ট্যাগ আর্কাইভঃ সুন্দরী সিরিজের কবিতা

আদিম উৎসবে

আদিম উৎসবে
(সুন্দরী সিরিজের কবিতা)
……
এক.
কে যায় সেখানে? নির্বোধ, দুর্বোধ্য, নিথর, নগ্ন;
হারিয়ে ফেলেছে দক্ষতা? ভোজ উৎসব হতে শক্তি রূপান্তরে,
হারিয়ে ফেলেছে সর্ব কর্মসঞ্চালন ক্ষমতা? সে আজ মৃত!

জীবিত বা মৃত যে কোন অবস্থায় মানুষের প্রকৃত অবস্থা কি?
আমি আমার কে? তুমি তোমার? তুমি তো জানো, মৃত্যু কেন্দ্রিক
জীবন যাপনের যে পদ্ধতিগুলি প্রচলিত আমি তাতে পুরোপুরি অভ্যস্থ নই,
মানুষতো মৃত্যুতে যে অর্থহীনতা জন্ম লয় তার শূন্যতায় ঈশ্বরকে ডেকে আনে,
অত:পর উপসনার পদ্ধতির পার্থক্যে তারা পরস্পর আলাদা হয়ে যায়,
কেন আমি উপসনায় মত্ত হব? কেন আমি নিজেকে আচার অনুষ্ঠানে পূর্ণ
কতগুলি মন্ত্র উচ্চারণে সীমাবদ্ধ রাখব?

আমি জানি আমি অস্তিত্ববান আর শব্দময়,
মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্ত আমার দিকে সাংকেতিক বানী পাঠায়,
আমি শুধু জানি আমাকে সেইসব বানীকে লিপিবদ্ধ করতে হবে,
করে তুলতে হবে শব্দময়।

দুই.
আমার কবিতাগুলি প্রেমের উচ্চারণ, সৃষ্টিশীলতার অনন্য অনুভব,
বস্তুকে আত্মায় রূপদানের অনন্য মাধ্যম,
প্রেমেরর চেয়ে মাধুর্যময় আর কোন চিত্রকর্ম নেই অনুভব ক্যানভাসে ।

কে সে? রাজ্যজয় করে উঠেছে ক্ষমতারশীর্ষে?
কে সে? অর্থের পাহাড়ে দাঁড়িয়ে গায় সফলাতার গান?
আমি তাকে প্রতিদ্বন্ধী ভাবি না কখনও,
আমি তাকে সুশাসনের আহ্বান জানাই,
কি হাস্যকর সে আমাকে আদেশ দেয়, কহে- তাকে বলি মহামান্য!
তার সম্মানতো আলাদা কোন নয় একজন মানুষ থেকে!

এইসব কোলাহল আর বেদনাহত যন্ত্রনাকে পাশ ফিরিয়ে
তোমার কাছে ফিরে ফিরে আসি, হে অমিতব্যয়ী প্রেমিকা আমার,
সব কিছু মুছে যায় যাক , এসো, জেগে থাকি যতক্ষণ জেগে থাকা যায়
সৃষ্টিশীলতার আদিম উৎসবে।

স্বপ্ন তাড়িত ক্রন্দন

স্বপ্ন তাড়িত ক্রন্দন
(সুন্দরী সিরিজের কবিতা)
…………….

মনে পড়ে, তুমি ছাদে, আমায় ছুঁয়ে ছিল প্রান্তরের ঘাস
আমাদের এক করে রেখেছিল অনাদি অফুরন্ত আকাশ।
আমার ভাবনার ভুবনে তোমার আলোর উচ্ছ্বাস…
কি যে হতো, কখন ডুবে যেত পূর্ণিমার চাঁদ,
দেখার পেতাম না অবকাশ।
যে আমি একটি কবিতার জন্যে
মুঠোয় নিয়ে সমস্ত চেতনা, খুজে ফিরি হয়ে হন্যে
প্রান্তর-উপত্যকা-সাগর-নদী-গিরি
পেয়ে যেতাম সৃষ্টির গহীন আনন্দের অলৌকিক সিড়ি।

আমারই এই ক্রন্দন শুধু, স্বপ্ন তাড়িত অবিশ্রাম স্থিতিহীন।
লৌকিক সুখবহরে এমন ক্রন্দনে কখনও কি হওনি লীন?

