হাসনাহেনা রানু এর সকল পোস্ট

এক জোড়া অ‍্যালবাট্রাস

প্রতিবারের মতো এবার ঈদ সাবলীল বা খুব স্বাভাবিক হয়নি
একটু ব্যাতিক্রম তো ছিলই,
ঈদের আগের দিন শেষে সন্ধ্যায় মানুষ ঈদের চাঁদ
দেখায় ভীষণ উচ্ছ্বাসিত হয়ে ওঠে –
হবে না ? দীর্ঘ একমাস কঠোর সিয়াম সাধনার পর খুশির বার্তা নিয়ে ঈদ আসে,
ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের ঘরে ঘরে
কত কী আয়োজন চলে
ঈদের চাঁদ দেখা নিয়ে
রোজা ত্রিশটা হয়নি
সারা আকাশ মেঘে ভর্তি ছিল,
ঈদের চাঁদ দেখা যায়নি।
চারিদিকে ঘোষণা হয়ে গেছে কাল ঈদ হবে না
ঈদ হবে বৃহস্পতিবার ৬ তাং
ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা মসজিদে তারাবী নামাজ পড়ে এসেছে
এই সব নিয়েই ভাবছিলাম আমি।

হঠাৎ রাতে ঘোষণা এলো, কাল ঈদ হচ্ছে
চাঁদ দেখা যায়নি;
অথচ ঈদ হচ্ছে মানে কী ?
এসব হচ্ছে কী?
তখন ও আমি এসব নিয়েই ভাবছিলাম।

রাতের আকাশে তখন এক জোড়া ঘুড়ি উড়ছে
ঘুড়ি দু’টো সারা আকাশ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে
আমার দৃষ্টি আটকে আছে ঘুড়িতে
লাল, নীল ঘুড়ি ঘুড়ি দু’টো এক জোড়া পাখি হয়ে নেমে এসেছে বৃক্ষের ডালে।
এখন পাখি দু’টো মাটিতে নেমে এসেছে
একটা পাখি এক পা তুলে দাঁড়িয়ে আছে,
অন্য পাখিটা দু’পায় ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে
এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকা পাখিটা এক পা’য় হাঁটছে
দু’পায় দাঁড়িয়ে থাকা পাখিটা ওর সঙ্গে তাল মিলিয়ে মিলিয়ে একই ভঙ্গিতে হাঁটছে।
পাখি দু’টোর রং সরাসরি সাদা নয়
অফ হোয়াইট সাদা
সে এক মায়া কাড়া রং,
ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে করে

পাখি দু’টোর চোখের মণি কালো
একই রকম মুখ ওদের
আর ঠোঁট দু’টোর কী অসাধারণ মিল,
এমন কী ডানা দু’টোর ও অদ্ভুত ছড়ানো!
পা দু’টোর সৌন্দর্য একই রকম
টুকটুকে লাল;
শুধু ডানা দু’টোয় ধূসর গোধূলির রং মিশে আছে।

আহা! এমন এক জোড়া পাখি যদি থাকত আমার,
ওদের পোষ মানাতাম নানা বাহানায়
কী নাম ওদের? ওহ্!
অ্যালবাট্রস? ভীষণ কাব্যিক নাম তো?
প্রেমিক পাখি, সেই এক পায় দাঁড়িয়ে থাকা পাখিটা
আমার কানে ফিসফিস করে ওদের নাম বলে গেল।
প্রেমিক পাখিটা আরও বলল, ও আমার সঙ্গীনি উইসডম:
আমরা গত পনের বছর এক সঙ্গেই আছি
ক’বছর আমরা সূতো কাটা ঘুড়ি হয়ে উড়েছি আকাশে,
এ জম্মে পাখি হয়েছি;
আমরা প্রেমিক যুগল খুব ভাল আছি!

এক নদীর তিন গল্প

এক নদীর তিন গল্প

কুয়া কাটা আছে, সুন্দর বন আছে,
আছে অপরূপ রূপসার খোলা বুকের সৌন্দর্য…..!
এত কিছু রেখে – সেই তো তুমি,
গিয়েছ আঠার বাকীর তীরে
আমায় নাওনি সঙ্গে, একটু হলেও কষ্ট পেলাম…
কষ্ট মনে – আমার কষ্টে কি যায় – আসে?
মাঠের ওপাশে বৃষ্টি ধোঁয়া
কদম গন্ধ ভাসে শ্রাবণ বাতাসে –
তোমার সঙ্গে আছে মায়াপরী মেয়ে
মেঘের ঝিলিক দু’ চোখে !

আমি ও ছিলাম পাশে,
একটু ভিড় এড়িয়ে,
তুমি তো আর আমায় খোঁজনি –
মায়াপরী তোমায় আগলে রেখেছে –
আঠার বাকীর তীর ছুঁয়ে
এক শান্ত মনি নদী বেড়ে ওঠেছে –
এ নদীর একটা কাহানি আছে।
শান্ত আর মনি নামে এক যুগল প্রেমিকদ্বয় –
এ নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে
আত্মহত্যা করেছে…
আমার চোখের জল এ নদীতে
শিশির হয়ে ঝরছে –।

এ জীবন এখন বন্ধনহীন,
সময় এখন শব্দহীন,
নদীটা কাঁদছে নীরব নিঃশব্দে,
নদীর ভাঙ্গন কাল,
আকাশ শুধু চেয়ে আছে —!

