হাসনাহেনা রানু এর সকল পোস্ট

কোথাও কিছু নেই শুধুই শূন্যতা

QETT

ভালবাসার আঁচল বিছিয়ে ছিলাম তোমার জন্য
নীল আকাশে
শিশির ধোঁয়া জলে আমি ভিজেছিলাম ইচ্ছে মতো
শ্রাবণ মেঘের বৃষ্টি দিনে,
শত দুঃখের মাঝেও রংধনু মেঘ রং ছিল আকাশে
প্রতীক্ষার ঢেউ আমায় কাঁপিয়ে ছিল দারুণ আবেগে ;
এখন কষ্ট আঁচলে শিশির শব্দ ভাঙি এই হাতে।

এককুড়ি বছর আগে নক্ষত্র ছিলে আমার নীল আকাশে
আজ সেই নক্ষত্র বিবর্ণ বেদনার মালা হল আমার কণ্ঠে,
সময়ের আড়ালে নিজেকে লুকোলে
আমি এখন উত্তাল সমুদ্রের স্রোতে ভাসতে শিখেছি
এখন কষ্ট আমায় স্পর্শ করে না আগের মতো!
যদি বিষাদের ছায়ায় ঢেকে দিতে ভাললাগে
দিও আঁচল ভরে নেব
ওতে কেবল কষ্ট বাড়ে সঙ্গে সীমাহীন শূন্যতা;
অচেনা ধ্রুপদী এক আকাশ আছে আমার চোখে বন্দি
কঠিন বাস্তবতার নীল স্রোতে আমায় ভাসায় নিরবধি
ফেলে আসা এককুড়ি বছর আমায় কষ্ট দেয়।

আমারও অনুভূতি বলে কিছু ছিল
কেউ বোঝে না সে কথা,
কখনো খোঁজনি তুমি:
সেই তুমি কি শুধুই নীল আকাশ?
আমার হিসেবের অঙ্ক আর মেলেনি ;
একদিন অন‍্য সবার মতো
আমিও তোমার প্রেমে পড়েছিলাম,
আমিও তোমায় ভালবেসেছিলাম
আজ আর কোথাও কিছু নেই
শুধু গহীনের দক্ষিণ অরণ্যে সীমাহীন শূন্যতা ছাড়া!

নিঃশব্দ আকাশ এবং মেঘ কথা

PQ6aQ

আমার সুনীল স্বচ্ছ এক আকাশ আছে
তাতে এক বিন্দু মেঘ নেই,
এক ফোঁটা নীল নেই
সবুজ বাতাসে ছিল এক টুকরো বিশ্বাসী মেঘের গন্ধ:
আমি কবিতা বুঝি
নূপুরের ছন্দ বুঝি
অলস দুপুর বুঝি,
ভাঁজ ভাঙা বিকেল খুব বুঝি
নির্জন দ্বীপে নেমে আসা সন্ধ্যা বুঝি
নক্ষত্রের অক্ষরে গাঁথা নিবিড় রাত বুঝি
শুধু বুঝিনা এই তোমাকে;
তুমি আর নিঃশব্দ আকাশের মাঝে কোন ব্যবধান নেই
তুমি মানে নিঃশব্দ এক নীল শূন্য আকাশ!
কবে কোন্ সন্ধ্যা ফেলে এসেছ
বুনো গোলাপের ঝাড়ে
কাঁঠালিচাঁপার সবুজ পাতায় শ্রাবণ নেমেছে,
কবে কোন্ শরতের কাশফুলের কাছে স্নিগ্ধ হাসি ছড়িয়ে দিয়েছ
হেমন্ত অনুরাগে মেঘমালা শিশির গল্প হয়ে ঝরে পড়ছে ভোরের ঘাস ঘুমে;

