বিভাগের আর্কাইভঃ দেশ

ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুসের কান্না ও আমাদের প্রত্যাশা

একটা কথা শুনা যাচ্ছে, ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুসকে তিন/চার/পাচ বছর কাজ করার সুযোগ দিলে বাংলাদেশ সিঙ্গাপুর /মালয়েশিয়া ইত্যাকার উন্নত রাষ্ট্রের অনুরূপ হয়ে উঠবে।

Lee_Kuan_Yew

লি কুয়ান ইউ, জিসিএমজি, সিএইচ, এসপিমেজে (জন্ম: ১৬ সেপ্টেম্বর, ১৯২৩ – মৃত্যু: ২৩ মার্চ, ২০১৫) স্ট্রেইট সেটেলম্যান্টসে (ব্রিটিশ আমলের সিঙ্গাপুর) জন্মগ্রহণকারী সিঙ্গাপুরের বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ছিলেন। সিঙ্গাপুরের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মালয়েশিয়ার কাছ থেকে দেশের স্বাধীনতার পর ১৯৬৫ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত দেশ পরিচালনা করেন। তিন দশকেরও অধিক সময় রাষ্ট্রপরিচালনার সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখেন। তাকে ‘সিঙ্গাপুরের স্বাধীনতার জনক’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।

আমাদের বাংলাদেশের স্বাধীনতার অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে পকিস্তান থেকে আলাদা হয়ে দেশ স্বাধীন হয়। তার শাসন আমলে দেশে কোন কোন উন্নয়নের সূচনা হয়েছিল বটে কিন্তু তিনি সফল হন নাই। বরং বাংলাদেশের মানুষ আরও গরীব হয়েছে, বিচার ব্যবস্থা ছিল একেবারেই নড়বড়ে। ১৯৭৪ সালে নেমে আসে দুর্ভিক্ষ। কংকালসার মানুষ হয়ে পড়ে বাংলাদেশের সিম্বল।

স্বাধীনতার পর আমরা আগাইনি। বরং আর্মিতে থাকা মুক্তিযোদ্ধারা পরস্পর রাজনৈতিক খুনাখুনিতে লিপ্ত হয়ে পরে।

১৯৭৪ সালে জাসদ তাদের চিন্তাধারা তৈরি হলো, “আন্দোলন মানে সশস্ত্র সংগ্রাম আর সংগঠন মানে সেনাবাহিনী।”

সেজন্য জাসদের ছত্রছায়ায় গড়ে উঠে বিপ্লবী গণবাহিনী। এছাড়া সামরিক বাহিনীর মধ্যে ১৯৭৩ সালে থেকে কাজ করছিল বিপ্লবী সৈনিক সংস্থা।

১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর দৃশ্যপট বদলে যায়।

IMG_20210119_132651

১৫ আগস্ট ১৯৭৫ ইং হতে ৭ নভেম্বর ১৯৭৫ ইং পর্যন্ত বাংলাদেশে ঘটে যায় সামরিক বাহিনীর নানা ক্যু পাল্টা ক্যু। অবশেষে মেজর জিয়াউর রহমান চলে আসেন ক্ষমতায়। বাংলাদেশের মানুষের আছে ইসলাম ধর্মের প্রভাব, আছে সমাজতন্ত্রের প্রভাব, আছে হিন্দু সাংস্কৃতিক চর্চা, আছে মুক্তিযোদ্ধা রাজাকার দ্বন্ধ । এই সকল প্রভাবের মাঝে মেজর জিয়াউর রহমান হয়ে উঠেন মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান। কঠোর সামরিক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন। এমনকি যাদের প্রত্যক্ষ মদদে তিনি ক্ষমতার শীর্ষে আসেন, তাদের তিনি সামরিক কায়দায় নিয়ন্ত্রণ করেন। এবং তিনি স্বৈরাচারী নীতি গ্রহণ না করে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে রাস্ট্র পরিচালনার নীতি গ্রহণ করেন।

সিঙ্গাপুর যেভাবে এগিয়েছে জিয়াউর রহমান সেদিকে যান নি। সামরিক বাহিনীকে যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন সিভিল সোসাইটির প্রতি তিনি সেই ভাবে আগান নি। তিনি সকল রাজনৈতিক ও মতাদর্শগত দ্বন্দ্বগুলিকে ঐক্যের ভিত্তিতে একত্রিত করতে চেয়েছিলেন এবং অনেকাংশে সফল হয়েছিলেন । তিনি বুঝেছিলেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর স্বাধীন হওয়া রাস্ট্রগুলি গণতান্ত্রিক পথে ধরেই রাজনৈতিক খুনাখুনি এড়িয়ে সিভিল প্রসাশনের নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ধারাকে নিয়ে এলেন রাজনীতিতে। এদিন রাস্ট্র ছিল সমাজতান্ত্রিক চিন্তাচেতনার ধারক ও বাহক। বরং শেখ মুজিবর রহমান দেশকে কমিউনিউজমের মতাদর্শের চরম মতামতে দিকে দেশকে পরিচালিত করতে চেয়েছিলেন । ১৯৭৫ এর পটপরিবর্তনের মধ্য দিয়ে জিয়াউর রহমান ক্ষমতা পেয়ে গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা শুরু করেছিলেন। তিনি সকল প্রকার মতাদর্শের মাঝে একটা ঐক্য গড়ার চেষ্টা করতে থাকেন। দেশ পেয়ে যায় গণতান্ত্রিক পথ। কিন্তু তিনিও সামরিক হানাহানির করুন স্বীকারে পরিনত হন। আর ছিটকে যায় দেশ। আবার স্বৈরাচার ঝেপে বসে দেশের নেতৃত্বে।

১৯৯০ সালের ও ২০২৪ সালের পটপরিবর্তনের ইতিহাস আমরা জানি। আমরা জানি নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে চক্রকারে ঘুর্নায়মান রাজনীতি। হরতাল, অবরোধ, জ্বালাও, পুড়াও, রাজপথে গণপরিবহনে পুড়ে যাওয়া মানুষের আর্তনাদ আজও আমাদের কানকে ভারী করে তুলে। কিন্তু যে-ই ক্ষমতায় যায় সেই নির্বাচন পদ্ধতিকে টেম্পারিং করে নিজের গদীকে চিরস্থায়ী করার কাজে নিজেদের নিয়োজিত রাখে। ১৯৯০ থেকে ২০২৫ সুদীর্ঘ ৩৫ টি বছর রাজনৈতিকভাবে দেশ এগোয়নি এক রত্তি। কিন্তু দেশ থেমে থাকেনি।

১৯৭২-৭৩ সালে তাজউদ্দীন আহমেদ যে বাজেট দেন তার আকার ছিল ৭৮৬ কোটি, ১৯৭৬-৭৭ সালে মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান বাজেট দেন তার আকার ছিল ১৯৮৯ কোটি, ১৯৭৭-৭৮ সালে লে. জেনারেল জিয়াউর রহমান যেই বাজেট দেন তার আকার ছিল ২১৮৪ কোটি টাকা, ২০২৩-২৪ সালে আ হ ম মোস্তফা কামাল যেই বাজেট দেন তার পরিমাণ ছিল ৭ লক্ষ ৬১ হাজর ৭৮৫ কোটি টাকা।

সময়ের চাকা ঘুরছে আর অর্থনীতির আকার বেড়েছে। বাংলাদেশিদের মাথা চক্কর দিয়াছে অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের ডামাডোলে। কি বিশাল কর্মকাণ্ড! আর এর অন্তরালে চলছে দূর্নীতির মহা উৎসব। এমনকি এক পর্যায়েতো দূর্নীতিতে পর পর পাঁচ বার পৃথিবীর সেরা পদ অলংকৃত করেছে। এরপর বাংলাদেশ দেখল মেগা প্রজেক্টের মেগা ডাকাতি, ব্যাংক লুটপাটের কাহিনি। আই ওয়াশ করে দুইটি পরিবারের লুটপাট দেখেছে মানুষ। আর শুনা গেছে উন্নয়নের বাদ্যবাজনা। কখনও এক পরিবার লুট করেছে তাদের স্বার্থরক্ষাকারী সহযোগিতায় আবার কখনও অন্য পরিবার আর তাদের রাজনৈতিক অনুসারীরা।

মানুষ! ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের পরবর্তীতে গরীব মানুষ যেই অবস্থায় ছিল আজও সেই অবস্থায় আছে। ধনিক শ্রেণী আর চালাক সুবিধাবাদীরা রাস্ট্রীয় লুটপাতে অংশীদার হয়ে একটা অতি ধনিক শ্রেণীর উদ্ভব হয়েছে। আর গরীব দিন দিন ক্রমে গরীব থেকে গরীব হয়েছে।

অতি উচ্চমাত্রার প্রচার প্রচারনায় বাংলাদেশের এই প্রকৃত চিত্রটি হারিয়ে গিয়াছিল। নব্বুইয়ের দশকেও বাজেট ঘোষিত হলে বলা হত গবীর মারার বাজেট। কিন্তু গত এক দশকে তেমন শ্লোগান শুনেছি বলে মনে করতে পারি না। সবকিছু ক্ষমতাসীনদের নিয়ন্ত্রণে ছিল, মুখগুলো ছিল তালাবদ্ধ। অর্থনৈতিক বৈষম্য নিয়ে কথা বলার লোক ছিল না। ছিল দুই প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবারের দ্বন্দ্ব। এক পক্ষে লুটের মহোৎসব করেছে, আর এক পক্ষে ছিল হাহাকার। জনগণ বুঝে গিয়েছিল রাজনৈতিক দলগুলির আন্দোলন হল ভাগ না পাওয়ার বা লুটে নেতৃত্ব দিতে না পারার ক্রোধ। তাই সব আন্দোলন ব্যর্থ হচ্ছিল।

কিন্তু যখনই বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের নামে আন্দোলন হল শুরু, মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি নিল যুব সমাজ আর মরল কাতারে কাতারে। দেশের মানুষ নেমে এলো রাজপথে । শুরু হলো গণ-জোয়ার। হলে গেল গণঅভ্যুত্থান। এক পক্ষ পালাল। অন্যপক্ষ ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য অস্থির হয়ে উঠল। অভ্যুত্থানের তিন দিনের মধ্যে তারা নির্বাচন দেয়ার জন্য সভা সমাবেশ করল। কারন তারা জানে এই নির্বাচন ব্যবস্থা তাদের পেশিশক্তি ও অর্থশক্তির উপর নির্ভর। ঢ়েহেতু এক পক্ষ পালাইছে অন্য পক্ষের কাছে নির্বাচনে জয়ী হওয়া খুবই সাধারণ ব্যাপার।

FB_IMG_1743688691458

কিন্তু বাধ সাধলো বৈষম্য বিরোধীরা। তারা আন্তর্জাতিক ভাবে গ্রহনযোগ্য নোবেল বিজয়ী ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুসকে নিয়ে এসে সরকার প্রধান করে দিল। সেনাপ্রধানের সমর্থনে সর্বজনীনভাবে গ্রহনযোগ্য হয়ে উঠলেন এই অর্থনীতিবিদ। প্রাথমিক ঝক্কি সামলাতে সামর্থ্য হওয়ার পর তিনি যখন অল্পসময়ে একে একে সফল হতে লাগলেন, তখন নানা মহল থেকে দাবী উঠলো দেশকে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া বানাতে তাকে রেখে দিতে হবে ক্ষমতায়।

কিন্তু এই সন্মানিত ব্যক্তিত্ব একি করলেন! দেশ বিদেশ থেকে গণ্যমান্য প্রভাবশালী কোম্পানির ডেকে এনে তাদের সামনে বাংলাদেশকে উলঙ্গ করে দিলেন! তিনি কেঁদে উঠলেন! এদেশের গরীব মানুষের কথা স্মরণ করে কেউ কাঁদে! তাও আবার ব্যবসায়িদের মিলনমেলায়। ব্যবসায়ীরা পুজির পুজো করে। প্রফিট করাই যাদের মুল কাজ। তাদেরকে কেঁদে কেঁদে বললেন, আমরা খুবই গরীব। এখানে চার কোটি মানুষ দৈনিক ১০০ টাকায় চলে। তিনি এখানে ইনভেস্ট করার আহ্বান করলেন। তিনি এখানে তার সামাজিক ব্যবসার কথা বললেন। তিনি গরীব মানুষের দুর্দশার চিত্র তুলে ধরনের।

