হাসনাহেনা রানু এর সকল পোস্ট

অচেনা এক শহরে

অচেনা এক শহরে

নিঃসঙ্গ মধ্যরাতের নির্জনতা ভেঙ্গে অচেনা এক শহরের বুকে —-
হেঁটে হেঁটে
আমি মুঠো ভরে শব্দ কুড়োয়,
একটি কবিতার জন্য :
শব্দ ভাঙি
শূন্য হাতে,
প্রেমময় আবেগে ক্লান্ত পথিক হয়ে
এখন আমি তোমার শহরে —
পা বাড়িয়েছি,
শূন্য মনে ;
কতদিন তোমার হৃদাকাশে শুকতারা হয়েছি,
ভালবাসার অনিমেষ চাওয়া পাওয়ার হিসেব থেকে
সবুজ পাতার মত টুপ করে খসে পড়ব হয়তো —-
ব্যর্থতার অন্ধকারে ডুবতে ডুবতে তলিয়ে যাব
একদিন সীমাহীন দূরত্বে ..!
কেয়া কাঁটার ফাঁকে ফাঁকে ফোটে কত ফুল —-
হারিয়ে গেছে অগুনতি উদাস দুপুর,
জোনাকি পোকার ভীড়ে ক্ষীণ হয়েছে এক জীবন,
সে জীবনে কি কোন অপেক্ষা নেই ?

তোমার ভালবাসা কেন জানি
মরুময় আবেগে বহু দূরে নিয়ে যাই আমাকে —–
দিন শেষে ক্ষীণ আলোয় স্মৃতিময় পিছুটান
অনিমেষ হাহাকার আমাকে কাঁদায় ভীষণ …
অথচ তুমি স্বপ্নস্নানে মগ্ন ততখানি ;
কত দূরে তোমার স্বপ্নীল বাতায়ন
অবরুদ্ধ জীবনের তথাকথিত অসমাপ্ত গল্পের নায়ক তুমি ;
লেবু পাতার সবুজতার মত ছুঁয়ে থাক উর্বর প্রকৃতি —-
তোমার জীবনে অসমাপ্ত এক গল্প আমি,
বলেছি, একদিন হারাবো গভীর শূন্যতার শূন্য নীড়ে,
তখন শুকতারা হয়ে যাব আকাশ নীলে
তুমি তখন আমায় ছুঁতে পারবে না,
আর কোন কথা ও বলতে পারবে না…

তুমি কি ভেবেছিলে —-
আমি সারা জীবন থাকব ?
পথ ভুলে যদি চলে যাই অন্য কোথাও …
প্রথমেই নিঃসঙ্গতাকে সঙ্গী করব,
তারপর: কবিতায় এ মন বাঁধবো ……………

28.04.2019

অবাক অনুরাগ

অবাক অনুরাগ

একমুঠো মেঘ
এক গুচ্ছ নক্ষত্র ফুল,
এক শ্রাবণ বিকেল ——
তোমার পাঠানো প্রজাপতি চুমু:
সব আমি খেয়ে বসে আছি ——-
রূপসার পাড়ে,
চোখের তারায় নীল আকাশ ভাসে —
রাত্রিটা এখন গোলাপ বাগানে …
আমি একটি গোলাপ ও স্পর্শ করতে পারিনা,
হয়তো অভিমান …
তোমার জন্য ;
কথা ছিল একদিন তুমি আমায় গোলাপ দেবে —–
জানিনা, সেই একদিন কখনো আসবে কিনা —
তুমি একদিন এ পথেই আসবে,
তোমার শেষ গন্তব্য আমি …
তুমি ভুল করে হলেও একবার এ পথে আসবে,
এ আমার দৃঢ় বিশ্বাস!

তোমার দু’হাতে কিছু গোলাপ থাকবে,
তুমি নীল গোলাপ নিয়ে এসো
আমার নীল গোলাপ চাই —–
নীল গোলাপ আমার খুব প্রিয়!
ঘুমন্ত সন্ধ্যা
ফুটন্ত সকাল,
উদ্ভ্রান্ত রাত্রির মায়া সব আমি কবিতায় লিখে বসে আছি ——-

তোমার সাজানো বিকেলের স্বপ্ন,
তোমার মায়াময় প্রজাপতি ভালবাসার আবেগ —
নিবিড় সান্নিধ্য,
তোমার ব‍্যাকুলতা
তোমার মোহনীয় মুগ্ধ দৃষ্টি সব সব আমি খেয়ে বসে আছি!

