থার্ড আই এর সকল পোস্ট

বাংলাদেশে সফটওয়্যার শিল্পের বিকাশে মূল প্রতিবন্ধকতাগুলো

বাংলাদেশে সফটওয়্যার শিল্পের বিকাশের বিশাল সম্ভবনা আছে। বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম অত্যান্ত মেধাবী আর জাতিগতভাবে পরিশ্রমি। যদিও রাজনীতিতে ক্ষমতার দ্বন্ধে অবৈধ উপায়ে নির্বাচন করে তাকে বৈধতার প্রলেপ দেয়ার জন্য সরকার কর্তৃক নানাবিধ পদক্ষেপ দূর্ণীতির ধাবিত করছে তথাপিও এই সরকার এই শিল্প বিকাশের কথা বলছে বারবার। কিছু প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও এই শিল্পের বিশাল সম্ভবনা রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ
মহল।

প্রতিবন্ধকতাসমূহঃ
দক্ষ সফটওয়ার ডেভেলপারের অভাব।

দক্ষ সফটওয়্যার ডেভেলপার হতে হলে দরকার প্রচুর অনুশীলন। তাই প্রথম সেমিস্টার থেকেই তা শুরু করতে হবে। পাঠ্যক্রমে যা আছে শুধু তার ভেতর সীমাবদ্ধ থাকা যাবেনা। পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের সাথে ভালো সফটওয়্যার ডেভেলপারের কোনো সম্পর্ক নাই। তাই পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের জন্য লেখা পড়া করার বাইরে অতিরিক্ত সময় বের করে প্রোগ্রামিং অনুশীলন করতে হবে।

অনেক শিক্ষার্থীই ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইটে কাজ করছে, বিষয়টিকে পজেটিভে ভাবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। যেহেতু তারা উন্নত দেশের কাজগুলো করছে সেহেতু মার্কেটে টিকে থাকতে তাদেরকে প্রফেশনাল হতে বাধ্য করছে। বিশ্ববাজার এ নিজের অবস্থানকে তুলনা করার সুযোগ পাচ্ছে। যা তাদের এবং বাংলাদেশের ভবিষৎতের জন্য খুবই গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।

তবে সবচেয়ে বেশি প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে অবকাঠামোগত উন্নয়ন।

অবকাঠামো উন্নয়নে যে দুই-তিনটি বিষয় এ এখন খুব বেশী গুরুত্ব দেয়া দরকার বলে মন করা হচ্ছে তা হলোঃ
১. সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎত নিশ্চিত করা
২. বিভাগীয় সহর গুলোর সর্বত্র সার্বক্ষণিক উচ্চগতীর ইন্টারনেট নিশ্চিত করা (ভুলে যেতে হবে ইন্টারনেট সংযোগ নাই বলে কোনো বিষয় আছে)
৩. কপিরাইট আইনের সঠিক বাস্তবায়ন (পাইরেসি)
৪. ইন্টারন্যাশনাল ব্যাঙ্কিং কে আরো সহজ করা
৫. বড় বড় IT কোম্পানিগুলোর জন্য IT পার্ক করা এবং শহরের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা

হয়ত সবই হবে, তবে যত তাড়াতাড়ি হবে তত আমরা তাড়াতাড়ি এগোব।
বর্তমান সরকার যদি শুধু উন্নযনের শ্লোগানে না থেকে সঠিক পদক্ষপে এগিয়ে আসেন তবে সকল প্রতিবন্ধকতা সহজে উৎরে যাওয়া সম্ভব।

অাবু লুলু কি প্রথম আই এস

খারেজীদের বিষাক্ত ছোবলে কলঙ্কিত ইসলামের ইতিহাস :