কসম খোদার, তুমি আমার সুন্দরী

কসম খোদার, তুমি আমার সুন্দরী
(সুন্দরী সিরিজের কবিতা)
…………………..
দম মারো দম, তখন টানি হরদম, জয়বাবা ফেলুনাথ
আমার শরৎ সাদা মেঘলা আকাশে তুমি পুর্ণিমারই চাঁদ
চার তলার ছাদ বরাবর তোমার পঞ্চম তলার বারান্দা
চোখর হাসির বাধ ভেঙ্গে যায়, হাতের আঙুলে করি ইশারা
মন যদি মন ছুয়েছে, প্রেম সাগরে ডুবে যেতে কেন তবে দেরী
তেমার জন্য মরতে পারি, কসম খোদার, তুমি আমার সুন্দরী!

জেগে জেগে নির্ঘুম সারা রাত, এক শব্দ লিখে দুই শব্দ কাটি
হৃদয়াবেগের কালি দিয়ে লিখে ফেললাম চার পাতার চিঠি
এদিক ওদিক দেখে শুনে বারান্দাতে চিঠিখানি যেই ছুড়েছি
বুঝতে পেলাম প্রথম দিনেই আমি বড়ই ভুল যে করেছি
চিঠি পরেছে তোমার মায়ের হাতে! থোরাই কেয়ার করি-
তোমার জন্য মরতে পারি, কসম খোদার, তুমি আমার সুন্দরী।

তোমার বড় ভাই, মস্তানীতে জুড়ি নাই, কাঁপে সব লোকে
বীর পুরুষের কলিজা, জুটল সহসা, নিরিহ আমার বুকে
গাছে আমায় বেধে, সকলে একসাথে, মারল কিল-কুনি-ঘুষি
রক্তমাখা ঠোটে, বলছি অকপটে, তোমার বোনকে ভালোবাসি!
প্রেম করেছি বেশ করেছি, মার খেয়ে তবু তোমায় যাইনি ছাড়ি
তোমার জন্য মরতে পারি, কসম খোদার, তুমি আমার সুন্দরী।

কিছু করিনি, সুন্দরী, কিচ্ছু করিনি

কিছু করিনি, সুন্দরী, কিচ্ছু করিনি
(সুন্দরী সিরিজের কবিতা)
…………

কাননে ফুল ফুটেছে, গন্ধ শুকিনি
শিরির ভেজা দুর্বাঘাসে নাঙ্গা পায়ে একটুও হাটিনি
চাঁদনী রাতে জ্যোৎস্নার বুকে সাঁতার কাটিনি
সাগর বুকে উদাম গায়ে লোনাজলের গন্ধ মাখিনি
কিছু করিনি, সুন্দরী, কিচ্ছু করিনি
তুমি চলে যাবার পর, আমি কিচ্ছু করিনি।

হৃদয়োত্থিত ধ্বনিগুলোর বর্ণচিত্রের শব্দ গড়িনি
শব্দগুলি মন-মাধুরীতে পত্র লিখিনি
ছন্দচালনে মাতাল তালের তবলা বাজেনি
কতদিন তোমায় দেখিনি, আমি কাব্যে মাতিনি
কিছু করিনি, সুন্দরী, কিচ্ছু করিনি
তুমি চলে যাবার পর, আমি কিচ্ছু করিনি।

