জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব এর সকল পোস্ট

জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব সম্পর্কে

জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার নলছিয়া নামক গ্রামে ১০ ই জুন ২০০১ সালে জন্ম গ্রহণ করেন। তার লেখা গুলো বাস্তব ধর্মীয়। লেখা তার নেশা। সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে কবিতা লিখতে। * চরম মুর্খ সেই যে শিক্ষা অর্জন করে নিজের মাতৃভাষা শুদ্ধ ভাবে বলতে পারে না । * আমার কাছে আনুষ্ঠানিক শিক্ষা পদ্ধতি থেকে অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা পদ্ধতি শ্রেষ্ঠ।

স্বার্থপর ভুবন, আপন ঘর

স্বার্থপর ভুবন
– জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
৫+৫/৫+২

ধরার বুকে স্বার্থছাড়া
কাজ করে না কেউ,
নিজ স্বার্থ কুক্ষিগত
করতে তোলে ঢেউ।

নিজ স্বার্থ হাসিল করে
সকল জ্ঞান ভুলে,
ধরার বুকে চলেন তিনি
বুকটি তার ফুলে।

স্বার্থ নিজে করার তরে
ভোলে আপন পর,
তখন তিনি রাজার হালে
বাঁধেন বড় ঘর।

স্বার্থপর এ দুনিয়াতে
সুখে মেলে না ভাই,
সুখের পথে খুঁজে যে মরি
আমি অধম তাই ।

কোন পথতে সুখটি পাবো
খুঁজি মরি রে তবে,
আসলেই কি সুখ বলেই
আছে কিছু কি ভবে।

রচনাকালঃ
২৩/০৭/২০২১
——————————–
আপন ঘর
জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
৪+৪/৪+১ স্বরবৃত্ত ছন্দ

আপন কুটির ছোটো হলে
আপনজনে রয়,
মন আনন্দে নেচে গেয়ে
থাকে নাকো ভয়।

আপন কুটির খড়ের ছাওনি
রয়েছে মোর সব,
সেথায় আছে স্বাধীনতা
নাহি আছে ঢপ।

ইট পাথরের দালান দিলাম
সুখ যে তাতে নাই,
এমন প্রাসাদ থাকার চেয়ে
নাহি ভালো ভাই।

চড়ুই পাখির মতো পরের
ঘরে থাকা সুখ,
বাবুইপাখির আপন বাসায়
সহ্য করে দুখ।

আপন হাতের তৈরি করা
খড়ের ছাওনি ঘর,
ভালোবাসায় পরিপূর্ণ
নাহি কেহ পর।

রচনাকালঃ
২৫/০৭/২০২১

অবিরাম বারিধারা, তরাতে তরী

অবিরাম বারিধারা
– জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
৪+৪/৪+৪/৪+২ স্বরবৃত্ত ছন্দ ত্রিপদী

গগনজুড়ে মেঘের ভেলা
সারাবেলা করে খেলা
হঠাৎ কভু ঝরছে,
চাষা ভূষার পেটটি ফাঁকা
আয়ের উৎস নাহি থাকা
পেটের ঋণে মরছে।

বর্ষাকালে নদের জলে
জলের শব্দ ওই কলকলে
শুনে লাগে ভালো,
কদম কেয়া ফুলে ফুলে
জলে থৈথৈ দু দু কূলে
মেঘটা ভীষণ কালো।

গানে ভরা সবার মনে
ময়ূর নাচে ক্ষণে ক্ষণে
কচুরি যে ভাসে,
কলমি ফুলে গন্ধেভরা
মনে ভীষণ কষ্টে ধরা
দলে ছোটে হাঁসে।

শাপলা শালুক বিলে ঝিলে
থলে ভরে তুলে নিলে
দারুণ লাগে দেখে,
বাবুইপাখির সুন্দর বাসা
মনে তাহার বহু আশা
বৃষ্টির জলটা মেখে।

রচনাকালঃ
২৪/০৭/২০২১
——————————————–
তরাতে তরী
জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
৪+৪/৪+২ স্বরবৃত্ত ছন্দ

যাবি কে আয় পাল তোলা নায়
ফুলজোড়র নদীর দেশে,
মন মোহিনী প্রেম কাহিনী
ভাসবি সুখে শেষে।

