বিভাগের আর্কাইভঃ শ্রেফ মজা

হামিদ সাহেব

angry-wife-2

স্ত্রীর নানারকম কটুবাক্য, গালাগালি, নির্যাতন সহ্য করিতে না পারিয়া হামিদ সাহেব গৃহ ত্যাগ করিলেন। সারাদিন শুধু ফোঁস ফোঁস ঘুম আর ঘুম সংসারের একতা কাজও তাকে দিয়ে করার উপায় নাই, যাবে কোথায় যাক। রাত হলেই সুরুসুর করে এসে হাজির হবে।

না, ঘন্টা, রা্ত, দিন, সপ্তাহ পেরিয়ে যাবার পরেও যখন হামিদ সাহেবের প্রত্যাবর্তনের কোন চিহ্ন দেখা গেলনা তখন গিন্নী অবলা বেগম মনে মনে কিঞ্চিত আতঙ্গকগ্রস্ত হইল বটে; শত হইলেও স্বামী কিনা। কতক্ষণ রাগ করিয়া থাকা যায়। চারিদিকে ঢাক ঢোল পিটাইয়া ঘোষনা করাইয়া দিল ৪০ উর্ধ্ব হালকা পাতলা গড়নের ফর্সা গায়ের রঙ্গের হামিদ সাহেব নিখোঁজ, যে তাহার খবর দিতে পারিবে তাহাকে পুরস্কৃত করা হবে।

চতুর্দিক হইতে যে যাকে পায় তারই মাজায় কিংবা হাতে রশি বাধিয়া টানিতে টানিতে হামিদ গিন্নীর দরজায় কড়া নাড়ে। হামিদ সাহেবকে পাওয়া গিয়াছে এইতো দেখেন। ওমা বলে কি? ইনি হামিদ সাহেব নন। যান যান আসল মানুষকে খুঁজিয়া আনুন।

পরেরদিন এক লোক সত্যি সত্যি ইয়া গোঁফ আর ভুড়ি সজ্জিত গায়ে গতরে বিশাল বপুর হাফ প্যান্ট পরা সারা গায়ে কালিঝুলি মাখানো এক লোককে আনিয়া দরজায় কড়া নাড়তে হামিদ সাহেবের ছোট ছেলে দরজা খুলিয়া জিজ্ঞাসা করিল কি চাই। আগন্তুক রশির এক প্রান্ত বালকের দিকে আগাইয়া দিয়া কহিল এই যে বাবা হামিদ সাহেবকে অনেক কষ্ট করিয়া ধরিয়া আনিয়াছি নাও ধর।

দাঁড়ান আমি মাকে ডাকিয়া আনিতেছি। বালক ভিতর বাটিতে গিয়া আনন্দ সহকারে মাকে কহিল মা শীঘ্র আইস হামিদ সাহেবকে পাওয়া গিয়াছে। মা পুলকিত চিত্তে দরজায় আসিয়া এই বপু দেখিয়া হতভম্ভ হইয়া পুত্রের কান ধরিয়া গালে এক চপেটাঘাত করিয়া কহিল হারামজাদা নিজের বাপকেও চিনিস না?

মাথাপিছু আয় ও বিড়াল সম্প্রদায়ের বিভ্রাট!

1603275421634

আমার বাসার পাশে ধবধবে সাদা গাত্রবর্ণের একটি বিড়ালছানা এসে হাজির হয়েছিলো। দু’দিন ধরে একই জায়গায় রয়েছে। কে বা কারা হয়তো অন্ধকারের আড়ালে এখানে এসে রেখে গিয়েছে। হয়তো হতে পারে বিড়াল সম্প্রদায়ের কোন অনুপ্রবেশকারী এ ঘটনা ঘটিয়েছে।সে যায় হোক এখন সব থেকে বড় সমস্যা হলো এ সম্প্রদায়ের বিড়ালের মাথাপিছু আয় কত সেটা এখনো হিসেব করে ওঠা হয়নি!

যে বিড়াল কারো বাসায় শখের গৃহপালিত প্রাণী বলে ম্যালা যত্ন-আত্তি পায় তার মাথাপিছু আয় কি সারাদিন না খেতে পেয়ে এদিক ওদিক দাপিয়ে বেড়ানো বিড়ালের চেয়ে বেশী হবে নিশ্চয়!কিন্তু সব থেকে সমস্যা হলো বিড়াল সম্প্রদায়ের ভাই বেরাদর জ্ঞাতিগোষ্ঠীর মধ্যে অধিকাংশই দুর্নীতিগ্রস্ত। এক টুকরো তেলাপিয়া মাছ দিলেই সব হিসেব উল্টোপাল্টা করে দেয়… ইলিশ, কাতল হলে তো কথাই নেই।

তো বেশ ক’দিন ধরে চলছে বিড়াল সম্প্রদায়ের মাথাপিছু আয় গণনার কাজ। তো প্রাথমিকভাবে এ নিয়ে একটা তদন্ত কমিটি গঠন করা হলো। গৃহপালিত মোটাসোটা বিড়ালদের একাংশ পদাধিকার বলে দায়িত্ব পেলেন এই বিড়াল শুমারীর। কিন্তু আরেকটা বিপত্তি দেখা গেলো..বিড়ালদের মধ্যে কেউ একজন হঠাৎ বলে উঠলো:

মেউ, শুনেছি বড় কাজ করার আগে বিদেশে ট্রেনিং নিতে যেত হয়…তো সেটা ব্যবস্থা করলে ভালো হতো না? মেউ…

এ বড় চিন্তার বিষয়…এত বড় একটা কাজ হবে অথচ কোন বিড়ালের বিদেশে প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানো হবে না এটা কি করে সম্ভব! তো সেই মোতাবেক বিড়ালদের অভিজাত শ্রেণির একাংশ ৫০০ কোটি টাকা ব্যায়ে উগান্ডায় প্রশিক্ষণে গেলো। এদিকে বিড়ালদের মাথাপিছু আয় গণনার কাজ এখনো একটুও আগায়নি…

অভিজাত বিড়ালদের একটি শ্রেণি বিড়ালদের খবরের কাগজ ‘বিড়ালের আলো’ পত্রিকায় নিয়মিত বড়বড় কলাম লিখে চলছে… বিড়ালদের দ্রুত মাথাপিছু আয় গণনা করো। অন্যথায় আন্দোলন হবে ঈদের পরে। কিন্তু কি করে বিড়ালদের মাথাপিছু আয় গণনার করা হবে…?সেটা তো অত্যন্ত দূরূহ একটি কাজ…প্রথম সমস্যা হলো বিড়ালের মাথাপিছু আয় গণনায় কেন মূদ্রার হিসেবে করা হবে? দ্বিতীয় সমস্যা বিড়াল সমাজের মধ্যে ঐক্যবদ্ধতা নেই…আর কিছু বিড়াল একদল থেকে আরেকদলে অনুপ্রবেশকারী। সুতরাং সেই বিড়ালটির মাথা পিছুআয় হিসেব করা বড্ড গোলমেলে হয়ে যাবে। কিন্তু মাথাপিছু আয় হিসেবে না করলে অন্য সম্প্রদায়ের সঙ্গে তুলনায় কোথায় হবে?