খলীফা আবুবকর ও ওমর (রাঃ)-এর সময় খারেজীরা মাথাচাড়া দিতে পারেনি। কিন্তু আবু লু’লু নামক জনৈক অগ্নিপূজক বাহ্যিকভাবে ইসলাম গ্রহণ করে গোপনে মদীনায় প্রবেশ করে। ২৩ হিজরীর ২৬শে যিলহজ্জ তারিখে ওমর (রাঃ) ফজরের ছালাতে ইমামতি করছিলেন, এমন সময় সে ছদ্মবেশে প্রথম কাতারে অবস্থান নেয়। অতঃপর সুযোগ বুঝে তীক্ষ্ণ তরবারী দ্বারা তিন অথবা ছয়বার তাঁর কোমরে আঘাত করে। তিনদিন পর তিনি শাহাদত বরণ করেন। ফলে চরমপন্থী তৎপরতার পুনরুত্থান ঘটে। উল্লেখ্য, ঐ দিন সে আরো ১৩ জন ছাহাবীকে আঘাত করে। তন্মধ্যে ৯ জন শাহাদত বরণ করেন। ঐ ঘাতক পালিয়ে যেতে না পেরে নিজের অস্ত্র দ্বারা আত্মহত্যা করে।

ইহুদী আব্দুল্লাহ বিন সাবার ষড়যন্ত্রে খারেজী চরমপন্থীদের হাতেই ৩৫ হিজরীর ১৮ই যিলহজ্জ তারিখ জুম‘আর দিন রাসূল (ছাঃ)-এর জামাতা ৮২ বছর বয়সী ওছমান (রাঃ) নির্মমভাবে শাহাদত বরণ করেন। নাহরাওয়ানের যুদ্ধে বেঁচে যাওয়া খারেজীরা প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন যাবৎ প্রস্ত্ততি গ্রহণ করে। অতঃপর তারা আলী (রাঃ)-কে হত্যা করার জন্য গোপনে আব্দুর রহমান বিন মুলজামকে ঠিক করে। অনুরূপভাবে মু‘আবিয়া (রাঃ)-এর কে হত্যা করার জন্য বারাক বিন আব্দুল্লাহকে এবং আমর ইবনুল আছ (রাঃ)-কে হত্যা করার জন্য আমর বিন বাকরকে নির্বাচন করে। এভাবে তারা একই দিনে হত্যা করার জন্য অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়ে বেরিয়ে পড়ে। আব্দুর রহমান বিন মুলজাম তার দু’জন সহযোগী ওরদান ও শাবীবকে সঙ্গে নিয়ে ৪০ হিজরীর ১৭ই রামাযান জুম‘আর রাতে কূফায় গমন করে। ফজরের সময় আলী (রাঃ)-এর বাড়ীর দরজার আড়ালে অস্ত্র নিয়ে ওঁৎ পেতে থাকে। তিনি বাড়ী থেকে বের হয়ে যখন ‘ছালাত’ ‘ছালাত’ বলে মানুষকে ডাকতে ডাকতে মসজিদের দিকে যাচ্ছিলেন, তখনই তারা আলী (রাঃ)-এর মাথায় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। এতে তাঁর দাড়ি রক্তে রঞ্জিত হয়ে যায়। তৎক্ষণাৎ তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এ সময় আলী (রাঃ)-কে লক্ষ্য করে ঐ রক্তপিপাসু বলেছিল,لا حكم إلا لله ليس لك يا علي ولا لأصحابك، ‘হে আলী! আল্লাহ ছাড়া কারো বিধান নেই। তোমার জন্যও নেই এবং তোমার সাথীদের জন্যও নেই হে আলী’। তাকে হত্যা করার কারণ জিজ্ঞেস করলে সে বলে উঠে,شحذته أربعين صباحا وسألت الله أن أقتل به شر خلقه ‘আমি চল্লিশ দিন যাবৎ তরবারিকে ধার দিয়েছি এবং আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করেছি, আমি যেন এই অস্ত্র দ্বারা তাঁর সৃষ্টির মধ্যে সর্বনিকৃষ্ট ব্যক্তিকে হত্যা করতে পারি’ (নাঊযুবিল্লাহ্)।