নাওয়া খাওয়া নাহি পাওয়া
নদীর জলে তরী,
শাপলা ফুলে শালুক তুলে
আঁচল গেছে ভরি।

ফুলজোড় নদী আমরা যদি
না ভেসে ওই চলি,
হাওয়ায় দোলে মনটা খোলে
শুধু গানই বলি।

দলে ভাসে নাহি আসে
ওই না নদীর তীরে
নদীর কাছে মানুষ আছে
আপনজন পায় ফিরে।

মনের আশা শুধুই বাসা
একটুখানি ঘোরা,
নাও যে খানি প্রেম যে জানি
মনে মনে জোড়া।

রচনাকালঃ
২৫/০৭/২০২১

আমার দেশ, কর্মের জন্য

আমার দেশ
– জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
অক্ষরবৃত্ত ছন্দ ৮+৬

প্রজাপতি ধেয়ে চলে পারিজাত ফুলে
পরাগায়ন করাবে সব আশা ভুলে,
সবুজ শ্যামল ছায়া মনে বহু মায়া
নদীর জলে ভাসতে দেখি মাছে কায়া।

কি সুন্দর যে আমার জন্মভূমি দেশ
যার রূপের শোভার কভু নেই শেষ,
গাছে গাছে ফুলে ফলে পাখি গায় কত
নদী জলে টলমল স্রোত থাকে শত।

লাঙ্গল জোয়াল কাঁধে চাষি চলে মাঠে
তরাতে তরী ভাসে যে মাঝি আছে ঘাটে,
বাবুইপাখি যে ভালো তৈরি করে বাসা
সাথীকে কাছে আনার জন্য মনে আশা।

কামার কুমার জেলে চাষার শ্রমের ফলে
পৃথিবী হয়েছে তবে সুন্দর নির্মলে।
সকালে দোয়েল ডাকে ভাঙে সবে ঘুম
চাকমা, গারোরা করে চাষাবাদ জুম।

বসন্তের আগমনে ধরা নব সাজে
বজ্রপাতের শব্দটা মনে ঢোল বাজে,
শরত হেমন্ত শীতে নানা রকম খেলা
বৈশাখ মাসে লাগেন বহু স্থানে মেলা।

আমার দেশের গ্রাম ছোটো ছোটো ঘর
সবে থাকে মিলেমিশে নাহি কেহ পর,
একে অপরের সুখে দুখে পাশে থাকে
নিজের স্বার্থে বিলীন অন্য খুশি রাখে।

রচনাকালঃ
২৪/০৭/২০২১
————————————————–
কর্মের জন্য
জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
স্বরবৃত্ত ছন্দ ৪+৪/৪+১

থেকো না আর ঘরের কোণে
কাজে লাগাও মন,
কাজে করলে পাবে তুমি
গুপ্ত ওই না ধন।

যত থাকবে তন্দ্রা ঘোরে
কেটে যাবে দিন,
বসে বসে বাড়বে তোমার
নিত্য দিনে ঋণ।

আলসেমি না করে তবে
কাজের খোঁজে চল
যতই হোক সে কাজটা কঠিন
পাবে সুন্দর ফল।

মুক্তা আনতে সাগর জলে
দিতে হবে ডুব,
তা ছাড়া কি মুক্তা পাবে
থাক না যতই রূপ।

ভালো কাজে ভালো ফলে
আশায় থাকে মন,
বসে আর না কাজই খোঁজো
ওই না সারাক্ষণ।

রচনাকালঃ
২৪/০৭/২০২১

ভালোবাসা, ডাকপিয়ন ও চিঠি

ভালোবাসা
– জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
৪+৪+৪+২
৪+৪
৪+৪+৪+২ স্বরবৃত্ত ছন্দ

জীবন বাঁচে ভালোবাসা ভালো লাগা তরে
ভালোবাসা বিহীন জীবন ধুঁকে ধুঁকে মরে।
ভালোবাসা পরম নদী
নিঃস্বার্থ হয় গো তা যদি।
ভালোবাসা দিলে মেলে ভালোবাসা তবে
ভালোবেসে সৃষ্টিকর্তা বানিয়েছে সবে।

