দীপঙ্কর বেরা এর সকল পোস্ট

দীপঙ্কর বেরা সম্পর্কে

আমি বাংলা ভালোবাসি। বাংলাকে ভালোবাসি।

মা বললে

মা বললে আমি আজও কান পেতে শুনি।
ভাষা যে এত মধুর হয়
মনের কথা হয়
প্রাণের আকুল হৃদয় হয়
বেঁচে থাকার আমরণ অঙ্গীকার হয়
মা বললে,
আমি তাই আজও
মা বললে কান পেতে শুনি।

দেশ আমার দেশ

রোহন বসেছিল ঘরের দাওয়ায়। বাটিতে রাখা মুড়ি। সাথে একটু চানাচুর। ভাবছে ভিজিয়ে খাবে নাকি শুকনো চিবিয়ে। পেটের মধ্যে ভাল করে খিদে না লাগলে এমন ভাবনা আসে। সামনের নিষ্ফলা জমিটা আজকেই কুপিয়ে ফেলতে হবে।
তাই সবে পাঁচ সাত গাল খাওয়া শেষ করেছে এমন সময় বিলু হন্তদন্ত হয়ে এসে বলল – কি রে? এখনো বসে আছিস, যাবি না?
রোহন একটু অবাক হয়ে বলল – কোথায় যাব? আর কেনই বা যাব?
বিলু বোঝানোর চেষ্টা করে – আরে বাবা, দেশ গড়ার ডাক এসেছে। চল। এ অন্যায় অত্যাচার আমরা সহ্য করব না।
রোহন এম এ পড়ছে। বিলু এম এস সি পাশ। একটু হেসে বলল – কে ডাক দিল
– পাটেকর। ওরাই সামনের ইলেকশনে আসছে। এখনও তো কোন কাজ পেলাম না। যদি এদের ধরে……..
– আমরা তো আর পরাধীন নই। আমাদের নিজেদের দেশের মানুষ দেশ চালাচ্ছে। অন্যায় অত্যাচার যা কিছু আমাদের দেশের লোক করছে।
– ঠিক তাই। এই অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।
আবার হাসল রোহন। মুড়ির বাটি রেখে বলল – মজাটা হচ্ছে। যারা দেশ চালাচ্ছে তাদের তাড়াতে আবার অন্য দলের পক্ষ নেওয়া। তুই আমি কি কোন সাধারণ মানুষের মুখ হতে পারছি? তবু চল।
রোহন বেরনোর সময় বলে – মা আসছি।
মা রান্না ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে এসে বলে – কি রে? এখন কোথায় চললি? কলেজে যাবি না?
রোহন সামনের তালগাছের কাছে এসে বলে – না মা, কলেজ বলো আর স্কুল বলো ও তো শুধু পাস সার্টিফিকেটে নাম তোলার জন্য যেতে হয়। না হলে পড়াশুনা তো করতে হবে টিউশনে।
– তাহলে কোথায় যাচ্ছিস?
বিলু উত্তর দিল – যাচ্ছি, আমাদের নেতা ডাকছে। নতুন দেশ গড়ার ডাক দিয়েছে।
মা হাসে। বলে – আর নতুন দেশ! পেটের খিদে না মিটলে কিসের দেশ আর কিসের নতুন জীবন।
রোহন চার ভাইবোন। সবাই মিলে যা আনছে সব ভাগাভাগি করতে করতেই শেষ। কিছুতেই পেটের খিদে মিটছে না। তবে বিলু একলা বাপের ছেলে। বিন্দাস খরচ করে। পার্টি করে। রোহনের মত টেনে নিয়ে যায় মিছিলে।
গত বছর রাস্তা সারাই হয়েছে তবু গাড্ডায় ভর্তি। একটু এগিয়ে দেখে মিলনের বাড়ি। এইট পাশ। এখন প্রধানবাবু। রাস্তা যত ভাঙছে বাড়িটা তত বড় হচ্ছে। তিনতলা হয়ে গেল। এই তো বছর আট দশ আগে খেতে পেত না।
বিলু বাড়িটা দেখিয়ে বলে – এবার এদের ভাঙা দরকার।
পাশ দিয়ে লাঙল কাঁধে এক কৃষক যাচ্ছিল। বলল – ভাই। ভাঙাভাঙি করো না। তোমাদের মত ছেলেদের তো এই দেশ গড়ে তুলতে হবে।
বিলু কোমরে হাত দিয়ে রুখে দাঁড়ায় – কিভাবে গড়ব? কাজ কোথায়? বেকার হয়ে কতদিন কিভাবে গড়ব এই দেশ?
কৃষক বলে – কাজ মানে তো তোমরা শুধু চাকরি বোঝ? দেশ গড়তে হলে কর্মী দরকার সবচেয়ে বেশি। আমরা কাজ করতে করতে শেষ হয়ে যাচ্ছি আর এরা কাজ পাচ্ছে না? আসলে কাজ করতে চাইছে না?
আর কি সব বলতে বলতে কৃষক চলে যায়। রোহন বলে – চল। আমাকে আবার তাড়াতাড়ি ফিরতে হবে।
– কেন?
একটু এগিয়ে বিলু তার নিজের কথার জবাব পায়। সামনে দাঁড়িয়ে দিদিতা। বলে – লুটুদা কোথায় চললে? বিকেলের কথা মনে আছে?
রোহনকে এখানে সবাই লুটু বলে ডাকে। হেসে বলে – মনে আছে। এই মিছিলে ঘুরে আসছি।
বিলু ঠেলা দেয় রোহনকে। বলে – তাহলে এই ব্যাপার। তোর চয়েস আছে বলতে হয়।
তারপর অটো ধরে সভা মঞ্চের কাছাকাছি পৌঁছে গেল দুজনে। পাটেকর বিপক্ষ পার্টির নামে কি সব বলার জন্য তারা ক্ষেপে যায়। লেগে যায় মারামারি। হাতাহাতি লাঠালাঠির সাথে বন্দুক ব্যোম গুলিগোলাও চলতে থাকে। পুলিশ নীরব দর্শক হয়ে সরে দাঁড়ায়। এক ইন্সপেক্টর আর একজনকে বলে – তোমরা দেশ গড়বে তাই তোমরা নিজেরা নিজেদেরকে বুঝে নাও। আমাদের কি দরকার নাক গলানোর?
তারপর তিনদিন পরে হাসপাতালে রোহনকে দেখতে যায় বিলু। সান্ত্বনা দেয় – চিন্তা করিস না আমরা আছি। পায়ের ব্যাণ্ডেজ খুলে দিয়েছে?
রোহন কিছু বলে না। ব্যাজার মুখে তাকায়। কিভাবে মারামারির জন্য উস্কানি দিয়ে কে পেছনে ছিল, কিভাবে গুলি গোলা বোম ও মারামারির মুখে ঠেলে দিয়ে পার্টির গাড়িতে উঠে যায় বিলু সব মনে আছে। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা দিদিতার হাত ধরে রোহন।

