খেয়ালী মন এর সকল পোস্ট

ফাগুনের কবিতা ৪

ফাগুনের কবিতা ৪

ফাগুন দিনে রোদের হোলি
গায় মাখিয়ে তোমায় খুঁজি
বই মেলাতে যত্রতত্র;
আসবে ভেবে চাতক হয়ে
অপেক্ষাতে প্রহর গুনি।

রোদ ঝড়ে যায়,
নিয়ন আলোয় চোখ জ্বলে যায়
তবু কেন ভুল ভাঙ্গে না;
বিশ্বাসে তে চির ধরে না।

ঠিক বসে ঠায় ঘাসের উপর শুকনা পাতা
হাতে তুলি গুড়িয়ে ফেলি বিষাদ সুরে;
ধীরে ধীরে সময় বারে ঘড়ির কাটায়
পসার গুলো বন্ধ হলে
বিসর্জনের বাজনা শুনি।

ঠিক জ্বলে যায় পথের আলো
বিরান মাঠে একলা আমি
ধীর পায়ে দু চার কদম
হঠাৎ করে দমকা বাতাস
হাত ছুঁয়ে যায় কোমল সুরে
যায় বলে যায়
অপেক্ষার প্রহর গুনে
ভালোবাসায় পাস করেছো।

অমীমাংসিত লেফাফা ২

খেলাঘর ভেঙ্গে গেছে বহুবার তারপরও
বেঁধেছি ঘর, কুড়িয়েছি স্বপ্ন, মেলেছি ডানা দিগন্তের হাতছানিতে;
সমান্তরাল জীবনের বাঁধ ভেঙ্গে হঠাত জেগে ওঠা বেলোয়ারী ঝাড়বাতি
দিনের আলোয় চমক দিতে পারেনি কোন দিন। পুরানো স্মৃতির ধূলো সরিয়ে
সঞ্চিত যা কিছু অর্জন ছুঁয়ে যায় হৃদয় তার সবটুকু কেড়ে নিয়েছে যান্ত্রিক বিবেকবোধ;
তুমি, আমি বা আমাদের মাঝে ধীরে ধীরে দেয়াল তুলে দিচ্ছে মাকড়সার জাল
তাই বন্যদশা থেকে মুক্তির মুক্তা সাগরের গভীরে।

মস্তিস্কে স্নায়ুর চাপ বাড়ে ক্রমশ,
ব্যস্ততাহীন ব্যস্ততা গড়িয়ে চলে ধুলোর স্রোতের মত
তারপর বাতাসে বাতাসে উড়ে যায় দৃষ্টি সীমার বাইরে।
তবু জীবনের ধুলো ভরা বাঁশি খুঁজতে গিয়ে হাতে তুলে নেই
রাতের তারা, জোনাকির জীবদ্দশা, বড়জোর পঞ্চমী চাঁদের আলো।
আমি জানি আমার উড়াল ঘোড়ার পিঠে কোন রাজকন্যা
স্বপ্নতে বসতে চাইতে পারে, তাও ভুল করে,বাস্তবতা বড়ই বেরসিক।

আমার মনের জীর্ণ ঘরে মাথা তুলে দাঁড়াবার জন্য কেউ বাস্তবতা নিয়ে ঘুরে দাঁড়াবে না।
অলস বিকেল গল্প বলার আয়োজনে কেউ বসে থাকবে না আমার জন্য,
আর কেন এমন দন্যদশা, এর উত্তর আমার কাছে অমিমাংসিত কারন
আমিও বুঝেছি নৈর্ব্যক্তিক ভালোবাসার থেকে অনেক বেশী প্রয়োজন নৈবেদ্য পূজার থালায়।

তবু আজো আমি একাকি ভিজে চলি এক ছন্নছাড়া চাঁদের আলোয়,
গলিত জোৎস্না আমাকে দগ্ধ করে, মাকড়সার জালের মায়া বাঁধন
আমাকে ঠেলে নিয়ে যায় সময়ের শেষ প্রান্তে আর
ঘরগেরস্ত চাঞ্চল্যে আজও তুমি বাগান সাজাও নিজ হাতে।

