জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব এর সকল পোস্ট

জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব সম্পর্কে

জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার নলছিয়া নামক গ্রামে ১০ ই জুন ২০০১ সালে জন্ম গ্রহণ করেন। তার লেখা গুলো বাস্তব ধর্মীয়। লেখা তার নেশা। সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে কবিতা লিখতে। * চরম মুর্খ সেই যে শিক্ষা অর্জন করে নিজের মাতৃভাষা শুদ্ধ ভাবে বলতে পারে না । * আমার কাছে আনুষ্ঠানিক শিক্ষা পদ্ধতি থেকে অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা পদ্ধতি শ্রেষ্ঠ।

ভাত দে

৪+৪/৪+২

ভাত দিলো না মরার আগে
মরার পরে কাঁদে
আসলে ফিরে মাতা পিতা
রাখবে বলে চাঁদে।

ক্ষুধায় ভরা আমার পেটে
পড়েনি তো কিছু,
একটু খাদ্যের জন্য আমি
ঘুরেছি যে পিছু।

এখন আমার মুক্ত জীবন
থাকি সদা একা
চাইলে আমি পাবে না তো
স্বজনের ওই দেখা।

চাইনে আমি এমন স্বজন
কেঁদেছি যে কত
অন্য জনে নষ্ট করতো
খাদ্য শত শত।

এখন আমি মুক্ত স্বাধীন
ইচ্ছে খুশি ঘুরি
অচিন পুরে ঘোরাঘুরি
নেইতো আমার জুড়ি।

রচনাকালঃ
০৪/০৭/২০২১

একতা

৪+৪/৪+২

ঐক্য গড়ো বাঙালি সব
বাড়াও মনের শক্তি
মুজিবের ওই জন্য অশেষ
বাঙালির মন ভক্তি।

পাকদের থেকে রক্ষার জন্য
বাঙালি ওই রক্ত
কষ্টে কষ্টে বাংলার মানুষ
হয়েছে রে শক্ত।

যোগ্য নেতা ছাড়া যুদ্ধে
জেতা যায় না কভু
যুদ্ধ করে বাংলার মানুষ
মুক্তি পেল তবু।

নিজের কথা নিজের স্বার্থ
চাইনি এটা যিনি
বাঙালির ওই জাতির পিতা
মুজিব হলেন তিনি।

স্বাধীন দেশে মুক্ত জীবন
কীর্তি ভাই কার বলো
তাঁরই জন্য এ-ই দেশে
বুক উঁচিয়ে চলো।

রচনাকালঃ
০২/০৭/২০২১

শ্রমজীবী মানুষ

৪+৪+৪+১

জগজ্জুড়ে শ্রমজীবীর———- নেইতো কভু তুল
জগতের এই উন্নয়নের———–তারাই হলো মুল।
অবহেলা করাে না ভাই————-সম্মান টুকু দাও
তারাই দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান——-কাছে টেনে নাও।

শ্রমজীবীর গায়ের ঘামে———–তৈরি ধরার সব
মালিক শ্রেণির শোষণ থেকে——রক্ষা করো রব।
শ্রমিক হলো দেশের স্তম্ভ ——— তাদের সম নাই
আধুনিক এই সভ্যতার যুগ———- মর্যাদাটা চাই।

সকাল দুপুর ক্লান্ত ক্লান্ত————- কেটে যায় দিন
এত খাটা খাটনি করি ————-শুধু পেটের ঋণ।
হাড় ভাঙ্গা এই পরিশ্রমে ————–লালন করি ছা
রোদ বৃষ্টি সদা প্রিয় ———————কিছু বলি না।

মাঠে ফলে সোনা ফসল———- কৃষকের ওই নাম
তাদের কাজের জন্য তারা——পাই না ন্যায্য দাম।
শোষণের ওই যাঁতাকলে———–জীবনটা রে শেষ
মালিক শ্রেণি শীতাতপে ———— বসে বলে বেশ।

সুখীজনে সুখে থাকে—————-চাষার শ্রমের ফল
শ্রমজীবীর সারাজীবন ————–থাকে দুখে’র দল।
ভেবে ভেবে পায় না ভাষা ————-কীসের জন্য কি
খেটে খেটে জীবনটা শেষ —————–জন্ম বৃথা ছি।

