ট্যাগ আর্কাইভঃ ইসিয়াকের ছড়া

পাখির স্বাধীনতা


বাবা টিয়া গাইছে গান,
আমড়া গাছের ডালে।
ছানাগুলো আশ্রয়ে,
মায়ের বুকের তলে।

রীনা বসে বীনা বাজায়,
মীনা গায় গান।
দীনা বলে পুষবো পাখি,
একটা ধরে আন।

মা শুনে কয় বনের পাখি,
বনেতে মানায়।
বন্দী পাখি হয় যে দুঃখী,
উচিত কাজ নয়।

দীনা বলে ঠিক তবে তাই
বাঁচুক ওরা ওদের মত করে ।
মুক্ত স্বাধীন কাটাক জীবন,
এদেশ ওদেশ ঘুরে।

বাঁকা চাঁদ [শিশুতোষ ছড়া]

ও বাঁকা চাঁদ ও বাঁকা চাঁদ,
আয়না খোকার বাড়ি।
তুই না এলে খোকন সোনা,
নেবে ঠিক আড়ি।

তোকে দেখে খোকন হাসে,
আদরে ডাকে মামা।
তুই কেন পরিসনি বলতো
একটা কোন জামা।

ও বাঁকা চাঁদ ও বাঁকা চাঁদ,
কতো ই না রূপ তোর।
তোর রূপের আলোক ছটায়
খোকন যে বিভোর।

বুঝিস কিছু?মনে তো হয়না?
কি যে তুই পাগল ।
তুই না এলে এবার খোকন
বাঁধাবে একটা গোল।

খোকার ঘুম [শিশুতোষ ছড়া]

রাত্রি হলো ফুল ফুটলো,
চাঁদ জাগে আকাশে।
খোকার চোখে ঘুম নেইকো.
খিলখিলিয়ে হাসে।

খোকার চোখে ঘুম এনে দে,
ওরে সোনার চাঁদ।
তোরে দেখে দেখনা ও চাঁদ,
সে করে আহ্লাদ।

জোছনারে তুই লক্ষী আমার,
রূপের সেরা রাণি।
আয়না এসে বসনা পাশে,
তোকেই আপন জানি।

নদীর পাড়ে ছায়া ফেলে,
মেঘ চলেছে ভেসে।
ওরে মেঘ তুই ও আয়,
বসনা খোকার পাশে।

বাতাস এসে অভিমানে,
গাল ফুলিয়ে কয়।
সবারে ডাকো আমায় তো নয়,
পর কি আপন হয়!

মান করোনা ও বাতাস তুমি,
মান করোনা আর।
আমরা সবাই খোকা বাবুর,
একান্ত আপনার।

এই কথাতে ফুল পাখি সব,
মিষ্টি হেসে হেসে।
নানান সুরে নানান তালে,
গান শুনাতে আসে।

গান শুনে আর জোছনা মেখে,
খোকার চোখে নামে ঘুম।
রাত বাড়লে সব শুনশান,
এলাকা নিঝঝুম্।

ভদ্রলোক

উঠানে বসে নতুন চুলায়,
মা ভাজছে খই।
খোকার বায়না সাথে চাই,
টক মিষ্টি দই।

দই তো হলো, এবার তবে,
একটু মিষ্টি হোক।
খোকা খেয়ে ঠান্ডা হবে,
দেখাবে ভদ্রলোক।

বায়না

তিড়িং বিড়িং খোকন নাচে,
হরেক তার বায়না।
দিতে হবে কিনে তাকে,
জাদুকরী আয়না।

ভেবে ভেবে মা যে তার,
হলো কুপোকাৎ।
বাবা বলে দেবো দেবো,
পোহাক আগে রাত।

রাত নিশিথে খোকন সোনা,
ঘুমে স্বপ্ন দেখে।
তেপান্তরের মাঠে এক
বক রাক্ষসী থাকে।

সকাল হতেই বায়না জুড়ে,
মা কিনে দাও ঘোড়া।
রাজকুমারী বন্দী এখন,
নেইকো সাহারা।

মাতো পড়লো দারুণ ভাবনায়,
ভেবে হলো সারা।
খোকার আজব বায়না নিয়ে
বেজায় দিশাহারা।

লাজবতী

গভীর রাতে জলপরীরা উড়ছে
আকাশ জুড়ে।
জোছনারাশি খেলা করে,
তাদের চারিধারে।

ফুলকলিদের ফোটার সুখে,
খুকু গাইছে গান।
পাখপাখালি সেই সুরেতে,
ধরলো ঐক্যতান।

নদীর কুলে ঢেউ খেলে যায়,
কুলে ভেড়ে তরী।
রাজার কুমার বসে তাতে,
দেখতে মানায় ভারি।

