সবমেরিন যুগে বাংলাদেশ

এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। সত্যি কি এগুচ্ছে? প্রশ্ন হচ্ছে কোনদিকে এগুচ্ছে বাংলাদেশ। রজনৈতিক ভাবে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ, বিচার ব্যবস্থা স্বাধীন, গণতান্ত্রিক পরিবেশ ইত্যকার নানাবিধ প্রশ্ন তোলা যায়। তবু আমরা কিছু দিকে এগুচ্ছি বই কি। এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ এটা এখন বাস্তবতা। উন্নয়নের নবযাত্রা এখন জয়যাত্রা শুরু করে দিয়েছে। সাবমেরিন যুগে পদার্পন করেছে বাংলাদেশ।

সাবমেরিনের ইতিহাসঃ

ডুবোজাহাজ (ইংরেজি ভাষায়: Submarine) হচ্ছে পানির নিচে চলাচলে সক্ষম ও স্বাধীনভাবে বিচরণকারী নৌযানবিশেষ। সচরাচর ডুবোজাহাজ অনেক ক্রু অবস্থান করে থাকেন। ডুবোজাহাজকে প্রায়শঃই তার বিভিন্ন আকার-আকৃতি এবং জাহাজের সাথে তুলনা করে একে নৌকা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। অনেক পূর্বকাল থেকেই পরীক্ষামূলকভাবে ডুবোজাহাজ নির্মাণ করা হয়েছে এবং ঊনবিংশ শতকে বিভিন্ন দেশের নৌবাহিনীতে এর ব্যবহার অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়ে।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ডুবোজাহাজ ব্যবহারের ব্যাপকতা বিস্তৃতভাবে লক্ষ্য করা যায়। বর্তমানে অনেক বৃহৎ আকারের নৌবাহিনীতে এর অনেক সংগ্রহ রয়েছে। শত্রুবাহিনীর জাহাজ কিংবা ডুবোজাহাজ আক্রমণ মোকাবেলায় এর ভূমিকা ব্যাপক। এছাড়াও, বিমানবাহী জাহাজ বহরকে রক্ষা করা, অবরোধ দূরীকরণ, প্রচলিত স্থল আক্রমণ ও বিশেষ বাহিনীকে গুপ্তভাবে রক্ষণাবেক্ষণে ডুবোজাহাজর কার্যকারিতা অপরিসীম।

সাধারণভাবেও ডুবোজাহাজ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তন্মধ্যে – সমুদ্র বিজ্ঞান, উদ্ধার তৎপরতা, পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অনুসন্ধান কার্যক্রম, পরিদর্শন এবং রক্ষণাবেক্ষন সুবিধার জন্যও ডুবোজাহাজ ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও, ডুবোজাহাজকে ব্যবহারের লক্ষ্যে বিশেষায়িত কার্যক্রম হিসেবে অনুসন্ধান ও উদ্ধার তৎপরতাসহ সাগরতলে অবস্থিত ক্যাবল মেরামতেও সম্পৃক্ত করা হয়। পর্যটকদের আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে সাগরতলে নিমজ্জিত প্রত্নতত্ত্ব পরিদর্শনেও ডুবোজাহাজ ব্যবহৃত হয়।


নবযাত্রা ও জয়যাত্রাঃ

নৌবাহিনীর জন্য ১ হাজার ৫৬৯ কোটি টাকায় দুইটি সাবমেরিন কেনার জন্য চীনের সঙ্গে ২০১৪ সালে চুক্তি করে বাংলাদেশ। ২০১৬ সালের ১৪ নভেম্বর সাবমেরিন দুইটি চীনের দালিয়ান প্রদেশের লিয়াওয়ান শিপইয়ার্ডে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল নিজাম উদ্দিন আহমেদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সি ট্রায়ালের পর চীন ও বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কর্মকর্তা এবং নাবিকদের তত্ত্বাবধানে ২২ ডিসেম্বর সাবমেরিন দুইটি বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) সূত্র জানায়, সাবমেরিন দুইটির প্রতিটির দৈর্ঘ্য ৭৬ মিটার ও প্রস্থ সাড়ে ৭ মিটার। টর্পেডো ও মাইনে সুসজ্জিত সাবমেরিনগুলো শত্রুপক্ষের যুদ্ধজাহাজ ও ডুবোজাহাজে আক্রমণ চালাতে সক্ষম। পূর্ণ ধারণ ক্ষমতা নিয়ে এগুলোর গতিবেগ ঘণ্টায় ১৭ নটিক্যাল মাইল।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসিত বক্তৃতাঃ

