জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব এর সকল পোস্ট

জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব সম্পর্কে

জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার নলছিয়া নামক গ্রামে ১০ ই জুন ২০০১ সালে জন্ম গ্রহণ করেন। তার লেখা গুলো বাস্তব ধর্মীয়। লেখা তার নেশা। সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে কবিতা লিখতে। * চরম মুর্খ সেই যে শিক্ষা অর্জন করে নিজের মাতৃভাষা শুদ্ধ ভাবে বলতে পারে না । * আমার কাছে আনুষ্ঠানিক শিক্ষা পদ্ধতি থেকে অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা পদ্ধতি শ্রেষ্ঠ।

সাহসী ছেলেদের জন্য

রফিক শফিক সালামদের জন্য বাঙালি
পেল মায়ের মুখের ভাষা,
সেই ভাষাতে মিটায় বাঙালি তাদের
নিত্য মনের আশা।

বাঙালির স্বপ্নকে ভেঙ্গে দেওয়া ছিল
পাকিস্তানীদের কাজ,
জঘন্য এই কাজের জন্য পাকিস্তানীরা
পায়নি তো কভু লাজ।

অন্যায়ভাবে বাঙালির উপর পাকিস্তানিরা
চালিয়েছে মেশিন গান,
রফিক শফিক সালামেরা নির্ভীক ছিল বলে
ভাষার জন্য দিয়ে গেল প্রাণ।

রফিক শফিক সালামেরা নির্ভীক ছিলে বলে
কভু পিছনে হাঁটেনি,
শেখ মুজিবুর রহমান নেতৃত্ব ছিল বলে
কেউ ভয় করেনি।

রফিক শফিক সালামের রক্তের
দান এনে দিয়েছে ভাষা,
হবে না, হবে না উর্দু
বাংলায় বাঙালির মাতৃভাষা।

রচনাকালঃ
০৩/০১/২০২১

কল্পনা নয়

৪+৪/৪+২ স্বরবৃত্ত ছন্দ

কল্পনা নয় কল্পনা নয়
সত্যিকারের কথা,
পরীর দেশে ফুল কুড়িয়ে
গাত্র হলো ব্যথা।

পরীর দেশে ফুল বাগানে
নানা ফুলের মেলা,
হরেক রকম প্রজাপতি
সেথায় করে খেলা।

বাহারি ওই ঝর্ণা ধারা
থেকে থেকে ঝরে,
মিষ্টি মধুর ফলে ফুলে
আঁচল খানি ভরে।

রচনাকালঃ
০৫/০২/২০২২

শূন্যতায় পূর্ণতা

আমি আজ শূন্যতায় পূর্ণতা খুঁজি
নিরাশার মাঝে দেখি আশার ক্ষীণ আলো।
আমি বেদনার কবি, বিরহের কবি
আমার হৃদয়ের অন্তঃপুরে দুঃখকে
অতি সমাদরে পুষি।
নিজের বক্ষ ভেদে বৃক্ষ যেমন মানুষেরে করে
পুষ্প দান, আমিও আমার জীবনের সর্বস্ব দিয়ে
পেয়েছি শুধু অপমান।
আমি নিস্তব্ধ নির্বাক কবি
কল্পনায় আঁকি প্রিয়জনের ছবি।
আমি আজ বিষণ্ন মনে আনন্দ খুঁজি
আমি বেদনার কবি, বিরহের কবি।

রচনাকালঃ
১৪/০১/২০২২

কান নিলো চিলে

৬+৬+৬+২
৬+২
মাত্রা বৃত্ত ছন্দ

কান নিলো চিলে তাই ভাবে দিলে
খুঁজে শেষ সারা পাড়া,
খুঁজি দিন রাতে বহু লোক সাথে
কান হলো মোর হারা।

নানা স্থানে খুঁজি নাই আসে বুঝি
কেঁদে ভাসে মোর বুক,
হেনকালে ভাই মোর কান নাই
দেখাব ক্যামনে মুখ।

ছুটি চিলে পিছু নাই বলি কিছু
সাথে মোর বহু লোক,
নানা কথা বলে চোখ ছলছলে
হৃদয় জুড়িয়ে শোক।

কানের এ কথা মনে মোর ব্যথা
মিলবে ক্যামনে কান,
মুখে আধি ছাপ কিসে চিলে মাপ
গেলো গেলো ভাই মান।

