খেয়ালী মন এর সকল পোস্ট

এক চিলতে ঘৃণা

এক চিলতে ঘৃণা

বরষার প্রাপ্তি টুকু চোখের কোণে রেখে
তোমার কাছে মুক্তার মালা চাইনি কোন দিন
ভরসা ছিলো মেঘের পরিবর্তনের সাথে
পাল্টাবে ব্যবহারিক কর্মকাণ্ড
ছারপোকার দল শুধু রক্তই আহার করে
বুঝতে গিয়ে সময় পার।

ততদিনে আমিও বুঝেছি নৈর্ব্যক্তিক ভালোবাসার থেকে
অনেক বেশী প্রয়োজন নৈবেদ্য পূজার থালায়
উচিত অনুচিতের বেড়াজাল টপকে আমার ঘাড়ে
শূর্পণখার আনাগোনা বারে
বিষয়ের বিষে আমাকে উপর্যুপরি ধষর্ন করে
কাগজের স্বামীরত্ন, যা ভালোবেসে কুড়িয়ে এনেছি
রাস্তা থেকে হৃদয়ের রাজপ্রাসাদে।

বিবেক বা সমাজ কোন উপাখ্যান লেখে এই
নন্দিত শোভা যাত্রার?
ধর্ম কিংবা রাজনীতির কোন
পথে চলে এই দমননীতি ?

এখন আর সান্ত্বনা না খুঁজে জোর কণ্ঠে বলি
আমি ঘৃণা করি তোমাদের, সকল পুরুষদের
এমনকি আমার বাবাকেও যারা প্রগতি নয়
আটকে আছে শুধু গতিধারায়।

____________________________
(তারিখঃ শুক্রবার, ০১/১০/২০১০ – ০৭:১১)

লড়াকু জীবন

লড়াকু জীবন

যাপিত সময় আমার চোখে আষাঢ়
মলিন রং বে রঙের মেঘ বুকের মাঝে,
আর দিগন্তর হৃদয় জুড়ে শুধুই কাদামাটি।

তোমার ইচ্ছের ঘোড়া চাঁদের আলোয়
শুধুই অলি কিংবা গলি খোঁজে বৈরী শহরে,
তবুও বিহঙ্গের তুলনায় ভুল হয়ে যায় অগোছালো জীবনে।

কাঁচের চুড়ি ভাঙ্গে যাবে জেনেও
সখ করে সাজ সজ্জা স্বপ্নের মায়াজালের জন্য।
ধারনা থেকে বাইরে বেরোতে পারিনা
বলেই সূঁই সূঁতায় সেলাই করি হৃদয়ের ক্ষত,
ভালোবাসি বলেই ভুলতে পারি না
অক্ষমতার কিংবা ক্ষমতার ওলট পালট,
দুপুর বেলা ঘুম আর আসে না, অস্বস্তির
খেলা ঘরের পুতুল গুলো ময়লা জামা

পরে বাক্স বন্ধী অনেক দিন থেকেই।
তবুও আমি সময়ের প্রাচীর ভেঙে উঠে দাঁড়াই
জটায়ু মত নিজেকে বির্সজন দিতে।

__________
১৩/০৭/২০১৮

পরিসীমা

পরিসীমা

শৈশবে তুই রংবেরঙ ফুল
কৈশোরে হও নিটোল দীঘির জল
বয়স সন্ধি চপলা এক নদী
মনের কথা কার কাছে কই বল

যখন তখন ঝরনার হাসি হেসে
গড়িয়ে পরিস পাথর গুলোর গায়
পাথর বুকে কতটা জল ধরে
চল ভেসে যাই
আমার ছোট নাও এ।