জীবন কি ঠিক এরকম?
নৈঃশব্দের অতলে সব কেমন তলিয়ে যায়…
বৈশাখে না হোক-
শ্রাবণে ডেকো,
স্বপ্নগুলো সাজিয়ে দেব এক এক করে –
বুকে বাজে ব্যাথার সুর অভিমানে –

আঠার বাকীর তীরে –
এক ঝাঁক লাল সারস এসে ভিড়েছে,
এ দৃশ্য অন্য পৃথিবীর প্রতিচ্ছায়া যেন —
আর তুমি –
কি ভীষণ মায়াপরীতে ব্যস্ত -।

আমি বড় বেশি ব্যথা বিলাসী –
কোন্ অরণ্য নীড়ে মন বেঁধেছ
আঠার বাকীর তীরে –
কাশবন অরণ্যে আমি মুগ্ধ হলেম
তোমায় ছেড়ে –
আর ওই যে –
লাল সারসের ঝাঁক
ওরা কি কেউ সঙ্গী বিহীন?
উড়ছে কেমন মিষ্টি রোদের আঁচে —

আমি আর তোমায় নিয়ে ভাবছি না তো,
এখন গাঢ় সবুজ রঙের শ্যাওলায় ভীষণ মুগ্ধ –
শ্যাওলার ঝোঁপে ফুল ফুটেছে –
বেগুনি ফুল হাওয়ায় দোলে –
তৃণের এক বেগুনি সমুদ্র —–!

তুমি এখন মায়াপরীতে গলতে পার
বৃষ্টির নরম ফোঁটার মতো
হঠাৎ আমার নীলাভ মন
ব্যথার বিষে চিন চিন করছে,
তোমার মনে অন্য ফুল ফুটেছে -।

এখন নদীটা বইছে কাশফুলের মতো –
সাদা জল বুকে নিয়ে,
এ জল যে শান্ত, মনি আর আমার কষ্ট ——-
এক নদীর তিন গল্প…
আমি ধীর গতি,
আজ ও আঠার বাকীর তীরে দাঁড়িয়ে…..!

06.07.2019

আবার শ্রাবণ বৃষ্টি

আবার শ্রাবণ বৃষ্টি

আবার এসেছে শ্রাবণ
শ্রাবণ মেঘলা বিকেল ফিরে এসেছে
বৃষ্টি আছে, আমি আছি –
শুধু তুমি নেই পাশে
তুমি কি ভীষণ বৃষ্টি ভালবাসতে –
বৃষ্টির বুনো আদরে
ডুবে যেত আমার ঠোঁট-
ডুবে যেত চোখ ডুবে যেত নাক –
মুখ, কপাল, ডুবে যেতাম আমি
ডুবে যেতাম আমি আমি …

একবার নয়, দু’বার নয়
বৃষ্টির বুনো আদরে
কী ভীষণ ডুবে যেতে তুমি –
তোমার মাথা ডুবে যেত –
বুক ডুবে যেত –
ঠোঁট, চোখ মুখ ডুবে যেত –
দেখে মনে হত
সমুদ্র নেমে দেহের পালক ছুঁয়েছে
অবিরাম বর্ষণে – তুমি অামায় স্পর্শ করতে –
টুপ টাপ বৃষ্টির ফোঁটা হয়ে – নতুন মেঘ,
পুরাতন মেঘে অসময়ে বৃষ্টি হয়ে
তোমায় ভিজিয়ে দিত –
বৃষ্টিরা তোমায় ছুঁয়ে থাকত ভীষণ
তোমাকে
তোমাকেই;

তুমি বৃষ্টির ধারায় আমার ঠোঁটে ভেঁজা স্পর্শ
মাখিয়ে দিতে –
আজ নন্দিত শ্রাবণ বিকেল আছে,
বৃষ্টি আছে
আমি আছি,
শুধু তুমি নেই পাশে
সেই উচ্ছ্বাসিত আবেগ নেই
তোমার স্পর্শরা অার অামায় শিহরিত করবে না –
আগের মত
বৃষ্টি থাকবে
তুমি আর আমায় ছোঁবে না :
কী যে কষ্ট ! উফ্ —–

যদি তুমি জানতে…………..!

রেড সিগনাল

রেড সিগনাল

শহরের পাশে এক গ্রাম ছিল,
গ্রামের মেঠো পথের শেষে
রাস্তার সাথে এক দোতলা বাড়ি ছিল,
বাড়িটার নাম ছিল স্বপ্নপুরী —-!
দোতলার দক্ষিণে এক খোলা জানালা ছিল,
জানালায় এক মেয়ে রোজইই এসে দাঁড়াত
মেয়েটাকে আমার ভীষণ ভাল লেগেছিল,
মেয়েটা লাল পরীর মত দেখতে ছিল-

আমি রাস্তায় গিটার হাতে,
অপলক তাকিয়ে থাকতাম মেয়েটার দিকে,
মেয়েটা আমার মন হরণ করেছে কবে,
নিষ্পলক চোখ,
মায়াবী চাহনী,
ফেলে দিয়ে আমার দু’ চোখের ভাঁজে,
হৃদপিণ্ড আমার কেঁপে কেঁপে ওঠে –
কোন এক অচেনা কণ্ঠস্বর বলে উঠল,
আমাকে দেখো না অমন করে,
আমি যাব যে মরে–!

