কাজী জুবেরি মোস্তাক এর সকল পোস্ট

ক্ষ্যান্ত দে

এবার ক্ষ্যান্ত দে দয়া কইরা
সবই তো নিছোস কাইরা
যা ছিলো আমার ঘরে ৷

ভিডা মাডি সবই তো গেছে
আধ সের চাল তাও খাইলো ঘাঁসে
আসলে গরীবের দুঃখ এমেনে কইরাই আসে ৷

সেভেনে পড়া মাইয়া আমার নামডা সখিনা
কিইবা বয়স অইছিলো তার তারেও ছাড়লিনা
ফাঁসি দিয়া মরলো মাইয়া জানবারও পারলামনা৷

স্বপ্ন ভঙ্গ

অবশেষে তুমি ভূমিষ্ট হলে এ পৃথিবীতে
৪৫ অতিক্রম করে ৫৭ ডেল ব্যাথা সয়ে
পৃথিবীর আলো দেখালো মা তোমাকে ৷

অতঃপর শুরু স্বপ্নদেখা তোমাকে নিয়ে
দিন, মাস, বছর পেরিয়ে গেলো একে একে
কুঁড়ি থেকে তুমিও অনেকটা বড় হয়ে গেলে,
পাঠশালার গণ্ডী পেরিয়ে গেলে হাইস্কুলে
তখনও মা, বাবার অনেক স্বপ্ন তোমাকে ঘিরে
অনেক সম্মান বয়ে আনবে জন্মভূমির জন্যে ৷

প্রয়োজন, শখ সবই তারা জলাঞ্জলি দিয়েছে
খেয়ে না খেয়ে দিনের পর দিন কাটিয়ে গেছে
শুধু তোমাকে মানুষের মতো মানুষ বানাতে ৷

কলেজ, ভার্সিটি মুখোরিত ছিলো তোমার পদচারণাতে
তারপর !
হটাৎ একদিন তুমি নিরুদ্দেশ হয়ে গেলে,
মা, বাবা কেঁদে-কেঁদে ঘুরছে দ্বারে দ্বারে
শুধুই তোমায় ফিরে পাবার ক্ষীণ আশা নিয়ে
অথচ তুমি সবকিছু বেমালুম ভুলে গেলে,
ভুলে গেলে ৫৭ডেল ব্যাথা সহ্য করা মাকে ৷

মানুষের মুখোশে কখন যে জঙ্গী হয়ে গেলে
দেশপ্রেম ভুলে আজ দেশদ্রোহীতে রুপ নিলে
আর রক্তের বিষাক্ত হোলি খেলায় মত্ত হলে
ভুলে গেলে রক্তের বদলে কভু স্বর্গনা মেলে
ধ্বংস করে দিলে মা, বাবার সব স্বপ্নগুলোকে
পরিণত হলে মানুষরুপী এক রক্ত খেঁকোতে ৷

শুধু তোমার কারনে

কতোটাইবা দুঃখ আর তুমি দিতে পারো
তারচেয়ে ঢের বেশি আগুন বুকে জড়ো
বলেই দেখো নিজে পুড়তে পারি আরো
দুঃখে আমাকে কিভাবে পোড়াবে বলো ৷

কতোটাইবা ঘৃণা তুমি করতে শিখেছো
কতোটা করুনা আছে ঐ হৃদয়ে জড়ো
একবার চোখের পর্দা সরিয়েই দেখো
ঢের বেশি ভালোবাসা এ হৃদয়ে জড়ো ৷

বরফের বুকে কতোটা শীতলতা আছে
তারচেয়ে বেশি শীতলতা আমার স্পর্শে
যা তুমি জীবনের প্রতিটি পরতে খুঁজবে
আর দু’নয়ন শ্রাবণ জলে শুধু ভাঁসাবে ৷

কতোটাইবা মেঘ জমা আকাশের বুকে
কতোটাইবা সে অঝোর ধারায় ঝরবে
তার চেয়ে বেশি মেঘ আমার জীবনে
কান্না হয়ে যা অবিরাম দু’চোখে ঝরছে ৷

