চারু মান্নান এর সকল পোস্ট

মুক্তি সখা

———মুক্তি সখা

প্রথা সিদ্ধ কথা গুলো, এঁকে বেঁকে ফুরত
জটলায় জমেছিল বেশ, বন্ধুদের যত অকথা
প্রথা বিদ্ধ কথা যথাতথা, অমানিশায় মিলিয়ে যায়।

যাক তা ভেসে যাক
বর্ষার জলে, নির্মমতা নিমগ্নতার
অসহায়ের মতো;
মাছের পোনার ঝাঁক সুবোধ মাতৃত্বে
ঘুরে বেড়ায় শেওলা জলে।

চেয়ে ছিল আকাশ, অমরত্বের সুধা রসে
বর্ষার জলে একি কথা যায় ভেসে স্রোতে, পরি মরি করে?
বাঁধার আহ্বানে শোনে না কেউ?
তার কথা, যাতনা ঘোরে কেটে যায় সুবোধ কাল
তারে আমি যে, মুক্তি সখা নামে ডাকি
রইলে সাথে জীবন ভর! প্রথা বিদ্ধ অঙ্গনে
মুক্তি সখা ফিরে না আর কখনো
প্রথা সিদ্ধ আমার প্রাঙ্গণে; সেথায় এখন বর্ষার জল
শেওলা ঘন বানে পোনামাছের ঝাঁক।

১৪২৬/২৫, আষাঢ়/ বর্ষাকাল
বিষয়শ্রেণী: জীবনমুখী/ রূপক কবিতা

ক্রান্তিকালে বিমর্ষ যাতনা

——-ক্রান্তিকালে বিমর্ষ যাতনা

দক্ষিণ হাওয়া ডাক দিয়ে কয়,
টিয়ার ঠোঁটে বিমর্ষ সুর;
বিভৎস কিছু দেখেছে বুঝি
অভিমানে মুখ ঘুরে, উড়ে গেল দূর বহু দূরে।

শুধায় আকাশ নীল, করোজড়ে মাথা নুয়ে
কি হয়েছে বল না সখা?
ঠোঁটগুলো সব যেন আঠায় আঁটা
কইতে কিছুই মন সায় না দেয়, এ কোন জটিলতা?
উদাস আকাশ বিষন্ন যে
বাতাস টেনে টেনে কয়; মেঘেরে শুধাও
কোন সে বিপন্নতা? থমথমে যে আকাশের প্রাণটা!
সাঁঝ পায় না খুঁজে যে তার খেই।

খেই খুঁজতে আঁধারে নেমে এলো
ক্রান্তিকালের ক্ষয়িষ্ণু খোলস;
যাতনা তাই বিপন্ন দ্রোহে জেগে উঠে
আর কত রক্ত চুষে, আগুনের পরশমনি’ মৃত্তিকা হবে?

১৪২৬/আষাঢ়/বর্ষাকাল।
বিষয়শ্রেণী: জীবনমুখী,রূপক কবিতা

মেঘের জল কণা

——-মেঘের জল কণা

মেঘের জল কণা
তুমি, দৃশ্যমান বৃষ্টির কায়া
জলজ অপসরি;
রিম ঝিম রিম ঝিম নিঃশেষ হতে হতে
হারিয়ে যাওয়া; মেঘের ঘঙ্ঘুর বাজে
ফুরিয়ে যাওয়ার খেলায়
অনামি, তুমি।

দ্রোহ বিদ্রোহের মেঘে মেঘে
অশান্ত কান্না গর্জন; তোমারই নিবিড় ক্ষণজুড়ে
অপেক্ষায় বসে ছিল যতটুকু জল
বিরহ ছুঁয়ে রয়, যা’যাবর বেলা
শুধু খসে পড়ে
জলমুখো অভিমানে।

বার বার ছুঁয়ে দেখেছো দ্রোহ নিবাস
মেঘ বালিকার মতো
কি সে যে অভিমান তোমার? তবুও ফিরলে না আর;
অনামি, তুমি।
মেঘের জল কণা; বড়ই যাতনার