অবারিত শুভ্র জ‍্যোৎস্না রাতে শিশির হয়ে ঝরছো অবাধ্য ঘাসফুলে,
আমি কবিতা বুঝি
শৈল্পিক মননশীলতা সৌন্দর্যের সৃষ্টির কারুকার্যে কবিতা ফুল হয়ে ফোঁটে!
কবিতা পাখিদের কাছে গল্প হয়ে গেছে,
আমি শুধু তোমাকে বুঝিনা
তোমাকে বুঝতে গেলেই
আমার এক আকাশ নৈঃশব্দ্যেতা আছড়ে পড়ে
এক শূন্য পৃথিবীর রাতের ঠোঁটে,
নীল হীন বিবর্ণ আকাশের কাছে আমি হেরে যাই বারবার
আমি কাঁদি:
আর অন‍্যরা হাসে
নীল শূন্য আকাশের কাছে আমার পরাজয় দেখে
আকাশের নীল আমার ভীষণ প্রিয়!
ও আকাশ; এ পরাজয় তোমার নয় শুধুই আমার
তোমার কাছে এ আমার অভিনব পরাজয়!

বিজয় এসেছে অন্যরকম স্বাদে

Bijoy-Dib

বিজয় এসেছে..
বিজয় এসেছে আবার বছর ঘুরে
বিজয় এসেছে স্বাধীনতার লাল সবুজ পতাকা নিয়ে
বিজয় এসেছে বাংলার অধিকার ছিনিয়ে নিয়ে,
বিজয় এসেছে
কোথায় বিজয়
বিজয় কোথায়?
বিজয় তুমি দেখতে কেমন ?
বিজয় মানে কি লক্ষ্য লক্ষ্য নারী পুরুষের লাশের স্তুপ?
বিজয় মানে কি এক সাগর রক্তের বন্যা –?
এই এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাঙালি ফিরে পেয়েছে স্বাধীনতা
বিজয়ের অপার নাম কি বাংলার স্বাধীন মানচিত্র
বাঙালির লাশ হয়ে মাটিতে ঝরে পড়ার নামই কি বিজয়
বিজয় মানে কি বাঙালির চেতনায় গেঁথে থাকার নাম মুক্তিযোদ্ধা
হে বিজয় , তুমি অন্য রকম কষ্ট নিয়ে এসেছ চির চেনা বাঙালির ঘরে ঘরে
হে বাংলাদেশ ..! এবার ঘুম ভেঙ্গে জেগে ওঠো
দেখো বিজয় এসেছে
উচ্ছ্বাসিত আনন্দের বন্যায় ভেসে,
স্বাগতম হে বাংলার দামাল সন্তানেরা ! তোমরা রক্তক্ষয়ী মরণ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাংলার স্বাধীনতার লাল সূর্য ফিরিয়ে এনেছ…
বিজয় এসেছে, তোমরা ছিনিয়ে এনেছ প্রতিশোধের অনলে জ্বলে পুড়ে সবুজ বাংলার স্বাধিকার !

গোলাপ প্রিয় মন

কতটুকুই বা আর চেনা জানা হল
না জানলাম দিনরাত্রি
না জানলাম নিবিড় প্রকৃতি
কিম্বা পৌষের হাড় কাঁপানো শীতের হলুদ রৌদ্রে শিহরণ খেলে যাওয়া অরণ্য;
না চিনলাম পূর্ণিমা চাঁদের তিথি
হয়তো প্রিয় গোলাপ স্বপ্নে বিভোর ছিলাম গহন অরণ্যে;
তবু দিন ক্ষয়ে যায় পাতা ঝরা শব্দের মত
দিন শেষে কুয়াশায় ম্লান হয় প্রজাপতি স্বপ্ন,
বুকের ভেতর জমে থাকা কষ্ট গুলো বেরিয়ে এসেছে
লেখা হয়ে
হতে পারে কিছু কবিতা;
ভাল থাকুক কবিতা লেখার সকাল
ভাল থাকুক অনন্য সুন্দর বিকেল
ভাল থাকুক অরণ্যে জ‍্যোৎস্নার শিহরণে জেগে ওঠা দিনরাত্রি!