কতোটা ভালোবাসা পেয়েছো জীবনে
তারচেয়ে বেশি দিতে চেয়েছি তোমাকে
কিন্তু অকালেই সব আজ গিয়েছে ঝরে
তোমার তৈরি খরালে বাতাসের তীব্রতাতে ৷

কেউ কথা রাখে না

কেউ কথা রাখে না,
হাঁটা শিখেছি যখন বাবা’র হাতটি ধরে
বাবাও বলেছিলো কখনো যাবে না ছেড়ে
তবুও তো বাবা কথা রাখলো না ৷

কেউ কথা রাখে না,
মা বলেছিলো নাড়ি ছেঁড়া ধন তুই আমার
থাকবো আমি ছায়া হয়ে আসুক যতই আঁধার
তবুওতো মা কথা রাখলোনা ৷

কেউ কথা রাখে না,
কৈশরের খেলার সাথী চন্দনা
খেলার ছলে বলেছিলো আমায় ছাড়া বাঁচবেনা
সেও আজ দিব্যি আছে আমায় হয়তো মনে পড়ে না ৷

কেউ কথা রাখে না,
যৌবনে যার প্রেমে পরলাম নাম তার অঞ্জনা
ভালোবাসি কথাটি তাকে বলাই হলো না
ফুটফুটে জীবন তার কেড়ে নিলো সড়ক দুর্ঘটনা ৷

কেউ কথা রাখে না,
বন্ধুরা বলেছিলো কেউ কোথথাও যাবেনা
অথচ আজ কেউ কারো ঠিকানাও জানেনা ৷

আসলে সবাই কথা দেয় বুঝে না বুঝে
কিন্তু কেউ কথা রাখেনা জানিনা কি কারনে ৷

তবু তুমি সুখে থেকো

তবে তাই হোক,তাই হোক !
আমাকে ছাড়াই যখন সুখী হতে চাও
তবে তাই হোক, মুক্তি দিলাম তোমায় এই নাও
কথা দিলাম দাঁড়াবো না আর রাস্তার মোড়ে
কিম্বা কোনো বাস স্টপিজে মিথ্যে অজুহাতে
তবু তুমি সখী সুখী হও ৷

কথা দিলাম কোনো টোকাই কিশোরী যাবেনা
বলবেনা আফা ফুলটা নেন দাম দিতে হবেনা
কথা দিলাম ফ্ল্যাক্সির দোকানে আর যাবো না
তুমি নিশ্চিন্তে নিত্য এসো আমি থাকবো না ,
তবু তুমি সখী সুখী হও ৷

কথা দিলাম ল্যাম্পপোস্টের নিচে আর আমি থাকবোনা
তোমারও রাত্রি জেগে আর অপেক্ষা করতে হবেনা
কুকুরের ঘেঁউ ঘেঁউ আওয়াজে আর দৌড়ে আসতে হবে না
বেলকনিতে বসে ল্যাম্পপোস্টের দিকে তাকাতে হবে না ,

তবু তুমি সখী সুখী হও ৷

আসতেই হবে ফিরে

প্রিয়তমা
তোমাকে যে আসতেই হবে ফিরে
আজ না হোক অন্য ছুটির দিনে ৷

তোমার ছুটির দিন ব্যাস্ত থাকে
তোমার পরিবার আর সন্তানে,
আর আমার ছুটির দিন কাটে
তোমায় ভেবে আর স্বপ্ন দেখে ৷

তোমাকে যে আসতেই হবে ফিরে
আজ নাহোক অন্য ছুটির দিনে ৷

বিয়ের প্রস্তুতি বিছানায় পরে আছে
একটু দুরেই আমার দেহটা পরে,
পুরোহিতও আজ বাহিরেই বসে
আমার শবএর শেষকৃত্য করবে ৷

