খালিদ মোশারফের কবিতা এর সকল পোস্ট

খালিদ মোশারফের কবিতা সম্পর্কে

তবুও থামিনি আমি ''''''''''''''''''''''''''''''''''''''' তোমার যাত্রা শুভ হক এ কথা কেউ আমাকে বলেনি আমি কবিতা লিখতে বসলাম। পকেটে ময়লা মন তবু আমার যাত্রার শুভক্ষণ হঠাৎ গাড়ী নষ্ট হল নামলাম হাটলাম অনেকদূর তবুও থামিনি তোমার যাত্রা শুভ হক এ কথা কেউ আমাকে বলেনি ।

খাওনাটোও আজকাল না বোধক বা সন্দেহে চলে গেছে

আমার কিনে দেওয়া খাবার কেউ খেতে চাচ্ছে না
—————
সেদিন নামাজ পড়তে গিয়ে খুব অপরিচিত দরিদ্র এক বৃদ্ধকে
বললমা –দাদা আপনার কি কি খেতে ভাল লাগে?
দাদা বলল-এই বয়সে দাঁত পড়ে গেছে
কিছুই খেতে পারি না

আমার দুটো পয়সা হয়েছে হয়ত
দুখি মানুষকে খুব খাওয়াতে ইচ্ছে করে
সেদিন অসহায় এক পথ শিশুকে বলতে গেলাম
বাবা তুমি কি কি খেতে চাও?-কিনে দিব
সে আমাকে ছেলে ধরা মনে করে দিল এক দৌড়

মানে আমার এক অবাক ব্যপার!
অসহায় এক নারীকে বললাম-আপনার কি খেতে
মন চায়,বলেন ,কিনে দেব।
তিনি বললেন-আমার মেয়ের ক্যানসার,সে হসপিটালে
তার জন্য কয়েক লাখ টাকার দরকার
খাওয়া প্রসঙ্গে কিছু বলার থাকল না

রাস্তাতে যেখানে পাচ্ছি তাকেই বলছি
ভাই আপনি কিছু খাবেন –কিনে দেব
কি বিপদ ! সবাই ভিন্ন ভাবছে
মানে আমি কি অজ্ঞান পার্টি ,নাকি ছেলে ধরা
খাওনাটোও আজকাল না বোধক বা সন্দেহে চলে গেছে

ছাত্র জীবনে বাসে উঠার আগে বাবা আমাকে বলে দিত
বাসে কেউ কিছু দিলে খাবি না
আমিও তাই করতাম
এখন দেখছি উল্টোটা ঘটছে
আমার কিনে দেওয়া খাবার কেউ খেতে চাচ্ছে না।

আমাকে কবি বললে লজ্জা পাই!

আমাকে কবি বললে লজ্জা পাই!
—————-

এই মধ্য বয়সে এসে হঠাৎ কবিতা লিখছি
সেজন্যে আমাকে মাঝে মাঝেই কথা শুনতে হয়
হঠাৎ প্রতিভার বিকাশ! প্রেম করেছিলেন নাকি?
মধ্য বয়সে বধি জ্ঞান লাভ! হঠাৎ লিখছেন! ইত্যাদি

মোট কথা, কবি বললে আমার খুব লজ্জা লাগে
আমার কবিতাগুলো আদও কবিতা কিনা জানিনা
সাহিত্য জ্ঞানও আমার কম
যা মনে আসে আধ খাওয়া করে একটু লিখে দিয়

এই আমার মধ্য বয়স,হটাৎ লিখছি ঠিকই
ছেড়া পাঞ্জাবি, ঝোলা ব্যাগ,কিংবা, বই চশমা
কোন কিছুই আমার সাথে নেই
আমি খাটো মানুষ পাঞ্জাবিতে আমাকে মানাবে না
মানে অবাক ব্যপার!

