আরেকটু বেঁচে থাকতে চাই
দীর্ঘ সময় বেঁচে থাকতে পারলে আরো ভাল
প্রতিদিন আমি অজানা মেঘের তথ্য পাই
প্রতিদিন স্বপ্নের পাখি হয়ে ভেসে বেড়াতে চাই
প্রতিদিন আমি নতুন কিছু ভেবে পাই
আজ বাজারে যাব কিছু কিনে আনব
কালকেও বেঁচে থাকলে বাজারে যাব
মানুষের সাথে প্রতিদিন দেখা হবে
প্রতিদিন আমার বাচ্চা বাবা বলে ডাকবে
স্ত্রী বলবে কথা বলবে -তুমি ডাকে
যেন আমার আরেক নাম –তুমি
আরেকটু বেঁচে থাকলে মন্দ কিসের ?
খালিদ মোশারফের কবিতা এর সকল পোস্ট
আমার মানসিক স্তরের ভিত্তি ও পাপ বোধ
আমার মানসিক স্তরের ভিত্তি ও পাপ বোধ
——————————
তীব্র এক পাপ বোধ আমাকে কষ্ট দেয়
প্রতিদিন-ই আমি কিছু খারাপ কাজ করি ঠিক-ই
কিন্তু তা আমার মানসিক কষ্টের কারণ হয়ে দাড়ায়
সেদিন একটি খারাপ কাজ করে মন খারাপ হয়ে গেল
নিজেকে সান্ত্বনা দিলাম এই বুলে-
আমার ভালর সীমা এই পরযন্তই ,যতটুকু ভাল আমি করি
আমার খারাপের সীমা এই পরযন্তই যতটুকু খারাপ আমি করি
এর বাইরে যাওয়া আমার সম্ভব নয়
আমার খারাপ অভ্যাসগুলো মানুষ জানুক বা না জানুক
আমার খারাপ গুলো আমার ভেতরে আছে আমার
মানসিক স্তরের ভিত্তি হিসেবে
আমার ভালগুলোও সেরকম
আমি যদি কোন একটি খারাপ কাজ থেকে নিজেকে নিবৃত্তি
করতে না পারি
তবে আমার মানসিক স্তর ঐ পরযন্তই
কোন না কোন ভাবে আমার আবেগকে ঠেকিয়ে রাখলেও
আমার কাছে স্বভাব আবার ফিরে আসে
সবচেয়ে বড় কথা –আমি মানুষটা যে অভ্যাসগুলো উপর
প্রতিষ্ঠিত,যেগুলো আমাকে ঘুরাবেই
কি করব নিজের সাথে যুদ্ধ করে
তার পরেও যুদ্ধ করে যাচ্ছি।
বুক ভরা আশা নিয়ে অনিশ্চিত যাত্রা
———-
হতে পারে আমার উপর কেউ অসন্তুষ্ট
কেউবা আমার উপর সন্তুষ্ট
হতে পারে আমার পুণ্যময় জীবন
কিংবা এক সমুদ্র পাপ নিয়ে আমি
মনের অজান্তে ঘুরছি
যে পথ দিয়ে হাটছি সে পথে
ডাল ভেঙ্গে মাথায় পড়তেই পারে
কিংবা ঝড় আসতেই পারে
এক কথা জীবন মানে কি?
বুক ভরা আশা নিয়ে অনিশ্চিত যাত্রা
নৌকা উঠলাম পাড়ে ফিরতে পারব কি?
অনেক যত্ন করেও আমার আধমরা গাছটি
বাঁচবে, তার-ই বা নিশ্চয়তা কিসের?
বিনা কারনে মন খারাপ
সেদিন বিনা কারনে মন খারাপ হল
ভাবলাম মোবাইলটা আচড়ে ভেঙ্গে ফেলি
মন খারাপের একটি কারণ বের হবে অন্তত
সেদিন এক বন্ধু বলল তার মন খারাপ
কিন্তু কারণ বলতে পারল না
বললাম আমার মত কিছু একটা ভাঙ
তাহলে মন খারাপের কারণ বের হবে
আসল কথা হল-সব চাহিদা মিটে গেলেও
মন খারাপ করে
কারণে বা অকারণে মন খারাপ করে
তবে কারণ খুঁজে না পেলে দেয়ালে হাতটা
জোরে ঘাই মারুন আল বলুন
হাতে ব্যথা হয়েছে তাই মন খারাপ করছে।
বুক ভরা আশা নিয়ে অনিশ্চিত যাত্রা
বুক ভরা আশা নিয়ে অনিশ্চিত যাত্রা
———-
হতে পারে আমার উপর কেউ অসন্তুষ্ট
কেউবা আমার উপর সন্তুষ্ট
হতে পারে আমার পুণ্যময় জীবন
কিংবা এক সমুদ্র পাপ নিয়ে আমি
মনের অজান্তে ঘুরছি
যে পথ দিয়ে হাটছি সে পথে
ডাল ভেঙ্গে মাথায় পড়তেই পারে
কিংবা ঝড় আসতেই পারে
এক কথা জীবন মানে কি?