তোমাকে যে আসতেই হবে ফিরে
কফিনে যখন আমাকে রাখা হবে ৷

কফিনে বিদায়ী ফুলগুলে থেকে
তুমি সাদা গোলাপটা নিও তুলে,
জেনো লাল ফুলটাই সাদা হয়েছে
আমার চোখের জলে ধুয়ে ধুয়ে ৷

নতুন মুকুল আসবে গাছে গাছে
আবার ঠিকই ঝড়েও পড়ে যাবে,
তবু আমি বসেই থাকবো সেখানে
তোমাকে না নিয়ে ফিরবো কি করে,
আমার হাতছানি পারবেনা এড়াতে
আমার সাথেই যাবে শেষ গন্তব্যে ৷

মানবতার খোঁজে

গিয়েছিলাম একটুকরো মানবতার খোঁজে
তোমাদের ঐ ঘুণে ধরা ভঙ্গুর জনপদে,
অলিগলি ঘুরেছি, শহর থেকে শহরে ছুটেছি
আর বিপন্ন মানবতাকে পথে প্রান্তরে দেখেছি ৷

কখনো শ্বেতাঙ্গে রুপে কৃষ্ণাঙ্গ হত্যা করেছি,
Isis এর দায়ে সিরিয়াকে জ্বলতে দেখেছি,
বোমা মজুদের দায়ে ইরাক জ্বলতে দেখেছি
লাদেনের খোঁজে সারা আফগান পুড়িয়েছি ৷

নিজ ঘরে পরবাসী ফিলিস্তিনের যুদ্ধ দেখেছি
কোহিনুর স্বার্থে ভারত পাকিস্তান দ্বন্দ দেখেছি ,
মায়ানমারের বীভৎস রুপ দেখে প্রশ্ন জাগে মনে
জাতিসংঘ,মানবাধিকার সংস্থা কেনো মুখ লুকিয়ে ?

কাঁটাতারে ফেলানিকে দেখে প্রেস ব্রিফিং করেছো
আর কাঁটাতারের এপার ওপার মানবতা খুঁজেছো,
মানবতার মুখোশে প্রতিনিয়ত মানবদরদী সাজো ৷

তনু হত্যার দায়ে অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে রেখেছি
আর নষ্টা, কুলোটা অপবাদ দিয়ে আত্মরক্ষা করেছি ৷
দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে খাদিজাকে রক্তাক্ত হতে দেখেছি,
বিবেক, মনুষত্বের চোখে কালো কাপড় বেঁধেছি
আর মুখে কুলুপ এঁটে নিজে বেঁচে চুপ থেকেছি ৷

বিবেক, মনুষ্যত্ব, মানবতা আজ icu তে বন্দী
অথচ ব্যানার ফেস্টুন আমরা প্রতিবাদী সাজি
আর প্রতিনিয়ত সমব্যাথীর অভিনয় করে চলি
আসলে আমরা মনুষ্যত্বহীন মানুষের অবয়ব চলি ৷

হেরেও জিতেছি

সান্ধ্য আঁধারের অলক্ষ্যে দাঁড়িয়ে
পলাতক বাতাসে
খোঁপা খুলে যাওয়া এলোমেলো চুলে,
দেখেছিলাম তোমায় নিয়ন অালোতে ৷

অনুপ্রবেশ করলে সীমান্ত পেরিয়ে
হৃদয়ের করিডোরে
নিমিষে মনের মানচিত্রের দখল নিলে,
আর আমিও পরবাসী হলাম সেই থেকে ৷

তুমিই জয়ী আজ দখলের রাজত্বে
আমিও গেলাম হেরে
আবিষ্কার হলাম আমি তোমার আয়ত্তে,
বর্গাচাষী অাজ অামি তোমার হৃদয়ভূমিতে ৷

তোমার জন্যই সব

তোমার উপর নির্ভর করার নামই যদি হয় ভালোবাসা
হ্যাঁ তবে আমি তোমাকেই ভালোবাসি ৷
তোমার উপর নির্ভর করার নামই যদি হয় স্বপ্ন দেখা
হ্যাঁ তবে আজ আমি স্বপ্ন দেখা শিখেছি ৷