বিড়ালদের মধ্যে একাংশ দাবি জানিয়েছেন, সকল বিড়ালের খাবার নিশ্চিত করো…ওসব মাথাপিছু আয় দিয়ে আমাগো লাভ নাই…কিন্তু সেসব পাত্তাই পায়নি…আগে মাথাপিছু আয় তারপর অন্যকিছু…যাহোক এসব করতে করতে আমার বাসার পাশের বিড়াল ছানাটি আবারো নিখোঁজ হয়ে গেলো…যাক নিখোঁজ হয়েও বাঁচা গেল.. নইলে মরলে মাটি দিতে হবে না পুড়িয়ে ফেলতে হবে সে নিয়েও বিড়ালপতিদের মাঝে বিরাট গ্যাঞ্জামের সৃষ্টি হতো। 😴

লেখকের বিড়ম্বনা

আমি কোন লেখক বা সাহিত্যিক হবার জন্য হাতে কলম ধরিনি বা এই বিজ্ঞানের যুগে যেহেতু কলম দিয়ে লেখার প্রচলন উঠেই গেছে তাই বলা যায় কম্পিউটারের কি বোর্ডে হাত দেইনি। তবে মনের গোপন কোণে যে এমন একটা সাধ সুপ্ত নেই সে কথাও জোর দিয়ে বলতে চাই না। নিতান্তই চাকরি থেকে অবসর নিয়ে সময় কাটাবার জন্য বিশেষ করে কারো মুখের গ্রাস কেড়ে নেয়ার চেষ্টা বা দলিল, নোট জাল করা বা কাউকে গুম করে মুক্তিপণ আদায় করা বা ডাহা মিথ্যে সাক্ষী দেয়া কিংবা কারো মাথায় কাঁঠাল ভেঙ্গে খাবার চিন্তা কিংবা কি করে মানুষের খাবারের সাথে ইট পাথরের গুড়ি কিংবা কাপড়ে দেয়ার রঙ কিংবা নর্দমার পানি বা নিদেনপক্ষে মানুষের খাবার অযোগ্য পদার্থ মেশানোর চিন্তা গুলি মাথায় এসে ভর না করে আমাকে রাতারাতি কোন বিখ্যাত আধুনিক মহান ব্যক্তিত্বের অধিকারী না করে ফেলতে পারে সেই চেষ্টা করতে চাই।

ফরমালিন এবং কার্বাইড দিয়ে পচা খাবার তাজা রাখা এবং ফলমূল পাকিয়ে মানুষের সামনে তুলে ধরার মহান চেষ্টা থেকে বিরত থাকার জন্যেই এই কাজে হাত দিয়েছি। আটা ময়দা দিয়ে এন্টিবায়োটিক বানানো, খড়ি মাটি দিয়ে স্যালাইন বানাবার প্রক্রিয়া শেখার আগ্রহ যাতে আমার মাথায় চেপে বসতে না পারে সেই অপ চেষ্টা করার জন্যেই এই কাজে রত থাকার চেষ্টা করি। এগুলি নাকি আধুনিকতা। তা ভাই আমি কিন্তু এত আধুনিক হতে চাই না সে কালের মানুষ সেকেলে থাকতে পারলেই ভাল। আমার যুগে আমার চাচাত ভাইকে দেখেছি ঝিটকার হাটে পাঁচ টাকায় একটা আধ মনি খাসি বিক্রি করে আট আনার রসগোল্লা কিনে এনেছিল তখন একশ টাকায় গরু পাওয়া যেত। আমি নিজেও আট আনা কেজি গরুর মাংস কিনেছি। যাক সেসব কথা, ওগুলি বললেতো বিশ্বাস করবেনই না উলটা আমাকে পা কিংবা মাথা গোল মনে করে সন্দেহের চোখে তাকাবেন তাই কি দরকার সেকালের কাহিনী গাইবার? নিজেই লিখি নিজেই পড়ি এসব কিছু করি আর সময় গুলা বেশ তর তর করে চলে যায়। ব্যাস আর কি?

আগে আমরা কলম দিয়েই লিখতাম কিন্তু মেয়েদের দেখতাম ওরা কি সুন্দর করে কি বোর্ড চেপে চেপে নানা কিছু লিখে ফেলছে। তাই দেখে দেখে ভীষণ লোভ হচ্ছিল ইশ আমিও যদি এমনি করে লিখতে পারতাম! ওদিকে লজ্জায় কাওকে বলতেও পারছিলাম না আবার শেখার ইচ্ছেটাকেও দমিয়ে রাখতে পারছিলাম না তাই একদিন নিজের ছোট মেয়েটাকেই বললাম আমাকে একটু এই কি বোর্ড চালানো শিখিয়ে দিতে পার মা? মেয়ে তার মনের মত ছাত্র পেয়ে মহা খুশি।

এসো বাবা আমি তিন দিনেই তোমাকে শিখিয়ে দিচ্ছি, তুমি সবই পারবে। তোমাকে প্রথমে কম্পিউটার অন অফ করা থেকে শুরু করব পরে ওয়ার্ডে কাজ করা শেখাব তারপরে ইন্টারনেট ব্যবহার করা, নানা কিছু সার্চ করে ইন্টারনেট থেকে দেখে নেয়া, ই মেইল করা এগুলি আস্তে আস্তে সব শিখিয়ে দেব।
বাহ! মনের আনন্দ চেপে রাখা কষ্ট হলেও কিছু করার ছিল না তাই চুপচাপই রইলাম। মেয়ে তার কাজ শুরু করে দিল। অনেক কিছুই শেখাল আমিও শিখলাম। ফল যা হল তা একেবারে মন্দ বলার উপায় নেই।
কি বোর্ড চেপে চেপে, ছড়া, পদ্য, গল্প এমনকি উপন্যাস পর্যন্ত লিখতে পারছি। আমার শিক্ষা গুরুও খুশি আমিও মহা খুশি। ক্রমে ক্রমে আমার নিজের ওয়েব সাইট, ব্লগ বানানো শিখে ফেললাম।

এই যে এতক্ষণ ভরে সাতকাহন গীত গাইলাম সে যে কেন গাইলাম তা কি কিছু বুঝতে পেরেছেন? এটা হল মাত্র ভূমিকা এবার শোনেন আসল ঘটনা। একটা কথা কানে কানে বলে যাই, দেখবেন কাওকে বলবেন না, আমি কিন্তু আমার প্রিয়তমা পত্নী দেবীকে মোটেই ভয় পাই না। (সত্য না মিথ্যা জানি না)।