তুমি যদি না আসো …
আমার স্বপ্ন ভেঙ্গে খান খান হবে
সবটুকু অভিমান এক আকাশ নীল হয়ে যাবে..!

27.04.2019

স্বপ্ন সিঁড়ির শূন্যতায়

স্বপ্ন সিঁড়ির শূন্যতায়

কতদিন তোমাকে বলেছি, আকাশ তোমার বুকের ডিভানে
একটা স্বপ্ন আঁকো ——–
দুঃখের নির্যাস দিয়ে,
সে স্বপ্নের হৃদপিণ্ড ছুঁয়ে থাকব
আমি——
আমি …
শুধুই আমি ——!

কেন না আমিই ——–আমি তো এক দুঃখ মানবী
সুখের নির্যাস ও থাকবে দুঃখের বিপরীতে—-
ওটুকু কেবল তোমার ;
আমি চাইনা তুমি ও ঠিক আমার মতো, সারাক্ষণ ব‍্যথার নির্যাস ছুঁয়ে থাক …
আমি তোমাকে বড় বেশি ভালবাসি ————
আমি জানি, তুমি বলবে
যদি তুমি আমাকেই ভালবাসো,
তাহলে প্রতিনিয়ত কেন বলছ আমি একা.
আমি তো তোমার সঙ্গেই আছি —-
তূমি বোঝ না ?
হ‍্যা, বিশ্বাস করো আমি সবই বুঝি —
তবু কেন যেন ভীষণ ভয় হয়
তোমাকে হারাবার ভয় —-
সে জন্যই তোমাকে বলেছি,
একটা স্বপ্ন আঁকো …
স্বপ্নের সিঁড়ির ডিভানে গভীর শূন্যতায় আমি দাঁড়িয়ে থাকবো …
অনন্ত কাল, তোমার ফেরার অপেক্ষায়,
যদি তুমি কখনো আমার পথে পা রাখো …. !!

26.04.2019

মধ‍্য রাতে কবিতার খাতায়

মধ‍্য রাতে কবিতার খাতায়

এক কাপ ধোঁয়া ওঠা কফি
রাত্রি, নদী, পাহাড়, ফুল, পাখি নিয়ে
কিছু রোমান্টিক প্রেমের কবিতা লিখি!

গোধূলি বেলায় স্মৃতির অ‍্যালবামে
নৈঋত দহনে হাতড়ে ফিরি,
হারিয়ে যাওয়া সেই দিনগুলি,
নৈঃশব্দে দেয় হামাগুড়ি ———

নিঃশ্বাস ভাঙ্গে কঠিন দীর্ঘ শ্বাসের দৌরাত্ম্য
দুঃখের ছাই চাপা আগুনে থাকে ব‍্যথা !
পতঙ্গ কুল আগুনে পুড়ে মরবে জেনেও
উল্লাস করে খুশি মনে,
আমি পুড়িব একাকী কোন অনলে ?

এক কাপ কড়া লিকারে গরম চা
এলোমেলো লেখা কিছু কবিতা:
দু’চোখের দৃষ্টি ছুঁয়ে আছ
স্বপ্নের বিছানায় তুমি অবিন্যস্ত ———-

তুমি আছ কঠিন সুখে বেশ
যদি হয় হোক ‘গল্প’
শেষ !

24.04.2019

প্রিয়তম হে

প্রিয়তম হে … হাত ধরো,
আমাকে নিয়ে চলো আকাশ সান্ধ্য পথে,
যেখানে রাশি রাশি নীল বিছানো থাকে,
আমি আঁচল ভরে মুঠো মুঠো নীল কুড়োব,
প্রিয়তম হে
এবার ফাগুন এলে
আমাকে বসন্ত আর ভালবাসা দিবসের কাছে নিয়ে যেও,
এবার বসন্তে ওরা হাত ধরাধরি করেই আসবে,
আর হাত খোঁপাটায় গুজে দিও আমার প্রিয়,
১০৮ টি নীল গোলাপ থেকে
একটি গোলাপ :

প্রিয়তম হে
শ্রাবণ আসতে কত দেরি –
আমাকে কালো মেঘের খোঁপায় ভাসিয়ে দিও,
আসছে আষাঢ়ে কদম ফোঁটার আয়োজনে ঝরবো,
প্রথম কদমটা তুমিই নিও –
আর না হলে কদম ফোঁটা বৃথা যাবে ;

প্রিয়তম হে —
তোমার জন্য আর কত অপেক্ষা …
তোমায় ছুঁয়ে চলছে ব্যস্ত শহর,
আমার যে দিন কাটে না
একলা লাগে ভারী তুমি ছাড়া …..!