একটা আকাশ বুকে নিয়ে
চোখের কোনে মেঘ
সবুজ বনে দাবানল হয়
ঘার ঘুরিয়ে দেখ

শহর জুড়ে অষ্ট প্রহর
মিছিল চলে রোজ
পুলিশ গুলো লাঠি হাতে
চাইছে প্রেমের খোঁজ

যাচ্ছে কেটে সময় গুলো
দিনে এবং রাতে
ভাবছি চুলে জট পাকাবো
বট বৃক্ষের সাথে।

___________________
কুবিতা ০৯/০৭/২০১৮

তোমার গাঁয়ে গাও

তোমার গাঁয়ে গাও

স্বপ্ন দেখে বন্ধ ঘরে
অন্ধ হয়ে একা
অন্ধকারে হাতরে চলি
রাস্তা গুলো বাঁকা।

চোখের আলোয় পাইনা খুঁজে
ময়ূর পঙ্খি নাও
হাতের ছোঁয়ায় ফসল বুনি
আদ্র তোমার গাও।

পরিপাটি তোমার ঘরে
বসত করে সুখ
বাক্যবাগীস মানুষ আমি
শুস্ক আমার বুক।

পাঁজর থেকে সকাল বিকাল
লাভার উৎগিরন
ইচ্ছা গুলো ধুমায়িত
তুফান উঠা মন।

তবু তোমার গাড় ছায়া
আমায় ঢেকে যায়
অন্ধ মানুষ বেচে থাকি
তোমার কোমল গাঁয়।

_______________
২৪/০৮/২০১১

বাঁচার জন্য খাঁচার মাঝে

বাঁচার জন্য খাঁচার মাঝে

খুব ভয়েতে আটকে থাকে
চোখে দুটি পাতা
রান্না ঘরের মেঝেতেই
আমার বিছান পাতা।

মামানি আজ বলে গেলেন
নরবি চরবি কম
কথার ভার এমন ছিলো
ঠিক যেন এক যম্।
কি করি বল এর আগে তো
একলা থাকিনি
খিধে পেটেও বুক থেকে মার
মুখটি তুলিনি।

কিন্তু হঠাৎ কি যে হলো
কান্না থামে না
মা কেন আজ এমন হলো
বুঝতে পারি না।
মামানির ছোট্ট মেয়ে
তার যে পুতুল সোনা
আমার জন্য তেমন একটা
যায় না কিগো কেনা?

ধরতে গেলেই খুন্তি হাতে
তেড়ে আসে যম
এই মেয়ে তুই বাবুর কাছে
আসবি কিন্তু কম।
মাঝে মাঝে বসে ভাবি
মামানি ও তো মা
তবু আমায় তার মেয়ের
সোদর ভাবেন না !

উঠতে বসতে চাঁদ কলঙ্ক
লাগে গালেতে
চাঁদের আলো ছিলো মায়ের
ভাঙ্গা চালেতে।
কেন যে মা তুই চলে গেলি
একলা ফেলে মোরে
মানুষ রূপের যম গুলো সব
আমার পাশে ঘোরে।

আমার যখন দুঃখ হতো
আকাশ পানে চাই
এই না মরার ফ্লাট ঘরে
আকাশ কোথায় পাই।
আকাশ পেলে তারার সাথে
গল্প করে ভোর
হঠাৎ গুতোয় চোখ মেলে চাই
এত বেলা হয়ে গেল
কি হয়েছে তোর?

____________
০৪/০৬/২০১১

তখন তুমি এখন তুমি

তখন তুমি এখন তুমি

এইতো সে দিন
চাঁদের আলো ধরতে গিয়ে
তপ্ত রোদে গা ভেজালে;
আগুন টাকে জ্বালবে বলে
দু হাত ভরে ছাই উড়ালে।

এইতো সে দিন
ফুল গুলো কে ছোঁবে বলে
রক্ত দিয়ে হাত রাঙ্গালে;
পাখির পালক ধরতে গিয়ে
স্বপ্ন গুলো খুব আড়ালে।

এখন তোমার হিসেবি মন
প্রজাপতির ডানায় আঁকে
চাওয়া পাওয়ার অংক নিয়ে
চিত্রা নদীর বাঁকে বাঁকে।

এখন তোমার সন্ধি গুলো
সঙ্গী দেখে বিচার করো
এখন তুমি ভালো মন্দ
অনেক কিছুই বুজতে পারো।

এখন তোমার সুখের ঘরে
বারো মাস শরৎ থাকে
তবু যখন একলা একা
আটকে থাকো স্মৃতির ফাঁকে।

_____________
২৩/০৮/২০১১

সুখ দুঃখের বসতবাড়ি

সুখ দুঃখের বসতবাড়ি

কষ্টের রঙ নীল হলে আকাশ আমার মত
চাঁদের মত সুখী হলে তোমার মুখের মত।
তোমার আমার এক শহরে ঘর তবু
মেঘে ঢাকা দিনরাত্রি আমার পাঁজর জুড়ে
খেলাকরে হাওয়ায় ভেসে ভেসে পুতুল খেলার
মত করে এইতো আপন নয়তো পর
শুধুই যুগল শুক্লপক্ষের রাতে দু’পথে যাই সূর্য উঠলে প্রাতে।

