কাজী জুবেরি মোস্তাক এর সকল পোস্ট

পরাধীন স্বাধীনতা

অনেক পেয়েছি অনেক দিয়েছো স্বাধীনতা ;
অনেক শিখেছি আর শিখিয়েছো স্বাধীনতা
এবার আমাকেই মুক্তি দাও প্রিয় স্বাধীনতা।

চোখ মেললেই দেখি স্বাধীনতার মহোৎসব ;
স্বাধীনতার নামে চলে কতো রঙিন উৎসব
তবু শেষকৃত্যের অপেক্ষায় পরে থাকে শব।

রাষ্ট্রযন্ত্র সে স্বাধীনতা নামক শিকলেই বন্দী ;
আর স্বাধীনতাও নেতাদের মানিব্যাগে বন্দী
বেচারা আমজনতার ভাগ্যের সাথেই সন্ধি।

স্বাধীনতা সেও আজ পরাধীনতায় আটকা ;
স্বাধীনতার স্বাধীন সত্তাটারই চাই স্বাধীনতা
যে স্বাধীনতা হবেনা কোনই বাক্সবন্দী প্রথা।

স্বাধীনতা আজ শুধুই ক্ষমতা ভোগের প্রথা ;
যে যার মতো ভাঙছে গড়ছে সেই স্বাধীনতা
স্বাধীনতা ভেঙে ফেলো সব বাক্সবন্দী প্রথা।

আমরা বাঙ্গালী

আমরা বাঙ্গালী যুগে যুগে ইতিহাস রচি
রাজা শশাংক, পাল, সেন, সুলতান আর মোঘল বংশ
এরাও ছিলো আমার এই বাঙ্গালীরই অংশ ৷
রাজা রামমোহন রায়, শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলা
আরও আছে তীতুমীর আর তার বাঁশের কেল্লা
বাংলা আর বাঙ্গালীরা আজীবন স্বাধীনচেতা ৷
নেতাজী সুভাষ বসু, ক্ষুদিরাম আরও কতজন
বাঙ্গালীরা ভুলেনি তোদের আজও করে স্মরণ।
৪৭ এ দেশ ভাগ হিন্দু-মুসলিম দুই জাত
কিন্তু বাঙ্গালীতো বাঙ্গালীই বাঙ্গালীই এক জাত
হিন্দু মুসলিম আরো কতো জাত তবুও নেই তফাৎ।
৫২য় ভাষার দাবিতে সোচ্চার বাঙ্গালী
রক্ত খেয়েছে হায়েনার দল দমাতে পারেনি ৷
১৯৬৬ লাহোর প্রস্তাব আর ৬ দফা দাবি
বঙ্গবন্ধুই ছিলো তার উত্তর সুরী ৷
৬৯ এ আগরতলা স্বরযন্ত্র আর গনঅভ্যুত্থান
বঙ্গবন্ধুই দিয়েছিলো নতুন প্রাণ
৭০ এ নির্বাচন এ যেন নতুন স্বপ্নেরই উন্মোচন ৷
১৯৭১ সাল আমার মা, বোনের দুঃস্বপ্নের এক মহাকাল
বঙ্গবন্ধুই ধরেছিলো এ বাংলার হাল
বাংলাদেশের স্বাধীনতা
এ যে নয়রে কোন কল্পকথা ৷
ইতিহাসের মলাটে আজও লেগে আছে
স্বাধীনতা কামীদের রক্তের দাগ
ওদের সংখ্যা নেহাতই কম না ত্রিশ লাখ ৷
বাতাসে আজও ভেসে বেড়ায়
আমার মা বোনের আত্মচিৎকার
ধিক ধিক তোদের শালা রাজাকার
আর শোন
আমরা বাঙ্গালী মাথা নিচু করতে শিখিনি ৷