কি চায় কুমার কে জানে হায়!
কিসের তরে প্রবেশ।
ছোট্ট খুকু গান থামিয়ে,
চিন্তিত হলো বেশ।

রাজকুমার বলল হেসে,
”ভয় কেন গো আর।
ছন্দ সুরে বেশতো ভালো,
লাগছিলো গান তোমার”।

খুকুমণি তাই না শুনে,
পেল ভীষণ লাজ।
ছুট লাগালো বনের পথে,
বলল,”আছে কাজ”।

এই কথাতে এলো ছুটে,
জলপরীরা সব।
”লাজ হয়েছে, লাজ হয়েছে”
জুড়লো কলরব।

নিরন্তর

চাঁদ ডুবেছে সেই কারণে,
খুকীর হলো মান।
খোকা দেখো দিনের আলোয়,
গাইছে সুখের গান।

রাত নিশিথে ফুল ঝরেছে,
গন্ধ গেছে টুটে।
ফের ঠিকই দিনের আলোয়,
নতুন ফুলেরা ফোটে।

খেয়াল এমনই, খুশী এমনই,
হরেক গল্প বলা।
ভাঙাগড়ার মধ্যে দিয়ে ই
প্রকৃতির ছুটে চলা।

বিয়ের আসর

চড়ুই পাখি বউ সেজেছে,
ঘোমটা দিলো মাথায়।
টুনটুনিটা তাই না দেখে
নাচছে পাতায় পাতায়।

শ্যামা বলে, গয়না আনো ।
ময়না বলে, বর এলো কই?
শালিক বলে, পোলাও খাবো,
সাথে চাই টক মিঠা দই ।

প্যাঁচা বলে চল রে ভাই,
এই আনন্দে গান সবে গাই।
ছন্দে ছন্দে দুলি আনন্দে,
সুরে সুরে সুর মিলাই ।

পাঁজি কাকটা দস্যি ভীষণ,
প্যাঁচারে দিলো এক খোঁচা।
বিয়ের আসর পণ্ড হলো,
দায় হলো মান নিয়ে বাঁচা ।

ব্যাঙের বিয়ে

কোলা ব্যাঙের বিয়ে হবে
চলছে আয়োজন।
শত শত ব্যাঙ ব্যাঙাচি
পেলো নিমন্ত্রণ।

ব্যাঙ বাবাজী খুব তো রাজী,
বসলো বিয়ের পিঁড়িতে
ব্যাঙের ভাইটি হোঁচট খেলো,
নামতে গিয়ে সিড়িতে।

কনে ব্যাঙটি দেখতে দারুণ
গহনা আর লাল শাড়ীতে।
ব্যাঙের বাবা বড্ড খুশি,
হাত বুলাচ্ছে দাড়িতে।

মা ব্যাঙটি পরেছে দেখো
ছোটো খাটো টপ স্কার্ট,
এই পোষাকে তাকে নাকি
দেখায় দারুণ স্মার্ট।

সানাই বাজছে বাজছে ঢোল,
নাচছে সবাই তা ধিন তা।
কব্জি ডুবিয়ে খাবে সবাই
নেই তো কোন চিন্তা।

দারুণ হল্লা চিল্লা পাল্লা
চলল সারা দিন রাত্রি।
বাজি পটকা ফুটলো অনেক
নাচলো বিয়ের পাত্র পাত্রী।

আলো ঝলমল চারদিকেতে
আনন্দ খুশির উল্লাসে।
ব্যাঙ সমাজে খুশির আলো
ঝলমলিয়ে উঠলো হেসে।

সুখী হোক ব্যাঙ বাবাজী
সুখী হোক কনে ব্যাঙ।
মনের সুখে বর্ষার দিনে
করুক তারা ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ।