ে ভেসে থাকো,
অনুরাগের বৃষ্টিরা,
কপালের টিপ ছুঁয়ে ঝরে —
কে জানে,
নীল শাড়ি,
নীল টিপ,
সাজাতে শিখেছে কবে—- ?

মন,
ভাল লাগা থেকেই ভালবাসা কি শুধুই মনের
চর্চা করে,
নাকি অভিমানে
মুখ ফিরিয়ে রাখে –
অবাক অনুরাগে :
মনের ঘরে
ভাল লাগা,
ভালবাসা অন্য আরেক মন বসত করে —।

গোলাপ,
তুমি কি কখন ও নিজের সৌন্দর্য দেখো না ?
নিয়েছ কি কখনও তোমার সুঘ্রাণ —
তুমি কেবলই অপরকে মহিত করে গেলে?
নিজেকে ঢেলে,
সাজিয়ে,
তোমায় পেয়ে কত প্রেমিক মন সিক্ত হয়েছে,
তোমার জন্য কত কবি কবিতা লিখেছে,
কত শিল্পী
কবিতায় গান বেঁধেছে,
তোমার জন্য
তুমি জানো না;
কতটা সৌন্দর্য ধারণ করে আছ নিজের ভেতরে
পাপড়ির ভাঁজে ভাঁজে –
হাই গোলাপ !
একি শুধুই তোমার অন্যের তরে
নিজেকে বিলিয়ে দেয়া ———–!

24.02.2019

অ্যাডাপটেশন

অ্যাডাপটেশন

আমরা যারা একবিংশ শতাব্দীতে আধুনিক গদ‍্য কবিতা লিখছি তা নাকি কবিতা হয় না …
কে বলে এমন কথা?
যে বা যারা বলে,
তাদের চোখ, মন,
অনুভূতি
সবই ভোতা হয়ে গেছে
ছন্দ মিলের পদ‍্য বা কবিতা ভালবেসে বেসে,
তবে কবিতা কি?
কেমন দেখতে ?
কবিতা কি একটি নির্দিষ্ট কোন বৃক্ষে
জন্ম নেয়া
ফুল বা ফল ….!
কবিতা কি সেই বৃক্ষে ঝাঁকুনি দিলেই
টুপ টাপ ঝরে পড়ে তলায় –
অথবা কোন বিশেষ ধরনের লতা- পাতা?
কবিতা শিউলি নাকি বকুল মালা ?

কবিতা কি মেঘ ? ঝড়, বৃষ্টি, রৌদ্রের
আলো ছায়ার খেলা ?
কবিতা কি কাল বৈশাখীর দমকা
হাওয়া ?
কবিতা আসলে কি?
আকাশ সমুদ্র …

নাকি শ্রাবণ মেঘ :
রাতের আকাশের চাঁদ?
কবিতার কি কোন বিশেষ সংজ্ঞা আছে?
বিশেষ কোন গ্রামার মেনে কবিতা লিখতে হয় ?

কবিতা কি রাতের মৌণতায় ডুবে থাকা সীমাহীন স্তব্ধতা ?
স্পর্শের বাইরে নাকি ভেতরে থাকে কবিতা ?
তবে যে ওরা বলে,
আমরা লিখি কত কিছুই নিয়ে —–
সে গুলো কি আর কোন কবিতা হয় ?
কবিতা লিখেছেন …
নাম করা বড় বড় হাতে গোনা
কয়েক জন কবি,
কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর,
কাজী নজরুল,
জীবনানন্দ দাশ,
বঙ্কিমচন্দ্র
শুধুই এনারা নাকি কবিতা লিখেছেন—
আর কেউ কবিতা লিখতে পারে না।