স্বাধীনতা মানে

স্বাধীনতা
নয়কো পরাধীনতার কম্বলে গা ঢাকা দেওয়া,
স্বাধীনতা
নয়কো উশৃঙ্খলতার কাছে নত করা মাথা,
স্বাধীনতা
নয়কো তালুবন্দী ক্ষমতা কিম্বা অক্ষমতা,
স্বাধীনতা
জানেনা অন্যায়ের কাছে করতে নত মাথা,
স্বাধীনতা
নয়কো মুক্ত বিহঙ্গের ‍উড়তে কোনো বাঁধা,
স্বাধীনতা
নয়কো পড়ে থেকে মার খাওয়া আর মরা,
স্বাধীনতা
ন্যায়ের পথে অন্যায়ের সাথে লড়াই করা,
স্বাধীনতা
মানে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্তি পাওয়া,
স্বাধীনতা
আকাশের মতো আছে যার বিশাল বিশালতা,
স্বাধীনতা
নয়কো কোন সীমানা ভেদ করে চলে যাওয়া,
স্বাধীনতা হলো কাঁধে কাঁধ রেখে সামনে এগিয়ে যাওয়া।

সমাজ চিত্র //

ঐ যে ওখানে অজ্ঞাত যে লাশটা পড়ে আছে ;
লাশটা আমার ভাইয়ের তাকে কাল খুন করা হয়েছে ,
তার অপরাধ সৎ এবং আদর্শ নিয়েই বাঁচতে চেয়েছে
সন্ত্রাস; মাদক আর দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে।

ঐ যে একটু দূরে ধর্ষিতা যুবতীটা পড়ে আছে ;
সে আমার বোন ধর্ষণ করে তাকে খুনও করা হয়েছে,
তার অপরাধ সে ঘুণ ধরা সমাজেও স্বাবলম্বী হয়েছে
সমাজের রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করেই মাথা উঁচু করেছে।

ঐ যে একটু দূরে যে বৃদ্ধের লাশ দেখা যাচ্ছে ;
সে আমার পিতা গতরাতেই তাকে খুন করা হয়েছে,
তার অপরাধ টাকা নিয়ে রাস্তা দিয়ে একাই ফিরছে
টাকার সাথে তাই তার প্রাণটাই ছিনতাই হয়ে গেছে।

ঐ যে একটু দূরে শিশুটার লাশ পড়ে আছে ;
সে আমার সন্তান স্কুল ফিরতে দূর্ঘটনায় মারা গেছে,
তার কি অপরাধ? সেতো নিয়ম মেনে রাস্তায় চলছে
অথচ বেপরোয়া গাড়ি তার জীবন গতিই থামিয়েছে।

লাশগুলো হাসপাতালের মর্গে চলে এসেছে ;
পোষ্ট মর্টেম করার আগে ডোম ব্যাটাও মদ গিলছে,
মদ গিলে শরীরগুলো আবার কেটে চৌচির করেছে
ডাক্তার সাহেবও দূরে দাঁড়িয়ে খুঁটিনাটি সব দেখছে।

রাস্তার মোড়েমোড়ে আজ মানববন্ধন হচ্ছে ;
মামলা হয়েছে খুনিদের ফাঁসির জন্য সবাই ফুঁসছে,
অথচ আইনের চোখ কালো কাপড়েই বাঁধা থাকছে
বিচারকও নিক্তিতে ক্ষমতার ওজনটাই মেপে যাচ্ছে।

মানুষের মতো দেখতে

আমি দেখতে অবিকল মানুষের মতো
কিন্তুু সত্যিই কি আমি মানুষ ?
না !
আজও আমি মানুষ হতে পারিনি
কিন্তু ! আশ্চর্যের বিষয় হলো,
মানুষের তকমাটা ঠিকই আমি বগলদাবা করেছি ৷

আমি আসলে মানুষের মতোই দেখতে
তাই সবাই আমাকে মানুষই মনে করে,
আর সকাল সাঁঝে কুর্ণিশ করে চলে,
কিন্তু ওরা জানেইনা মানুষের মুখোশে অন্য মানুষ আমি ৷

মানুষের মুখোশে এক প্রতারক খুনি আমি
তোদের সরলতায় তোদের প্রতারিত করি
বিশ্বাসের সাথে অবিশ্বাসের খেলা খেলি
আর সুযোগ বুঝেই চালিয়ে দেই ছুড়ি ৷