24.04.2019

বেল কুঁড়ি স্বপ্ন

বেল কুঁড়ি স্বপ্ন

প্রতিদিন ঘুম ঘোরে স্বপ্ন দেখি
একটি একটি করে বেল কুঁড়ি ফুটছে,
সাথে মেঘ বৃষ্টির রিমঝিম শব্দ …

অন্ধকার রাতে প্রবল বৃষ্টি ধেয়ে নামছে
বেল কুঁড়ির উষ্ণ সাদা নরম তুলতুলে ঠোঁটে …
রাতের বুকে রাত নেমেছে গভীর নিঃসঙ্গতা ঢেলে,

এমন রহস্যময় নিবিড় রাত্রি আমায় ভীষণ টানে
বৃষ্টি এখন মন ছুঁয়েছে স্বপ্ন ছুঁই ছুঁই করে —–
মধ‍্যরাতের একাকীত্ব রাখব কোথায় লুকিয়ে :

ব‍্যালকনির টবে বেলি ফুল গাছে টুপটাপ শিশির ঝরছে —
ধোঁয়া ধোঁয়া কুয়াশায় মেঘেরা ডানা মেলেছে আকাশে —
ও চাঁদ, কোন অরণ্যে তোমার বাড়ি …
আয় বৃষ্টি :
আয় মেঘ,
মেঘের খামে উড়িয়ে দেব স্বপ্ন আবেগ —

নৈঃশব্দতার নীরব আঁচল খসে
ঘুম ঘোরে রাত্রি নামে !
প্রকৃতির হলুদ মায়ায় জ‍্যোৎসনার স্বপ্ন বনে
বেল কুঁড়ি ফুটছে —
সবুজ বৃক্ষ ছায়ায় পাতার আড়ালে,

আমার দুঃখবতী উঠোনে অস্তরঙের নিঃশব্দ দহনে এই মাত্র
একটি বেল কুঁড়ি স্বপ্ন কুসুম ফুটেছে ……..

21.04.2019

স্পর্শের বাইরে

স্পর্শের বাইরে

নিঃশব্দ রাত্রির ঠোঁট কেঁপে কেঁপে
সোনালী মেঘ
উড়ে গেছে অচেনা এক দেশে,
যেখানে পাথর পাখির কান্নায় এক সমুদ্র জন্ম নিয়েছে —
অনেক কষ্ট সয়ে সয়ে এক চিলতে মনে
জন্ম নিয়েছে শব্দ ফুল:
ফোঁটা ফোঁটা হেমলক
তোমরা যাকে বৃষ্টি বলো ..
কষ্ট ঝরে ফোঁটা ফোঁটা
জীবন জুড়ে ;

শূন্য বালুচরে সমুদ্র হামাগুড়ি দিয়ে হাঁটে
কখনো কষ্ট জীবন সমুদ্রের কাছে হার মানে !
জীবন সমুদ্রের একটা অংশ
শত কষ্ট জিইয়ে রাখে বুকে ,
ধূসর আকাশ কাছে ডাকে
এই আকাশ চিরকাল আপন ;
গভীর রাতে বৃষ্টির ঝাপটা
থাইগ্লাসের গায়ে ফোঁটা ফোঁটা শিশির কষ্ট —
রূপকথার গল্প হয়ে আছে।

একদিন পৃথিবীর কান্না ছুঁয়ে দেবো
বিচূর্ণিত নক্ষত্র হাতে নিয়ে
স্বপ্নের মিহিজাল বুনবো আগামীর জন্য …

22.04.2019

আমার গল্পে তুমি

আমার গল্পে তুমি

তোমারই সঙ্গে এক কাপ চা
তোমার সঙ্গে এক পথে পা
তোমার সঙ্গে একটা জীবন
তোমার সঙ্গে মৃত্যু …
তোমার সঙ্গে দিন,
তোমার সঙ্গে রাত
তোমার সঙ্গে সারাদিন মান বাঁধা : —