বুক ভরা আশা নিয়ে অনিশ্চিত যাত্রা
নৌকা উঠলাম পাড়ে ফিরতে পারব কি?
অনেক যত্ন করেও আমার আধমরা গাছটি
বাঁচবে, তার-ই বা নিশ্চয়তা কিসের?
বাবা ফিরে আসবে না!
রাস্তাতে সেদিন এক বৃদ্ধকে দেখে বাবাকে মনে হল
ভাবলাম ইশ সত্যিই যদি বাবা ঘুরে আসত
এক লাফে কাছে গিয়ে বাবাকে জড়িয়ে ধরতাম
ঘরে আনলার দিকে তাকিয়ে বাবার পুরানো
পাঞ্জাবিটার দিকে চোখ পড়ে গেল
ভাবলাম ইশ সত্যিই বাবা যদি ঘুরে আসত
বাবা যা চাইত তাই দিয়ে খুশি করতাম
সেদিন বাবার হাতের লেখা একটা বাজারের মেনু
আমার চোখে পড়ল
মনে হল বাবার হাতের লেখা ,বাবার জামা কাপুড়
সব চেয়ে উপরে ,আরো উপরে যতটা যত্নে রাখা যায়
সেভাবে রেখে দিই
বাবা তুমি যদি ফিরে আসতে তোমার ওযু এক ঘন্টা
আগে তোমার পা ধুয়ে দিব বলে দাড়িয়ে থাকতাম
তোমার পরিচ্ছন্ন জুতো দুটো গায়ের জামা খুলে
আরেকটু পরিচ্ছন্ন করে দিতাম
বাবা আসবে না, রাস্তার ধারে কোন সাদা পাঞ্জাবি পরিহিত
বৃদ্ধ দেখলে বাবার কথা মনে হবে
চলার রাস্তা দেখলে মনে হবে
এই পথ দিয়ে আমার বাবা একদিন হেটেছিল
বাবার প্রতিটি ব্যবহৃত জিনিস আমাকে
বাবার কথা মনে করিয়ে দিবে।
আমার অবাক শিশুটি
——
আমাকে অবাক করে আমার শিশুটি
কোন একটি ঠুনকো বিষয়কে নিয়ে ও হেসে ওঠে
সামান্য একটা জিনিস নেড়েই ওর শান্তি
একে বারেই গুরত্বহীন একটি বিষয়ের দিকে
ও চেয়েই রইবে
ও কোন দিকে হেটে যাবে ও যেন নিজেই জানে না
এক নিশ্বাসে ও ছুটে যাবে ওর মার কাছে
আবার আমার কাছে ফিরে আসবে
এই বড় পৃথিবীকে আমার তেমন কোন সম্পদ নেই
আমার একটিই সম্পদ –আমার শিশুকে দেখলে
আমার চোখ ভরে
ও আমার দিকে এক নিশ্বাসে ছুটে আসে
ও আমাকে খুব ভালবাসে।
একলাই পাবে
——–
আমাকে একলাই পাবে
পথে পথে আমি একাই হাটি
একাই ভ্রমর হয়ে ফুলে ফুলে ঘুরি
একাই বনে আসি
নদীতে যাই
প্রিয়সী আমি একলাই থাকি
প্রতিদিন আকাশের সব তারা দেখা যাবে না
প্রতিদিন সব ভ্রমর দেখা যাবে না
প্রতিদিন সব জোস্না দেখা যাবে না
প্রিয়সী আমি একলাই আছি
একলাই কোলাহল পাশ দিয়ে যাই আসি
একলা একলাই সব খানে ঘুরে আসি।
সে-ই তো মানুষ
বৃষ্টির পানি যার গায়ে পড়ে সে-ই তো মানুষ
রোদ যার গায়ে লাগে সে-ই তো মানুষ
ঝড়ে যার চোখে ধুলি পড়ে সে-ই তো মানুষ
যে একটু কাঁদতে পারে হাসতে পারে
সে-ই তো মানুষ
যার গায়ে ধুলি লাগে সে-ই তো মানুষ
জীবনে চলার পথে যার গায়ে কলঙ্ক লাগে