ধরার বুকে জীবে সেবা জীবে দয়া দিলে
ধরার বুকে থেকে প্রভুর দেখা তবে মিলে।
ভালোবাসা দিলে আপন
তাদের সাথে জীবন যাপন।
ভালোবাসার পরশ পেলে প্রাণের সঞ্চার আসে
ভালোবাসা নেই সেজনই দুখের ভেলায় ভাসে।

গাছের সঙ্গে পাতার প্রেমে অলির সঙ্গে মধুর
সখীর সঙ্গে সখার প্রেমে বরের সঙ্গে বধুর।
নদীর সঙ্গে সাগর প্রেমে
পলি সঙ্গে নদীর হেমে।
সব জিনিসে ভালোবাসার লাগে আছে ছবি
ভালোবাসা কেন্দ্র করে কাব্য রচে কবি।

রচনাকালঃ
২৪/০৭/২০২১
————————————————
ডাকপিয়ন ও চিঠি
জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
স্বরবৃত্ত ছন্দ- ৪+৪/৪+১

মুঠোফোনের প্রেমে পড়ে
চিঠির চলন নাই,
বসে বসে ডাক পিয়নে
মাগনা হাওয়া খাই।

আগের যুগে চিঠির চলন
নেই তুলনা তার,
ক্ষুদে বার্তার জন্য তবে
দেয় না চিঠি আর।

সুন্দর ভাষা দিয়ে রে ওই
চিঠি লেখা হয়,
ডাক পিয়নই ডাক ঘরেতে
চিঠিবিহীন রয়।

মুঠোফোনে কথা বলা
মুঠোফোনই সব,
বর্তমান ওই চিঠি খানা
রহম করো রব।

আগের যুগে চিঠি দিয়ে
হয়তো সকল কাজ,
এখন চিঠি দিতে গেলে
লাজ লাগে ভাই লাজ।

রচনাকালঃ
২৩/০৭/২০২১

নতুন দিবস, কন্যা সন্তান

নতুন দিবস
– জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
অরিত্রিক কবিতা ৮+৬

নব সাজে নব রূপে চেয়ে আছে আমি
বিকেলে আরতি চুপে জানে অন্তর্যামী।
বসন্তের আগমনে অলি ছোটে ফুলে
প্রেমের ব্যথা ফাগুনে মনে দু দু কূলে।
ফুলের সৌরভ মনে দীর্ঘ পথে চলা
নাহি আসে সাথে ক্ষণে কি জানি কি বলা।
প্রেমের পরশ পেয়ে উড়ুউড়ু মন
সদা যায় গান গেয়ে সখী তোমা সন।

প্রেমের আগুন জ্বালে দিল পুড়ে শেষ
জীবন সুখের ফলে ভরা প্রেমে বেশ।
প্রিয়জন কাছে থাকা কি যে লাগে ভালো
জোনাকের আলো রাখা তিমিরেতে জ্বালো।

রচনাকালঃ
২১/০৭/২০২১
——————————
কন্যা সন্তান
জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব

৪+৪/৪+১

বাপের বাড়ি যাবার কালে
খুশি কন্যার মন,
কত কিছু ভাবে সদা
শুধুই ক্ষণে ক্ষণ।

বাপের গৃহে এলে কন্যার
দৃঢ় মনো’বল
স্বামীর গৃহে যাবার কালে
চোখে আসে জল।

সুখে দুখে জীবন তরী
বাপের গৃহে টান,
ঘাত প্রতিঘাত জীবন মুখে
মান আর অভি’মান।

বাপের গৃহে থেকে কন্যার
বেলা গেছে ওই,
স্বামীর গৃহে নেইতো কোথা
প্রাণের প্রিয় সই।

বাপের গৃহে কন্যা সন্তান
থাকে সুখে তাই,
বাপের গৃহে মতো শান্তি
অন্য কোথাও নাই।

বাপের গৃহে কষ্ট করে
থাকে সেথায় মন,
শ্বশুর গৃহের সুখে ভরা
যেমন পদ্ম বন।

রচনাকালঃ
২২/০৭/২০২১

জীবন নদীর ছন্দ, খুলে দাও বিদ্যাপীঠ

জীবন নদীর ছন্দ
– জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
৫+৫/৫+২ মাত্রা বৃত্ত