বই

যা কিছু শিখেছি আমি সব কিছু বই
বোধ বুদ্ধি শিক্ষা জ্ঞানে সে আমার সই,
কালো অক্ষরেই তার ভরা আছে আলো
আমার জীবন দিশা সেই তো সাজালো।
জ্ঞানের উত্তাল ঢেউ চুপ করে আছে
পৃষ্ঠা উল্টালেই প্রাণ জগতের মাঝে,
লেখা আছে গতিপথ বেঁচে থাকা মর্ম
বাঁচিয়ে রাখা বন্দনা বই বই ধর্ম।

আসুক অনলাইন অ্যাপ্স ফেসবুক
বই ছাড়া বুঝবে না কোন ভুলচুক,
দু মলাটে ভরা আছে মহাজাগতিক
যত পারো বই পড়ো বুঝবে সার্বিক।
বই তাই আমাদের জীবনের পথ
নিশ্চুপ থেকেও বই দেয় তার মত।

ইচ্ছে

তোমার ইচ্ছে তোমার কাছেই ফিরে আসে,
এ জীবনে যা যা চেয়েছিলে
ব্যবস্থা অধিকার অনুরোধ উপাখ্যান
ভালো করে ভেবে দেখো সব তুমি পেয়েছো।
যে সব আবদারের অন্য পৃষ্ঠা ছিল
নাই নাই করে সে সবও জুটেছে তোমার কপালে,
তবুও অন্যের অঙ্গীকারে তোমার ইচ্ছে
গোধূলি খুঁজছে রঙের আকাশে।

অকর্মার ঢেঁকি

কিছুটি পারি না আমি তা কখনো হয়
তুমি যা পার আমিও তা পারি অবশ্য
কিছু তাতে ভাল মন্দ কম বেশি হয় ?
তুলনাও করতে পার যে যার নিজস্ব ।
জগতের সব তারা থাকে কি উজ্জ্বল
তবুও আকাশে দেখি তাদের মিছিল
তোমাদের পাশে আমি তেমনি স্বচ্ছল
আমাকেই ছোট করে গড়ো না পাঁচিল ।

আমারও ঘাম ঝরে কর্মের আহ্বানে
তাতে কত লেখা থাকে যুগের কাহিনী
ক্ষুদ্র হলেও আমিও রয়েছি এখানে
সভ্যতার আমিও যে সজাগ বাহিনী ।
আমি যে কতটা পারি বলবে আগামী
সাধনা বুকে করেই আমি সম্ভবামি ।

