জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব এর সকল পোস্ট

জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব সম্পর্কে

জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার নলছিয়া নামক গ্রামে ১০ ই জুন ২০০১ সালে জন্ম গ্রহণ করেন। তার লেখা গুলো বাস্তব ধর্মীয়। লেখা তার নেশা। সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে কবিতা লিখতে। * চরম মুর্খ সেই যে শিক্ষা অর্জন করে নিজের মাতৃভাষা শুদ্ধ ভাবে বলতে পারে না । * আমার কাছে আনুষ্ঠানিক শিক্ষা পদ্ধতি থেকে অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা পদ্ধতি শ্রেষ্ঠ।

নষ্ট সম্পর্ক

৮+৬ অক্ষর বৃত্ত ছন্দ

চেপে রাখা আঁখি জলে ভাসে সহোদর
কটুকাটব্য করেছে সারা দিনভর।
ফুটিলো প্রভাতে ফুল কেটে গেলো নিশি
বিষাদ বেদনাগ্রস্ত তপোবনে ঋষি।

বিষাদ বেদনা ভরা প্রতি নর নারী
বিবাদেই সম্পর্কটা ভাঙে তাড়াতাড়ি।
সহোদরের মতো রে আপন কেহ নাই
গলাগলি ভাব করে চলে তো সবাই।

ঝরিয়ো না নয়নের জলে পরে জন্য
পাবে শুধু কষ্ট আর নাহি হবে ধন্য।
পরচর্চা সবে করে নাহি তারা বোঝে
আপন পাপের বোঝা তারা নাহি খোঁজে।

আপন জন এমন পৃথিবীতে আছে
নিজের লোকের ক্ষতি জন্য ঘোরে পাছে।
স্বার্থপর নিজে লোক চাহে নাহি কেহ
ভালো হয়ে সবে করো একে অন্যে স্নেহ।

তাহলে নিজের স্বার্থে জন্য কেন করো
নানান রকম খেলা ভালো পথ ধরো।
ঝগড়াঝাঁটি ভুলেই হাতে রেখে হাত
একসাথে সবে মিলে কেটে দাও রাত।

রচনাকালঃ
০১/০৮/২০২১

একতারার সুর

৪+৪/৪+২ স্বরবৃত্ত ছন্দ

বহুদিন পর বাজতে শুনি
একতারার ওই শব্দ,
বাংলার বুকে আছে থাকবে
অব্দের পর অব্দ।

একতারার ওই দারুণ সুরে
বাউলদের ওই গানে
একতারাটা আমার মনে
বাজে ক্ষণে ক্ষণে।

বাংলার প্রাচীন সংস্কৃতি যে
যায় না কভু ভোলা,
বারে বারে এসে তবে
মনে দেয়’রে দোলা।

বাউলগান আর লোকগীতি
দেশের কথা বলে,
সেই গান শুনার জন্য মানুষ
চলে দলে দলে।

একতারারি সুরে বাউল
গাহে গান যে কত,
ঢোলের তালে বাঁশির সুরে
বাদ্য বাজে শত।

রচনাকালঃ
০১/০৮/২০২১

পিতা পরম মিতা

বৈদিক সনেট

বাবা-ই আমার ভালো খেলা সাথী
বাবা দিবারাত্রি স্বপ্ন বলে কত
জীবন চলার পথে বাধা আসে
আছে মোরে বাবা নাহি বন্ধু অত।

মনের সকল আমার যে কথা
আমি বলি বাবা তুমি হলে আলো
জীবন সুখের উল্লাস কাঁপানো
তুমি হলে মোরে সবে থেকে ভালো।