আচ্ছা, উনারা কি জন্মেই বড় কবি হয়ে এসেছিলেন?
আসলে কবিতা তুমি কি?
তুমি নিজেই বলো না …
তুমি ঠিক দেখতে কেমন ?
সুঘ্রাণে ভরা গোলাপ কি কোন কবিতার
নাম হতে পারে?
রজনীগন্ধা ফোঁটা রাতের তিমিরে
জোছনা বনে
কি কবিতা থাকতে পারে ?
প্রথম পৃথিবীর ঠোঁটে কবিতার বিকেল কি
চোখ মেলে তাকিয়ে ছিল?
নীল আকাশের ভাঁজে কি কবিতা হারাতে
পারে?
আমার ভাবনার আকাশে ডানা মেলে
উড়ে যাওয়া শঙ্ক চিলের নাম কি
কবিতা হতে পারে?
নিঃশব্দ সমুদ্রের কোলে শুয়ে থাকা অপূর্ব
মায়াবী এক জোছনা রাত কি কবিতার নাম
হতে পারে?
ঘাস শিশিরের লুকোচুরি খেলা কি
কবিতা হতে পারে ?
এক খন্ড সোনালি মেঘের নাম কি কবিতা ?
আমি জানিনা,
আমি তো আর বড় কোন কবি নই,
যে কবিতা লিখতে পারব ?
তবে হ্যাঁ,
সময়ের সাথে সাথে কবিতায় বড় ধরনের একটা পরিবর্তন এসেছে …
এ কথা নিন্দুকদের মানতেই হবে।
রবিঠাকুর আধুনিক গদ‍্য কবিতার সারমর্ম বুঝতে পারেননি
এটা উনার উল্লেখযোগ্য ব‍্যর্থতা বলতেই হবে।
উনি যদি এই একাবিংশ শতাব্দীর কবি হতেন তবে কি আধুনিক গদ‍্য কবিতায় উনার পদচারণা ঘটতো না ?
অবশ্যই উনি গদ‍্য রাজ‍্যে অন‍্য রকম এক ভুবন সৃষ্টি করতেন।
তবে নিন্দুকদের কথায় ক্ষেপে যাওয়ার কোন কারণ দেখি না —-
কারণ আধুনিক গদ‍্য কবিতার প্রভাব শুরুর দিকে,
অনেকেই সেটা মেনে নিতে পারেননি
তীব্র সমালোচনা করে এর বিরুদ্ধতা করেছিলেন —–
হা সেটা তারা করতেই পারেন,
মত — দ্বিমত থাকবেই।

এখনকার কবিরা কত সুন্দর সুন্দর আধুনিক গদ‍্য কবিতা লিখছেন..
সে সব কবিতা আলোর দ্যুতি ছড়াচ্ছে
এক একটা নক্ষত্র হয়ে !
এটুকু বলতেই পারি,
তোমরা কবিতার কাছে আস,
পড়,
হাতে নিয়ে নাড়া চাড়া করে দেখ,
আমাদের লেখা এসব কবিতাগুলো ও
কম যায় না —–
আচ্ছা, জীবনানন্দ দাশের সেই যে কবিতার লাইনটার কথা মনে আছে …
“বনলতা সেন” কবিতায় —-
“পাখির নীড়ের মতো চোখ তুলে নাটোরের
বনলতা সেন।”
কেউ কি জানতো …
বনলতা সেনের পাখির নীড়ের মতো চোখ
তার কালে কালে বিখ্যাত হবে ?
হতে পারে সেই ——-
লাবণ্য,
বনলতা,
পার্বতী
সুরঞ্জনাদের মতো অমর সৃষ্ট !
একালের কবিদের ভালবাসা —
সুনীলের নীরা,
রূদ্রর শিমুল,
আর আমার সবুজ ঘাস বুকে জমে থাকা
এক এক ফোঁটা শিশিরের উচ্ছ্বাস :
কালের স্রোতে ভেসে ভেসে
বরফ নদীর ঢেউ ভেঙ্গে ভেঙ্গে
একদিন বিখ্যাত হয়ে উঠবে না —
এ কথা কেউ বলতে পারে?