তোমার উপর নির্ভর করার নামই যদি হয় বেঁচে থাকা
হ্যাঁ তবে আমি আজ বাঁচতে শিখে গেছি ৷
তোমার উপর নির্ভর করার নামই যদি হয় দিন গুনা
হ্যাঁ তবে আমি তোমার জন্যই দিনগুনি ৷

তোমার উপর নির্ভর করার নামই যদি হয় প্রতিক্ষার
হ্যাঁ তবে আমি অাজও প্রতিক্ষায় আছি ৷
তোমার উপর নির্ভর করার নামই যদি হয় রাত জাগা
হ্যাঁ তবে আমি আজও রাত জেগেই থাকি ৷

তোমার উপর নির্ভর করার নামই যদি হয় প্রত্যাশা
হ্যাঁ তবে আমি তোমার ভালোবাসা প্রত্যাশী ৷
তোমার উপর নির্ভর করার নামই যদি হয় আশা করা
হ্যাঁ তবে আমি আজ হতাশাকে ছুটি দিয়েছি ৷

তোমার উপর নির্ভর করার নামই যদি হয় অনূভব করা
হ্যাঁ তবে আমি তোমাকে অনুভব করি ৷

সেই ভালো হতো

যদি মুর্খ হতাম সেই ভালো হতো
লিখতে হতোনা আর তোমাদের কুকর্মগাথা
বিসর্জিত হতোনা জীবন লিখে সত্য কথা ৷

যদি বোবা হতাম সেই ভালো হতো
রাজপথে মিছিলে আর ধরতে হতোনা স্লোগান
ঝরাতে হতোনা বুকের রক্ত আর এই প্রাণ ৷

যদি অন্ধ হতাম সেই ভালো হতো
দেখতে হতোনা এই ভঙ্গুর সমাজের অবক্ষয়
করতে হতোনা আর মিছে কান্নার অভিনয় ৷

আমি যদি পঙ্গু হতাম সেই ভালো হতো
পায়ে হেঁটে হেঁটে যেতে হতোনা তোমাদের দ্বারে
পিতার পেনশনের ফাইল ছাড়িয়ে নিতে ৷

আমি যদি পাগল হতাম সেই ভালো হতো
বুঝতে হতো না আর তোমাদের স্নায়ু যুদ্ধ
জড়াতে হতো না আর মিছে বাকযুদ্ধে ৷

আসলে যদি মানুষ না হতাম সেই ভালো হতো ৷

আমি ক্ষুধার্ত

অনেক হয়েছে,অনেকে দিয়েছেন
দয়া করে এবার একটু ক্ষ্যান্ত দেন,
জনগনের ভোটেই নেতা হয়েছেন
সে জনগনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখালেন?

বলবেন আমার জন্য কি করলেন ?
মাথায় ঠিকই ঋণের বোঝা দিলেন
আর আমাকে ভুখাই রেখে দিলেন,
যারযার গল্প তারতার কাছে রাখেন
কিছু জানতে চাইনা শুধু খেতে দেন ৷

জনাব বলবেন কার উন্নয়ন করলেন ?
জনগনকে ঠিকই আঁধারে রাখলেন
আর নিজে আয়েশের ঘুম ঘুমালেন,
অনেক হয়েছে এবারতো ক্ষ্যান্ত দেন

কতোদিন আমাকে বোকা বানাবেন?
আমার যা দরকার তাকি দিয়েছেন ?
কিছু চাইনা আমাকে শুধু খেতে দেন
তিনবেলা নাই দিলেন একবেলা দেন,
আমাকে না আমার পরিবারকে দেন
করজোড়ে মিনতি তবুও খেতে দেন ৷