সেদিন এমনি করে কি বোর্ডের বোতাম চেপে চেপে একটা গল্প লিখছি আর প্রিয়তমা এসে বললেন
এই, দোকান থেকে নুডলস নিয়ে এসো বিকেলে রান্না করব। লেখা ছেড়ে উঠে গিয়ে পাশের দোকান থেকে এনে দিলাম। ফিরে আবার বসেছি তখন
এই, যাওতো দেখ রান্না ঘরের জানালাটা খোলা আছে কিনা দেখে এসো খোলা থাকলে বন্ধ করে দিও মাছ ভেজে রেখেছি বিড়াল ঢুকলে সব খেয়ে ফেলবে যাও এক্ষণই যাও।
আমি গল্পের নায়িকাকে নৌকা ডুবি থেকে বাচাতে গিয়ে জানালা বন্ধ করার কথা ভুলে গেলাম আর অমনি একটু পরেই আবার তাড়া
কি হল জানালা বন্ধ করে এসেছ?
না ভুলে গেছিলাম
যাও এক্ষণই যাও। সারাদিন বসে বসে কি কর? তোমাকে দিয়ে কোন কাজ হয় না। তোমার কম্পিউটার বন্ধ করবে নাকি আমাকে উঠতে হবে?
ভয়ে আমার প্রাণ পাখি প্রায় খাঁচা ছেড়ে যাবার উপক্রম হল কিন্তু অনেক সাহস করে বললাম
আহা রাগ করছ কেন অন্তত কিছু অন্ন ধ্বংস তো হচ্ছে
হ্যাঁ শুধু তাই হচ্ছে , যাও কথা না বাড়িয়ে জানালা বন্ধ করে এসো
অগত্যা উঠে গেলাম। জানালা বন্ধ করে দেখি পানির ফিল্টার থেকে পানি লিক করে ডাইনিং স্পেসের মেঝে ভেসে যাচ্ছে। গিন্নিকে বলার সাহস না পেয়ে (বললেও সে আমাকেই মুছতে বলবে) ঘর মোছার ন্যাকরা আর বালতি কোথায় জিজ্ঞেস করলাম আর অমনি তিনি রেগে এক ঝারি দিয়ে বললেন ঘুমটা মাত্র লেগে আসছিল দিলেতো ভেঙ্গে! কি হয়েছে?
কাঁচুমাচু করে ওগুলির ঠিকানা জানতে চাইলাম
এগুলি দিয়ে এখন কি করবে?
কাহিনী শোনালাম।

যাও দেখ রান্না ঘরের সিংকের নিচে ন্যাকরা আর বাথ রুমে কাল বালতি আছে, দেখবে লাল বালতি কিন্তু নিও না।
আমার মনে কিন্তু তখন গল্পের নায়ক নায়িকা এখন কি করবে কোথায় যাবে তাই নিয়ে একটু ভাবনা কাজ করছে আর আমি ভুলে গিয়ে বাথরুম থেকে বিপদ জনক রঙ লাল মনে করে লাল বালতি আর ন্যাকরা নিয়ে ফ্লোর মুছে ওখানেই রেখে চলে এসে আবার মাত্রই কি বোর্ডের সামনে বসেছি আর গিন্নি তখন বাথরুমে যাবার জন্য উঠেছেন। তিনি রুম থেকে বের হয়ে লাল বালতিতে ঘর মোছার ন্যাকড়া দেখে তেলে বেগুনে ঝাঁজ করে উঠলেন
করেছ কি এটা, এই কাপড় ধোয়ার বালতি এখানে কেন?
নিজে ভুল করেছি এখন স্বীকার না করে উপায় নেই। সাহস করে অকপটে (সত্যের নাকি জয় হয়) বললাম ওটায় ফ্লোর মুছে রেখেছি!
সারা দিন কি কর? একটু চোখেও দেখ না যে কাল বালতিতে ঘর মুছে? কর কি? (ঘর মোছার বালতির দিকেও আমাকে নজর দারি করতে হবে কখনও কি ভেবেছিলাম?)
হ্যাঁ তাইতো ভুল হয়ে গেছে। আচ্ছা আবার হলে এমন হবে না এবার একটু থাম। ওদিকে নায়কের যাবার কথা ছিল পার্কে কিন্তু এই হাঙ্গামায় তাকে নিয়ে গেলাম নদীর পাড়ে। যা হবার তাই হল। কাহিনীর বিভ্রাট। আবার সেখান থেকে নতুন করে লিখতে হল।

সন্ধ্যার পর লিখতে বসেছি আর তিনি টিভি দেখছেন। আমি বললাম কি দেখ আমি তোমার এক মাত্র সোয়ামী, আমি একটু আধটু লিখালিখি করে মনের সুখ পাবার চেষ্টা করি, আমি যখন লিখতে বসি তখন দয়া করে আমাকে কিছু বল না। লিখতে লিখতে গল্পের ক্লাইমেক্সে এসে পড়েছি একটু পরেই শেষ হবে এমন সময় খোঁচা দিয়ে বলল
কি হয়েছে চশমাটা চাইছি না?
আচ্ছা চশমাটা এগিয়ে দিলাম। আবার লেখা শুরু করেছি লেখার গভীরে চলে গেছি আবার এক ধমক
কি হল সাউন্ড কমিয়ে দিতে বলছি শুনছ না।
সাউন্ড কমিয়ে দিয়ে এবার মধুর সুরে বললাম ওগো প্রিয়তমা, তুমি হলে আমার ঘরের সু গৃহিণী আমার প্রিয়তমা রমণী, জানত সংসার সুখের হয় রমণীর গুনে
হুম, বুঝলাম কিন্তু এত মধুর কথা কিসের জন্যে?
দেখ তোমার একমাত্র সোয়ামী একজন লেখক, কত কি লিখছে তুমিতো আর এগুলি পড়ে দেখ না কাজেই বুঝতে পার না কত কি অমূল্য লিখা লিখছি, কাজেই বলছিলাম কি লেখার সময় অন্তত আমাকে বিরক্ত করা থেকে বিরত থাকলে ভাল বৈ মন্দ হবে না। জান না, মাইকেল মধুসূদন দত্ত যখন লিখতেন তখন তার স্ত্রী ডরোথি দরজার পাশে দাঁড়িয়ে থাকতেন, আমার মাইকেলের কাগজ বা কলমের কালি ফুরিয়ে যায় তাহলে কে এনে দিবে? ও যে সারা রাত ধরে সাদা কাগজে লিখে যাবে! ভয়ে বসত না যদি ঘুমিয়ে পড়ে!
হুমায়ুন আহমেদের কুসুম কুমারি শাওন বলেছিল “একজন লেখক লিখছেন, তার থেকে পবিত্র দৃশ্য আর কিছু হতে পারে না।”

তাই বলছিলাম কি একজন লেখককে একটু সাহায্য কর! বলা যায় না দেখবে আমি হয়ত একদিন হুমায়ুন আহমেদ হয়ে যাব তখন কি হবে? ভেবে দেখেছো? ভাবতো একবার, সবাই যখন আমার প্রশংসা করবে, অটোগ্রাফ নেয়ার জন্যে বাড়িতে লাইন পড়ে যাবে, টিভিতে আমার ইন্টারভিউ নিবে তখন গর্বে অহংকারে তোমার পা মাটিতেই পড়তে চাইবে না!
তোমাকে কত কি কিনে দিব তার কি কোন হিসেব আছে? হুমায়ুন আহমেদ শাওনকে সেন্ট মার্টিনে বাড়ি করে দিয়েছিল আর আমি তোমাকে কাশমীরে বাড়ি করে দিব, তুমি মনের সুখে পায়ের উপরে পা রেখে সামনের ঝুর ঝুর করে ঝরা তুষার দেখবে আর কফি খাবে!
হ্যাঁ বুঝেছি, এখন যাওতো আধা কেজি কাঁচামরিচ নিয়ে এসো।
হাত থেকে চিনামাটির পেয়ালা পাকা মেঝেতে পড়ে যেমন খান খান হয়ে টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙ্গে যায় আমার লেখক হবার সাধ বাসনাও তেমনি করে ভেঙ্গে গেলো।
লেখকের এমন বিড়ম্বনা সইবার কোন উপায় আছে কি না তার কোন সন্ধান দিতে পারেন কেও?
এর থেকে পরিত্রাণের কোন উপায় বলতে পারেন? অন্তত সবাই মিলে একটু চেষ্টা করেই দেখুন না!

কি যে করি?