আমি জানালায় চোখ রেখে
শুধালাম মেয়েটাকে –
কি নাম গো তোমার মেয়ে —
খিলখিল করে হেসে,
হারিয়ে গেল জানালা থেকে….
আর এলো না,
লুকোচুরি ধাঁ- ধাঁ খেলায় –
আমি তখন পাগল প্রায় —
কি করে আমি বোঝায়,
লাল পরীকে ছাড়া বেঁচে থাকায় দায়—-
হৃদয় শূন্য করে ও—— চলে গেছে —-!

বড় বেদনায় গিটার হাতে,
মন গেয়ে ওঠে— —- —–
অন্তর বলে কত কাছে আছ
তুমি,
বাহির বলে কত দূরে চলে গেছ
তুমি————— !

03.07.2019

ভালবেসে কেঁদেছিলো যারা

ভালবেসে কেঁদেছিলো যারা

নিঃসঙ্গ রাত, তুমি নিছিদ্র
অন্ধকারের বুকে কুঁড়ে কুঁড়ে মরো,
আমি জ‍্যোৎস্না শতদল তোমার বিমূর্ত প্রেমে মুগ্ধ …
আমাকে যদি ভালবাসার প্রতিশ্রুতি দাও –
আমার অপরূপ সৌন্দর্যে তুমি জেগে ওঠবে,
সকল অন্ধকারের জট খুলে –
যেমন জেগেছে পৃথিবী !

তোমার প্রেমের চোরা কাঁটা বিঁধেছে
আমার এই বুকে, –
তুমি যত যায় বলো না কেন –
জ‍্যোৎস্না ছাড়া রাত্রি বেমানান;

এক মাত্র প্রেমেই তো …
অনেক অজানা হয়েছে জানা,
কত কত অচেনা হয়েছে চেনা
কত দূর হয়েছে কাছের,
কত পর হয়েছে আপন –
অর্থহীন ভালবাসা কখনোই ঠিকানা খোঁজে না …!

আজ ও রাত্রি হীন প্রতি মুহূর্ত আমার দিনের আলোর মত ফ্যাকাশে,
স্বপ্ন হীন বিবর্ণ লাগে –
ঘুম হীন আমার এ চোখ
প্রতি রাত্রি জেগে জেগে
কেবল তোমায় খোঁজে …
তুমি হয়তো অন্ধকারে ডুবে থেকে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছো।

কিন্তু আমি ?
তুমি ছাড়া শূন্য —–
রাত জ‍্যোৎস্নাকে থামিয়ে দিয়ে বলল, আমি অরণ্য পৃথিবীকে ভালবাসি:
সেই সৃষ্টির শুরু থেকেই।
আমি একা, নিঃসঙ্গ নির্জনে
এই পৃথিবী আমাকে সঙ্গ দেয়,
অরণ্য পৃথিবী আমার প্রিয়:
তুমি চলে যাও –
জ‍্যোৎস্না চোখের জলে বুক ভাসিয়ে চলে গেল!

শিশির: আমার চোখের সবুজ পাতায় তোমার ওষ্ঠের ঘ্রাণ আমার ঘুম ভাঙ্গিয়েছে,
আমার হাতের মুঠোয় তোমার ছোট্ট শরীর উষ্ণতা ছড়িয়েছে –
ঘুমন্ত তুমি;

মুক্তার মত চিকচিকে তোমার মুখ
আমার সারা মন জুড়ে তোমার আবাদ,
উপচে পড় তুমি আমার বুকে –
আমি গোলাপ, তোমার প্রেমে মন পুড়িয়েছি !
অন্তহীন ভালবাসার পথে হেঁটেছি
শিশির সে তুমি: আমাকে ফিরিও না,
এতকাল পরে সত্যি যেন …

শিশির শূন্য হাতে গোলাপ কে ফিরিয়ে দিয়ে বলল,
ইশ্ মেয়ে ! করেছ কি ?
এভাবেই নিজেকে খুন করেছ রক্তের হৃদপিণ্ডে ?

আমি গভীর রাতে, সবুজ পাতা ভরে চিঠি লিখেছি দূর্বা ঘাসের কাছে:
ঘাস আমার অন্তঃপ্রাণ –
তুমি কি দেখনি, আমি ঘাস বুকে ঘুমিয়ে আছি
অনন্ত কাল:
আর কে হবে প্রিয় এমন ?

আমি জানি, সেই কবে মরে গেছে তোমার প্রেমের তাজা গোলাপ:
এখনো যেটুকু সতেজ আছ
আমার জন‍্য ….
তুমি চলে যাও গোলাপ,

আহত বুকে গোলাপ বলল, চলে যাব ?
আমি তোমার জন্য ব্যাবিলনের শূন্য অরণ্যে একমুঠো স্বপ্ন নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি
অনন্ত কাল ;
হে শাশ্বত চির সুন্দর শিশির !
তোমার সকল স্তব্ধতা ভেঙ্গে
একবার হাতটা বাড়িয়ে দাও,
আমি ই –
আমি তোমার ভালবাসা হব
চিরদিন
চিরকালের,
গোলাপের আহ্বানে সাড়া মিলল না শিশিরের –
শূন্য মনে কাঁদতে কাঁদতেই গোলাপ চলে গেল !