১৪২৬/ আষাঢ়/বর্ষাকাল।
বিষয়শ্রেণী: বিরহের কবিতা, রূপক কবিতা

কস্তুরী ঘ্রাণ ছুটে একা একা

——–কস্তুরী ঘ্রাণ ছুটে একা একা

না দেখা রয়ে গেল সব!
পথে পথে, পথের বাঁকে অগোচরে দূরে, বহুদূরে
দিগন্তের ও পাড়; স্পষ্ট বুঝা যায় না কিছু
চশমার কাঁচ ঘুঁষে বইয়ের পাতার পৃষ্ঠা উল্টানোর মতো
বড়ই দূর বদ্ধ। আকাশ ছোঁয়ার মতো
<
চেনা তো হল না কখনো? দেখাও হয়নি আজও;
শঙ্খচিলের উড়ার পথ। এঁকে বেঁকে বাতাস খেলে যায়
পিছনে তার পথের নিশানা মিশিয়ে যায়, মিলিয়ে যায়
বাতাস রং খেলে; খেলে পাশা দ্রোহে
উদাস বড়ই, উদাসিনই নন্দন হরা
একেলা ঐ, শঙ্খচিল আমারই মতো বোকা!
একলা পথে চলে একা একা
বিরহ বিদ্রূপ সয়ে কার সখা? কস্তুরী ঘ্রাণ ছুটে একা একা
আমারই তো অবোধ বোকা;
ডুবে থাকে নন্দন হরা, ডুবে সাঁঝের কাল;
ডুবে যায় আঁধার পৃথিবী, ক্রান্তি কাল মুখ লুকায়
না দেখা রয়ে গেল কত কি?
পৃথিবীর অপার সুখ রহস্য রইল লুকিয়ে
কোন সে আঁধারে? শুধুই ধাবিত যাতনা প্রদাহ লয়ে
কেমনে রইনু বেঁচে এমন আঁধার কালে?
<
নীলাকাশে ঐ, শঙ্খচিলের পথের ছক আঁকা
মেঘের কঙ্কাল উঠে ভেসে, উপবাসির তৃঞ্চনা কথা
অগোচরে রইল পড়ে কতো কতো ফাঁকি?
আমি যে তারই মতো সর্বনাশের পথে হাঁটি।

বিষয়শ্রেণী: জীবনমুখী কবিতা, রূপক কবিতা
১৪২৬/১১-আষাঢ়/বর্ষাকাল।

জলছবি কাদা জলে

———জলছবি কাদা জলে

খিড়কি ঠেলে আষাঢ়ে চাঁদ
উঁকি দেয় হেসে,
সিঁথান জুড়ে ভুতুর মুখ
জোছনা ছুঁয়ে হাসে।

আয় আয় চাঁদ মামা
আষাঢ় মেঘ ডাকে,
টিপ হয়ে মেঘের ছায়া
ভুতুর কপাল ঢাকে।

আকাশ যে আজ কাঁদো কাঁদো
জল ভরা মেঘ ভাসে,
জোছনার উঁকি মেঘের ফাঁকে
রিমঝিম বৃষ্টি আষাঢ়ে।