আলী (রাঃ) বলেছিলেন, আমি মারা গেলে তোমরা তাকে হত্যা করবে। আর বেঁচে থাকলে আমিই যা করার করব। কিন্তু তিনদিন পর ৪০ হিজরীর ২১শে রামাযান ৬৩ বা ৬৪ বছর বয়সে তিনি শাহাদত বরণ করেন। ঐ দিন একই সময় মু‘আবিয়া (রাঃ)-কে আঘাত করলে তিনি প্রাণে বেঁচে যান। আমর ইবনুল আছ (রাঃ) ভীষণ অসুস্থ থাকায় তিনি সেদিন মসজিদে আসতে পারেননি। ফলে তিনি বেঁচে যান। তবে তাঁর স্থলাভিষিক্ত ইমাম খারেজাহ ইবনু আবী হাবীবাকে ঐ ঘাতক হত্যা করে। এভাবেই খারেজীরা খুলাফায়ে রাশেদার মত জান্নাতী ও বিশিষ্ট ছাহাবীগণের প্রাণনাশ ঘটিয়ে ইসলামের সোনালী ইতিহাসকে কলংকিত করে।

খারেজীদের একটি ব্যাখ্যা ও জবাবঃ( আই এস রাও এ ধরনের বক্তব্য দিয়ে যুব সমাজকে বিভ্রান্ত করছে)

: মহান আল্লাহ বলেন,وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللهُ فَأُولَئِكَ هُمُ الْكَافِرُوْنَ ‘যে সব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তদনুযায়ী ফায়ছালা করে না তারা কাফির’ (মায়েদা ৫/৪৪)। খারেজীদের দাবী এ আয়াত সকল প্রকার পাপীকে অন্তর্ভুক্ত করে। কেননা তারা আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তদনুযায়ী ফায়ছালা করে না। সুতরাং তাদের কাফের হওয়া ওয়াজিব হয়ে যায়।

জবাবঃ

অত্র আয়াতটি তাদের জন্য প্রযোজ্য, যারা আল্লাহর বিধানকে অস্বীকার করে এবং গায়রুল্লাহর বিধান দিয়ে ফায়ছালা করাকে বৈধ মনে করে। কিন্তু যে আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখে এবং স্বীকার করে যে, তাঁর বিধান সত্য, তাহ’লে সে কাফির নয়, সে পাপী হিসাবে গণ্য হবে কুফরীর সুস্পষ্ট প্রমাণ না পাওয়া পর্যন্ত। সারা পৃথিবীতে যখন মুসলিম উম্মাহ বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত। নেতৃত্বসহ নানাবিধ বিষয় নিয়ে শতধাবিভক্ত। এমনি করুণ মুহূর্তে এ বিদ‘আতী খারেজী দলের তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। মুসলিম শাসকদের দোষ-ত্রুটির কারণে তাদেরকে কাফের, মুরতাদ ফৎওয়া দেওয়া এবং তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা খারেজীদের ধর্ম। এই বিষয়টি এত ধ্বংসাত্মক যে, আপনি প্রত্যেকটা আক্বীদার কিতাব খুলে দেখুন মুসলিম শাসকদের অন্যায় বা যুলুম-অত্যাচার সত্ত্বেও সৎকাজে তাদের প্রতি অনুগত থাকা এবং কোন মতেই বিদ্রোহ না করার কথা বলা হয়েছে।

– See more at: http://at-tahreek.com/site/show/1030#sthash.VaLMACnf.dpuf
– See more at:
http://at-tahreek.com/site/show/1030#sthash.VaLMACnf.dpuf
– See more at:
http://at-tahreek.com/site/show/1030#sthash.VaLMACnf.dpuf

স্রেফ হাসা পাগলের লক্ষন কি

কোনও কারণ ছাড়াই আপনি কোনও দিন হেসেছেন? কোনও জোক শোনেননি, কেউ কোনও রসিকতাও করেননি, অথচ আপনি হাসছেন৷ কিন্তু এমনটাই ঘটাচ্ছেন অনেক মানুষ যাঁরা সিরিয়াসলি কারণ ছাড়াই হাসতে চাইছেন শুধু হাসবেন বলেই৷ তাঁরা মনে করেন হাসি হল সব সমস্যার সমাধান৷ কেন, জেনে নিন…