তোমারই সঙ্গে সব তারা খুলব
তোমার সঙ্গে জ‍্যোৎস্না ছোঁব
তোমার সঙ্গে সাদা মেঘের ঠোঁটে হারাবো,
তোমার সঙ্গে কামিনী থোকায় স্বপ্ন আঁকবো!
তোমার সঙ্গে ঘাস বুকে শিশিরের গল্প হবো
তোমার সঙ্গে দূরের পথে
তোমার সঙ্গে এক বিকেলে সমুদ্রে …
তোমার সঙ্গে সন্ধ্যা নামাবো,
তোমার সঙ্গে প্রজাপতি ডানায় হারাবো ;

তোমারই সঙ্গে সব অভিমান
তোমার সঙ্গে …
তোমার সঙ্গে সব বাড়াবাড়ি
তোমার সঙ্গে খুনসুটি!

তোমারই সঙ্গে নেব না এ জীবনে আড়ি —-
তোমার সঙ্গে সুখ -দুঃখ ভাগাভাগি
তোমারই সঙ্গে …
তোমার সঙ্গে একটা জীবন দেব পাড়ি

তুমি আমার গল্প হবে !

20.04.2019

শব্দ ফুল গোলাপ কবিতা

শব্দ ফুল গোলাপ কবিতা

আমার জীবনের এইটুকুই পাওয়া
আমি শুধু এটুকুই জানি,
আমার জন্ম হয়েছে সাহিত্যের জন্য —
সাহিত্যের প্রতিটি শাখা ছুঁয়ে আছে —
কবিতা,
গল্প : উপন্যাস …!
এক একটা গোলাপ কুঁড়ি কবিতার গুচ্ছ গুচ্ছ শব্দে গোলাপ ঘ্রাণ ছড়ায়,
গল্প গোলাপ হয়ে ফোঁটে —-
উপন্যাস এক একটি গোলাপ গাছ ;

পৃথিবীর সব প্রেমের কবিতা গুলো
গোপনে কিম্বা প্রকাশ্যে গোলাপ ঘ্রাণে ডুবে থাকে …
আমি মনুষ্য প্রেমের কথা বলছি না,
আকাশের সাথে প্রেম হতে পারে
সমুদ্রের সাথে প্রেম হতে পারে,
শ্রাবণের কদম গাছটা দু’চোখে স্বপ্ন এঁকে অপেক্ষায় থাকে
শীতলতার শান্ত জলে একদিন কী ভীষণ মন ভেজাবে :

একদিন কবিতাকে বলেছিলাম,
তোমার কাছে আসব
স্বপ্নে নয় বাস্তবে,
আমি কথা রেখেছি।

আজ নির্জন স্নিগ্ধ ভোরে
স্বপ্নের অঞ্জলী মেখে
আমি কয়েক’ শ গোলাপ কবিতা ফুটিয়েছি ——-
আমার ভাবনায় গেঁথে আছে ……
প্রিয় কবিরা :
রবিন্দ্রনাথ, নজরুল —
আমাকে স্বপ দেখিয়েছেন, উনারা :
আমি কৃতজ্ঞ প্রিয় কবিদের কাছে,
গোলাপের কাছে ও আমার এক পৃথিবী ঋণ আছে ………

20.04.2019

আমায় রেখো আয়না করে

আমায় রেখো আয়না করে

আমি যখন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখি
মনে হয় আয়না আমাকেই দেখছে —

আমি যখন শ্রাবণ রাতে ছাদে মেঘের তলায় এসে দাঁড়ায়
মনে হয় মেঘ আমাকেই খুঁজছে
বৃষ্টি হয়ে আমায় ভেজাবে :

আমি যখন নীরব নির্ঘুম রাতে কবিতা লিখতে বসি
মনে হয় কবিতা আমাকেই লিখেছে
আমি আর কি লিখবো ….!