রাতভর ভেঁপু বাজায় ব্যাঙ
আষাঢ়ে ডোবার জলে,
জোছনা রাতে ঝিকি মিকি
জলছবি কাদা জলে।

বিষয়শ্রেণী: ছড়া-কবিতা/১৪২৬/আষাঢ়/বর্ষাকাল।

শঙ্খচিলের খসে পড়া পালক

——–শঙ্খচিলের খসে পড়া পালক

আজ এ কোন নেশা পেয়ে বসেছে?
পাখিটার, শঙ্খচিল বুঝি!
উড়বার বাসনায় মেতে ঐ সুদূর মেঘ ফুঁড়ে
নীল ছুঁয়ে উড়ে।
পালকে তার কবিতার ঝলক উন্মনা, উম্মাতালে
ভালবেসেছিলে বুঝি! উন্মাদনা
সে কি যৌবন লজ্জাবতীর শিহরণ?
ভুলে কি করে? তাই তো উড়ে উড়ে পুড়ে
বেলা অবেলা পিছন ফেলে;
বিরহে সুখ খুঁজে, আমৃত্যু প্রেম সুধা রসে
প্রেম নেশা বায়ুর মতো ছুঁয়ে যায় আপাদমস্তক তার
জুড়ায় না দ্রোহে! কদাচিৎ উড়ে উড়ে
শঙ্খচিল নীলের সুধা পানে মাতাল প্রেমে লীন!
ছুঁয়ে যায় বিরহী প্রদাহ
খসে পড়া পালকে হরিৎ বর্ণ পিঙ্গল বাহানা;
ধরাধামের বিদ্রূপ ভুলে রয়।

ক্রান্তিকালের বিবর্ণতায়
কুড়িয়ে নিয়েছি খসে পড়া পালক তার একখান;
কবিতার পুনঃ জন্মের আশায়! মুছে যায় কালের নৈমিত্তিক
কবিতার সংগ্রহ শালা; হারিয়ে যায় হাজার হাজার কবিতা
মৃত্তিকার সধোনালয়ে লুকিয়ে যায় কত কত সভ্যতা?
আমি কেবলই হয়ে উঠি, শঙ্খচিলের খসে পড়া পালক।

জীবনমুখী কবিতা, রূপক কবিতা/২৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৬/গ্রীষ্মকাল

চঞ্চল বেবস মূর্ত প্রতীক হাওয়া

চঞ্চল বেবস মূর্ত প্রতীক হাওয়া

রোদের রোদন ছেড়ে,
মেইয়ে আসে রৌদ্র প্রতাপ
বিদায় সুর গলা জুড়ে, সোনালু ফুলে হলুদ বাহার
বোশেখর খেরোখাতায়,
জারুল জাফরানি রং মাখে।

লজ্জাবতীর কারিশমা ফুল,
রৌদ্র প্রতাপে কাঁপে
ক্ষয়ীঞ্চুকালে জল টলমল, সোদা হাসে সবুজ রাঙা বেশে
শরীর তার ছুঁয়ে গেল,
চঞ্চল বেবস মূর্ত প্রতীক হাওয়া।

বেবস যৌবনে চঞ্চল ভারি মেঘ,
উচাটন নকশী কাঁথা জলের ভরন
আবেগ ভরা ঈশান কোনে অভিমানে রাঙা, বসে আছে মুখ গুঁজে
উঠল হাওয়া দুলে বিপন্ন রোষানলে,
অভিমান ভাঙ্গল বুঝি মরমী হাওয়ায়।

১৪২৬/গ্রীষ্মকাল/১৩,জ্যৈষ্ঠ
বিষয়শ্রেণী: প্রকৃতির কবিতা, রূপক কবিতা

সেই পথ

———–সেই পথ

সেই পথ, জনমভর তারই হয়ে রইল
সেই পথে হাঁটতে গিয়ে পিছন ফিরে তাকাতেই
আবার আসবে তুমি, এই পথে হেঁটে!

হুঁচট খেয়ে! পথ বলে, চোখ টিপে হেসে হেসে
সেদিনই তো এসেছিল সে; মলিন বদনে আচমকা
তুমি পেলে না দেখা তার! পথের সায়েরী গেয়ে উঠে
বিরহী প্রহেলিকার গান ভাসে আসে ঐ তেপান্তরের পাড় হতে!
কত সুখ স্মৃতি তার? অমোঘ যাতনার ভাঁজে ভাঁজে
পথের ধুলো বাতাস গায়ে উড়ে যায় বিলি কেটে কেটে;

