সংগ্রামে দিশাহারা এক নারীর গল্প!!!

সংগ্রামে দিশাহারা এক নারীর গল্প?

সংগ্রাম এই শব্দটি শুনলে মনের মধ্য যেন আঘাত আনে। বাঙালীরা কি দোষ করেছিল যে জীবন দিতে হয়েছিল। শুধু ন্যায্য অধিকার পাওয়ার জন্য বাঙ্গালীদের প্রাণ নিয়েছিল পাকিস্তানিরা। বাঙ্গালীরা দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করেছিল এই অধিকার জন্য। শুধু অধিকার নয় বাংলাকে শোষণ, শাসন থেকে মুক্ত করে, স্বাধীন বাংলাদেশ উপহার দিয়ে যান, বীর শহিদরা। শহিদের প্রতি রইল গভীর শ্রদ্ধা।

(১৯৭১ সালের এক সত্য ঘটনা অবলম্বনে)
গ্রামে বাস করতেন সহজ সরল এক নারী। তাহার ৬ টি সন্তান। তিনটি মেয়ে, তিনটি ছেলে। তাহার ছোট মেয়েটির নাম দিপালী। ৬-৭ মাস বয়স হবে। বাংলার বুকে সংগ্রাম চলছে। চারদিকে রক্তাক্ত গুলাগুলি চলছে। গ্রামের মানুষ কি শান্তিতে ঘূমাচ্ছে?
না!!!
কখন কে জানে, গ্রামে আসবে ৭১ এর যমরাজ। কার মায়ের বুক খালি করবে ওরা, কার নিবে প্রাণ? গ্রামে মিলিটারি আসলে চারদিকে হৈ চৈ পড়ে যায়, শুরু হয় ছুটা-ছুটি। সবাই চারদিকে পালিয়ে যায়। কেউ জঙ্গলে, কেউ নদীতে নৌকায়, কেউ হাওরে গিয়ে জীবন রক্ষা করে। মিলিটারিরা চলে যাওয়ার আবার ফিরে আসে। এভাবে চলে তাদের জীবন দীর্ঘ নয় মাস।

একদিন দিপালীর মা পালিয়ে যাবে জঙ্গলে মিলিটারিরা এসে গেছে গ্রামে। তিনি সন্তানকে নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছেন। তিনি জঙ্গলে গিয়ে দেখেন, সন্তান রেখে বালিশ নিয়ে এসেছেন। তাহার ছোট সন্তান দিপালী ছিল ঘুমে। তিনি হাউ মাউ করে কাঁদতে লাগলেন। তখন তার ননদ দৌড়ে গিয়ে তাহার সন্তানকে নিয়ে আসে। দিশাহারা হয়ে মা সন্তানকে রেখে বালিশ নিয়ে আশ্রয় এর জন্য পালিয়েছিলেন। শান্তিতে নেই গ্রামের মানুষ কখন কাকে মারবে। ঘর বাড়ি আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিবে।

গ্রামে মানুষ মারার জন্য লাইনে দাড় করেছিল মিলিটারিরা, কিন্তু পারেনি মারতে গ্রামের একজন রাজাকার ছিল সে ছিল মানব প্রেমিক। রাজাকারে কথায় আর গ্রামের মানুষ মারে নি। ছেড়ে দিয়েছে সবাইকে। এভাবে বলা যায় কত ইতিহাস অজানা রয়ে গেছে।

_____________________
(গল্পটি বাস্তব ঘটনা থেকে নেওয়া,
আমার মায়ের কাছ থেকে গল্প শুনেছিলাম, তারপর লিখলাম)

ছবিঃ অনলাইন।

6 thoughts on “সংগ্রামে দিশাহারা এক নারীর গল্প!!!

  1. বিভীষিকাময় সেই সময়ের এমন হাজারো গল্প গাঁথা ছড়িয়ে আছে আমাদের চারপাশে। শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

  2. গল্প নয় সত্য ঘটনাটি শেয়ার করায় আপনাকে ধন্যবাদ। পড়লাম।

  3. গল্পটি পড়ে গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠলো নির্মল দাস মন্টু দা। কেমন একটা সময় পেরিয়ে গেছে ভাবলে শিউরে উঠি। 

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।