শিশুর মুখের অম্লান ঘ্রানে মাতাল থাকিনি
নৌকোর ছইয়ে পিঠ লাগিয়ে নদীবক্ষে উড়াল পারিনি
তোমার হাতটি ছুঁতে কারো কোনো বাধা মানিনি
সেই তোমাকে নিজের করে রাখতে পারিনি
কিছু করিনি, সুন্দরী, কিচ্ছু করিনি
বছর পর বছর কাটল, আমি কিচ্ছু করিনি।

শব্দ

শব্দ
……………………
পাখির কলতান শুনি,
বাতাসে নড়ে উঠা ধানগাছের মর্মস্পর্শী আওয়াজ,
আগুনের দাউ দাউ আস্ফালন,
পাহালে পাটখড়ির পট পট ধ্বনি,
ভালবাসা প্রকাশের শরীর সঞ্চালন শব্দ শুনি,
নবজাতকের ক্রন্দন শুনি-

সকল শব্দ একত্রে চলমান, কিছু বিস্ফোরিত,
কখনও স্থবির, কখনও প্রবহমান,
শহরের শব্দ শুনি- গ্রাম্য আবহের শব্দ, দিন রাত্রির,
অল্পবয়সী বাচালের প্রিয় অযথা সংলাপ,
খাওয়ার সময়ের কর্মজীবি লোকের অট্টহাসি,
শত্রুতার কোলাহল, রোগীর বিলাপ,
জজের টেবিলে হাতুড়ী পিটানোর শব্দ,
তার মলিন পাণ্ডুবর্ণ ঠোঁটে উচ্চারিত
মৃত্যুদন্ডের ঘোষনা শুনি-

ঘাটে জাহাজ ভিড়ানোর, নোঙর ফেলার শব্দ শুনি
ঢং ঢং বেজে উঠা ঘন্টা, আগুনের ক্রন্দন শুনি
ট্রেনের হুইশালের শব্দ, বাস ট্রাকের হর্ণের শব্দ
যন্ত্র ঘর্ষণের ঝিক ঝিক, যাত্রীর হাকডাক,
ট্রাফিকের হুইশাল শুনি-

বেহালার সূর শুনি
গিটার, তবলার ঐক্যতান
গণমানুষের কোরাস শুনি,
অসংখ্য মানুষের হৃদয়ের প্রতিধ্বনি শুনি।

মাঝে মাঝে ক্লাসিক সংগীত শুনি
প্রশিক্ষিত কণ্ঠ নিয়ে অপরূপ রমনী
শৈল্পিক উচ্চারণে মাতিয়ে তুলে
বাদকদল উড়িয়ে নিয়ে যায়,
যেন ঘুরপাক খেতে থাকি শনির বলয়ে,
পাল তোলা নৌকার মত দুলতে থাকি,
নগ্ন পায়ে তাদের বাদ্যতরঙ্গে নেচে উঠি-
নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে! উড়নচন্ডী হয়ে যাই!

শুধু তোমর মুখ থেকে
‘ভালোবাসি তোমায়’ শব্দ দুটি
কতদিন শুনি না
কতদিন শুনি না!

মৃত্যুর আগে

মৃত্যুর আগে
(সুন্দরী সিরিজের কবিতা)
১.

আবার যদি প্রকৃতির নিয়ম ছিড়ে
আসি এই পৃথিবীতে; ধীরে ধীরে
আমার অনুভুতিকে ক্ষয়ে যেতে দেব না
আলোর স্পর্শ আমি নেব না
জলের স্পর্শ নয়, স্নেহের স্পর্শে শিহরিত
হব না, বাতাস এসে অবিরত
যে স্পর্শ দিয়ে যায়, নেব না তা
আমার সব স্পর্শানুভূতি একত্রিত করে যা
পাব; একত্রে জমিয়ে নিলে যে অপার বিস্ময়
জন্ম নেবে; সেই শিহরণে কম্পিত হৃদয়
নিয়ে ক্ষণিক ছুঁয়ে নেব তোমার হাত, আর
কিছু স্পর্শ করব না আমি-
মরে যাব- আহ্লাদে পূর্ণ হবে জীবন আধার।

২.

