৩৩।
ফিরোজ জিজ্ঞেস করলো
-এবার বল দেখি কি ব্যাপার, হঠাৎ করে চলে এলে, নাকি কোন কাজ আছে? কামরুলের কাছে শুনেছি তুমি তো ভাল চাকরি করতে তারপর আবার বিরাট ব্যবসা করছিলে।
-সে ব্যবসা আর নেই সব শেষ, সেই জন্যই তো আসা। একটা কাজকর্ম কিছু যোগাড় করে দাও। সম্ভব হলে দুজনকেই নয়তো অগত্যা আমার যা হোক একটা কিছু।
সব খুলে বললো । শুনে ফিরোজ একটা দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে বললো-
-এই ব্যাপার! আমি তো ভাবতেও পারছি না তোমার এমন হলো কি করে। যোগাযোগ বা দেখা না হলে কি হবে আমি তোমার সব খবরই জানি। তুমি মালেকের বোনকে বিয়ে করেছ এ ও জানি তবে তোমার এই শেষ দিকের কিছু জানার সুযোগ পাইনি।
একটু ভাবল।
-ঠিক আছে এই অবস্থায় এসেছ যখন কিছু একটা করতে হবেই। তবে শুধু তোমার জন্য, ভাবীর জন্য কোন অবস্থাতেই না। সে কিছু দিন বেড়িয়ে দেশে চলে যাক ওখানে তোমার মেয়েরা রয়েছে। যদিও তারা বড় হয়েছে তবুও তাদের মা কাছে থাকা দরকার। তুমি থাক।
এমন সময় শেফালি ভাবীর কাছে ড্রাইভিং শিখছে এমন এক ছাত্রী ফোন করে জানতে চাইল সে কখন যাবে। বাংলাদেশ থেকে মেহমান এসেছে বলে আজ যাবে না জানিয়ে দিল। ফিরোজও সেদিন কাজে গেলো না।
ফিরোজের মা এসে বললো যাও ওকে নিয়ে কোথাও বেড়িয়ে আস।
তারাও এর মধ্যে মনিরার কাছে ওদের আসার উদ্দেশ্য সব শুনেছে।
-এসেছ কদিন বেড়িয়ে লন্ডন দেখে নাও, ভাবীকেও দেখিয়ে দাও তারপর দেখি কি করা যায়।
শুনে ওরা উভয়েই যেন হাতে স্বর্গ পেলো। মনিরা বললো-
-দেখেন ভাই যে করেই হোক ওর যেমন তেমন একটা কিছু না হলে যে আর কোন উপায় নেই।
-চিন্তা করবেন না কিছু একটা হয়ে যাবে, এখন চলেন একটু ঘুরে আসি। আপনার ভাবী আবার ফার্স্ট ক্লাস ড্রাইভার।
-হ্যাঁ সেতো কালই দেখলাম। তবে আজ না ভাই। শরীর এখনও টলমল করছে। কাল না হয় যাওয়া যাবে, আজ ঘরেই থাকি।
মনি তো বেড়াতে আসেনি। ওর মনে চলছে সেই ঝড় যে ঝড় তাদের এখানে উড়িয়ে নিয়ে এসেছে। তার পাগল আজ ঘর ছাড়া, দেশ ছাড়া, দেউলিয়া। কি করে ঋণ শোধ হবে, মেয়েদের মানুষ করবে, তার রাশেদ কি ভাবে একা এখানে থাকবে এই সব চিন্তায় সে জর্জরিত। তার এখন বেড়াবার মত মন নেই। এ কথা কি আর বলা যায়? এ যে তার একান্ত নিজের যন্ত্রণা। সুখ কারো সাথে ভাগ করে নেয়া যায় কিন্তু দুঃখ? সে তো একান্ত আপনার। সে ভাগ কাউকে দেয়া যায় না! আনন্দ করতে হয় সবাইকে নিয়ে, কাঁদতে হয় নীরবে, একা একা।
সুখ কারো সাথে ভাগ করে নেয়া যায় কিন্তু দুঃখ? সে তো একান্ত আপনার। সে ভাগ কাউকে দেয়া যায় না! আনন্দ করতে হয় সবাইকে নিয়ে, কাঁদতে হয় নীরবে, একা একা। সত্য কথা।
সত্য কথা।
স্মৃতি বা ডায়েরিটাকে যথেষ্ঠ ডিটেইলে লিখেছেন, যা এখন উপন্যাস। শুভেচ্ছা খালিদ ভাই।
স্মৃতি, জীবন, সংসার নিয়েইতো গান, গল্প, নাটক, সিনেমা।
এই পর্বটা অনেক বেশী আপন লাগলো ভাই।
বেশ আনন্দিত হয়েছি জেনে। ধন্যবাদ প্রিয়।
খুশি হলাম প্রিয়জন।
গল্পের মনি ঠিকই ভেবেছে! সুখের ভাগ সবাইকে দেওয়া যায়, নেওয়া যায়। কিন্তু দুখের ভাগিদার কেউ হতে যায় না। দেওয়াও যায় না।
মুগ্ধ হয়ে আপনার এই পর্বট পড়লাম। খুব ভালো লেগেছে। শুভেচ্ছা জানবেন, শ্রদ্ধেয়।
জেনে খুবই ভাল লাগল নিতাই'দা।
সুখ কারো কারো সাথে ভাগ করে নেয়া যায় সত্য কিন্তু দুঃখ বন্টন সম্ভব নয়।
সুখ আনন্দ সার্ব্জনীন কিন্তু দুঃখ একান্তই আপনার।