দখিনের নীল আকাশ

index

এ হাতে একটা শব্দের শহর ভাঙব
যদিও কাজটা সহজ নয়
শহরটা ভাঙতে গিয়ে দেখি
একটা আস্ত কাঁচের পৃথিবী,
আমি ভীষণ অবাক হয়েছি
কাঁচের শহর ভেঙে খান খান হয়ে গেছে
দু’শো এক বছর আগে
একটা শব্দ ও হয়নি
তবে কেন নাম শব্দের শহর ছিল,
প্রশ্নটা আমাকে ভীষণ ভাবিয়ে তুলেছে
কাঁচের পৃথিবীতে টিপটিপ বৃষ্টির ফোঁটার মত দিনরাত দূর্মোর জ‍্যোৎস্না ঝরে
এই পৃথিবী শিউলি ফোঁটা নক্ষত্র’ নীড়;
আমি কাঁচের শহর ভাঙতে এসে পৃথিবী আবিষ্কার করলাম
পৃথিবীর আকাশ ধোঁয়া ধোঁয়া কুয়াশার রৌদ্রের আগুন আঁচলে ঢেকে আছে বহুদিন।

কতকগুলো হারানো বিকেলের কাছে কবিতা খুঁজে খুঁজে ক্লান্ত হয়েছি এই আমি
এক বসন্ত ভোরে রেশমের আকাশ ভেঙে শিশিরের বৃষ্টির ঝরেছিল
সে বৃষ্টি সমুদ্রের বুনো শরীরে ভেসে গেছে
তখন বৃষ্টির মাসের শাদা মায়া লেগেছিল শুদ্ধ প্রকৃতির চোখে মুখে:
রাত্রি একদিন প্রশ্ন করেছিল, আমার শরীর অন্ধকার কেন ?
দূরের নক্ষত্র বলল, সে অনেক বড় কাহিনী বরং অন‍্যকোন দিন বলবো।

তবে কী স্বপ্ন দেখা জীবনের গল্প এখানে পূর্ণতা পাবে ?
কাঁচের পৃথিবীর পুরুষ গুলো সব হ‍্যাংলা
নারীদের কোন মর্যাদা দেয় না এরা
আসলে ওদের সাহসের দারুণ অভাব
এখন কাঁচের পৃথিবীটা খুলে ফেলতে পারি
জানতে পারি ভেতরে কি আছে
অপূর্ণ কিছু গুরুত্বপূর্ণ গোপন ইচ্ছে
আমি পৃথিবীর ভেতরে নীল আকাশের কান্নার কষ্ট অনুভব করেছি
এতকাল পুরুষ শুধু নারী চিনেছে
নারীর মনো জগতকে তারা প্রসারিত করতে দেইনি এতটুকু।

তুমি

image-1317

একটা নগন্য পাথরকে ও দামী
কিম্বা স্বর্ণের চেয়ে মহার্শ রত্ন ভেবে,
অনামিকায় ঠাঁই দেয়া যায়..
যদি সেটা তোমার আঙ্গুল হয় —
একটা গন্ধময় ঘেঁটো ফুলকে
সুন্দর একটা মালায় সাজানো যায়,
সুরভিত জেনে কুন্তলে গুজে রাখা যায় —
যদি সেটা তোমার চুলের খোঁপা হয় ….!

কাজল কালো নয়ন
রেশমী চুড়ি,
কিম্বা আলতা, নীল শাড়ির আচ্ছাদন..
জড়িয়ে দেয়া যায় একান্ত আপন হাতে —
যদি সেটা তোমার অঙ্গ হয় ———
মৃত্যুর বার্তাবাহী এক পেয়ালা বিষকে
হাসি মুখে গলায় ঢেলে নেয়া যায়,
যদি তুমি সেটা তুলে দাও আপন হাতে ..!