ভুগে ভুগে ক্লান্ত? স্রেফ হাসুনj

আমরা সকলেই জানি কাজের চাপ আমাদের স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটায়৷ জেনে রাখুন, হাসি হল স্ট্রেস এবং ডিপ্রেশনের অ্যান্টিডোট৷ পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে আমাদের ইমিউন সিস্টেমে হাসির একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে৷ তাই সিদ্ধান্ত নিন স্ট্রেস আর টেনশনকে দূরে সরিয়ে রাখার জন্য এবার থেকে কারণ ছাড়াই হাসবেন৷ হাসলেই রোগ মুক্তি৷

কাজে উত্‍সাহ পাচ্ছেন না? স্রেফ হাসুন

আমরা প্রত্যেকেই কোনও না কোনও সময়ে কাজ করতে করতে কাজের প্রতি উত্‍সাহ হারিয়ে ফেলি৷ উত্‍সাহ ফিরিয়ে আনার একমাত্র রাস্তা হল যখনই সময় পাবেন সমস্যাকে তুড়ি মেরে হাসতে থাকুন সহকর্মীদের সঙ্গে৷ লক্ষ্য করবেন পর মুহূর্তেই আপনার স্ট্রেস লেভেল উধাও৷ প্রতিটি কর্মক্ষেত্রেই কর্মাধ্যক্ষের উচিত একটা লাফটার সেশন রাখা৷ এটা থাকলে প্রোডাক্টিভিটি বাড়বে, বাড়বে সংস্থার লাভ৷

লেখা-পড়ার চাপে ভুগছেন? স্রেফ হাসুন

পরীক্ষায় ভালো নম্বরের জন্য বাবা-মা এবং গৃহশিক্ষকদের চাপে বাচ্চাদের প্রাণ ওষ্ঠাগত৷ বাচ্চারা যদি নিজের মনে খানিক হেসে নেয় তাহলে শরীরে নতুন এনার্জি পাবে এবং লেখা পড়ায় আরও ভালো করার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী হয়ে পড়বে৷ গবেষকরা বলেন হাসি শিক্ষার্থীদের লেখা-পড়ায় মনোনিবেশ এবং বুদ্ধি বাড়ানোর ব্যাপারে সহায়ক৷ অতএব, বাচ্চারা বাবা-মা এবং গৃহশিক্ষকদের ভয় না পেয়ে যদি তাদের সঙ্গে অকারণে খানিক হেসে নেয়, তাহলে তাদের উপকারই হবে৷ তাই তাদের হাসতে শেখা উচিত, শেখার জন্য হাসা উচিত৷

সম্পর্কের জটিলতায় ভুগছেন? স্রেফ হাসুন

আপনি পারিবারিক কিংবা লাভ-লাইফের সঙ্কটে ভুগছেন? এই সঙ্কট থেকে বেরিয়ে আসতে চান? এরকম জটিল ক্ষেত্রেও গবেষকদের প্রেসকিপশন হল চিত্‍কার করে হাসুন৷ আপনার নিজের সমস্যার কথা ভাবতে-ভাবতেই হাসুন৷ জোরে-জোরে হাসুন, সঙ্গে নিন যাঁকে ঘিরে সমস্যা তাঁকে৷ শুরুর দিকে আপনাদের দু’জনেরই অস্বস্তি হবে এই ভেবে যে মাথার বুঝি ঠিক নেই৷ কিন্ত্ত পরমুহূর্তে লক্ষ্য করবেন সেই অস্বস্তি কেটে গিয়েছে এবং অকারণে হাসতে দু’জনেরই ভালো লাগছে৷ ব্যাপারটা বেশ মজার তাই না? এটা প্রমাণিত সত্য যে হাসি একই সঙ্গে চাপ কমায় এবং যে কোনও ধরনের ব্যাধির সেরা ওষুধ৷ তাহলে অকারণে হাসিকে আমাদের জীবনের অঙ্গ করে নিতে আপত্তি কোথায়? তাই মন খুলে হাসতেই থাকুন৷ স্রেফ হাসুন৷