কান কান বলি আমি শুধু চলি
সকাল দুপুর রাত
এ আমার শ্রম হলো পণ্ডশ্রম
হবে তবে বাজিমাত।

পরের যে কথা হবে যথাতথা
নাই কোনো দাম তবে,
নিজের ভরসা নিজের খসড়া
নিজেই বুঝিবে কবে।

রচনাকালঃ
২৭/০৭/২০২১

পরীর দেশে

৪+৪ স্বরবৃত্ত ছন্দ

নীল ডানার ওই পরী এসে
নিয়ে গেলে তারই দেশে,
বরণ করলো মিষ্টি হেসে।

মিষ্টি মধুর কথার সুরে
নিয়ে গেলো অন্তঃপুরে,
খেতে দিলে পেটটি পুরে।

নিশি যখন গভীর হলো
নতুন নতুন পরী এলো,
কল্প গল্পে নিশি গেলো।

পরীর দেশে ফুল বাগানে
ফুলও ফোটে পাখির গানে
ছোটে সবাই মনের টানে।

হাসি মজা বিকেল বেলা
সবাই মিলে করে খেলা
পরীর দেশে পরীর মেলা।

রচনাকালঃ
২৩/০১/২০২২

প্রভু তুমি

৪+৪/৪+২ স্বরবৃত্ত ছন্দ

স্মরণ করি প্রভু তোমায়
দিবানিশি ভোরে,
তোমার কৃপা পাওয়ার জন্য
থাকি তোমার দোরে।

তোমার বিধান মানি প্রভু
আমি প্রতিক্ষণে
বিচার দিনে তুমি বিনে
নেই কেউ আমার সনে।

তোমায় খুশি করতে প্রভু
চলি ভালো পথে,
খারাপ পথে চলে গেলে
কষ্ট জীবন রথে।

তোমার বিধান মানলে প্রভু
জীবন ধন্য হবে,
তুমি হলে দয়ার সাগর
একমাত্র যে তবে।

রোজ হাশরে তুমি আমায়
করে দিও ক্ষমা,
হাশরের ওই কথা ভেবে
পূর্ণ্য করি জমা।

রচনাকালঃ
০৪/০৯/২০২১

শেষ বিচারে

৮+৬ অক্ষর বৃত্ত ছন্দ

বিরহ অনলে দগ্ধ ভুল নাই করি
অন্যায়ের পথ ছেড়ে সঠিকটা ধরি।
শেষ বিচারের দিনে ক্ষমা করো মোরে
নিত্য প্রভাতে প্রার্থনা বিধাতার দোরে।

পুলসিরাত কেমনে হবো তবে পার
যা হীরার চাইতে যে অতি সূক্ষ্ম ধার।
প্রভুর হুকুম মতো চলি তবে ভাই
প্রভুর মতো দরদী আর কেউ নাই।

সকল কাজে’তে মানি প্রভুরই বিধান
তাতে সহজ হবে যে আমার মিযান।
প্রভুর খুশিতে স্বর্গ করি তারই কাজ
প্রভুর কাজে তে তবে নাই কোনো লাজ।

রোজা হজ্জ যাকাত তো করি ঠিক মতো
না হলে শাস্তিই পাবো পরকালে শত।
নবীর আদর্শ মেনে চলি ধরা বুকে
ইহকাল পরকালে থাকবো যে সুখে।

হে,প্রভু পাপে পাপেই জরাজীর্ণ আমি
ক্ষমা করো ক্ষমা করো তবে অন্তর্যামী
দিয়ো না আমারে কষ্ট পরকালে তবে
অনুতাপে দগ্ধ হয়ে চলি এই ভবে।

রচনাকালঃ
১০/০৮/২০২১

শান্তির জন্য প্রার্থনা

আমরা শান্তি চাই
আমরা ভারতের অধিকার বঞ্চিত নির্যাতিত কৃষক জনতা
আমরা অধিকার চাই,
শান্তি চাই,শান্তি।
আমরা উইঘুরের নির্যাতিত মুসলিম সম্প্রদায়
আমরা নির্যাতন থেকে মুক্তি চাই, বাঁচতে চাই
শান্তি চাই, শান্তি।
আমরা কৃষ্ণাঙ্গ বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়তে চাই
আমরা মানুষ হিসেবে অধিকার চাই,
শান্তি চাই,শান্তি।
আমরা কাশ্মীরের নিরীহ জনগণ
যুদ্ধ নয়,শান্তি চাই, শান্তি।
পূর্ণিমার রাতে জোনাকির ছুটে চলার মতো শান্তি।
বৃক্ষের শাখে বসে পাখির গান গাওয়ার মতো শান্তি।
আমরা মিয়ানমার রাষ্ট্রের আমজনতা
আমরা জান্তা সরকারের হাত থেকে বাঁচতে চাই,
শান্তি চাই,শান্তি।
আমরা ফিলিস্তিনের ধর্ষিতা মা ও বোন
আমরা শান্তি চাই, শান্তি।
সকল কিছুর বিনিময়ে আজ, শান্তি চাই, শান্তি ।