কয়দিন যাবত শরীলডা কেমন কেমন লাগতেছে মাথায় ঝিম ধইরা থাকে, খালি খাই খাই ভাব কিন্তু দাতে ধার নাই তাই কিছু চাবাইতে পারিনা, চোখে সব সময় সইরষা ফুল দেহি, হাত পাও নিতে চাই একদিকে চইলা যায় আর এক দিকে। কি মসিবত!

এক দোস্ত কইল কবিরাজের কাছে যাও। ভাবলাম এইডা বুঝি সৎপরামর্শ তাই গেলাম। বিশেষজ্ঞ কবিরাজ হাত পাও, মাথা, গলা, নাক, চোখ, পেট, বুক সব টিপা টুপা দেইখা কইল রক্ত পরীক্ষা করতে হইবে।

নেন কত রক্ত লাগবো
বেশি না এক লিটার হইলেই হইবো
আচ্ছা নেন আমার শরীলে টনকে টন রক্ত আছে , নেন যা লাগে
রক্ত মক্ত পরীক্ষা কইরা কইলো আপনের সারা শরীলের রক্ত দূষিত হইয়া গেছে।
তাইলে এখন কি করুম?
রক্ত বদলাইতে হইবো, এ ছাড়া আর কোন উপায় নাই
ভাল রক্ত কই পামু?
আরে মিয়া আপনে নিজেইতো একজন দুষিত মানুষ, আপনের বাইচা থাকার দরকারটা কী? আপনে আবার ভাল রক্ত দিয়া কি করবেন? যান, ভাগেন মরেন গিয়া!
কন দেহি এইডা একজন বিশেষজ্ঞ কইবরাজের মত কথা হইলো?

তেলা পাখি

জানেন তো আমি বিজ্ঞানী হইতে চাই বলে সব সময় নানা রকম ভাবনা আমার মাথায় দৌড়াদৌড়ি করে। সেদিন বিকেল বেলা চায়ের কাপ হাতে নিয়ে একটু একটু চুমুক দিচ্ছি আর ভাবছি, মানুষে তেলাপোকা বলে কেন? তাকে তেলাপোকা বলে অসম্মান কেন করে? তাহাকে তেলা পাখী বলে সম্মান করা উচিত নয় কি?
সেতো পক্ষীকুলের সদস্য, তাহার পাখা আছে, সে ইচ্ছা করলেই এক জায়গা থেকে উড়ে আর এক জায়গায় যেতে পারে তবে যখন এরোসল স্প্রে করা হয় তখন একটু বেশীই উড়তে পারে।
লোকে বলে পিপীলিকার পাখা উঠে মরিবার তরে। তাই বলে কি তেলা পাখিরও তাই নাকি? তেলা পাখি সারা বিশ্বে ভ্রমণ করতে পারে, বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন জাতি, ইচ্ছা করলেই বিশ্বে যে কোন ব্যাংকে লক্ষ কোটি হিরা মনি মানিক স্বর্ণ ইত্যাদি তার প্রয়োজন মত সঞ্চয় করতে পারে। তাহার দেহ আহা কতই না সুন্দর দেখলেই ওয়াক আসিতে চায়বলে একতা সুন্দর ছবিও দিতে পারছি না। কি জানি লোকে আবার লাঠি নিয়ে আমাকে তাড়া করে যদি!
আমার মনে হয় এখন থেকে তাকে তেলা পাখি বলা উচিত। এটা একটি ভাবনার বিষয় নয় কি?

লেখাপড়া

কয়দিন যাবত ভাবতেছি শব্দ নীড়ে বা ফেস বুকে কিছু লেখুম না আবার ভাবি তাইলে যদি লেখাপড়া ভুইলা যাই!
কি এক দোটানায় পরলাম! এই কূলে না ওই কূলে যাই? কার কাছেই বা বুদ্ধি চাই তাও বুঝতেছি না। আইজ কাইল কেউ কেওরে সুবুদ্ধি দেয় না খালি কুবুদ্ধি দেওয়ার পায়তারা করে। আপনেগো মইদ্ধে কেউ আছেন যিনি আমার একটু খানি সুবুদ্ধি দেবেন?

আকাশচারী

করোনার ডরে ঘরবন্দী থাকতে থাকতে মাথার ঘিলুতে ভূমিকম্পের মতন থরথরি ঝাকুনি শুরু হইলো বইলা সেদিন আকাশে গেলাম একটু পায়চারি করার জন্যে। যাইতেছি যাইতেছি হঠাত মাইকের শব্দ পাইলাম। এদিক সেদিক খোজাখুঁজি কইরা ওই দূরে দেখলাম বিশাল জমায়েত। আরে এইখানে আবার এরা আইলো কইত্তিকা? আস্তে আস্তে ডরে ডরে কাছে গেলাম।
তাগো বাউন্ডারির কাছে গেছি আর ওমনেই এক উর্দি পরা পালোয়ান জিজ্ঞাসা করিল ” এই তোমার পাশ কই?”
আমারতো পাশ নাই!
ভাগ ব্যাটা!
কেন যামু?
হট্টগোল শুইনা দেখি ২/৪ জন এইদিকে আগাইয়া আসতেছে। কেমন জানি চেনাজানা মনে হয়! হ, তাই! পপলার আফা, সাগরানি আফা, রানী দিদি, নবরুল ভাই, মোরকাদুল সাহেব, সাহিদার ভাই, বিপ্রতীপ কাহা এই সব গুনি জনের মিটিং।
উর্দিওয়ালা একজনরে কইলো দে খেদাইয়া।
কওয়ার সাথে আমার কলার ধইরা ঘারে ধাক্কা দিয়া কইল “যা ব্যাটা ভাগ” এইহানে গুনি সমাবেশ হইতেছে দেহনা? হালায় কাংগালি আইছে।
তয় ভাগ্য ভাল বেশী জোরে ধাক্কা দেয় নাই বইলা বাড়ির ছাদেই পরছিলাম , একটু জোরে দিলে কই পরতাম আবার রিকশা ভাড়া দিতে হইতো।

সুখের দাম ১০০০ কোটি টাকা

কয়েকদিন আগে সুইস ব্যাংক সহ কয়টা বিদেশি ব্যাংকে গিয়া কইলাম ১ কেজি সুখ দেন ভাই। বেটারা কইলো আমাগো কাছে যত সুখ ছিল সবতো আপনেগো দেশের গরীব মানুষেরা নিয়া গেছে।
তাইলে কি করা যায় ভাই, আমার অন্তত ১কেজি সুখের খুব বেশি দরকার, রাইতে ঘুম হয়না দাতে ধার নাই কিছু খাইতে পারিনা, কি করি?
আপনেরে আমাগো লাস্ট স্টক থেকে কিছু দিতে পারি।
কি দর ভাই?
দাম বেশি না, মাত্র ১০০০ কোটি টাকা কেজি।
থাক ভাই এত সস্তার সুখ আমার লাগবোনা।
হায়রে সুখ! তোর জন্যে কত খুন, ব্যাভিচার, অনাচার, অবিচার!