বাবা তুমি আমা মনে
স্বপ্ন দিলে ক্ষণে ক্ষণে
তোমাকে যে আমি কত ভালোবাসি।

বাবা যে আমার আঁখি
সদা তার আশায় থাকি
তোমাকে যে পেয়ে ইচ্ছে খুশি হাসি।

রচনাকালঃ
১১/০৭/২০২১

ভদ্র নারী

+৪/৪+২ স্বরবৃত্ত ছন্দ

শান্তি পেতে ঘরের মধ্যে
লাগে সুশীল নারী,
অভদ্র ওই নারীর জন্য
অশান্তি হয় বাড়ি।

সম্পর্ক ভাই গড়ার আগে
দেখো ভালো করে,
যেজন আসবে সেজন যেন
আলো ছড়াই ঘরে।

ভদ্র নারীর সমাজে আজ
প্রয়োজনটা বেশি,
পর দেশের ওই ঢঙে চলে
সেই নারী নয় দেশি।

কথায় কথায় অনায়াসে
বলে বেশি কথা,
এরূপ নারী জীবন রথে
দেয় রে শুধু ব্যথা।

ভালো নারী রাখে বাড়ি
অশান্তি নেই তবে,
এমন নারী পাবো কোথা
এই না জীবন ভবে।

রচনাকালঃ
৩০/০৭/২০২১

কাণ্ডজ্ঞান, দুর্দিন

কাণ্ডজ্ঞান
– জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
মালঝাঁপ কাব্য ৮+৬ অক্ষর বৃত্ত ছন্দ

নীতি নিত্তে মম চিত্তে পরে বিত্তে গর্বে
শুধু করে পরে তরে মন ভরে খর্বে।
করে দাঙ্গা চলে হাঙ্গা মন চাঙ্গা করে
জেব ফাঁকা পরে টাকা চলে ঢাকা তরে।

মস্ত আলো প্রাণ কালো লাগে ভালো তার
করে খুন বহু গুণ দেখে মনু আর।
বসে হাসে নাহি আসে বুক ভাসে কত
পরে ধনে প্রতিক্ষণে ধনী মনে শত।

করে চুরি মোটা ভুরি আছে ছুরি হাতে
হাতে কাজ নাহি লাজ টাকা ভাজ রাতে।
যায় প্রাণ গাহে গান গুরু মানে সবে
দুষ্ট সনে মিষ্টি ক্ষণে নিজে জনে তবে।

লুট করে জেব ভরে নিজে তরে ভাই
ন্যায় নীতি গল্পে রীতি মনে ভীতি তাই।
ঠকবাজ লুঘু কাজ নাহি লাজ লোকে
প্রাণ তরী হাতে ঘড়ি স্বর্ণ ভরি থোকে।

কত কষ্ট প্রাণ নষ্ট পথ ভৃষ্ট আমি
নাহি চলে যেতে বলে আখি জলে ভূমি।
শুদ্ধ পথে প্রাণ রথে চলা মথে থাকা
ভালো দৃষ্টি শুভ সৃষ্টি নিজে কৃষ্টি রাখা

রচনাকালঃ
৩০/০৭/২০২১
——————————-
দুর্দিন
জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব

৪+৪/৪+৪/৪+২ স্বরবৃত্ত ছন্দ

খেটে খাওয়া মানুষ গুলো
মুখে তাদের উড়ছে ধূলো
চুকছে পেটের ঋণে,
রোদ বৃষ্টিতে নিত্য পোড়া
মাইনের জন্য পিছু ঘোরা
নিত্য নতুন দিনে।

দিনটা চলে এরূপ করে
শান্তি নাহি আসে ঘরে
খাদ্য চাই যে ছেলে,
সুখের উল্লাস নেই তো কভু
লেগে আছেন দুঃখ তবু
সুখ নাহি তো মেলে।

সংসারের হাল ধরার তরে
খেটে খেটে জীবন ভরে
ভালো থাকার জন্য,
কষ্ট করে গরীব মানুষ
মালিক শ্রেণি ছড়ায় ফানুস
স্ব কে ভাবে ধন্য।

শ্রমে শ্রমে জীবন খানি
শক্ত হয়তো সবাই জানি
অবিশ্রান্ত ঘাম,
কষ্ট নাহি মনে আসে
সুখে দুখে সবাই ভাসে
জীবন এরই নাম।

রচনাকালঃ
৩১/০৭/২০২১

প্রাণ পাখি -২, স্বজনের প্রতীক্ষা

প্রাণ পাখি -২
– জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
৪+৪/৪+২ স্বরবৃত্ত ছন্দ

আমায় ছেড়ে যাস না তুই
সাধের প্রাণোপাখি,
খব যতনে সং গোপনে
আগলে আগলে রাখি।

তুমি বিহীন এই কায়ার যে
নেইকো কোনো মূল্য,
তুমি থাকলে আমি তবে
ধরায় দেব্য তুল্য।

যাসনে কভু প্রাণোপাখি
ছেয়ে সাধের কায়া,
তুমি গেলে আমার প্রতি
থাকবে কো না মায়া।

তোমার জন্য সবে আমায়
করে শুধু ভক্তি,
গেলে চলে তুমি আমার
থাকবে না তো শক্তি।

ইচ্ছে করে জনম জনম
থাকি তোমার সাথে,
দিয়ো না তো আমায় ফাঁকি
থাকো দিবা রাতি।

রচনাকালঃ
৩১/০৭/২০২১
———————————————
স্বজনের প্রতীক্ষা
জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
৫+৫/৫+২