আর স্পষ্টতই তিনি এদেশ নিয়ে যারা সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া হবার স্বপ্ন দেখেন তাদের সেই চাওয়াকে পাশকাটিয়ে সারাজীবন তিনি যা চেয়েছেন গরীবমুক্ত, বেকারমুক্ত পৃথিবী সেই দিকেই দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন।

কিন্তু তিনি কিভাবে নির্মাণ করবেন বৈষম্য হীন গরীবমুক্ত, বেকারমুক্ত পৃথিবী! যেখানে তার নিজের দেশে রয়ে গেছে গরীবের অনেক বেশি ছড়াছড়ি। অন্তত একটি দেশেতো তার থিওরির বাস্তবায়ন দেখাতে হবে। সমস্ত পৃথিবীর প্রশ্নতো আসবে পরে। অন্তত একটা দেশতো করে দেখাতে হবে দরিদ্রমুক্ত বেকারমুক্ত।

অনেকে সিঙ্গাপুরের, মালয়েশিয়ার আবদার নিয়ে আসছে, কিন্তু দেশর মানুষ চেয়ে আছে তার দিকে কিভাবে তিনি গরীবমুক্ত, বেকারমুক্ত দেশ করতে চান তার সঠিক পথনির্দেশনার দিকে।

image-52538-1738221104

অপেক্ষায় রইলাম।

রোডম্যাপ অব ড. ইউনুসঃ প্রধান উপদেষ্টা টু নির্বচিত প্রধানমন্ত্রী

রোডম্যাপ অব ড. ইউনুসঃ
প্রধান উপদেষ্টা টু নির্বচিত প্রধানমন্ত্রী FB_IMG_1743688691458

বিএনপি উঠতে বসতে সিনায় সিনায় একটা জিগির তুলছেঃ নির্বাচন নির্বাচন। ৫ আগষ্টের চেতনা তারা ধারণ করে না, এটা স্পষ্ট বরং এই ৫ আগষ্টের কথা বললে যেন তাদের অন্তর হয় ছেড়া বেড়া। নির্বাচনকে পেশী মুক্ত, কালো টাকা মুক্ত, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সকল প্রকার নির্বাচনের যে কোন প্রস্তাবই দেয়া হোক না কেন তারা কেবল বলে, না। নির্বাচন দাও নির্বাচন দাও জিগির তোলে কিন্তু যদি বলা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচন হোক তখন তারা বলে আগে সংস্কার পরে নির্বাচন, যখন বলা হয় আগে স্থানীয় নির্বাচন তখন তারা বলে আগে জাতীয় নির্বাচন হোক তারপর সরকার এসে স্থানীয় নির্বাচন করে নেবে। ঠিকাছে আস জাতীয় নির্বাচনকে নিরপেক্ষ করার জন্য সংস্কার শেষ করি, তারা বলে আগে নির্বাচন হোক পরে যারা ক্ষমতায় যাবে তারা সংস্কার করা যাবে। এবং হুমকি দেয় যদি সংস্কার কিছু করাও হয় তবে তারা সেই সংস্কার বদলে দেবে।

ড.ইউনুসের হাতের কোন সংস্কার BNP মেনে নিবে না এমনকি ক্ষমতায় গিয়ে সংস্কার পাল্টে ফেলবো বলে ছাত্র জনতাকে হুমকি দিলেন BNP’র মির্জা আব্বাস।

“ওদের হাতের (ইন্টেরিম সরকারের) কোন সংস্কার আমরা মেনে নিবো না, সংস্কার করলেও আমরা ক্ষমতায় এসে চেঞ্জ করে ফেলবো”- মির্জা আব্বাসের এই দাম্ভিক বক্তব্য নতুন কিছু নয়। ইতিহাসের ধারাবাহিকতা মাত্র!

স্মরণ করি,নব্বইয়ের স্বৈরাচার পতনের পর ১৯৯১ সালের শাহাবুদ্দীন সরকার ২৯টি সংস্কার কমিটি গঠন করে। ৯১ এ বিএনপি ক্ষমতায় এসে ২৯টি সংস্কার কমিটির প্রস্তাবিত তেমন কোন সুপারিশই বাস্তবায়ন করেনি।

এমনকি এরশাদ পতনের পর তিন দলীয় যে রূপরেখা হয়েছিল, ১৯৯৪ সালের মাগুরার উপ ইলেকশনে বিএনপিই সেই রূপরেখা প্রথম ভায়ালেট করে।

সকল বিরোধী রাজনৈতিক দল ও বেশিরভাগ মানুষের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবীকে অগ্রাহ্য করে বিএনপি ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নিজেদের অধীনেই নির্বাচন করে।

মনে পড়ে? তখন জামাত, আওয়ামী লীগ সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি তুলে আন্দোলন শুরু করে। গঠিত হয় জনতার মঞ্চ। আন্দোলনের তোপে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে পুনরায় নির্বাচন দিতে বাধ্য হয় বিএনপি।

তারপর বিএনপি আবার ক্ষমতায় আসে ২০০১ সালে। ২০০১ সালের লতিফুর সরকারের সময়ে টিআইবি কে দিয়ে ১৬টি সংস্কার কমিটির সুপারিশ করা হয়। বিএনপি সেগুলোও অনুসরণ করেনি।

তারপর ২০০৪ সালে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে টার্গেট করে সংবিধানের বিতর্কিত চতুর্দশ সংশোধনীর মাধ্যমে বিএনপি সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অবসরের বয়স বৃদ্ধি করে নেয়। যাতে করে নিজেদের লোক তত্বাবধায়ক সরকারে বসাতে পারে।

এই বিতর্কিত সংশোধনীকে কেন্দ্র করেই লগি-বৈঠা আন্দোলন শুরু হয়। আওয়ামী লীগ লাশের উপর নৃত্য করার সুযোগ পায়। পরবর্তীতে এক এগারো সরকার আসে।

রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতায় টিকে থাকার এই অতীত ইতিহাস সম্পর্কে এই প্রজন্ম ভালো করেই জানে। সংস্কার মানি না, সংস্কার চেঞ্জ করে ফেলবো এসব নতুন ইতিহাস নয়। আগেও হয়েছে।তাই ওদের হাতের সংস্কার আমরা মেনে নিবো না বলে মির্জা আব্বাস যে বক্তব্য দিসে, সেটা তাদের দলেরই ঐতিহাসিক রূপকে প্রতিফলিত করে।

জুলাই রক্তের উপর দাঁড়িয়ে নির্বাচন সংস্কার কমিশন গঠিত হয়েছে। সেই কমিশন নির্বাচন নিয়ে তাদের প্রস্তাবনাও অলরেডি প্রধান উপদেষ্টার কাছে সাবমিট করেছে।

জুলাই যদি ব্যর্থ হয়, সংস্কারকে যদি রাজনৈতিক দলগুলো অপোজ করে তাহলে মনে রাইখেন ইতিহাস সচেতন এই প্রজন্ম আর কাউকে ছেড়ে দিবে না,ইনশাআল্লাহ।

এদিকে অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্ঠা ড. মোহাম্মদ ইউনুস প্রথম ছয় মাসে অগোছালো হলেও আস্তে আস্তে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে তিনি তার জাত চিনাতে শুরু করেছেন। রমজান ২০২৫ (মার্চ ২০২৫) এ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখতে সামর্থ্য হয়েছেন তার সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, দব্যমুল্যের উর্ধগতিকে থামাতে এই সরকারের প্রতিটি পদক্ষেপ কাজে দিয়াছে, ঈদে মানুষের যাত্রাকে সহজ করতে পেরেছেন। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জাতিসংঘের মহাসচিবের বাংলাদেশ সফল, চীন সফরে মাথা উচু করা ভূমিকা, সর্বপরি বিমসটেক সম্মলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সাথে সম্মানসূচক কথোপকথন আমরা বাংলাদেশির ব্যাপক আমোদিত করেছে।

আর এই অভাগা জাতি আমরা এইটুকু সফলতাতে এত বেশি আবেগাপ্লুত যে, ইউসুস স্যারকে কমপক্ষে ৪/৫ বছরের জন্য ধরে রাখতে চাই।

কিন্তু কিভাবে এটা সম্ভব?

অনেকেই অনেকের কথা বলেন কিন্তু আমি মনে করি মাওলানা ভাসানী বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। তার বেশভূষা ছিল গরীবি, টাইটেল ছিল মাওলানা, অত্যন্ত বাকপটুতা যাকে অনন্যতা এনে দিয়েছিল। ৭১ পূর্ববর্তী সময়ে যিনি বাঙালি জাতিকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছিল।

mawlana-vasani_original_1731830744-750x430
এবং তার তরুন উদিয়মান শিষ্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আপোষহীন নেতৃত্বের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হলো বটে কিন্তু স্বাধীনতার পর শেখ মুজিব ভুলে তার গুরুর গুরুত্বের কথা।

পরবর্তী পর্যায়ে নানা পটপরিবর্তনের মাধ্যমে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এলেন। মাওলানা ভাসানীর তখনকার দল ন্যাপ ছিল, রাজনীতিতে তখনও তিনি ছিলেন সক্রিয়, শেখ মুজিবের সমালোচক ছিলেন। তিনি সমর্থন দেন জিয়াউর রহমানকে। জিয়াউর রহমানের অনাড়ম্বর জীবন ও রাস্ট্র পরিচালনায় অনন্য দক্ষতায় বাংলার মানুষের হৃদয়ে সেই যে ভালোবাসার জায়গা করে নিয়েছেন প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম আজও তার জনপ্রিয়তা অক্ষুণ্ণ রয়ে গেছে।
IMG_20210119_132651
গত চুয়ান্ন বছরে দুইজন নেতা মাওলানা ভাসানী ও জিয়াউর রহমান বাংলাদেশির মননে সচেতন ও আবচেতনভাবে সুদৃঢ় গাথুনি তৈরি করে গেছেন।

উপরিোক্ত এই দুই মহান নেতার গুণাবলীর সম্মিলন ঘটেছে প্রফেসর ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুসের চরিত্রে। অনাড়ম্বর বেশভূষা, অতি উন্নত আন্তর্জাতিক মানের চিন্তাবিদ, দেশ বিদেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নেতাদের সমান তালে তাল মিলিয়ে চলার অন্যন্য দক্ষতা, বরং অনেক ক্ষেত্রে অনেককেই ছাড়িয়ে যাওয়া ব্যক্তিত্ব অথচ কত সাধারণ তার চলাফেরা! কথা বলার ধরণে এক হাসির মাদকতা! অতি উচ্চমানের বক্তৃতা উপস্থাপন করার ক্ষমতা। এই অতি ব্যতিক্রমি চরিত্রটি পৃথিবীব্যাপী চড়ে বেড়ালেও বাংলাদেশীদের কাছে তিনি ছিলেন অপরিচিত এক মুখ যেন। কিন্তু তারণ্যের বিজয়ের মাঝে আমরা তার কার্যক্রম দেখার সুযোগ পেয়ে যাই।

অনেকের মাঝেই এই চিন্তা ভর করে কিভাবে তাকে রেখে দেয়া যায় আমাদের নেতা হিসাবে।
FB_IMG_1741931625398
এরই মাঝে জুলাই বিপ্লবের সামনের সারির নেতা বর্তমানে যিনি নানা কারণে আলোচিত, সমালোচিত তিনি সারজিস আলম। তিনি তার মনের এক ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন। তিনি তাকে নির্বাচিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চান। মূহুর্তে ছড়িয়ে পরে তার এই ইচ্ছার কথা। এ যেন সমস্ত জাতির মনে কথা বলে ফেললেন সরসিজ আলম।

কিন্তু কি ভাবে সম্ভব? কেউ বলছেন, তিনি যেন আজীবন নির্বাচন ছাড়াই ক্ষমতায় থেকে তার মেধাকে ঢেলে দেন বাংলাদেশ গঠনের কাজে। কিন্তু এভাবে নির্বাচন ছাড়া তাকে পাওয়ার কোন সম্ভবনা নেই। কারণ আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি তিনি যে সময়ের কথা বলেছেন তিনি সেই সময়েই নির্বাচন দিবেন।

তাহলে? কোন উপায় কি নেই?