মানুষের মতো দেখতে হলেও, আমি কিন্তু ধর্ষক
নারীর সুঢেল বক্ষপিঞ্জর দেখলে
ধর্ষক আত্মা আমার জেগে ওঠে
আমার নির্লজ্জ চোখ ওকে ভোগ করে
আমার বিষাক্ত লালায় প্রতিনিয়ত ওকে ধর্ষিত হতে হয় ৷
তবুও মানুষের মুখোশে আমাকে মানুষই মনে হয় ৷

মৃত্যুদন্ডের দাবি

আমি অমরত্ব নিতে আসিনি
আমি আমার মৃত্যুদন্ড নিতে এসেছি ,
আমি জানি এখনই আমাকে বন্দী করা হবে
শেকল পড়ানো হবে আমার উন্মুক্ত হাতে পায়ে ৷

আমি জানি আমি দেশদ্রোহী,
তোমরা কতোটা দেশ দরদী বলবে ?
আমার টাকা চুরি করে গড়েছো অট্টালিকা
তাতেও আবার বসিয়েছো দেখি সিসি ক্যামেরা ৷

আমি জানি আমি সংখ্যালঘু,
কারন বিদ্রোহী হয়ে জন্মায় খুব কম,
আর যারা বিদ্রোহী লাশ থাকে তাদের ডোবা, নালায়
তাদের নিস্তব্ধ দেহতে শেয়াল শকুনেরাও মচ্ছোব চালায় ৷

আমি জানি আমি একা,
কারন আমি কোন দুর্নীতিবাজ না,
পেনশনের ফাইল আটকে হাত পেতে দিইনা
অথবা অন্যায়ের সাথে আমি আপোষহীন চলি তাই একা ৷

মধ্যরাতে আমার ছবি যাবে প্রেসে,
আমার কন্ঠ রোধ করতে ক্রসফায়ার হবে,
শিরোনামে থাকবে আমার মৃত্যু হয়েছে বন্দুক যুদ্ধে
আর পা চাটার দলেরা তখন চায়ে টোস্ট ভিজিয়ে খাবে ৷

আমি অধিকার চাইতে এসেছি,
নির্যাতিত নিপীড়িতের কথা বলতে এসেছি,
মনে রেখো আমাকে হত্যা করলেই সব শেষ হয়ে না !

১০মাস ১০দিন পরে আবারো অামার জন্ম হয় অন্য কোন গর্ভে ৷

আমার চাওয়া

বুক সেল্ফে বন্দী পড়ে থাকা গণতন্ত্র আমার চাইনা ;
যে গণতন্ত্রর মুখোশে স্বৈরাতন্ত্রর বাস তাকে চাইনা ,
বুক ফুলিয়ে যে গণতন্ত্রে কথা বলা যায় তাকে চাই ৷

পর্দার আড়ালে বিদ্রোহী কবিতা আবৃতি করবোনা ;
জনমঞ্চে দাঁড়িয়ে পাঠ করতে চাই বিদ্রোহী কবিতা ,
আজকে আমি আমার বাকস্বাধীনতার মুক্তি চাই ৷

রাজনীতির পকেটে বন্দী গণতন্ত্রকে অামার চাইনা ;
হাতে-পায়ে শেকল জড়ানো কথিত গণতন্ত্র চাইনা ,
মুক্ত বিহঙ্গের মতো সতন্ত্র হয়ে উড়ার গণতন্ত্র চাই ৷

যে সংবিধান স্বাধীনতার মুক্তি দেয়না তাকে চাইনা ;
যে সংবিধান রাজনেতার হয় জনতার না তা চাইনা ,
আমার সংবিধানে আমার জন্য বলার ক্ষমতা চাই ৷

যে আইন দূর্বলের না হয়ে সবলের হয় তাকে চাইনা ;
ক্ষমতা অার টাকায় বিক্রি হওয়ার আইনও চাইনা ,
আমার আইন সেতো ভরসা ও আস্থার হওয়া চাই ৷