জনাব আমি ক্ষুধার্ত আপনি জানেন ?
মিছিল, মিটিং বুঝিনা শুধুই খেতে দেন
জনগনও আপনাকেই করবে নির্বাচন,
আমি ভুখা আমাকে একটু খেতে দেন
নয়তো কেরে খেয়ে নিবো সব উন্নয়ন ৷

ঈশারায় বন্দী সমাজ

সমাজের শরীরে আজ পচন ধরেছে
সারা অঙ্গে তার নিকোটিন যায় চুমে,
আগামীর সব স্বপ্নগুলো গিলে খেয়ে
সমাজপতিরা থাকে বহাল তবিয়তে ৷

কতশত তরুণ হাজারো স্বপ্নে উচ্ছল
করতে পারতো সমাজের রুপ বদল,
অথচ মাদকেই করলো সব রদবদল
পিছনে আছে তার সমাজপতির দল ৷

যে তরুন স্বপ্ন দেখতো আকাশ ছুঁবে
সেই তরুণ আজ বন্দী আছে সেলে,
সমাজপতির ইশারা চলে এ সমাজে
মিথ্যা মামলাও মিলে বিনা খরচাতে ৷

মাদক, সন্ত্রাস, দুর্নীতি আজ মহামারি
নীতিবানের গলায় ঝুলে ফাঁসির দড়ি,
বাতাসে ভাসে অসহায়ের আহাজারি
তবু আজ নীতিহীনদেরই পাল্লা ভারি ৷

নতুন মলাটে পুরোনো শহর

জলজ্যান্ত আঁধারটাকে গিলে খেলো সূর্যের আলো
আর পুরোনো শহরটা নতুন মলাটে প্রস্তুত আবারো ৷
ইট, কাঠ,আর পাথরের শহরে আবার একটা ভোর
পেশাজীবী, কর্মজীবিরা সময়ের সাথে সাথে দৌড় ৷

আঁধারের সিঁধ কেটে নতুন সূর্য উঠেছে পূর্বাকাশে
পতিতারাও দেনা-পাওনা সব চুকিয়ে ঘরে ফিরছে ,
বিদ্ধস্ত পতিতার চোখে মুখে এক কষ্ট লেগে আছে
তার সেই দুঃখটা সে শুধু একা-একাই বয়ে চলেছে
যার দায় ভার নিজেই নিয়েছে ,দেয়নি এ সমাজকে ৷

নিশিপ্রহরীদের হয়তো দেখইনি কোনদিন তোমরা
যে তোমাদের সুখ নিদ্রায় রাত জেগে দেয় পাহারা
কখনো কি দেখেছো সে ঘুমায় কখন থাকে কোথায়?
তোমারাতো ঘুম ভেঙে দেখছো এ চকচকে শহরকে

কিন্তু কখনো কি ভেবেছো ঐ ঝাড়ুদার কেমন থাকে ?
ছোট জাত বলে সবসময় নাক সিটকাও ওদের দেখে
অথচ সেই তোমাদের এ চকচকে শহর দিয়েছে ৷
নিকষ কালো আঁধারেই সুন্দর,অসুন্দরের চর্চা চলে
আর সূর্য যখন গিলে খায় জলজ্যান্ত আঁধারটাকে,
তখন পুরোনো শহর নতুন মলাটে আবার জেগে উঠে
যেনো পুরোনো বোতলে নতুন মদের দোকান খুলেছে৷

নেতা তুমি কি শুনছো

নেতা আমাকে চিন্তে কষ্ট হচ্ছে তোমার?

আমি বাংলাদেশ জনগন নাম আমার

পাঁচটা বছর আগে গিয়েছিলে সেবার

ধবধবে সাদা পাঞ্জাবী ছিলো পরনে

হ্যামিলিয়নের বাশিওয়ালার মতো করে

পিছনে একঝাঁক তরুন তরুনীদের নিয়ে

ছুটে চলেছিলে তুমি শহরের প্রতি ঘরে

আর আশার বাণী শুনিয়েছিলে কানে

বলেছিলে অন্যায়ের প্রতিবাদী কন্ঠ হবে ৷

গরীব অসহায়রা স্বপ্ন দেখেছিলো বাঁচবে

তুমিই দেখিয়েছিলে সে স্বপ্ন ওদেরকে ,

একদিন কাঙ্খিত সে ক্ষণ এলো অবশেষে

বিজয়ের বাণী ধ্বণীত আকাশে বাতাসে

তখনও তুমি আশার বাণী শুনিয়েছিলে ৷

অথচ !