আকাশ তোমার অপরূপ মুগ্ধতা,
আগলে রাখি চিরকাল বুকে,
তিলে তিলে তোমার এক সমুদ্র দুঃখ কষ্ট
ধুয়ে নিয়েছি আমার জলে:
তোমার আকাশের মেঘ কষ্ট দহনে বৃষ্টি হয়ে ঝরে
আমার বুকে –
আমি উত্তাল সমুদ্র তোমার বুকে,

সমুদ্র: নীল আকাশ ছোঁয়ার ব‍্যাকুলতা নিয়ে
হাত বাড়িয়ে দিল আকাশের কাছে,
নক্ষত্রের কান্নার শব্দের মত একটি একটি করে হলুদ দুঃখ দুপুর খসে গেল,
কত স্বপ্ন ডুবেছে সমুদ্র গভীরে;
কত মেঘলা বিকেল হারিয়ে গেছে
ওই নীল আকাশের মেঘের ভাঁজে,

সোনার কাঠি …
রুপোর কাঠি কই,
ও আকাশ …………………
নিশিরাতে তোমায় বুকে নিয়ে, একলা জেগে রই !

আকাশ তোমার মনটা দেবে ?
তোমায় আমি ভালবাসি ..
তোমায় আমি ভাসিয়ে নেব সাত সমুদ্র পাড়ে –
ঋদ্ধ ঠোঁটে আকাশ বলল,
আমি ভালবাসি….. ভালবাসি মৃত্তিকা মাটিকে।
মাটিবর্তী দিন ছাড়া আমার একটি মুহূর্ত কাটে না
ক্ষমা করো তুমি আমাকে,

বিরহ ব‍্যথায়, এক বুক হাহাকার নিয়ে
কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল নীল সমুদ্র …!

অবাক অনুরাগ

অবাক অনুরাগ

একমুঠো মেঘ
এক গুচ্ছ নক্ষত্র ফুল,
এক শ্রাবণ বিকেল ——
তোমার পাঠানো প্রজাপতি চুমু:
সব আমি খেয়ে বসে আছি ——-
রূপসার পাড়ে ,
চোখের তারায় নীল আকাশ ভাসে —
রাত্রিটা এখন গোলাপ বাগানে..
আমি একটি গোলাপ ও স্পর্শ করতে পারিনা,
হয়তো অভিমান ..
তোমার জন্য ;
কথা ছিল একদিন তুমি আমায় গোলাপ দেবে —–
জানিনা, সেই একদিন কখনো আসবে কিনা —
তুমি একদিন এ পথেই আসবে,
তোমার শেষ গন্তব্য আমি …
তুমি ভুল করে হলেও একবার এ পথে আসবে ,
এ আমার দৃঢ় বিশ্বাস!
তোমার দু’হাতে কিছু গোলাপ থাকবে,
তুমি নীল গোলাপ নিয়ে এসো
আমার নীল গোলাপ চাই —–
নীল গোলাপ আমার খুব প্রিয়!
ঘুমন্ত সন্ধ্যা
ফুটন্ত সকাল,
উদ্ভ্রান্ত রাত্রির মায়া সব আমি কবিতায় লিখে বসে আছি ——-

তোমার সাজানো বিকেলের স্বপ্ন,
তোমার মায়াময় প্রজাপতি ভালবাসার আবেগ —
নিবিড় সান্নিধ্য,
তোমার ব‍্যাকুলতা
তোমার মোহনীয় মুগ্ধ দৃষ্টি সব সব আমি খেয়ে বসে আছি!
তুমি যদি না আসো …
আমার স্বপ্ন ভেঙ্গে খান খান হবে
সবটুকু অভিমান এক আকাশ নীল হয়ে যাবে..!

11.05.2019

যে পথে ফেরার গল্প

যে পথে ফেরার গল্প

তুমি যে পথ ধরে হেঁটে যাও
আমি সে পথের ধুলো মাখি,
তুমি যে বিকেলের বুকে বসে গল্প করো
আমি সে বিকেলের প্রকৃতি ছুঁয়ে দেখি:

তুমি যে সন্ধ্যার মৌনতায় ডুবে থাক কবিতার খাতায়,
আমি সে সন্ধ্যার আবিরতা মেখে কবিতায় হারায় ;
তুমি যে মুগ্ধতায়, বিমুগ্ধ দৃষ্টি রাখো রাতের
অনাবিল জোছনায়,
আমি সে মোম জোছনার আলোয় নিজেকে ভেঁজায় —-!

09.05.2019

প্রতীক্ষা

প্রতীক্ষা

আঁধারে যখন ভয়, এসো
কবিতার সাথে সারাদিন হেঁটে হেঁটে,
গুচ্ছ গুচ্ছ শব্দের পাশাপাশি
জয় করি গোলাপের সুগন্ধা!

তোমার জন্য আদিবস সঞ্চয়
ভালোবাসার নীল যন্ত্রণা:
নীলিময় চেয়ে আরও নীল
বিশাল মরু ব্যাপ্ত হবে,
অরাত্রি ঝরে তবু হবে না তার ক্ষয়!

রাত্রিতো শুধু রক্তের আয়োজন,
পিপাসা হায়রে! পিপাসার মতো নদী
এমন অমোর্ঘ অসহ্য আহবান;
গোলাপের চেয়ে আরও লাল এ প্লাবন!

গোলাপ যে আমার এ হৃদয়
একটি গভীর গন্ধের প্রিয় নীড়………..!