কবি কথাটা আমার উপর চাপাবেন না
আমার খুব লজ্জা লাগে
কিছু একটা লিখছি ঠিকই
তাই বলে তার হাত পা গজিয়ে অনেক দূর চলে যাবে!
কবি হওয়ার যোগ্যতাও হয়ত আমার নেই
কবি বললে লজ্জা লাগে
আমাকে লিখতে দিন
আর সকল সুন্দর কবিদের প্রতি রইল ভালবাসা ও শ্রদ্ধা।

তর্ক করতে রাজি না

সেদিন আমার এক বন্ধু বলল যে
তোরতো আর কাজ নেই ,কি সব লিখিস!
ওগুলোতো কবিতা না, পাগলামি
ভাবলাম তর্ক করে আর কি হবে
সময় নষ্ট ,কথা না বলে অন্য কাজ করিগে

বউ বলল তোমাকে বিয়ে করে আমার জীবন নষ্ট
আমিও উল্টো বলতে গিয়ে থেমে গেলাম
ভাবলাম তর্ক করে কি হবে ,সময় নষ্ট
থাক অন্য কাজে মন দিইগে

মোটকথা তর্ক এড়িয়ে যাচ্ছি
সেদিন এক রিক্সাআলার সাথে ভাড়া নিয়ে
তর্ক হবার উপক্রম
থেমে গেলাম , তর্ক করে সময় নষ্ট করতে
রাজি না

মোট কথা মাথায় কিছু থাকলেতো তর্ক করব
গায়েও শক্তি নেই
কেউ কেউ তর্কে হেরে গেলে চোখ রাঙ্গিয়ে শোধ তোলে
আমি তাও পারি না
কেউ কেউ তর্কে জিতে গেলে গর্বে বুক ভরিয়ে ফেলে
আমি তর্কে জিতিও না , আর দু একবার যদি
ভাগ্রক্রমে জিতেও যায় তবু গর্ব করতে পারিনা

এখন এভাবেই চলছি, আগে থেকেই ধরে নিরাম
আপনারা যা বলবেন তাই-ই সঠিক
আমি ছোট মানুষ ,বুদ্ধিতে কাঁচা
সুতরাং চুপ করে মেনে নিলাম আপনার কথা
তর্ক করতে পারব না।

আমাদের আত্মনিয়ন্ত্রণ

———
কষাই আজকে সকাল উঠেই ছাগল জবাই করবে
হাতে উর লম্বা চাকু ,
কীসে উকে মানুষ জবাই করতে বাঁধা দেয়?
মুদি দোকান সিগারেট বিক্রি করবে
অনেক মানুষ উর কাছ থেকে সিগারেট কিনে খাবে
কিন্তু মুদি দোকানদান অধুমপায়ী?
কীসে উকে ধুমপান করতে বাঁধা দেয়?
বিষ বিক্রেতা বিষ বিক্রি করবে
কৃষক আজকে জমিতে সার ও বিষ ছেটাবে
হাত ভর্তি তার বিষে
কিসে কৃষককে ও দোকানীকে বিষ পানে বাধা দেয়?
হে আত্মনিয়ন্ত্রণ। প্রতিটি মানুষের কাছে কিছু
আত্মনিয়ন্ত্রণ জমা থাকে
ফলে কুলে দাড়িয়ে থেকেও সে পড়ে না
আর আত্মনিয়ন্ত্রণের বিষয়টা ভেবে প্রতিনিয়ত
অবাক হচ্ছি।

আমার মধ্যে আছে এক স্পষ্ট দরিদ্রতার ছায়া

আমার মধ্যে আছে এক স্পষ্ট দরিদ্রতার ছায়া
————————–
খুব ভাল ও সুন্দর একটি শার্ট পরে ভাইভাই গেলাম
গিয়ে দেখলাম অন্যদের চাইতে আমার শার্টটা নরমাল

ঈদের নামাজ পড়তে গেলাম সুন্দর একটা পাঞ্জাবী পরে
গিয়ে দেখি এলাকার সব চেয়ে দরিদ্র লোকটি আমার
অনুরুপ পাঞ্জাবি পরে নামাজে এসেছে