রচনাকালঃ
০২/০৭/২০২১

মনোভাব

স্বরবৃত্তঃ ৪+৪/৪+২
মাত্রা বৃত্তঃ ৫+৫/৫+২

পরের ক্ষতি মন্দ অতি
বুঝবে সবে কবে,
জীবন সুখে নিজের বুকে
তীর বিঁধিবে যবে।

পরের ক্ষতি করতে অতি
মনের লাগে ভালো
নিজের কাজে নানান সাজে
ধরা ভীষণ আলো।

পরের ক্ষতি জীবন গতি
নষ্ট করে কভু
চাইবে যতো পাইবে ততো
শুদ্ধ নারে তবু।

পরের ক্ষতি মজায় অতি
দুষ্ট জনে বুলি
মনে মনে জনে জনে
রাতে ছাড়ায় ধুলি।

তাদের কথা বলতে ব্যথা
লাগে ভালো মনে
পাজির সাথে নয়তো হাতে
কয় রে ক্ষণে ক্ষণে।

রচনাকালঃ
৩০/০৬/২০২১

বৃক্ষ পরম বন্ধু

৪+৪/৪+১

বৃক্ষের ছায়া সবুজ মায়া
শীতল করে প্রাণ,
বৃক্ষের শাখায় বসে পাখি
গায় যে সদা গান।

রাখাল বসে বাজায় বাঁশি
ধরে সুন্দর গান
কিচিরমিচির শব্দ মধুর
জুড়ায় মন আর প্রাণ ।

বৃক্ষ থেকে অক্সিজেন পাই
তাতে বাঁচে প্রাণ
অক্সিজেন কি কিনলে রে ভাই
বাঁচবে মানব জান।

বৃক্ষ সদা কেঁদে বলে
দেয় না কেহ জল
আমাদের যে থেকে তারা
পেতে চাই যে ফল।

কাটে যেজন বৃক্ষরাজি
বৃক্ষ ঘাতক সে
পৃথিবীর সে নির্মলতা
ধ্বংস কারী যে।

রচনাকালঃ
৩০/০৬/২০২১

সাম্যের কথা

৫+৫/৫+২ মাত্রা বৃত্ত

মেথর মুচি নয় অশুচি
বান্দা তাঁরি সব,
মানবসেবা অমূল্য ধন
সবার তিনি রব।

তাঁরই কাছে যে দামি নয়
বংশ মান সব
ধরাতে সব সৃষ্টি তার
তিনি হলেন রব।

নিচু কর্ম করলে ভাই
নর কি ছোটো হয়
প্রভুর কাছে সবে সমান
পর তো কেউ নয়।

ধরার সবে কর্মে মাপে
নরের ওই ভার
তাদের মতো নিচু মানুষ
নেই তো কভু আর।

নিচু মনের মানুষ সব
নিচু কথা কয়,
তাদের কাছে মেথর মুচি
মানুষ বুঝি নয়।

রচনাকালঃ
২৯/০৬/২০২১

প্রেম প্রেয়সী

স্বরবৃত্ত ছন্দঃ ৪+৪/৪+২

দিবানিশি ভাবি প্রিয়া তোমারি যে কথা
মনে লুকানো যে গিরি সমতুল্য ব্যথা,
তোমারে যে আমি জানো কত ভালোবাসি
তোমা কথা মনে হলে খুশিতে যে হাসি।

তুমি আছো মনে ক্ষণে ভাবি তোমা কথা
কি জানি কি হবে সখী মনে জাগে ব্যথা,
অবাধে যে ঘোরাঘুরি পুরো দিনে কত
ফুলে ফুলে ভরা ডালে পাখি শত শত।

জুড়ি মোরা সুখে দুখে নিজে কথা বলি
হাতে হাতে রেখে মোরা ভেবে ভেবে চলি,
কভু আসে কোথা থেকে শুভ কাজে বাঁধা
মনে মনে ভাবি আমি তুমি হলে রাধা।

তোমা হাতে রাঙা চুড়ি খোঁপা ফুলে ফুলে
তোমা আমি চেয়েছি যে মনে ভুলে ভুলে,
হাসি মজা করে মোরা খেলেছি যে খেলা
কবে তুমি ছেড়ে গেলে দিয়ে দুখে মেলা ।

একাকি যে ঘুরি আমি কত বনে বনে
কভু হয়ে না যে দেখা সখী তোমা সনে,
ভুলে গেছো সখী মোরে মনে কত আশা
বুকে ছিলে মোরে জানো বহু ভালোবাসা।