হয়তো সেদিন থাকবো না এ পৃথিবীতে আমরা :
তবু থাকবে তো আমাদের সৃষ্টি …
কে জানে,
এমনটা তো হতেও পারে ————-

__________
22.10.2018

মায়ার বাঁধন

বাঁধো আমাকে তুমি মায়ার জালে
অন্তস্থলে তোল তুমুল ঝড় —
আমার দু’পায়ে বেঁধে দাও পথ ,
আমি হাঁটব সেই পথ ধরে
অনন্ত কাল :
তুমিও রবে সাথে ,
আমরা উদ‍্যান কিম্বা বিশাল হাইওয়ে ধরে
একটু বেড়িয়ে আসতে পারি ।
অথবা যেতে পারি সমুদ্রের কাছাকাছি
আমরা শুনতে পারি সমুদ্রের গর্জন
আর ঢেউ এর তালে নিজেদের
হারাতে পারি ;
আমরা সমুদ্রের বুকে বেলাভূমিতে দাঁড়িয়ে
বলতে পারি জীবনের না বলা যত কথা
আমরা সমুদ্র স্নানে নামতে পারি !

আমরা দু’জনকে ভাগ করতে পারি
আধাআধি :–
আমরা দু’জনার চেতনায় ঘন হয়ে
থাকতে পারি
আজীবন অবধি ;
ভালবাসার বুনন যদি হয় নিঁখাদ
তবে বাঁধো আমাকে
ভালবাসার পূর্ণ অধিকারে
মায়ার বাঁধনে !

20.02.2019

প্রতীক্ষা

আঁধারে যখন ভয়, এসো
কবিতার সাথে সারাদিন হেঁটে হেঁটে
গুচ্ছ গুচ্ছ শব্দের পাশাপাশি
জয় করি হাসনাহেনার সুগন্ধা —

তোমার জন্য আদিবস সঞ্চয়
ভালবাসার নীল যন্ত্রণা
নীলিময় চেয়ে আরও নীল
বিশাল মরু ব‍্যপ্ত হবে
অরাত্রি ঝরে তবু ও হবে না তার ক্ষয় —

রাত্রিতো শুধু রক্তের আয়োজন
পিপাসা হায়রে ! পিপাসার মত নদী
এমন অমর্ঘ‍্য অসহ্য আহ্বান
গোলাপের চেয়ে আরও লাল এ প্লাবন —

গোলাপ যে আমার এ হৃদয়
একটি গভীর গন্ধের প্রিয় নীড় !

নীল ক‍্যাফে কবি

নীল ক‍্যাফে কবি

তোমাকে প্রথম দেখেছিলাম : সমুদ্র তীরে
একা একা হাঁটছিলে
সে তুমি বড্ড এলোমেলো…
তোমার পোশাক ছিল টিপটাপ,
কিন্তু ওই যে অশান্ত মন বাতাসে —
তোমার দীঘল কালো চুলের কথা কি বলব
সে তো গভীর কালো সমুদ্র থেকে কাল বৈশাখী ঝড় ওঠেছে
মেঘ কালো চুলের ভাঁজে ভাঁজে…

তোমাকে দ্বিতীয় বার দেখেছি : ওশান প‍্যারাডাইস হোটেলের লিফটে
তুমি নামছিলে,
আমি উঠছিলাম ——-
হঠাৎ চার চোখের ধ্রুপদ নীল স্তবকে বহুকাল তাকিয়ে থাকা যেন ….!
হে নেশাময়ী কাল বৈশাখী: তুমি সে দৃষ্টি
ভেঙ্গে চোখ নামিয়ে নিলে —–
এ যেন বেলাভূমিতে দাঁড়িয়ে উচ্ছ্বাল সমুদ্রে অস্তমিত সূর্য দেখা — —-

তোমাকে ৩য় বার দেখেছি : কফি শপে একা
নির্জন এক টেবিলে ,
নিঃশব্দ চোখে তাকালে আমার দিকে —-
দৃষ্টি নেশাময় ; বাবুই পাখির সাজানো নীড়ের মতো
ও চোখে মেঘ বিন্দুর উচ্ছ্বাসে
শিশির বৃষ্টি জমে গেছে ——
এক মূহুর্ত আমার মনে হল,
তুমি গোলাপ অরণ‍্যে ব‍্যথিত এক নীল প্রজাপতি ———-