ছন্দ নিবে বললো নদী
দারুণ কলতান,
ছুটে চলার গতিই পাই
মনের সুখে গান।

নদীর মতো জীবন গতি
যাদের আছে ভাই,
সুখের সাথে দুখের কোনো
সতত জুড়ি নাই।

নদী ছন্দে মন খুশিতে
ভীষণ লাগে ভালো,
স্থির জীবনগুলোয় হলো
তিমির মতো কালো।

জীবনপথে আলোর দিশে
পাই নদীর কাছে,
সুখীজনের সাথেই নদী
ছায়ার মতো আছে।

দারুণ ভাবে ছুটে চলার
নদীর আছে গতি,
জীবন নদে ভাসে যেমন
সুখ দুখের অতি।

রচনাকালঃ
২১/০৭/২০২১
—————————–
খুলে দাও বিদ্যাপীঠ
জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব

৪+৪/৪+২

মাগো তুমি বলতে পারো
স্কুল কবে খুলবে
গুরুর সাথে সবাই মিলে
নানা ছড়া বলবে।

কবে থেকে বন্ধ আছে
ওই না স্কুল কলেজ
তাতে কি মা বৃদ্ধি পাবো
সব শিশুদের নলেজ।

ঘরে বসে সময় কাটে
যাই না কভু বেলা,
একা একা করি শুধু
আমি নিজে খেলা।

কি যে করি ভেবে না পায়
বলো না মা কিছু,
জ্ঞানে গুণে রয়েছি মা
এমনি সবার পিছু।

একটা বছর বসে বসে
সময় গেছে কেটে
করোনার ওই সংক্রমণে
সবাই গেছে টুটে।

রচনাকালঃ
২৭/০৬/২০২১

জীবন কাব্যের ন্যায়, আমার মা

জীবন কাব্যের ন্যায়
– জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
অক্ষর বৃত্ত ৮+৬ (মালঝাঁপ)

করে চাষ বারো মাস ক্ষেতে ঘাস আছে
আমি যাই ক্ষেতে ভাই কাজ নাই পাছে।
গাছপালা ভেঙে ঢালা নদীনালা বন
পূর্ব পাশে পাখি আসে নিত্য ভাসে সন।

সারাবেলা করে খেলা রঙে মেলা হবে
মনে কোণে ক্ষণে ক্ষণে পরে সনে তবে।
ক্ষণ বৃষ্টি অনাসৃষ্টি পড়ে দৃষ্টি বাঁকা
দীর্ঘ পথে প্রাণ রথে হাসি মথে থাকা।

জেলে ভাই বলে তাই চলে যাই ঘাটে
মাছ ধরে বিক্রি করে ব্যাগ ভরে হাঁটে।
টাকা তয়ে কথা কয়ে মনে হয়ে ভালো
নানা ফলে নদে জলে গৃহ তলে কালো।

গাছে গাছে পাখি নাচে সদা যাচে চাষী
অলি ফুলে চলে দুলে প্রাণ খুলে হাসি।
নদী প্রেমে পলি হেমে নব গেমে তার
পাখি ডাকে হাসে হাঁকে জল ছ্যাঁকে আর।

মেঘ ভাসে স্বপ্ন আসে থাকে পাশে দিয়ে
তারি জন্য প্রাণ শূন্য হবে ধন্য হিয়ে।
আঁখি কাঁদে নব চাঁদে মনে সাধে চলে
চলে কভু ভুলে তবু প্রাণ নিবু বলে।