আমার দূর্বলতাকে পূঁজি করে দুর্নীতি হতে দেবোনা ;
আমার ন্যায্য হিস্যায় অনিয়ম হবে তাও মানবোনা ,
দুর্নীতিহীন অধিকারের প্রাপ্যতা নিশ্চিত হওয়া চাই ৷

ধর্ষিত হচ্ছে দেশ

ধর্ষিতার নীরব চিৎকারে আজ প্রকম্পিত বাতাস,
আর কতো তনু বিউটিদের হতে হবে এমন লাশ ?
অসহায় পিতামাতার সম্বল আজ শুধুই দীর্ঘশ্বাস ৷

ধর্ষকের কাঁধেই কাঁধ মিলিয়ে দিব্যি আছে সমাজ,
সাধের গণতন্ত্রে আজ চলছে শুধু ধর্ষকেরই রাজ
আর অসহায় ধর্ষিতার মাথায় শুধু কলঙ্কের বাজ ৷

স্বাধীনতা, স্বাধীনতা, স্বাধীনতা সে আজ কোথায়?
নীতিকথা সেও আজ মোটা মানিব্যাগে মুখ লুকায়
আইন সেতো বন্দী আছে ঐ ক্ষমতাধরের জিম্মায় ৷

গণতন্ত্র ? তাকেতো দেখি আজ সংবিধানে আটকা,
আর স্বাধীনতা ? সেও আজ একটা বাক্সবন্দী প্রথা,
মনুষ্যত্ব আজ মুখ থুবরে পড়ে থাকা এক নীতিকথা ৷

প্রতিনিয়তই ধর্ষণ হচ্ছে আমার সোনার বাংলাদেশ,
এ যেনো সেই একাত্তরের পাকিস্থানী হায়েনার বেশ
জাতি তুমি কতো লুকাবে প্রিয় পতাকায় তব ক্লেশ ?

কেউ কিচ্ছু জানেনা

নিশুতি রাতটা ঘুমিয়ে গেলে শহরে
ঘুমহীন ওরা দাঁড়িয়ে থাকে দুয়ারে,
অপেক্ষায় আছে কখন নড়বে কড়া
আর ঘুঁচবে ওদের অনাহারীর খরা।

কেউবা বলে বেশ্যা কেউবা পতিতা
ওরা জানে আমার অাসল চরিত্রটা,
জানে আমার দূর্গন্ধময় মনের কথা
যা ওরা প্রতিনিয়ত দেয় ধামাচাপা।

সুই সুতোয় অভিমানকে বন্দী করে
বুকচাপা বোবাকান্নাগুলো ঘাম হয়ে,
বারেবারে তোমার ললাট যায় ছুঁয়ে
তুমি আমি কেউই দেখেনি তাকিয়ে।

আঁকড়ে ধরি যখন বীর্যস্খলন সুখে
তখন জাত যায়না পতিতার স্পর্শে,
অথচ সাধু সাজি দিনের আলোতে
ভ্রু কুঁচকে দেখি, যাই নাক সিঁটকে।

আমার চরিত্রটা শুধুমাত্র ওর জানা
আমজনতা ওসবের কিচ্ছু জানেনা,
ওর পরিচয় এ সমাজে নষ্টা পতিতা
আর আমি দুধে ধোয়া তুলসী পাতা।

শূন্য শহর //

আজ আমার কোথাও যাওয়ার জায়গা নাই ;
তাইতো পড়ে আছি ঘুণে ধরা শহরের চৌকাঠ ধরে ,
বখে যাওয়া শহরের কাছে কিছু চাওয়া নাই ;
এ সমাজের প্রচ্ছদ জুড়ে শুধু অার্তনাদ খেলা করে ৷

এ রঙের দুনিয়ায় কোন কিছুই চাওয়ার নাই ;
তাইতো চাওয়া পাওয়া সব জলাঞ্জলি দিয়েছি আজকে ,
সাদাকালো চোখেই রঙীন পৃথিবীটা সাজাই ;
যে সমাজে রঙবাহারী মুখ ও মুখোশ ঘুরে আজকে ৷