কৃষ্ণা তিথি তখন থাকে বুকে
চাঁদ ঘুমায় অন্যের ঘরে সুখে
তারা গুলো করে কানাকানি
মেঘের দল ঝরাক চোখের পানি
দুঃখ আমার তাতেও কিছু নাই
আকাশ নীলে প্রহর গুনে যাই
ভাঙবে যখন কৃষ্ণপক্ষের ঘুম
আসবেই ঠিক আমার পাড়ায় তুমি
তারাগুলো রাখবে তোমায় ঘিরে
শূন্য আমি নিঃশব্দেই রবো
একটিবার তোমায় দেখার পর
নীলে নীলে নীলকন্ঠী হয়ে
সকল কিছুই যাবো আমি সয়ে
যেমন ছিলাম হাজার বছর ধরে
তেমনি করেই কাটবে আমার জীবন
সুখ দুঃখের হয়না মিলন কভু
একই পাড়ায় বসত করে তবু।

ভাঙ্গনের আবরণ

ভাঙ্গনের আবরণ

নিতান্ত নিরুত্তাপ তোমার চোখ
নাগিনীর রক্ত স্রোত
সেই চোখে ভয়
তবুও তৃষ্ণার্ত তুমি
যৌবন জ্বালায় ক্ষয়।

নীলাভ আনন্দ আমার
ভূমি বিহীন রাজা
ভাঙ্গা পুতুল বাসর সাজাই
দুঃস্বপ্নের পোশাক পরে
গাঢ় দুপুরে সাজা।

তবুও সোদা গন্ধে দুজনের জাগরণ
ধোঁয়া উঠা কাপে থাকে
ভাঙ্গনের আবরণ
রং নিয়ে কারকারি
এ কেমন কারবার
ধূসর বেলাতে এসে
ভয় শুধু হারাবার।

ঝিনুকের টিপ গুলো
পুরে হয় সাদা চুন
বাড়ন্ত ঝাউ বন
পুরে যায় কি আগুন !

সৌখিন স্নিগ্ধতা ভেঙে দেও উল্লাসে
কামিনীর পাতা গুলো ঝড়ে যায় মাঝ রাতে
পরাজয় মেনে নিয়ে ভাঙ্গনের রাস্তায়
হৃদয়ের আড়ালে হৃদয়ের হায় হায়।

_____________
২৪/০৭/২০১১

যোগ বিয়োগের ঈদ

যোগ বিয়োগের ঈদ

মেয়েটি তখনো কেনেনি ঈদের শাড়ী
বাবা বলেছিলো ফিরবে যখন বাড়ি
আনবে সাথে লাল ফিতা লাল চুড়ি
যাবার বেলায় কপালেতে চুমু মেখে
বলেছিলো সে তুই যে আমার জান
মেয়ে বলেছিলো বাবা …
তোমার জন্য সদা কাঁদে মোর প্রাণ।

বাবা ভাবে
শহরেতে গিয়ে ঈদ তিন দিন রিক্সা চালাবে মেলা
এ সময়ে সব শহরে বাবুদের থাকে বেশ দিল খোলা।
সাথে নিয়ে কিছু চিড়া আর মুড়ি বাবা যায় শহরে,
মেয়ে বসে ভাবে এবারের ঈদ কাটবেই খুশিতে
দুই দিন যায় তিন দিন যায় বাবাতো আসে না বাড়ি
ময়ে বসে ভাবে এইবারে ঠিক বাবার সাথে করে দেবে খুব আড়ি।

চার দিন যায় পাঁচ দিন যায় বাবার খবর নাই
আড়ি ভুলে মেয়ে চিন্তায় পরে কি করি কোথায় যাই।
ছয় দিন পরে খুব সকালে কাঁধে বয়ে এক লাশ
ধীর পায়ে হেঁটে পুলিশ দাঁড়ায় তাদের বাড়ির পাশ।