শৈশবকালে হারিয়ে যায়
অনেক ছেলে মেয়ে,
আসবে কবে আপন ঘরে
স্বজন থাকে চেয়ে।

হারিয়ে গেছে সেই জনেরা
আসে না কভু ফিরে,
স্বজন তরে থাকেন শুধু
স্মৃতি এটুকু ঘিরে।

তাদের সাথে দেখা করতে
মনে ইচ্ছে করে,
সেই কথাটা মনে হলেই
অঝোর ধারা ঝরে।

চলে গেছে যে সবার থেকে
অনেক বেশি দূরে,
তাকে দেখতে পেলে স্বজনে
হৃদয় খানা ভরে।

সম্ভব না দেখা করে তো
অচিন পুরে ভাই,
সেথায় গিয়ে দেখা করাই
কারো সাধ্য নাই।

রচনাকালঃ
৩০/০৭/২০২১

শিক্ষা অমূল্য ধন, বাড়ি যাবো

শিক্ষা অমূল্য ধন
– জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
স্বরবৃত্ত ছন্দ ৪+৪/৪+২

শিক্ষা হলো জীবন রথে
অমূল্য এক শক্তি,
শিশু কিশোর পাঠশালাতে
শেখে পাঠ্য ভক্তি।

জীবন চলার দীঘল পথে
কত রকম খেলা,
শিক্ষাবিহীন সেই জীবনে
অন্ধকারের মেলা।

শিক্ষা হলো সুপ্ত মনের
অন্ধকার ভেদ করে,
অন্ধকার ভেদ করে সেথায়
আলো দিয়ে ভরে।

শিক্ষাবিহীন জীবনের দাম
নেই তো ধরার বুকে,
শিক্ষিত জন অবাধ গমন
করে মহা সুখে।

শিক্ষিত হও তোমরা সবে
দূর কর সব কালো,
জীবন মুখে চলার পথে
ছিনে আনে আলো।

রচনাকালঃ
৩১/০৭/২০২১
_________________________
বাড়ি যাবো
জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব

৪+৪/৪+২ স্বরবৃত্ত ছন্দ

বাবা মায়ের কাছে যাবে
রেলগাড়িতে চড়ে,
তাদের জন্য জিনিস নেবো
থলেখানি ভরে।

অবহেলায় পড়ে আছেন
তাঁরা অজগাঁয়ে,
সুখে-দুখে তারা থাকেন
তমাল তরু ছায়ে।

অযত্ন আর অবহেলা
ভীষণ কষ্ট করে,
সারাজীবন শুধু তারা
থাকে কুড়ে ঘরে।

এমন করে বাবা মায়ের
সময় যায় রে চলে,
শুধু দুঃখ শুধু দুঃখ
সুখ আসে কি বলে।

এত কষ্ট সহ্য করে
আছেন তারা বেঁচে,
তাদের কাছে যেতে আমার
মনটা ওঠে নেচে।

রচনাকালঃ
৩০/০৭/২০২১

করুণ দৃশ্য, বৃষ্টির শব্দ গান

করুন দৃশ্য
– জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
অক্ষর বৃত্ত ছন্দ ৮+৬

মহামারী অনাহারী বসে কাঁদে লোক
কথা যত ব্যথা শত মনে শুধু শোক।
পেটে ঋণে বেশি দিনে যায় নারে চলা
এত কথা যথাতথা যাবে কিরে বলা।

কোথা সুখ শুধু দুখ বেশি মনে পড়ে
কবে খাবো শান্তি পাবো পেটে খানা ভরে।
বন্দী দশা প্রাণ চষা কাটে নারে তবু
বসে ঘরে শুধু পরে ডাকি তোমা প্রভু।

দিন ভালো ক্ষণ কালো আসে নব রূপে
বলি তাই ভালো নাই ভক্তি করো চুপে।
মনে মনে জনে জনে বলে সব কিছু
অল্প খাদ্য বাজে বাদ্য ঘোরে পিছু পিছু।