ফাগুনের কবিতা ৫

ফাগুনের কবিতা ৫

ভালোবাসো তাই ভেবোনা
মেঘ কিনেছি তোমার জন্য;
তাকে আমি বন্ধী করি
সংগোপনে কারণ অন্য।

ভালোবাস তাই ভেবোনা
বৃষ্টি গুলো তোমায় দেব;
তাকে রাখি বুক পকেটে
কান্নায় মুখ ধুয়ে নেব।

ভালোবাসো তাই ভেবেনা
চাঁদের আলোয় সাথী হবে;
ভালোবাসায় সুখ দিয়েছে
কোন রমনী কাকে কবে।

ভালোবাসো তাই ভেবোনা
বিশ্বাস সব তোমায় দেব;
প্রেম কিনতে প্রেমই লাগে
বিশ্বাসি হয়ে বিশ্বাস নেবো।

___________
ছবি : সিম্বলিক।

আড়াল

সুখের ভঙ্গুর সময়
দু’ হাতে আকাশ ধরি
তার একটু নীচে
মেঘেদের ঘর বাড়িতে
নিত্য আনাগোনা
কুমারের মত মাটি ঘেটে ঘেটে
বুঝলাম …
আড়াল কোন সহজ কাজ নয়।

সুদীর্ঘ স্বপ্ন গুলো
দুই হাতে ঝাঁপি বন্ধী করে
সমস্ত বনানীতে খুঁজলাম
শুঁকনো পাতা হয়ে;
সাগরের জল হৃদয় দিয়ে
উল্টে পাল্টে দেখলাম,
পাথর গুলো ধূলার মত
ভেঙ্গে ভেঙ্গে দেখলাম,
না এ ভাবে হয় না
জীবন খোঁজা
ভঙ্গুর সময় জীবনের অপচয়
পুরনারী অন্তরালে
আমিতো আড়াল হতে পারি না।

অপেক্ষা

পরাজিত বয়সী আবরণে মুছে যায় উৎসবের ক্ষয়
জীবনের কৌতূহল আর আবেগী করে না,
তারপরও বসে আছি চৈত্রের হাওয়া গায় মাখিয়ে;
সেই ক্লান্ত সময় কপোলের আবিরের মত মুছে যায় না,
স্মৃতির গহীনে বসে থাকে নেশাখোর মানুষের মত।

জৈবিক তাড়নার থেকে মানসিক সুখ খোঁজা বোধ গুলো
জীবনের গভীরতা ছুঁয়ে যায় অনেক বেশী। নষ্ট প্রহরের প্রাপ্তি গুলোই
স্ফটিক হয়ে থেকে যায় মগজের কোষে।
নিরুত্তর মানুষের জন্যেই কিছু কিছু প্রগতি থমকে গিয়ে
দগদগে উনুনে মাছ ভাত রান্না করে।

স্বীকার করতে দোষ নেই রাতের আঁধারে আমিও কাল্পনিক
বালক হয়ে উৎসে খুঁজে ফিরি তৃষ্ণার জল;
অতলান্ত শব্দে বিমোহিত হই, জেগে উঠি বিবস্ত্র, হিংস্র;
আবার দিনের বেলায় ধার্মিক পুরুষ।

প্রহর গুনে গুনে দিন কাটে অপেক্ষার যাঁতাকলে
নিজেকে মানুষ ভাবা থেকে বাইরে বেরিয়ে দেখে
হিংস্রতা মেনে নিয়ে জেগে ওঠে ঘৃণা সবুজের ক্ষেতে।

তারপরও বসে থাকি, তারপরও বসে থাকতে হয়
চৈত্র দিনের শেষে আধো ফোঁটা চাঁদের আলোয়
সঞ্চিত উষ্ণতা নিয়ে প্রণয়িনীর চপলা আঙ্গুল
কিংবা বৈশাখী ঠোঁটের ঝড়ের আশায়।

জঞ্জাল বেদনাময় রূপকথা

কোথায় যেন থমকে গেছি
পুরানো স্মৃতির ধূলো সরিয়ে যা পাই তা আর এখন আমার নয়,
উই পোকায় কেটে রাখা কবিতার বইয়ের মত অচল জঞ্জাল বেদনাময় রূপকথা।
কোন দিন চোখ তুলে দেখতে পারিনি কতটা ক্ষত ভেসে গেলো আবিরের রঙে,
কোন মায়াবী হরিণী চোখ মহুয়ার বনে, কাঁকনে সোহাগে ইশারায় কে ডেকেছিলো
নদীর ভাঙ্গনের আগে।

বড় যত্নে তুলে রাখা খেলনা পুতুল গুলো আজো নগ্ন,
পুরানো শাড়ীর পার থেকে তাকে আর বউ সাজানো হয় না,
বড় গুলোকে নিয়ে সবাই রবোকপ বানিয়েছে।

আমি যেনো কোথা থেকে শুরু করেছিলাম!?
না খুঁজে পাচ্ছি না;
আমি শুরুটা আর খুঁজে না পেয়ে
থমকে যাই
থমকে আছি প্রথাগত ধোয়া ওঠা চায়ের কাপে।
আমি কেন যে গরম চা খেতে পারি না…!!