রচনাকালঃ
২০/০৭/২০২১
—————————
আমার মা

৩+৩+৩+১

মাগো মোর মনে হয়
সাত রাজার ধন
তোমার ওই জন্য মোর
কাঁদে এই মন।

ছোট কাল কত খেল
তোমার ওই সাথ,
কাছে মা থেকে ওই
গেছে তো রাত।

সুখ দুখে মা তুমি
আলো তো মোর,
আসে ওই যত ঝড়
কাটবে যে ঘোর।

বাপ ছাড়া মা সন্তান
মিল করে ভাই,
মায়ের ওই মতো যে
স্নেহের লোক নাই।

অমূল্য ধন যে মা
নেই সম কেউ,
যত দিন গুলো আজ
আসুক যে ঢেউ।

রচনাকালঃ
২০/০৭/২০২১

বাদলা দিন, রাজাধিরাজ

বাদলা দিন
– জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
৪+৪/৪+২

বাদলধারা করছে তাড়া
এলো আষাঢ় বলে,
খেলবো খেলা গানের মেলা
আয় রে দলে দলে।

বৃষ্টি ভেজা ভীষণ মজা
লাফালাফি জলে,
তরী নিয়ে ভাসতে গিয়ে
নানা খেলার ছলে।

কৃষকের ধান সহর্ষে গান
মনটা ভীষণ বলে,
বাদলা দিনে পেটের ঋণে
থাকলে বসে চলে।

কদম কেয়া ডাকে দেয়া
ব্যাঙের বাদ্য দলে,
দলে দলে তারা চলে
ডোবা নদের জলে।

মেঘের ভেলা জলের খেলা
বর্ষার নানা ফলে,
সবুজ শ্যামল সৃষ্টি কোমল
দেখ রে দলে দলে।

রচনাকালঃ
২৯/০৬/২০২১
———————–
রাজাধিরাজ
জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব

৪+৪+৪+২

ধরা চলে প্রভুর কথায়
বুঝবে সবে কবে,
তার ইশারায় সূর্য ওঠে
মালিক তিনি ভবে।

পাখির গানে মুগ্ধ সবাই
সৃষ্টিকর্তার লীলা
ধরার অপার সৌন্দর্য যে
প্রভু ক্যামনে দিলা।