শেষ বার তোমাকে দেখলাম: নীল ক‍্যাফে ….
নিঃশব্দ ওয়ার্ডরোবে পড়ে থাকা
বহুদিনের পুরনো নীল বানিয়া কাতান শাড়িতে —
শাড়িটা ছিল অতি চমৎকার,
পাখির ডানার নিবিড় শব্দের মতো
ঠিক হল না —
শাড়িটাকে অন‍্য রকম উচ্চতায় নিয়ে গ‍্যাছো তুমি ,
ঠিক তোমার মতো —-
শাড়ির ভাঁজ তেমন ই আছে
মোটে চারখানা কুচি তাতে
আর আঁচল ?

খোলা পৃথিবীর সাদা ঠোঁটের উচ্ছ্বাসে মিশে থাকা এক আকাশ নীলের কারুকার্য ;
তাতেই অনন‍্যা তুমি …
অবাক মেয়ে
পলক পড়ে না তোমায় দেখে …
পড়ন্ত বিকেলে নীল ক‍্যাফে তুমি …
সেদিন কার ও অপেক্ষায় ছিলে,
একটি টেবিলে কেক
একটি মোমবাতি
পাশেই লাইটার
ছোট্ট একটা চকচকে চাকু
তোমার চোখের দৃষ্টির মতো তীক্ষ্ম আর ধারালো….
কিছু চকলেট,
এক মগ ধোঁয়া ওঠা কফি,
একটা নীল ডায়েরি —
একটা ফাউন্ডেশন কলম :
ক’ছড়া কাশফুল
একটা সবুজ মুক্তার মালা,
তোমার দু’চোখ থেকে ফোঁটা ফোঁটা অশ্রু গড়াচ্ছিল —
সমুদ্র ধারায় ;
ও কি নির্মম যন্ত্রণা বিবশ …
বড় বেশি বিষাদের ——- !

তুমি ডায়েরির খোলা বুকে কবিতা লিখছিলে —
ক্ষণে ক্ষণে কষ্ট তোমাকে আচ্ছন্ন করে রাখছিল,
তোমার দু’চোখে এক সমুদ্র দুঃখ
সাঁতার কাটছিল
তোমার কবিতা লেখা শেষ হলে
এক আকাশ কাঁপিয়ে তোমার চোখে
শ্রাবণ ধারায় অশ্রু ঝরল…
আমি দূরে দাঁড়িয়ে দেখছিলাম তোমাকে
অবাক চোখে,
তোমার সবটুকু কষ্ট আমাকে ছুঁয়ে যাচ্ছিল বারবার ——
হয়তো সে ক্ষণে তোমার
‘ প্রিয়জনের ‘ শুভ জন্মদিন ছিল
সেদিন তোমার চোখে আমি ভালবাসা দেখেছি
তার জন্যে ….

আমি ভীরু ভীরু পায়ে তোমার পাশে এসে দাঁড়ালেম :
অনেক প্রত্যাশায় বললেম ,এই শোন —-
অপরিচিতা মেয়ে,
আমি কী তোমার ডায়েরিটা দেখতে পারি ?
কী আছে ডায়েরিতে ?
অপরিচিতা মুখে কিছুই বলল না,
ফ‍্যাল ফ‍্যাল দৃষ্টিতে ডায়েরিটা বাড়িয়ে দিল
আমার দিকে —
দেখলাম : ক‍্যাফের রংধনু নিয়ন বাতিতে
সে এক অন‍্য রকম তুমি !