মননগত পুঁথিগত

স্কুলে শ্রেণিকক্ষে পড়ানোর ফলে পুঁথিগত বিদ্যাই মননগত বিদ্যাতে পরিণত হবে। শিক্ষার প্রারম্ভ তো পুঁথি দিয়েই শুরু করতে হয়। তাছাড়া পুঁথিতেই সব লেখা আছে। শিক্ষকের হাত ধরে, শিক্ষাগুরুর তত্ত্বাবধানে সেই পুঁথিগত বিদ্যা খুব সহজে মননগত হয়। শুধুমাত্র শিক্ষকদের শিক্ষাদানের মাধ্যমে।
আমি যদি নিজে নিজে কোন বই পড়ি সেটা হল পুঁথিগত বিদ্যা। আর আমাকে যদি কেউ সেই বই অনুসারে বলে বা বুঝিয়ে দেয় সেটা হল মননগত। শিক্ষক যদি শ্রেণিকক্ষে না পড়ায় তাহলেও শিক্ষার্থী পড়ে নিচ্ছে। তাহলে তা হয়ে যাচ্ছে পুঁথিগত বিদ্যা। যেহেতু শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে পড়াচ্ছে না তাই এই পুঁথিগত বিদ্যা মননগত হচ্ছে না। এই পুঁথিগত বিদ্যা মননগত করতে না পারলে সমাজের অবক্ষয় অবশ্যম্ভাবী। দায়িত্ব শিক্ষকের।
বোধ জন্মানোর পরে মানুষের জীবনে একটা সময় তো পুঁথি নিজেই শিক্ষক হয়ে যায়। পুঁথিকে সাথে করে কত প্রাজ্ঞ বিজ্ঞ ব্যক্তি চরিত্রগতভাবে অনিন্দ্য সুন্দর হয়ে গেছেন। তার মানে পুঁথিই তখন মননগত।
কিন্তু বোধ জন্মানোর আগে শিক্ষক বা শিক্ষাগুরু থাকা দরকার। সেই সাথে শিক্ষা দেওয়াও জরুরী। মননগত শিক্ষা দেওয়া জরুরি।
সেইজন্য সমস্ত অবস্থানে শিক্ষক জরুরী। প্রতিভা যতই থাক, যত বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন হোক সঠিক অবস্থানে, সঠিক দিশায় এবং সঠিক শিক্ষকের হাতে না পড়লে প্রতিভা বিনষ্ট হতে সময় লাগে না। খেলাধূলা, নাচ, গান, আঁকা, আবৃত্তি ইত্যাদি প্রতিভা প্রস্ফুটিত হওয়ার ক্ষেত্রেও শিক্ষক বা শিক্ষাগুরু জরুরী।
এবং সেই শিক্ষা দিতে হবে সঠিক স্থানে। খেলাধূলা শেখাতে হবে খেলার মাঠে, নাচ শেখাতে হবে নাচের ক্লাসে, গান গানের প্রতিষ্ঠানে, আঁকা আঁকার পরিবেশে এবং স্কুলে শ্রেণিকক্ষে। না হলে হবে না। অন্য কোথাও (যেমন টিউশন) ছড়িয়ে ছিটিয়ে শিক্ষা হয়তো নেবে, প্রতিভা বুদবুদের মত হয়তো ফুটে উঠবে কিন্তু মানুষের মত মানুষ হবে না। স্পোর্টম্যান স্পিরিট পাবে না। শেখাকে মননগত করতে পারবে না।

একাই একান্নবর্তী

টুকু স্কুলে বেরনোর সময় মাকে বলে – মা, আজকে একটু অন্যরকম করে জুতোর ফিতেটা বেঁধে দাও না। মানসী আর এক প্যাঁচ ঘুরিয়ে বেঁধে দেয়। তাই দেখে টুকু বলে – মা, তুমি একদম পিকলু দাদার মত জুতোর ফিতে বেঁধে দিলে।
মানসী হাসে গতবার হোলির সময় গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিল। সেখানে সবার সঙ্গে বেশ হৈ চৈ করেছিল টুকু। দাদার ছেলে পিকলুকে ভোলে নি।
পরদিন টুকু আবদার করে – মা, আজকে একটু সুক্তো করবে। সেই সুক্তো খেয়ে টুকু মাকে জড়িয়ে ধরে বলে – গ্রীষ্মের ছুটিতে জেঠিমা যে রকম রান্না করেছিল একদম সেরকম। রাতে পড়তে বসে টুকু ঘুমে ঢুলু ঢুলু। বকা দিতে শুরু করল তাপস। তাই দেখে মানসী এগিয়ে আসে। বলে – তুমি বাবা হয়ে একটু আদর করে বুঝিয়ে বলে পড়াবে। তা না? সরো, আমি দেখছি।