———-
কালের কন্ঠ। ১ফেব্রুয়ারী ২০১৬

আত্মহত্যা, ইসলাম ও আই এস

মানুষ আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় এবং সেরা সৃষ্টি (ইসরা ১৭/৭০)। মানুষকে আল্লাহ ‘নিজের দু’হাত দ্বারা সৃষ্টি করেছেন’ (ছোয়াদ ৩৮/৭৫)। অতএব জীবন দানের মালিক যিনি, তিনিই কেবল জীবন নিতে পারেন। কেউ তাতে অন্যায়ভাবে হস্তক্ষেপ করলে সে মহাপাপী হবে এবং জাহান্নামী হবে। তাই তিনি মানুষকে নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, তোমরা নিজেদেরকে হত্যা করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের প্রতি অত্যন্ত দয়াশীল’ (নিসা ৪/২৯)। তিনি সাবধান করে বলেন, যদি কেউ সীমা লংঘন ও অত্যাচার বশে এ কাজ করে, তাহ’লে সত্বর আমরা তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করব’ (নিসা ৪/৩০)। অতঃপর যদি কেউ আল্লাহ্র নিষেধাজ্ঞাকে সম্মান করে আত্মহত্যার মত কঠিন পাপ থেকে বিরত হয়, তার জন্য মহা পুরস্কার ঘোষণা করে আল্লাহ বলেন, ‘যদি তোমরা কবীরা গোনাহ সমূহ থেকে বিরত হও, যা থেকে তোমাদের নিষেধ করা হয়েছে, তাহ’লে আমরা তোমাদের পাপ সমূহ মার্জনা করব এবং তোমাদেরকে সম্মানজনক স্থানে প্রবেশ করাব’ (অর্থাৎ জান্নাত দান করব) (নিসা ৪/৩১)।

আত্মহত্যা মহাপাপ। এরপরেও মানুষ আত্মহত্যা করে। নিঃসন্দেহে সেটি করে যখন তার সামনে কোন উপায়ান্তর না থাকে। এরপরেও কোন মুমিন আত্মহত্যা করতে পারে না। কেননা এটা করলে সে ইহকাল ও পরকাল দু’টিই হারাবে। তাকে এ বিশ্বাস রাখতে হবে যে, উপায়-উপাদানের মালিক আল্লাহ। নিরুপায় মানুষ আল্লাহ্র উপর একান্ত ভরসা করে বৈধ পন্থায় চেষ্টা করে গেলে আল্লাহ অবশ্যই তার জন্য উত্তম পথ বের করে দিবেন। এ ব্যাপারে তিনি তার অনুগত বান্দাদের আশ্বস্ত করে বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে, তার জন্য তিনি উপায় বের করে দেন এবং তাকে এমন উৎস থেকে রূযী দেন, যা সে কল্পনাও করেনি’ (তালাক ৬৫/২-৩)। তিনি বলেন ‘যারা আমাদের পথে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায়, অবশ্যই আমরা তাদেরকে আমাদের পথসমূহে পরিচালিত করব। আর নিশ্চয়ই আল্লাহ সৎকর্মশীলদের সাথে থাকেন’ (আনকাবূত ২৯/৬৯)
(মাসিক আত-তহরীক থেকে সংগৃহিত)

সম্মানিত পাঠকবৃন্দ! বর্তমানে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে চরমপন্থা একটি বড় ফিৎনা রূপে আবির্ভূত হয়েছে। কিছু পথভ্রষ্ট মুসলমান আত্মহত্যার মাধ্যমে ভীতি সঞ্চারকে বৈধ ও উত্তম কাজ মনে করছে এবং তরুণ ও যুবকদেরকে ভুলিয়ে এর ক্রীড়নকে পরিণত করছে। যখন তাদের পক্ষ থেকে চরমপন্থী কার্যক্রম পরিচালিত হয়, তখন তাদেরকে দমন করার নামে আমেরিকা ও ইউরোপের পক্ষ থেকে বৈশ্বিক সন্ত্রাস শুরু হয়ে যায়। যার দরুন সম্পদ ধ্বংস হয়, নিরপরাধ লোকজন মারা যায়, নিষ্পাপ শিশু, নারী ও বৃদ্ধরা বলির পাঠা হয়। উল্লিখিত দু’ধরনের চরমপন্থা ও সন্ত্রাস সম্পর্কে জাতিকে সতর্ক করা এখন সময়ের দাবী এবং ইমামদের দায়িত্ব। চরমপন্থা চরমপন্থাই, যা ইসলামে হারাম। অনুরূপভাবে আত্মহত্যাও হারাম। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,