হাড় গুলো ছুঁবে ধূলো হয়েছে রে দশা
নাহি চলে মনে বলে মারি তবে মশা।
ধনী ভাই বলি তাই খুব আছো সুখে
দুখী মরে খাদ্য তরে নাহি চাহো দিকে।

করো ক্ষমা দুখ জমা সুখ পাবো কবে
কাঁদে মন প্রতিক্ষণ নাহি সুখ তবে।
অবরুদ্ধ নাহি শুধু জীবন যাপন
ধরা বুকে মহা সুখে নাহি যে আপন।

রচনাকালঃ
২৯/০৭/২০২১
————————————–
বৃষ্টির শব্দ গান
জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব

৪+৪/৪+৪/৪+২

রিমঝিম রিমঝিম শব্দ মনে
গান গেয়ে যায় প্রতিক্ষণে
সাজে তরু লতা,
মেঘের সাজে নীল আকাশে
জোয়ার আসে ওই বাতাসে
বলি নানা কথা।

গুড়গুড় গুড় ওই মেঘের ডাকে
থেকে থেকে ব্যাঙে হাঁকে
জলের কলতানে,
গাছের ডালে পাখির বাসা
মনের ভিতর বহু আশা
উদাস করে গানে।

পরিস্কার সব গাছের পাতা
নব সাজে তরুলতা
বেশি লাগে ভালো,
মেঘ আড়ালে সূর্য হাসে
মেঘের সাথে আলো ভাসে
দূর করে সব কালো।

মেঘের ভেলা চড়ে খেলা
গগনে সব নীলের মেলা
মনে হয় ওই ছবি,
বর্ষাকালে নদের জলে
ছন্দ তোলে ওই কলকলে
কাব্য লেখেন কবি।

রচনাকালঃ
৩০/০৭/২০২১

ধোঁকা, প্রেমের আগুন

ধোঁকা
– জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
৪+৪/৪+২ স্বরবৃত্ত ছন্দ

চলে গেলো সেই পাখিটা
দিয়ে আমায় ধোঁকা,
আমায় সেযে ভেবে ছিলো
ভীষণ ভীষণ বোকা।

ভালোবাসা ছিলো আমার
এই না হৃদয় ভরা,
সেই কথাতে অঝোর চোখে
বৃষ্টিবিহীন খরা।

কি দোষ ছিলো প্রিয়া আমার
বলে যাবে তুমি,
দিবানিশি সদা প্রিয়া
তোমায় আমি চুমি।

হৃদয় পুরে ঘোরাঘুরি
তোমার পায়ের শব্দ,
সেই শব্দটা শুনে শুনে
কেটে যাবে অব্দ।

হবে না আর বলা প্রিয়া
মনে কোনো ভাষা,
আজও পথটা চেয়ে আছি
আসবে সেই তো আশা।

রচনাকালঃ
৩০/০৭/২০২১
————————————
প্রেমের আগুন
জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব

৪+৪/৪+২

প্রেমের আগুন যার মনেতে
অল্প অল্প জ্বলে,
সেজন সফল মানব কূলে
এই না ধরার তলে।

জীবে সেবা যেজন করে
মুক্ত মনে মনে,
সতত ভাবে সে সব কথা
নিত্য ক্ষণে ক্ষণে।

ভালোবেসে ধরা বুকে
বিভোর থাকে তবে,
ক্যামন করে করবে সেবা
এই না নিখিল ভবে।

যুগল বন্দী জীবন মুখে
জীবে সেবায় সুখী,
সেবায় ব্যর্থ সেজন হলো
ধরা বুকে দুখী।

জীবে সেবা পরম ধর্ম
করে যেজন সেবা,
সেবা করে সুখে কাটুক
দুঃখ চাইবে কেবা।

রচনাকালঃ
৩০/০৭/২০২১

বিলাসিতা, মানব তুমি

বিলাসিতা
– জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
৪+৪/৪+২

অর্থের তরে জীবন যাদের
বিলাসিতার স্বভাব,
অর্থ কড়ি মাঝে তাহার
বিবেক বোধের অভাব।

বিলাসিতার নামান্তরে
জীবন করে পারি,
নানা পাপে পাপে তরে
আখের হবে ভারি।

মিতব্যয়ী হলে পরে
ভালো হবে তবে,
সুখ উল্লাসে দুঃখ কাহন
আসবে তোমার যবে।

বিবেক জাগাও বোঝে তবে
ভালো মন্দের তরে
কুক্ষিগত করে না আর
অন্যের সম্পদ ঘরে।

মনুষ্যত্ব বৃদ্ধির জন্য
মেশো ভালোর সাথে,
একলা বসে ভাবো তুমি
এই না গভীর রাতে।

রচনাকালঃ
২৯/০৭/২০২১
——————————–
মানব তুমি
জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব

৪+৪/৪+১

শ্রেষ্ঠ জাতি মানব তুমি
সৃষ্টিকর্তার দান,
যেমন করে রক্ষিও হোক
তুমি তোমার মান।

মানের চেয়ে দামী নয়তো
এই অবনীর প্রাণ,
মান না থাকলে যতই করো
সপ্ত হর্ষে গান।

দাম দেবে না অবনীর কেউ
মান নাই রে ভাই যার,
কথায় কথায় অবহেলা
করবে সবে তার।

সপ্ত রাজার ধনের চেয়ে
বেশি মানের দাম,
থাকুক যত ধন সম্পদ রে
হবে না কো কাম।

অবনীর বুক সকল কিছু
অর্জন করা যাই,
কভু কোথাও মানের বাজার
আছে কিরে নাই।

রচনাকালঃ
২৯/০৭/২০২১

বেকার জীবন, রঙ্গভঙ্গ

বেকার জীবন
– জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
মাত্রা বৃত্ত ছন্দ ৬+৬/৬+২

শিখে লেখাপড়া খেয়েছি যে ধরা
বেকার জীবন আজ,
ঘুরি পথে পথে জীবনের রথে
নাহি মেলে কোনো কাজ।

বেকার যে প্রাণ কষ্টের
সতত করতে হায়,
পরিজন নিয়ে কাঁদে মোর হিয়ে
খাবার নাহি যে পায়।

শিক্ষিত হয়ে সকলের তয়ে
হয়ে গেছি তবে বোঝা,
যুগল বন্দী জীবনে ফন্দি
চলা নাহি ভাই সোজা।

কাজের দরুন জীবনে করুন
মেলে নারে ভালো জুড়ি,
মাতাপিতা বলে এরূপ তো চলে
সদা করো ঘোরা ঘুরি।

নাহি সুখ আর শান্তি আবার
কিভাবে চাও যে তবে,
কাজ ছাড়া কেহ করো নারে স্নেহ
এই না জীবন ভবে।

কাজ দিয়ে তাই ন্যায় নারে ভাই
করিবে জীবনে ভুল,
বাগানের ফুলে অলি দুলে দুলে
সঠিক পথেই মূল।

রচনাকালঃ
২৮/০৭/২০২১
————————————-
রঙ্গভঙ্গ
জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
৪+৪/৪+৪

আমার বাড়ি কাঁচের চুড়ি
আছে তবে ভূরি ভূরি
হয়ে গেছে কালকে চুরি
তা নিয়েছে কানা বুড়ি।

চুরি করা বুড়ির পেশা
রাতে বেলা করে নেশা
অবাধ তাহার মেলামেশা
পর জিনিসের প্রতি রেষা।

চুরি করে বাড়ি করে
নিজের মতো পথটি ধরে
নিজের স্বার্থে নিজের তরে
পাপে পাপে গেছে ভরে।

গ্রামের ভিতর সেরা বাড়ি
চুরি করে বড় গাড়ি
আছে তাহার চাঁদে হাঁড়ি
মিষ্টি কথা মুখে তারি।

চুরি করে জীবন চলে
নানা খেলার ইচ্ছে ছলে
বাড়ি আনে নানা ফলে
মিথ্যা আশা করে বলে।

রচনাকালঃ
২৮/০৭/২০২১

মেঘ জমেছে, মোটা বউ

মেঘ জমেছে
– জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
৪+৪/৪+৪/৪+২ স্বরবৃত্ত ছন্দ

জমেছে মেঘ আকাশ প্রাণে
ঘ্যাঙরঘ্যাঙর ব্যাঙের গানে
মনে লাগে ভালো,
দেয়া ডাকে হঠাৎ করে
থেকে থেকে বৃষ্টি পড়ে
নীল আকাশে কালো।