বিষের অবগাহনে আমি হব বড়ই তৃপ্ত ।
একটা ক্ষত-বিক্ষত মনকেও পৃথিবীর
আর সব অক্ষত মনের চেয়ে,
বেশি আপন ভেবে সমস্ত সত্ত্বায় গেঁথে নেয়া যায়
যদি সেটা তোমার মন হয় ।
কেননা আমার সমস্ত অনুভবে
চলমান পৃথিবীর মত তুমিই রয়েছ দণ্ডায়মান।

বিদগ্ধ বক্ষে..
তোমার চৈতন্যের প্রহর খুঁজেছি এতো কাল ধরে,
সীমাহীন অচেতনতায়:
খুঁজেছি ….. পথ ,ঘাট,মাঠ
আকাশ, সাগর, পাহাড়ে
কোথাও পাওয়া যায়নি তোমাকে —–
বুঝেছি সকলই ব‍্যর্থ আমার;
“তোমাকে পাব না এক জীবনে।”

কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি

57n-190

কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি
এ যেন হঠাৎ বৃষ্টি;
বৃষ্টির কাছে আমি কবিতার একটা সকাল চেয়েছি
সমুদ্রের ঢেউয়ে টুপটাপ বৃষ্টি পড়ার শব্দ ভাসে,
এক কুয়াশাচ্ছন্ন শরৎ সন্ধ্যায় অনুবাদ হল অশ্রুজল;
কষ্টের নির্যাসে অশ্রুজল এক গ্লাস অন্ধকার হয়ে গেছে –
একটা কবিতার বিকেল শিলাবৃষ্টিতে ঢেকেছে
মধ‍্যাহ্নের খোলা মেঘে কি ভীষণ ঝড় হল,
ঝড়ের তাণ্ডবে টুকরো টুকরো হল শেষ রাত্রি
ধীরে ধীরে নিস্তব্ধতা সরে গেছে:
পথে পথে মৃত ফুলের শবদেহ পড়ে আছে;
কিছু কবিতা বিষণ্ন চোখে তাকিয়ে আছে
শাদা কাফনে মুড়ে দেওয়া হল ভেঙে যাওয়া স্বপ্ন;
ধূসর কুয়াশায় ঢেকে গেছে পুরো সন্ধ্যা
শাদা মেঘে উত্তরের হাওয়ায় হঠাৎ বৃষ্টি নেমে এল !

কফিন বন্দি লাশ হয়ে শুয়ে আছে কিছু নক্ষত্র
স্বয়ং আকাশ অনেক কাল বিষাদে ডুবে ছিল,
কদম ফুলের গন্ধে উদ্বোধন করা হল শ্রাবণ বৃষ্টি।
হয়তো আমি ভুল করেছি
বৃষ্টির কাছে কবিতার একটা সকাল চেয়ে: আহত বৃষ্টির চোখে
জল দেখে কষ্ট ও বাড়েনি কম না!

স্রোতের শ্যাওলা

stream-m

দীর্ঘ ঘুমের অপেক্ষা রয়েছে আমার, হয়তো শত কোটি শতাব্দী’র
স্বপ্ন ঘুম কাছাকাছি এখন,
অশান্ত সমুদ্রে ঢেউ ভাঙছে শ্রোতের শ‍্যাওলা
দু’চোখ বিষাদময়!
পৃথিবীর শান্ত নীড়ে ঘুমিয়ে আছে
থমথমে শাদা মেঘ, নীল আকাশ;
দুপুর কিম্বা সন্ধ্যার মৌন স্তব্ধতার ধূসর গোধূলি রং ছুঁয়েছে এলোমেলো চুল,
ভেজা চুলে শ্রাবণ মেঘের বৃষ্টির গন্ধ
উগ্রতা আর প্রসাধনের কথা বলে।
তবে কি জীবনের মানে এখানে অন‍্য রকম ?
স্বপ্ন দেখতে নাকি কবির মন লাগে।
সুচিন্তিত গোপন অতীতের শত ঘুম ভেঙে
প্রায়শই পৃথিবী ডুবে যায় নিঃসঙ্গতার চুড়ান্ত সীমায়।