সময়ের সাথে সব নেতাদের মতো করে

তুমিও দেখি তোমার স্বভাব পাল্টে নিলে,

কাঁধে হাত রেখে কানে কানে এসে বললে

ভয় পেওনা আমি আছি তোমাদের পাশে ,

এটাকেই এখন ক্ষমতার রাজনীতি বলে

ইস্পাতের কি যেন কোমরে গুঁজে দিলে

বললে এটা কাছে রাখ কাজে লাগবে ,

আর আমার সাথে সাথে সবসময় থাকবে

আমার যা কিছু আছে সব নিয়ন্ত্রণ করবে ৷

কিন্তু বেইমানি করলে তোমার জীবন যাবে

অসহায় আমি ভয়ে কাতরতায় আরষ্ঠ হয়ে

তোমার কথা মেনে নিলাম মাথা নিচু করে ,

পথচলা শুরু হলো আমার ঘোর অন্ধকারে

শুনেছি সে ইস্পাত অনেককেই দিয়েছিলে ৷

অতঃপর একদিন তুমি সময় সুযোগ বুঝে

আমাকে দিয়ে জ্বলজ্যান্ত মানুষ হত্যা করালে ,

যেই আমার হাত কাঁপে একটা পিপরা মারতে ৷

আর বললে কেউ জানলে তোকেও মরতে হবে

নেতা তুমি কি জানো সেই রাতের পর থেকে

এতটুকু নিঃশ্ছিদ্র নিদ্রা আসেনি এ দু’চোখে ৷

গণতন্ত্র সে কোথায়

স্বপ্ন সাধের গণতন্ত্র আজ ঝুলে আছে
কখনো ফেলানী সীমান্তের কাঁটাতারে,
কখনো আদরের ছোট বোন তনু হয়ে
নির্জন জঙ্গলে রক্তাক্ত পড়ে থাকছে ৷

গণতন্ত্রের আজ দেখা মেলাটাই ভার
গণতন্ত্র নামে চলে গলাবাজি নেতার,
গণতন্ত্র স্লোগানে গঠিত হয় সরকার
ক্ষমতা পেলেই শুরু হয় অপব্যবহার ৷

সাধের গণতন্ত্রের আজ দেখা মেলে
শুধুই নেতা-নেত্রীর ঝড়ো স্লোগানে,
নয়তো সংবিধানের পাতা উল্টিয়ে
বাস্তবেতো সে কবে পালিয়ে গেছে ৷

গণতন্ত্র ঝলসানো শরীরে পড়ে থাকে
কোন এক বার্ণ ইউনিটের বারান্দাতে,
নয়তো নিরপরাধ এক বিশ্বজিত হয়ে
পড়ে থাকছে পথের ধারে রক্তাক্ত হয়ে ৷

গণতন্ত্র সেতো আজ শুধুই ফাঁকা মন্ত্র
গণতন্ত্রের মুখোশে চলে শুধুই ষড়যন্ত্র,
আর মনে-মনে বাসনা একনায়কতন্ত্র
গণতন্ত্র আজ চাবি দেওয়া একটা যন্ত্র ৷

স্বতন্ত্রতা হারিয়ে গেছে সাধের গণতন্ত্রে
মুখ থুবড়ে পরেছে সে গভীর ষড়যন্ত্রে,
গণতন্ত্র সেতো পরিণত একনায়কতন্ত্রে
রুপ নিয়েছে সে আজ এক শাসনতন্ত্রে ৷