ফারুক মোহাম্মদ ওমর এর সকল পোস্ট

ফারুক মোহাম্মদ ওমর সম্পর্কে

সত্ত্বার নাগরিকত্ব চাইতে গিয়ে দেখি পথভ্রষ্টতা চেপে বসেছে। প্রার্থনার মতো একা তবু কেন মাথা তোলে দেয়াল? কারা দেয়াল বানায় পৃথিবীর বুকে,কারাই বা ভাঙে এই বাঁধা? দেয়াল তো আসলে মানুষেরই গল্প। লোহা, ইট আর পাথর দিয়ে লেখা। দেয়ালের ইতিহাসে সেঁটে থাকে আবেগ,রাজনীতি আর বাঁধা। আঠা ফুরিয়ে পোস্টারের মতো দেয়ালে ঝুলে থাকে ভয়, প্রতিরোধ, আত্মরক্ষা,অহমিকা অথবা অবিশ্বাসের গল্প। এখানে গদ্যের শরীরে কবিতার মন, জীবন এখানে স্মৃতি, মনে পড়াটাই ভ্রমণ। সমস্ত দেখাই যেন এক গভির অন্তদৃষ্টি। ধ্যানের মধ্যে পাওয়া এক একটি কবিতা যখন হয়ে ওঠে নিরস্ত্র জনগোষ্ঠীর অস্ত্র। তখন কবিতা হয়ে ওঠে উদ্ভাস।

ভাষাবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. এস. এম. লুৎফর রহমানের জীবন ও কর্ম

জন্ম ১২ অক্টোবর ১৯৪১
মৃত্যু ০২ মার্চ ২০১৯
প্রফেসর ডক্টর এস. এম. লুৎফর রহমান জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মর্যাদাসম্পন্ন একজন মৌলিক চিন্তাবিদ, ভাষাবিদ, লিপিতত্ত্ববিদ, ঐতিহাসিক, কবি ও কলামিস্ট হিসেবে আদৃত, স্বীকৃত ও সুপরিচিত। চিকিৎসাবিজ্ঞান, নৃবিজ্ঞান এবং বিজ্ঞানের অন্যান্য ননটেকনিক্যাল বিষয়েও তাঁর নিবন্ধাদি সুধীজনদের দৃষ্টি আকর্ষণে সমর্থ হয়েছে। বহুমাত্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায় তিনি একালের সেরা বাংলাভাষা গবেষক হিসেবে খ্যাতিমান। তাঁর গবেষণাকর্ম সূর্যের মতো দীপ্তি ছড়াচ্ছে অনুসন্ধিৎসুদের মাঝে।

জনাব রহমান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৫ সালে শিক্ষাজীবনে শুরুতে তিনি পিতার প্রতিষ্ঠা করা ‘খাটর রামানন্দকাঠি প্রাথমিক বিদ্যালয়’-এ অধ্যায়ন করেন। এখানে শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করার পর তাঁকে ‘পুলুম প্রাথমিক বিদ্যালয়’-এ ভর্তি করা হয়। ১৯৫৯ সালে পুলুম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগে ম্যট্রিক পাশ করেন। নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজ হতে উচ্চ মাধ্যমিক এবং একই কলেজ হতে বি এ (পাশ) সার্টিফিকেট অর্জন করেন। ১৯৬৪ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ১ম পর্বে ১ম শ্রেণীতে ১ম স্থান অধিকার করেন এবং ২য় পর্বে ২য় শ্রেণীতে ১ম স্থান অধিকার করেন। এবং পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন ১৯৭৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।

বৈচিত্র্যময় কর্মজীবনে তিন বহু পদ অলংকরণ করেন : প্রভাষক, সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, অধ্যাপক, সিলেকশন গ্রেড অধ্যাপক, নজরুল অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। কর্মজীবনে তিনি বাংলার পাশাপাশি ইংরেজী, হিন্দী, অহমিয়া প্রভৃতি ভাষায় পারদর্শীতা অর্জন করেন।