مَنْ تَرَدَّى مِنْ جَبَلٍ فَقَتَلَ نَفْسَهُ، فَهْوَ فِى نَارِ جَهَنَّمَ، يَتَرَدَّى فِيهِ خَالِدًا مُخَلَّدًا فِيهَا أَبَدًا، وَمَنْ تَحَسَّى سَمًّا فَقَتَلَ نَفْسَهُ، فَسَمُّهُ فِى يَدِهِ، يَتَحَسَّاهُ فِى نَارِ جَهَنَّمَ خَالِدًا مُخَلَّدًا فِيهَا أَبَدًا، وَمَنْ قَتَلَ نَفْسَهُ بِحَدِيدَةٍ ، فَحَدِيدَتُهُ فِى يَدِهِ، يَجَأُ بِهَا فِى بَطْنِهِ فِى نَارِ جَهَنَّمَ خَالِدًا مُخَلَّدًا فِيْهَا أَبَدًا-

‘যে ব্যক্তি কোন পাহাড় থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করে সে জাহান্নামের আগুনে পুড়বে। আর চিরকাল সে জাহান্নামের ভিতর ঐভাবে লাফিয়ে পড়তে থাকবে। আর যে ব্যক্তি বিষপানে আত্মহত্যা করবে তার বিষ জাহান্নামে তার হাতে থাকবে। চিরকাল সে জাহান্নামের মধ্যে তা পান করতে থাকবে। আর যে লোহার আঘাতে আতমহত্যা করবে সে জাহান্নামে উক্ত অস্ত্র হাতে নিয়ে স্বীয় পেটে বিদ্ধ করতে থাকবে এবং চিরস্থায়ীভাবে তথায় থাকবে’।[4]

এই হাদীছ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, আত্মঘাতী হামলা হারাম। আত্মহত্যাকারী জাহান্নামে থাকবে। এভাবে তার কর্মকান্ড ভয়-ভীতি সৃষ্টিকারী এবং রক্তারক্তি ছাড়া কিছুই নয়। ভীতি সঞ্চারের মাধ্যমে অন্যায়ভাবে কারো রক্ত ঝরানোও হারাম। যেমন আল্লাহ তা‘আলার বাণী,مَنْ قَتَلَ نَفْسًا بِغَيْرِ نَفْسٍ أَوْ فَسَادٍ فِي الْأَرْضِ فَكَأَنَّمَا قَتَلَ النَّاسَ جَمِيعًا وَمَنْ أَحْيَاهَا فَكَأَنَّمَا أَحْيَا النَّاسَ جَمِيعًا ‘যে কেউ জীবনের বদলে জীবন অথবা জনপদে অনর্থ সৃষ্টি করা ব্যতীত কাউকে হত্যা করে, সে যেন সকল মানুষকে হত্যা করে। আর যে ব্যক্তি কারো জীবন রক্ষা করে, সে যেন সকল মানুষের জীবন রক্ষা করে’ (মায়েদাহ ৫/৩২)। রাসূল (ছাঃ) বলেছেন,إِنَّ دِمَاءَكُمْ وَأَمْوَالَكُمْ حَرَامٌ عَلَيْكُمْ كَحُرْمَةِ يَوْمِكُمْ هَذَا فِى شَهْرِكُمْ هَذَا فِى بَلَدِكُمْ هَذَا ‘নিশ্চয়ই তোমাদের রক্ত ও সম্পদ তোমাদের জন্য হারাম। যেমন এই (আরাফার) দিন, এই মাস (যিলহজ্জ) ও এই শহর (মক্কা) তোমাদের জন্য হারাম’।[5] মুসলমানের রক্ত যেমন সম্মানিত, তেমনি তার সম্পদও সম্মানিত। আত্মঘাতী হামলা ও বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে ধ্বংসলীলা চালানো অবৈধ ও হারাম।

