মোঃ বোরহান উল ইসলাম এর সকল পোস্ট

মোঃ বোরহান উল ইসলাম সম্পর্কে

আমার আঙ্গুলের ছাপের সাথে আর কারো আঙ্গুলের ছাপ মিলবে না। অতএব, সৃষ্টি থেকে ধ্বংস অবধি আমি একটাই। হও পরের লাগি পাহাড়সম হও আপনার লাগি সমতল, তবেই মিলিবে ত্যাগ-তৃপ্তি হবে সার্থক তোমার পদতল। ---- মোঃ বোরহান উল ইসলাম। ৫৭০০.

ঈশানী….

শাহারা’র উত্তপ্ত বালুরাশি মাড়িয়ে
রাজস্থানের গ্রামগুলো পেরিয়ে
কাঞ্চনজঙ্ঘা ডিঙিয়ে,
অম্বরে খচিত হলো একটা ময়ূরপঙ্খী নাও।
সেখান হতে বর্ষার ধারায় ঝড়ে পড়ল
একদল পত্রবাহক।
পত্র এলো তাকে খুজে পাওয়া গেছে।
ঈশানে নিবাস তার শ্রেয়সী অতি,
দুহাত ভরা তার সাতটি অমরাবতী।
তার নেত্রের কোন ঘেষে বয়ে যাওয়া বাতাসে
উত্তর মেরুতে আজও কনকনে শীত।
তার চিন্ময়ী হাসি দেখেছিল একদল টুনটুনি,
তারা আনন্দে পথ হারিয়েছিল,
ধরা’তে আর নামতেই পারেনি।
তার কর্ণের ঝুমকোয় কি যেন ঘষা লেগেছিল,
সেটি ধ্রুবতারা হবে বলেই ধারণা পত্রবাহকের।
তার রিনিঝিনি হাসিতে আন্দোলিত হয়
আমাজনের গহীন পথ।
ধারণা করা হয় সে যদি আবার হাসে,
কাশ্মীরেও শান্তি ফিরবে।
ধারণা করা হয়
তার চুলের দিকে কেউ তাকালে
তার কষ্টিপাথর হবার ভীষণ সম্ভাবনা।
পত্রবাহকের ব্যাখ্যায়, পথ হারিয়ে
একটি লাল পিঁপড়া উঠেছিল তার পায়ে।
পিঁপড়েটা আর কামড়ায় না।
সে এখন শান্তির পতাকা ওড়ায় মায়ানমারে।
পত্রবাহকের ভাষ্যমতে
তার কাছে সাতটি অমরাবতী আজও আছে।
শুনে আমি পূর্ব আর উত্তরকে পত্র দিয়ে
রওনা দিলাম ঈশানে।
পথের মাঝে আমি পথিক হব,
পথের মাঝে আমি শেরপা হব,
আমি সাতার দেব,
আমি বেদুইন হব।
তবুও ওই সাতটি অমরাবতীর অধিকারিকে
আমার চাই।

আমায় দু’ক্ষণ ঠাঁই দিও….

চলো.. দুজনে দু’টো পায়রা কিনব,
দু’টো পায়রায় পাল্লা দেব।
একটিকে খাওয়াবো আমার আবেগ
আরেকটিকে তোমার অবজ্ঞা।
তোমার অবজ্ঞাভরা পায়রা ডানা মেলতেই
আমার আবেগভরা পায়রা’টা;
আগ্রায় দু’টো চক্কর দিয়ে
যেয়ে তোমায় ছুঁয়েও নেবে..তুমি দেখে নিও!
সেদিন তোমার পাশে আমায় দু’ক্ষণ ঠাঁই দিও।

চলো.. একদিন দু’টো নদী কিনব,
দু’জন পাড়ে দাঁড়িয়ে রব।
একটিতে ভাসাবো আমার ভালোবাসা
আর একটিতে তোমার অনীহা।
আমার ভালোবাসার নদী উছলে যাবে;
তোমার অনীহার নদী বইতে গিয়েই
শুকিয়ে যাবে..তুমি দেখে নিও!
সেদিন তোমার পাশে আমায় দু’ক্ষণ ঠাঁই দিও।
সেই শুকনো নদীর বুকেই নাহয়
আমায় দু’ক্ষণ ঠাঁই দিও..