রোদে উড়ে যাই গন্তব্যের শেষ সীমানায়

স্বপ্নের কোনে লুকিয়ে আছে পড়ন্ত বিকেল
মায়াবী চোখগুলো ক্লান্তিকর, বালুর চর
অবক্ষয় গিলে খায় সম্পর্কের বেড়াজাল
তুমি, আমি বা আমাদের মাঝে ধীরে ধীরে
দেয়াল তুলে দিচ্ছে মাকড়সার জাল
ধুলো লাগবার ভয়ে এপার ওপার যাওয়া আসা
প্রায় বন্ধ, মগজের কোষে ঝড়ে যাওয়া দিন
পালিয়ে বেড়ায় স্মৃতির ধুসরতায়, শারীরিক অবসাদ
নিয়ে আর উঠে দাঁড়াবার শক্তি পাই না।

নেশাখোরদের মত ঝিমানো সময়,
দেখতে দেখতে সময়ের সাগর নদী হয়ে আসে
তারপর খাল ও শুকানো মাঠ হয়ে যায়
তারো পরে জন্ম দেয় ঘাস, ঘাস ফরিংদের দল খেলা করে সেই মাঠে।

আমাদের সমাধি মন্দিরে আর কোন নাম ফলক থাকে না,
নাম হীন গোত্রহীন অচেনা ধুলোর মাঝে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে
শুধুই রোদে পোড়া বৃক্ষের সারি দেখতে পাই,
সত্যিকারের ভালোবাসার মানুষ গুলো রং বদলে হারিয়ে যায়।

নিজের জগতে, আমি কাউকে খুজে পাই না
না আমাকে, না তোমাকে, না আমাদের
যে ইতিহাস রচনা হবে না কোন দিন তাকে
কেন জোর করে ঝুল বারান্দায় ঝুলিয়ে রাখা
তার থেকে সেই ভালো বিভাজনে মুক্ত হওয়া
চলো ধুলিকণা হয়ে তপ্ত রোদে উড়ে যাই গন্তব্যের শেষ সীমানায়।

পরজীবী বৃত্ত

পরজীবী বৃত্ত

পর্বতের গুহায় আটকে আছে জীবনের পান্ডুলিপি
বন্যদশা থেকে তাই মুক্তির মুক্তা সাগরের গভীরে,
মাছের মত নোনা জল থেকে অক্সিজেন নিতে পারিনি;
অবুঝ অবক্ষয় সবুজের বাগানে পালন করে কীট
ক্ষত গুলো তাদেরই তৈরী।
গুহার উল্টো পাশে শ্রমজীবী মৌমাছিদের গৃহ
প্রতি দিন জীবনের পান্ডুলিপির ক্ষয়ে যাওয়ার গুনগুন শব্দকোষ দিয়ে যে মধু তৈরী করে তার সবটুকো চালান হয়ে যায় সৌখিন মোড়কে খাবার টেবিলে।

বিভাজন হতে হতে হতে…
এক কোষী প্রাণী হয়ে বেঁচে আছে সব গতরখাগির দল,
নিজের শরীরের নরম অংশ গুলোও চিবিয়ে খেয়েছে,
হাড়গোর গুলো ডাক্তারের দখলে, দেখে, শুনে,বুঝে যে ঔষধ লিখে দেবে তারও বাজার মূল্য পাহাড় চূড়ায়;
ততটা পথ হেটে যাবার মত শক্তি হারিয়েছে অনেক আগে তাই পরজীবী হয় ফুলের বাগানে ঘুমিয়ে থাকে।
আকাশে পাখি অবাধ স্বাধীন, উড়ে বেড়ায় যত্রতত্র তারপর দিন শেষে তাকে অাশ্রয় নিতে হয় বৃক্ষ ডালে বা পাহাড় গুহায় অার তাই আঁধার চেপে ধরে নীল পাখিদের পাখাদুটো।
কিছু মানুষ বৃক্ষ হয়, কিছু মানুষ দিন,কিছু মানুষ ম্লান চাঁদ, কিছু মানুষ রাত, কিছু মানুষ পাহাড় চূড়ায় গড়ে রাজ্যপাট, কিছু লোকের দরজা বন্ধ খোলে না কপাট,
কিছু রাজা ভেল্কি দেখায় প্রজাদের চোখ ঘুম কাতুরে তবুও কিন্তু সোজা, পেটের ভিতরে সুরঙ্গ অাছে যায়না কিছুই বোঝা।