আমি যখন বিকেলের হাত ধরে অচেনা পথে হেঁটে যাই
মনে হয় কোন এক অদৃশ্য ছায়া কবি আমাকেই অনুসরণ করছে।

আমি যখন অবসরে কবিতা পড়তে বসি
মনে হয় , কতখানি বিস্মৃত আমি —
আমি আর কী পড়বো
কবিতা আমাকেই পড়ছে ;

আমি যখন হাসনাহেনার ঝাড়ে এসে দাঁড়ায়-
মনে হয়,
পৃথিবীর সব কোলাহল থেমে গেছে
এক অরণ‍্য হাসনাহেনার ঘ্রাণ ছড়িয়ে গেছে…
আকাশে বাতাসে,
সন্ধ্যা তারায়
মুগ্ধ চাঁদে :
কিম্বা কৃষ্ণচূড়ার শাখায়
প্রিয় গোলাপ
সবুজ মাঠে
অস্তমিত সূর্যের বিষাদ মাখা ঠোঁটে ;

আমি যখন গোলাপ অরণ‍্যে দাঁড়িয়ে থাকি
মনে হয়,
লাল, নীল হলুদ গোলাপাভায় ভরে গেছে
প্রিয় পৃথিবীর নীড়,
মধ‍্য রাত্রির সবুজ চোখের পাতায়
নৈঃশব্দের গহীন অরণ্যে
গোলাপ পাপড়ি টুপটাপ শিশির শব্দে ভিজছে ——-!

আমি যখন মাধবীলতার তলায় দাঁড়িয়ে থাকি
মনে হয়,
প্রিয় ঘ্রাণ ছড়িয়ে আছে এক পৃথিবী ভূ- খানে
প্রকৃতি শরৎ উঠোনে শুভ্রতার আঁচল বিছিয়েছে
ভোরের শিশির ভেজা হাসনাহেনার পাপড়ির ভাঁজে ভাঁজে ——-!!

19.04.2019

যাদুর দুপুর

যাদুর দুপুর

হলুদ চাঁদ বর্ণহীন অতীতের মত
কৃষ্ণচূড়া আগুন দহন ক্ষত
অনেকটা কুয়াশা আঁধার,
পাথর চাপা মন নিষ্প্রাণ
এ কথা সবাই জানে,
আমি জানি, পাথর মনেও আগুন আছে
সে আগুনের লেলিহান শিখা …
উত্তাপ হীন মন পুড়াতে পারে।

নিঃশব্দ যাদুর দুপুর দু’পা’য় মাড়িয়ে
ধূসর দিগন্তে আলোচিত দগ্ধ দহনে,
গোধূলির ছায়া পথে
আমি নিজেকে হারিয়ে খুঁজি বার বার:

কষ্টের বিনিদ্র প্রহর শেষে
আমি চৈত্রের ঝরা ফুল ;
আকাশ তৃষিত মেঘের খামে
তৃষ্ণার্ত এক সমুদ্র তাকিয়ে আছে …
এই মাত্র চৈত্রের নগ্ন রাত্রির চোখে —
বিমূর্ত পৃথিবী ডুবেছে
আর আমার চোখে নীল সমুদ্র !!

18.04.2019

ভালবাসার নীল গল্প

ভালবাসার নীল গল্প

আজ ভোরটা একটু অন‍্য রকম নান্দনিক
যেন গোলাপ পাঁপড়িতে শিশির
কিম্বা সবুজ ঘাস ঠোঁটে উপচে পড়া সকালের রৌদ্দুর :
সময়ের প্রয়োজনে হয়তো
প্রকৃতি সব সময় সুন্দর,
আর আমি ততটাই নীরব নিঃশব্দ,
স্বপ্নরা গতকাল আমাকে ছেড়ে গেছে —

আমার মন খারাপের সঙ্গী হলুদ বিকেল
এক মুঠো কষ্ট নিয়ে আমি একটা পার্কে বসে আছি,
পার্কটা মানুষ শূন্য;
এক মাত্র আমি ছাড়া
তবে কি পার্কের মানুষ গুলো আজ দূরের শহরে বেড়াতে গেছে ?

ঘাসের উপর পড়ে আছে এক বিন্দু শিশির
একটা পাখি ঠোঁকর দিয়ে শিশির খেতে চাচ্ছে,
পাখিটা জানে না,
এই এক ফোঁটা শিশির
আমার অনুতপ্ত মনের কষ্ট!

এক পৃথিবী রৌদ্দুরের গন্ধ অসংখ্য শালিকের ডানায়,
এ আমার এক জীবনের ভালবাসার গল্প
এবং সাহিত্য শতাব্দী :

পৃথিবীটা অনেক সুন্দর,
তোমার মতো ——
তুমি যে স্বর্গীয় তাই !
বোকারা ভালবাসে বারবার,
আমি ভালবেসেছি একবার —
আর তাই আমি বড় বেশি স্তব্ধ!