আবার যদি প্রকৃতির নিয়ম ছিড়ে
আসি এই পৃথিবীতে; ধীরে ধীরে
আমার অনুভুতিকে ক্ষয়ে যেতে দেব না
পাখির কলোতানে মুগ্ধ হবো না
নদীজলের কলোধ্বনি নয়, সমুদ্র গর্জনে শিহরিত
হব না, বাতাসের শু শু ধ্বনি অবিরত
যে সুখ দিয়ে যায়, নেব না তা
আমার সব শ্রবেন্দ্রীয় একত্রিত করে যা
পাব; একত্রে জমিয়ে নিলে যে অপার বিস্ময়
জন্ম নেবে; সেই শিহরণে কম্পিত হৃদয়
নিয়ে তোমার মুখনিসৃত ‘ভালোবাসি তোমায়’- শুনে নিব, আর
কিছু শুনব না আমি-
মরে যাব- আহ্লাদে পূর্ণ হবে জীবন আধার।

আবার এলো যে সন্ধ্যা

আবার এলো যে সন্ধ্যা
(সুন্দরী সিরিজের কবিতা)

সন্ধ্যা এলো নীড়ে ফেরা পাখির পাখনায় ভর করে
নীড় ছোট আকাশতো বড়- ভুলে গিয়ে, ইদুরের মতন
গর্তে ঢুকে যায়, অথচ ছিল তাদের ঘিরে
বিশালতা আর উদারতা, পিছুটান এমনি হৃদয় ক্ষরণ !
আমিও এইখানে বটগাছটার নিচে বসে থাকি সন্ধ্যায়
তখন কৃষাণ বাড়ি ফিরে নদীটির তীর দিয়ে হেটে
তখন আকাশ লাল, আমি আসি এখানে স্মৃতির ব্যাথায়
এইখানে সুন্দরী বসেছিল পাশে তারপর গিয়েছিল ছুটে।

বৃহৎ কাজ বড় দায়িত্ব সংসার সব ছেড়ে এইখানে এসে
পড়ন্ত বেলায় চোখ বুজলে সুন্দরী, চোখ খুললে নাই-
বসে থাকি মরুচিকায়! জানতে চাও কোন সুন্দরী সে?
আমাকে দিয়েছিল স্পর্ধা প্রথম সৃষ্টির বেহেশতেই।

তারপর পৃথ্বী সংসার হলো ছাড়খাড় রাজ্য জয় রাজ্য ক্ষয়
অসীম সাহস দুরন্ত আবেগ, পুড়ে ছাই হলো কত যে ট্রয়!

চিত্রনাট্য

চিত্রনাট্য
……………….
(সুন্দরী সিরিজের কবিতা)

চিত্রনাট্য লিখেছি একটা।
নাম দিয়েছি ‘সত্য-মিথ্যার দ্বন্ধ’।
অনেকটা কমেডি-ট্রেজেডির মতো।
ব্যাপারটা বুঝা গেল না, তাইতো!
কমেডির ভিতর লুকিয়ে থাকা ট্রেজেডি।
ভাবছো এ আবার কেমন কথা,
আমি বলি তরমুজ দেখেছো কি
সবুজের ভিতর লুকিয়ে থাকা লাল। তেমনি।