স্বপ্ন দেখা

স্বপ্ন প্রতিটি মানুষই দেখে। কারণে অকারণে দিনে-রাতে স্বপ্ন দেখেই যাচ্ছে। কেউ ঘুমের ঘোরে স্বপ্নের ডানা মেলে এদেশ-ওদেশ ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমিও স্বপ্ন দেখি প্রতিদিন, প্রতি রাতে। স্বপ্ন দেখি দিনের বেলাতেও। স্বপ্ন দেখা আমার নতুন কিছুই নয়। স্বপ্ন ছোটবেলা থেকেই দেখছি। ছোটবেলা ঘুমের ঘোরে যদি স্বপ্ন দেখতাম, আর যদি সেই স্বপনের দৃশ্যগুলো মনে থাকতো; সেই দৃশ্যগুলো মায়ের কাছে বলতাম। আগেকার সময়ে স্বপ্ন দেখা নিয়েও অনেক কুসংস্কার ছিলো। ঘুমের ঘোরে স্বপ্ন দেখাও অনেকে বিশ্বাস করে থাকতো। আমার মা-ও একজন কুসংস্কার প্রিয় মানুষ ছিলেন। মায়ের কাছে যখন স্বপ্নের দৃশ্যগুলোর কথা বলতাম, তখন আমার মা সেসব দৃশ্যগুলোর বিশ্লেষণ করতেন।

যদি স্বপ্নে কোনও সাপ দেখতাম, তাহলে মা বলতেন, ‘সাবধানে থাকিস! বিপদ হতে পারে।’ যদি মৃত: মানুষ দেখতাম, তাহলে মা বলতেন, ‘আপনা দেখলে পরের হয়, পরেরটা দেখলে নিজেদের হয়। তুই কি মরা মানুষ নিজের কাউকে দেখেছি?’ যদি বলতাম, ‘না মা, আমি স্বপ্নে অপরিচিত একজনকে মরতে দেখেছি।’ তাহলে মা দীর্ঘনিশ্বাস ছেড়ে বলতেন, ‘সর্বনাশ হয়েছে রে! কী জানি হয়! জিজ্ঞেস করতাম, ‘কি হবে মা?’ মা ধমক দিয়ে বলতেন, ‘স্বপ্নে পরের মরা দেখা ভালো না! এতে নিজেদের ঘাড়ে বিপদ এসে ভর করে।’ এরপর থেকে আমার মা খুব টেনশনে থাকতেন। ক’দিন পর দেখতাম আমাদের কারোই কোনও বিপদ হয়নি! তখন মাকে জিজ্ঞেস করতাম, ‘মা, তুমি না বলেছিলে স্বপ্নে পরের মরা দেখলে নিজের কাঁধে বিপদ এসে ভর করে! আজ কয়েকদিন গত হলো, কই আমাদের তো কারোই কোনও বিপদ হয়নি।’ তখন আমার মা আমাকে শান্তনা দিয়ে বলতেন, ‘বিপদ কেটে গেছে,বাবা। সব সময় কি আর স্বপ্ন ফলে? তবে এসব দেখা ভালো না। স্বপ্ন শয়তানেও দেখায়।’ জিজ্ঞেস করতাম তা আবার কেমন স্বপ্ন মা?’ মা বলতেন, ‘শয়তানে তোকে ঘরের বাইরে নিয়ে বলবে হিসু দেয়। তুই যদি শয়তানের কথায় হিসু দিস, তাহলে সকালে ঘুম থেকে জেগে দেখবি যেই বিছানায় ঘুমিয়ে ছিলি, সেই বিছানায় হিসু দিয়ে ভিজিয়ে রেখেছিস।’

আসলেও এমন আকাম-কুকাম মাঝে মাঝে আমার ঘটে যেতো। এরজন্য আমার মা ঠাকুর, মোল্লা, মুন্সি, ওঝা বৈদ্য, গ্রাম্য কবিরাদের কাছ থেকে কেজি খানেক তাবিজ-কবজ আমার গলায় বেঁধে রাখতেন। সেই তাবিজের গাট্টি গলায় ঝুলিয়ে মাসের পর মাস আমার বিছানা ভিজানোর দায়ে সাজা ভোগ করতে হতো। তারপরও হঠাৎ হঠাৎ শয়তানের প্রবঞ্চনায় পড়ে বিছানা ভিজিয়ে রাখতাম। অবশ্যই ছোটবার সেই শয়তান মনে হয় বড় হওয়ার সাথে সাথে আমাকে ছেড়ে অন্য কারোর কাঁধে চড়েছিল। কিন্তু সেই ছোটবেলার স্বপ্নের শয়তানের শয়তানির কথা আমার আজও মনে আছে। ছোটবেলার স্বপ্নগুলোর কথা যখন মনে পড়ে, তখন একা একা ভাবি!

সেই ভাবনা থেকে আমি এখনো ঘুমের ঘোরে খুবই সাবধানে থাকি। কারণ, ঘুমের ঘোরে সেই ছোটবেলার শয়তানটা যদি আবার ওইসব আকাম-কুকাম ঘটায়! তাই খুব সাবধানে স্বপ্ন দেখি। মা বলতেন, ‘ঘুমের ঘোরে কখনো খাবার খাবি না। ঘুমের ঘোরে খাবার খেলে পেটখারাপ হবার সম্ভবনা থাকে।’ তাই আমি ঘুমের ঘোরে কখনো কোনও রাজপ্রাসাদে যেতাম না। কারণ সেসব রাজপ্রাসাদে অনেকরকমের দামী-দামী খাবার থাকে। যদি লোভে পড়ে খেয়ে ফেলি! তাহলে তো আমার পেটের পীড়া নিয়ে ভুগতে হবে। তাই আমি ওইস নামি-দামি রাজ-রাজাদের প্রসাদে না গিয়ে থেকে যেতাম গরিবের ভাঙা ঘরে। নহয় বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে থাকা কোনও বস্তিতে। বস্তিঘরে কোরমা, পোলাও, চিকেন বিরিয়ানি থাকে না। বস্তি ঘরে থাকে পান্তাভাত। ভূলবশত জল ঢালা পান্তাভাত খেয়ে ফেললেও, অন্তত পেটখারাপ হবে না। গরিবের পান্তা ভাতে ভিটামিন আছে। শান্তা ভাতে পেটখারাপ হবার কোনও লক্ষ্মণ দেখা দিবে না।

আবার আমি স্বপ্নে কখনোই প্যারিস, লন্ডন, আমেরিকার শিকাগো শহরেও যাই না, যাইওনি। কারণ আমি গরিব মানুষ! লেখাপড়া কম জানেওয়ালা একজন অধম মানুষ! লন্ডন, আমেরিকা, ফ্রান্স, প্যারিসের ইংরেজি ভাষা আমি জানি না, বলতেও পারি না। ভাষা না জানলে, আর না বুঝলে যে বিপদে পড়তে হয়, সেটা আমার খুব ভালো জানা আছে। তাই আর ঘুমের ঘোরে স্বপ্নেও ওইসব ইংরেজি ভাষাভাষীদের দেশে আমি যেতাম না। আমি বাঙালি। বাংলা আমার মায়ের ভাষা, মাতৃভাষা। তাই আমি স্বপ্নের মাঝে থেকে যেতাম, আমাদের নারায়ণগঞ্জ শহরের চাঁনমারি বস্তি কিম্বা ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের পাশে যত্রতত্র ফেলে রাখা দুর্গন্ধময় বর্জ্যের পাশে থাকা বস্তি ঘরে।