মানসী টুকুর চোখে মুখে ভাল করে জল দিয়ে মুছিয়ে একটু টুকরো ক্যাডবেরি মুখে দিয়ে টুকুকে বলে – চল আমরা আকাশ দেখে আসি। আজ কি সেই আগের মত তারাগুলো সব জেগে আছে নাকি ঘুমিয়ে পড়েছে। একটু পরে ছাদ থেকে নামতে নামতে টুকু বলে – মা তুমি একেবারে আমাদের বেস্ট মোহিত স্যারের মত বুঝিয়ে দিলে। চলো, আমি আমার বাকী পড়াগুলো করে নিই।
মানস দেখল বাধ্য ছেলের মত টুকু পড়ছে। রাতে বিছানায় শুয়ে টুকুর আবার সেই বায়না – মা, গল্প বলো।
মানসী গল্প বলতে শুরু করার আগে স্পাইডারম্যান ব্যাডম্যান আর কুট্টুসের কিছু কথা টুকুকে দিয়ে বলিয়ে নেয় তারপর তাদের মধ্যে ব্যাঙ্গোমা ব্যাঙ্গোমি আর রাজপুত্তুর জুড়ে দিয়ে গল্প বলে।

সকালে টুকু বলে – মা, কাল তুমি দাদু ঠাকুমার মত কি সুন্দর গল্প বললে। আমার কখন ঘুম এসে গেল বুঝতেই পারি নি। সকালবেলা একটু পাশের বাড়ির সঙ্গে আর এক পাশের বাড়ির শুরু হল ঝগড়াঝাটি। তার মধ্যে টুকুর বাবাও জড়িয়ে পড়ল। মানসও ছাড়বার পাত্র নয়। যোগ্য জবাব দেওয়ার জন্য কোমর বাঁধতে শুরু করেছে। আর তখনি কাজের মাসিকে রান্নার সব বুঝিয়ে মানসী সামনে এসে দাঁড়ায়। ব্যাস একটু বুঝিয়ে বলতে পাশের বাড়ির দুজনেই নিজেদের মধ্যে পরে বোঝাপড়া করবে বলে তখনকার মত চুপ করে যায়।

ঘরে এসে মানস বলল – আমার মত মেনে নিল না হলে আমি একহাত নিতাম ওদের।
অফিস যাওয়া জন্য রেডি হতে হতে মানসী বলে – তুমি কি একটু পরে বেরোবে? তাহলে ওসব কথা বাদ দিয়ে একটু টুকুকে দেখো। আম আসছি।
মার চলে যাওয়া দেখতে দেখতে টুকু ভাবে – আমি তো মাঝে মাঝে গ্রামের বাড়িতে যাই। ওখানে সবাই আছে। দাদু ঠাকুমা কাকা কাকীমা জ্যেঠু জ্যেঠিমা দাদা দিদি পিসিমণি সবাই আছে। কত আনন্দ হয়। কিন্তু এখানে ফ্ল্যাটে আমরা তিনজন। তবু আমার মায়ের জন্য মনে হয় সবাই আমার সঙ্গে আছে। সেই আনন্দ হুল্লোড় আদর আবদার সব আছে।
মানসী ভাবে – টুকুকে একলা হতে দিলে চলবে না। আমাদের ট্রান্সফার জবে কিছু তো করার নেই। তাই যতটা পারি গ্রামের বাড়িতে মাঝে মাঝে নিয়ে যাব। না হলে বড় হবে কি করে?
আর মানস ভাবে – মানসী আমার দশভুজা। একাই যেন একান্নবর্তী জীবন।