পথের গায়ে লেগে রয় রৌদ্র খরার ঘ্রাণ
তোমার পায়ের পঞ্চমি তাল লয়ে জোছনা ফিরে রাত গভীরে!
সেই পথে, পথের ঋতুর বদল ঘটে
সেই পথের ধুলো ছুঁতে, পথে সাঁঝ লালিমা সাজে
সেই পথের আকরে, পর জন্মের কত ইচ্ছা জাগে;
সেই পথের নন্দন রুপ, আঁধার রাতে জোছনা মাগে!
সেই পথ, জনমভর তারই হয়ে রইল
চুপি চুপি যতই হাসুক পথের দেরাজ চোখ
ছুঁয়েছি বন্ধুসম! ছুঁয়েছি তারেই অমোঘ আঁধার ঘোরে
সেই পথ যে তারই ছিল, শুধু ধুলো আবিরে মাখা মাখি!

১৪২৬/জ্যৈষ্ঠ/ গ্রীষ্মকাল।

চঞ্চল বেবস মূর্ত প্রতীক হাওয়া

——চঞ্চল বেবস মূর্ত প্রতীক হাওয়া

রোদের রোদন ছেড়ে,
মেইয়ে আসে রৌদ্র প্রতাপ
বিদায় সুর গলা জুড়ে, সোনালু ফুলে হলুদ বাহার
বোশেখর খেরোখাতায়,
জারুল জাফরানি রং মাখে।

লজ্জাবতীর কারিশমা ফুল,
রৌদ্র প্রতাপে কাঁপে
ক্ষয়ীঞ্চুকালে জল টলমল, সোদা হাসে সবুজ রাঙা বেশে
শরীর তার ছুঁয়ে গেল,
চঞ্চল বেবস মূর্ত প্রতীক হাওয়া।

বেবস যৌবনে চঞ্চল ভারি মেঘ,
উচাটন নকশী কাঁথা জলের ভরন
আবেগ ভরা ঈশান কোনে অভিমানে রাঙা, বসে আছে মুখ গুঁজে
উঠল হাওয়া দুলে বিপন্ন রোষানলে,
অভিমান ভাঙ্গল বুঝি মরমী হাওয়ায়।

১৪২৬/গ্রীষ্মকাল/১৩,জ্যৈষ্ঠ/প্রকৃতির কবিতা, রূপক কবিতা

অশ্বথ গাছের ছায়া

——-অশ্বথ গাছের ছায়া

মা, অশ্বথ গাছের ছায়ার মতো
হারিয়েছি মায়া, মমতার টান আদর মাখা
ক্ষয়ে গেছে যত সোহাগ আহ্লাদ।

কুয়া তলায় হাঁড়ি পাতিলের ভিড়ে
কত স্মৃতি মা, আমার তোমার সনে? কাদা জলে মাখা শরীরে, কুয়ার ঠাণ্ডা বাল্টির পানি মাথার উপর দিতে ঢেলে; আর বক বক করে কত বকাই না দিতে? চর তাপ্পর ছিল না বাঁকি; তবুও আদরে, সাবান মেখে গা ডলে দিতে; সাবানের পানিতে চোখ জ্বলত, কার কান্না কে শুনে? বাল্টির পানিতে নিঃশ্বাস যেতো থেমে, তবুও ছাড়তে না তুমি! পাছে ময়লা থাকে গায়ে। সে কি সুখ না মায়া? না ভালোবাসা, বুঝতে পারিনি মা! তবে তুমি ছাড়া তো ছিলনা কেউ; এমন বকা বাদ্দি আদরে মমতার গহন লাগা শৈশবে।

মা, আজ নক্ষত্রপুঞ্জে আমা হতে দূর বহু দূরে।

১৪২৫/ বৈশাখ/ গ্রীষ্মকাল।

আত্মজা জোছনা

——-আত্মজা জোছনা

আজ বসন্তের বেলা শেষ গান ধরেছে ভ্রমর
তার দীর্ঘ সুর লয়ে প্রাণ বড়ই চঞ্চল হয়;
সাদা লাউ ফুলে লাল ফড়িং হেলে দুলে
তার চোখ জোড়া ঘুরায়! সন্ধ্যাবতীর আঙিনায়।