সবাই বলে আমি নাকি আনস্মার্ট
আমার বউ বলে তোমার আরো ভাল ভাল পোশাক
পরা উচিৎ
কিন্তু যত ভাল পোশাক-ই পরি না কেন
আমার চলাফেরা ও পোশাক দরিদ্রদের সাথে মিলে যাই

যদি কথা বলি সেকথার মাঝে আঞ্চলিকতা থাকবেই
মাথাটা আমার নীচ ,যেন ক্ষমতাবানদের সামনে দিয়ে হাটছি
এক কথা আমার মধ্যে আছে এক স্পষ্ট দরিদ্রতার ছায়া

পকেটে টাকা থাকলেও আমাকে দরিদ্র মনে হবে
না থাকলেও আমাকে দরিদ্র মনে হবে
চেহারাতেও যথেষ্ঠ ক্লান্তির ছাপ
খেটে খাওয়া মানুষদের মত

আত্মীয়র বাড়ীতে গেলেও আমাকে একটু অবহেলা
মোট কথা আমার সাথে দরিদ্রতার যথেষ্ট মিল আছে
যদিও আমার অর্থকড়ি একেবারে সামান্য নয়

তারপরেও বাঁচতেতো হবেই
তাই মনে মনে বলি ,শান্ত্বনাবাক্য-
’’হে দারিদ্র তুমি মোরে করেছ মহান
তুমি মোরে দানিয়াছ খ্রিস্ট্রের সম্মান ’’।

তাহলে কি কবিতা লেখা ছেড়ে দেব?

পড়াশুনা করে যে দরিদ্র ছেলেটি চাকরি পায়নি
আমার কবিতা তার ভাললাগবে না
যে গার্মেন্টস শ্রমিকের শরীরের অর্ধেক পুড়ে গিয়েছে
তারও আমার কবিতা ভাললাগবে না
যে কৃষক ফসলের ন্যায্য দাম পায়নি
তারও আমার কবিতা ভাললাগবে না
যে নারী গণ ধর্ষণের স্বীকার হয়েছে
তাও আমার কবিতা ভাল লাগবে না

আমার কবিতার দুটো সান্ত্বনা বাক্য
গার্মেন্ট শ্রমীককে দেওয়া বৃথা আশ্বাসের মত কি?
ধর্ষণের স্বীকার নারীর উপযুক্ত বিচার পাবার
মিথ্যা শান্ত্বনা নাকি কৃষককে দেওয়া ভর্তুকির
মিথ্যা আশ্বাস

আচ্ছা দু চারটি লাইন না নায় লিখলাম
লিখে কি হবে?
লিখে কি হবে-আগামীতে আগুনে পোড়া থেকে
শ্রমীকরা কি বাঁচবে?
রাতে ও দিনে প্রতিটি সময় ও জায়গা কি
সকলের জন্য নিরাপদ হবে?

তাহলে কি কবিতা লেখা ছেড়ে দেব?
তাহলেতো বলতেই হয়-
“ক্ষুধার জ্বালাই পৃথিবী গদ্যময়
পূর্ণিমার চাঁদ ঝলসানো রুটি”।

হে প্রতিদিন আমি অন্যায় করি

হে প্রতিদিন আমি অন্যায় করি
——————-
প্রতিদিন আমি কিছু অন্যায় করি বলেই
আমি রোবট নয়
গাছ পালাও নয় ,অন্য কোন প্রাণী নয়
শুকনো ডাল পালা নয়

প্রতিদিন আমি অন্যায় করি
আফসোস করি, প্রায়শ্চিত্ত করি
খোদার কাছে ক্ষমা চাই
ফলে আমার নিজেকে শুকনো বস্তু
প্রাণহীন সত্ত্বা মনে হয় না

প্রতিদিন আমি জেনে না জেনে
অন্যায় করি ফলে আমার আফসোস হয়
ফলে আমার চিন্তার জগৎ জীবন্ত থাকে
নিজেকে মানুষ মনে হয়
পৃথিবীতে আমার জীবনটা স্বার্থক মনে হয়