সে-ই তো মানুষ
সবাই কাছে ভাল হতে পারেনি যে
সে-ই তো মানুষ
সবার বিবেচনায় বুদ্ধিমান নয় যে
সে-ই তো মানুষ
ব্যস্ততায় কপাল ঘামে যার সে-ই তো মানুষ
আলাপ চারিতায় সরলতা ভরা অনানুষ্ঠানিক মুখ যার
সে-ই তো মানুষ
এরকম মানুষকে হাত দিয়ে স্পর্শ করতে মন চায়
এরকম মানুষ এক পেট ভরে আহার করোতে মন চায়
এরকম মানুষ একটি ভাল পোশাক কিনে দিতে মন চায়
এরকম মানুষের সাথে মন ভরে গল্প করতে মন চায়।
খোদা ভালই রেখেছেন
খুব ব্যস্ত ছিলাম, একজন জিজ্ঞাসা করল কেমন আছেন?
কেমন আছি ভাবার সময় ছিল না
উত্তর দিলাম-খোদা ভালই রেখেছেন।
ভাল থাকি আর মন্দ থাকি কেউ যদি
জিজ্ঞেস করে –কেমন আছেন?
উমনি সহজ উত্তর –খোদা ভালই রেখেছেন
উল্টো যদি কাউকে বলে ফেলি-
আমি খারাপ থাকলে আপনি কি আমার সমস্যার
সমাধান দিতে পারবেন?
কথাটা বেমানান হবে
যাই হোক উক্ত উত্তরে আমার বেশ সুবিধে হয়
খুব ব্যস্ততার মাঝে ভাবতে হয় না
খারাপ আছি না ভাল আছি
বেশী বিশ্লেষণ করার-ও প্রয়োজন হয় না
কারণ খারাপ আছি বললে আবার খারাপ থাকার কারণ
বিশ্লেষণ করতে হবে
মোট কথা খোদা আমাকে ভালই রেখেছেন
যে অবস্থায় আছি সেই অবস্থায়-ই খোদার দান
ও অগোনিত দানে ভরা
সুতরাং খোদা আমাকে ভালই রেখেছেন।
ভালবাসা
যে ভালবাসা মাপা হবে না ,বোঝা হবে না
যে ভালবাসা কেউ জানবে না
জানা হবে না,জানা যাবে না
যে ভালবাসা বোঝানো যাবে না
বোঝা যাবে না,বোঝানো সম্ভব হবে না
সে ভালবাসা মূল পাবে না
যে ভালবাসা মূল্য দেওয়া যাবে না
যে ভালবাসা কান্না হয়ে পড়ে রইবে নদীর স্রোতে
যে ভালবাসা ধুলায় লুটিয়ে রবে
সে ভালবাসা খুব কষ্টের
খুব-ই কষ্টের ।
স্বর্গ পেলে সব স্বাদ মিটে যাবে
স্বর্গ পেলে সব স্বাদ মিটে যাবে।
———
জামা কাপড় কিনতে গিয়ে খুব ভাল একটা পোশাক
আমার পছন্দ হল,কিনার সামর্থ্য ছিল না
মনে মনে বললাম- সৎ ভাবে থাকি পরকালে
অনেক পরা যাবে
বাজারে খাসির ইলিশ মাছের ১০০০ টাকা কেজি
সামর্থ্যের অভাবে কিনতে নো পেরে বললাম-
ও থাক! স্বর্গ যদি পায় অনেক পাওয়া যবে
রাস্তাতে সেদিন এক রুপবতী নারী দেখে
মাথা গরম! কি আর করার!
মনে মনে বললাম- স্বর্গ যদি পায় অনেক হুর পরি পাবো
সমস্যা নেই
প্রতিদিন কিছু না কিছু খারাপ কাজের সুযোগ আসে
আমি জানি আমার মত সরল সোজা বোকা লোক
খারাপ করলেই ধরা খাবে
তাই নিজেকে শান্ত্বনা দিই, ও থাক!