কেয়া কদম আর বিশ্বাসের বকুল

আমার শৈশবের দেখা এক বকুলতলায় স্মৃতিরা
এখনো কত উজ্জ্বল আর মধুময়,
প্রাণবন্ত উচ্ছ্বল
ভীষণ ভাললাগা, ভালবাসার …
আজ ও আমাকে নিয়ে যায় স্মৃতি মাখা দিনে।

শাদা ছোট্ট ছোট্ট ফুল উপচে গেছে
আজও দৃষ্টির ভাঁজে ভাঁজে লেগে আছে,
সেই সব পুরনো দিনের পড়ন্ত বিকেলের মোহনীয় শাদা মায়া!
ছোট ছোট ফুলে মালা গাঁথা
স্বর্ণ লতার স্বভাবে,
আজও দুরন্ত কৈশোর ছুটে বেড়ায়
হরিণ শাবকের মত প্রিয় বকুলতলায়;
মৌসুমী ফুল আষাঢ় শ্রাবণে বৃষ্টির ছোঁয়ায় সিক্ত হয়েছে –
হৃদয়ে সুঘ্রাণ ছড়ায়,
ভালবাসা লুকিয়ে আছে হাতের পরশে
বকুল শাখা বৃষ্টির ছোঁয়ায় জেগে ওঠে।

বৃক্ষে কদম বেড়েছে থোকা থোকা,
সুঘ্রাণে ভিজেছে প্রকৃতি!
স্বপ্নের চৌকাঠ ভেঙে
বহুদিন পর আবার ফুটেছে কেয়া কদম
অনন্ত সবুজ বকুল আর বিশ্বাসের ফুল।

আমার একটা নীল রঙ আকাশ চাই

scalede

পৃথিবীটা অনেক পুরনো আর বয়েসী
না থাক,
আমার একটা নীল আকাশ চাই
এক আকাশ নীল আমার হবে
সব মেঘ খুলে খুলে রেখে দেব
চোখের কাজল করে।

নক্ষত্র রাতের অন্ধকার মুছে দেবে
তখন চাঁদ আমার হবে,
চাঁদ বিহীন রাত কৃত্রিম আলোয় ডুবে যাবে
একদিন দিনের মৃত্যু হবে:
সন্ধ্যার অস্তমিত গোধূলি ঘোমটা খুলবে জোছনা
সবকিছু এলোমেলো,
শীতের পাতা ঝরার নিবিড় কষ্ট !

আমার একটা সখের নীল আকাশ চাই
আকাশ বুকে জেগে উঠবে তারুণ্যের
অবাধ নীল সমুদ্রের সবুজ ঢেউ ;
জলের আঁচড় কেটে কেটে অবাধ স্রোতে ঢেউ ভেঙে
সমুদ্র ক্লান্ত ভীষণ।

তুমি নীল আকাশ চেয়েছিলে

JwwVYjp

তুমি চেয়েছিলে নীল আকাশ
আমি দিতে পারিনি
এ আমার ব‍্যর্থতা সে কথা বলতেই হবে,
কেমন করে দিই বলো
নীল আকাশ আমার ভালবাসা;
নীল শূন্য এক শাদা আকাশ তুলে রেখেছি হৃদয়ে
হৃদয় নিংড়ে সবটুকু নীল দিতে চেয়েছি তোমাকে,
তুমি নেবে ?