যে ব্যক্তি আজ হত্যা করবে
যে ব্যক্তি আজ হত্যার স্বীকার হবে
উভয়েই দুর্ভাগা কিন্তু মানুষ
উনাদেরকে তাড়িয়ে আমরা পৃথিবীকে স্বর্গ বানাব
না হত্যাকারী ও হত্যার স্বীকার হওয়া ব্যক্তি
কালক্রমে পৃথিবীতে আসতেই থাকবে

খাদ্যে ফরমালিন দিয়ে মানুষ হত্যা
মনের কষ্ট দিয়ে মানুষ হত্যা
গোপনে নারীর গর্ভপাত বা শিশু হত্যা
মানুষের আশা নষ্ট করে মানুষ হত্যা
আমি কোন না কোন হত্যাকারী

হে আমি অন্যায়কারী,প্রতিদিন আমি
আমার কৃতকর্ম ও অন্যায়কে স্বীকার করি
আর অন্যায়কারীদের ভালবাসি

অন্যায় করি বলেই আমি মানুষ
অন্যায় করি বলেই আমি খোদার কাছে
বলতে পারি হে খোদা আমাকে ও অন্যদের
ক্ষমা কর
অন্যায় করি বলেই খোদার কাছে আমার ভাষা
আসে
অন্যায় করি বলেই খোদার কাছে আমার নিজেকে
ছোট মনে হয়

অন্যায় করে ক্ষমা চাই বলেই আমার অন্যায়
সীমিত হয় ,সীমারেখা থাকে
অন্যায় করে স্বীকার করি বলেই
আমার অন্যায় বেশীদূর পৌছায় না
তবে সকল অন্যায় কারীকে ভালবাসি
কারণ অন্যায়কারীরাও মানুষ।

ধন্যবাদ খোদাকে

ধন্যবাদ খোদাকে
————–
বন্ধু একটি বই উপহার দিয়েছিল
তার জন্যে তাকে ধন্যবাদ দিলাম
স্ত্রীর ভাল রান্নার জন্যে স্ত্রীকে বারবার
ধন্যবাদ দিই
জীবনে চলার পথে কেউ কিছু দিলে
অমনি একটি ধন্যবাদ ছুড়ে দিই

আচ্ছা এমন কেউ কি আছে
যার যথাযোগ্য প্রশংসা করা হয়নি?
যার দানের মূল্যায়ন করা হয়নি?
যাকে যথার্থ ধন্যবাদ দেওয়া হয়নি?
হে তিনি খোদা, উপর থেকে তিনি
আমাকে ও অন্যদের দেখছেন

আজ ভাল করে খেয়েছি, পথ চলেছি
সুন্দর নিশ্বাস নিয়েছি, ভাল করে গত রাতে
ঘুমিয়েছি, জীবন পেয়েছি, বেঁচে আছি
চোখ দিয়ে দেখেছি, কান দিয়ে শুনেছি
কত বিপদ থেকে বেঁচেছি, সুস্থ ভাবে বেঁচে আছি

যারা খোদাকে বিশ্বাস করে না তাদের কথা আলাদা
তবে যারা আমার মত খোদাকে বিশ্বাস করে
খোদার প্রতিটি দানের জন্যে একটি করে ধন্যবাদ
দিতে হবে
তাহলে ধন্যবাদ ধন্যবাদ বলতে বলতে গলা
শুকিয়ে যাবে ,ধন্যবাদ ফুরাবে না

তবুও বলব খোদা তোমাকে ধন্যবাদ
তোমার প্রতিটি দানের জন্য
খোদা তোমাকে ধন্যবাদ।

গায়ে লাগে না

গায়ে লাগে না

————————–
এক আত্মীয়র বাড়ী গিয়েছিলাম দুপুর বেলায়
কথা বার্তা শেষে দুপুর বেলায় প্রস্থান করব
আত্মীয় বলল এই তপ্ত দুপুরে না গিয়ে বিকেলে যান
আমি বললাম- রৌদ্র কোথায়? জীবনে কোন দিন আমার গায়ে
রৌদ্র লাগেনি