গলা করে ক্ষীণ পুলিশ শুধায় এটা কাহার বাড়ি
চঞ্চল চোখে মেয়ে তাকায় আলুথালু তার শাড়ী।
দুই দিন আগে মহা সড়কে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট
এই বডি ছাড়া শাড়ি, চুড়ি ফিতা রয়ে গেছে অবশিষ্ট।

রাখুন এই সব আপনার কাছে শেষ উপার্জনের কেনা
দানবের ঘায়ে মুখমণ্ডল তার যায় না মোটেই চেনা।
হাতে নিয়ে চুড়ি শাড়ী নিশ্চুপ মেয়েটি আকাশ পাণে চায়
চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পরে মৃত বাবার গায়।
________________________________

৩১/০৮/২০১১

বয়সি বৃক্ষের কথা

বয়সি বৃক্ষের কথা

বৃক্ষের ডাল গুলো শুকিয়ে যাচ্ছে বয়সের ভারে,
গাছের শেকড় থেকে সরে যাচ্ছে মাটি, যেটুকু পানি দরকার ছিলো তা শুষে নিয়েছে আগাছার দল, পাতাগুলো হলুদ হয়ে আর রোদ থেকে প্রয়োজনীয় রসদ নিতে পারে না
হায় জীবন
হায়রে জীবন……
কল্পিত ধারার বাঁধ ভেঙ্গে জোয়ারের পানি ভাসায় দু’কুল
ভেসে যায় গৃহস্থালি, ভেসে যায় টিনের চাল, ভেসে যায় গবাদি পশু,ডুবে যায় দৈনন্দিন সুখের ক্ষেত খামার।

হে আমার ভুবন ভোলানো হাসির ভূমিকম্প তোমাকে আর খুঁজে পাইনা বয়সিনী ভালোবাসায়, সেই টোল পরা গালে আজ শুধুই উৎকণ্ঠার বালিরেখা, কাছে সরে আসার সংকল্প নিয়ে হাতে হাত রেখে যে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম সেই সৌখিন লেবাস আজ নিয়েছে অবসর।
তোমাকে আর তোমার মাঝে খুঁজে পাই না,
তোমাকে আর আমার মাঝে খুঁজে পাই না,
আমাকে আর তোমার মাঝে খুঁজতে যাই না
তোমাকে আর দুজনের মাঝে দেখতে পাই না।
এখন শুধুই ভর করে বেঁচে থাকার দায়,
হাতের লাঠিকে ভর করি, চোখের চশমায় ভর করি,
ঔষধের দোকানে ভর করি, নির্ভরতার ভর করি সন্তানের কাছে।
পুড়ে যাওয়া সময়, ক্ষয়ে যাওয়া সময়, ঝরে যাওয়া সময়, ঝড়ে যাওয়া সময়;
হায় সময়
হায়রে সময়!

নীড়ে যাবার সময় এসে গেলো পাখি
শুকনো ডালে বসে করো ডাকাডাকি;
সজীব উল্লাস আসবে না ফিরে
থাকবে না সবুজ তোকে আর ঘিরে;
বৃথা যাবে দিন, কিছুটা মলিন
একাকি জীবনের দরকষাকষি
বালিসে তোসকে নাক ঘসাঘসি
বয়সি বৃক্ষের জমানো যে স্মৃতি
সবটুকো তার হয়ে যাবে ইতি।

০৫/০৬/২০১৮

সুখে থেকো

সুখে থেকো

চাইনা আমায় হৃদয় ধোয়া জল
যাও ফিরে যাও অষ্ট প্রহর সুখে
আমার আছে অজানা পথ
নিকষকালো ধ্রুপদী সম্বল।

বাহুর ডোরে না থাক ফুলো লতা
কুঞ্জ কালো মেঘের সাথে বাঁধবো হাড়ি পাতিল
দেখবো চেয়ে ছন্নছাড়া পাখি
কেমন ডাকে বলে সে কোন কথা।
নাইবা পেলাম তপ্ত ভাতের থালা
পাহাড় বেয়ে পাথরকুচির সাথে
নামবে জেনো ঠাণ্ডা জলের ধারা
সেথায় আমার আপন নিবাস হবে
বাতাস লেগে গাছের পাতায় অনেক কথা কবে।