09.05.2019

এক মন

এক মন

তোমার আকাশে আমি রাত জাগা
শুকতারা হয়ে ফুটে আছি
শত বছর ধরে,
কখনও শঙ্খচিলের বেশে
ডানা মেলে উড়ে গেছি
দূরের দেশে,
আমি আকাশের বুক থেকে
তুলে নিতে পারি
চিল মেঘ ডানার এক মুঠো সোনালি
স্বপ্ন কুসুম ;
আমি খসাতে পারি নীল আঁচল
জানি খুব কাছেই আছো তুমি
তবু মনে হয় কত দূরের !
চাপাবনে জ্যোৎস্না হয়ে ফুটেছো
রজনীগন্ধার ছড়ায় ছড়ায়,

আকাশ, সমুদ্র..
চাঁদের পাহাড় মেঘতিকা নীলিমার স্তরে
বাঁধা পড়ে আছে
যেনবা সীমাহীন নীল কষ্টের ঢেউ ক্রমাগত
দু’ হাতে ভাঙ্গছে,
এক কষ্ট সমুদ্র সাঁতরিয়ে আমি বিষাদের
পৃথিবী দেব পাড়ি,
আমি সাদা বরফের স্রোত ভাঙ্গছি দ্রুত ;

তুমি আকাশ
নোনা সমুদ্র,
পৃথিবী পড়ছ আমার
চোখের তারায় ——
জান তো, পরশ পাথর ও গলতে চাই
ভালবাসার উত্তাপে,
কাল ছিল সাদা পূর্ণিমা রাত
আমার চোখ ভিজেছিল ধূসর মেঘের
সাদা বৃষ্টিতে,
দৃষ্টি ছিল ঝাপসা কাঁপছিল থির থির !
তুমি মিছেই গোলাপ খোঁজ আমার মুখে
জান তো, কষ্টে জর্জরিত হয়ে এক ফালি
দুঃখরা আজ ও বেঁচে আছে
আমার চোখে —
গোলাপ কাঁটা হয়ে,
এ চোখে আকাশ ঘুমায়,
আর কত রাত জেগে জেগে চাঁদ নীল আকাশকে পাহারা দেবে?
তোমার আকাশে আমি
প্রেম সমুদ্র ভাসাব,
তুমি শ্রাবণ মেঘের জল ধারা হয়েছ
আমার চোখে ।
আমি চেয়েছিলাম বৃষ্টি রাতের
একটু ছোঁয়া,
সুখের নায়ে ভাসব বলে –
তোমার হাতের ছায়ায় ঘেরা
একটু মায়া :
ওদু’ টি হাত দাও না বাড়িয়ে
আমার তরে,
আমি হৃদ মাঝারে বন্ধু হব তোমার
শতবার ;
ছিঁড়ে শতবাঁধা,
চেয়েছি ব্যাকুল চোখের মায়ায় এক
পলক তোমায় দেখতে—
হায় রে !
আমার দিন কাটে না
রাত কাটে না…
ভাসছি আমি স্রোতের বিপরীতে
তুমি তৃষিত নিঃশ্বাসে, প্রশ্বাসের এক তৃষ্ণার্ত
নিবিড় মেঘ খণ্ড,
কখনও শ্রাবণ মেঘে বৃষ্টি হয়ে ঝরো
কখনও নীল সমুদ্র হয়েই
জুড়াও আমার মন,
অশান্ত ঢেউ ভাঙ্গো তুমি আমার
সমুদ্র চোখে,
তুমি আছ আমার নিপাট দেহ পাঠের
সারা মন জুড়ে ———–
এক মন !

08.05.2019

আয়না কাহন

আয়না কাহন

আয়নাতে আর মুখ দেখব না
এ কথা বললে কি হয় ?
মুখতো দেখতেই হয় প্রতিদিন —
চেহারা ভাল হোক
মন্দ হোক
যেটাই হোক …
নিজেকে এক পলক দেখার জন্য
সবাই আয়নার সামনে দাঁড়ায়,

প্রথম আয়নার সৃষ্টি
প্রকৃতিতে –
স্বচ্ছ জলের ধারায়
তখনো কৃত্রিম আয়নার সৃষ্টি হয়নি,
শান্ত স্বচ্ছ জলের ধারায়
মানুষই প্রথম তার নিজের ছবি
আবিষ্কার করে..
এ দৃশ্যপট অবশ্য আদি কালের
সৃষ্টি রহস্যের কথা ;
স্বচ্ছ জলে,
এক খন্ড মেঘ ছায়া ফেলে
মেঘের কী ভীষণ মন খারাপ হয় !
কালো মুখ দেখে,
মেঘ সরে যায় – কালো মুখ নিয়ে
সূর্য আড়াল থেকে চুপি চুপি নিজেকে দেখে
উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠে।

এরপর চাঁদ মুগ্ধ চোখে নিজের ছবি দেখে,
রোদ নিজেকে দেখে চিকচিকে জলে।

সন্ধ্যার অস্তাকাশ থেকে বৃষ্টির ফোঁটা এলো
কিছু রং নিয়ে,
কিন্তু কোন কাজ হল না
বৃষ্টি বেহতর নিজেকে ঘন কুয়াশায় সাজিয়ে এল
নাম খুইয়ে,
অনামে..
কত কত অপেক্ষা
সকাল,
দুপুর —
রাত্রে :
নিজের চেহারা দেখবে জলে
বোকা বৃষ্টি ! একবারও ভাবিনি
জল আর বৃষ্টি এক মন,
এক দেহ,
এক প্রাণ,
এক আত্মায় একাকার ;

অনেক সাধনা করে জ্যোৎস্না এলো-
স্বচ্ছ জলে,
গভীর রাতে নিজেকে দেখে মাতাল হল –
এরপর মানুষ আবিষ্কার করল বিশ্ব কবি রবি ঠাকুরের সেই বিখ্যাত উক্তিটি —
“জল পড়ে,
পাতা নড়ে—”
তারপর স্বচ্ছ জলের গভীরে নিজেকেই দেখতে পেল ..!