সম্মানিত পাঠকবৃন্দ! আজ ‘আইএস’-এর মাধ্যমে ইসলামিক স্টেট কায়েম করার ছুতোয় চরমপন্থী কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। মানুষের সামনে তাদের স্বরূপ তুলে ধরা আলেম, মসজিদের ইমাম ও খতীবদের মৌলিক দায়িত্ব। কেননা অনেক মুসলমান পদভ্রষ্ট হয়ে তাদের দলে চলে যাচ্ছে এবং ইসলামের বদনামের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এমতপরিস্থিতিতে জুম‘আর খুৎবা, ওয়ায-নছীহত এবং সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধের মাধ্যমে লোকদেরকে সচেতন করা যরূরী। নতুবা আল-কায়েদার বাহানায় একবার ইরাক ও আফগানিস্তান ধ্বংস হয়েছে। আর এখন ‘আইএস’-এর বাহানায় মুসলিম বিশ্ব বরবাদ হবে।

আসলে ‘আইএস’ একটা খারেজী ও ইহূদী সংগঠন। যার প্রতিষ্ঠাতা ইহূদী বংশোদ্ভূত আবুবকর বাগদাদী। যিনি স্বীয় নাম ইলিয়ট শামউন পরিবর্তন করে আবুবকর বাগদাদী রেখেছেন এবং নিজেকে ‘আমীরুল মুমিনীন’ আখ্যা দিয়েছেন। আর নির্দ্বিধায় মানুষ হত্যা শুরু করে দিয়েছেন। যার কারণে তার বর্বর খুনোখুনি যেন চিৎকার দিয়ে বলছে যে, ইসলামের সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। আমরা তো মানবতাকে ধ্বংস করার জন্য এসেছি। আর যদি সে ইহূদী না হয়ে থাকে তাহ’লে খারেজী সম্প্রদায়ের সরদার। যে ব্যাপারে রাসূল (ছাঃ) বলেছেন يَمْرُقُونَ مِنَ الدِّينِ مُرُوقَ السَّهْمِ مِنَ الرَّمِيَّةِ ‘তারা দ্বীন থেকে এমনভাবে বের হয়ে যাবে যেমন তীর শিকার ভেদ করে বেরিয়ে যায়’।[6]

তারা আকার-আকৃতিতে মুসলমান মনে হবে, ছালাত আদায় করবে, কুরআন তেলাওয়াত করবে। কিন্তু তাদের অবস্থা এমন হবে যে, তারা পৃথিবীতে সবচেয়ে নিকৃষ্ট সৃষ্টি হবে। যাই হোক না কেন, তাদের ভয়াবহতা সম্পর্কে জাতি ও দেশবাসীকে অবহিত করা এখন সময়ের অনিবার্য দাবী। আর এ কাজ ইমাম ও আলেমগণ যেভাবে করতে পারবেন, অন্য কেউ তা করতে পারবে না। এজন্য লেখনী, আলোচনা, খুৎবা, সাংবাদিকতা এবং অন্যান্য মিডিয়ার মাধ্যমে মানুষজনকে বলতে হবে যে, ইসলাম এই ধরনের ভীতিকর ও চরমপন্থী কার্যক্রমকে আগাগোড়াই অপসন্দ করে এবং মুসলমানদেরকে তা থেকে বিরত থাকার শিক্ষা দেয়।

———+——–++-

বর্তমান পরিস্থিতিতে ইমামদের দায়িত্ব ও কর্তব্য

মূল (উর্দূ) : ড. রহমাতুল্লাহ সালাফী
কাঠিহার, বিহার, ভারত।
অনুবাদ : তানযীলুর রহমান
শিক্ষক, আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়া, রাজশাহী।

[সৌজন্যে : পাক্ষিক তারজুমান, দিল্লী, ৩৬ বর্ষ, ২১তম সংখ্যা, ১-১৫ই নভেম্বর ২০১৬, পৃঃ ১৪-১৭

[1]. বুখারী হা/৭২৫৭; মুসলিম হা/১৮৪০।
[2]. বুখারী হা/৮৯৩।
[3]. বুখারী হা/৩৬৭৩।
[4]. বুখারী হা/৫৭৭৮।
[5]. মুসলিম হা/১২১৮।
[6]. বুখারী হা/৩৩৪৪।