আমার মনে হল…
জ‍্যোৎস্না প্লাবিত উত্তাল সমুদ্র থেকে
সদ‍্যস্নান সেরে উঠে এসেছ
আবরণহীন এক নগ্ন নারী তুমি!
ও মেয়ে : তুমি আমার নিঃশব্দ ভালবাসা হয়ে গেছ ——–
এখন তুমি বলো মেয়ে —
এই নির্জন হলুদ শহরে তুমি একা কেন?
কার জন্য তোমার এই দীর্ঘ বিরহ অপেক্ষা …
কিন্তু মেয়ে তিনটা জিনিসের বড় অভাব —
তোমার ভেতরের তোমাতে —
ছোট্ট একটা নীল টিপ
থাকত যদি তোমার কপাল জুড়ে …
কি অপরূপ হয়ে উঠতে তুমি ——
বা হাতে ক’ গাছি রেশমী চুড়ি,
আর … আর —
এক পা’য় নূপুর
এই তিনে মিলে অনন‍্যা তুমি ———–
খোলা ডায়েরির পাতায় রেখে চোখ
বিস্ময় প্রকাশ করল যুবক ———

“নীল ক‍্যাফে কবি”
এই কবিতা তুমিই লিখেছ ?
এক্ষুণিই তোমার প্রেমে বন্দি করো আমাকে —
ওগো কবি,
মেয়েটি এগিয়ে এসে নিঃশব্দে হাত রাখে যুবকের হাতে —
অবুঝ বালক, বলে মেয়ে —
শুভ্র জ‍্যোৎস্না রাত যদি পেড়ে দিতে পার আমার হাতে —
যদি ভালবাসার নীল গোলাপ ফোঁটাতে পার আমার মনে
জান, নীল গোলাপ আমার খুব প্রিয়!
যদি একটা সমুদ্র কিনে দিতে পার :
যদি ঐ আকাশের সব নক্ষত্র খুলে খুলে দিতে পার আমার হাতে —
তবেই আমি শুধু তোমার হব ।
হ‍্যাঁ, তুমি ঠিকই বলেছ যুবক —–
আজ আমার প্রিয়জনের শুভ জন্মদিন ছিল …
আমি এক উপন্যাসের নায়ক এর প্রেমে পড়েছি —

১ম ,২য়, ৩য়
এবং শেষ বার আমার উপন্যাসের নায়কের সাথে যা কিছু হয়েছে ..
আমি সেই নায়িকা —–
নীল ক‍্যাফে কবি’র চরিত্র অনুকরণ করেছি —
বাস্তব প্রেম কখনো ছুঁয়ে দেখিনি
খুঁজেছি, পাইনি
এখন পেয়েছি —
কি নাম তোমার যুবক, জানতে চাইব না —-
তুমি, হ‍্যা তুমি —
“নীল ক‍্যাফে কবি’র” ভালবাসা ——
অরণ্য পৃথিবী :
বাহ্ কবি …. সুন্দর নাম দিয়েছ তো
তুমি আমার ——-
আর তুমি মৃত্তিকা মাটি ;
আচ্ছা পৃথিবী অরণ‍্য কি ভালবাসার কথা বলে ?
হ‍্যাঁ, কবি …. আমি তোমার সেই পঠিত উপন্যাসের নায়ক
অরণ্য পৃথিবী ;
ওরা দু’জন তখন হাত ধরে
গহীন সমুদ্রের জলে পা বাড়ায় ……………….

নিদয়া বন্ধুরে

বুকের ভেতর কেমনে ভাসে
একলা সমুদ্দুর –
বুকের ভেতর কেমনে বাজে
অচেনা এক সুর ।

বুকের ভেতর কেমনে কাঁদে
চেনা একখান মুখ –
চোখের ভেতর কেমনে পোড়ে
কাঙ্ক্ষিত সব সুখ !

বুকের ভেতর কেমনে বাড়ে
অচেনা সব কষ্ট :
বুকের ভেতর ভালবাসার
সব আশা যে নষ্ট!

ভালবাসার স্বপ্ন পোড়ে
ইচ্ছে ডানার রোদ্দুরে,
একলা কাটে মধ‍্যরাত্রি
ও নিদয়া বন্ধুরে ;

পেরিয়ে এলাম হাজার দুপুর
শুকিয়ে গেল সিন্দুরে ,
ছোট্ট মনে স্বপ্ন ভাঙে
আইলি না তো বন্ধুরে !!