সন্ধ্যাবতীর ডোবার ধারে কাটা লতার কত ফুল ফুটে!
মেঠোপথে দল বেঁধে যায় সন্ধ্যাবতীর আবাল বৃদ্ধ
কৃষকের কাঁদে তার শিশু কন্যা মেলায় যায় হরষে।
চৈত্র সংক্রান্তি মেলা, ঢোল কাশির বাজনা বাজে
রঙ্গিন ঘুড়ি আকাশে ঐ পাতার বাঁশির ভেঁপু বাজে
চরকি ঘুরে দূর হতে তার ঘূর্ণি আওয়াজ ভেসে আসে।
খই মুড়কি কলাই ভাজা, চিনির গজা, ঘোড়া, পুতুল
গরম জিলিপি পাঁপর ভাজা, আরো কত কি থরে থরে
ঝকমকানো রৌদ্র বিকেল, তাল পাতার পাখা স্বস্তি মিলে।

সাঁঝ ঘনালে সন্ধ্যাবতীর বসন্ত ক্ষয়ে যায় এই তো রীতি
খরায় শীর্ণ হবে এবার জেনে আত্মজা জোছনা জেগে উঠে।

১৪২৫/ ৩০ চৈত্র/বসন্তকাল
বিষয়শ্রেণী: প্রকৃতির কবিতা, রূপক কবিতা

বিমর্ষ বৃত্ত

——-বিমর্ষ বৃত্ত

বৃত্ত তার প্রলম্বিত শরীরটাকে বার বার
ছিঁড়ে ফেলার বাসনায় মাতে; কিন্তু বাসনা তার সময় ক্ষয়ে
নেতিয়ে পড়ে কালের ঘূর্ণি পথের প্রবঙ্চনা।
পথ ভুলে আবার বৃত্তের গায়ে
খর্বকায় বাসনায় নিমজ্জিত হয়; নিঃশেষ হবার সামান্য বাঁকি
তাতেই আশ্রয় ফিরে পায়।
সেই আশ্রয় একদিন দির্ঘায়িত হয়
বাসনা খর্বকায় থেকে বৃদ্ধি হবে; বর্ধিত বাসনায় রোমাঙ্চকর
বৃত্তের শরীর যেন উতল ঢেউ।
এই তো বাঁধ ভাঙার কাল
আবার সেই একই প্রলুব্ধ চাঙ্চল্য; জোয়ারের বেবস আক্রোশ
এবার বেড়িয়ে যাবে মন বল অফুরান।

কিন্তু বৃত্তের শরীর কাঠামো অদম্য
প্রলয় বিভীষিকায় কাঁপে না মোটে; ধীর লয় নিজ সদল পথে অবিচল
করাত ধারে তার শরীর কাটে না।

তাই তো প্রনমি বাসনা
বার বার ক্ষয়ে যায় নিজের পথে; ক্ষয়ে ক্ষয়ে নেতিয়ে পরে
বাসনা বিমর্ষ আজ আঁধার রাতের মতো।
এমনি বৃত্ত ভারে কঙ্কাল বাসনা শব
বৃত্তের আঙিনায় শুধু ছুটাছুটি; মুক্তির নেশায় কাটে দিবানিশি
বাসনা বৃত্ত অমোঘ স্বপ্নচারী।

রূপক কবিতা-১৪২৫/ ফাল্গুন/ বসন্ত কাল।

বসন্ত রাঙা মোহ

——বসন্ত রাঙা মোহ

চৈত্রের পাতা ঝরা সাঁঝ
নিঃসঙ্গ আকাশে
রৌদ্র প্রতাপ!
খরায় কনকনে তৃঞ্চা
মনন তেজে
পোড়ায় বার বার;