রচনাকালঃ
২৮/০৬/

পাপী

৪+৪/৪+২

পাপে পাপে নষ্ট জীবন
রক্ষা করো আল্লা,
আমল না’রে করলে পাপে
ভারী হবে পাল্লা।

পাপের শাস্তি ভীষণ কঠিন
যায় না কভু বলা,
সবার উচিত নবীর কথায়
পুরো জীবন চলা।

নবীর কথা মেনে চললে
জীবন হবে ধন্য,
পাপের বোঝা তখন হবে
একেবারে শূন্যে।

পাপে পাপে জরাজীর্ণ
অশান্তিতে ভোগে,
পচন ধরে মনের কোণে
নানা কষ্ট রোগে।

পাপের জন্য প্রভুর কাছে
ক্ষমা চাইব রে ভাই
প্রভুর মতো ক্ষমাশীল যে
ত্রিভুবনে ওই নাই।

রচনাকালঃ
২৫/০৬/২০২১

বন্ধু বান্ধব

গ্রামের স্রোতস্বিনীর পাশে গভীর অরণ্যের
মধ্যে দিয়ে বয়ে চলে গেছে
একটি সুরু পথ, সেই পথে
বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে,
মনের অভিলাষে গল্প করতে করতে সবাই মিলে,
অবশেষে পৌছলাম কলেজের তেমাথার মোড়ে।
অন্য বন্ধুবান্ধবদের উষ্ণ অভ্যর্থনা,
হাসি আর খুনসুটি ।
রেখেছে আমাদের সকলকে ঘিরে,
আনন্দ আর আনন্দ।
আজও সেই দিনের কথা মনে জাগে
কলেজ গেটের মুখে দাঁড়ালে,
আহা কি দারুন ছিল আমাদের সকলের সেই দিনটা।
সেই দিনে বেদনা বলে কোনো শব্দ ছিল না কারো
শুধু আনন্দ উল্লাস আর কোলাকুলি।

রচনাকালঃ
২৮/০৪/২০২১

বৃষ্টির দিন

স্বরবৃত্ত ছন্দঃ ৪+৪/৪+২

বৃষ্টির দিনে মনে পড়ে
বাল্যকালের কথা,
আজও তা যে মনের কোণে
স্মৃতির পাতায় গাঁথা।

বৃষ্টির শব্দ বড়ই মধুর
শুনতে লাগে ভালো,
গগন জুড়ে ভেসে বেড়ায়
মেঘ যে ভীষণ কালো।

ইচ্ছে মতো যখন তখন
নামে একটু বৃষ্টি,
বৃষ্টি যদি না হয় তবে
হবে অনাসৃষ্টি।

রচনাকালঃ
০৩/০৬/২০২১

বাবা

৪+৪/৪+২

বাবা তুমি আমার কাছে
আনন্দ আর হাসি
তোমায় ছাড়া আমি শুধু
নয়ন জলে ভাসি।

ছেলেবেলার ইচ্ছে খুশি
ধরেছি যে বায়না,
তোমাক ছাড়া আমার মনে
আর তো কিছু চাইনা।

বাবা তুমি ছিলে আমার
নিত্য খেলার সাথী,
আঁধার রাতে চলার পথে
চাঁদের মতো বাতি।

বাবা তুমি সুখের জন্য
খেটেছো কত বেলা,
গায়ের ঘামে হয়েছে যে
জল সাগরে মেলা।

বাবা তুমি আমার কাছে
বৃক্ষের মতো ছায়া,
এই ধরাতে তোমার মতো
নেই যে সুন্দর কায়া।

রচনাকালঃ
২২/০৬/২০২১

মনে পড়ে

মাত্রাবৃত্ত ছন্দঃ ৫+৫/৫+২

তোমার কথা পড়লে মনে
হৃদয় কেঁপে ওঠে,
তোমার খোঁজে সেই ছেলেটা
পাহাড় প্রাণে ছোটে।

বাদলা দিনে মনে পড়ে যে
প্রিয়া তোমার কথা,
অপরের সাথে দেখে তোমায়
প্রাণে লাগে যে ব্যথা।