16.02.2019

একদিন বৃষ্টি ও আমি

মাঝে মধ্যে কি যে হয় কবিতার শব্দরা
পালিয়ে বেড়ায় বহুদূরে —
গুচ্ছ গুচ্ছ শব্দরা তখন
ছোট্ট খরগোশ ছানা হয় ,
আর আমি চোখ বেঁধে খরগোশ ছানার পিছে ছুটছি অনন্ত কাল শিশির ভেজা ঘাসের বুকে ছুটে চলা নীল কিশোরীর মত:
দিন শেষে ক্লান্ত এই আমি বুঝতে পারি
খরগোশ ছানা আমার হাতের মুঠোয় বন্দি!
বৃথাই খুঁজেছি, পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে —
আমার একটা বিকেল ছিল সবুজ পাতা
রঙ ,
বিকেলটা পুড়ে যাচ্ছিল মধ‍্য দুপুরের
টানা রৌদ্রে :
বিকেল জুড়ে আমার কৃষ্ণচূড়া রঙ
স্বপ্নরা খেলা করে
স্বপ্ন কুড়োনো সময় তুলে রেখেছিলাম
গত গ্রীষ্মে;
শ্রাবণের বেনো জলে স্বপ্ন ধুয়ে গেছে
একবার
এবার অনেক সাবধান হয়েছি !

শহরের বিস্তীর্ণ আকাশ নিয়ে খেলছিল মেঘ
বৃষ্টির দারুণ ইচ্ছে হলো প্রকৃতি ভিজিয়ে দেবে ,
হঠাৎ এক শহর স্বস্তির বৃষ্টি নামলো !
রংধনু আকাশে তখন দৃশ্য অন‍্য রকম —
খোলা ছাদে বৃষ্টিতে ভিজে এই আমি একাকার ,
মেঘ বৃষ্টি হয়ে ঝরছে মূষলধারায় ..
এক নিমিষেই জমাট বাঁধা কালচে সময়ে
কবিতার শব্দরা দূর্বোধ‍্য হয়ে উঠেছে ।

শত বিকেলের গভীর ঘুমে শেষের
রাত্রি
নৈঃশব্দ্যের জোনাক জ্বলা নিঝুম রাতে
শীত ঘুম স্বপ্ন ভেঙ্গে এই মাত্র
জেগে উঠেছে ,
অপার্থিব কবিতার এক পৃথিবী !

15.02.2019

আগুন গোলাপ ভালবাসা

আগুন গোলাপ ভালবাসা

১৪ ফেব্রুয়ারি……
-ভ্যালেন্টাইন্স ডে
বিশ্বভালবাসা দিবসের
আগুন লাগুক বাংলার মানচিত্রে ——

টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া..
ভালবাসার আগুন বৃষ্টি নামুক বাংলার আকাশে
দক্ষিণা বাতাসে হৃদয়ে মনে অরণ্যে ফাগুনে!

আগুন লাগুক বাংলার তাবত গোলাপ বনে বনে:
আগুন লাগুক কৃষ্ণচূড়ার সবুজ ডালে ডালে ;

গোলাপ আগুন লাগুক
—এক পৃথিবী প্রেমিকাদের
কৃষ্ণঘন কালো চুলে চুলে…………

ভালবাসার মিষ্টি উত্তাপে ফাগুনের বিকেলে আগুন ঝরুক —
ইন্টারনেটে প্রেমিক প্রেমিকাদের মেলায় :
সামাজিক যোগাযোগ ওয়েব সাইট..
ফেসবুক ডটকম এ ;
মোবাইল ফোন এ
প্রেমিক যুগলদের মনের ইনবক্সে !!