নাইবা থাকুক মিষ্টি মুখের হাসি
ঝরনার জলে ধুয়ে নেবো শোক
আমার মত মাধুকরী হয়ে
দেখবে আমায় কত শত লোক।
কেউ আনবে পদ্ম ফুলের মালা
কেউ দেবে জবা আমার পা এ
বৃক্ষলতা অন্ন দেবে ডালি
ঘুমিয়ে যাবো কোন গুহার গাঁ এ

জানবে তুমি গুহার কোন কোণে
সন্ন্যাসী এক ভীষন রকম তেজী
পথ ভুলে নিজেই নিজের কাছে
একটি ফোটা চাইবে তুমি সুখ
খুঁজতে যাবে কোথায় মুনি থাকে
হাতে নিয়ে নৈবেদ্যের ডালা

ধুলোপড়া চুল দারি আর গোঁফে
চিনতে তুমি পারবে নাকো মোরে
সিঁদুররাঙা তোমার সিঁথি থেকে
সিঁদুরবিন্দু ঝরবে আমার পায়ে
ধ্যানরত কোষ্ঠবদ্ধ চোখ একটিবার হয়তো যাবে কেঁপে
তবু আমি বলবো নাকো কথা
পাহাড়ি পথ ফেলে যাবো দূরে
সুখে থেকো পেয়ো না আর ব্যাথা।

অমীমাংসিত লেফাফা

অমীমাংসিত লেফাফা

সময়ের চড়াই-উতরাইর ভাঁজে ভাঁজে নিজেকে সাজাতে সাজাতে
সময়ের গা বেয়ে উঠে আসে সর্বনাশা সময়। যতটা হলে ঠিক মানায়,
সেই গোল টেবিলে ততটা খাদ্য ভরা পাত্র রেখেও হাতে লাঠি নিয়ে
চলে লোপাট জীবন, পায়ের উপরে এখন আর সবটুকু ভরসা
করা যায় না। যদৃচ্ছায় হেঁটে বেড়ানোর স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে
ফুট মেপে কিনে দেয়া বিচিত্র বিলাসী ইট। এখন বেশ বুঝতে পারি
বয়সী বিরহ ভালোবাসার নয় নির্ভরতার। আমার বিরচিত
রামায়নে রাম আছে, সীতা আছে, লক্ষন আছে, রাবন ও আছে
তবে তা কিনা সময় ভেদে। একদা রাম, যিনি ছিলেন
তিনিই এখন রাবন, আর সীতা হয় সূর্পনাখা। কিছুটা
ছায়াছবিতে দেখা এক নায়কের দুইটি অভিনয়ের মতো।
তবু আমরা সংসার বিয়োজন করতে পারি না, বর্তমানের
গা বেয়ে উঠা সর্বনাশা শীতল সময়ের সাপের জন্য।

স্মৃতির হৃদয়ে বিরাজ করা চিন্তার কোষগুলো ফাঁসুরে ডাকাত হয়ে
আমার সামনে হেঁটে বেড়ায়, আমি তাকে বলতে পারিনা
দেখ এই আমি একদিন তোকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন বুনছিলাম,
স্বপ্নের গাছে পানি দিয়েছি, সার দিয়েছি, নিজের সময় নষ্ট করে
তোকে স্বপ্ন দেখা শিখিয়েছি, তোর স্বপ্ন পূরনের জন্য
নিজের স্বপ্ন বিক্রি করেছি জলের দামে ।
আসলে আমি কিছুই বলতে পারি না।
কিছু বলার মত অবস্থান আমার আর নেই
কারন আমার সরকারী পেনশনে পাওয়া অর্থগুলোর সবটুকু
স্বপ্নের হাতে তুলে দিয়েছি তাকে স্বপ্ন দেখাবো বলে আর নিজে
কিছু বয়সি স্বপ্ন বুনবো বলে। আসলেই জীবনের সাথে কড়ির সর্ম্পক
নাড়ি ছেড়া ধনের সর্ম্পক্যর থেকেও বোধকরি বেশী।

মাঝে মাঝে নিজেকে বেশ পরজীবি কোন গুল্ম বলে ভুল করি।
কিছু পরজীবি গাছও তো ফুল ফোটায়
কিন্তু আমি তো তাও পারলাম না।