এক্ষেত্রে আমার কিছু ভাবনা শেয়ার করি।

তার কাছে যেতে হবে। বলতে হবে আগামী ছয় মাসের ভিতর কিংবা সম্ভব হলে আরও কম সময়ের ভিতর তাকে একটা বই লিখতে হবে, কেমন বাংলাদেশ তিনি চান এবং কিভাবে তিনি তা চান। বলা হয়ে থাকে এনসিপি তার আশীর্বাদপুষ্ট দল। আমরাও চাই তাই যেন হয়। এনসিপি এই পুস্তককে তাদের নিজদের দলের লক্ষ্য উদ্দেশ্য হিসাবে ঘোষণা দিবে। এছাড়া নেতৃত্ব নির্বাচন কিভাবে হবে, দলের গঠনতন্ত্র কি রকম হবে তা ইউনুস স্যারের সার্বিক তত্ত্বাবধানে হবে। এনসিপি তাদের দলের গঠনতন্ত্র সেভাবে গঠন করবে। এর মধ্যে যে সংস্কার করার কথা তা সকল রাজনৈতিক দল বা বেশিরভাগ দলের ঐক্যের ভিত্তিতে সংস্কার প্রস্তাব পাস করিয়ে নেয়া হবে অধ্যাদেশের মাধ্যমে।

তাহলে এর মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিল পাশ হয়ে যাবে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাধানের প্রদান হতে পদত্যাগ করবেন ইউনুস স্যার ও ছাত্রদের প্রতিনিধিরা। এই সরকারের মধ্যে হতে কিম্বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান মতে তিন মাসের জন্য একটি সরকার গঠিত হবে।

ইউনুস স্যারকে সরাসরি সামনে রেখে এনসিপি নির্বচনের প্রস্তুতি নিবেন।

স্যারকে আমরা যারা কয়েক বছরের জন্য রেখে দিতে চাই তারাও সুযোগ পাবে নিজেদের মেলে ধরতে। আশা করা যায় ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাবে।

এভাবে হয়ে উঠতে পারেন ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস স্যার এই জাতির অনন্য কর্ণধার।

যা দেখছি সব বলে দিবঃ চাচার কবর কই চাচী কান্দে কই-১

যা দেখছি সব বলে দিব
চাচার কবর কই চাচী কান্দে কই
French-Revolution
………..
সারাদেশে যারা দেখে, যারা বুঝে, তারা বলছেন আমাদের দেশের যেই রাজনৈতিক কালচার আছে তাতে পরিবর্ধন, পরিমার্জন করা দরকার। যাকে বলা হইতাছে সংস্কার। রাজনৈতিক সংস্কার হতে হলে রাজনৈতিক দলগুলির মাঝে এই একটা বিষয়ে একমত হতে হইবে যে, কিছু বিষয়ে আমরা সকলে একমত তারপর যার যার মতাদর্শে দল চলবে পরে যে দায়িত্ব পাবে সে রাস্ট্র পরিচালনা করবে।

একটা সাধারণ কথা বলি। আমরা যখন ছাত্র ছিলাম তখন সবাই একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। যেমন স্কুলে বিভিন্ন টেস্ট, মাসিক, ত্রৈমাসিক, বার্ষিক পরীক্ষার উত্তীর্ণ হয়ে সরকারি ব্যবস্থায় বোর্ডের মাধ্যমে পরীক্ষার অংশগ্রহণ করে যে যার মেধা ও পরিশ্রমের ভিত্তিতে রেজাল্ট নিয়ে কর্মজীবনে ডুকতে হয়েছে। পরীক্ষা পদ্ধতি, প্রশ্নপত্র প্রনয়ন, উত্তর পত্র দেখা, ফলাফল প্রকাশ সব কিছু একটা নির্দিষ্ট নিয়মের ভিতর দিয়ে যেতে হয়। নিশ্চয়ই এই পদ্ধতি কি হবে তা নির্ণয় করা ছাত্র-ছাত্রীদের কাজ নয়। অটোপাশ একটা আপৎকালিন সিস্টেম। এটাকে বিবেচনায় আনা যাবে না যদিও এর মাধ্যমে পাশ করা ছাত্র ছাত্রীদের পাশ হিসাবেই বিবেচনায় আনতে হবে।

এখন এই সাধারণ আলোচনার পর আমি কিছু প্রশ্ন উদ্ভব করতে চাই। এই পরীক্ষার সিস্টেম সেটা কি ছাত্ররা নিজেরা নির্ধারণ করবে? নিশ্চয়ই না। সিস্টেম ডেভেলপ করতে হয় এক্সপার্ট দিয়ে। যদি কখনও সিস্টেমের কিছু পরিবর্তন করতে হয় তবে দেশ বিদেশের বিশেষজ্ঞ মতামতের ভিত্তিতে অভিজ্ঞতার ভিতর দিয়ে যেতে হয়।

এতক্ষণ আমি শুধু এইটা বলতে চাইছি ছাত্র-ছাত্রীরা কেবল একটা সিস্টেমের ভিতর দিয়ে নিজেকে প্রমানিত করে দেশ ও রাস্ট্রের সরকারি বেসরকারি নানামুখী কাজে নিজেদের নিয়োজিত করবে এবং নিজ যোগ্যতা অনুসারে পদ পদবী দায়িত্ব পাবে।

এখন সেদিকে যাওয়ার চেষ্টা করি যা বলতে চাইছি।

ইতিহাসের প্রায় সকল পর্যায়েই একথা প্রতিষ্ঠিত ছিল প্রজা চলবে রাজার অধীনে। রাজা নিজের ইচ্ছা মত কতগুলি নীতি নির্ধারণ করে দিবে সেইভাবেই প্রজাদের চলতে হবে। যারা যেভাবে ইচ্ছা চলবে তাকে কোন নিয়মে রাখা যাবে না। তার ভোগ বিলাসের জন্য প্রজাদের চাঁদা দিতে হবে যার রাষ্ট্রীয় সমার্থক শব্দ কর। এই কর আদায় করে রাজা তার বিলাসবহুল জীবন চালাইতে পারবে, ক্ষমতা আরও বাড়িয়ে নিতে আশেপাশের অঞ্চলগুলি যুদ্ধ বিগ্রহ ও নানামুখী কৌশলে দখলে নিয়ে সাম্রাজ্য গড়তে ও বাড়াতে পারবেন। এই ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য, কর আদায় করার জন্য সৈন্য সামন্ত বাহিনী, নানা ধরনের কেরানি কর্মচারী লালন পালন করছে। এই সব কর্মচারীরা রাজার কাছাকাছি গিয়ে নিজেরাও ভোগবিলাসী জীবন যাপন করেছে, প্রজারা এদের রসদ যোগাইয়াছি । কিন্তু এই শ্রেণীটি রাজা নন, রাজা সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী। রাজা যা চাইবেন তাই সকলে মিলে বাস্তবায়ন করে যাবে। শুধু তাই না, অন্য কে রাজা হবার সুযোগ পাইবে এটা চলবে বংশানুক্রমিকভাবে। রাজার পোলা হবে রাজা। কখনও রাজার বড় ছেলে হবে রাজা, কোথাও বা অন্যকোন ব্যবস্থা। এই জন্য এই উত্তরাধিকারীদের মাঝে চলে নানা গোপন কারসাজি, পারিবারিক কুটনীতি, কূটকৌশল । এখানে অন্য কোন কথা নেই, সারাজীবন রাজা রাজাই থাকবে কেবল মৃত্যু হইলে বা নিহত বা বন্ধী হলে বা দেশ থেকে বিতাড়িত হইলে ক্ষমতার পালাবদল হয়। এটাই রাজতন্ত্র। সারা পৃথিবীতে ছিল সাম্রাজ্যবাদী শাসন ও রাজতন্ত্র। এমন কি এখনও কোথাও কোথাও রাজতন্ত্র রয়ে গেছে।

nap
মানব জাতির ইতিহাসের এই সবেমাত্র কয়েক শত বছর আগে এই ব্যবস্থা পরিবর্তনের এক ভয়াবহ দাবানল সৃষ্টি হয়। প্রজারা আর প্রজা হয়ে থাকতে চায়নি। ১৭২৯ সালে ফ্রান্সে ঘটে যায় এক ব্যাপক উলট পালট। এই উলট পালটের ব্যাপারটার রাজনৈতিক টার্ম হইতাছে বিপ্লব। ফ্রান্সের সেই উত্তাল সময়ের ইতিহাস উলট পালট করা বিপ্লবকে নাম দেয়া হয়েছে ফরাসী বিপ্লব। সারা পৃথিবীতে অনেক ধর্মীয় পরিবর্তন এসেছে, অনেক যুদ্ধ, অনেক রক্তপাত, খুন, ধর্ষণ, নির্যাতন, জুমুল চলেছে পৃথিবীর মানুষের উপর, চলেছে নানা প্রতিবাদও। সব কিছুর মুল বিষয় এই ক্ষমতার স্বাদ গ্রহন ও অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ। আধিপত্য বিস্তার। ভোগবিলাসী জীবন। শৈল্পিক কারুকাজে প্রাসাদ, মিনার নির্মাণ, রাণীর সৌন্দর্য স্পৃহা, স্বর্ণ, হীরা মতির সুনিপুণ কারুকার্যময় অলংকারের পিছনে চলে গেছে বহু অর্থ যার জোগান দিতে হয়েছে প্রজাদের। কিন্তু ফরাসি বিপ্লব কেবল প্রজাদের এনে দিয়েছে নিজের শাসন নিজে করার অধিকার। প্রায় একই সময়ে ঘটে যাওয়া আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধ, স্বাধীনতার ঘোষণা পত্র ইত্যাদি পৃথিবীতে এনে দিয়াছে রাজতন্ত্রের বিপরীতে প্রজাতন্ত্রের ধারা। আর আস্তে আস্তে ডেভলব করেছে এক সুমহান ব্যবস্থা গণতন্ত্র।

সেই ইতিহাসের বিস্তারিত বর্ণনা৷ ও বিশ্লেষণ আমি এখানে দিতে চাইছি না কারণ আমি বাংলাদেশের গনতন্ত্র নিয়ে আলোচনা করতে চাইছিলাম। এছাড়া ফরাসি বিপ্লব, আমেরিকার গনতন্ত্র ইত্যাদি বিষয়গুলো আলোচনা করলে অবশই অথেনটিক সোর্স থেকে আলেচনা করতে হবে, নানা বইপত্র রেফারেন্স দিতে হবে। কেউ আগ্রহী হলে খোঁজে নিতে পারেন সেইসব ইতিহাসের আাদ্যপান্ত।

Abraham_Lincoln_O-77_matte_collodion_print

আমি কেবল ফরাসি বিপ্লব পরবর্তী সময়ের পরিবর্তন পৃথিবীর কিছু চিত্র উল্লেখ করতে চাই। ফরাসি বিপ্লবের পূর্ববর্তী সময়ে পৃথিবীর নেতৃত্ব দিয়াছে ইসলামি ভাবধারার রাজতন্ত, মুসলিম সাম্রজ্য। ইউরোপের অধিকাংশ অঞ্চল জুড়ে শাসন করত অটোমান সাম্রাজ্যের সুলতানরা। সুলতানী রাজত্বের অবসান হয় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠিত হওয়ার মাধ্যমে। ফরাসি বিপ্লবের পর সেই সাম্রাজ্যের পতন হয় নানা যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার মাধ্যমে। সাম্রাজ্যগুলি ভেঙে দেশে দেশে বিভক্ত হয়। প্রজাদের শাসন প্রতিষ্ঠিত হতে থাকে একেক দেশে। মানুষের রাজনৈতিক নিপীড়নে মুক্তির কারণে জ্ঞান বিজ্ঞানের ব্যাপক চর্চা শুরু হয়। এমন কি ধর্মীয় প্রভাব থেকেও তারা আলাদা হয়ে যেতে থাকে। তাদের মাঝে জন্ম নিতে থাকে ধর্মনিরপেক্ষ ধারণা। তারা রষ্ট্রকে ধর্ম থেকে আলাদা করে নেয়। ফলে মানুষের ধর্মীয় বিভেদগুলি ব্যক্তি পর্যায়ে নেমে আসে। রাষ্ট্রের শাসন ক্ষমতা চলে আসে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের মাধ্যমে। ফলে যোগ্য নেতৃত্ব তৈরি হয়। মানুষ এগিয়ে যায়। রাষ্ট্র অনেক ক্ষমতাবান হয়। কিন্ত গরীব প্রজাদের ভাগ্য থেকে জুলুম নির্যাতন মুক্ত হয়নি। মানবতার মুক্তিকামী মানুষের মাঝে আবার শুরু স্বাধীনতার স্পৃহা। আর একটি বিপ্লব সংগঠিত হয় কমুনিষ্ট বিপ্লব। ফরাসি বিপ্ববের পরবর্তীতে সংগঠিত এই বিপ্লবের মাধ্যমে ইউরোপজুড়ে আবার সাম্রাজ্যের সুচনা হয়। ইউরোপের অনেকগুলি রাষ্ট্র যুক্ত হয়ে গঠিত হয় সোভিয়েত ইউনিয়ন।