শাসন

স্কুলে বেত থাকবে না তা কখনও হয়। স্কুল হচ্ছে মানুষ তৈরির কারিগর। শাসন ছাড়া কেউ কখনও মানুষ হয়? বেত হাতে টহল দিতেন আমাদের প্রধান শিক্ষক মহাশয়। আমরা সবাই ভয়ে কাঁপতাম।
ভয়ে কাঁপতাম তিনি মারবেন বলে নয়, ভয়ে কাঁপতাম পড়া জিজ্ঞেস করলে পারব না তাই। ক্লাস চলাকালীন দুষ্টুমি করলে ঠিক চোখে পড়বে তাই। নিয়মিত স্কুলে আসি না তাই। মিথ্যে বাহানা ঠিক ধরে ফেলতেন তাই। পড়া বলা শুরু করলেই ঠিক বুঝতে পারতেন দায়সারা পড়া পড়ে এসেছি তাই।
যারা সত্যিকারের ছাত্রছাত্রী। পড়া করত। পড়া বুঝত। নিয়মিত পড়ত। তাদের কাছে বেতের কোন ভয় ছিল না। কিংবা বেতের জন্য আমরা অনেকেই ছাত্রছাত্রী হয়ে গিয়েছিলাম।
সুশীলবাবু গৌরবাবু অনিলবাবু সতীশবাবু মন্মথবাবু বিষ্ণুবাবু যার হাতে বেত থাক না কেন সবাই চিনতেন কে ছাত্রছাত্রী আর কে ছাত্রছাত্রী নয়। তৃতীয় নয়ন দিয়ে ঠিক চিনতেন কে কে ‘ছাত্রানাং অধ্যয়ন তপ’ হিসেবে স্কুলে আসছে আর কে আসছে না।
তুমি স্কুলে আসবে আর ওই তো একটু আধটু পড়লেই হল কিংবা না পড়লেই হল অথবা ছাড় তো পড়ে আর কি হবে এবং কত আর পড়ব পাশ করলেই হল বা ঠিক স্টেজে মেকাপ দিয়ে দেব কিংবা পড়ার জ্বালায় জীবনে আর থাকল কি এ রকম ভাবলে কিংবা মানলে চলবে না। জীবনের এই সময়টা শেখার সময় তাই স্কুলে এসে পড়তেই হবে। ‘ছাত্রানাং অধ্যয়ন তপ’ হতেই হবে। এই ব্যাপারটা আমাদের শিক্ষক মহাশয় বেত হাতেই বুঝিয়ে দিতেন।
শিক্ষক হিসেবে স্কুলের বেতের সাথে সাথে সেই ভাবনাটিও পোষণ করতেন। তাই আমাদের কাছে বেত বা শাসন ছিল মানুষ হওয়ার অবস্থান। আমরা বেতের দু চার ঘা খেলে বাড়িতে বলতেই পারতাম না। কিংবা বললে আরো দু চার ঘা খেতে হত।
একদিন দুদিন পড়া না করে গেলেই যে তুমি বেতের মার খাবে তা কিন্তু নয়, পড়া করে গেলে কিন্তু তোমার বুদ্ধিতে অত ভাল পড়া বলতে পারলে না তার জন্য যে শাস্তি পাবে তা কিন্তু নয়, পড়াশুনার সাথে সাথে যদি তুমি দুষ্টুমি কর তাহলে দুষ্টুমির জন্য তুমি শাস্তি পাবে তা কিন্তু নয়।
কোন শিক্ষা সে পারিবারিক হোক বা সামাজিক হোক কিংবা বোধ বুদ্ধির অথবা খেলাধূলার সেখানে শাসন থাকা খুব জরুরী। মনে আছে ‘দঙ্গল’ ছবির কথা। বাবা যখন মেয়েদের চুল কেটে দিচ্ছে, মেয়েদের ভোর পাঁচটার সময় ঘুম থেকে তুলছে, ছেলেদের সাথে কুস্তি করাচ্ছে তখন কিন্তু সেই বাবা জানত না তার মেয়ে দেশের হয়ে সোনার মেডেল আনবে। যদি মেয়েরা মেডেল আনতে না পারত তা হলে ঐ বাবা নিষ্ঠুর প্রমানিত হত। শুরুতে সবাই তাই বলেছিল। বাঘা যতীন যখন একবার পুকুরের ঝাঁঝিতে পায়ে আটকে গিয়েছিল তখন পুকুর পাড়ে দাঁড়িয়ে তার বাবা বলেছিল – তোমাকে নিজেকেই বিপদ কাটিয়ে উঠে আসতে হবে। বাঘা যতীন উঠে এসেছিল।
তবেই না তাঁরা বরেণ্য।
আমাদের ক্লাসে অলক ফার্স্ট হত। কিন্তু স্যাররা তিন চার সাত আট রোল নম্বরের পার্থ নিমাই কিংবা সুরেশকে পছন্দ করত। কেন না স্যাররা জানতেন কার মধ্যে কি আছে। এবং সত্যি সত্যি পরবর্তীতে অলক কেবল ক্লার্ক। কিন্তু পার্থ নিমাই অরূপ সাধন এরা কেউ বিজ্ঞানী কেউ ডাক্তার কেউ আধিকারিক। এই উপলব্ধি স্যারেদের মধ্যে ছিল বলেই না বেত নিয়ে ক্লাসে এলেও স্যারেদের খুব মানাত।
সেইসব দিন পেরিয়ে এসে, সেই সব বেত দেখে ভয়ে ভয়ে কেঁপে ওঠা একজন শিক্ষার্থীও বলবে না যে সেদিনের সেই বেত, স্কুলের বেত, বেত হাতে ক্লাসে প্রবেশ করা স্যার ভুল ছিল।
শাস্তি নয় শাসন। শাসন থাকা খুব জরুরী। শাসন না থাকলে শিক্ষা সম্পূর্ণ হয় না।
আমাদের ক্লাসে বিনয় একেবারেই পড়া পারত না। অঙ্ক টুকটাক পারত কিন্তু ইংরেজীতে একেব্বারে কাঁচা। স্যার বলতেন – তোর বাড়িতে ইংরেজীর চাষ হয় যে নিজের মত ইংরেজী বলছিস?
তো সেই বিনয়কে কোন স্যার মারত না। বরং স্কুলের সব কাজে স্যারেরা বিনয়কে ডাকত। স্কুলের কোন অনুষ্ঠানে চেয়ার বেঞ্চি বয়ে দেওয়া খাওয়ার এনে দেওয়া তদারকি করা সব কাজে বিনয়। এমন কি বেত এনে দেওয়াটাও বিনয় করে দিত। সেই বিনয় এখন বড় হোলসেল বিজনেস করে। আমাদের গ্রামের বেশ বর্ধিষ্ণু নাগরিক। বকাটে উচ্ছন্নের দলে নাম লেখায় নি। স্কুল থেকে বেত উঠে গেল। বেতের সেই চোখ চলে গেল। কত ভাল স্কুলে দিয়ে টাকা পয়সা খরচ করেও ফটাফট ইংরেজী বলা বিনয়ের ছেলে মেয়ে বকাটের দলে উচ্ছন্নের দলে ভিড়ে গেল। বিনয় দুঃখ করে।