রচনাকালঃ
২৫/১২/২০২১

মুখোশ

আমি তো এমন ছিলাম না
কেন যেন আজ আমার একাকিত্ব ভালো লাগে।
জানি একাকিত্ব খুব খুব ভয়ংকর
স্বার্থপর, বেঈমান, অকৃতজ্ঞ বিশ্বাসঘাতক মানুষের
চেয়ে ভয়ংকর একাকিত্ব ভালো।
মানুষ মুখোশ পড়ে,
মুখোশের অন্তরালে লুকিয়ে রাখে
বিভৎস রুপ আর চিন্তাচেতনা।
যা শূন্য চোখে দেখা যায় না।
যখন মানুষ এটা বুঝতে পারে, সে মুখোশধারী
ততক্ষণে অর্ধ পৃথিবী সম ক্ষতি হয়ে যায়।

রচনাকালঃ
০৪/১২/২০২১

কবি

৪+৪/৪+২ স্বরবৃত্ত ছন্দ

কাব্য লিখি তাই তো সবাই
কবি বলে ডাকে,
নিন্দুক সে জন ছায়ার মতো
পাছে পাছে থাকে।

সমাজের ওই ভালো মন্দ
লেখা আমার কর্ম,
আমার কথা বলবো আমি
পালন তোমার ধর্ম।

সমাজটাকে শুদ্ধের জন্য
আমার কলম চলে,
আমার কাব্য দগ্ধ হয় যে
তীব্র নিন্দার ফলে।

অষ্টপ্রহর জ্ঞানের দৃপ্ত
ছড়াই সমাজ মাঝে,
কাব্যের নিন্দা সর্বত্র হয়
সকাল দুপুর সাঁঝে।

রচনাকালঃ
০৬/০১১/২০২১

মনে কি পড়ে বন্ধু

৪-৪/৪+২ স্বরবৃত্ত ছন্দ

আমার কথা বন্ধু তোদের
আছে কি ওই মনে,
আমি কিন্তু তোদের কথা
ভাবি প্রতিক্ষণে।

হাসি মজার প্রহর গুলো
দিয়েছি ওই পাড়ি,
কোনো কিছু না পেলে ওই
ধরতাম ভীষণ আড়ি।

কর্মব্যস্ত শহরবাসী
হয়ে গেছিস তোরা,
গাঁয়ে একলা পড়ে আছি
নেই তো কোনো জোড়া।

নিত্য দিনে নিত্য ক্ষণে
পথটা চেয়ে থাকি,
কবে আসবি সেই প্রতীক্ষায়
বুকে আশা রাখি।

আমার হিয়া তোদের জন্য
আজও কাঁদে তবে,
আমায় যাদের নেইতো মনে
দাম্ভিক তারা ভবে।

রচনাকালঃ
১২/০৮/২০২১

অদৃশ্য মায়া

৪+৪/৪+১ স্বরবৃত্ত ছন্দ

ভাই আর বোনের ভালোবাসায়
থাকে না তো খাদ,
নিত্যক্ষণে হাসি মজা
ভিন্ন রকম স্বাদ।

দুখের দিনে ভাইবোনেরা
পাশে তবে রয়,
তখন মনের কোণে কভু
থাকে না তো ভয়।

মন সাহসে জীবন মুখে
একলা চলা যাই,
ভাইবোনের ওই ভালোবাসায়
জনম জনম চাই।

অদৃশ্য এই ভালোবাসা
ভোলা যায় না ভাই,
এমন মধুর বন্ধন বুঝি
দ্বিতীয়টা নাই

রচনাকালঃ
২৪/০৮/২০২১

মৃত্যুর কাছে পরাজয়

ত্রিপদী মহাপয়রা (অক্ষরবৃত্ত): ৯+৯/১১

থাকিতে যে আসিনি ভবে
চলিয়া যাইব যে তবে
যাইবো ছাড়িয়া রঙ্গের ধরা,
যেইদিন মৃত্যু আসিবে
কর্মতে দুনিয়া হাসিবে
স্বজন তো থাকিবে বাড়ি ভরা।