এসমাজে আজ কোন মানুষেরই বসতি নাই ;
এখানে আজ ভিক্ষুক লুটেরা’রা থাকে ঘাপটি মেরে ,
এখানে আজ মূখ্য যেন শুধু বেঁচে থাকাটাই ;
অথচ মরে গেলে মানুষ মূল্যহীন তখন মনে পড়ে।

কোন পার্থক্য নেই

একসময় তোমাকে নিজের ছায়া মনে করতাম
তোমার চোখেই আমি নিজেকে দেখতে পেতাম
কখনোবা তোমার মাঝেই নিজেকেও হারাতাম
তোমার স্বপ্নগুলোকেও নিজের স্বপ্নই ভাবতাম ৷

কিন্তু !
প্রকৃতির মতো তুমিও নিজেকে বদলে ফেললে
আমিও হারিয়ে ফেললাম আমার ছায়াসঙ্গীকে
যে চোখে আমি হারিয়ে ফেলতাম এই নিজেকে
আজ সেই চোখ দেখি কামনার আগুন পুড়তে ৷

জানো ?
আমি নিজেই নিজেকে কখনো বিশ্বাস করিনি
তবুও কিন্তু তোমাকে বিশ্বাস করেছি ঢের বেশি
তোমার বিশ্বাসের মূল্য দিতে সঁপেছি নিজেকে
অথচ তুমি’ই দেখি অবিশ্বাসের খেলা খেললে ৷

সেই তুমি !
শরীরটাকে শেয়াল শকুনের মতো ছিঁড়ে খেলে
শুধু আমার ভালোবাসা-বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে ,
বাদামের খোসার মতো খেয়ে ছুঁড়ে ফেলে দিলে
আর আমি আজ উচ্ছিষ্ট হয়ে ঘুরছি পথে পথে ৷

জানো ?
কোনো পার্থক্য নেই তোমার আর ধর্ষকের মাঝে
একজন ধর্ষক যা করতো তুমিওতো তাই করলে ,
তোমরা দু’জনেই আমার চোখে সমান আজকে
তুমি ভালোবেসে ধর্ষণ করো , ধর্ষক জোর করে ৷

আহবান

পৃথিবীর বাতাসে আর পারিনা নিঃশ্বাস নিতে
বিষাক্ত বারুদের ধোয়া বুকে চলেছি পৃথিবীতে,
বাতাসের ভোঁ ভোঁ শব্দ শুনতে পাইনা কানপেতে
অস্ত্রের ঝনঝনানিটাই কেবল কানে শুধু বাজে ৷

অস্ত্রের মুখে আজ জিম্মি আমার প্রিয় স্বাধীনতা
অস্ত্রের মুখেই স্তব্ধ হয়েছে আজ সারা পৃথিবীটা,
অনুবিক্ষণেও আর পাইনা খুঁজে বিপন্ন মানবতা
মানুষের রুপে বাস করে যেনো অন্য আরেক সত্তা ৷

যদি বাঁচার জন্য অন্য চাই হাতে তুলে দাও অস্ত্র
বুঝেছি আজ এটাই হলো দলে ভেড়ানোর মূলমন্ত্র,
চিৎকার করে বলছো তোমরা-তোমরাই গণতন্ত্র
কাছে গিয়ে দেখি তোমরাই আজও হওনি একত্র ৷

ভুলে যাও আজ ভুলে যাও সব ধর্ম,বর্ণ,গোত্র
যুদ্ধ, দাংগা হানাহানি থেকে নিজেকে করো মুক্ত,
মানুষে-মানুষে ভুলে যাও আজ সকল দ্বিধা দ্বন্দ
বিশ্ব জুড়ে গণতন্ত্র হয়ে যাবে স্বাধীন আর স্বতন্ত্র।

অজানাই থেকে যেতো

তোমাকে ভালো না বাসলে জানতে পারতাম না ;
কি ভয়ংকর ভাবে ভালোও বাসতে পারো তুমি ,
ভালোবাসা মানুষকে অসহায় করে জানতাম না ;
ভালোবাসার কাছে অাজ অসহায় ক্লান্ত আমি ৷