সংসার

ছাইদানিটা উপুড় মুখে সিগারেট
নেশা নেশা ভাব তাই ছেলে কমরেট,
খুনসুটি আতুড়ের ঘরময় ছাপ
বালিশেই টানাটানি মুখ অভিশাপ।
সুখটানে বিলাসিতা মারছে মানুষ
একমুঠো রোদ্দুরের আশা আবলুস,
সম্পর্কের টানাটানি ঠাণ্ডা শাক ভাতে
এত ক্ষোভ আগুনের রক্ত সংঘাতে।

সকালের কিশলয় ওম মেখে ধায়
তাই দেখে ধুলোঝড় রাতের তারায়,
লুকানো স্বপ্নের স্রোত আগ্রাসী তরঙ্গে
হাত দুটি ধরে আছে জীবন বিভঙ্গে;
করো না হে জোড়াতাপ্পি দিয়ে চাবিতালা
সংসার শান্তির নীড় আলো বর্ণমালা।

ভণিতা না করেই

ভণিতা না করে যা বলব সত্য বলব বলে গোপলা মানে আমি, খুব রেগে মেগে জ্বলে পুড়ে জ্বলে উঠেও কিছু করতে পারি না। কারণ ও চুপচাপ ঘরের কাজ নিজের আত্মভোলা মনে করতে লাগল। আমি যত বলি, এটা কি একটা সংসার কেউ কারো কথা শোনে না। যত সব অনিয়মে ঘর বাঁধতে গেলে সংসার কিন্তু ভেসে যাবে। ও হাসল। বলল – চা দেব। পেট গরম হয়েছে।
সমস্যায় পড়লে বিকৃত মুখ করে বসে থাকি। বলব নাকি বলব না। ভাবতে ভাবতে বলে ফেলি। ও সব শুনে টুনে এত সহজ সরল এবং প্রাঞ্জল সমাধান করে দেয় যা এক কথায় বললে বলতে হয় এক্সসেলেন্ট। যা শুনে আমি বুঝলাম ভালোবাসা কারে কয়।
ও রান্না করতে কিছুতেই পছন্দ করে না। কিন্তু যখন সামনে পরিবার এসে পড়ে। বলে, নিজের ছেলে, নিজের স্বামী, নিজের মা, নিজের বাবা তখন তারা কি খাবে সকালে কি খাবে বিকালে কি খাবে ইত্যাদি ভেবে ভেবে নিজের হাতে রোজ রান্না করে। আমি কিছু সাহায্য করি। অবে তা নামমাত্র। তখন কোন কষ্ট কোন রাগ কোন অভিমান থাকে না। বরং রান্নার মধ্যে মিষ্টতা ঝরে পড়ে।
সন্তান মানুষ করার ব্যাপারে ওর সমস্ত দায় দেখে আমি অবাক হই। কেন না একটানা পেছনে লেগে পড়াশুনা কিভাবে ছেলেকে করাতে হয়। কিভাবে পড়াশুনা করিয়ে নিতে হয় তা আমি বার বার শিখি। যা আমার পক্ষে কখনই সম্ভব হত না। তবু তার মাঝে সন্তানের প্রতি মাতৃত্বের বিন্দুমাত্র ভালোবাসা কম হয় না।
এর পর আসি কিছু না না। রেগে গেলে চুপ করে থাকা যে মানুষের এক বৃহৎ গুণ এবং তার ফলে ফল সন্তোষজনকভাবে নিজের দিকে এসে পড়ে তা আমার অর্ধাঙ্গিনীর কাছ থেকে আমি শিখেছি। ফলে ও নিজে রাগলেও যেমন পরিস্থিতি অনুকূল হয় তেমনি আমি রাগলেও তাও অনুকূল হয়। কিন্তু রাগ ষোলআনা থাকে।
আমি বললে হয়তো অত্যুক্তি হবে তবু ইত্যবসরে বলে ফেলাই ভাল যে বিয়ের পরে প্রেমই আসল প্রেম। এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ আমার ও। সংসারে পা দিয়ে তারপর একসাথে পায়ে পায়ে চলার নাম প্রেম।
ও, আর একটা কথা বলতে ভুলেই গেছি পড়াশুনায় কিন্তু বি সিরিয়াস। নিজের এবং অন্যের। অফিসে যখন যায় তখন ঘর পরিপাটি করে নিরাপদের দরজা জানলা খোলা রেখে তবে যায়। আর অফিসে কারো আঙুল তোলার পর্যন্ত সুযোগ দেয় না। আসলে যে পারে সে সব পারে। বিন্দাস পরিপাটি চুল বাঁধতে পারে আর ঘরে বাইরে সামলাতেও পারে। এমনি কি দ্রৌপদীর মত রাঁধতে।
রমণীর গুণ আমি আমার মাকে দেখেছি এবং পত্নী রূপে তেমনি পেয়েছি।
এ পর্যন্ত ও ও করেই শুরু এবং শেষ করলাম। কেন না শুধু লেখা হোক বা সাহিত্য। ঘরের কথা যেমন বাইরে বলতে নেই তেমনি বাইরের লোকের কথায় আমিও সাহিত্য করতে রাজি নই। তাই যা বলব তা বলার জন্য বললাম। এ আমি নয় আর ও ও নয়। ঠিক আছে? হয়তো বা সবাই ঠিক নেই শুধু আমি ঠিক আছি।