যত সব আউলা মগজ থেকে ভূমিষ্ঠ হয়
রাতকানা রোগী
দিনের বেলা দিনের আলো সবটুকু চেটেপুটে পেটপুরে
সন্ধ্যা নামার আগেই তলপীতলপা গুছিয়ে গুহার ভিতরে ঢুকে যায়,
আর কর্মী মৌমাছি কষ্টের গুনগুন নিয়ে আবার খুঁজে চলে বনফুলের মধু।

দোলায়িত প্রতিবিম্ব

দোলায়িত প্রতিবিম্ব

নদীটির দিকে চোখ রাখলে
গভীর গাঢ় কালো তরল
সাপের মত ফণা তুলে
এগিয়ে চলে অবিরল

শহর জুড়ে সাজানো জেল
বন্দী মানব শিশু
একটি অসম ঘোর তৈরী হয়ে আছে
আমার চারধারে;
চারপাশে ঘন ঘোর শব্দযন্ত্রণা
মস্তিস্কে স্নায়ুর চাপ বাড়ে ক্রমশ,
ব্যস্ততাহীন ব্যস্ততা গড়িয়ে চলে
ধুলোর স্রোত।

যান্ত্রিক শতাব্দী গুলো ক্রমশ কমিয়ে
দিচ্ছে জীবনের গড় আয়ু
ধমণীরা শেষ হয়
নিঃশব্দে খসে পড়া নক্ষত্রের মত
উজার হয়ে যাওয়া বৃক্ষের মত
বসুন্ধরা অবিচল;

এখন প্রয়োজন সিলেন্ডার এর
জীবন বাতাস।

সময়ের লক্ষ্যভ্রষ্ট তীর

বেদনা আর সম বেদনা দিয়ে কি হবে আর, সময় তো আসবে না ফিরে
সাথে নিয়ে মৌ-মাছিদের প্রাণ; সময় তবে কি পেরেছে কবে;
সময় শুধু পোশাক তৈরীর ক্ষমতা দেখাতে সক্ষম হয়েছে,
পরিপত্র দিয়ে এখন আর কিছু পরিবর্তন সম্ভব নয়।

জীবন এখন বাঁওড়ের মাঝে স্থির, মানুষে চাতুর্যতা
এখন প্রতিজিহবায় জড়ানো মৌবী। সুযোগের অপেক্ষায়
যজমান সাজ বিচিন্তিত মঞ্চে পিণ্ড দান করে।
কেয়ামতের প্রলুব্ধ ভয় লোভের তাবুতে প্রচ্ছন্নতায়
পুরোগামী যে পথে ভুল করে ঠুকেছে মাথা,
সাকার কিংবা নিরাকার কতটা দিয়েছে সেই
সৌখিন লোবান; বিবেকের কাছে দায় মিটাতে।

পৌরাণিক যুগে ফিরে যেতে যেতে মাথা ঘুরিয়ে
বিচারের চৌকাঠে লোলুপের ফাঁসি কে দেখেছে
কবে? আজো কোন জনপথে সীতাদের অগ্নি পরীক্ষা হয়
কিংবা দ্রৌপদীর লজ্জা বস্ত্রতে ঢাকতে পারে না
হাজার নেকড়ের চোখের – নখের থাবায়।