তোমাকে আমি একটা বিকেল দিয়েছিলাম রং হীন …
বড্ড এলোমেলো রোদ,
নিরুত্তাপ হাওয়া
তবু তুমি আমার প্রজাপতি মন ছুঁয়েছিলে :
অমোঘ ভালবাসায় সেদিন চন্দনের ঘ্রাণে ভেসে গিয়েছিল এক শহর !
যেন জ‍্যোৎস্নার সাদা বারান্দায় হঠাৎ বৃষ্টির স্রোতে ভেসে ভেসে যাচ্ছে কবিতার পঙক্তি মালা ;
আদ‍্যপান্তে বাঁধতে চেয়েছ কবির স্বেচ্ছাচারী মন!

17.04.2019

তুমি তুমি তুমিময় সময়

তুমি তুমি তুমিময় সময়

একদিন আকাশ রঙের নীল শাড়ি পরব
কপালে ছোট্ট নীল টিপ দেয়ার জন্য
আকাশের অবশিষ্ট আর
কিছু থাকবে না,
এ জন্য কী ভীষণ মন খারাপ —
একদিন স্বপ্নের শহর গুলো ভিজবে তুমুল বৃষ্টিতে:
আমি ও ভিজব বৃষ্টির মত —-

একদিন শ্রাবণ মেঘের কাজল আঁকব এ চোখে,
একদিন এলো কেশের হাত খোঁপায় বকুলের মালা জড়াব
একদিন অচেনা বিকেলে বৃষ্টি ছুঁয়ে দেখব,
একদিন তোমার জন্য অচেনা এক শহরে হারাব …

আর কোন একদিন নয়
তুমি তুমি তুমিময় সময়ের হাতে বন্দি হব :
স্বপ্নরা অরণ্যর পথে —
আকাশ ছোঁয়া বৃক্ষের ডালে
ছায়া ছায়া মেঘ ঝুলে, আছে
চিলেরা উড়ে এসে পৌঁছাল নিঃশব্দ জনপদে,
নদীর বুকে ভেসে যাচ্ছে ছোট্ট একটা দেশের কবিতা;
এ অনেক পুরনো গল্প …

এইসব দিনরাত্রির হলুদ প্রচ্ছদে
কবিতার গল্প ;
কাশফুলের সাদা সাদা মেঘের রাজ্যে
তোমার হাত ধরে হারাব!

16.04.2019

মধ‍্যরাতের নিঃসঙ্গ নক্ষত্র

মধ‍্যরাতের নিঃসঙ্গ নক্ষত্র

কি করে বলব আকাশ, তোমাকে ভালবাসি কত
মধ্যরাতের নিঃসঙ্গ নক্ষত্রের মত —
আমি ও বড় একা নিঃসঙ্গ,
প্রিয় স্বদেশ …
আমার সব স্বপ্ন ভূমি তুমি
অনন্ত আকাশের নীল যত
এক শূন্য হৃদয় ক্ষত ;

নয়নাভিরাম উচ্ছ্বাসিত সমুদ্রের কোটি কোটি ঢেউ
অবারিত সবুজ শষ‍্যের মাঠ,
সব কিছুই আমার ভাললাগা অনুভবে মিশে আছে —-
হঠাৎ দৃষ্টিতে ভেসে ওঠা দৃশ্য পটের ছবির মত !

কি করে বলব গোলাপ, এক গোলাপেরই সৌন্দর্য
আমাকে কতটা আকৃষ্ট করে,
আমার এক এক ফোঁটা রক্ত থেকেই —
পৃথিবীর অজস্র গোলাপের জন্ম হয়েছে,
এই জন্য গোলাপ ব‍্যথায় কষ্ট বাড়ে —
গোলাপ সুখে হাসতে পারি।

মোম জ‍্যোৎস্নায় মন ভিজিয়ে আমি বরং বারবার কবিতার কাছে ফিরে আসি,
কবিতা আমাকে একটা খোলা নীল আকাশ দিয়েছিল :
সেই থেকে নীলাকাশ আমার সোনালী স্বপ্ন ছুঁয়ে আছে,
কি করে বলব কবিতা, তুই আমার কতটা প্রিয় !
হলুদ ফুলের একমুঠো স্বপ্ন;
কদম বকুলের বিকাশিত আগামীর বীজ …
উড়ন্ত চিল ডানায় ছুঁয়ে যাওয়া বাসনার নীল প্রজাপতি।

কি করে বলব জ‍্যোৎস্না, পুরনো নীল আকাশ
আমার ভালবাসা হয়ে গেছে !
আরও এক নিবিড় নতুন আকাশ
আমার ভালবাসায় মিশে গেছে,
এক আকাশের সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ
সমস্ত পৃথিবী !