440px-Battle_of_Mill_Springs

অন্যদিকে আমেরিকায় কৃশাঙ্গ ও শেতাঙ্গ বিরোধের কারণে গৃহযুদ্ধের অভিজ্ঞতা থেকে আব্রাহাম লিংকনের গনতন্ত্রের ধারণা। নানা রাজতন্ত্রের মাধ্যমে পৃথিবীতে নেতৃত্বদানকারী শাসন ব্যবস্থার অভিজ্ঞতা অর্জনকারী বৃটিশ সাম্রাজ্যের অবসান হওয়া রাষ্ট্র ব্রিটেনের রাজাকে প্রতীক হিসাবে রেখে এক ধরণের সংসদীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তন হয়।

ফরাসি বিপ্লবের পরবর্তী সময়ে এই বিপ্লবের মুল ধারনা সাম্য, স্বাধীকার, নারী স্বাধীনতা, বাক স্বাধীনতা, মানবতাবাদ ইত্যাদি বৈশিষ্ট্য নিয়া দুই ধারার চিন্তা চেতনায় রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার প্রবর্তন হয়। একদিকে সোভিয়েত ইউনিয়ন অন্যদিকে আমেরিকা, বৃটেন প্রভৃতি ইউরোপীয় রাষ্ট।

পরবর্তী সময়গুলিতে এই দুইটি মতবাদের প্রভাবেই সারা পৃথিবী চলতে থাকে।

চলবে

ড. ইউনুসকে হঠানোর প্লান

;নিচের তিনটি ঘটনা বহুল আলোচিত :

২০২০ সালে সিলেটের এমসি কলেজে স্বামী কে বেঁধে রেখে স্ত্রী কে গণধর্ষণ করে তখনকার রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠন।

২০১৮ সালে বিএনপিকে ভোট দেওয়ায় নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ৪ সন্তানের মা’কে গণধর্ষণ করা হয় ।

২০১৬ সালে কুমিল্লা ক্যান্টমেন্টের মধ্যে তনুকে নির্মম ভাবে গণধর্ষণ করে হত্যা করা হয় ।

এই ৩ টা ঘটনা তে ই নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে এবং ধর্ষকদের গ্রেফতারের দাবিতে সারাদেশের মানুষ বিক্ষোভ মিছিল করে ।

মোটামুটি সকল জায়গায় আন্দোলনকারীদের উপর ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের লোকেরা হামলা করে ।

তখন লাকি আক্তারেরা রাজপথে গদিতে আগুন জ্বালো স্লোগান দিয়ে রাজপথ কাঁপাতে দেখা যায়নি। গিয়াছে কি?
তখন কেন গণভবনে স্মারকলিপি দিতে গিয়ে পুলিশের উপর হামলা করেনি?

উপরের আলোচিত ৩ টা ঘটনার একটায় ও ভিক্টিম বিচার পায়নি ।
আসামিরা আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়ে গেছে ।

এখনকার সময়ের আলোচিত ধর্ষণের ঘটনা আমরা দেখলাম সরকার ও সেনাবাহিনী সর্বাত্মক চেষ্টা করেছে নিষ্ঠুর পাশবিকতার শিকার মেয়েটিকে বাচাতে এবং সরকার অপরাধীদের আটক করতে সক্ষম হয়েছে, আইনের সংশোধন এনেছে, দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা নিচ্ছে। এটাই গত ৭ মাসে ফিরে পাওয়া স্বাধীনতা । এই স্বাধীনতা আনতে দেশের মানুষের তাজা রক্ত ঝরাতে হয়েছে রাজপথে ।

এখন যাতে দৃষ্টান্তমূলক বিচার৷ হয় এবং রায় কার্যকর হয় আমরা সবাই এটা চাইছি। আর এইসব বামপন্থীরা ও কিছু উশৃংখল রাস্তায় বিড়ি খেতে চাওয়া অসভ্য মেয়েরা দেশের সকল মানুষের দাবীর সাথে একমত না হয়ে এরা যাইতাছে যমুনা ঘেরাও করতে। ওদের উদ্দেশ্য বিচার চাওয়া নয় এটা স্পষ্ট। এরা পুলিশের উপর হামলা করেছে।

উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে পুলিশের উপর হামলা করে নিজেরা ভিক্টিম সাজতে চাইছে। তারপর গ্রেফতারের দাবি উঠলে গ্রেফতার হবে। তারপর এদের সহযোগি বন্ধুরা বিশ্বকে দেখাবে যে,বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করা হচ্ছে এবং ইউনুস যৌক্তিক আন্দোলন দমাতে আন্দোলকারীদের উপর নিপীড়ন শুরু করেছে ।

আর তারপর দ্বিগুণ উৎসাহ নিয়ে ড. ইউনুসকে হঠানোর প্লান নিয়ে আসবে সেটা অন্তত দেশের সচেতন কোন নাগরিক হতে দেবে না ।

এসব বাদ দিয়ে দেশে সুশাসন এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় কাজ করেন ।

একটি গালি ও একটি উচ্চাভিলাষী চিন্তভাবনা

একটি গালি ও একটি উচ্চাভিলাষী চিন্তভাবনা

FB_IMG_1741931625398
ফকির আবদুল মালেক ১৪/০৩/২০২৫

জ. ই. মামুনের স্ট্যাটাস থেকে শুরু করি। তিনি লিখেন-

Off the Record বলে একটা কথা আছে ইংরেজিতে, যার মানে হলো রেকর্ডের বাইরে অনানুষ্ঠানিক কথাবার্তা। আমরা যারা টেলিভিশনে ক‍্যামেরার সামনে কাজ করি, যে কোনা লাইভ টক শো বা সংবাদের বিজ্ঞাপন বিরতিতে কিংবা অনুষ্ঠানের আগে-পরে স্টুডিওতে বসে অতিথি বা কন্ট্রোল রুমের সহকর্মীদের সাথে নানারকম কথা বলি। তার মধ্যে কাজের কথার বাইরে অকাজের কথাও থাকে। আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি, সংবাদ কর্মীরা অফ দ‍্যা রেকর্ডে মাঝে মধ্যে গালাগাল‍িও করে থাকে। বেশিরভাগ সময় গালাগালির প্রধান টার্গেট থাকে নিজের কপাল, নিউজরুমের বস, অথবা টিভির মালিক কিংবা কখনো কখনো নেতা- মন্ত্রী থেকে শুরুর করে রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব‍্যক্তি।

শুনলাম, সেরকম একটা অফ দ‍্য রেকর্ড বক্তব‍্যের জন‍্য আজ এখন টেলিভিশনের একজন সংবাদ কর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

উনি হয়ত ঠিকই শুনেছেন। আমরা অনেকেই শুনেছি। তবে আমাদের শুনা আর জ. ই. মামুনের শোনার মধ্যে অবশ্যই পার্থক্য আছে। তার শোনাটা আমাদের থেকে বেশি অথেনটিক হবে এটা স্বাভাবিক।

এখন অনলাইনের যুগ। অডিওটি আমরাও শুনেছি। সেখানে সারসিজ ও হাসনাত আবদুল্লাহকে শুয়র বলে গালি দেয়া হয়েছে।

জ.ই. মামুন সবশেষে একটি কথা বলেছেন যা আমার খুবই নজর কেড়েছে। তিনি লিখেন-

সবচেয়ে বড় কথা, একজনের গালি টেলিভিশনের টেকনিক‍্যাল ভুলের কারণে আপনি শুনে ফেলেছেন বলে তাকে চাকরিচ‍্যুত করলেন, কিন্তু যাদের গুলো শুনছেন না- তাদের মুখ বন্ধ করবেন কি করে!

এই বক্তব্য থেকে স্পষ্ট বেড়িয়ে আসছে গালিগালাজ অনেকেই করছেন। এখন আমি যে বিষয়টা আলোচনায় আনতে চাইছি সেখানে প্রসঙ্গিক ভলতেয়ার ও আমাদের দেশের সমসাময়িক আলোচিত সমালোচিত শুয়র গালি খাওয়া হাসনাত আবদুল্লাহ।

অনেকে হয়ত বলে বসবেন কিসের সাথে কি পান্তভাতে ঘি! অনেকে হয়ত হাসতে পারেন কিন্তু যে যাই বলুক, আমারও স্বাধীনতা থাকতে হবে নিজের মত প্রকাশের।

মত প্রকাশের প্রচলিত পথগুলো যখন সংকুচিত হয়ে আসে, তখন মনে পড়ে ফরাসি লেখক, প্রাবন্ধিক ও দার্শনিক ম্যারিক আরোয়েট ভলতেয়ারকে। যিনি বিশ্বব্যাপী ভলতেয়ার নামেই পরিচিত। যাঁকে বলা হয় অষ্টাদশ শতকের সবচেয়ে প্রভাবশালী ফরাসি সাহিত্যিক, ইতিহাসবিদ ও দার্শনিক।

ভলতেয়ারের যে উক্তি সমাজে সবচেয়ে বেশি প্রাসঙ্গিক তা হলো, “তোমার মতের সঙ্গে আমি হয়তো একমত নাও হতে পারি; কিন্তু তোমার মত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্য আমি আমার জীবন পর্যন্ত উৎসর্গ করে যাব।”

এখন আসি খালি খাওয়া আমাদের সেই ছেলে কি প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। সে তার স্ট্যটাসে লিখেছে-

“এখন” টিভির সাংবাদিকদের চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে। আমরা এই দ্বিমত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্যই আন্দোলন করেছিলাম। আপনার এই গালির স্বাধীনতার জন্যই আন্দোলন করেছিলাম।

শুধু মত প্রকাশ নয়,দ্বিমত প্রকাশও অব্যাহত থাকুক।’

এখন যারা তাদের গালি দিচ্ছেন আরও উচ্চস্বরে দিন। কিন্তু এই গালি খাওয়া ছেলেমেয়ের চিন্তাভাবনাকে আমি সন্মান জানাই। কেউ হয়ত বলবেন এটা চমক। আমাদের চমকে দেয়ার আর ভালোবাসা পাওয়ার মত কাজ আর মতামত তারা অব্যাহতভাবে দিয়ে যাক এই কামনা রইল।

পরিবর্তন আসুক

সকলের মত আমিও চাই আমুল পরিবর্তন আসুক,
যেই পরিবর্তনে দূর্নীতির কমবে,
দেশের উন্নয়ন এর ধারা আরও গতিশীল হবে,
অর্থনৈতিক ভাবে দেশ হবে আরও সমৃদ্ধ,
প্রতিহিংসার রাজনীতি বন্ধ হবে,
সুষ্ঠু নির্বাচনী ধারা ফিরে আসবে,
বন্ধ হবে নমিনেশন বানিজ্য,
নিয়োগ বানিজ্য থামবে,
সর্বোপরী প্রশাসনের বিভিন্ন সেক্টরের
অনিয়ম বা দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরা যাবে।।

নেতাদের নীতির চেয়ে বেশ্যাদের নীতিই শ্রেষ্ঠ

WhatsApp-Image-2023-07-16-at-23.22.35

নেতারা কি সাধারণ মানুষের অধিকার রক্ষা করার কাজ করেন? না, মোটেও না। তারা সাধারণ জনগনের মাথায় টুপি পরিয়ে নিজেদের পকেট ভর্তি করেন। বর্তমানের এক একজন নেতাদের কাছে এক একটা করে তেলের খনি আছে, আর সে খনিতে অনভিজ্ঞ কর্মীরা টাকার বিনিময়ে তেল মালিশের কাজ করে।

যে দেশে দেশপ্রেম না থাকা স্বত্ত্বেও টাকার বিনিময় রাজনৈতিক অভিভাবক বা নেতা হওয়া যায় সে দেশে আবার রাজনৈতিক কোন দলকে ভালো বলবো? ব্রিটিশ খেদাও আন্দোলনে যেমন ভগবত সিংহ কিংবা মহাত্মা গান্ধী বা জিন্নাহর যে দেশপ্রেম ছিল এবং পাকিস্তানের দুঃশাসন থেকে বাঙালির মুক্তির জন্য সালাম, রফিক, বরকত, শফিক, বঙ্গবন্ধু, ভাসানী, সরোওয়ার্দী বা ফজলুল হকের মত যারা দেশপ্রেমিক ছিল তাদের মত এখন কি আর দেশপ্রেমিক আছে? কোথায় নুর উদ্দীন? কোথায় হিমাদ্রি সহ শত শত খুন হওয়া দেশপ্রেমিক ব্লগাররা?