ঘুমের ঘোরে কখনো বিমানে চড়িনি, দমবন্ধ হয়ে যাবে বলে। আমার ঘুমের ঘোরে স্বপ্নে চড়া হতো আগেকার সময়ের গরুগাড়ি, ঠেলাগাড়ি, ভ্যানগাড়ি, আর গরিবের ভাঙাচুরা রিকশায়, নাহয় নারায়ণগঞ্জ টু সদরঘাট মুড়িরটিন বাসে। ঘুমের ঘোরে স্বপ্নে সাবমেরিন চড়ে মহাসাগরের তলদেশে যাইনি কখনো, নিরুদ্দেশ হয়ে যাবো বলে। যদি সাবমেরিনে চড়ে পানির নিচে গায়েব হয়ে যাই, তাহলে আমার দুখিনী গিন্নী সারাজীবন আমার জন্য কেঁদে কেঁদে বুক ভাসাবে। তাই অসহায় গিন্নীর কথা চিন্তা করে স্বপ্নে কখনো সাবমেরিনে চড়িনি।

তবে হ্যাঁ, একবার নাসার মহাকাশযান যানে চড়তে চেয়েছিলাম। অত্যাধুনিক রকেটে চড়ে চাঁদের দেশে যেতে চেয়েছিলাম, চাঁদের বুড়ির সাথে দেখা করতে। উদ্দেশ্য ছিলো, চাঁদের বুড়ির যুগযুগ ধরে কাটা সুতাগুলো পাইকারি দরে কেনার। অনেকেই বলতে পারেন, ‘এই সুতা দিয়ে কী হবে?’ কী হবে শুনুন তাহলে–
:আমাদের দেশে এই কাটা সুতার প্রচুর চাহিদা আছে। এদেশের জুট ব্যবসায়ীরা এগুলোকে জুট বলে। এই জুট মেশিনের সাহায্যে আবার তুলা তৈরি হয়। সেই তুলা দিয়ে আবার সুতা তৈরি হয়। আবার লেপ-তোষক তৈরি হয়। আরও নানারকম পদ্ধতিতে নানারকম কাজে ওইসব জুট ব্যবহার করা হয়। গার্মেন্টসের টুকরো কাপড়ের জুট থেকে বড়-বড় কাপরের টুকরা বেছে নিয়ে, ঐগুলা দিয়ে ছোটদের জামা-প্যান্ট-সহ আরও অনেককিছু তৈরি হয়। তাই বর্তমানে আমাদের দেশের অনেক স্থানে এই জুটের জন্য সময়-সময় খুন-খারাবির মতো কাণ্ডও ঘটে যায়। গার্মেন্টসের জুট আর টেক্সটাইল মিলের জুটের জন্য দলা-দলি সৃষ্টি হয়! সিন্ডিকেট গড়ে তোলা হয়! মারা-মারির সৃষ্টি হয়!

এসব জুট একসময় গার্মেন্টস টেক্সটাইল মিলের মালিকরা ময়লা আবর্জনার সাথে ফেলে দিতো। সেই ফেলানো ময়লা আবর্জনার জুট এখন লক্ষলক্ষ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশের শিল্পনগরী এলাকায় এই জুটের জন্য সিন্ডিকেটেরা বড়-বড় নেতাদের পায়ে-পায়ে ঘুরছে। এসব দেখে মনে মনে ভাবতে থাকি, ইশ! যদি চাঁদের দেশে গিয়ে বুড়ির কাটা সুতাগুলো এদেশে নিয়ে আসতে পারতাম! তাহলে তিনদিকে উপকার হতো, লাভবানও হতো।
প্রথমত: ☛ চাঁদের বুড়ি তো যুগযুগ ধরে দিনের-পর-দিন, রাতের-পর রাত সুতা কেটে বোঝাই করে রাখছে। এতে করে চাঁদের বুকে কাটা সুতা হয়ে যাচ্ছে পাহাড় সমান। এর কারণে দিন-দিন রূপালি চাঁদটা অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যাচ্ছে। চাঁদের বুড়ির কাছ থেকে নামমাত্র মূল্যে ঐগুলা কিনে আনলে, চাঁদের বুড়িও বেশকিছু টাকা হাতে পাবে। সেইসাথে চাঁদের কিরণ আরও উজ্জ্বল দেখা যাবে এবং চাঁদের ভারসাম্যও কিছুটা রক্ষা হবে।
দ্বিতীয়ত: ☛ চাঁদের বুড়ির কাছ থেকে কাটা সুতাগুলো আমাদের দেশে আনতে পারলে এদেশে জুটের চাহিদা অনেকাংশে মিটে যাবে। জুট নিয়ে খুনা-খুনি, মারা-মারি, দলা-দলি কম হবে। বড়-বড় নেতারাও একটু আরামে ঘুমাতে পারবে। জুট ব্যবসায়ীদেরও ভালো ব্যবসা হবে।
তৃতীয়ত:☛ চাঁদের বুড়ি থেকে নামমাত্র মূল্যে জুটগুলো কিনে এনে আমাদের দেশের জুট ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করলে বেশকিছু টাকা লাভ তো অবশ্যই হবে। সেই টাকা দিয়ে আমার মতো অনেক অভাবী সংসারের অভাব দূর হবে।
এসব নিয়ে ভাবতে ভাবতে একসময় ঘুমের ঘোরে ঠিকই নাসার মহাকাশ যানে চড়ে চলে গেলাম চাঁদের দেশে।

নাসার মহাকাশযান থেকে রোবট সাজে সজ্জিত হয়ে রকেট থেকে নেমে যখন চাঁদের বুড়ির সামনে গেলাম, তখন চাঁদের বুড়ি তেড়ে এসে আমার দুইগালে ঠাস-ঠাস দুটো থাপ্পড় মেরে জিজ্ঞাসা করলো–
:তুই না নেহাৎ গরিব মানুষ? গরিব হয়েও নাসার মহাকাশযান যানে চড়ে পৃথিবী থেকে এখানে আসলি কেন?’
চাঁদের বুড়ির প্রশ্নের জবাবে আমি কান ধরেই বললাম–
:বুড়ি মা, আমিতো আপনার সাথে কথা বলতে এসেছি। আগে আপনার পা ছুঁয়ে নমস্কার করে নিই, তারপর নাহয় এখানে আসার উদ্দেশ্যটা বলি!’
আমার কথা শুনে চাঁদের বুড়ি বললো–
:নমস্কার লাগবে না। তুই আমাকে ছুঁতেও পারবি না। তোর সাথে করোনাভাইরাস আছে। তুই আমাকে ছুঁলে আমিও আক্রান্ত হয়ে পড়বো। তাই যা বলার দূরে থেকেই বল! বল উদ্দেশ্যটা কী?
আমি কাঁপতে কাঁপতে বললাম–
:বুড়ি মা, আপনার কাটা সুতাগুলো পাইকারি দরে কিনতে এসেছিলাম। আমি ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি আপনার সূতো কাটার কৃতিত্বের কথা। তাই ভাবলাম! আপনার কাটা সুতাগুলো পৃথিবীতে নিয়ে আমাদের দেশের জুট ব্যবসায়ীদের কাছে কম দামে বিক্রি করে দিবো। এতো আমাদের দেশের জুট ব্যবসায়ীদেরও জুটের চাহিদা মিটবে, আর আমার সংসারে লেগে থাকা অভাবও দূর হবে।
এই কথা বলার পরই চাঁদের বুড়ি আমাকে আরেকটা জোরে থাপ্পড় দিয়ে আমার এক কানের কানের পর্দা ফাটিয়ে দিলো। তারপর বললো–
:তুই কি বোকা? এখানে কি কোনও সুতা তৈরির ফ্যাক্টরি আছে? আমার কি খেয়ে-দেয়ে আর কাজ নেই? আমি কি বসে বসে শুধু সুতাই কাটবো?
আমি বললাম–
:তাহলে বুড়ি মা, আমি যে ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি, আপনি একটা বটগাছের নিচে বসে বসে যুগযুগ ধরে শুধু সুতাই কাটছেন! তাহলে আমি কি ভুল শুনেছি?
আমার কথা শেষ হতে-না-হতে আমাকে আরেকটা থাপ্পড় মারতে চাইলো। তা দেখে আমি একটু সরে দাঁড়ালাম। থাপ্পড় আর আমার গালে লাগলো না। দ্বিতীয় থাপ্পড় থেকে রক্ষা পেলাম। তারপর চাঁদের বুড়ি ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে বললো–
:আমি এখানে আছি চাঁদকে দেখে রাখার জন্য। যাতে রাহু চাঁদকে গিলতে না পারে। আমি হলাম মা বুড়ি। চাঁদকে পাহারা দিয়ে রাখি। তুই যা এখান থেকে!
এই বলেই আমাকে একটা ধাক্কা দিয়ে চাঁদ থেকে নিচে ফেলে দিলো। আমি সেদিন বায়ুমন্ডলে ঘুরতে ঘুরতে খুব কষ্টে বআসায় পৌঁছেছিলাম। কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম একটুও টের পেলাম না। সকাল ১০টায় গিন্নীর পাগলা ঘণ্টার আওয়াজে ঘুম থেকে ওঠে নিজে নিজেই বলতে লাগলাম, আমি বাসায় এলাম কী করে? এই ভাবেই একা একাই হাসতে থাকি। মনে মনে বলি, ‘এ আমি কী দেখলাম! সত্যি কি স্বপ্ন দেখলাম?’