জনাব রহমান গবেষণাধর্মী বই লিখেছেন ১৫টি। গবেষণাধর্মী নিবন্ধ লিখেছেন দেড়শতাধিক। উল্লেখযোগ্য বইসমূহ হল: আধুনিককালের কবি ও কবিতা, দৌলৎপুরে নজরুল, ধূমকেতু ও তার সমাধি, মেসোপটেমিয়ায় নজরুল, ভৌগোলিক পরিবেশ ও দৈহিক নৃবিজ্ঞান, বাঙালা লিপির উৎস ও বিকাশের অজানা ইতিহাস, বাঙালীর লিপি ভাষা বানান ও জাতির ব্যতিক্রমী ইতিহাস (৩ খন্ড), লালন-জিজ্ঞাসা, বাউল তত্ত্ব ও বাউল গান, লালনগীতি চয়ন, লালন শাহ: জীবন ও গান, বাঙালা ভাষা ও বানানের ঐতিহাসিক বিপর্যয়: উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন, বাংলাদেশী কথা-সাহিত্যের তিন আমল, বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ, হোমিওপ্যাথি সম্পর্কে, বাংলাদেশী জারীগান, বৌদ্ধ চর্যাপদ, দুদ্দু শাহ, বাংলাদেশী লোক-চিকিৎসা ইত্যাদি।

জনাব রহমান ১৯৬৪ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবন্ধ লেখা ও বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় দুটোতেই প্রথম পুরস্কার পান। ১৯৬৫ সালে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সেরা নির্বাচিত হন। বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক কাউন্সিল কর্তৃক বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ হিসেবে ‘আজীবন সম্মাননা’ পেয়েছেন। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের উৎপত্তি ও উন্নয়ন বিষয়ে মৌলিক গবেষণায় অবদানের জন্য ‘জাতীয় লেখক ফোরাম’, ঢাকা কর্তৃক ‘নওয়াব স্যার সলিমুল্লাহ জাতীয় পুরস্কার-২০০৮’-এ ভূষিত হন। দি আমেরিকান বায়োলজিক্যাল ইন্সটিটিউট, নর্থ ক্যারোলিনা, যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক ‘ম্যান অব দ্য ইয়ার-১৯৯৭’ নির্বাচিত হন।

এছাড়া জনাব লুৎফর রহমান বাংলা পাণ্ডুলিপি, ইন্দো-ইউরোপীয় আদি ভাষা এর বিশ্ব-ভাষা প্রকল্প এবং মূল বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের উৎস বিষয়ে নতুনভাবে আলোকপাত করেন। বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের বিশিষ্ট তাত্ত্বিক বিশেষজ্ঞতা অর্জন করেন। এ ছাড়া তিনি তিনি রেডিও টিভি সহ বিভিন্ন সাময়িকী এবং বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় বিবিধ অবদান রেখেছেন সফলতার সঙ্গে। এই গুণী ব্যক্তিত্বের রুহের মাগফিরাত কামনা করি।

সম্প্রীতির বাংলাদেশ

চাপাতির আঘাতে নিষ্ঠুর হত্যার বলি বাংলাদেশ প্রিয় মৃত্তিকা
শান্তিকামী জনতা তা একদিন রুখবেই।

একটি সাদা কাগজের ওপর ছোট্ট একটি কালো দাগ
কাগজের সাদা অংশটি বিবেচনায় না এনে
কালো দাগটি নিয়েই কথা বলা মতলববাজদের কাজ
ওরা শান্তি চায়না।
ফায়দাতন্ত্রে বশীভূত বিক্রীতজন হাজার বছরের
সম্প্রীতি ভুলে চালে দলদাসের খেলা
শুরু হয় অদৃশ্য সাপের ছোবল
চলে জঙ্গিদের কোপাকুপি
উফ! আমরা নিদারুণ জ্বালায় জ্বলছি।

এই স্বদেশ তো কখনো এমন ছিলনা
হায়! আমাদের মূল্যবোধ, সম্ভ্রম বিপরীতমুখী চলছে
আমরাতো মুসলিম, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান সকলেই এক সমান
প্রত্যেকেই পরের তরে সম্প্রীতির বাংলাদেশ
ঘৃণা নেই সহিংসতা নেই, নেই কোন হিংসাত্বত্তের বীজ,
বায়আত নিয়েছি আকাশের কাছে শেষ হওয়া দিগন্ত ছুঁয়ে
উদারতায় আলোকবর্ষের হাতছানিতে
স্বাধীনতার মন্ত্রে উড়েছি বিপ্লবের নেশায়।