প্রাইভেট টিচারের কাছে পড়তে গিয়েছিলাম
প্রচণ্ড বৃষ্টি মাথায়, স্যার বলল
এই বৃষ্টি মাথায় পড়তে এসেছ?
আমি বললাম বৃষ্টি কোথায়?
জীবনেও আমার গায়ে কোন দিন বৃষ্টি লাগেনি

ঝড় মাথায় সাইকেল চালিয়ে আসছিলাম
মানুষ সবাই রাস্তা থেকে নেমে বিভিন্ন বাড়ীতে
আশ্রয় নিল, আমি মনে মনে বললাম
ঝড় কোথায়? জীবনেও আমার গায়ে ঝড় লাগেনি

বাবা মরল,একটু কাঁদছিলাম
এক আত্মীয় বলল-দুঃখ করো না ,আমরা আছি
আমি মনে মনে বললাম,দুঃখ কোথায়
স্বাভাবিক ভাবে একটু কেঁদে নিচ্ছি
দুঃখ কোন দিন আমার গায়ে লাগেনি

গায়ের জামায় ময়লা ,স্ত্রী বলল,দাড়াও
–জামাটা ধুয়ে দিয়
আমি বললাম-ময়লা কোথায়? জামাতো পরিষ্কার
জীবনে ময়লা কোনদিন আমার গায়ে লাগেনি

উল্লেখ্য রোদ বৃষ্টি ঝড় দুঃখ –সব সময়
এগুলোর মাঝেই আমি থাকি
দুর্গন্ধের মাঝে যেমন দুর্গন্ধ বোঝা যায় না
শহরের মাঝে গ্রাম বোঝা যায় না
ঘরের ভেতরে প্লাস্টিকের টবে প্লাস্টিকের গাছ
দিয়ে প্রকৃতি বোঝা যায় না
প্রকন্ড এক সমুদ্র নিয়ে ঘুরি
প্রকাণ্ড এক পৃথিবী নিয়ে ঘুর
প্রকাণ্ড ঝড় ,বৃষ্টি নিয়ে ঘুরি
তাই সবাই যেভাবে বুঝবে –আমার বোঝাটা আলাদা।

আপনি কেমন আছেন?

আপনি কেমন আছেন?
………………………………………………………….
একদিন হসপিটালের বেডে শুয়ে ছিলাম
এক আত্মীয় এসে জিজ্ঞাসা করল কেমন আছেন?
কি বলব বলেন,সবার মত করে বললাম
হে ভালই আছি?
এক বন্ধুর বাবার বাবার জানাজায় গেলায়
বন্ধুকে দেখা মাত্র মুখ ফসকে বেরিয়ে গেল
বন্ধু কেমন আছিস?
বন্ধুও মুখ ফসকে উত্তর দিয়ে ফেলল
হে ভালই আছি
যেভাবেই থাকি,যেখানেই যাই সবাই জিজ্ঞাসা করে
আপনি কেমন আছেন?
সবার মত করেই উত্তর দিই হে ভাল আছি
সবার মত করেই সবাইকে আমিও জিজ্ঞাসা করি
আপনি কেমন আছেন?
তারাও আমার মত করে বলে
হে ভাল আছি
কথা হচ্ছে এ ভাল থাকা প্রশ্নটা কি ধরণের?
এটা কি কথার সূত্রপাত,কৌতুহল নাকি প্রশ্ন
যাইহক এই প্রশ্নের বয়স কিন্তু প্রাচীন
ভবিষ্যতেও এই প্রশ্নটা টিকে থাকবে
উত্তরও ঐ একটাই
সবাই না ভেবেই প্রশ্ন করে কেমন আছেন?
না ভেবেই একটা উত্তর হে ভাল আছি।

