জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব এর সকল পোস্ট

জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব সম্পর্কে

জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার নলছিয়া নামক গ্রামে ১০ ই জুন ২০০১ সালে জন্ম গ্রহণ করেন। তার লেখা গুলো বাস্তব ধর্মীয়। লেখা তার নেশা। সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে কবিতা লিখতে। * চরম মুর্খ সেই যে শিক্ষা অর্জন করে নিজের মাতৃভাষা শুদ্ধ ভাবে বলতে পারে না । * আমার কাছে আনুষ্ঠানিক শিক্ষা পদ্ধতি থেকে অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা পদ্ধতি শ্রেষ্ঠ।

রতির ক্ষতি

পরম পিতা রতির মিতা
করছে ক্ষতি সবে
আপন পরে সকলে মরে
বাড়লে অতি তবে।

জীবন খসে খারাপ রসে
হয়ে যে জ্ঞান হারা
খুশিতে যারা আত্মাহারা
প্রাণ দেয় যে সারা।

রতির যাদু শিখায় সাধু
প্রেমের কথা বলে
ভবের হাঁটে তুমি খাটে
শিক্ষা নিয়ে চলে।

সবার প্রাণে রতির টানে
আঁধার নেমে আসে
রতির খেলা রাতের বেলা
নর নারীরা ভাসে।

রতি দমন করো এমন
নইলে মরে যাবে
জীবন রথে সঠিক পথে
শাস্তি তবে পাবে।

রচনাকালঃ
০৩/০৭/২০২১
৫+৫/৫+২

গাঁয়ের বধু

গাঁয়ের বধু হেলে দুলে
পুকুর ঘাটে যায়,
ঝুমুর ঝুমুর শব্দ তাহার
দিয়ে নুপুর পায়।

নুপুরের ওই দারুণ ছন্দ
পথিক ভোলে পথ,
গায়ের বধু সুন্দর দেখায়
দিলে নাকে নথ।

নুপুর পায়ে হেঁটে চলে
গাঁয়ের বধু ভাই,
কলসি কাঁখে নিয়ে যখন
জল আনিতে যাই।

মিষ্টি মুখের মিষ্টি কথা
পাখির মতো ডাক,
পিছন থেকে কে দিলো রে
মায়া বলে হাঁক।

যেয়ে দেখে পুকুর ঘাটে
পড়ে তাহার জা,
কি জানি কি টান দিয়েছে
তাহার দুটি পা।

রচনাকালঃ
১৩/০৭/২০২১
৪+৪/৪+১ স্বরবৃত্ত ছন্দ

বারিধারা

৮+৭/৬ (বিশাখ পয়রা)

আকাশটা ঘন মেঘে /ডেকে আছে কভু রে
ডেকে আছে কভু,
নদীনালা খালে বিলে / জলে থৈথৈ তবু রে
জলে থৈথৈ তবু।

বারিধারা অবিরাম / চলে শুধু চলে রে
চলে শুধু চলে,
কদম কেয়া ফুলের / বর্ষা রানি বলে রে
বর্ষা রানি বলে।

দেয়ার ডাকে সবাই / ঘরে মধ্যে থাকে রে
ঘরে মধ্যে থাকে,
ময়ূর নাচের সদা / পুচ্ছ লুকে রাখে রে
পুচ্ছ লুকে রাখে।

বৃষ্টির দিনে ব্যাঙের/ মনোরম হাঁকে রে
মনোরম হাঁকে,
ঘ্যাঙর ঘ্যাঙর ব্যাঙে / মন খুলে ডাকে রে
মন খুলে ডাকে।

কচুরিপানা জলে /জলে সদা ভাসে রে
জলে সদা ভাসে,
নদীনালা খালে বিলে / নানা দব্য আসে রে
নানা দব্য আসে।