কেন,সেই যে নার্সিসাসের গল্প তো প্রায়
সবারই জানা আছে –
পানিতে নিজের চেহারা দেখে
তার প্রেমে পড়ে যান ভদ্র লোক
আমি দেখতে ঠিক এতটা সুন্দর ?
প্রায় ২০০ বছর আগে জার্মানিতে
প্রথম আয়না তৈরির রহস্য শুরু হয়েছিল,
আবার অনেকে ধারণা করেন,
তারও অনেক আগে আয়নার প্রচলন শুরু
হয়েছে,
সত্য,
মিথ্যা যাই হোক —-
আয়না ছাড়া কি এক মুহুর্ত চলে ?
নাকি, আয়না ছাড়া কোন জীবন পূর্ণতা পায় ………..!!

05.05.2019

শব্দহীন নতুন ভোর

শব্দহীন নতুন ভোর

ব্যথার কাজল চোখে, শ্রাবণ মেঘের বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে —
আমি ও যে হতে পারি
নতুন কোন জীবনের গল্প,
নতুন কবিতায় …
শব্দহীন নতুন ভোরে :

বসন্তের প্রথম সূর্যোদয়ে
রোমান্টিক উপন্যাসের পাতায় পাতায় হারাতে পারি নিজেকে !

জীবনের দু’ফোটা দুঃখ ফেটে
যদি কোন কবিতার ফুল ফোঁটে —
সে ফুল বিরহ ছুঁয়ে যাবে ই যাবে !

আমি চাই না রাত্রির আগেই অন্ধকার নেমে আসুক —
মাঝ রাতে যদি ঘোর অন্ধকারে
একটু একটু করে ডুবতে থাকি,
তবু জানবো রাত্রির গভীর বুকে এখন আছি ।

চন্দ্র বীথির হাতছানিতে যদি রাত্রি আমায় কাছে টানে …
আমি তখন নগ্ন পৃথিবীর খোলা চোখে
তৃষ্ণার্ত রোদের আঁচলে হারাবো।

সময়ের আগেই আমি কষ্টের সমুদ্রে হাবুডুবু খেতে চাইনা
দু’চোখে আমার কাঙ্ক্ষিত ভোর :
ঘুমিয়ে আছে সকাল ভাঙ্গার দূর্বার অপেক্ষা নিয়ে ,
একদিন জাগবেই আমার এ চোখে –
সাফল্যের কাঙ্ক্ষিত একমুঠো সোনালী রৌদ্দুর ;

বুকের ডিভানে সীমাহীন ব‍্যথা গোপন করে ,
আমিও যে হতে পারি —
যন্ত্রণা বিবশ এক বিরহ কবিতা !

04.05.2019

বৃত্তের বাইরে

বৃত্তের বাইরে

তুমি কবিতার মেয়ে
নীলাক্ষী,
নাকি নীলাঞ্জনা?
তোমার ও নীল চোখে শব্দরা
বড় বেশি তোলপাড় করে
মেয়ে তুমি জান না !
তুমি ছোট গল্পের নায়িকা
অহনা …
নাকি অনামিকা ?
তোমার ওই ভেঁজা গোলাপ ঠোঁটে, শিশির শব্দরা
টুপ টাপ আছড়ে পড়ে,
মেয়ে তুমি বোঝ না..
তুমি হতে পার উপন্যাসের নায়িকা
অদ্বিতীয়া,
অথবা অন্যন্যা ..
তবে,
আমাদের এই প্রেম—
ছোট গল্প, কবিতা
ভেব না…
আমাদের ভালবাসার পরিধি
সৃষ্টির রহস্যে ঘেরা
রহস্যময় –
সৃজনশীল উপন্যাস……!

02.05.2019

নিয়ম ভাঙার খেলায়

নিয়ম ভাঙার খেলায়

শ্রমিক ও তার শ্রমের ব্যাপারে সর্ব কালের সর্ব শ্রেষ্ঠ মানব … রাসূল (সা) বলেছেন, “তোমরা শ্রমিকের পারিশ্রমিক তার শরীরের ঘাম শুকানোর পূর্বেই দিয়ে দাও !”
এ কথা আমার বাবাও বলতেন, এবং পালন করতেন:
আজ আর বাবা বেঁচে নেই
কিন্তু কথাটা আজও মনে আছে।