আজ আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আছে বলে হঠাৎ বড়লোক হওয়া হাজার হাজার ব্যাক্তি টাকার বিনিময়ে আওয়ামীলীগের পদ নিয়ে কোটি টাকার সুবিধা নিচ্ছে। আর এইসব আঙুল ফুলে কলা গাছ হওয়া সমাজ সেবকদের কাছে সত্যিকার অর্থে আওয়ামীলীগ বা দেশপ্রেমিকেরা লাঞ্ছিত হচ্ছে। যে লোকটির পরিবার দেশ স্বাধীন হোক চায় নাই, এমনকি আওয়ামীলীগের বিরোধীতা করেছিল, সে ব্যক্তিটিও আজ টাকার বিনিময়ে বলে বেড়ায় সে একজন খাঁটি আওয়ামী লীগার।

আগের রাজনীতি ছিলো সেবা, এখন রাজনীতি হচ্ছে শোও-অফ সেবার নামে ব্যবসা। আগের রাজনীতি ছিলো মানুষের অধিকার রক্ষা করার জন্য, এখন রাজনীতি হচ্ছে অধিকার হরণ করে ক্ষমতাবান হওয়া। আগের রাজনীতি ছিলো ধর্ম নিরপেক্ষতার রাজনীতি, এখন রাজনীতি হচ্ছে ধর্ম সহিংসতার রাজনীতি।

যে দেশে শুয়োরের মাংস খাওয়া হারাম বলে খায় না অথচ এর চেয়ে জঘন্য পাপ কাজ তথা পর-নারী বা পর-পুরুষের সাথে শয্যাশায়ী হওয়াকে আধুনিকতা বলে, আর সুদ খাওয়াকে মর্ডান বিজনেস বলে, সে দেশের মানুষদের রাজনৈতিক পরিবর্তনের কথা বলে লাভ কি?

নেতারা কথা দিয়ে কথা রাখে না ঠিকই তবে অর্থকড়ি আত্মসাৎ করে নেয়, কিন্তু বেশ্যার টাকার বিনিময়ে ঠিকই সাময়িক শারীরিক ক্ষুধা মিটিয়ে দেয়। তাই আমি মনে করি বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতাদের নীতির চেয়ে বেশ্যাদের নীতিই শ্রেষ্ঠ।

সম্পর্ক নাকি অভিনয়

একটা সম্পর্ক সুন্দর ভাবে চিরকাল অটুট রাখার উপায় কি হতে পারে?
১. প্রতারণা ২. অভিনয় ৩. টাকা ৪. অত্যাচার ৫. বিশ্বাসঘাতকতা ৬. নির্দিষ্ট সময় শেষে পৃথককতা ৭. আর কি হতে পারে…

যা খুঁজে বেড়াচ্ছেন….
১. বিশ্বাস ২. বন্ধুত্ব ৩. ভালোবাসা ৪. সম্মান করা ৫. আস্থা রাখা

যা হয়,
রাগান্বিত বা উত্তেজিত হলে এই সবই ফুড়ুৎ।

হাজার মানুষের ভালোবাসার সম্পর্কের উক্তি দিয়েও সম্পর্ক ঠিকে না কারণ এগুলো সবাই অন্যকে দেখানোর জন্য পড়ে বা বলে কিন্তু কেউ ধারণ করে না।

আসলে সঠিক উপায় টা কি ধর্মীয় বিশ্বাস নাকি অভিনয়? যেখানে আমাদের সময়ে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা খুবই দরকার না হলে পৃথিবীটা দুর্গন্ধে ভরে যাবে…

আমার যত ভাবনা

পৃথিবীতে শত শত বছর যাবৎ মানুষ বসবাস করছে। কত জন মানুষ তার জীবনের করে যাওয়া স্মৃতি, কৃতিত্ব, নাম বা অর্থ রাখতে পেরেছে আবহমান পর্যন্ত। আমরা যদি প্রত্যেকে কিছু না কিছু ব্যতিক্রম ভালো কিছু করে যাই ভবিষ্যতের জন্য। তাহলে অবশ্যই আমাদের বেঁচে থাকার অর্থ বা নাম থাকবে পরের প্রজন্ম পর্যন্ত। তারাও এটাই করবে ধারাবাহিকতা ধরে রাখার জন্য। এই ভাবে মানুষ তার কাজের কৃতিত্বের শান্তি চিরকাল ভোগ করতে পারবে। পৃথিবীটাও সৃষ্টিশীল হবে। তাহলে হয়তো নিজের সৃষ্টির স্বাদে অন্যকে ঠকানো বা প্রতারণা থেকে দূরে থাকবে। পৃথিবীটাও সুন্দর হবে।

ধনী হওয়ার প্রতিযোগিতা

আমরা প্রত্যেকেই ধনী হওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছি, যেখানে আগে মানুষ হওয়ার কথা ছিল। পড়ালেখার সময়কাল সবাই বলি, পড়ালেখা করে মানুষের মতো মানুষ হবো। আসলে কথাটা ধারণ না করে, অনুভব না করেই বলি। পড়ালেখা শেষ করে সবাই ধনী হওয়ার কথাটাই ভাবি, আমিও হয়তো এতোটা এর ব্যতিক্রম নয়। যদি মানুষই হতাম তাহলে হয়তো দেশে খুনী, ডাকাত, ছিনতাইকারী, মাদক ব্যবসায়ী, মীর জাফর, দেশদ্রোহী, অপব্যবহারকারী, সিন্ডিকেটকারী, অবৈধ পাচারকারী, অন্যায় ও অত্যাচারকারী তৈরী হতো না। চলো আমরা সবাই মানুষ হওয়ার চেষ্টা করি।

ব্যাংকিং খাতে আর্থিক অনিয়ম বিষয়ে আমার কিছু কথা

এই মুহূর্তে প্রয়াত অর্থমন্ত্রী শ্রদ্ধেয় আবুল মাল আব্দুল মুহিতের কথা বেশ মনে পড়ছে। সামনে পেলে তার কাছে ক্ষমা চাইতাম। কেন ক্ষমা চাইতাম অলরেডি চিন্তাশীল বন্ধুরা বুঝতে পেরেছেন। যারা কোনো কিছু নিয়ে চিন্তা করার মত সময় বা ধৈর্য পান না তাদের জন্য বলছি। ক্ষমা চাইতাম কারণ তাঁর বলা একটি কথা ‍শুনে আমরা হাসাহাসি করেছিলাম। সেই যে ৬ হাজার কোটি টাকা নিয়ে তিনি বলেছিলেন সামান্য টাকা। তখন আমরা হাসাহাসি করেছিলাম। ছয় হাজার কোটি টাকা নাকি সামান্য টাকা! আদার ব্যাপারি হয়ে জাহাজের খবর নিতে নেই প্রবাদটিও আবার প্রমাণিত হলো। আমরা আদার ব্যাপারী তাই জাহাজের খবর নিতে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলেছি। আমরা নবগঙ্গা নদীর মাঝি তাই সাগরের ঢেউ বা গভীরতা সম্পর্কে কোনো ধারণা ছিল না। সে কারণেই ৬ হাজার কোটি টাকাকে মাত্র বা সামান্য বলা শুনে আমরা ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু এখন দেখছি তার বলা কথাটা পুরোপুরি সত্য। এই যে কয়েকটি ব্যাংক থেকে একটি মাত্র গ্রুপ ৩০ হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে এটা দেখেতো তাঁর কথাকে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। ৩০ হাজার কোটি টাকার পাশে ছয় হাজার কোটি টাকা রাখলে তা অবশ্যই সামান্য মনে হবে। এই পরিমান টাকা খরচ করে পুরো পৃথিবীকে বিনোদন দিতে বিশ্বকাপের আয়োজন করেছে কাতার!

শুনতে ৩০ হাজার কোটি টাকা খুব সহজেই শোনা গেলেও বাস্তবে এই পরিমান টাকা একসাথে রাখলে পুুরো বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনের মত একটা বড় বিল্ডিং ভরে যাবে। এখন কথা হলো ঘরের চালে যে টিন থাকে তাতে ছিদ্র কিন্তু একদিনে বড় হয় না। প্রথমে সুই হয়ে ঢোকে তারপর কুড়াল হয়ে বের হয় বলে যে একটা আঞ্চলিক প্রবাদ আছে ঘটনা কিন্তু সেরকম। এই যে বিরাট অংকের কারসাজি এটিতো একবারে হয়নি। হয়েছে ধীরে ধীরে এবং পরিকল্পিত ভাবে। আমি আশ্চর্য হয়ে দেখলাম বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে যে পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেওয়া ছিল তা এক অজ্ঞাত কারণে ২০২০ সালে সরিয়ে নেওয়া হয়! জাতির সামনে এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হতে পারে কেন এবং কোন যুক্তিতে পর্যবেক্ষক সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল? যারা সরিয়ে নিয়েছিলেন তাদেরকে এর জবাব দিতে হবে। ঋণ অনিয়ম তো আজকের ঘটনা নয়। এই সন্দেহ তৈরি হয়েছিল আরও এক যুগ আগে। ঋণ অনিয়মের আশঙ্কায় ২০১০ সালের ডিসেম্বরে ইসলামী ব্যাংকে পর্যবেক্ষক নিয়োগ দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালক (তৎকালীন মহাব্যবস্থাপক) পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা ব্যাংকটির বিভিন্ন সভায় অংশ নিতে শুরু করেন।

প্রথম আলোর এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেলো বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষক থাকা অবস্থায় ২০১৭ সালে ব্যাংকটির মালিকানা ও ব্যবস্থাপনা চট্টগ্রাম ভিত্তিক একটি শিল্প গ্রুপের হাতে চলে যায়। প্রথম আলোর ভাসুর হয় বলে সম্ভবত গ্রুপের নাম উল্লেখ করা হয়নি অথবা তাদের কী এক সাংবাদিকতার নীতিমালা অনুযায়ী নাম উল্লেখ করেনি। তবে সবাই জানে গ্রুপটির নাম এস আলম গ্রুপ। এরপর ২০২০ সালের মার্চে ওই পর্যবেক্ষক সরিয়ে নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক! বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক (তৎকালীন) গভর্নর ফজলে কবির ব্যাংকটিতে পর্যবেক্ষক রাখার পক্ষে ছিলেন না। এই তথ্যটি জেনে আমি সবচেয়ে বিস্মিত হয়েছি। দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গর্ভনর যদি পক্ষে না থাকেন তাহলে আর কী বলার থাকে। যদিও এখনো অন্য ছয়টি ব্যাংকে বাংলাদেশ ব্যাংক নিযুক্ত পর্যবেক্ষক রয়েছে। তাহলে ইসলামী ব্যাংকে থাকলে দোষ কী ছিল? এই প্রশ্নের উত্তর নেই। এর বাইরে নতুন করে আরও কয়েকটি ব্যাংকে সমন্বয়ক নিয়োগ দেওয়া শুরু হয়েছে। এখন আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে যে মাননীয় গর্ভনর সাহেব কেন এবং কোন যুক্তিতে এর পক্ষে ছিলেন না?