বাবুইপাখির বাসা দোলে
কৃষক ছেলে পথটি ভোলে
পায়না বাড়ি খুঁজে,
জুই চামেলি ফুল যে ফোটে
মধুর জন্য অলি ছোটে
আঁখি দু’টি বুঁজে।

আউশের ক্ষেত জলের তলে
কৃষকের চোখ ওই ছলছলে
বিষাদগ্রস্ত মনে,
করিবে কি ভেবে চলে
বর্ষাকালে নানা ফলে
থাকে ফলজ বনে।

তমাল তরু নতুন সাজে
নীল আকাশে মাদল বাজে
মন যে থাকে ভয়ে,
কখন আসবে হঠাৎ বৃষ্টি
ধরার বুকে অনাসৃষ্টি
হবে জিনিস ক্ষয়ে।

রচনাকালঃ
২৭/০৭/২০২১
————————–
মোটা বউ
জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
৪+৪+৪+২ স্বরবৃত্ত ছন্দ

বউটি তাহার অতি মোটা জায়গা হয় না খাটে
শোবার কালে বিবাদ লাগে নিত্য দিনের রাতে।
ছোট্ট তাদের খাটটি রে ভাই আঁটবে পাতলা মানুষ,
কে যেন রে বাতাস দিয়ে ফুলে রাখে ফানুস।

ঘুরে শোবার কালে স্বামী খাটটি থেকে পড়ে
ঘুমের ঘোরে হঠাৎ করে খাটটি চেপে ধরে।
মোটা হওয়া অতি জ্বালা সব কাজেতে কষ্ট,
শোবার কালে রাতে বেলা হয় যে ঘুম ভাই নষ্ট।

মোটা মানুষ অনেক লোকে ভালো লাগে নারে
অবজ্ঞা নয় মানুষ সেযে ভালোবাসো তারে।
সব সময়ে বেশি খাবার নিজে নিয়ে খেতে
হাতির মতো হেলে দুলে সদা চলে যেতে।

ছোট্ট ঘরে থাকা খাওয়া স্ত্রীর কষ্ট জ্বালা
কে দিলে রে দুখের ঘরে সুখের একটু আলা।
শোবার কালে পুরো খাটটি তাহার লাগে তবে
এমন মোটা মানুষ যে ভাই দেখি নি রে ভবে।

সুখের দুখে মোটা মানুষ সদা ভেবে চলে
কখন কি যে হয়ে যাবে নাহি আসে বলে।
সবাই মানুষ চিকন মোটা ভেদাভেদ নাই তোরে
সুখে দুখে সব সময়ে ধরো হাতটি জোরে।

রচনাকালঃ
২৩/০৭/২০২১

শ্রেষ্ঠ জাতি, শিক্ষিত হও

শ্রেষ্ঠ জাতি
– জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
৪+৪/৪+৪/৪+২

শ্রেষ্ঠ জাতি মানব মোরা
হিংসা দ্বেষে মনটা ভোরা
তাতে হয় কি ভালো,
পাপে পাপে ধরার বুকে
মনে করে আছে সুখে
তাদের জীবন কালো।

হিংসা দ্বেষে মানব কূলে
জীর্ণ শীর্ণ পাপের ভূলে
অনুতাপে তেজে,
কারো কভু পাপের কথা
মন জাগে কি যথাতথা
অশ্রু গঙ্গায় ভেজে।

হিংসা দ্বেষ ভাই নাহি করো
সত্যের পথটি আঁকড়ে ধরো
ভ্রাতৃত্বের ওই বন্ধন,
আল্লাহ নবীর আদর্শ মেনে
চলো তুমি সবি জেনে
অনুতাপে নন্দন।

রচনাকালঃ
২৬/০৭/২০২১
—————————
শিক্ষিত হও
জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
৪+৪/৪+২ স্বরবৃত্ত ছন্দ

শিক্ষিত হও খোকা সোনা
দূর করো সব কালো,
আঁধার ভেদে ছিনে আনে
ধরার বুকে আলো।

অজ্ঞতার ওই কালো ছায়া
দূর করিবে তুমি,
মাতৃ সম তোমার খোকা
মাতৃ জনম ভূমি।

জাগাবে হে নবীন সমাজ
দেখাবে আলোর মেলা,
যা দেখে সব খেলবে সদা
নতুন আলোর খেলা।

পৃথিবীর সব জরাজীর্ণ
কাটাবে যে খোকা,
বৃথা সময় নষ্ট করলে
হবে তুমি বোকা।

নতুন নতুন স্বপ্ন গুলো
নিবে তুমি কিনে,
তোমার কাছে আসবে সবে
স্বপ্ন কিনতে দিনে।

রচনাকালঃ
২৭/০৭/২০২১

জীবনের একটি সময়, গানের পাখি

জীবনের একটি সময়
– জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
৪+৪/৪+২