রচনাকালঃ
১২/০৭/২০২১

বর্ষার ছন্দ

৪+৪/৪+২

মাদল বাজে মনের ভিতর
ওই না বর্ষার ছন্দে
আশেপাশে ভরে গেছে
কদম কেয়ার গন্ধে।

বৃষ্টির শব্দ জল কলতান
দারুণ ভালো লাগে
বর্ষার আরো কত ফুল ওই
ফুটে আছে বাগে।

জেলে নেমে গোসল করা
নৌকা নিয়ে ঘোরা
কদম গাছে কেয়া গাছে
ফুল যে জোড়া জোড়া।

বর্ষাকালে নদের জলে
নানান জিনিস ভাসে,
দূরের কোনো স্থানে থেকে
মাঝি তেরে আসে ।

নতুন জলে নতুন মাছ ওই
করে শুধু খেলা,
মন খুশিতে সবাই ভাসে
নতুন নতুন ভেলা।

রচনাকালঃ
১২/০৭/২০২১

আচরণ

৪+৪/৪+২

পিতা মাতার বিশৃঙ্খলায়
কাঁপে শিশু ভয়ে,
বিশৃঙ্খলার ভেতর থেকে
সব জ্বালা যায় সয়ে।

কোমল মনে আঘাত পায়’রে
ছোট্ট একটা তবে
তাদের সাথে ভালো কথা
বলতে তবে হবে ।

নইলে তারা বিপথ যাবে
হবে না’কো ভালো,
জীবন থেকে মুছে যাবে
ধরার সকল আলো।

ছেলেমেয়ের সামনে রে ভাই
রীতি ভালো রাখো
পরিবারের সবে মিলে
সুখে শান্তি থাকো।

পিতা মাতার আচরণে
সন্তান পায় ভাই কষ্ট,
একটি ভুলের জন্য হয়’রে
কয়টা জীবন নষ্ট।

রচনাকালঃ
১০/০৭/২০২১

লকডাউন

৪+৪/৪+২ স্বরবৃত্ত ছন্দ

লকডাউনের জন্য দেশে
অভাব এলো নেমে
গরিব লোকের কষ্ট কি ভাই
থাকবে শুধু থেমে।

লকডাউনের খারাপ সময়
জীবনে ভাই কষ্ট,
করোনার যে পুরো মৃন্ময়
সকল স্বপ্ন নষ্ট।

গৃহবন্দী জীবন নিয়ে
সদা বসে ঘরে,
অসহ্য যে সময় হিয়ে
থাকি শুধু পড়ে।

ঘরে বসে একলা মনে
বিষন্ন মন থাকে,
করোনার ওই প্রতিক্ষণে
সবে দূরে রাখে।

লকডাউনের দুখের কথা
বলা যায় না তবে,
একলা বসে প্রাণের ব্যথা
কাকে বলবো কবে।

রচনাকালঃ
০৫/০৭/২০২১

গোলাপ কানন

স্বরবৃত্ত ছন্দঃ ৪+৪/৪+২
মাত্রাবৃত্ত ছন্দঃ ৫+৫/৫+২

ফুলের রাণী ফুল কুমারী
গোলাপ বাগে ফোটে,
সৌরভ পেয়ে ভ্রমর সবে
গুনগুনিয়ে ছোটে।

গোলাপ আছে গোলাপ বাগে
কত রকম ছবি,
গোলাপ দেখে যুগে যুগেই
কবিতা লেখে কবি।

গোলাপ গাছে প্রচুর কাটা
মালিই শুধু জানে,
মধু খেয়েই ভ্রমর ঘুরে
ফুলের পানে পানে।

ফুলের প্রেমে অলির গানে
মুগ্ধ করে সবে,
ফুলের কালে নতুন রুপে
বিশ্ব সাজে তবে।

ভালোবাসা যাচনা হয়
গোলাপ ফুল দিয়ে,
ফুলের বাগে নানা ফুলের
কান্না করে হিয়ে।

রচনাকালঃ
১০/০৭/২০২১

নিয়ম মানো

৪+৪/৪+২ স্বরবৃত্ত ছন্দ

মৃত্যুর খেলা দেশটা জুড়ে
প্রতিদিনে বাড়ছে,
নিয়ম কানুন নাহি মানে
মৃত্যুর কাছে হারছে।