আমি মেহনতি মানুষ,কেটে খাওয়া একদল অমানুষের ভীড়ের একজন
আমি শ্রমিক,
আমার কী কোন মূল্য আছে ?এই রাষ্ট্র, এই সমাজে …
এই বাংলার মাটিতে আমি সোনার ফসল ফলায়
আমি কৃষক ;
আকাশ ছোঁয়া সুবিশাল অট্টালিকা
এই আমার দু’হাতেই নির্মিত হয়েছে
আমি নির্মাণ শ্রমিক,
রোদ -আগুন তাপ,জল ঝড়- বৃষ্টি, জরা খরায়
দিনের পর দিন সীমাহীন অক্লান্ত পরিশ্রম করেই
আমি বা আমরা এই সব অট্টালিকা নির্মাণ করেছি !
অনন্ত বেদনার নীল দরিয়ায় আমরা কেবলই
হাবুডুবু খাচ্ছি —
চির বঞ্চিতের হাহাকার গঞ্জনায় ;
নিজেকে ভুলে গেছি কে আমি ?
একটু ভাল থাকার ——–ন‍্যুনতম অধিকার টুকুও আমাদের নেই,
একমুঠো চাওয়া- পাওয়ার হিসেবের খাতা বরাবরই শূন্য থেকে যায় —–
দ্বার্ধহীন কণ্ঠ চিৎকার করে করে এক সময় নীরব হয়ে যায়
ব‍্যর্থ চাওয়া শুধু চকিতে আঁধারে মিলায়!

দিনের পর দিন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে নাম মাত্র বেতনে
দিন – রাত পরিশ্রম করে পোশাক শিল্পে আমরা যে অবদান রাখছি,
আনছি বৈদেশিক মুদ্রা..
অথচ আমরা ন‍্যুনতম অধিকার টুকুও পাই না।
রানা প্লাজায়, মিল কল কারখানায় আগুনে পুড়ে মরছি আগে আমরা ।
এসব দেখার, শোনার কেউ নেই
এ যেন মালিক শ্রমিকের মধ্যে এক নীরব প্রহসন!
চিরকাল একই নিয়ম চলে আসছে….
আমাদের আবার দুঃখ কি ? দুঃস্বপ্ন দুখীর বনে ;
নিয়ম ভাঙার খেলায়,নিয়ম ভাঙ্গছে যুগ যুগ ধরে
আমাদের জীবন গাঁথা আছে ব‍্যর্থতার জালে।

ওরে পাগল মন ! ভেবে দেখ
এই যে ধরার চরায়
কত মহাজন ভেড়াই তরী ,
রঙ তামাশার রঙিন মেলায় :
আমরা কুলি, মজুর, কৃষক, শ্রমিক খেটে খাওয়া মানুষ
মাঠ – ঘাটে, আগুন রৌদ্র তাপে পুড়ে পুড়ে
চৈত্রের খরায় গনগনে আগুন রৌদ্র নাচে পিঠে ..
তবু পাইনা আমরা ন‍্যার্য মূল্য ফসলের।
ফসল মজুদ করে রাখে মহাজন, আমরা মানুষ ছিলাম কবে ?
এই কী আমাদের নিয়তি ?
হায় ! ইচ্ছে করে ——
লাথি মেরে ভাঙরে প্রাচীর মায়ায় গড়া মিথ‍্যের আধি’র
মত্ত জুয়া খেলায়;
আমারও আছে ঘর– সংসার, ছেলে- পুলে, সাধ আহ্লাদ ইচ্ছে
ক‍্যামনে বাঁচি আমি ওদের নিয়ে —-
আমরা যে ভাই থাকি মহাজনের ভয়ে ….
ওরা মালিক পক্ষ
আমরা শ্রমিক;
আর কত কাল চলবে এমন নীতি !
যুগে যুগে আমাদের শোষণ করেছে ওরা
আমরা যে হায় ! অধিকার হারা,
কে আমাদের ধরবে জড়ায়, বুকের ভিটায় —-
শীতল ছায়ায় পড়ব লুটায় ..
সে যে আমার দেশের মাটি—- আমাদেরই সবুজ বাংলার এই মাটিই চির খাঁটি!
এ মাটি তার বুক থেকে আমাদের দেই না ফেলে,

মহান মে দিবসের এই একটা দিনে
মেহনতি মানুষেরা গর্জে ওঠো বারবার ;
আজ যে আমাদের অধিকার আদায়ের দিন।

হে মহাজন ,তোকেই বলি শোন
এই পৃথিবী শুধুই তোদের ——-
আমরা কিছু না ?
কেহ নেইরে আমাদের আপন জন …
নিয়ম গড়া অনেক সহজ
এই ধরার চরায়
ভাঙার পরে গড়ার আদেশ, সে খেলাতেই তোরা জিতিস —
দিন মজুরের প্রাপ‍্যটুকুও ছিন্ন করিস ?
ছিঃ মহাজন ছিঃ !
একদিন আমরা সকল মজুর এক হয়ে ঠিক ঠিক গর্জে উঠবো —–
তোদের এই নিয়ম ভাঙার খেলায়
সেদিন কী পারবি তোরা নিজেদের বাঁচাতে ?
আর একটা যুদ্ধ হবে
নিয়ম ভাঙার খেলায় !