হাসি মজার সময় গুলো
গেছে যে কবে চলি,
তোমার কথা আমি যে শুধু
বারংবার বলি।

মনের খুশি ঘুরে বেড়ানো
ছুটে চলার সাথে,
কেউ থাকতো না গো সখী
দুজন চলা পথে।

হঠাৎ মনে পড়ে তোমায়
সখী আছেন যারা
আমার কাছে তুমি যে সখী
আমার মনে সেরা।

রচনাকালঃ
০৭/০৬/২০২১

মধ্যবিত্ত পরিবার

মধ্যবিত্ত পরিবারের শুধু কষ্ট আর কষ্ট
হয় না তো স্বপ্ন পূরণ, স্বপ্ন গুলো হয় শুধু নষ্ট।
বলতে পারে না তো তাদের অভাব অনাটন কথা
সদা ঘুরে বেড়ায় বুকে নিয়ে গিরি সমতুল ব্যাথা।
কেউ নেই মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যদের কথা শোনার,
সমাজে কেউ নেই তাদের বিষয়ে জানার।
দূর্যোগের ঘনঘটা বেশ তারা কি আছে ভালো,
করোনা সংক্রমণের তীব্রতা ভীষণ ভীষণ কালো।
খেয়ে না খেয়ে কেটে যায় তাদের কত যে, কত দিন
শ্রমিক হয়ে ঘাম ঝরিয়ে শোধ করে তারা পেটের ঋণ।
মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যদের যে কত বিচিত্র করুন দশা
সদা জীবন সংগ্রামের দীর্ঘ প্রতীক্ষা আর মনে নানা আশা।
একটু একটু স্বপ্ন নিয়ে তারা আজও আছে বেঁচে
অতীত দিনগুলো যে কত বেদনা বিধুর তাদের গেছে।
চাই না আর জীবনে এমন একটি পরিবার
সুখ তো নেই শুধু দুঃখ বিহীন কিছু নাই জীবনে আর।
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অভিনেতা মধ্যবিত্ত পরিবারের লোক
কষ্টে থেকে সুখের অভিনয় করতে হয় থোক থোক।

ইচ্ছে করে পর্ব-২

স্বরবৃত্ত ছন্দঃ ৪+৪/৪+২

মাগো আমার ইচ্ছে করে
পাখির সাথে গাইতে।
মাঝির মতো তরী নিয়ে
মনের সুখে বাইতে।

মাগো আমার ইচ্ছে করে
বিধুর মতো হাসতে,
রোজ প্রভাতে পাখির সাথে
ভীষণ ভাবে নাচতে।

মাগো আমার ইচ্ছে করে
ফুলের মতো ফুটতে,
নদীর মতো ইচ্ছে খুশি
সাগর প্রাণে ছুটতে।

মাগো আমার ইচ্ছে করে
বৃষ্টি হয়ে ঝরতে,
শিশির হয়ে ঘাসের বুকে
মনের সুখে পড়তে।

রচনাকালঃ
১১/০৬/২০২১

করোনা কালীন জীবন

করোনা তোমার জন্য আজ বিশ্ব স্থবির,
মানুষে মানুষে নেই আলিঙ্গন, শুধু শঙ্কা আর শঙ্কিত জীবন।
দীর্ঘ প্রতীক্ষা একটু আলিঙ্গনের জন্য।
করোনা তোমার প্রাদুর্ভাবের জন্য, সতত লকডাউন
লকডাউনের গৃহ বন্দী জীবন, অসহ্য সময়, দীর্ঘ প্রতীক্ষা।
নেই সেই আগের মতো প্রানবন্ত চমৎকার শহর খানি
ফুটপাতের মানুষের দুর্বিষহ জীবন,
ক্ষুধার্ত তৃষ্ণার্ত পথশিশুর করুন আহাজারি, আর্তনাদ।

নেই তো সেই জমজমাট শপিংমল
দোকানির দীর্ঘশ্বাস, লোকসান গুনতে হচ্ছে ব্যবসায়।
নেই সেই প্রাণবন্ত শিক্ষালয়,
নেই কচি কাঁচার পদচারণায় মুখরিত পরিবেশ।
গৃহ বন্দী জীবন, মুক্ত সময়ের প্রতীক্ষা, কখন মুক্তি পাবে।
করোনা তোমার সংক্রমণে,বিশ্ব আজ মৃত্যুপুরী
অজস্র মানুষের কর্মহীনতা, বুভুক্ষা জনজীবন
কি করুন চাহুনি, সুদিনের প্রতীক্ষা।
সকলে আজ একটায় চিন্তা কিভাবে তৈরি করবে প্রতিষেধক,
কেমন ফুটাবে মানুষের মলিন মুখে মুক্ত হাসি,
তাও আজ দীর্ঘ নয়, সুদীর্ঘ সময়ের প্রতীক্ষা।

রচনাকালঃ
২৬/০৫/২০২১