অতিথি পাখার দল মাঝ পথে পাখা ভেঙে পরে রক্ত নদীর বুকে
ঘৃণার শকুন – শকুনিরা পাখা মেলে উড়ে চলে রাজপথে,
পারাপারের মাঝিও বুঝে গেছে জীবনের থেকে অর্থের অর্থ অনেক বেশী মজবুত;
দেশের ক্ষয় কিংবা ক্ষয়ে যাওয়া জীবন থেকে যেটুকু চেটেপুটে নেয়া যায় তাই
জীবন বোধ।
ততটা উচুতে উঠতে পারে না মানুষ, যেখানে শকুনের চলাচল;
আর পাকা শিকারীর হাতে থাকা হাজারো তীর লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে পরে
মাটির উঠান।
_________

এটা কোন কবিতা নয় এটা কুবিতা। ছবিটি রেল পথের পাশে থেকে তোলা।

অমীমাংসিত লেফাফা

অমীমাংসিত লেফাফা

আমি জীবনের সেতু গুলো কোন দিন পার হতে পারি না
মাঝ পথে গিয়ে সর্বদাই উল্টে যাই, ভরাডুবি নৌকার মত
তবু জীবনের ধুলো ভরা বাঁশি খুঁজতে গিয়ে হাতে তুলে নেই
রাতের তারা, জোনাকির জীবদ্দশা, বড়জোর পঞ্চমী চাঁদের আলো।
জীবনের নাচার সাঁকো নাছোরবান্দা হয়ে মস্করা করে অবিরত।
সময়ের শাড়ির আঁচলে চোরকাঁটা আটকে থাকেনা ভালোবাসায়;
শাড়িগুলো আজকাল বড়বেশি ছোট করে তৈরী করছে তাঁতীরা।

চাহিদার স্মারকে নিদারুণ খরস্রোতে ভেসে যায় ধনেশ, সেই সাথে
খড়কুটোর মত ভেসে যায় বারদুয়ারী ঘর, মাথার বাবরী, নীলাম্বরী
আর ধরাকাট। ঝিনুক চোখের স্বপ্ন গুলো দাউদাউ পোড়ে বিধবার
সাজে এক অবহেলায়। পঙ্গু লোভের ছায়াগুলো মাতে উল্লাসে,
নৌকাটা করে স্ফীত ঝড়ে উপহাস, দৃষ্টি থেকে লাবণ্য ঝড়ে পরে
রাতের নিশ্চুপ নিথর শহরের অভিজাত ড্রইং রুমে, আমার আর
ওপারে যাওয়া হয় না। নিদারুণ বসে চেয়ে থাকি তাই ওপারের
গাছে নীড় করা লাল নীল পাখি গুলোর দিকে। মাঝি নাই,
নৌকা নাই শুধু যে সাঁতরে পারি দেব তারও কোন উপায় নাই,
আমিতো জ্যোৎস্নায় ভেসে যাওয়া রাতে কোনদিন শিখিনি সাঁতার;
তবে হ্যাঁ একবার এক কাগজের নৌকা ভিড়েছিল ঘাঁটে
মাঝিও ছিলো কিন্তু বৈঠা ছিলো প্রতিবিম্ব, তারপরও চেয়েছিলাম
তাকে ধরেই ঝুলে যেতে ইষ্টিশানে, হঠাৎ একদল লাল পিঁপড়ে কামড়ে
ধরে আমার নাক। যন্ত্রণায় হাতের তালু দিয়ে নাক ঘসতে ঘসতে
চেয়ে দেখি নৌকা উধাও। সেই থেকে বসে আছি ঠায় একাকী নদীর ধারে
আর দেখছি কত শত নানা রং এর চড়াই-উৎরাই, দেখে দেখে
নেশা ধরে গেছে। আমার আর সাঁকোর কাথা মনে পড়ে না,
বাঁশির কথা মনে পড়ে না, পঞ্চমী চাঁদের আলো খুঁজতে চাই না,
ঝিনুক চোখের দিকে তাকাই না, নেশায় বুঁদ হয়ে শুধু
চড়াই-উতরাই খুঁজি আর নিজেকে সাজাই তার ভাঁজে ভাঁজে।

_____________________
*এইটা একটা কুবিতা, কবিতা না।

আমাদের সংসার

আমাদের সংসার

সংসার মানে সঙ্গ সাধনা
কথার সাথে সুর
সংসার মানে ধর্ম বিহীন
প্রার্থনা মধুর

সংসার হবে পিপাসার জল
তুলে দেবে তুমি হাতে
সংসার মানে যুগল ডানায়
পথ চলা কালো রাতে।