01.05.2019

মায়ার বাঁধন

মায়ার বাঁধন

বাঁধো আমাকে তুমি মায়ার জালে
অন্তঃস্থলে তোল তুমুল ঝড়,
আমার দু’পায়ে বেঁধে দাও অনাগত পথ
আমি হাঁটব সেই পথ ধরে অনন্ত কাল —-
তুমি ও রবে সাথে,
আমরা উদ্যান কিম্বা বিশাল হাইওয়ে ধরে
একটু বেড়িয়ে আসতে পারি,
অথবা যেতে পারি সমুদ্রের কাছাকাছি —
আমরা শুনতে পারি সমুদ্রের গর্জন,
ঢেউ এর তালে নিজেদের
হারাতে পারি ;
আমরা সমুদ্রের বুকে বেলাভূমিতে দাঁড়িয়ে
বলতে পারি —-
জীবনের না বলা কত কথা,
আমরা সমুদ্র স্নানে নামতে পারি :

আমরা দু’জন কে ভাগ করতে পারি —
আধাআধি ;
আমরা দু’জনার চেতনায় ঘন হয়ে
থাকতে পারি,
আজীবন অবধি —–
ভালবাসার বুনন যদি হয় নিখাঁদ
তবে বাঁধো আমাকে,
ভালবাসার পূর্ণ অধিকারে মায়ার বাঁধনে — ।

30.04.2019

এক গুচ্ছ কবিতা

এক গুচ্ছ কবিতা

এক.
বহুদিন পর আবেগের আতিশয‍্যায়
মনের ঘরে কেউ দিয়েছে ডাক —
শূন্য হৃদয় পড়ে আছে চোরাবালি চোরাকাঁটায়
ব‍্যথাটুকু মুছে যাক,
বালি থেকে সরে যাক ঢেউ
কোথাও আর নেই কেউ
তবু নামটুকু শুধু লেখা থাক —-

দুই.
“ভালবাসি আমি তোমাকে
ভালবাসি আমি তোমার স্নিগ্ধ হাসিকে —
ভালবাসি আমি তোমার মুগ্ধতাকে,
ভালবাসি আমি তোমার চলন ভঙ্গিকে
ভালবাসি আমি তোমার সমস্ত সত্ত্বাকে।”

তিন.
“শুধু দূর থেকে দেখা -শুধু ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাওয়া
শুধু দূরে যেতে যেতে কেঁদে চাওয়া
শুধু নব দূরাশা আগে চলে যায়
পিছে ফেলে যায় মিশে আশা
মায়া আর মমতা।”

চার.
প্রজাপতি মন ছুঁয়ে যায়
নীড়ে ফেরা বসন্ত রৌদ্দুর
সাথে নিয়ে অলস দুপুর
অচেনা পথের নির্জনতা ভেঙে
যাব আমি স্বপ্ন পুর,
যেতে যেতে থামব একটু
শেষ বিকেলের ঠোঁটে মিশে থাকা
সবুজ মায়ায়
এ পথ যেন আর শেষ না হয় !

পাঁচ.
কেউ কেউ এভাবেই চলে যায়
বুকে দিয়ে ব‍্যথা
বুকে ঢেলে আগুন,
ব‍্যথার আগুন
কেউ চলে যাবার জন্য ও আসে
কেউ আবার চলে ও যায়!

ছয়.
একা ছিলাম, ভালই ছিলাম
তুমি পাশে এসে দাঁড়ালে
বন্ধু হলে,
ক্ষণিকের তরে
তুমি চলে গেলে
আমাকে একা করে,
ছোট্ট একটা জীবনে
আবার সেই একাই হলাম।

সাত.
এ বসন্ত উঠোনে নীল ছায়া খেলা করে
অসময়ে এসেছে
বসন্ত দিন,
বনভূমি ঝরে যায় কঠিন দীর্ঘশ্বাসে …
ঝরে পড়ে বৃক্ষ লতা কষ্টের শব্দ ভেঙ্গে
জ‍্যোৎস্নার শিওরে ভিজেছে মন,
ঝরে পড়া গোলাপ কষ্টরা
ভেসে গেছে সময়ের স্রোতে –
মেঘ অরণ্যে ঘাস ফড়িং উড়ে,
কত কত বসন্ত দিন
ভিজে গেছে রিমঝিম বৃষ্টির শব্দে —
একদিন আমি ও চলে যাব শ্রাবণ মেঘের আড়ালে!

আট.
সুখ আর দুঃখ
একই বৃন্তে ফোঁটা
পাশাপাশি দু’টো ফুল,
সুখ পুরুষ
দুঃখটা মেয়ে হয়
সবাই সুখ পোষে মনে
দুঃখের দিকে কেউ হাত বাড়াই না —
তবু রাত্রির নাভিমূলে ঝুলে থাকা
দুঃখবতী চাঁদটা মেয়ে হয় —
আর মায়াবতী রাত
দুঃখবতী মেয়েটার সঙ্গী হয় !
সূর্যটা তখন পুরুষ …
সুখের নেশায়,
দুঃখবতী মেয়েটা হাত বাড়াই না
পুড়ে যাওয়ার ভয়ে …….

নয়.
তারায় তারায় গ্রহণ লাগে না কোন
কালে —
কালে ভদ্রে,
দু’ফোটা দুঃখ চাষ করেছি
গোপনে
গেল আষাঢ়ে দুঃখ পুষেছি
মনে –
একা কেঁদেছি এই
শ্রাবণে ———

দশ.
ও প্রিয়,
তুমি সূর্য
ওরা হয়
সব তারা,
আকাশে উদয় হলে
তুমি
ম্লান হয় ওরা,
তোমাকেই দিলেম
মেঘ অরণ্যে বিন্দু বিন্দু
শিশির ভালবাসা………

29.04.2019