মালিকানা বদলের পর ইসলামী ব্যাংক থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কোন বিবেচনায় পর্যবেক্ষক সরিয়ে নিল, তা নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠেছে। কেউ কেউ এ কথাও বলছেন এখন, অনিয়মের সুযোগ করে দিতেই ওই সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কাগুজে কোম্পানির নামে যে প্রক্রিয়ায় ব্যাংকটি থেকে অর্থ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, তা আলোচিত প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারের আদলেই। ইসলামী ব্যাংকের সাম্প্রতিক ঋণ অনিয়মের ঘটনা সোনালী ব্যাংকের হলমার্ক, বেসিক ও ফারমার্স ব্যাংকের অনিয়মের চেয়েও ভয়াবহ বলে মনে করছেন ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্টরা। ব্যাংকটি থেকে কী পরিমাণ অর্থ এখন পর্যন্ত সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, তা অনুসন্ধানে কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি পরিদর্শন দল। আমার মতে শুধু ওই ব্যাংকে খতিয়ে দেখার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকা উচিত হবে না বরং গ্রুপের অন্যান্য ব্যাংকেও খোঁজ নিতে হবে পাশাপাশি সেই সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের যারা পর্ববেক্ষক সরিয়ে নিয়েছিলেন তাদের বিষয়েও খোঁজ নিতে হবে। এবং এ ক্ষেত্রে খোদ বাংলাদেশ ব্যাংক তদন্ত করলে তা কতটা স্বচ্ছ হবে সেটাও ভাবার বিষয়।

ধান ভানতে শীবের গীত বলে যে প্রবাদটি আছে তাও এখানে টেনে আনতে চাই। এই যে খাস বাংলায় বাঁশ খাওয়া বলে যে একটা কথা প্রচলিত আছে আমরা নানা ক্ষেত্রে তা দেখতে পাই। ইসলামী ব্যাংকের ক্ষেত্রে কথাটা কিছুটা প্রযোজ্য কারণ বাঁশখালী,পটিয়া,সাতকানিয়া নামে এলাকাও যে এর সাথে কিছু অংশে যুক্ত। যাদের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী হওয়ার যোগ্যতা নেই তারাও বাঁশখালী ও এর আশেপাশের লোক হওয়ায় অনায়াসে ব্যাংকার বনে গেছে। শুধু তাই নয় যতটা জেনেছি তাতে বুঝেছি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের প্রতিটি শাখায় নিজস্ব লোক রাখা আছে এটা মনিটর করার জন্য যে কেউ যেন গ্রুপের বিষয়ে কিছু বললে তা উপর মহলকে জানানো যায়। চাকরি দেওয়ার সময় যোগ্যতা বিবেচনা না করে বাঁশখালী বা নির্দিষ্ট এলাকা বিবেচনা করে চাকরি দেওয়াটাও ব্যাংকের জন্য কাল হয়েছে। ক্ষমা চাইছি নানা ক্ষেত্রে চতুর্থ শ্রেণীর চাকরি যারা করেন তাদের কাছে এবং পটিয়া,সাতকানিয়া, বাঁশখালীর অন্যদের কাছে। আমি তাদেরকে ছোট করতে চাইনি।

সাতকানিয়া,পটিয়া এবং বাঁশখালী এলাকার যত সংখ্যক মানুষ গ্রুপের ব্যাংকে আছে তার বিশ ভাগের একভাগ লোকও অন্যান্য পঞ্চাশটি ব্যাংকে নেই যাদের বাড়ি ওই এলাকায়। যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি না দিয়ে এলাকাভিত্তিক এবং নিজেদের ফায়দা লুটে নেওয়ার জন্য কিছু মানুষকে নিয়োগ দেওয়ার মাধ্যমে যে কোনো প্রতিষ্ঠান ধ্বসে যেতে পারে। মনে রাখতে হবে আপনাকে অতিরিক্ত সুবিধা দেওয়া মানেই আপনার মুখ বন্ধ রেখে আপনাকে দিয়ে কিছু করিয়ে নেওয়া। হয়েছেও তাই। একটি লোনের আবেদন থেকে শুরু করে পাশ হয়ে গ্রাহকের হাত অব্দি যাওয়া পর্যন্ত কী পরিমান প্রসিডিউর ফলো করতে হয় তা আমি ব্যক্তিগত লোন নিতে গিয়ে দেখেছি এবং স্টাডি করে দেখেছি বড় লোনগুলো আরও কতটা জটিল। এই যে ফিল্টারিং হয় বা স্তরে স্তরে ব্যারিকেড পার হয়ে একটি লোন পাশ হয়। কোথাও না কোথাও ঘাপলা ধরা পড়বেই। কিন্তু প্রতিটি চেক পোস্টে বাংলা সিনেমার মত যদি নিজস্ব চামচা বা পা-চাটা লোক থাকে তবে আপনাকে কোনো চেকপোস্টেই আটকানো হবে না। আপনি অনায়াসেই পার হয়ে যেতে পারবেন। ব্যাড লোনগুলোর ক্ষেত্রে বিষয়টা এমনই ঘটে। আর যখন ক্ষমতাধরদের অন্যায় কেউ আপস করতে রাজি হয় না তখন তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। যার নজির অহরহ।

আবার ফিরে আসি প্রথম আলোর প্রতিবেদনে।এদিকে প্রথম আলোর প্রতিবেদনে দেখলাম ইসলামী ব্যাংক থেকে কেন পর্যবেক্ষক সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল, তার যথাযথ কোনো উত্তর দিতে পারছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো মন্তব্য না করার নীতি নিয়েছে। সংস্থাটির মুখপাত্র জিএম আবুল কালাম আজাদের কাছে গতকাল সাংবাদিকেরা এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে তিনি জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক নিয়ে কোনো মন্তব্য করবে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পর্যবেক্ষক সরিয়ে নেওয়ার পর ব্যাংকটি থেকে কাগুজে কোম্পানি খুলে অর্থ বের করা শুরু হয়। প্রথমে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ শাখা থেকে এই অনিয়ম শুরু হয়। ফলে পাঁচ বছরে এই শাখার ঋণ ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা থেকে বের হয়েছে প্রায় ২৭ হাজার কোটি টাকা।

চট্টগ্রামে ঋণের পরিমাণ বাড়তে থাকলে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন বিভাগ ও জেলা শাখা থেকে একই প্রক্রিয়ায় টাকা বের করা হয়। আর ২০১৭ সাল থেকে খাতুনগঞ্জ শাখার দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তাদের দ্রুত পদোন্নতি দিয়ে ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ের ঋণসংক্রান্ত বিভাগের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

পাশাপাশি দ্রুত পদোন্নতি পাওয়া প্রধান কার্যালয়ের কিছু কর্মকর্তাও এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়। এভাবে ২০ থেকে ৩০ কর্মকর্তা মিলে ব্যাংকটিতে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তোলে। আর ব্যাংকটির পরিচালকেরা বেশির ভাগ একটি গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি হওয়ায় তারাও এতে সমর্থন দেয়।

ব্যাংকটির ঋণের নথিপত্র পর্যালোচনায় দেখা গেছে, কাগুজে কোম্পানিগুলোর নামে সর্বোচ্চ ঋণের পরিমাণ ছিল দেড় হাজার কোটি টাকার কিছু কম। কারণ, ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণমূলক মূলধন ১০ হাজার ৩০ কোটি টাকা। এর ১৫ শতাংশ অর্থাৎ ১ হাজার ৫০৪ কোটি ঋণ নিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হয়। আর ওই পরিমাণের কম ঋণ হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নেওয়ার দরকার হয় না। তাই কাগুজে কোম্পানিগুলোর ঋণের পরিমাণ ৯০০ থেকে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয়।

সাম্প্রতিক একটি ঘটনা উল্লেখ করি। আমার ফেসবুক বন্ধু নুরুল আবসার ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছেন যার শিরোনাম ছিল “শেষ পযর্ন্ত ইসলামী ব্যাংকেও খেয়ে দিতে হলো”? আমি সেখানে মন্তব্য করেছিলাম এটা কি আজকের ঘটনা? যবে থেকে এস আলম গ্রুপের হাতে গেছে ব্যাংক তবে থেকেই সমস্যা শুরু হয়েছে। এখন আমার ফ্রেন্ডলিস্টে নেই এমন এক ভদ্রলোক আমাকে মেসেজ দিয়ে জানতে চেয়েছেন “এস আলম গ্রুপ আপনার কোনো ক্ষতি করেছে?” দেখলাম ভদ্রলোক অফিসার হিসেবে ইসলামী ব্যাংকে কর্মরত আছেন। আমি বললাম তর্ক করতে চাই না। পত্র পত্রিকায়তো দেখতেই পাচ্ছেন। আমি যদিও তার সাথে তর্ক করতে তো চাইনি তবে আমি একজন সমাজ সচেতন নাগরিক হিসেবে এবং চিন্তক হিসেবে আমার মতামত নিশ্চই বলতে পারি। তিনি জানতে চেয়েছিলেন আমার কোনো ক্ষতি করেছে কি না। আমার স্পষ্ট জবাব আমার কোনো ক্ষতি করেনি। কিন্তু ক্ষতি করেছে পুরো দেশের,পুরো জাতির! আর সেই জাতির একজনতো আমিও। সুতরাং আমারওতো ক্ষতি করেছে বলতে হয়। কিভাবে করেছে তা নিশ্চই বুঝিয়ে বলার দরকার নেই। তবুও অল্প কথায় বলি। আর্থিক এই বিরাট অনিয়মের কারণে দেশের মানুষের মধ্যে ভীতি তৈরি হয়েছে এবং দেশের অন্যান্য বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর উপর প্রেসার বেড়েছে। তাদের মর্যাদাও নষ্ট হচ্ছে। রেপুটেশন খারাপ হচ্ছে। জনমনে সন্দেহ তৈরি হচ্ছে যে সব ব্যাংক এভাবে দেউলিয়া হয়ে যাবে বা গ্রাহকের টাকা হারিয়ে যাবে। এ বিষয়ে আপনারা নিশ্চই জানেন যে কিছুদিন আগেও এমন গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল। বাংলাদেশ ব্যাংক বাধ্য হয়ে সার্কুলার জারি করে কিছুটা সামাল দিয়েছে। পাশাপাশি আমি দেখেছি আমার লিস্টের ব্যাংকার বন্ধুরাও তাদের টাইমলাইনে সেটা পোস্ট করে সচেতনতা বৃদ্ধি করেছে।

একটি প্রতিষ্ঠানের এই ধরনের নয়ছয় বা খামখেয়ালিতো শুধু ওই প্রতিষ্ঠানকে সর্বনাশের দিকে ঠেলে দেয় না বরং একই ঘরানার অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এবং পুরো জাতিকেই বিব্রত করে। পুরো জাতির ক্ষতি করে। শুধু তাই নয় হয়তো দেখা যাবে অনেক ব্যক্তির নামেও দুই চার কোটি টাকার লোন হয়ে আছে কিন্তু সে জানেই না! যারা নামে বেনামে প্রতিষ্ঠান খুলে হাজার কোটি টাকা নিয়ে নেয় তারা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কারো ছবি আর নাম ব্যবহার করে দুই চার কোটি নিতে পারে না বা নেয়নি তারও কোনো গ্যারান্টি নেই। যদি এমন হয়ে থাকে তবে আল্লাহ ভালো জানেন কতজনের কপাল পুড়বে। ধরুন যে অফিসারটি ৬০ হাজার বা এক লাখ টাকা বেতন পান এবং একমাত্র আয়ের মাধ্যম তার ওই বেতন তার নামে দুই চার কোটি টাকা লোন পাশ হয়ে গেছে কিন্তু সে জানেই না। তাহলে পরে যদি এটা সে জানতে পারে তার কি সাধ্য আছে সেটা শোধ করার? আমরা দেখেছি ২০/৩০ হাজার টাকা লোন নিয়ে পরিশোধ করতে পারেনি বলে কত কৃষকের কোমরে দড়ি (রুপক অর্থে অথবা বাস্তবে) বেঁধে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অথচ রাঘববোয়ালরা সব সময় অধরাই থেকে গেছে। যখন যোগ্য ও মেধাবীদের বদলে অযোগ্য আর সুবিধাবাদীদের নিয়োগ দেওয়া হয় বা দায়িত্ব দেওয়া হয় তখন ফলাফল ভালো হয় না। সেটা ক্রিকেট খেলা হোক, ফুটবল খেলা হোক, রাজনৈতিক দল হোক বা কোনো চাকরি হোক। সবক্ষেত্রেই অযোগ্যদের দায়িত্ব দিলে সর্বনাশই হয়। আর একদল মানুষ চায় ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান বা দেশের ক্ষতি হয় হোক আমার ক্ষতি না হলেই হলো। আর তাইতো কিছু মানুষ লুটেপুটে সুইস ব্যাংক বোঝাই করে। বলির পাঠা হয় দেশ এবং দেশের আপামর খেটে খাওয়া মানুষ। দুর্নামের ভাগিদার হয় অন্যান্য প্রতিষ্ঠান। সন্দেহ মাথায় নিয়ে সংসার করতে হয়। উল্লেখ্য এই সব প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের সনদ চেক করলে অনেক জাল সনদও পাওয়া যাবে বলে আমার ধারণা। কারণ এর আগে যতদূর জানি ইউনিয়ন ব্যাংকে এমন জাল সনদধারীদের ২৭ জনের চাকরি গিয়েছিল। ইউনিয়ন ব্যাংকের যে ঘটনাটি উল্লেখ করলাম তার তথ্যসূত্র আমার কাছে নেই।

লেখকঃ জাজাফী
১ ডিসেম্বর ২০২২

আমরা মুখোশধারী

1632911392166

যে ছেলেটি মদ্যপ এবং নেশা করে তাকে সমাজ বখে গিয়েছে বলে। পরিবার কুদৃষ্টিতে দেখে। কিন্তু কেন?