চিত্রনাট্যটি প্যারডি বলতে পারো।
শব্দের বিকল্প শব্দ সাজিয়ে কাট-টু-কাট প্যারডি নয়,
জীবনের প্যারডি। প্রতিটি শিল্পকর্মই প্যারডি,
ঠিক জীবন নয় তবে জীবনেরই নান্দনিক উপস্থাপনা।
আমি তেমন শিল্পী নই, শব্দের পর শব্দ গেঁথে,
মাত্রা গুণে গুণে ভাবনাকে কালোত্তীর্ণ শৈল্পিক আচড়ে আঁকতে আমি জানি না
সংলাপ বলতে বলতে উপমায় উপমায়
সমাজ-রাষ্ট্রের-ধর্মের
বিমূর্ত চিত্রায়ন করতে আমি জানি না
ভালোবাসতে জানি
ভালোবাসতে বাসতে নিঃস্ব হতে জানি
ভালোবাসতে বাসতে মরে যেতে জানি।

আমার এই চিত্রনাট্যটি এই নিঃস্ব হয়ে যাওয়া
মরে যেতে চাওয়ারই প্যারডি,
শৈল্পিক কোন উপস্থাপনা নয়
নয় উপমার দৌঁড়ঝাপ- এ একেবারে সরাসরি।

ব্যাকগ্রাউন্ডে রূপালী চাঁদ পূর্ণ অবয়বের
অপার্থিব মায়ায় ছড়ানো থই থই জোৎস্না সমস্ত সবুজ গ্রহটিকে প্লাবিত করে রেখেছে
মদ খেলে যেমন পা টলতে থাকে,
পদক্ষেপগুলো বিন্যস্ত হয় খানিক এখানে খানিক সেখানে
বাতাস তেমন কখনও উড়িয়ে নিচ্ছে সুন্দরীর চুল,
কখনও কারুকাজ করা ওড়না
আমি হাঁটুগেড়ে বসে দু’হাত বাড়িয়ে বললাম
‘এই জোৎস্না, এই মাতাল বাতাস সাক্ষী থাক,
এই হাত স্পর্শ করে শুধু একবার বলো, ভালোবাসি…’

-ব্যাস শুধু এটুকুই?

– হ্যা শুধু এটুকুই।
আবার যদি প্রকৃতির নিয়ম ছিড়ে
আসি এই পৃথিবীতে; ধীরে ধীরে
আমার অনুভুতিকে ক্ষয়ে যেতে দেব না
আলোর স্পর্শ আমি নেব না
জলের স্পর্শ নয়, স্নেহের স্পর্শে শিহরিত
হব না, বাতাস এসে অবিরত
যে স্পর্শ দিয়ে যায়, নেব না তা
আমার সব স্পর্শানুভূতি একত্রিত করে যা
পাব; একত্রে জমিয়ে নিলে যে অপার বিস্ময়
জন্ম নেবে; সেই শিহরণে কম্পিত হৃদয়
নিয়ে ক্ষণিক ছুঁয়ে নেব তোমার হাত, আর
কিছু স্পর্শ করব না আমি-
মরে যাব- আহ্লাদে পূর্ণ হবে জীবন আধার।

-তারপর?

আবার যদি প্রকৃতির নিয়ম ছিড়ে
আসি এই পৃথিবীতে; ধীরে ধীরে
আমার অনুভুতিকে ক্ষয়ে যেতে দেব না
পাখির কলোতানে মুগ্ধ হবো না
নদীজলের কলোধ্বনি নয়, সমুদ্র গর্জনে শিহরিত
হব না, বাতাসের শু শু ধ্বনি অবিরত
যে সুখ দিয়ে যায়, নেব না তা
আমার সব শ্রবেন্দ্রীয় একত্রিত করে যা
পাব; একত্রে জমিয়ে নিলে যে অপার বিস্ময়
জন্ম নেবে; সেই শিহরণে কম্পিত হৃদয়
নিয়ে তোমার মুখনিসৃত ‘ভালোবাসি তোমায়’- শুনে নিব, আর
কিছু শুনব না আমি-
মরে যাব- আহ্লাদে পূর্ণ হবে জীবন আধার।

-কথা দিলাম, এরপর আর কখনও ভালোবাসার দাবি নিয়ে এসে দাঁড়াবো না তোমার কাছে। চলে যাব, কোনদিন ফিরব না আর।