শৈশবকালে অনেক মজা
নানা রকম খেলা,
দেখে সবার দিন ফুরাতো
প্রজাপতির মেলা।

ইচ্ছে মতো দৌড়ে চলে
সোনালী সেই দিনে,
স্মৃতির পাতায় নেমন্তন্ন
শুধু মনের ঋণে।

ঘাস ফড়িংয়ের পিছু ছুটে
গেছে কত বেলা,
পড়ার সময় করেছি যে
কত শত হেলা।

লুকিয়ে ওই পাখি ছানা
ধরেছি যে কতো,
সবার মাঝে আমি হলাম
বড় নেতার মতো।

ইচ্ছে খুশি পাশের বাড়ির
ফুল তুলেছে আমি,
শুধু দিতো বাকা আমায়
বাড়িতে থাকা মামি।

রচনাকালঃ
২৬/০৭/২০২১
—————————
গানের পাখি
জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
৪+৪/৪+২ স্বরবৃত্ত ছন্দ

ময়না পাখির কাছে আমার
গান শেখারি আশা,
আমার কাছে সুন্দর লাগে
ময়না পাখির ভাষা।

ময়না পাখির গানটি ভালো
হৃদয় লাগে ভালো ,
ময়না পাখির পালক গুলো
ভীষণ ভীষণ কালো।

ধরার বুকে অনেক পাখি
আছে তবে ভরা,
তাদের মধ্যে ময়না পাখি
বলে শুধু ছড়া।

দোয়েল কোয়েল ময়না ফিঙে
আছে নানা পাখি,
তাদের মধ্যে আপন করে
ময়না টাকে রাখি।

ঠোঁটের আগায় হলুদ আভা
সুন্দর লাগে তাতে,
সারাদিনে আহার করে
ঘরে ফিরে রাতে।

রচনাকালঃ
২৫/০৭/২০২১

জাগো নবীন, বিদায়কালে

জাগো নবীন
– জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
মাত্রাবৃত্ত ছন্দঃ ৬+৬/৬+২

বিবেক জাগাও নবীন সমাজ
মুক্তির পথ ধরো,
মনের আবেগ কলুষতা সব
দূর করো দূর করো।

তোমরা জাগলে পৃথিবীর পথে
হানা দেবে না তো কেউ,
তোমাদের শ্রম তোমাদের বল
রূখে দেবে সব ঢেউ।

তোমাদের কথা তোমাদের কাজে
পৃথিবীর হবে জয়,
তোমরা সবাই বসে থাকলে গো
হবে যেন সব ক্ষয়।

তোমাদের শ্রম তোমাদের জয়
সবচেয়ে বেশি ভালো,
পৃথিবীতে যারা আলসেমি করে
তাদের জীবন কালো।

বিবেক জাগাও নবীন সমাজ
দায়িত্বটা তো নাও,
মনের সকল কলুষতা দূর
সবে মিলে মিশে যাও।

রচনাকালঃ
২৫/০৭/২০২১
————————————————-
বিদায়কালে
জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
৫+৫/৫+২

বিদায়বেলা স্বামীর কোলে
মাথা রাখতে চাই
সুখের সাথী দুখের সাথী
তিনি ছিলেন তাই।

স্বামীর কোলে মরণে সুখ
অন্য কোথা নাই,
বিধির কাছে মোর মিনতি
এমন যেন পাই।

স্বামীই হলো মাথার তাজ
সব সুখের মূল,
জীবন মুখে জীবনে সব
ধরে দিতেন ভূল।

সাত জনমে বাঁধনে বাধা
স্বামীর সাথে মোর,
তাহার সাথে কাটুক গানে
সাত জনমে ভোর।

শেষে বিদায় নেবো যেদিন
আমি পৃথিবী থেকে,
মরণ তুমি দিয়ো আমায়
স্বামীর কোলে রেখে।

রচনাকালঃ
২৩/০৭/২০২১