জনমনে নেতিবাচক
লেগে আছে কথা,
এমন কথা যায় না বলা
ওই না যথা তথা।

দেশের আইন ভাঙে যারা
মিত্র নয়তো তারা,
আইন ভাঙার সাজা পায় যে
ভাঙে আইন যারা।

করোনার ওই সময় তবে
আতঙ্কে সব আছে,
কেমন করে ভাইরাস থেকে
ধরার মানুষ বাঁচে।

নিয়ম কানুন মেনে চলো
দেশের মানুষ সবে,
ভয়াল কালো ভাইরাস এসে
প্রাণটা কাড়ে তবে।

রচনাকালঃ
০৫/০৮/২০২১

চিন্তা ভাবনা

৪+৪/৪+২

চিন্তা ভাবনা বৃদ্ধি করো
জীবন হবেই ভালো,
সৃষ্টির সেবা করো তবে
জ্বলবে মনে আলো।

ভালো চিন্তা ভাবনা গুলো
মনের ভিতর রাখো,
জনম জনম তুমি তবে
আপন সুখে থাকো।

প্রভুর সৃষ্টি প্রেম মোহনায়
রাখো মনটা ভরে,
সৃষ্টির সেবা করে তুমি
চলো ভবের তরে।

গভীর চিন্তা ভাবনার ফলটা
হয় যে সবার সেরা,
অন্য কিছু চেয়ে তবে
শ্রম দিয়ে তা ঘেরা।

এলোমেলো চিন্তা ভাবনায়
যাই না কিছু করা,
করতে গেলে সেজন তবে
খাবেই খাবেই ধরা।

রচনাকালঃ
০৫/০৭/২০২১

আনন্দের সময়

৪+৪/৪+২ স্বরবৃত্ত ছন্দ

মন ছুটে যায় – শৈশবের ওই
আমার ছোট্ট গায়,
সেথায় আমি – ঘুরিফিরি
চড়ে ভাসি নায়।

শৈশবের ওই – কত স্মৃতি
আজি মনে ভাই,
এমন মধুর – সময় তবে
ধরার বুকে নাই।

ইচ্ছে খুশি – ঘোরাঘুরি
মন অভিলাষ খেল,
জীবনের ওই – আনন্দ আর
নানা রকম ভেল।

নদের জলে – তরী নিয়ে
তুলি শাপলা ফুল,
ইচ্ছে খুশি – মন আনন্দে
করছি কত ভুল।

ঘাস ফড়িংয়ের – পিছু ছুটে
গেছি কত দিন,
নদের জলে তরী নিয়ে
ধরছি প্রচুর মীন।

রচনাকালঃ
০৩/০৮/২০২১

গরিব লোক

গরিব যারা দুখী তারা
থাকে পোশাক বিনে,
পকেট ফাঁকা নাহি টাকা
মরে পেটের ঋণে।

শুধু কষ্ট স্বপ্ন নষ্ট
এই না জীবন তরে,
খেটে খেটে জীবন মেটে
শুধু জীবন ভরে।

জীবন পথে রথে রথে
আসে বাঁধা কত,
খাদ্য খাওয়া নাহি পাওয়া
এই জীবনে শত।

গরিব ঘরে জীবন তরে
সুখ না মিলে কভু,
একটু শান্তি শুধু ভ্রান্তি
মিলে না তো তবু।

হাসি তো নাই কষ্ট রে ভাই
এই না জীবন নদে,
দুঃখ আসে কষ্টে ভাসে
জীবন পদে পদে।

রচনাকালঃ
০২/০৮/২০২১

ডিপ্রেশন

অরিত্রিক ছন্দ ৮+৬ (অক্ষর বৃত্ত)