ভালোবাসো এবং ভালোবাসো আমাকে ভালোবাসতে দিও।

ভ্রুন উপাখ্যান

যা কিছু দৃশ্যমান
সবই তোমার রূপের দ্বিতীয় উপাখ্যান
আমি হাসি খেলি মোচড়াই
শূণ্যে উড়ো চলে বেলুন ফানুস
আমি আঁকি কতো স্বপ্ন সমাচার।

এখানে কি কেউ আছো
আসমান জমিন কাঁপানো অপরাধ সমূহ প্রতিরোধ করবে
এসো তবে বিশুদ্ধ চিত্তে
মানুষ আর শয়তানের সহবাসে হিজড়ার আমদানি
বা পঁচে যাওয়া ভ্রুনের রপতানি বন্ধ করি।

সমকামীতার নগ্ন মিছিল
কি চায় ওরা রাজধানীর মেকি সভ্যতায়
উদভ্রান্ত চিন্তা দর্শন
জানাই লূতের সম্ভাষণ।

মানুষের মধ্যে নারী পুরুষ
আপন নির্মাণশৈণী আদম হাওয়ার মস্তিস্কেরই আসা যাওয়া
আমাকে যেমন চিনতে পারো তুমি
তোমাকে চিনি অঙ্গের ঢেউ।

যতটুকু চাওয়া পাওয়া
যোজনে তোমার বসবাস
মিল আর অমিলের সাহিত্য সোপান
চির নতুনের পথে এক বর্ষাপুরুষকে আবৃত করে
রোদেলা তুমি তোমার ভেঁজাআঁচল।

চলো নিয়মের স্ফুলিঙ্গ হই
লালিত্য স্বপ্নের সহযাত্রী
যুদ্ধ থামাবো বোরাকের আরোহী ডানায়
তুমি ছামুদের ইতিহাস পড়ো
নতুবা নির্যাতীত শব্দেরা আবাবিল হয়ে ছুড়বে পাথর বৃষ্টি
যা চাও অবৈধ রক্তের হোলি খেলা না প্রশান্তির মোহনা।

ইচ্ছাময়ী

চাইবো না কিছুই
তুমি জানো তোমার সকালের
সুন্দর ইচ্ছার কাছে নতজানু মন
ইচ্ছাময়ী ঘ্রাণের বাগান
আমি একবার দুইবার তিনবার
শতবার বিচরণ করছি পবিত্র জমিনে।

আকাশের দিকে চেয়ে আছো
খানিকবাদেই বৃষ্টি হবে
নতজানু বর্ষা তোমার আরাধনায়
কেটেছে পথহারা কতো প্রহর
অখন্ড মানচিত্রের ভালোবাসা সিক্ত হ্নদয়ে
কিম্বা একটি সন্তান হবে তিস্তাপুত্র,
তোমার কোলে ইচ্ছাময়ী ফসল
আমার পানি আমাকে ফিরিয়ে দাও
চাইবো না কিছুই
ইচ্ছাময়ী ঘ্রাণের বাগান ছাড়া!

হরেক রকম ফুল ফুটবে
শিউলী গোলাপ বকুল
প্রিয়তমা,তোমায় বকুল ফুলের মালা দেবো
নাকে নাক ফুল রেশমী চুড়ি
নুপুরের রিনিঝিনি আর যখন চুল ছুঁয়ে দেবো
সাপের বেণী হয়ে যাবে তুমি,

ইচ্ছাময়ী তুমি আমার হয়ে যাও
নতুবা পুড়িয়ে দেবো তোমার জরায়ুর ক্যাম্প।

বিশুদ্ধ-ফারুক মোহাম্মদ ওমর

বিশুদ্ধ

তুমি বিশুদ্ধ হও
আমি সত্য ও সুন্দর হবো।

তুমি পবিত্র হও
আমি কল্যাণের চাদরে জড়িয়ে রাখবো।

তুমি উর্বর জমিন হও
আমি অসীমের সিংহাসন দেবো।

তুমি বিশুদ্ধ হলেই
আমি বিশ্বাস হবো তোমার খোঁপায়।

তুমি যাই হওনা কেন বিশুদ্ধ হও
শেষ পর্যন্ত তুমি বিশুদ্ধ না হলেও
আমি সত্য সুন্দর হবো
শুদ্ধতার অমিয় সোপান।