ছাড়িয়া যাইব স্বজন
মৃত্যুদূত নহে আপন
যাইবে না ছড়িয়া মোরে কভু,
রঙ্গের দুনিয়া এ থেকে
যাইবো আমি সবই রেখে
পড়িয়া রহিবে কীর্তিটা তবু।

মানব জীবন এমন
রামধনুকটা যেমন
জীবন নদের সমাপ্তি ভেলা ,
নিখিল দুনিয়ার মাঝে
থাকিবো তো লাশের সাজে
ভঙ্গ হইবে রঙ্গের এ মেলা ।

জীবন নদের এ তরী
সুখেতে ছিলো শুধু ভরি
ক্যামনে সময় গিয়াছে পারি,
বুঝিতে তো পারিনি আমি
সময়টা যে কত দামী
মৃত্যুর কাছে গেলাম রে হারি।

রচনাকালঃ
০৬/০৮/২০২১

গ্রাম ও নদী

wpid

ছবির মতো ছায়ায় ঘেরা আমার ছোট গ্রাম
ধরার বুকে ছড়িয়ে গেছে তার যে কত নাম।
গাঁয়ের পথ বয়ে চলেছে ফুলজোড় এ নদী
নদীর তীরে ভালো লাগে যে পাখিরা গায় যদি।

পাখির গানে কলতানেই ভীষণ লাগে ভালো
নিত্য রাতে জোনাকি ছাড়ে হালকা কিছু আলো।
জেলেরা সব মাছ ধরতে ছুটে নদীর পানে
মুখরিত যে চারদিকটা নানা রকম গানে।

নদীর তীরে চাষিরা ভূমি নিত্য করে চাষ
যাযাবরেরা নদীর তীরে করে যে শুধু বাস।
নানা রঙের বেশে আসে যে ধবল বক কিছু
তাদের সাথে আরো যে আসে অন্য পাখি পিছু।

হেমন্ততে শিশির কণা পড়ে ঘাসের বুকে
গাঁয়ের গাছে পাখিরা সব থাকে যে মহা সুখে।
উদাস মনে রাখাল মাঠে লয়ে যায় রে গরু
আমার গাঁয়ে বন- বাদড়ে বেশি তমাল তরু।

আমার গ্রাম সোনার ছবি ধরার এই বুকে
সবাই থাকে মিলেমিশে তো থাকে ভীষণ সুখে।
চারিদিকেতে মনোরঁজক পরিবেশটা ভালো
রাতেরবেলা চাঁদবিহীন আকাশ থাকে কালো।

৫+৫+৫+২ মাত্রা বৃত্ত ছন্দ
রচনাকালঃ
১০/০৮/২০২১

আমার মূল্য

তোমরা যেদিন আমার মূল্য বুঝবে
সেদিন আমি তোমাদের থেকে অনেক দূরে
হয়তো চাইলে আমার নাগাল পাবে না।
আমার মূল্য যাদের কাছে সমান ছিলো
এবং আজও তেমনি আছে
সে হলো আমার জনক জননী।
তারা আমাকে যতই তাচ্ছিল্য করুক না কেন
তাদের কাছে আমি রত্ন সম।

যে আমায় বলেছিলো এর দ্বারা কিচ্ছু হবে না
আমি আজ তার চোখে আঙুল দিয়ে দেখে দিতে চাই।
অবহেলা, অবজ্ঞা পোষণ করলে সব প্রতিভা নষ্ট করা যায় না।
দৃঢ় মনোবলে জীবন যুদ্ধে আমি আজ সফল
যে আমায় তিরস্কার করতো, সেইজন
আজ আমায় কুর্নিশ করে চলে।
কি অবাক পৃথিবী তাই না, সত্যি অবাক।
সম্মানটা টাকার সাথে,বিনয়ের বা ভদ্রতার সাথে নয়।

যারা আমার সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলতো
হাটে ঘাটে মাঠে, সকল স্থানে
আজ পজিশনের ভিন্নতার কারণে
তারা-ও এড়িয়ে চলে,দেখে অবজ্ঞার দৃষ্টিতে।

রচনাকালঃ
১৭/১২/২০২১