এক বিষণ্ন আকাশ আমার থাক
আকাশ থেকে কোনদিন বিষাদের শাদা রং মুছবো না!
আকাশের ঈশান কোণে শ্রাবণের মেঘগুলো জড়ো হয়
মেঘের বুক ফেটে বৃষ্টি ঝরে:
শ্রাবণের বৃষ্টির ঘ্রাণ আলাদা
সীমাহীন দূরত্ব থেকে ও টের পাই আমি,
বৃষ্টির স্পর্শ নিই।
তুমি আমার আকাশের চাঁদ নাও
সূর্য নাও, নক্ষত্র’র নীড়ে ফেরা জ‍্যোৎস্না নাও।

তুমি জান, কৃষ্ণচূড়া আমার ভীষণ প্রিয়,
কৃষ্ণচূড়ার সবটুকু রং আমি তোমায় দিলাম
আমার এক আকাশ তুমি চেয়ো না।

যদি আকাশ হই

MarsJu

এমন কত অপেক্ষার দিন চলে গেছে
ক্ষয়ে গেছে মধ‍্যাহ্ন দুপুর
হারিয়ে গেছে অগুনতি হলুদ বিকেলের রোদ রং
মেঘের ডানায় উড়ে গেছে আবির মেশানো গোধূলি সন্ধে
খুন হয়েছে আমার কবিতা লেখার কোটি কোটি রাত;
সাজানো প্রহর ভেঙেছে স্বপ্ন’র কুঁড়িতেই —
আহা! শুধু কবিতা লেখার রক্তাক্ত ডায়েরিটা আজ ও আমি আগলে রেখেছি বুকে,
আমি শুধু সমুদ্রের দিকে নির্বাক চোখে চেয়ে থেকেছি অনন্ত কাল;
জীবন এক ছায়া শরীর
দৃষ্টি ফেরানো যায় না —
মেঘের ঠোঁটে ক‍্যামন বৃষ্টির ঘ্রাণ লেগে থাকে
আকাশকে নিয়েই ভেবেছি বহুদিন,
তখনো অভিমানী নীল চোখে বৃষ্টি সে ভাবে জমে উঠেনি।

পুরোনো দিন ক‍্যামন গোপন করি
অনিন্দ‍্য সুন্দর পৃথিবী একদিকে
আকাশ অন‍্যদিকে,
আকাশের সাথে আমার অবেচ্ছদ‍্য বন্ধন চিরকাল
যা কখনো ছিঁড়বে না –
যদি আকাশ হই আমি
নীল টুকু ও আমার চাই
নীল শূন্য আকাশ বেমানান:
মেঘ শূন্য আকাশ হতে চাই না
ভাললাগা এক শ্রাবণ বিকেলের বৃষ্টি ভেজা মাধবীলতার স্পর্শ
আমাকে নিয়ে যায় কেবল কবিতার কাছে
আমি তখন অরণ‍্যের পথে ধোঁয়া ধোঁয়া কুয়াশার মায়াজালে কবিতায় নিজেকে বাঁধি।

প্রকৃতির নিবিড় বাতাসে ছড়িয়ে পড়েছে
কদম ফুলের মোহনীয় সুঘ্রাণ।
দুরন্ত কৈশোরের মত ছটফটে উচ্ছ্বাল দূর্ণিবার শিমুল তুলো মেঘের মত
যদি আকাশ হই এই আমি
অবাক হব না একটুও।

নিঃশব্দ সমুদ্র

d52ff09_2

সেই যে এক রাতে
শাদা বৃষ্টি নেমেছিল সমুদ্র বুকে
ফেনায়িত সমুদ্র ধুয়ে গেছে ক‍্যামন
বৃষ্টির শব্দে পাড় ভেঙেছে
ভিজেছে আমার শহর, মৌন মন
বৃষ্টি সমুদ্র শহর এক বিন্দুতে মিলেছে
প্রকৃতির বুকে জলছাপের অন‍্য রকম মুখরতা ;
নিসর্গ জনপদ উঠে এসেছিল পথের ভিড়ে
ক্লান্ত ভোর ডুবেছে সমুদ্র বুকে
তখন সমুদ্র নিঃশব্দ
কেউ বলেনি, পবিত্র ভোর আত্মহুতি দিয়েছে
আজ রোদ ভাঙা বিকেল মুছে গেছে
সাজানো দিনের স্বপ্ন থেকে ——
অতঃপর নৈঃশব্দ্যতার রাত ছিঁড়ে জলপাই রোদ এলো ভালবাসার উঠোনে —-
দুঃসময়ের ডানায় চড়ে আবেগ ভেসে গেছে
তখন ও নিঃশব্দ সমুদ্র।