আপনি তো ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী। আপনি জানেন কি? মিথ্যা বলা, গীবত করা, পরনিন্দা, লোভ, অহংকার এবং মানুষ ঠকানো মদপানের চেয়ে জঘণ্য ও মহাপাপ। অথচ আপনি আমি উক্ত শব্দদ্বয়গুলির সাথে বসবাস করছি। মিথ্যা বলি, গীবত করি, গুজব রটাই ইত্যাদি প্রতিনিয়ত যারা করছে তাদের কেন মুসলমান সমাজে জায়গা হবে? যদি সেই মদ্যপ ছেলেটি খারাপ বলে পরিচিত হয় তাহলে তারা কেন ভদ্রতার আসনে বসে থাকবে?

আপনি নিজেকে মুসলমান দাবী করছেন। আপনি রোহিঙ্গা ও কাশ্মীরে হামলার প্রতিবাদ করেন কিন্তু বেলুচিস্তান ও ইয়ামেনের হামলার প্রতি ভ্রূক্ষেপ করেন না। কেন? আপনি ফেলানীর জন্য প্রতিবাদ করেন কিন্তু সৌদি থেকে হাজার হাজার নারী নির্যাতিত হয়ে দেশে ফিরছে তার প্রতিবাদ করেন না। কেন?

আপনি মুসলমান অথচ শেখ মুজিবুর রহমানের জন্য কাঁদেননি, কেঁদেছেন পাকিস্তানের বেনজির ভুট্টোর জন্য। যে আশ্রয় দিয়েছিল সেই কর্নেল তাহেরের জন্য কাঁদেননি, কেঁদেছেন জিয়াউর রহমানের জন্য। কেন ভাই? শেখ মুজিব আর কর্নেল তাহের কি মুসলমান ছিলেন না?

কারণ আপনাদের মধ্যে আল্লাহর আনুগত্যতা নেই আছে ধর্মান্ধতা, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। আপনারা নিজ ধর্মের বিধিনিষেধ পালন করবেন না কিন্তু গুজব রটানোর জন্য ধর্মকে হাতিয়ার করে মায়া কান্না আর ভন্ডামি করতে ওস্তাদ। আপনারা শুধু সামাজিক যোগাযোগে নিজেকে মুসলামান দাবী করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটবেন কিন্তু গাম্বিয়ার মত আর্ন্তজাতিক আদালতে মামলা করার সাহস করবেন না। কারণ আপনাদের ঈমানী দুর্বলতা অধিক থেকে অধিকতর এবং আপনারা সুবিধাবাদী।

আপনারা সত্যিই সুবিধাবাদী। ৯০দশকেও এইদেশে টিভি দেখা হারাম ছিল। ছবি তোলা নাজায়েজ ছিল। এখন আপনাদের সুবিধার্থে ধর্মকে পরিবর্তন করে জায়েজ করে নিলেন। ইসলাম ধর্মে সকল ধরণের খেলা হারাম শুধু ঢাল-তলোয়ার খেলা ছাড়া অথচ আমরা বর্তমানের সকল ধরণের খেলাকে জায়েজ করে নিজেদের মগ্ন রাখি, আর বলি আমি মুসলমান।

আপনার ছেলে-মেয়ে পড়াশুনার নামে বাহিরে গিয়ে সবার অগোচরে প্রেম লীলায় মগ্ন অথবা আপনি অনলাইনে ফটকামী করে বেড়াচ্ছেন, যা ইসলামে পুরোপুরি নিষিদ্ধ আর সেই আপনারাই গলাবাজি করেন রোহিঙ্গা মারছে, কাশ্মীর মারছে, তসলিমাকে হঠাও। তসলিমা নাসরিনের সাথে আপনার পার্থক্য কোথায়? তসলিমা সরাসরি ধর্মকে অস্বীকার করছে আর আপনি ধর্মের বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে ধর্মকে পরোক্ষভাবে অস্বীকার করছেন।

আপনি নিজেকে মুসলমান দাবী করেন কিন্তু আল্লাহকেও অস্বীকার করেন। বিশ্বাস হচ্ছে না? ঠিক আছে, একজন সুন্দরী রমনীর সাথে আপনাকে এক সপ্তাহের জন্য একটা আবদ্ধ ঘরে থাকতে দিবো। তারপর আপনি নিজেই রাসলীলায় মেতে উঠবেন আর তখনই ভুলে যাবেন আপনার সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর কথা।

এমন কোনো পুরুষ আছেন যারা একবারের বেশি দু’বার কোনো বেগানা নারীর দিকে দৃষ্টি দেন নাই? নাই ভাই, এমন কেউ নাই। একবারের বেশি দু’বার তাকাতে আল্লাহ আপনাকে নিষেধ করেছেন অথচ কোনো সুন্দরীকে দেখলে ধর্মের হুকুমকে উপেক্ষা করে দৃষ্টি দিয়ে চোখের যেনা করছেন। কেন? আপনি তো মুসলামান!

পিতা-মাতার হক কতজনই পালন করেন? যে ছেলেটি রাজপথে কাশ্মীরীদের জন্য স্লোগান তুলছেন সেই ছেলেটি কি তার পিতা-মাতা হোক জীবিত কি মৃত তাদের হক পালন করেছে কিংবা করে? ধর্মের নামে যখনই কোনো ঘটনা ঘটে তখন মানববন্ধন, প্রতিবাদ, কুশপুত্তলিকা পোড়ানোসহ কত কি করেন অথচ যারা আল্লাহর হুকুম অমান্য করে বৃদ্ধাশ্রমে পিতা-মাতাকে ছুঁড়ে আসে তাদের বিরুদ্ধে কখনো রাজপথে নেমেছিলেন? নামেন নি। তাহলে আপনি কিভাবে মুসলমান দাবী করেন?

ইসলাম ধর্ম একমাত্র আল্লাহর ধর্ম যা মহানবী (সঃ)’র মাধ্যমে প্রেরিত। যদি তাই বিশ্বাস করেন তাহলে ধর্মকে যেমন ইচ্ছা তেমন না সাজিয়ে নিজেকে শুধরিয়ে ঈমানকে পাক্কা করুন। আমি হলফ করে বলতে পারি আমার দেশের ৮৫% মানুষের ঈমান ঠিক নাই। অথচ নিজেকে ধার্মিক দাবী করে।

মাটিতে সিজদা দিলেই নামাজ কায়েম হয় না। মাটিতে সিজদা তো হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃষ্টানরাও দেয়। যারা জুমার দিন নামাজে যান তারা কি আল্লাহকে ভয় করে জুমার নামাজ আদায় করেন? নারে ভাই। পারিবারিক অভ্যস্ততার কারণে শুক্রবারে মসজিদে যায়। যদি আল্লাহকে ভয় করতো তাহলে মিথ্যা, গীবত, পরশ্রীকাতরতা সহ ইসলাম বিরোধী সকল নিষেধ পরিহার করে ইসলামের হুকুম-আহকামের উপর নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত আদায় করতো।

নামাজ কায়েম করতে হলে আগে নিজেকে বিশ্বাসী করে তুলুন, আল্লাহ ও তাঁর নবীর হুকুম আহকাম গুলো অক্ষরে অক্ষরে পালন করে তারপর নিজেকে মুসলমান দাবী করে গলাবাজি করবেন। ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার না করে, ধর্মীয় শুদ্ধতা চর্চা করুন। তাহলে দেশ, জাতি ও আপনার মঙ্গল এবং আল্লাহ সন্তুষ্ট হবেন।