দীলখুশ মিয়ার সন্দেশঃ আপনার ম্যাচের খোলে কয়টা চাল

হাই হ্যালো।
কেমন আছেন আপনারা?
আমি?
করোনাক্রান্ত পৃথিবীতে বন্দি ছিলাম। তবে যারা ভেবেছেন দীলখুশ মিঞা অক্কা পাইছে তাঁদের নাকে মুখে গোলাপের সুবাস ঢেলে জানিয়ে দিলাম “আবে বউয়ের বড় ভাইয়ের পোয়া, আমি আছো বেঁচে আছি। ভালো আছি।’
সবাই বলেন আলহামদুলিল্লাহ।

তবে পৃথিবী ভালো নেই। শুনুন মমতাদির লেখা একটা কবিতার অংশ বিশেষ।

বস্তাপচা ময়লায় ঢেকে গেছে পৃথিবীটা
মানুষ, মানুষ থেকে দূরে।
ছোঁয়া যাবে না— স্নেহের পরশকে।

কালও যা ছিল
হাতের ছোঁয়ায় আর্শীবাদ
আজ তা পরশমণর
স্পর্শ থেকে বাদ…

আহারে!
এইতো পৃথিবী এখন।
বাদ দেই এসব দুঃখ দুঃখ বাস্তবতা।
একটা কহিনী কই। হাসবেন না যেন। ওকে ডান।
………..
হ্যালো! এটা কি কাস্টমার কেয়ার?

– হ্যাঁ ম্যাডাম বলুন। আমরা কিভাবে আপনাকে সাহায্য করতে পারি।

– বলছি আমার ছেলেটা আমার সিমটা খেয়ে ফেলেছে।

– দেখুন, আপনি ওকে ইমিডিয়েট ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান, এখানে ফোন করে সময় নষ্ট করছেন কেন?
– না আমি বলছিলাম আমার সিমটাতে ২০০ টাকার টক টাইম আছে।

– তাতে কি?

– যতক্ষণ না পর্যন্ত সিমটা বের করা হচ্ছে ততক্ষণ আমার ছেলেটা যদি কথা বলে তাহলে আমার ব্যালেন্স কাটা যাবে না তো!

– কাস্টমার কেয়ারের এক্সিকিউটিভ অজ্ঞান! আপনি? জানি আপনার নার্ভাস সিস্টেম বাড়ই শক্তিশালী। আপনি অজ্ঞান হবেন না। হাসবেন। হাসুন না মন খুলে।
যদি এই করোনা কালে আপনার হাসি পায় তবে আপনার জন্য এই নিন একটা লাল গোলাপ।

আচ্ছা আপনি ম্যাচের খোলে কয়টা চাল পেয়েছেন? ভাবছেন এটা আবার কেমন প্রশ্ন! আচ্ছ, আসেন রফিক আর পলির ঘটনাটি খেয়াল করি।
……… ……..
রফিক আর পলির আজ বাসর রাত…
রফিক পলি কে কিস করছে…..এসময় দেখে পলির কাছে একটা ম্যাচের খোল আর একটা ৫০ টাকার নোট।

রফিকঃ ম্যাচের খোল কেন?

পলিঃ তোমার কাছে আমি কিছুই লুকাবোনা…
যখন আমি আমার কোন বয়ফ্রেন্ডের সাথে সেক্স করতাম তখন একদানা চাল আমি এটার মধ্যে রাখতাম।
রফিক কিছু না বলে ম্যাচের খোলটি হাতে নিয়ে খুলে দেখে খোলের মধ্যে মাত্র তিনটি দানা। সে কিছুটা গম্ভীর হয়ে মনে মনে ভাবলো যাক মাত্র তো তিনটি দানা এই ভেবে সে পলিকে মাফ করে দিল।

তারপরও রফিক ৫০ টাকার ব্যাপারে কৌতুহল থামাতে না পেরে বলেই বসল…
রফিকঃ আচ্ছা ম্যাচের কাহিনী তো বুঝলাম কিন্তু তোমার হাতে ৫০ টাকার নোট কিসের??

পলিঃ গতকালই আমি ২ কেজি চাল ৫০ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছি!

আপনি ম্যাচের খোলের ভিতর চাল গুনতে থাকুন।
আমি চললাম।
দেখা হবে আবার এই আশাবাদ ব্যক্ত করে আজকের মতো বিদায়।
আল্লাহ হাফেজ।

হুদাই

১.
আলো সরল পথেই চলে। আর তাই আপনি ওয়ালে টর্চ মারলে ঐ ওয়ালেই পড়বে, জানালা দিয়ে ঘুরে ফিরে পাশের বাড়ির সুন্দরী জরিনার ওপর পড়বে না। এখন টর্চের আলোর সামনে একটা কার্ডবোর্ড রাখলে তার ছায়া ওয়ালে পড়বে। ছায়া অন্ধকার এবং আলোর এত ক্ষমতা নাই যে সে কার্ডবোর্ড ভেদ করে ওয়ালে আছড়া পড়বে। আলোহীনতার কারনে ছায়ার অংশটা অন্ধকার হবে। এটা সবাই জানে, এর মধ্যে নতুনত্ব কিছু নাই। এখন বাসার দুস্ট শিশুটি একটা সুই নিয়ে কার্ডবোর্ড ফুটো করে দিলো। তাহলে ওয়ালে দেখবেন ছায়ার মধ্যে একটা ফুটো পেয়েছেন। স্বাভাবিকভাবে একটাই ফুটো পাবেন। কিন্তু শিশুটি ধারনাতিত দুস্ট হওয়ায় ঐ ফুটোর পাশে আরেকটা ফুটো করে দিলো। তো স্বভাবতই মনে হতে পারে ওয়ালে আপনি দুটো ফুটোই পাবেন।

কিন্তু না, তাকিয়ে দেখলেন অনেকগুলো ফুটো লাইন ধরে। মনে হতে পারে কোনো ম্যাজিক বা কিছু একটা ভুল বা ফুটো আরো কোথাও আছে। আপনি যেটা করলেন আরো কার্ড বোর্ড নিলেন এবং দুটো ফুটো করে বোর্ডে টর্চ মেরে দেখলেন ফোটার সংখ্যা টর্চের মাথা থেকে কার্ডবোর্ডের দূরত্বের সাথে বাড়ছে কমছে। এমনকি ফোটাগুলোর উজ্জলতাও। প্রশ্ন আসতে পারে আলো যদি এমন ঘুরায় ফেরায় যায় তাহলে ওয়াল ভেদ করে জরিনার কাছে যায় না কেন?