সংসার মানে হাড়ি পাতিলের
ঠোকাঠুকি মাঝে মাঝে
সংসার মানে বাজারের থলে
গতরখাটানো কাজে।

সংসার হলো দুমুখো সাপ
পাকস্থালী তার এক
সংসার মানে নয় বিভাজন
চেয়ে চেয়ে সুখ দেখ।

সংসার মানে বয়সকালে
নির্ভরতার সুখ
সংসার মানে পাশাপাশি দেখা
আয়নাতে দুটি মুখ।
__________________

অজানা দর্পণ

অজানা দর্পণ

মৃত্তিকা জানতে চেওনা
বৃক্ষের শেকড় কতটা বিস্তৃত হয়,
কতটা গভীরে যেতে পারে
এর উত্তর আমার জানা নেই।

দিগন্ত জানতে চেওনা
অাকাশের নীল কোন সীমানায় বন্ধী হয়
কোন মেঘ কতটুকু ঢেকে দেয় তাকে
এর উত্তর আমার কাছে অমিমাংসিত

ঝরনাধারা জানতে চেওনা
চপলা নদী কতটা জল বুকে নিয়ে ভাসায় দু’কুল
কেন সে ভাঙে সাজানো বসত ভিটা
আমার প্লাবিত বুকে এ প্রশ্নের উত্তর ধারণ করে না

শীলা তুমি প্রশ্ন করোনা
ভেঙে পরার আগে পাহাড় কত দিন বাঁচে
কতটা যুগ কালের শিলালিপির স্বাক্ষী হয়ে থাকে
আমার বেভুলা মন এর হিসাব করেনি কোনদিন

পুস্প তোমার মনের প্রশ্ন গোপন রাখো
আজো আমি জানিনা ফুলের জন্য ভ্রমর নাকি প্রেমের জন্য ফুল ধন্য হয়

প্রেম তুমি জানতে চেয়ে উত্তর পাবেনা
ভালোবাসা কতটা দূরে গেলে নয়নের গলিত কাজল মুছে
ঠোঁটের কোনে মৃদু হাসির রেখার দেখা মেলে
ভালোবাসা কত ধারায় বিভাজন হয়ে তোমার কাছে পৌছাবে
বয়সের সমীকরণ ভেঙ্গে দেখেছি, এর উত্তর আমি মিলাতে পারিনি।

_________
কুবিতা
২৭/০৭/২০১৮

এবং পাথর

এবং পাথর

ঈশ্বর কিছুই জানেন না;
জানবার মত কোন শক্তি
তার আর অবশিষ্ট নেই,
যা তিনি হারিয়েছেন
বিবেক আর বুদ্ধির কাছে।

পরাজিত কোন ধর্ম পথের
সৈনিক তাই তাকে অভিশাপ দেয়;
নেলসন বা নজরুল এর মত
অনেকেই একদিন ঈশ্বর হয়ে বেচে উঠবে
যেখানে ঈশ্বর হবে পাথরের উপমা।

_______________________
শুক্রবার, ১১/০৬/২০১০ – ১৮:১৪)

দহন মানুষ ভালোবেসে

দহন মানুষ ভালোবেসে

খুব দহনে আমি পুড়ি
বোশেখ মাসে
তোমার পাশে ভিন্ন মানুষ
খুব সহজে হাতটি হাতে
হেটে চলে।

কিন্তু ধরো ভিন্ন সুরে বাজলে বীনা
আমার ঘরেই বসতো মেলা এই বোশেখে
আমার হাতে থাকতো বাঁশী বটের ছায়ায়;
উদাস দুপুর টাপুর টুপুর খুনসুটিতে
কাটতো সময়।

অলস বিকেল গল্প বলার আয়োজনে
মেলার মাঠে খুব বিকিরণ অভিমানে
সময় যেত গোধূলিতে।

কিন্তু বিষাদ কালবৈশাখী
তান্ডব তার শহর জুড়ে
পোড়ায় মানুষ, ওড়ায় আশা
ছিন্ন ভিন্ন ভালোবাসা
এক দিন এক সকালে।

হয়তো এখন মুক্ত আমি;
মুক্ত মানুষ, তবু কোথাও
দাগ লেগেছে বুজতে পারি
মেঘ দেখে আজ
অট্ট হাসি দিতে পারি
সে আর আমারি কি ভেজাবে !

জলের মাঝে আমি থাকি।