সামান্যর জন্য খারাপ কাজ করে কি হবে?
স্বর্গ যদি পায় সব স্বাদ মিটে যাবে
জীবনে অনেক কিছুই মেলাতে পারিনি
জীবে জল আসে-লোভে লোভে
তারপরেও বলি স্বর্গ যদি পায় সব স্বাদ মিটে যাবে
ধর্মের একটি কথা দিয়ে নিজেকে খুব শান্ত্বনা দিই-
স্বর্গ যদি পায় সব স্বাদ মিটে যাবে
কিন্তু স্বর্গ যে পাব তার-ই বা গ্যারান্টি কিসের?
কিন্তু তারপরেও ধর্মের শেখানো বুলিটি
আমাকে সব সময় সৎ থাকতে উৎসাহিত করে-
স্বর্গ যদি পায় সব স্বাদ মিটে যাবে।
বয়সের দোষ
বয়সের দোষ
—-
ছোট বেলায় দোষ করলে মাছুম শিশু বলে
দোষ কেটে যেত
তরুন বয়সের দোষগুলো কেটে যেত
বয়স দোষ –এই হিসেবে
এখন মধ্য বয়সে কোন ভাবেই দোষ কাটাছে না
উল্লেখ্য দোষ করা আমার স্বভাব
আমি অন্যদের মত নয়
সেদিন চাকরির ভাইভাই হাফ শার্ট পরে গিয়েছিলাম
আমাকে এই অপরাধে ভাইভা থেকে
বের করে দেওয়া হল
মোটরসাইকেলে ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই বলে
দিতে হল জরিমানা
মানে এই বয়সটা নিয়ে আমার খুব গা জ্বালা করছে
কোন ভাবেই দোষ কাটাতে পারছি না
দোষ করাও বন্ধ হচ্ছে না
ফলে মাশুল দিতে দিতে শেষ হয়ে যাচ্ছি।
আমি সুখি না
————
সুখ গাছের সব আম আমার ব্যাগে
কিন্তু যে দু একটি আম কোন রকমের
পাতার ভেতরে লুকিয়ে আছে
সেগুলোর জন্য আমার ঘুম নেই
মোট কথা আমি দুখি মানুষ
হতে পারে এটা আমার পাপের ফল
কিংবা মানসিক সংকীর্ণতা
পুকুরের সব মাছ আমার ব্যাগে
কিন্তু যে দু একটি মাছ পুকুরে কোন রকমে পুকুরে
লুকিয়ে আছে-সেগুলোর জন্যে আমার ঘুম নেই
এক কথা আমাকে যে কোনভাবে
দুশ্চিন্তারা ঘিরে ফেলে
আগামী পঞ্চাশ বছরের খাবার আমার
সংগ্রহে আছে
আগামী পঞ্চাশ বছরের পোশাক আমার
স্টকে আছে
আমার সাড়ে তিন হাত দেহ থাকার জন্যে
ছয় কুটরি বিশিষ্ট দোতালা একটি ঘর-ও আছে
আর বহু টাকাও আছে
তারপরেও আমার সুখ নেই
সুখ না থাকায় কি আমার বৈশিষ্ট
আমি কি সুখ চাইনি?
খাদ্য,বস্ত্র ,বাসস্থান,শিক্ষা,চিকিৎসা
এই আমার মৌলিক চাহিদা মিটে গেছে
মোট কথা আমার আর কি দরকার?
তাহল সুখী না হওয়াটাই হয়ত
আমার আসল বৈশিষ্ট্য।
শরীরটা পঁচে যাবে
——-
সেদিন গায়ে সাবান ঘসতে ঘসতে মনে হল
এই শরীরটা তাহলে একদিন পঁচে যাবে?
কি বিপদ! এত আদরের শরীর আমার
এত সুন্দর জামা, সুন্দর খাবার খেয়ে
শরীরটাকে খুব মজবুত রাখি
তাহলে কি শরীরের যত্ন ছেড়ে দিব?
বিষয়টা ভাবতে ভাবতে অবাক হলাম
এখন শরীরের কথা ভাবলেই মনে হয়
শরীরটা তাহলে পঁচে যাবে
তাই আর শরীরটা নিয়ে ভাবছি না
যেটা পঁচবে না, সেটা মন
সেটার যত্নেই বেশী নিব-ভাবছি।