হেফাযতের একটি ভাস্কর্য নিয়ে মাথা নষ্ট

দেশের যুব সমাজ ধ্বংসের অস্ত্র মাদক। মাদক কেনা বেচা আমাদের দেশে প্রকাশ্যে হয়। এরকম আরো বড় বড় সমস্যা রেখে হেফাজতের কোথায় ? একটি ভাস্কর্য আছে তা নিয়ে চুলকানি। মাদক নিষিদ্ধ হক এ বিষয়ে কোন বিতর্ক নেই। তাই লড়তেই যদি হয় মাদক, ট্রাফিক জ্যাম, চাকরির নিয়োগ বাণিজ্য, কোটা বৈষম্য, প্রশ্ন ফাঁস ইত্যাদি বিষয়ে হেফাযত লড়তে পারে।

শিরক মুক্ত বাংলাদেশ চাই। কবরে সিজদাহ দিয়ে হাজারো মুসলমান শিরক করছে। কবর খানার পাশে ভক্তরা গাঁজা সেবন করছে। হাজারো মুসলমান তাবিজ কবজের জালে বন্দী। এগুলোও শিরক।আর আমাদের হেফাযতের একটি ভাস্কর্য নিয়ে মাথা নষ্ট।

আমার সাধারণ পাপ ও সাধারণ পূণ্য

আমার সাধারণ পাপ ও সাধারণ পূণ্য
———————-
প্রতিদিন আমি কিছু পাপ করি
ইচ্ছায় ,অনিচ্ছায়,কিংবা আমার ভাগ্যে লেখা ছিল বলে

রাস্তায় হাটব –বেগানা নারীদের দিকে তাকাব
এ পাপটা না করলেও আমার কোন ক্ষতি হবে না
কিছু মিথ্যে কথা না বললেও আমার
লাভ ক্ষতির কোন প্রশ্ন নেই

জীবনের প্রয়োজনের নামে ঘুষ দেব খাব
কোন রকম মনকে বুঝিয়ে সুদের টাকাটাও
পকেটে পুরে নেব

ঘুমানোর জন্য আমার একটি রুম যথেষ্ট
কিন্তু দুতলা প্রাসাদে শুয়ে শুয়ে আমি
দশ তলার স্বপ্ন দেখি
কালকে বাঁচব কিনা জানিনা
আগামী একশ বছরের খাবার সংগ্রহ করে রেখেছি

প্রতিদিন আমি পাপ করি-ইচ্ছায় –অনিচ্ছায়

পরিষ্কার প্লেটটিতে ময়লা পড়লে যেমন ধৌত করতে হয়
শোয়ার আগে বিছানাটা ঝেড়ে ঘুমোতে হয়
এরকমভাবে আমি আমার অন্তরের যত্ন করতে পারিনি ঠিকই
তবে পাপ করি বলেই আমি মানুষ

আফসোস করি আর খোদার কাছে ক্ষমা চাই
ছাদে উঠার জন্য যেমন সিঁড়ি লাগে
প্রতিদিন পাপ করে খোদার কাছে ক্ষমা চাই
পাপ আমার ছাদে উঠা সিঁড়ি
আমি নিষ্পার হতে চায়নি
নিষ্পাপ হলে যদি খোদাকে ভুলে যায়

আবার পাপকেও যে খুব পছন্দ করি তাও নয়
যায় হক এটা খুব পরিষ্কার যে
শত চেষ্ট করেও আমি নিষ্পাপ হতে পারব না
আবার প্রতিদিন কিছু ভাল কাজও আমার দ্বারা হবে

রাস্তাতে গাড়ীর চালানোর সময় শত শত মানুষকে
অতিক্রম করেছিলাম
একটিকেও চাপা দিয়নি

প্রতিদিন আমার কানের পাশ দিয়ে আরো কত পাপ
ও অন্যায় করার সুযোগ চলে যায়-সেগুলোকে এড়িয়ে চলি
এগুলো হয়ত আমার সাধারণ পূণ্য