তুমি হলে রাজাধিরাজ
সকল কিছুর স্রষ্টা
তোমার দেওয়া বিধানে না
চললে সে পথ ভ্রষ্টা।

নিয়ামতের শোকর করি
আমরা সবে মিলে
সব কিছু তো মোদের জন্য
প্রভু তুমি দিলে।

পৃথিবীতে তোমার সম
নেই তো কারো শক্তি
তোমার জন্য বান্দার মনে
সীমাহীন যে ভক্তি।

রচনাকালঃ
২৮/০৬/২০২১

কবির প্রেম, কবি

কবি প্রেম
স্বরবৃত্ত ছন্দ ৪+৪/৪+২

কলম খাতা হাতে নিয়ে
কবি ভেবে সারা,
ভালোবাসা বইয়ের সাথে
জাতির দর্পণ তারা।

কবির প্রেমটা বইয়ের সাথে
লেখেন কাব্য কত
তাহা পড়ে ভালো লাগে
সবার শত শত।

কবি ছাড়া কবিতা তো
নয়তো কারো সৃষ্টি,
কবির লেখা কবিতা টা
জাতির শুভ কৃষ্টি।

স্মৃতির পাতায় নেমন্তন্ন
কবির মনের কথা,
তাহা লিখতে জাগে কবির
হৃদয় ঘোরে ব্যথা।

কবির সৃষ্টি অমর কীর্তি
সবার মনে প্রাণে,
তাহার লেখা পড়ে মুগ্ধ
জীবন নদের গানে।

রচনাকালঃ
০৩/০৮/২০২১
————————————-
কবি
স্বরবৃত্ত ছন্দ: ৪+৪/৪+৩/৪+২/৪+১

কবি তোমরা জ্ঞানের প্রতীক
তোমায় পেয়ে খুশি দেশ
তোমাদের ওই জন্য
জাতি বলে বেশ।

সত্য লিখে সমাজ থেকে
দূর করে সব কবি বেশ
তাদের জন্য সমাজ
সুন্দর হয় যে লেশ।

কবির কথা অতি সুন্দর
বলার ভাষা নেই’রে ভাই
মর্ত্যে তাদের কথা
শুধু খাসা তাই।

শুচি শুদ্ধ চাতক কবি
করে না তো কভু ভুল
থাকে সদা আঁখি
তাঁরা ধরার মূল।

আর কি বলব কবির কথা
কবি দলে দল বাঁধি
সমাজের যে ভালো
রাখি দল সদা ।

রচনাকালঃ
২৯/০৬/২০২১

কেমন সময় মাগে, মা পরম ধন

কেমন সময় মাগো
– জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
৫+৫/৫+২

মাগো তুমি কি বলতে পারো
করোনা যাবে কবে
মুক্ত ভাবে মানুষ দেশে
নানান বেশে রবে।

শহর খানি ফাঁকা জায়গা
নেই কোথায় কেউ
মাগো আবার আসবে বলে
করোনা দুই ঢেউ।

নেইতো কারো মা মুখে হাসি
সদা মলিন মুখ,
সবার ঘরে নেই অন্ন
পাবে কি তারা সুখ।

হতাশা নিয়ে জীবন চলা
যায় কিরে মা কভু
লক ডাউন দিয়ে শাসন
রোধ করেছে তবু।

মানবতা রে সকল থেকে
গেছে কবে মা চলে,
ছেলেমেয়েরা মাতা পিতাকে
ফেলে নানান ছলে।

রচনাকালঃ
০৩/০৭/২০২১
————————————–
মা পরম ধন
জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব

২+৪+৪+৪

মাগো আমার জান্নাত
হলে তুমি সবার সেরা,
মায়া জালে তোমার
মনটা থাকে সদা ঘেরা।

তোমার স্নেহের সাথে
নেই তুলনা কারো কভু
মাকে আমরা সবাই
বাসবো ভালো পণ যে তবু।

তোমার পরশ পেয়ে
ধন্য আমি মাগো ভবে
তুমি খুশি থাকলে
সহজে স্বর্গ মিলবে তবে।

সুখে দুখে সদা
থেকো মাগো পাশে পাশে,
বলো পৃথিবীতে
কারো দায়ে কে’যে আসে।

জীবন সংগ্রামে যে
মাগো একলা লড়তে হবে,
তুমি পাশে থাকলে
যাবে কেটে বাঁধা সবে।

রচনাকালঃ
০১/০৭/২০২১

সেই মেয়েটি ও কবি কাব্য

সেই মেয়েটি
– জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
কৃত্তিকাছন্দ ৩+৩
৪ শব্দ

আজি আমি জানি – প্রাণ সাথী মানি
সদা হাতে রেখে হাত,
প্রাণ পাখি তুমি -সদা আমি চুমি
কেটে যাবে শত রাত।

এক সাথে থাকি – চোখে চোখ রাখি
সদা ভাবি তোমা কথা,
কোন বনে ঘোরো – কোন ফুল ধরো
মনে আছে বহু ব্যথা।

ভাবি মনে মনে -পাশে চাই ক্ষণে
বুকে চেপে ধরে বসি
তুমি মোর জান -তুমি মোর প্রাণ
তুমি রবি তুমি শশী।

নিত্য সুখে দুখে -থাকি ধরার বুকে
শুধু প্রিয়া তোমা আশা
কবে আসবে তুমি -মাতা জনম ভুমি
মনের কোণে কত ভাষা।

পাশাপাশি বসে – মন খুশি হেসে
বাসো মোরে খুব ভালো,
নদী ধারে কাছে – মনে সুখ আছে
প্রাণ হবে সদা আলো।

রচনাকালঃ
১০/০৭/২০২১
——————————————–
কবি কাব্য
জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব

কৃত্তিকা ছন্দ ৩+৩ শব্দ
৪ শব্দ

আছে কবি যত – গান লেখে শত
নদী গিরি রূপে শোভা,
নর নারী দেখে -নানা রঙ মেখে
নভে জ্বলে খুব নোভা।

নদী বয়ে চলে -জল কল কলে
পাখি গায় কত গান,
ফুল ফুটে আছে – নানা গাছে গাছে
দেখে ভরে গেছে প্রাণ।

দেখে ভালো ছবি – গান লেখে কবি
লাগে খুব মোর ভালো,
ধরা নব সাজে – রাতে শুধু বাজে
ঢোল ঢাকে শব্দ আলো।

নানা খেলা করে – পথ খানি ধরে
যাবে চলে ভাই বাড়ি,
মন ছুয়ে যাই – নানা ফুল তাই
কেনে নব নব গাড়ি।

দেখে শেখা তবে – তাতে মোর ভবে
মনে হয়ে যাই নদী,
তারে যদি পাই -আর কিছু নাই
ধনী হবো আমি যদি।