আলেম ভার্সেস আলেম

এখন ওয়াজের মৌসুম শুরু হয়ে গেছে, গ্রাম-গঞ্জ, শহরের জায়গায় জায়গায় ওয়াজের নামে কিছু সুরওয়ালা গায়কের আবির্ভাব হবে, এদের বয়কটের উপযুক্ত সময় এখনই। ধর্ম সম্পর্কে জানার জন্য ওয়াজ মাহফিলে যাওয়ার আগে যার ওয়াজ শুনবেন তাকে জানুন। খোঁজ নিন তার জ্ঞানের পরিধি কতটুকু তারপর যান, অমুক তমুক নাম শুনে চিল্লা ফাল্লা শুনতে আর কমেডি দেখতে যাইয়েন না প্লিজ। আমরা এদের দাওয়াত করি আর এদের মাহফিলে ভীড় করি বলেই এরা ইসলামি জলসাকে নাটকের মঞ্চ বানিয়ে ফেলতেছেন দিনের পর দিন। ওয়াজের স্টেজে রাতভর কমেডি চলে আর এসবের কারণে ইসলামের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মধু আহরণ করতে যেয়ে মগজে বিষ নিয়ে ফিরলে আপনারই বিপদ। এই যুগে মাহফিলে কী হয় সবাই জানার সুযোগ পায়, মূল ধারার মিডিয়ায় না আসলেও এসব সোশ্যাল মিডিয়ায় ঠিকই আসে, ইসলামের প্রতি অনেকের ভুল ধারণা তৈরি হয় এদের কারণেই। সাম্প্রতিক এক মুর্খের কথা শুনে হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে, এমন মুর্খের কিন্তু অভাব নাই। আমার আপনার দায়িত্ব এদের প্রতিহত করা।
.
অনেকদিন আগে একজন আলেম বলেছিলো যারা সাহিত্য চর্চা করে তারা নাস্তিক, উনি কথাটা যে কিছুটা আমাকে ইঙ্গিত করে বলেছিলেন আমি বুঝেছিলাম৷ তখন তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, “হুজুর, সাহিত্য কী আর নাস্তিক কী জিনিস…? কুরআন যে সময় অবতীর্ণ হয়েছিলো সেই যুগে কিসের প্রাধান্য ছিলো বেশি…? সুরা কাউসারের শানে নুযূল কী…? কেনইবা কুরআনের মতো আরেকটি গ্রন্থ বা কুরআনের সুরাগুলোর মতো আরেকটা সুরা অথবা একটা আয়াত তৈরির চ্যালেঞ্জ দেয়া হলো…? কুরআনের কোন গুণের উপর ভিত্তি করে…?”
উনি সঠিক কোন উত্তর দিতে পারেননি। পরে বললাম “হুজুর, কুরআন অবতীর্ণের সময় সাহিত্যের প্রভাব ছিলো বেশি ইতিহাস পড়ে জেনেছি, পৃথিবীতে আর কোন যুগে সাহিত্যের এত বড় প্রভাব ছিলোনা, সেই যুগে কুরআন নাযিল হলো আর মানুষ সেই সময়ের সাহিত্যকে ডিঙিয়ে কুরআনের কাছে নত হলো…! কুরআনের ভিতর সাহিত্যক শক্তি না থাকার কোন প্রশ্নই আসেনা, বরং সেই সময়ের বিখ্যাত কবি ইমরুল কায়েস পর্যন্ত কুরআনের ভিতর যে সর্বোচ্চ সাহিত্যিক ক্ষমতা আছে এবং এমন উচ্চ গুণ সম্পন্ন সাহিত্য চর্চা কোন মানুষের পক্ষে করা সম্ভব নয় সেটা স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছিলেন, সুরা কাউসারের শানে নুযূল পড়ে জেনেছি। তাহলে সাহিত্য চর্চা করলে কেউ নাস্তিক হয় কিভাবে…?” উনি গরম আচরণ করলেন তারপর তার সাথে আমার আর কোনদিন তর্ক হয়নি।
.
প্রচলিত অর্থে যাদের আলেম বলা হয় তাদের সাথে আমি কখনো তর্কে যাইনা, আমি এমন অসংখ্য প্রচলিত অর্থে বুঝানো আলেমদের সাথে কথা বলেছি, মিশেছি, যাদের ভিতর জ্ঞানের প্রচণ্ড অভাব। এরা মাদ্রাসায় কিছুদিন যাওয়া আসা করেছে, লম্বা জোব্বা-টুপি পরেছে আর কিছু মুখস্থ বিদ্যা আছে এটুকুর কারণে তাদের গর্বের শেষ নাই এরথেকে বেশি অর্জনও এদের নাই। এরা ভাবে জান্নাতে এদের এক পা আরেক পা দুনিয়াতে, এরা আপনাকে ঠাস করে জাহান্নামী বানিয়ে দিবে।
.
অথচ প্রচলিত অর্থে এদের আলেম বলা হলেও আল্লাহর ভাষায় কারা আলেম সেটা অনেকেরই অজানা। আল্লাহর ভাষায় আলেম তারাই যারা আল্লাহকে বেশি ভয় করে, আল্লাহ বলেন, “আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে আলেমরাই কেবল তাঁকে (আল্লাহ) ভয় করে।” (সুরা ফাতির, আয়াতঃ ২৮) এটা সরল অনুবাদ, আপনি এই বাক্যের অর্থ কী বুঝলেন…? আলেমরা আল্লাহকে বেশি ভয় করে, এর মানে যাদের ভিতর আল্লাহর ভয় আছে তারাই আলেম। আল্লাহর প্রতি ভয় কখন তৈরি হবে…? যখন আপনি আল্লাহর পরিচয় পাবেন…? আল্লাহর পরিচয় আপনি কখন পাবেন…? যখন আপনি জ্ঞানার্জন করবেন ও জ্ঞানীদের সাহচর্যে থাকবেন। অথচ প্রচলিত অর্থে আলেম বলতে আমরা বুঝি যার মাদ্রাসার সনদ আছে। বিষয়টা একাধারে ভ্রান্ত এবং হাস্যকর ধারণা। এটা সমাজে এতবেশি প্রচলিত যে তা দূর করা সম্ভবপর নয়।
.
ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান, সূচনা লগ্ন থেকেই এক শ্রেণির তথাকথিত বুদ্ধিহীন বুদ্ধিজীবীরা ইসলামের সমালোচনা করে আসছে, ইসলামের আইনের ভুল ধরার ধৃষ্টতা দেখাচ্ছে, বারবার বলছে যে ইসলামে প্রচুর অসঙ্গতি আছে। আমাদের দাবী ইসলাম পরিপূর্ণ, এতে কোন অসঙ্গতি নেই, সাইন্টিফিক দিক থেকেও নির্ভেজাল। তবে এরা কিভাবে এসব বলে…? এর পিছনে অনেকগুলো কারণ থাকলেও অন্যতম একটি কারণ হলো ইসলামের সুমহান আদর্শ, ইসলামের মৌলিকত্ব আমরা তাদের সামনে উপস্থাপন করতে পারিনি এসব মূর্খদের কারণে বরং এরা ইসলামকে হাসির বস্তু বানিয়ে ফেলেছে।
.
আমাদের বোকামির দ্বারা আমরা ইসলামের সমালোচনাকারীদের প্রকারান্তে সহযোগিতা করতেছি। জ্ঞানার্জনের শেষ নেই, যতই আপনি সত্যের জ্ঞান আহরণ করবেন ততই আপনার মাঝে আল্লাহ ভীতি পয়দা হবে, ততই আপনি আলেম হয়ে উঠবেন। কেবল জানলেই যদি আলেম হওয়া যেতো তবে ভিন্নধর্মাবলম্বীদের মাঝেও প্রচুর আলেম আছে।
.
মূল বিষয় হলো ইসলামে জ্ঞানার্জনের এত গুরুত্ব অথচ আমরা কুরআন মুখস্থ করি এটুকুই শেষ। না বোঝলাম এখানে কী বলা হলো, না বোঝলাম এর ভাবগত অর্থ না পেলাম এর ভিতরের রস। এদিকে আজীবন শুধু বলে গেলাম কুরআনে সব আছে অথচ বড় বড় উদ্ভাবন ও আবিষ্কার করতেছে অন্যরা, পরে ঠিকই বলতেছি এগুলো কুরআন থেকেই করে…!!
হাস্যকর না…???
মুসলিম জাতির উচিত জ্ঞান বিজ্ঞানের শাখা প্রশাখায় আবার বিচরণ করা, আমাদের অতীত সুন্দর ছিলো…
.
০৬/১২/২০২১

লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু

FB_IMG_1659650469838

রাজায় রাজায় যুদ্ধে রাজার কোনো ক্ষতি হয় না। মরে শুধু উলু খাগড়ার দল।

সামনে নির্বাচন। কে জিতবে, কে হারবে, তা বড় ব্যাপার না। বড় ব্যাপার হচ্ছে, আপনি বা আপনারা তথা কর্মীরা নির্বাচনকালীন সামান্য কিছু অর্থের বিনিময়ে রাতদিন পরিশ্রম করে প্রার্থীকে জয়ী করেন। অতঃপর প্রার্থী বিজেতা হয়ে রাক্ষস বনে যায়। হোক সে নৌকার সমর্থনে জয়ী কিম্বা ধানের শীষ বা দাঁড়িপাল্লা সমর্থনে বিজয়ী।

রাক্ষস বনবে না কেন? গরুচোর, সাইকেল চোর, চাঁদাবাজ, আর ধর্ম ব্যবসায়ীরা যখন আঙুল ফুলে কলাগাছ হয় তখন সামাজিক মর্যদা বাড়ানোর জন্য বড় বড় নেতাদের ডোনেশন দিয়ে নির্বাচনে প্রার্থী হয়। আর এইসব মানুষদের কাছে আমরা সামন্য কিছু অর্থের বিনিময়ে গোলাম বনে যাই।

তথাকথিত নেতারা তাদের নিতম্বে ফেবু নামক তেল মর্দন উপভোগ করেন। আর সে মর্দনের তেলসমতিতে জনগনের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে মিষ্টি কোঁয়া চুষুন করে হাসতে হাসতে স্বাদ উপভোগ করেন।

আমরা সাধারণ পাবিলক যারা আছি তারা সবাই নিজ স্বার্থের কথা চিন্তা করি। কিন্তু সমাজ, রাষ্ট্র বা জাতির কথা একটুও ভাবি না। আমাদের চিন্তা এমনই, দেশ যাক রসাতলে আমাদের কি, আমি তো নেতার চামচামি করে আমারটা পাচ্ছি। আর এই স্বার্থন্বেষী লোভের কারণে হাজারো পরিবার না খেয়ে মরে।

সরকার জনগনের উপকারের জন্য যেসব কাজে বরাদ্দ দিয়ে থাকেন, নেতা নামক টেন্ডারবাজরা ঐসব বরাদ্দের ৭০% যদি সম্পূর্ণ করতো তাহলে বাংলাদেশ সোনার বাংলায় রুপান্তরিত হতো।

সোনার বাংলায় অযোগ্যরা নেতা হয় আর যোগ্যরা ঐসব নেতার আমলা বনে বলে দেশের সাধারণ জনগণ কখনোই স্বস্তিতে নিঃশ্বাস ফেলতে পারিনি, পারবেও না। আর এই জন্য দায়ী আমরা সাধারণ জনগনই। কারণ আমরা সব্বাই হিপোক্রেট।

ঋতুস্রাব এবং আমাদের মস্তিষ্ক

মেয়েটির পিরিয়ডের আজ দ্বিতীয় দিন। তার আজকে পায়ে হাঁটার মতো শক্তি নেই, তার ঊরুগুলো পাথরের মতো শক্ত হয়ে গেছে। মেয়েটি পেটের ব্যথা ধীরে ধীরে প্রসারিত হচ্ছে এবং সেই যন্ত্রণায় মেয়েটি কাঁদছে। মেয়েটি দাঁতের উপরে দাঁত দিয়ে প্রচন্ড ব্যথা সহ্য করে আছে। ফার্মেসি ভর্তি মানুষগুলোর নিথর চোখের মাঝেও গতকাল মেয়েটি যখন সাহস করে ফার্মেসিতে গিয়ে প্যাডের নাম ফিসফিস করে বলছিল, দোকানদার তাকে একটা কালো ব্যাগে প্যাডটি এমনভাবে মুড়িয়ে দিল যেন মেয়েটি এমন কোন কিছু চেয়েছে যা নিষিদ্ধ এবং তা সমাজ বা রাস্ট্রের জন্য ক্ষতিকর এবং মেয়েটিকে সেই প্যাড লুকিয়ে নিয়ে যেতে হবে। অথচ দেদারসে বিড়ি সিগারেট মাদক প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে।

আজ মেয়েটির সমস্ত শরীরে নেশার মতো করে ব্যথা আঁকড়ে ধরে আছে। এমনকি মেয়েটি আজ তার অফিসে চেয়ারে দু’দন্ড স্থির বসে থাকতে পারেনি।

প্রতি মাসের এই পাঁচ দিনের রুটিনে মেয়েটি কখনো ছুটি নেননি শুয়ে থাকেননি। আজকে তার সহকর্মীরা তার দিকে আঁড় চোখে তাকিয়ে আছে, এবং মাঝে মাঝে মেয়েটির দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসে, অন্যদের সাথে কথা বলে কিন্তু ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সেই একই গল্প তোলে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ গতকালের অসমাপ্ত কাজের জন্য মেয়েটিকে যাচ্ছে তাই বলে তিরস্কার করে অথচ মেয়েটি তার সকল কাজেই পারদর্শী কিন্তু গতকাল থেকে সে পিরিয়ডের ব্যাথায় কাতর।

গতকালের অসমাপ্ত কাজগুলো দ্রুত শেষ করে টেবিলে দিতে বলেন অথচ মেয়েটির গত পঁচিশ দিনের অক্লান্ত পরিশ্রমের কথা বেমালুম ভুলে যায়। মেয়েটিকে ধমকের সুরে বলে দিলো কাজটা দ্রুত শেষ করার জন্য। মেয়েটির মুখের ফ্যাকাশে, ক্লান্তি আর শরীরের অলসতা-দুর্বলতা চলতেই থাকে। কয়েক দিনের মধ্যে মেয়েটি কোন কাজে মন বসাতে পারেনি। মেয়েটি তার কেবিন ছেড়ে উঠতে পারেনি তার মনে ক্রমশ অস্বস্তির একটা ঢেউ উঠেছিল।
না এটা অন্য কোন উদ্বেগ ছিল না তার পোশাকের পেছনে কোনো ‘দাগ’ ছিলনা উঠতে বসতে মেয়েটি স্বস্তিতেই ছিল কারন আটটি প্যাড যে সে আশি টাকায় কিনেছে। সে এই ভেবে অস্বস্তিতে ছিল যে এখন পর্যন্ত তার পেছনে সেই নোংরা চোখগুলো পড়েছিল এবং কানাকানি করছিল আর হাসছিল।

ওহে পুরুষ! সেই মেয়েটি কি করে তোমার ভাবনায় ? পুরুষগুলো বেমালুম ভুলে যায় তার মায়ের, বোনেরও প্রতিমাসে পিরিয়ড হয় এবং তারাও অসহ্য রকম যন্ত্রণা সহ্য করে। পিরিয়ডের মতো একটা স্বাভাবিক ঘটনাই জানিয়ে দেয় আমাদের মন মানসিকতা কোন পর্যায়ে আছে।

মাসিকের ব্যথা থেকে মেয়েটি শিক্ষা নেয় এবং সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে তাই তাকে নিয়ে হাসবেন না যখন সে এই যন্ত্রণার দ্বারা যন্ত্রণাদায়ক অবস্থায় থাকে কারণ এই ঋতুস্রাবেই কারনেই ‘ভ্রুণ’ তৈরির মাঠ তৈরি হয়।