হাতে ছুরি থাকলে হয়ত খাবার প্রয়োজনে একটি হাঁস কিংবা
মুরগী জবাই করতে পারি
পৃথিবীতে আরো হাজার হাজার হাঁস মুরগী আছে
সেগুলো আমার ছুরির নীচে পড়েনি

কোন মানুষও আমার ছুরীর নীচে পড়েনি
গুটি কয়েক আম পেঁয়ারা ঝাল মরিচ ছাড়া
এটাও আমার সাধারণ পূণ্য

যাইহক এতগুলো পূণ্য ও এতগুলো পূণ্য নিয়ে
আমি মানুষ খোদার সামনে চুপচাপ বিনয়ী
অবাক চোখে দিখছি পাপ পূন্যের পৃথিবীকে।

আমার চটপট স্বভাব

আমার চটপট স্বভাব
——————–
খুব তাড়াতাড়িই লেখাপড়া শেষ করলাম
এক্বেবারে তাড়াতাড়ি চাকরি হল
তাড়াতাড়ি বিয়ে, বছর না পেরতেয় বাবা হলাম

মানে আমার সবকিছু খুব তাড়াতাড়ি
চটপট বাজার করে ঘরে ফিরি
চটপট অফিসের কাজ সারি
চটপট পেপার পড়ি,ঘুরি ফিরি

মানুষও আমাকে চিনে ফেলেছে
মানে আমি ইজি কাজে বিজি

ভাবছি চটপট -তাড়াতাড়ি মরে যাব না তো?
সব-ই যদি চটপট হয় তাহলে
মৃত্যু তোমার দেরি কিসের?

সেদিন এক লোক বলল-সব কাজ তাড়াতাড়ি
সারলে তাড়াতাড়ি মরতে হবে
আরেক লোক আরেকদিন বলেছিল
-এত ত্বরা স্বভাব ভাল নয়
এত ত্বরা করে কি করবেন?
জীবনটাকে ইনজয় করুন

যাইহক সব কথা ঝটপট শুনি
চটপট কিছু একটা বলি
আর মৃত্যু তুমি এলে –তোমাকে তো ঠেকাতে পারব না!
তবে যেদিন মরব- খোদার কাছে চটপট একটা স্বর্গ চায়।

বেঁচে থাকাটাও ইবাদত

ইশ্বর যখন আমাকে বলবেন
তুমি কি এনেছ?

ইশ্বরকে বলব-এক বুক নিশ্বঙ্গতার
কষ্ট নিয়ে হাসি মুখে বেঁচে ছিলাম
তুমি কি খুশি নও –ইশ্বর!

ইশ্বর আমি বেঁচে ছিলাম
এটাই ছিল আমার ইবাদত
তোমাকে বিশ্বাস করে বেঁচে থাকাটাই ছিল
আমার একমাত্র ইবাদত।

ব্যস !ব্যস! অনেক হয়েছে

——————————————-
সেদিন এক আত্মীয়র বাড়ীতে বেড়াতে
গিয়েছিলাম ,ফিরে আসার পথে আত্মীয় আমার ব্যাগে
আম দিতে লাগল
আমি বললাম থাক !থাক, ব্যস! অনেক হয়েছে

খানা বাড়ী খেতে বসলাম
বারবার আমার পাতে খাবার বিতরণকারী খাবার
দিতেই থাকল
আমি বললাম থাক! থাক! ব্যস!অনেক হয়েছে

রিক্সায় যাচ্ছিলাম , গন্তব্যস্থান ছেড়ে রিক্সা অনেক
দূর চলে গেছে
তবুও রিক্সাআলা থামছে না
আমি বললাম থামুন ,ব্যস! ব্যস ! অনেক হয়েছে

মোটকথা একই সমস্যা,সুখ নদীর পানি উপচে পড়ছে
এত পেয়েই সুখী হতে পারছি না
মানে এত কিছুর পরেও সুখী হতে পারছি না
বন্যা হলে কি সুখী হওয়া যায় বলেন?
তারপরেও ভারসাম্য করার চেষ্টা করছি
আর সব সময় চেষ্টা আমার ভালথাকার।