এক মিনিটের নিরবতা

এক মিনিটের নিরবতা

শোক গুলো আজ তাড়িয়ে বেড়ায়
ছড়িয়ে পরে অনেক কাছে কিংবা দূরে;
আসল কথা শোক গুলো আজ
কেটলি থেকে খুব সহজে ঢেলে রাখি
চায়ের কাপে। চেয়ে দেখি যত্রতত্র
মাইকে চলে মিলাদ মাহফিল,
ফুলগুলো সব লুটিয়ে থাকে
বেদীর উপর খবর হতে;
বোদ্ধারা সব আলোচনায়
কেমন করে শোক এলো আজ;
শোকের জন্য বন্ধ যে কাজ
কতটা তার ধারণ করি
খুব গভীরে বলতে পারো?

মাথার উপর টেরা যে চাঁদ
কত সময় আলো দেবে
দিন পনের চলে গেলে
খুব আঁধার অমাবস্যা।

সবই বুঝি অনেক খুঁজি
কিন্তু কেমন দিশেহারা
ফুটপাথেরৈ ঐ ময়লা থেকে
খাদ্য খোঁজে কোন বেচারা।
যাদের জন্য শোকের মাতন
তাদের কথা বরণ করে
স্মরণ তাদের যতই করি
ধারণ যদি না হয় কথা
শোক গুলো হয় নিরবতা
এক মিনিটের শুধুই এক মিনিটের।

ভানুমতীর খেলা

ভানুমতীর খেলা

কথায় কথায় গতর জ্বালা
কাল খেয়ে যায় উলি তে
নাচতে গিয়ে ঘোমটা টানি
বিরাগভাজন পাবলিকে

মরার ঘরে মরানদী
বান ডেকে যায় পাশের ঘর
যখন এলো ভানুমতী
রূপ দেখে তার সাজলি বর

করবি কিরে, চাইছো বা কি
ভাবিস কিছু বুঝি না
সুশীল নামে ভোদই সেজে
করিৎ কর্ম করে খা?

সবুর সবুর সবুজ ভূমি
মেওয়া কিন্তু ভাবের খেল
গাছের ফল তো খাওয়া সারা
এখন তবে তলার গিল

অংক দিয়ে বুঝিয়েছিল
যোগ বিয়োগ পূরণ ভাগ
যোগাযোগের মরন প্যাঁচে
ব্যবসাদারের মাথায় হাত

সইছি অনেক সইবো আরো
যত সময় হাত বাঁধা
একদিন ঠিক মুক্তি নেবই
দেখিয়ে দেব ঠিক ধারা

সহজ করে বলছি এখন
শুনে রাখ তুই আকাশ চোর
রাতের পরেই অালো দেখা
রাত কাটলেই আসে ভোর

২৫/০১/২০১৮

পাপিষ্ঠা কুসুম

পাপিষ্ঠা কুসুম

তোমার জন্য কুসুম ফোটা দিনে
শরীর থেকে স্বপ্ন কুসুম জরায়ুর সেই পাকে
কুসুম বলে ডাকতো আমায় স্বজন
এখন তারা ভিন্ন নামে ডাকে।

তোমার জন্য ভাবনা কুসুম রোজ
ভাবে বসে ভালোবাসার কুসুম
ধীরে ধীরে অঙ্গ বারে, ভার
হবে কি আর কুসুম দেখা তার ?

পাড়ার মোরে শালিস ডাকা খুরো
এখন বলে “ওরে কুসুম তোর মত ফুল নাই”
তার বিচারে আমি ছিলাম দোষী
“ভালোবাসার কি অন্য উপায় নাই ?”

এখন আমার কুসুম ফোটা দিনে
অট্টহাসির কুসুম ডাকে মনে
রোজই চলে কুসুম দেয়া নেয়া
তবু কুসুম হয়না এখন পেটে।

যেই সে ঘরে তোমায় নিয়ে
আমি কুসুম “কুসুম”
সেই ঘরে অনেক কুটুম আসে
তারাও কিন্তু খুব আদোরে
কুসুম বলে ডাকে।

সত্যি শুধু আমার কুসুম যারা
ডাকতো কুসুম খুব গভীর মমতায়
সব ভেসে যায় কুসুম দিনের বাকে
গালি দিয়ে তারা আমায়
ভিন্ন নামে ডাকে।