মনের সকল কথা বলি কার কাছে
বলা যাবে যথাতথা নেই লোক পাছে।
সদা হতাশায় ভুগি নাহি প্রেমে নারী
কার মনে চলি জুগি থাকে মন ভারী।
স্থান পায় না’তো কভু কারো মনে আমি
আমার কথাটা তবু জানে অন্তর্যামী।
এত ব্যথা মনে নিয়ে চলি দীর্ঘ পথে
ব্যথা মনে গেলে দিয়ে দুখে প্রাণে রথে।

ক্যামনে গো পাবো মুক্তি বিষন্নতা থেকে
আছে কি এমন শক্তি মোরে রাখে বেঁকে।
আমি একাকিত্ব বোধ ঘুচাতে যে চাই
ম্লান কে করিবে রোধ সেজন তো নাই।

রচনাকালঃ
০১/০৮/২০২১

জগৎ সংসার

৬+৬/৬+২

ভবের মেলায় নানান খেলায়
বিভোর আমার প্রাণ,
সকাল দুপুর সুরের নূপুর
মন ছুয়ে যায় গান।

বেশুমার পাপে হৃদয়টা কাঁপে
বসে নাকো কাজে মন,
ভেবে নাহি পাই কি করব ভাই
তাহা ভাবি প্রতি ক্ষণ।

মোর আঁখি দুটি সদা আছে ফুটি
অঝোরে ঝরছে জল,
পাপে বোঝা বড় করে জড়সড়
নেই ভালো কোনো ফল।

চলি পথ দিয়ে ভেবে কাঁদে হিয়ে
কিরূপ ধরার খেলা,
শত প্রাণে হাসি তার সাথে বাঁশি
আনন্দ খুশি মেলা।

ধরা মোহে পড়ে ভুল পথ ধরে
পারি দিয়ে ক্ষণ কাল,
আজ মনে জাগে প্রাণ মূল ভাগে
মোর সব ভুলভাল।

রচনাকালঃ
০২/০৮/২০২১

প্রবাস জীবন

৪+৪/৪+২

প্রবাস জীবন কষ্টের জীবন
সকলে ভাই জানে,
আপনজনকে দূরে থাকে
কষ্ট লাগে প্রাণে।

প্রবাস জীবন মায়ের কথা
বেশি পড়ে মনে,
মায়ের কথা দিবানিশি
ভাবি ক্ষণে ক্ষণে।

মায়ের সাথে হাসি মজা
হয় না ক’দিন ধরে,
একলা আমি পড়ে আছি
প্রবাস জীবন তরে।

স্বজনের ওই কথা মনে
আঁখি ভেজে জলে,
তাদের আদর তাদের সোহাগ
স্মৃতির পাতার তলে।

ইচ্ছে করে তাদের কাছে
ইচ্ছে খুশি বসি,
তাদের কাছে গল্প শুনবো
তারা রবি শশী।

রচনাকালঃ
৩১/০৭/২০২১

জীবন তরী

৪+৪/৪+১ স্বরবৃত্ত ছন্দ

ভবের মাঝে মানুষ হয়ে
করছি কত ভুল,
দুখের তরে জীবন মাঝে
পায় না সুখের কূল।

ঘাত প্রতিঘাত জীবন মুখে
আসবে কবে সুখ,
নাকি জীবন তরী-ভরা
আছে দুখ আর দুখ।

দুখের দিনে সুখে তরী
ভাসবে কবে মোর,
জীবন নদীর কালো কেটে
আসবে কবে ভোর।

এমন করে জীবন রথে
যাই না চলা ভাই,
জীবন থেকে কঠিন জিনিস
ধরার বুকে নাই।

সুখের চেয়ে দুখের ভেলা
শুধু চলে যাই,
সুখের খোঁজে ঘুরে ঘুরে
সুখ যে নাহি পাই।

রচনাকালঃ
০২/০৮/২০২১