এরকম একটা পরীক্ষা, এমন সন্দেহ নিয়ে পদার্থবিদরাও চিন্তায় পড়েছিলেন এবং এখান থেকেই কোয়ান্টাম ফিজিক্সের ব্যাসিক ধারনা প্রতিষ্ঠা পায়। তারা এর সমাধান দেয় অনেকটা এভাবে: পুষ্কুরীনিতে আপনি যখন ঢিলটা মারলেন তখন তার চারপাশে গোলাকার ঢেউয়ের সৃষ্টি হইছে। এখন আপনি একটা কাজ করলেন ৮-১০ টা খুটি ফাকা ফাকা রেখে পুস্কুরিনীর তলদেশে পুতে একটা গোলাকার বৃত্তের সৃষ্টি করলেন এবং তার মধ্যে একটা ঢিল ছুড়লেন। একটু ভালো করে দেখেন এবার তার চারপাশের গোলাকার ঢেউ একটা প্যাটার্ন সৃষ্টি করছে। খুটি বরাবর সামনের দিকে কোনো উচু ঢেউ নেই কিন্তু দুটো খুটির মাঝখানে ফাকা বরাবর প্রথমে একটা, পরে সেটা থেকে দুটো এবং একটু পর চারটা এমন করে ছোট ছোট ঢেউয়ের সংখ্যা বাড়ছে। ঠিক এই জিনিসটাই আলোর সাথে হচ্ছে।

তার মানে আলো আসলে কনিকা নয়, এগুলো একেকটা ঢেউ। তাহলে আমরা যে অমুক কনিকা সমুক কনিকা পাওয়া গেছে বলি এটা কি ভুল? না, সেগুলো আমরা গননার সুবিধার্থে বলি। আর কনিকা হলেও যে পিং পং বলের মতো টু টু করে ফাল পাড়বে সেটা না। প্রতিটা ঢেউয়ের চূড়া একটা বিন্দু এবং বিন্দু গুলোর আচরন অনেকটা পিং পং বলের মতো। তাই বলে আপনি বলতে পারবেন না এটা শুধু ফাল পাড়তেছে। পিং পং বল যেমন ডানে বায়ে ঘুরে, সামনে এগোয়, বাউন্স করে এই পয়েন্টগুলোও সেরকম করে। এবং আপনি যখন তাদের বিন্দু মনে করে হিসাব করেন তাহলে তখন আপনি বুঝতে পারবেন কিভাবে একটা কনিকা নির্দিস্ট অনেক জায়গাতে থাকতে পারে।

আর এজন্যই শ্রোয়েডিঙ্গার তার তার বিড়ালের থট এক্সপ্যারিমেন্ট দ্বারা বুঝাতে চেয়েছেন কেন এটা একই সময় জীবিত ও মৃত!
এতুকু যদি বুঝতে পারেন, নিদেপক্ষে অনুধাবন করতে পারেন তাহলে আমার কথা শুনে রাখুন, আপনি এখন পুরো কোয়ান্টাম ফিজিক্স নিজে বুঝে ক্লাস থ্রি এর একটা পিচকিকে সে বিষয়ে জ্ঞান দিতে পারবেন এরকম মজাদার এক্সপেরিমেন্টের মাধ্যমে, দারুন তাই না?

২.

পঞ্চইন্দ্রিয়ের ব্যাখ্যাতীত সবকিছুই আমাদের কাছে অলৌকিক লাগে। একসময় মনে হতো বৃষ্টি পড়া সুর্য দেখা, পীরের দোয়ায় গর্ভবতী হওয়া বিশাল কেরামতি। যদিও মানুষজনের জ্ঞানবুদ্ধি বাড়ার সাথে সাথে বুঝতে পারে আসলে ঐ পীরটা ছিলো একটা লম্পট চরিত্রের।

পোস্ট শেষ। ভাবলাম হুদাই একটা জিনিস লেখে পোস্ট করি।

ঔষধ বাকি নাই

রুগী: ডাক্তার বাবু আছেননিও দোয়ানে আম্নে?
ডা: কি অইছে আম্নের, না কইলে বুঝি ক্যামনে!
রুগী: কইতাছি তাত্তাড়ি কইরা আহেন এট্টু সামনে।
ডা: আইছি আমি, এলা কন সমস্যাডা কোনানে?

রুগী: আমার শৈলডা খালি কাঁপে, মাথাডাও ঘুরে!
ডা: ওহ্ বুজ্জি বুজ্জি, আম্নেরে জ্বরে ধরছে জ্বরে!
রুগী: মনে অয় জ্বরের লগে এট্টু এট্টু ঠান্ডাও আছে!
ডা: তাইলে ত আম্নেরে এক্কারে ভালা ধরাই ধরছে!

রুগী: অহনে কি এই অসুখের ভালা ওষুধ আছে?
ডা: থাকতো না ক্যা? ভালা বিদেশি ওষুধই আছে!
রুগী: ঠান্ডা জ্বরের লগে কইলাম কাশিও আছে!
ডা: তায়লে ত আম্নেরে এইবার ধরার মতনই ধরছে!

রুগী: কন কিও ডাক্তার? তায়লে এইডার ব্যবস্থা?
ডা: খারন দেহি, দেইখা লই আম্নের শৈল্লের অবস্থা!
রুগী: কি দেখলেন ডাক্তার বাবু? অবস্থা কি ভালা?
ডা: অবস্থা সুবিধার না, জ্বর অইয়া গেছেগা কালা!

রুগী: হায়! কন কি? শেষমেষ কালাজ্বরে ধরছে?
ডা: হ, হেডাই ত দেখতাছি, পরীক্ষায় ধরা পড়ছে!
রুগী: তয়লে ওষুধ দেন, টেকা কইলাম দিমু পরে!
ডা: হালার রুগী আমার, তয়লে মর তুই কালাজ্বরে!

বিপথে গিয়েছে যে, আম ছালা তার সবই যাবে

জন বল্টন, আমেরিকান যুদ্ধবাজ কূটনীতিবিদ এবং সামরিক উপদেষ্টা। সামরিক ভাবে দূর্বল দেশগুলোতে সামরিক হামলা, গৃহযুদ্ধ লাগানো, গণহত্যা, নাশকতা, নিষেধাজ্ঞা আরোপ, অন্যের খনিজ সম্পদ লুট। আরো কত কূটবুদ্ধি, অসুস্থ চিন্তা, কাপুরোষচিত পরিকল্পনা তার মাথায় আসতো তার বর্ণনা একমাত্র সেই দিতে পারবে। কিন্তু শেষ ভালো হলো না, বরখাস্ত হয়ে নিজেই ফানি ক্যারেকটার বা উপহাসের পাত্র হয়ে গেলো।

তার জন্য একটা কথা বলি, “বিপথে গিয়েছে যে, আম ছালা তার সবই যাবে।”