14.02.2019

গোলাপ মেয়ে

গোলাপ মেয়ে

হায় ! গোলাপ মেয়ে
দীঘল কালো কেশ উড়িয়ে,
পড়ন্ত বিকেলে এলে তুমি বই মেলার স্টলে….
দিনটি ছিল ১৪ ই ফেব্রুয়ারি
বিশ্ব ভালোবাসা দিবস —-
গোলাপি শাড়ি,
গোলাপি টিপে,
এসেছ তুমি গোলাপ ফুলে
অন্যন্যা হয়ে —-
এক পলক দেখেই তোমায় শিহরিত
এই আমি — —

তোমার মাঝে হারিয়েছি নিজেকে সদ্য,
ফোঁটালে তুমি হৃদয়ে আমার
এক রক্তাক্ত জল পদ্ম :
কখন যেন তুমি ভালোলাগা থেকে
হয়ে গেছ ভালোবাসা,
বুঝিনি ——
তোমায় নিয়ে স্বপ্ন বুনছি একাকী,
হঠাৎ পাশ থেকে তোমার নাম ধরে
কেউ ডাকলো —–
হায় ! মাধবীলতা কেমন আছ — — —
একটি গোলাপ সম্মুখে বাড়িয়ে ধরে,
মুচকি হেসে বলল সে –
—- এটি তোমার জন্য !

মাধবীলতার সে কি উচ্ছ্বাস –
এই একটি গোলাপের জন্য —–
হায় ! মাধবীলতা তুমি জানলে না ,
শুধু একটি গোলাপ কেন –
তুমি চাইলে ——
এক পৃথিবী গোলাপ বাগান
এনে ফেলতে পারি তোমার দু’ পায়ে–
তুমি বুঝলে না আমার কী যে কষ্ট !

সে ক্ষণে মাধবীলতা মিষ্টি হেসে,
নিঃশব্দে ছেলেটির হাত ধরে
হারিয়ে গেল অচেনা পথের বাঁকে —
অস্ফুষ্টে হৃদয় ক্রন্দনে আমি বলে উঠলাম,
ও আমার গোলাপ মেয়ে —
এমন কষ্ট দিয়ে,
তুমি কেন হারিয়ে গেলে ; —–
মাধবী লোকারণ্যে,
নাকি পথের ভীড়ে,
হারিয়ে গেল —
জানা হল না
আমি চেয়ে চেয়ে দেখলাম
আমার হৃদয় হল ক্ষত- বিক্ষত –!!

13.02.2019

নিঃশব্দ কবি

নিঃশব্দ কবি

এক নিস্তব্ধ নিঃসঙ্গ কাশফুল বিকেলের
ঠোঁটে ঘুমিয়ে থাকা
কাঁচ নদীর ঢেউ এর স্রোত ভেঙ্গে ভেঙ্গে আমি
দু’হাত ভরে শব্দ কুড়িয়েছি,
কবিতায় দু’চরণ মনের কথা লিখবো বলে..
একদিন সেই কাঁচের আঘাতে আঘাতে
আমার দু’হাত রক্তাক্ত হয়েছে :
অথচ, মন অক্ষত আছে
এক ফোঁটা দাগ কাটেনি ও মনে !
কাঁচ নদীর পাড় ভাঙার শব্দ আছে
ভারী দুঃখ গুলো আমার মতো কাঁদে ,
পোড়ে —
হা, আমি দুঃখ গুলো বুকের মাঝে
অবলোকন করি ;
পৃথিবীর সব কোলাহল থেমে যাবে
একদিন,

আমার যেমন দু’ফোটা দুঃখ বিলাসী মনে
কখনোই সুখের পায়রা উড়েনি —
চাঞ্চরিক, সময় সুনামির মতো আঘাত
হেনেছে বারবার এ বুকে !
তবু দুঃখ অরণ্য আমায় ছেড়ে যায়নি,
আমার মনের মাঝে ভীষণ ক্ষীপ্রতায়
তুষাদ্রী ধবল মেঘের বলয় ভাঙে
আমি তখন মৃত্যুতে লিখে দিই প্রাণ!