ক্ষয়িষ্ণু কাল
বসন্ত রাঙা মোহ
জানান দেয়
সোনালু ফুলে
রৌদ্র পোড়া চকচকে মোহ
অম্ল স্বাদে; চেখে চেখে যায়
ঐ কালো ঠোঁটের কাক;

তৃঞ্চায় যায়
তৃঞ্চায় ফিরে
বিমুখ বিবর্ণ চাহনিতে
ঐ দূরে বসন্ত মেঘ
অনাহারী আকাশ ছুঁয়ে রয়।

রূপক কবিতা/ ১৪২৫/চৈত্র/ বসন্তকাল

পথে যেতে যেতে মগ্নতা ঘুচে যায়

পথে যেতে যেতে মগ্নতা ঘুচে যায়

পথে যেতে যেতে মগ্নতা ঘুচে যায়
বাসনা গুলো স্তুতি হারালো, প্রকৃতির নানা অনামি অবয়ব
সমুখে আমার! বিভ্রান্তির কাঙাল যেন;
কেউ বা নুয়ে পড়ছে
কেউ বা থমকে আছে
কেউ বা যেতে যেতে পিছে ফিরে

চেনার একখান প্রবাদ গুনে
অমুকের সমুকের কে জানি কে
চেনার সূত্র ধরে টানে!
খেয়া মাঝির পথের পাথেয় যেন;
সময় কে খুঁজে ফিরে
কবে কোথায় যেন? বেড়িয়ে আসে অকপটে
কত দিন পর এলে এ পথে?
সেই যে গেলে আর ফিরলে না
পথের মোচর ঘুরেছে এখন
প্রত্যহ নতুন আলখেল্লা পথ যে বয়ে যায়;

কিন্তু আমি তুমির বিষম যাতনা,
শিশির ভেজা মাকড়ষার জ্বালে দিব্বি গেঁথে রয়
রৌদ্র তাপে শুকায় আবার মেঘ জলে ভিজে
কতক নন্দন ছায়া উড়ে উড়ে আসে,,,

জীবনমুখী, রূপক কবিতা/ ১৪২৫/ ফাল্গুন/ বসন্ত কাল।

কর্ম গুনে স্বপ্ন সেঁটে বাঁচ

——-কর্ম গুনে স্বপ্ন সেঁটে বাঁচ

চুপসে থাকা বেলুন
অনাথ চুপচাপ থলেতে পড়ে রয়।
বাতাস ভরে এবার তা ফুলে ফেঁপে মস্ত রাঙা
রঙিন বাতাসে টলে; ধায় আকাশে
এবার মনে বেশ অহঙ্কার তার দম্ভ ভরে কত কথা কয়?

ফড়িং তুই আয় না আমার সাথে
দেখাব তোরে নীল আকাশের গা
ঘাস ফুলের ডগায় তো রইলি পড়ে
এবার একটু মন খুলে গা;
আপাদমস্তক বাতাস খেলে খেলে!

বেশ তো আছি, সবুজ কোলাহলে
পাখি ভ্রুমর সনে দক্ষিণা হাওয়া গায়ে ছুঁয়ে
মমতা মাখা বড্ড আদুরে মায়ার টান
কেমনে ছিঁড়ে আসি বল?

মিছে মরীচিকা পিছে ছুটে
বেলা গেলে ঢলে তুমি যে যাবে চুপ্‌সে!
স্বপ্ন উড়াল বামন জীবন তোর; রও পড়ে থলেতে
একটু আদর মাখা হাওয়া পেলে তবেই উঠ জেগে
এতেই তুমি, স্বস্তি এঁটে বাঁচো
আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন এবার ছাড়! নয় তো ফুলেফেঁপে
হবে ফুটস নিঃস্ব; থলেতেও রইলে না আর বেঁচে
উচ্চভিলাসি মনকে এবার একটু বাঁধ,
কর্ম গুনে স্বপ্ন সেঁটে বাঁচ।

রূপক কবিতা/ ১৪২৫/মাঘ/ শীতকাল।