আরণ্যক এর সকল পোস্ট

আরণ্যক সম্পর্কে

জীবনের অন্তরীপে ঘুরে ফিরে নিজেকে খুঁজে পাই অরণ্য অন্তরীণে।

সুপ্ত আশার হাতছানি

এখনো স্বপ্ন প্রস্তুত- হাজার ক্লান্তির ঘুমের ঘোরে;
সুখের কারুকাজ দিয়ে সাজাতে এক স্নিগ্ধ ভুবন।
এখনো শীতের সকালে পূর্বাকাশে রোদেলা অস্তিত্বকে
সর্বস্ব উজাড় করে ভালবাসি বলে হিমেল সুজন।
বন্ধু চলো না স্বপ্ন দেখি।
প্রিয় হাসি অধরে মেখে মুছে ফেলি সজল আঁখি।

এখনো জীবন জড়ায় নিঃস্বার্থ আলিঙ্গনে,
হৃদ-মাঝারের প্রাচীর বনে যায় স্বপ্ন সোপানে।
এখনো নগ্ন দুপুরে বৃষ্টি খুঁজে শেষ ঠিকানা
ঘাসফুলের দিগন্তে মিশে যাওয়া রংধনুর মনে।
বন্ধু চলো না হারাই অজানাতে।
অশ্রু-শিশির-বৃষ্টি একাকার করে রোদ্দুর খুঁজি অনন্তে।

কিংবদন্তির স্বপ্ন

পথ চেয়ে তার সন্ন্যাস যাপন,
বহুদিন পর ঘুণে ধরা মলিন স্বপ্নটাকে নতুন করে দেখা।
ঝরা পাতার শেষ প্রলোভন,
নির্লিপ্ত মন জুড়ে তার এক অজানা আবেগের প্রীতি মাখা।

তার কারণে দুঃখ দুঃখ খেলা,
নিজের কাছ থেকে নিজের প্রতিনিয়ত পালিয়ে বেড়ানো।
অশ্রুসব বারবার হারিয়ে ফেলা,
সহিষ্ণু মনকে তার জন্য অকারণ মায়াতে ভুল বোঝানো।

চেতনায় তার অস্পষ্ট ছায়া,
জোর করে অস্তিত্ব জুড়ে অনুভূতিগুলোকে ভিজিয়ে তোলা।
স্মৃতি সমুদ্রে ডুব ডুব খেঁয়া,
তার কষ্টের শিখায় ভস্ম দু’চোখ প্রিয় ব্যথা নিয়ে খোলা।

কল্পনার বাইরে হঠাৎ তাকে পাওয়া,
আধো রাতের আকাশ ক্ষত তারায় জমা কথাগুলোর নির্নিমেষ উচাটন।
বিষণ্ন চোখে তার উদাস চাওয়া,
প্রতিদিন প্রতীক্ষায় বর্ণালী ভাবনার অবসানে এলোমেলো শত আলাপন।

নিশ্চুপ কতক মুহুর্তের বিনাশ,
হৃদয়ের সমস্ত জমানো কথা একবারে বলার ঝোঁক।
অজানা মধুর বাঁধনের আশ্বাস,
গন্ডদেশে শত প্রত্যাশার পূর্ণতায় ভীত-সন্ত্রস্ত শোকা।

নিঝুম নিরবতায় তার ভালো লাগা,
নিষ্কলঙ্ক আবেশে মুক্ত মন; বাইরে স্বনীতির নির্ঘুম পাহাড়া।
দ্বিধার মাঝেও তার সম্মতি জাগা,
ব্যক্তিত্বের জয়-পরাজয়ের আড়ালে ভালবাসার পায়তারা।

যে মন হতে পারে আবৃত,
অবাক বনে চেয়ে চেয়ে যে দেখে তার মায়ার বিন্দুগুলো আসন্ন।
হৃদয়ে তারই স্রোত নৃত্য,
গ্রহণের দিন তাই তাকেই নিঃশেষে হারায় গহীন প্রেমের অরণ্য।

নীল নিসর্গ

ঘোলাটে রাত্রি জুড়ে মলিন স্বপ্নগুলোর
স্পর্ধা বাড়ে নক্ষত্রের নিষেধাজ্ঞা পেরিয়ে,
স্মৃতির ভাঙা ষ্টেশনে শুকনো পাতার হাহাকারে।
ধীরে ধীরে ফিরে আসা আবার সেই হিমেল পবনের;
যার আলতো পরশে উদাস চোখের পাতায় ক্লান্তি নামে না।
নিরব আধারের মঞ্চে বিষণ্ণতার সুর বাঁজে,
সুখের সোনালী বীণায়।

হাজার তারার ভীড়ে কিছু তারা খুঁজে না পাওয়া;
ভাবনার ক্যানভাসের নদীটিতে হঠাৎ চর জেগে ওঠা,
হঠাৎ করে ভুলে যাওয়া কিছু চিরন্তন কথা।
অগ্রহায়ণের বেসুরো সঙ্গীতে হঠাৎ নিজেকে ফিরে পাওয়া।
অশান্ত মেঘের নিচে অস্বস্তির মাঝে কুয়াশা দেখা,
নীল নিসর্গে অম্লান কিছু ফেরারী গল্প অকস্মাৎ খুঁজে পাওয়া।

দেখা কিছু নষ্ট অভিলাষ।
কিছু ভুল করা ভুল যতন করে পরখ করা;
অতঃপর মুখ বুজে সহ্য করা- সে ভুলগুলোর হারিয়ে যাওয়া।
মিনতি ভরে দু’হাত জড়ো করে বালু নেয়া
স্মৃতি সৈকত থেকে আর দুরে তাকিয়ে দেখা-
জাহাজের ধ্বংসাবশেষ; যার তীরে পৌছার স্বপ্ন প্রতিদিনি আসে।

তবুও নগ্ন পায়ে দৃষ্টি শূন্য চোখে প্রতিনিয়ত;
নীলিমায় গোধূলি হারায় যেখানে,
ঘরে ফেরা পাখির শেষ ডানা ঝাপটানো দেখা যায়।

চিরকুট কবিতা

ফেরারী মন

শঙ্খ শঙ্খ করে আজ অবধি নীলান্ত সুরের মূর্ছনা,
সাদা ক্যানভাসের গায়ে ধূসর রাশি রাশি;
পাষাণ পথে দৈন্য মেলা, অবসন্ন বোধে তেপান্তরের দিক।
এদিকে ঢেউ ছুঁয়ে সাগরের সাথে চুপি চুপি পত্রমিতালী,
নাটাই হাতে ঘুড়ি নিয়ে ছুটে বেড়ানো রংধনুর পিছু পিছু।
অবশেষে সান্ধ্য অবকাশে দীপশিখার শিয়রে নিয়ে আসা
আমার সেই ফেরারী মন।
_______________________________

প্রতিনিয়ত ভাবি

ভ্রমণ শেষে ফেলে আসা দিকচক্রবাল;
বারান্দার গ্রিলে আলতো করে ছোঁয়া
নীলান্তর হবার আশায়।
এদিকে আমার উদাসীনতায়
বিন্দু বিন্দু আষাঢ়-শ্রাবণ তোর চোখে
উপন্যাস হয়ে যায়।
আজ বারি শিকলে বন্দি দু’চোখে
প্রতিনিয়ত ভাবি,
সত্যি কি সেদিন তুই কেঁদেছিলি?