তোমার কাছে না গেলেতো জানতে পারতাম না ;
বুকের পাঁজরে কতটা উষ্ণতা জমিয়েছো তুমি ?
কারো উষ্ণতায় পুড়েও ছাই হওয়া জানতাম না ;
তোমার উষ্ণতায় আজ জ্বলে পুড়ে ছাই আমি ৷

তোমাকে না দেখলে সৌন্দর্য কি জানা হতোনা ;
তোমার রুপের মাদকে মাদকাসক্ত আজ আমি ,
রুপের মুগ্ধতায় কেউ আসক্ত হয় জানতাম না ;
তোমার রুপের মুগ্ধতায় পাগলপারা এই আমি ৷

দুঃখবাজ / কাজী জুবেরী মোস্তাক

আমার চারপাশে অজস্র দুঃখ লুটোপুটি খেলছে
সাগরের বালুচরে যেমন নুড়ি পাথর পড়ে থাকে,
কেউ আনমনে হেঁটেও চলে যায় দু’পায়ে মাড়িয়ে
কেউবা আবার তা কুড়িয়েও নেয় অতি যত্ন করে।

চাতকপাখিরা যেমন নদী তীরে মরে পড়ে থাকে
বৃষ্টি জলের আশায় আকাশপানে’ই চেয়ে থেকে,
আমার চারপাশেও অজস্র স্বপ্ন মরে পড়ে আছে
একটা চাকরী না পাওয়ার দুঃখ আর হতাশাতে।

তোমাদের মুঠোফোনে যেমন খুঁদে বার্তারা জমে
আমার মনপাড়াতে তেমনি দুঃখ আর কষ্ট জমে,
খুদেবার্তার মতো করেই তা অনাদরে পড়ে থাকে
অযত্ন অবহেলায় কেউ পড়েই দেখেনা আমাকে।

আমিও কেমন যেন দুঃখজীবি হয়েই বেঁচে আছি
দুঃখগুলো যে ঘরের ছাদও ছুঁয়েছে তবুও আছি,
কোন একদিন দুঃখচাপা পড়ে মারা যাবো আমি
কেউ তা জানবে না ; যে জানবে সেতো শুধু তুমি।

অসহায় আমজনতা

তিনি আসলেন ; হ্যাঁ তিনি আবার আসলেন
যিনি পাঁচবছর আগে একবারই এসেছিলেন,
সাদা পাঞ্জাবী পড়ে ; যাদুর কাঠি হাতে নিয়ে
বৈষম্যের সমাজ বদলের সু-দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে ৷

সন্তানহারা পিতাকে বুকে টেনে নিয়েছিলেন
সুষ্ঠ বিচার পাইয়ে দেয়ার কথা দিয়েছিলেন,
অথচ;সেই খুনি তার খুব কাছের চেনাজানা
মাঝে মধ্যে একটেবিলেও দু’জনে খায় খানা ৷

সেদিন তিনি যে আশার বাণী শুনিয়েছিলেন
সে কথাগুলো গত পাঁচ বছরে ভুলেই গেছেন,
এবারও এলেন নতুন স্বপ্নের ইশতেহার নিয়ে
স্বপ্ন পুরনের স্বপ্ন দেখালেন মাথায় হাত ছুঁয়ে ৷

রাজনীতি মানে আজ শুধু ক্ষমতার মাদকতা
মুখে যার আমজনতার রক্ত সেই আজ নেতা,
এখানে কেউ মুখ খোলেনা চলেছে গা বাঁচিয়ে
নেতাই সব লুটেপুটে খায় জনতা থাকে চেয়ে ৷

চেতনাই আজ পূঁজি সবার রাজনীতির মাঠে
ভিখারীর বেশে নেতা ঘুরে জনতার চৌকাঠে,
আমজনতাও ঠিকই সেদিন বুঝবে তার ভুল
ভোটের শেষে নেতাই যখন দেখাবে বৃদ্ধাঙ্গুল ৷