নিঃশব্দ ধুলি পথে

A2QQ0s

আমি কি বলেছি, তুমি মানে স্বপ্ন’র অলিগলি পথ
কিম্বা রংধনু খামে মোড়ানো নীল আকাশ ছোঁয়ার দৃঢ় শপথ
চলে যাওয়া মানে বিরহের স্রোতে ভেসে যাওয়া কোন বিচ্ছেদ নয়।
আমি শুধু শব্দহীন এক সকাল তুলে নিয়েছি হাতের মুঠোয়,
কবিতার শিরোনাম হয়ে অগ্রহায়ণের সকালের থাকার কথা ছিল
কিন্তু থাকেনি,
নিঃশব্দ ধুলি পথে উড়ন্ত শিমুল তুলো মেঘে মেঘে ছেয়ে গেছে পুরো সন্ধ্যার শহর।
দুরন্ত কৈশোরে এ পথের ধুলোর ভিড়ে পা রেখেছি
আজ ও সে পদচিহ্ন এঁকে কত বৃত্ত ভরাট হয়ে আছে।
এখনও গাছে গাছে শিমুল ফুল রক্তের মত লাল হয়ে ফোটে –
রক্তের নিবিড় স্রোতের আঘাতে আহত বৃষ্টির চোখে জমে উঠেছে
এক সমুদ্র ব‍্যথার জল,
আজও ধুলি পথে মিশে আছে আমার একান্ত গোপন কৈশোর স্বপ্ন;
যে স্বপ্নে বিভোর হয়ে স্নিগ্ধ প্রেমে এঁকেছিলাম মুগ্ধতার এক নীল আকাশ।

পঞ্চাশ পৃষ্ঠা

875_n

অচেনা গল্পের বারান্দায় হাত রাখি
নায়িকার এক চোখে
অনুভূতির মৌলিক ঘ্রাণ দেখি,
অন‍্য চোখে সম্পূর্ণ নগ্ন আকাশ
কচি কলাপাতা মেঘ
পাথর কুচি মন ;
স্বপ্ন দেখে
সুস্থির এক আকাশে পাখি উড়ার স্বপ্ন,
রাত্রির ঠোঁটে ডুবে আছে
এক টুকরো মিষ্টি হাসি
এই সব দিনরাত্রি নিয়েই
আরণ‍্যকের সুখী সংসার —
হঠাৎ কি যে হয় …
গল্পের পঞ্চাশ পৃষ্ঠায় নায়িকার বিরহ শোক –
আরণ্যক পরকিয়ায় মত্ত ,
সংকুচিত নায়িকার বিবেকবোধ :
এই শেষ কথা নয় –
গল্পের করিডোর জুড়ে উঠে এসেছে
গরম ধোঁয়া,
সংসার ভাঙ্গনের সুর!
গজারি বনের শীতল ছায়া থেকে একটি হলুদ পাখির এই মাত্র মৃত্যু হল –
সেই ব‍্যথাহত পাখি আর কেউ নয়
পঞ্চাশ পৃষ্ঠা গল্পের নায়িকা
আরণ্যকের চৈতন্য বোধ ফেরে একটু একটু করে
ঝাপসা হয়ে আসে একটি মানবিক মূখচ্ছবি,
স্তম্ভিত চেতনায় আছড়ে পড়ে
সামুদ্রিক ঢেউ –
চুম্বনমত্ত পাহাড়ের ঘনিষ্ঠতা থেকে নেমে এসেছে
বিরহ জল :
এক এক ফোঁটা জলে সৃষ্ট এক সমুদ্র কাহন –
আর্দ্র শ‍্যাওলার মতো
সমুদ্র জলে ভেসে গেছে
পঞ্চাশ পৃষ্ঠার গল্প …