জানি, আমার প্রিয় পৃথিবীর রং বদলায়
আকাশের মতোই –
দফায় দফায়
আর আমি আজও বদলাতে পারিনি এতটুকু ও ———–

12.02.2019

হাসনাহেনা

হাসনাহেনা

কে বেশি সুন্দর, হাসনাহেনা ফুল
নাকি কোন ফুলওয়ালী
না হাসনাহেনা নাম ওয়ালী,
ভেবে পাইনা এ কোন্ হেয়ালী
না হয় সে, গোলাপ ফুলের তোড়া
না হয় সে, অপরুপা রজনীগন্ধার ইষ্টিক
না সে শুধুই হাসনাহেনা:
নৈঃশব্দ্যে ফুটেছে ফুল গভীর রাতে
শুভ্র জ‍্যোৎস্নায় থোকা থোকা,
পুষ্প বৃষ্টির নিরন্তন জ‍্যোৎস্না ধারার সুঘ্রাণে
প্রকৃতি হয়েছে মাতোয়ারা ;

যখনই আমি যাই তার ফুলের দোকানে
কবি বলে ডাকে সে আমারে ,
আসলে কি আমি কোন কবি
না কোন দুঃস্বপ্নের ছবি !
পাই না আমি কষ্ট কোন
লিখবো আমি কেমন করে..
আমার নামের কবিতা টি !

যখনই আমি যাই তার ফুলের বাগানে
হেয়ালী করে বলে সে আমারে,
আমার বাগানের পুরোটাই হাসনাহেনার আবাদ —–
কি নির্মল!
কি অপরুপ ..
শুভ্র কোমল থোকা থোকা
হাসনাহেনার এই আবাস,
যেন খন্ড খন্ড মেঘ পালক শরৎ চিত্র
ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে আমার হৃদয়াকাশ !

09.02.2019

আমার জন্য বাঁচো

আমার জন্য বাঁচো

তুমি তারা খুঁজো না
আমি তোমায় মন দেব
তুমি আমায় খুঁজো না —
আমি তোমায় খুঁজে নেব ,
গহীন অরণ্যে সবুজ পাতায় শিশিরের শব্দ
জল নূপুর টুপটাপ বাজে ।

আমি দুঃখ পাখি
তোমায় দু’হাত ভরে সুখ দেব ,
তবু কেন, সমুদ্রের জলে দীর্ঘ নিঃশ্বাস
আমার জন্য তুমি বাঁচো :
আর আকাশের চাঁদ খুঁজো না
আমি তোমায় এক মন ভালোবাসা দেব
তুমি পৃথিবী খুঁজো না ,
আমি তোমায় দু’চোখ ভরে স্বপ্ন দেব
আকাশের সব তারা, চাঁদ, সূর্য, পৃথিবী
সমুদ্রের বিলাপ সব আমার মধ্যে ;
তুমি আমার জন্য বাঁচো —
আমি তোমার জন্য স্বপ্ন দেখা জীবনের
ভোর এনেছি ,
এ ভোরের অন‍্য রকম মানে আছে !

এখনো জীবনের নিঃশব্দ ভোরে পাখিরা গেয়ে ওঠে
সবুজ মায়ায় বকুল কুড়ানো ভোর জেগে ওঠে ,
তুমি আমার জন্য বেতফল কুড়ানো সন্ধ্যা গুলো তুলে রেখ নীল খামে — বেদনার রঙে!
এই শ্রাবণে তুমি সাদা মেঘে বৃষ্টি হয়ে ঝরছো
তারা হয়ে জ্বলছো —
চাঁদ হয়ে হাসছো,
গোলাপ হয়ে ফুটছো
সন্ধ্যা হয়ে নামছো
দিনের শরীরে রৌদ্দুর মাখছো,
আর আমি…
শুধু তোমার
জন্য দুঃখ মেয়ে হয়েছি !

অনুভূতিতে আমি তোমার হাত ছুঁয়ে থাকি সারাবেলা
তুমি চোখ সরিয়ে রেখে না
হৃদয়ে আমায় রেখো,
আর না হলে মরেই যাব
তুমি শুধু আমার জন্য বাঁচো !

08.02.2019