রচনাকালঃ
২৪/০৭/২০২১

প্রতীক্ষিত পাখি ও অহংকার

প্রতীক্ষিত পাখি
– জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
৪+৪/৪+২

আমি যাকে ভালোবাসি
তার আশাতে থাকি,
কাতর স্বরে বিজন ঘরে
তারে আমি ডাকি।

যার আশাতে প্রতি প্রহর
দুয়ার খুলে রাখি,
যার ফোনের ওই কলের জন্য
রাত জাগা ওই পাখি।

বিজন ঘরে একলা বসে
ভাবি পাখির কথা,
কথা ছিলো আসবে বোলে
দিলো প্রাণে ব্যথা।

প্রতীক্ষিত পাখির কথা
পড়ে শুধু মনে,
কেন সে যে এমন করে
ভাবছি ক্ষণে ক্ষণে।

তারি আশায় এই জনমের
পথটি গেলে কাটি
বিজন পথে সুজন নেই তাই
একা একা হাটি।

রচনাকালঃ
১৮/০৭/২০২১
——————————-
অহংকার
জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব

৪+৪/৪+১ স্বরবৃত্ত ছন্দ

অহংকার ওই পতনের মূল
বিজ্ঞ জনে কয়,
অহংকারীর সঙ্গীসাথী
কভু কেহ নয়।

অহংকারের চূড়ায় উঠে
দেখায় কত বল
পরকালে পাবে তুমি
কৃতকর্মের ফল।

প্রাচুর্যের ভাই মধ্যে থাকে
যতোই করো ছল,
মৃত্যুর দূতের কাছের তোমার
হবে সবি জল।

কর্ম যেমন ফল তেমনি
শাস্ত্র বলে তাই,
ইতিহাস ভাই সাক্ষী আছে
রেহাই তো পায় নাই।

সবি ভুলে একত্র হয়ে
গায় মানবের গান,
সকল অহং চুর্ণ হোক ভাই
জুড়ক মন আর প্রাণ।

রচনাকালঃ
১৮/০৭/২০২১

শরৎকাল ১ও২

শরৎকাল
– জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
৪+৪/৪+২

নীল আকাশে মেঘের ভেলা
আপন মনে করছে খেলা
থাকতো যদি ডানা,
যেতাম উড়ে মেঘের বুকে
ঘুরতাম সেথায় মনের সুখে
থাকতো নারে মানা।

শিউলে ফুলে গন্ধ ভরা
মনে ভীষণ খুশির ছড়া
বলে বলে চলি
রোজ প্রভাতের হিমেল হাওয়া
বসে আছি বাড়ির দাওয়া
নানা গল্প বলি।

শিশির কণা ঘাসের বুকে
পড়ে আছে মহাসুখে
তেমনি যদি পড়তাম
ইচ্ছে খুশি ঘুরে ফিরে
আসতাম ফিরে আপন নীড়ে
মেঘের ভেলায় চরতাম।

রচনাকালঃ
২০/০৮/২০২১
————————————
শরৎকাল -২
জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব

৫+৫/৫+২ মাত্রাবৃত্ত ছন্দ

নীল আকাশে ভেসে বেড়ায়
সাদা মেঘের ভেলা,
সাঁঝের বেলা নদীর পাড়ে
রবি শশীর খেলা।

কাশফুলটা ফোটে রে ওই
নদীর চরে তবে,
শরৎ হলো ঋতুর রাণী
নিখিল এই ভবে।

শরৎকালে নানা রঙের
মেঘের ভেলা ভাসে,
ফুলের ঘ্রাণ শুকার তরে
প্রজাপতিরা আসে।

হালকা রোদে লঘু বৃষ্টি
থেকে থেকেই পড়ে,
রোজ প্রভাতে শিউল ফুল
সবই তবে ঝরে।

শরৎকালে নরম বায়ু
মনটা কাড়ে ভাই
এরূপ ঋতু ধরার বুকে
অন্য কোথা নাই।

রচনাকালঃ
২১/০৮/২০২১

বীর ও জীবনমুখী

বীর
– জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
৪+৪/৪+১

বীরত্ব যার যুদ্ধে ক্ষেত্রে
নয়তো আসল বীর,
রাগের সময় রাগ দমিয়ে
উচু রাখে শির।

অতি রাগে ক্ষতি আসে
বিজ্ঞজনে কয়,
অতি রাগলে সেইজনই তো
গভীর জ্ঞানী নয়।

রাগের ফলটা বড় কঠিন
জানে সবাই ভাই,
রাগের মতো বড় পাষাণ
আর তো কিছু নাই।

যুদ্ধে ক্ষেত্রের বীরত্বের তো
অতি সহজ কাজ,
রাগ দমাতে গেলে মাথায়
ভেঙে পড়ে বাজ।

আগুন জ্বলে হঠাৎ করে
নিভে গেলে ছাই,
রাগটা কমে গেলে পরে
মনে ব্যথা পাই।

রচনাকালঃ
২১/০৮/২০২১
——————————————–
জীবনমুখী
জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব

স্বরবৃত্ত ছন্দঃ৩+৩/৩+১

পাখির ডাক খুকির হাঁক
মনে হয় ভয়,
চলে দিন আছে ঋণ
কি জানি হয়।

ভোর বেলা হয় খেলা
গেয়ে যায় গান,
ফোটে ফুল জাতের কূল
উদাসীন প্রাণ।

নেইতো সুখ জীবন মুখ
কিছু চাই না,
হেটে যায় গানটি গায়
জীবনে যা।

কর্ম নাই ধর্ম চাই
প্রাণ মুখে ভাই
জীবন ওই প্রাণের সই
কিছু পায় নাই।

দুখের ভেল নানা খেল
দুখ ভরা চোখ,
কাজ ছাড়া প্রাণ হারা
মন পুরো শোক।

রচনাকালঃ
১৭/০৭/২০২১

শ্রাবণের বৃষ্টির দিন ও সোনালী রবি

2404553

শ্রাবণের বৃষ্টির দিন
৪+৪+৪+২ স্বরবৃত্ত ছন্দ

শ্রাবণের ওই সন্ধ্যা বেলা ফুলের সৌরভ মনে
গৃহবধূ প্রদীপ হাতে যায় রে ক্ষণে ক্ষণে।
সন্ধ্যা বেলায় নানা খেলা সাথে পাখি ডাকে
গভীর রাতে জোনাক জ্বলে শেয়ালেরা হাঁকে।

সন্ধ্যা বেলায় ঝিঁঝির ডাকে মনটা ভীষণ ভালো
আঁধার পথে চলে বধু সাথে জোনাক আলো।
ফুলের গন্ধ চারিদিকে হালকা ঝিরঝির বৃষ্টি
বর্ষাকালে নদের জলে হয় যে অনাসৃষ্টি।

দলে দলে হাঁসেরা সব শুঁকে কলমির গন্ধ
চারিদিকে জলে জলে সকল জায়গা বন্ধ।
আকাশ জুড়ে মেঘের ভেলা করে ঘোরাঘুরি
ছেলেমেয়ে সবে খেলে তবে নানা লুকোচুরি।

বর্ষাকালে প্রকৃতি তার আসল রুপে সাজে
ক্ষণে ক্ষণে বৃষ্টি সাথে হঠাৎ দেয়া বাজে।
কালো মেঘের আড়ালে রোদ সতত লুকে থাকে
কলমি কদম কেয়া ফুলে গন্ধ ভরে রাখে।

বর্ষাকালে নদের জলে ভেলা চড়ে ভাসে
নদের জলে কোথা থেকে খুব কচুরি আসে।
প্রভাতকালে ফুলের উপর হালকা পানি পড়ে
নিত্য নতুন ভ্রমর এসে নানা গান যে ধরে।

রচনাকালঃ
১৬/০৭/২০২১
———————————————
সোনালী রবি
জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
৪+৪/৪+২

পুবাকাশে প্রভাতকালে
উঠলো সোনা রবি
চারিদিকে আলো ছাড়ায়
কি অপরুপ ছবি।

পাখির ডাকে হলুদ আভা
ভীষণ লাগে ভালো,
একদিন রবি না উঠিলে
ধরা হবে কালো।

রবির আলো ঝিকিমিকি
জলের উপর পড়ে,
তাই না দেখে মাছরাঙা ভাই
প্রচুর মাছ ওই ধরে।

ঘাসের বুকে শিশির কণা
প্রভাতকালের আলো,
কবির লেখা কাব্য খানি
ভীষণ লাগে ভালো।

রচনাকালঃ
১৬/০৭/২০২১