তোমার নগরীতে….

কেউ কি বলেছে তোমায়!
তোমাকে গড়ার নথি’গুলোর প্রথম পাতায়
বেশ কিছু শিল্পের অস্তিত্ব আছে!
তোমার চোখ, তোমার চিবুক, তোমার ঠোঁট,
আর; নগরীর বুক চিরে তোমার সরু নাক
হয়ে উঠেছে নগরীর প্রধান সড়ক!

ওদিকে কিছু নিগ্রো জনপদ
চুলের ছদ্মবেশে বাস করে নগরীতে।
কেউ কি বলেছে তোমায়!
তোমার চোখের চেয়ে প্যারিস গড়তে
কিছু সময় কম লেগেছে।
তোমাকে গড়ার ইতিহাসের খোঁজে
জোনাকির বেশে কিছু দার্শনিক
পথ হারিয়েছে তোমার নগরীতে।

তুমি কি জ্ঞাত আছ!
তোমাকে সৃষ্টি করা হয়েছে;
তোমাকে গড়া হয়েছে ভীষণ এক মায়ায়!
শ্যামলা ইট-পাথর আর
চুন-সুরকির সুষম বন্টনে
গড়ে উঠেছে তোমার নগরী।

নির্মাণ হয়েছে পিপাসা নামক
বিশালাক্ষী এক ফোয়ারার।
পরিব্রাজকের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে
নগরীতে অস্তিত্ব দাও,
আমি এক আঁজলা পিপাসা নেব।
দ্রুতপদে হাঁটব বলে
বহুবার আবেদন করেছি নগরীর ফটকে!
কেউ কি বলেছে তোমায়!

তোমার চুলের গন্ধ নেব এক দীর্ঘ বসন্ত জুড়ে..

তোমার চুলের গন্ধ নেব এক দীর্ঘ বসন্ত জুড়ে।
নাফ নদীর মাঝে কোন ভেলায় ভেসে,
কিংবা ভাওয়ালের শালবনে মাচা পেতে।
তুমি যদি বলো যাব আমাজনের তীরে;তবু
তোমার চুলের গন্ধ নেব এক দীর্ঘ বসন্ত জুড়ে।

সকাল যাবে, দুপুর হবে,মাঝে মাঝে সন্ধ্যা হবে
অপলক তাকিয়ে রবো তোমার সিঁথির দিকে
ক্লান্ত হয়ে জোনাকিরা ফিরে যাবে নীড়ে; তবু
তোমার চুলের গন্ধ নেব এক দীর্ঘ বসন্ত জুড়ে।

হোক ঝড়, হোক বৃষ্টি; ভিজে যাক তোমার চুল
রেগিস্তানের হাওয়া এনে শুকিয়ে নেব,
চীনা’দের ডেকে এনে গুছিয়ে নেব
জৈষ্ঠ্যের সুবাস এনে মাখিয়ে নেব
যদি বলো বাকী পাঁচটি ঋতু!
তোমা হতে রবো সহস্র ক্রোশ দূরে; তবু
তোমার চুলের গন্ধ নেব এক দীর্ঘ বসন্ত জুড়ে।

তোমার দূরত্ব আমার ভীষণ প্রিয়!

তোমার দূরত্ব আমার ভীষণ প্রিয়!

তোমার দূরত্বে,
আমার প্রতিটি ক্ষণকাল
রূপ নেয় মহাকালে।
সেই তোমাকেই দর্শিলে,
কয়েকশত মহাকাল
গুটিয়ে আসে,
হয়ে যায় ক্ষণিকের উল্কাপাতের সময়কাল।
তোমার অবহেলায়,
বয়ে চলা আমার ক্ষুদ্র জীবন
রূপ নিয়েছে লক্ষ বছরের
দীর্ঘ এক নদীপথে।
একজীবনে লক্ষবছর বয়ে চলার স্বাদ!
হোক সে তিক্ত!
মাঝে মাঝে তুমি তীরে এসো
আমি বয়ে যাব ….
লক্ষবছর, লক্ষবছর, লক্ষবছর,,,,,