৯ মার্চ ২০১৭ রোববার দুপুরে চট্টগ্রামের নেভাল বার্থে আধুনিক দুই সাবমেরিন (ডুবো যুদ্ধজাহাজ) ‘নবযাত্রা’ ও ‘জয়যাত্রা’র কমিশনিং-কালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “আমরা কারও সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হতে চাই না। তবে কেউ আক্রমণ করলে যেন সমুচিত জবাব দিতে পারি, সেজন্য বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জাম সংগ্রহ করছি। তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ শান্তিপূর্ণ দেশ হয়েই থাকবে। আমাদের ভূখ- ব্যবহার করে কাউকে সন্ত্রাসী কর্মকা- করতে দেব না। আমরা পৃথিবীর সব দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক চাই। জনগণের সার্বিক উন্নতির জন্য আমরা এমন সম্পর্ক বজায় রাখতে চাই।”

শেখ হাসিনা তার রজনৈতিক কর্মকান্ডে ব্যাপক আলাচিত, সমালোচিত। আমরা সেসব আলোচনায় যেতে চাই না, সাবমেরিন যুগে বাংলাদেশ। আর দুটি সাবমেরিন কমিশনিং এ যে বক্তৃতা দিয়েছেন শেখ হাসিনা তাতে তাকে একজন যুগপযুগি মহানায়ক হিসাবে দেখতে পাই।

6 thoughts on “সবমেরিন যুগে বাংলাদেশ

  1. বাংলাদেশ নৌবহরে সাবমেরিন যুক্ত হওয়া নিঃসন্দেহে অন্যতম আনন্দের সংবাদ।
    তবে এই সাবমেরিনে দেশ কতটা উপকৃত হবে ভবিষ্যতই তা বলে দেবে।

    পোস্টের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

  2. সাবমেরিন ঢাকা – বরগুনা ভায়া পাতার হাটে চালাইতে হইবে
    হুদাই দেশের টাকা নষ্ট।

    1. মিয়ানমার ও ভারতের সাথে বিরোধ জাতিসঙ্ঘে নিষ্পত্তি হয়েছে বলে এখন বলা হচ্ছে, এতে স্থলভাগের চেয়েও দ্বিগুণ বড় সমুদ্র-অঞ্চল এখন বৈধ আন্তর্জাতিক সীমানা হিসাবেই আমাদের ভাগে এসেছে। এগুলো বুঝেশুনে নেয়ার ও অন্তত ধরে রাখার কাজ সম্ভব করতে গেলে উন্নত নতুন স্তরে সশস্ত্রবাহিনীগুলোকে সাজানো খুবই প্রয়োজন। আরেক তাৎপর্যপূর্ণ উল্লেখযোগ্য দিক – বিকশিত হওয়া নতুন ঘটনা হল, বঙ্গোপসাগর নিয়ে আমেরিকা-চীন-ভারতের কাড়াকাড়ির টেনশন দিন দিন বাড়ছে। অনুমান করা যায়, সামনে আরো বাড়বে। এতে কারো দিকে ঝুঁকে না পড়া, কোনো পক্ষ না নিয়ে নিরপেক্ষ থাকতে হলেও আর শুধু নিজের সীমানা রক্ষা করতে গেলেও ন্যূনতম সামরিক সক্ষমতা থাকা জরুরি। ফলে অনুমান করাই যায়, এসব প্রয়োজন পূরণের পরিকল্পনার অংশ হল সাবমেরিন কেনা।

  3. দীলখুশ মিঞার পক্ষ থেকে লাল গোলাপ শুভেচ্ছা।https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_rose.gif

    হাই হ্যালো।

    খেয়ালি মন বলেছেন,

    সাবমেরিন ঢাকা — বরগুনা ভায়া পাতার হাটে চালাইতে হইবেhttps://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_yahoo.gif
    হুদাই দেশের টাকা নষ্ট। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Razz.gif.gif

    তা হলেতো অনেক টাকা বেহুদা নষ্ট হলো।

    তবু আমাদের দুইখানি সাবমেরিন আছে এটা তো বলা যাবে। কম তো নয়।https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Yes.gif.gif

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।