_________
15.04.2019

এসো হে বৈশাখ

এসো হে বৈশাখ

হে বৈশাখ! তুমি আসবে কী ?
নতুন কোন ভোরে
নতুন কোন সূর্যোদয় হয়ে,
তোমার আগমনীর শঙ্খধ্বনি বাজে —
শুভ নববর্ষের অন্তরালে :

সব প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে তুমি এলে —
ভোরের কাঁচা সোনা রৌদ্দুর গায়ে মেখে,
পহেলা বৈশাখের শুভ্র আঁচল উড়িয়ে!

শুধু তোমার জন্য বৈশাখী বিশাখা মেয়ের কত কী আয়োজন চলছে —
অঙ্গে পরেছে সে লাল পাড় সাদা শাড়ি,
পা’য় নূপুর,
কোমরে বিছা
মেয়েটা আলতায় রাঙিয়েছে চরণ …
কপালে এঁকেছে লাল সবুজ মিশেল টিপ !
দু’হাত ভরে আছে বেলুয়াড়ি চুড়ি …
কৃষ্ণ কালো বাঁধন হারা চুলে তার বেলী আর গোলাপ কুঁড়ি ;

মুখে এঁকেছে আলপনা।

শ্রাবণ পরেছে ঘাস ফুল রঙ পাঞ্জাবি আর চুড়িদার —
বৈশাখী মেলায় ওরা দু’জন নাচবে,
গাইবে – আবৃত্তি করবে আর ও কত কী আয়োজন !

বৈশাখী মেলায় মুখর হয়ে উঠেছে দু’জনায় …
রমনার বটমূলে সবুজ গালিচায়
বসেছে এক মহান মিলন মেলা :
কোলাহল মুখর এ মেলার প্রাঙ্গণ
আহা ! আজি ছুটেছে বাঙালী শেকড়ের সন্ধানে,
সুরের মূর্চ্ছনায় প্রকৃতি উন্মাতাল হয়েছে।

শ্রাবণ আর বিশাখার নাচের তালে তালে
শিশুকালের পুতুল খেলার দোল দেয় মনে ,
আজ ভাবি কোথায় ছিলাম আমি —
আর কোথা থেকে এসেছি ?
এতকাল পর ….
নিজেরে হারায়ে খুঁজি বারবার।

বৈশাখী মেলার ভীড়ে
এসেছ তুমি বৈশাখ হাজার স্বপ্ন নিয়ে …
তোমার আগমনী পথের প্রান্তরে
এঁকেছি আলপনা সেক্ষণে ,
বৈশাখী পোশাকের বিচিত্র সব ঢঙে
মেতেছে সবাই নানা উৎসব আর পার্বণে ।
ঢোল বাদ‍্য বাঁশী কবিতা আর বাউলের গানে
মাদল বাজিয়ে নাচছে সবাই কীর্ত্তনের তালে তালে:
মাটির সানকিতে ডুবিয়ে হাত ইলিশ আর পানতায়
আহা! কিযে মজা …..
এইখানে যেন জনমের সাধ রয়।
মুড়ি মুড়কি বারোয়ারী ভাজা বাতাসা আর কদমায়
নানা রঙের বাহারি পায়েস পিঠায়,
উটাচন মন ছুঁয়ে ছুঁয়ে যায় ;

ভরেছে কী বালিকার কোরচ বাঁশী, বেলুন আর মাটির পণ‍্যে —
মেলার প্রাঙ্গণ জুড়ে হরেক রকম সুর
আহা! বাজে কী সুমধুর ;
হৃদয়ে জাগে সে এক অনাবিল সুখ —
মেতেছে বর্ণ ভেদে বাঙালী নব প্রাণে
বন্ধু পরিজন শুভকাঙ্খি সবাইকে …
১ লা বৈশাখের অঞ্জলী জানাই
কালের বর্ষ সেরা এক মহা উৎসবে !

১লা বৈশাখ
—————-
13.04.2019