-মরে যাব।

-মরে যাবে? একটা মিথ্যাকে বুকে ধারণ করে মরে যাবে?
জীবনে যদি কোন সত্যি ধারণ করে থাকি
যদি একবিন্দুও তোমার পাগলামিকে প্রশ্রয় দিয়ে থাকি,
তবে তোমাকে বলি, ভালোবাসি না আমি তোমাকে,
ভালোবাসি না, কোনদিন ভালোবাসিনি তোমায় ।

চিত্রনাট্যটি এখানেই হতে পারতো শেষ। গান না থাকলে ঠিক জমে না। জুড়ে দিলাম সুমধুর গান-

তুমি দিনের আলো, তুমি রাতের আধার
তুমি আমার সুস্থতা, তুমি কারণ অসুস্থতার
তুমি আমার রক্তের লোহিত কণিকা
তুমি আমার না ছুঁয়া আজন্ম ব্যাথা
তুমি কখনো ভেবে দেখোনি
তুমি কখনো ভেবে দেখোনি

তুমি আমার ভয়, কখনো ভাবিনি
নিজেকে কখনো অপরূপ জানিনি
এই আঁধারে আমায় খুঁজে দেখো
হাতটি ধরে একটু সামনে হাটো
যেন পুরো পৃথিবী তোমার, পুরো পৃথিবী তোমার
যেন পুরো পৃথিবী আমার, পুরো পৃথিবী আমার

তবে তুমি আছো কিসের অপেক্ষায়?

আজ ভালোবাস তোমার যেভাবে মন চায়
ভালোবাস আমায় যেভাবে মন চায়
ছোঁয়ে দেখো তোমার যেভাবে মন চায়
ছোঁয়ে দেখো আমায় যেভাবে মন চায়

এ কেবল আমার কল্পনা হৃদয়ের প্রতিধ্বনি, সুন্দরী কোথাও নাই।

নিঃস্ব

নি:স্ব
(সুন্দরী সিরিজের কবিতা)
……………………………..
যদি এমন হতো, খুঁজলেই পেতাম তোমার নগ্ন হাত
তোমায় নিয়ে আপন মনে ঘুমহীন কাটত সারারাত?
যখন তোমার চুলগুলি এলোমেলো বাতাসে যায় উড়ে
তখন আমি থাকি তোমার হতে যোজন যোজন দূরে!
যেইদিন মরে যাব, ভবে তোমার থাকার উপায় নাই
তুমিও যাবে হারিয়ে শূন্যে, যখনই অজানায় হারাই।

প্রশ্ন

প্রশ্ন
(সুন্দরী সিরিজের কবিতা)

মহুয়া বন মাতাল হাওয়ায় এলোমেলো দুলছে কেন
ঘনকালো মেঘগুলো সব এদিক ওদিক ছুটছে কেন
চিত্ত হরণ রিক্ত কারণ আমার প্রেমে করতে বারণ
অশ্রুতে ছলো ছলো নয়ন দু’টি টলোমলো হইছে কেন

কবুতর দুইটি থেকে থেকে চুমোচুমি করছে কেন
বনহংস বনহংসী পাশাপাশি আনমনে উড়ছে কেন
কি কারণে কার স্মরণে তোমার নিটোল ননীর গাল
অশ্রু অঙ্গারে পুড়ে লাল জ্বলজ্বল বেসামাল হচ্ছে কেন

বৃষ্টির ফোটা আকাশ চুইয়ে কাঁদন হয়ে ঝরছে কেন
ঝর্ণা থেকে জলধারা ধরণীতে ক্ষয়ে ক্ষয়ে পড়ছে কেন
আমায় তুমি না করতে শুন্য হাতে ফিরিয়ে দিতে পারলে
যখন, উথাল পাথাল ঝড়ের তোড়ে সবেগে কান্না কেন!