আন্দোলন হোক ভুখা পেটের

সত্যিই এবার আন্দোলন হোক ভুখা পেটের

একজনের খাবার এনে দেখি
বসে আছে তিনজন
তিনজনের খাবার যোগাড় করে ফিরে দেখি
হাত পেতে দাঁড়িয়ে আছে ছ’জন
ছয়জনকে কষ্টেসৃষ্টে খেতে দিলাম
দেখি পাত পেড়ে বসে আছে আরও বারোজন
বারোজন চেয়ে আছে খিদে পেটে
চব্বিশজনের গুনতি হিসেবে,
একজনের খাবার এভাবে ভাগ হচ্ছে
এ দেশের অলিতে গলিতে।
তাও সত্যিই এবার আন্দোলন হোক ভুখা পেটের।

এক আনাজের কাড়াকাড়ি যোগানে হিমসিম
লঙ্কা আছে তো পিঁয়াজ নেই কিংবা আলু কপি
চাষের জমি চাষীর ঘরে নাই নাই রব
বাড়ছে দাম বাড়ছে ফোড়ে
গুনিতকের চব্বিশ আর যাবে কোথায়?
এ দেশেতে জড় হওয়া আমরা মানুষজন।
তাও সত্যিই এবার আন্দোলন হোক ভুখা পেটের।

বাসে দাঁড়াবার জায়গা নেই ট্রেনের টিকিট কম
ফুটপাথে বসে সারি সারি হাঁটার জায়গা নাই
গাড়ি ঘোড়া যানজট মানুষে মানুষে করছে জায়গা দখল
ভাঁড়ার ঘরে কত দেবে ভাবতে বসে যোগানদার,
চব্বিশ কিংবা আটচল্লিশের হিসেবে
অনেক কিছু যায় এসে যায়,
তবু সত্যিই এবার আন্দোলন হোক ভুখা পেটের।

লাখো লাখো কোটি কোটি মেধা
এক পদের তাই দরখাস্ত লাখো কোটি
কাজের কথা আর বলো না শুধু চাকরি দাও
প্রাইভেট আজ বাঁধছে কষে কোমর
রাস্তার ধারে চালচুলোহীন বসে আছে কত
গুনতে বসে ঝরছে অনেক কালো ঘাম
তারাও কিন্তু খায়, খেতে বসে দেখি
হবেই হবে ভাঁড়ে মা ভবানী,
আটচল্লিশের পেছনে দাঁড়িয়ে আছে আরো আরও গুনিতক;
তাও সত্যিই সত্যি এবার আন্দোলন হোক শুধু ভুখা পেটের।

আমরা বাবা যত

আমি কখনও চাইনি হতে আমার বাবার মত
সব ব্যাপারে আমি আজও হয়েছি আমার মত,
আমি চাই আমার ছেলে হোক সে নিজের মত
যে যার সময় আঁকড়ে ধরে বাঁচুক নিজের মত।

যে যার মত বাঁচা মানে সকলের সঙ্গেই বাঁচা
মনের মধ্যে না রেখে কোন অভিমানের খাঁচা,
যা চাইব তাই নেব এ যে অধিকার বেশি কম
হতে চাইব হব হব কিন্তু করব না কোন শ্রম।
এমন ভাবে নিজের মত হয় না জীবন যাপন
আমাকে মানুষ গড়তে বাবা তখন বাবার মতন।
আমিও তেমনি বাবা হয়ে দাঁড়িয়ে বটের গাছ
ছেলের গায়ে লাগতে দেব না অমানুষের আঁচ।

সেভাবে ছেলে ছেলের মত বাবা বাবার মত
এ সংসারে থাকব ভালো আমরা বাবা যত।

যতটা না করি

যতটা না কাজ করি আমি
তার চেয়ে দেখাই বেশি ব্যস্ততা
অনেক কিছু উলটপালট করে বলি
এটাই আসলে আমার সততা।
যতটা না কাজ কর তুমি
তার চেয়ে দেখাও বেশি ভদ্রতা
অনেক কিছু গোঁজামিল দিয়ে বলো
এটাই আসলে তোমার স্বচ্ছতা।
এভাবে তুমি আমি যা কাজ করি
তার চেয়ে দেখাই বেশি নির্মাণ
অনেক কিছু ভাবনাবিহীন করে বলি
এটাই আসলে আধুনিক সম্মান।
যতটা না কাজ করে যায় ওরা
তার চেয়ে দেখায় না কম বেশি,
সবকিছু ওদের গড়া সভ্যতায়
আমাদের বেড়ে যায় ফরমায়েসি।

জ্ঞান ও তথ্য

বহু লোক তথ্য সংগ্রহকারী কিন্তু জ্ঞানী নয়। আসলে তথ্য সংগ্রহ করে তাকে জীবন চিত্রের সঙ্গে মিলিয়ে মিশিয়ে নিজস্বতা গড়ে তোলার নাম জ্ঞান।
তাই ক্লাসে বহু ছেলে মেয়ে ফার্স্ট হয় কিন্তু জ্ঞানী হতে পারে না। কেন না জ্ঞানী হতে হলে আপনার মধ্যে ক্রিয়েটিভিটি গড়ে তুলতে হবে। ক্লাসে যা পড়ানো হয় তার মধ্যে বেশিরভাগ তথ্যমূলক। তাই স্কুলের পড়াশুনার সাথে সাথে যদি নিজস্ব ভাবনার পরিসর থাকে তবেই সেই ছাত্রছাত্রীর মধ্যে তথ্যের মধ্য থেকে জ্ঞান সে সংগ্রহ করতে পারবে।
আমাদের দেশে বহু ছেলে মেয়ে পরীক্ষায় নম্বরের খেলায় শুধু তথ্য সংগ্রহকারী হিসেবে গড়ে উঠছে। কেন না বাংলা ইতিহাস ভূগোল বিজ্ঞান এবং অঙ্কে যদি ঠিক মত তথ্য সংগ্রহ করতে না পারে তাহলে সেই ছেলেমেয়ে অঙ্কে বিজ্ঞানে ইতিহাসে নম্বর কম পাবে।
স্কুলে কিংবা বাড়িতে কোথাও প্রকৃত শিক্ষা পাচ্ছে না ফলে ছাত্রছাত্রীদের জ্ঞান অর্জন হচ্ছে না। অথবা কম হচ্ছে।

কিন্তু কতজন

সত্যি বলছি, আমি মানুষ।
আমি মানুষের কান্না শুনতে পাই
আর্তকে সাহায্য করতে চাই,
পাশের জনকে সত্যি বলছি
আমার মানুষ বলেই মনে হয়।
কিন্তু কতজন?

সত্যি বলছি, আমি মাটি বলতে
মেদিনীপুরের মাটি বরিশালের মাটি কিংবা
আমেরিকা লন্ডনের মাটি বুঝি,
আর বুঝি সেই মাটিতে বাস করা মানুষজন।
কিন্তু কতজন?

সত্যি বলছি, পায়ে পা মিলিয়ে আমরা সবাই বাঁচব
একে অপরের ভালোবাসার বাসা গড়ব,
জাত পাত উঁচু নীচু বর্ণ বিদ্বেষ সব কিছু সরিয়ে
আমরা মুছে ফেলব কাঁটাতার সীমান্ত অথবা অতন্দ্র পাহারা।
আমি বুঝি মানুষ নিয়েই দেশ
আর দেশ মানে মানুষের নিশ্চিত বসবাস।
কিন্তু কতজন?

সত্যি বলছি, আমিও চাই
সবার অন্ন সংস্থান হোক, ঘর হোক,চাকরি হোক,
সবাই শিক্ষা পাক, চিকিৎসা পাক
সবার গড়ে উঠুক উন্নত জীবন যাত্রা।
সবাই হোক, মানুষের মত মানুষ।
কিন্তু কতজন?

এই কতজন ভাবতে ভাবতে
আমি মানুষ
চারিদিকে দেখি মানুষ মানুষ আর মানুষ,
সংস্থানের হাহাকারে ধুঁকছে মানুষ।

কতজন হোক, পাশের দু চার জন,
তাহলে
সত্যি বলছি, আমিও সত্যি মানুষ,
মানুষের মত মান হুঁস।